তোমারই আমি আছি পর্ব ২৪

তোমারই আছি আমি
পর্ব-২৪
Sara Mehjabin

বর্তমান…

ঘুম ভাঙতেই প্রতিদিনের মতো আবারও নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করলাম। কোনকিছু না ভেবে সোজা তাকালাম ঘড়ির দিকে। সর্বনাশ সাড়ে সাতটা। হাতে আর মাত্র আধা ঘন্টা সময়। এই আধা ঘন্টায় কি বানাব আমি? ধুর্ মরার ঘুম যে কেন চোখ ছাড়ে না! না জানি আজ কত অপমানের স্বীকার হতে হবে,,, নিজেকে করা অপমানগুলো গায়ে লাগে না। গায়ে তো লাগে যখন আমার দোষে পরিবারের মানুষগুলোকে বিনা কারনে হাজারটা কথা শুনতে হয়। সত্যি বলতে, আল্লাহ অসীম সহ‍্যক্ষমতা দিয়ে পৃথিবীতে পাঠালেও ঐটুকু সহ‍্যক্ষমতা কেন যেন দেন নি!

তাড়াহুড়ো করে খাট থেকে নামতে গিয়ে খাটের কোনায় পা লেগে প্রচণ্ড ব‍্যথা পেলাম। আরেকটু হলেই প্লাজোর সঙ্গে পা আটকিয়ে পড়ে যেতাম। প্রচণ্ড ব‍্যথা সারা শরীরে। ব‍্যথায় শরীর অবশ হয়ে আসতে চায়। কাল রাতে আকাশভাইয়া অন‍্যদিনের তুলনায় বেশি হিংস্র ছিল‌। পশুর মতো শারীরিক চাহিদা মিটিয়েছে। এখন আমার এমন অবস্থা যে নড়তেও পারছি না। সেই অবস্থাতেই রান্নাঘরে দৌড়ে গেলাম।

গত একমাসে এইগুলো আমার নিত্য রুটিন। প্রতিরাতে আকাশভাইয়া মাতাল হয়ে আমাকে ইচ্ছামত মারে। যখন মাতলামো বেড়ে যায় তখন নিস্তেজ শরীর এলিয়ে দেয় আমার ওপর। আমাকে টেনে বিছানায় শুইয়ে শুরু করে তার চাহিদা পূরন। যন্ত্রণা-ব‍্যথায় আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। তবুও মুখ দিয়ে একটা শব্দোও বের করতে পারি না। আমার হাত-পা শক্ত দড়ি দিয়ে বাধা থাকে; মুখটাও বেঁধে দেয় শক্ত কাপড়ে। শুধু চোখের পানি গড়িয়ে যেতে থাকে। একটাসময় যখন সহ‍্য আমি প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাই আকাশভাইয়া আবর্জনার মতো আমাকে ছুঁড়ে ফেলে স্টোররুম থেকে নিজের রুমে চলে যায়। পরেরদিন যখন ঘুম ভাঙে; দেখি আমার গায়ে চাদর টেনে মাথার নিচে বালিশ দেওয়া । রাতের কাপড়গুলো ধুয়ে বারান্দায় দিয়েছে কেউ। আমাকে নতুন কাপড় পড়িয়েছে। কামড়ের জায়গাগুলোতে মলম লাগিয়ে দিয়েছে। জানি না কে করে এগুলো। এই নরকে আমার জন্য কার-ই বা এত ভাবনা!

একমাসে আকাশভাইয়ার কামড়-আচড়ের গভীর ক্ষতে ভরে গেছে আমার গলা, গাল, পিঠ, বুক, পেট প্রায় প্রতিটি অঙ্গ-প্রত‍্যঙ্গ। দাগগুলো যাতে কেউ দেখতে না পায় তাই ফুলস্লিভ পড়ি সবসময়। মাথায় ওড়না পিন দিয়ে আটকিয়ে রাখি। বাড়িভর্তি মানুষের সামনে এইভাবে খুব অসস্তি হয়।

রান্নাঘরে গিয়ে যা দেখলাম তাতে আমি একটুও অবাক হলাম না যদিও অবাক হওয়ার মতোই ঘটনা। সব খাবার-দাবার রেডি। প্রায়ই আমার সাথে এরকম ঘটে। যেদিন আকাশভাইয়ার অতিরিক্ত অত‍্যাচারে সকালের ঘুমটা সহজে ভাঙে না তাড়াহুড়ো করে রান্নাঘরে আসার পর দেখি প্রায় সব কাজ শেষ। কে করে কেন করে জানি না। এই বাড়িতে আগে অনেক কাজের লোক থাকলেও বর্তমানে একজন-ও নেই। সব আমাকেই করতে হয়। একমাসে আমার জীবনের সম্পূর্ণ মোড়টাই বদলে গেছে।

যখন বুঝতে পারলাম আকাশভাইয়া তার ভুল বুঝতে পেরে আমাকে বিয়ে করে নি অন‍্য উদ্দেশ্য আছে তার তখন থেকেই পথ খুঁজছিলাম কিভাবে এই বাড়ি থেকে পালাব। কারণ আমি বুঝতে পারছিলাম এই বাড়িতে থাকলে আমার জীবনটা তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবে। অবশেষে বাসর রাতে নানুর ঘুমের ওষুধ চুরি করে দুধে মিশিয়ে আকাশকে দেই। (কাজটা বাধ্য হয়ে করেছি। আর উপায় ছিল না আমার)। আকাশভাইয়া দুধ খেয়ে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল। মানুষটার ঘুমন্ত নিষ্পাপ মুখটা দেখে প্রচণ্ড মায়া লাগছিল। মাথার পাশে বসে ওর চুলগলোতে হাত বুলিয়ে কপালে ছোট্ট করে চুমু দিলাম।

“আমাকে ক্ষমা করে দিও আকাশভাইয়া। কখনো ভাবি নি নিজের হাতে তোমার ক্ষতি করব।”

পায়ের ওপর মাথা ঠেকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে পায়ে আলতো চুমু দিয়ে বেরিয়ে এলাম।

এই বাড়ির সবার কাছে মেইনগেটের চাবি থাকে। আকাশভাইয়ার-ও ছিল। সেটাই ব‍্যবহার করলাম। আসার আগে গায়ের সব গয়না খুলে রাখলাম। এইগুলো এই বাড়ির গয়না। আমার উচিত নয় এগুলো সাথে নেওয়া।

সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল মুক্তি পেয়েছি। কিন্তু এখন প্রতি মুহূর্তে আফসোস হয় কেন বেরিয়ে গিয়েছিলাম সেদিন। সেদিন যদি এই খান প‍্যালেস থেকে না চলে যেতাম তাহলে আজ শত কষ্ট হলেও মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম এই পৃথিবীতে আমার ও কয়েকজন মানুষ আছে। তারা আজো আমার জন্য অপেক্ষা করে। আমার কথা মনে পড়ে ওদের। কিন্তু ঐদিন রাস্তায় বেরিয়ে আমি পুরো পৃথিবীটা চিনে নিয়ছিলাম। বুঝতে পেরছিলাম এই বিশাল পৃথিবীতে আমার যাবার মতো একটাও ঠিকানা নেই।

রাত দুইটার সময় আমি নিজের বাসার দরজায় পৌঁছাই । ক্ষুধা-ক্লান্তি ঘুমে ভাঙা শরীর নিয়ে। মা আমাকে দেখেই নষ্টা মেয়ের এই ঘরে কোন স্থান নেই জানিয়ে দিলেন। আমি বারবার ওদের বোঝাতে চাইলাম আমার অবস্থা টা। কিন্ত ওরা বলল আমার মতো নষ্ট মেয়ের মুখে কথা শোনাও পাপ‍। অনেক বড় পাপের ফল হিসেবে আমি তাদের সন্তান হয়ে জন্ম নিয়েছি। আমি একটা অভিশাপ। মা এসব বলে হাইপার হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। আমি মায়ের কাছে আসতে গেলে বাবা বললেন আমি যদি এই বাসার দরজার ভিতরে পা দেই তাহলে তিনি আমার নামে অভিযোগ করবে আমি তার স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা করেছি। সায়ানভাইকে বললাম তুই তো অন্তত বোঝ। উত্তরে ভাইয়া আমার সামনে হাতজোড় করল, দ‍্যাখ আমরা প্রচুর ঝামেলার মধ্যে আছি। আমি জানি হয়তো তোর কোন দোষ নাই। বাট তোর জন্য এই মুহূর্তে আমাদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব না। পুরো এলাকায় রটে গেছে তুই পালিয়ে বিয়ে করছস। এখন যদি এইখানে থাকিস আমাদের প্রচুর প্রবলেম হবে। আমি আব্বুকে বুঝাব। কিন্তু আপাতত এই বাসায় ঢুকিস না। প্লিজ চলে যা। আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম শুধু। কোন কথা আসল না।

সারারাত বাসার সামনের দরজায় বসে থাকলাম। কেউ দরজা খুলল না। ভোরের আলো ফোটার আগেই চলে এলাম। বুঝতে পারলাম নিজের ব‍্যবস্থা নিজেকেই করতে হবে। আপাতত একদিন থাকার জন্য ফারিহা আজমী দুইজনের বাড়ি তে গেলাম। সেখানে বলা হলো আমি থাকা দূর আমার সঙ্গে ওদের কোন যোগাযোগ থাকলে ওদেরকে বাসা ছাড়তে হবে। ফারিহা কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে বলল, আচ্ছা তুই দাঁড়া। আমি ব‍্যাগটা গুছিয়ে আসি।

ওর হাতে টান দিয়ে ধরি, ধুর্ পাগল,,আমার জন্য নিজের বাড়িঘর আপনজনদের ছেড়ে দিবি? কে আমি? আমি একটা নষ্টা মেয়ে। যে পালিয়ে বিয়ে করে এবং বাসর রাতে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে পালায়। আমি চাই না আমার বেস্টি এরকম কারো সাথে মিশুক। আর যোগাযোগ থাকবে না তো কি হবে? মনে রাখার জন্য যোগাযোগ টা কি খুব প্রয়োজন? যারা এই পৃথিবীর বাইরে চলে যায় আমরা পারি তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে? তাই বলে কি তাকে ভুলে যাই নাকি ভালবাসা কমে? মনে করে নিবি আমি এই পৃথিবীর বাহিরে। যার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব নয়।

ভর দুপুরের ঝাঝালো রোদে বিয়ের ভারী শাড়িটা গায়ে জড়ানো অবস্থায় রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। চারপাশে কত মানুষ, কত আওয়াজ, কত জায়গা। অথচ আমার চারপাশটা তবুও কেমন শূন্য, ফাঁকা। প্রচুর পানি পিপাসা পাচ্ছে। একদম খালি হাতে বেরিয়েছিলাম। একটা পয়সাও নেই। বুকটা ফেটে আসছে পানির জন্য। দূরে একটা টিউবওয়েল দেখে দৌড়াতে শুরু করলাম। এরপর আর কিছু মনে নেই।

জ্ঞান ফিরে নিজেকে একটা চালাঘরে চৌকির ওপর আবিষ্কার করলাম। এক ভদ্রমহিলা পাখা দিয়ে বাতাস করছিলেন। আমি উঠতে নিলে শুইয়ে বললেন, মাগো শুয়ে থাকো। তোমার শরীর বড় দুর্বল।

আমি শুধু বললাম, পানি,,,

: অ পানি খাবা। নেও পানি।

পানিটুকু খেয়ে শুয়ে থাকলাম। পরে জানলাম উনার ছেলে ইটের ভাটায় কাজ করছিল। পাশেই টিউবওয়েল। সে আমাকে ওখানে অজ্ঞান অবস্থায় পায়। তারপর তুলে নিয়ে আসে।

: অনেক করলেন আপনারা আমার জন্য। ধন্যবাদ।

: আরে না মা। কি যে বলো। ঐরকম জোয়ান মাইয়া রাস্তায় পইড়া ছিলা এইটুকু করতাম না। তা মা তোমারে বড় অসুস্থ মনে হইতেছে। এই শরীরে বাইরে বাইর হইছ ক‍্যান?

সবকিছু খুলেই বললাম উনাকে। ভদ্রমহিলা আমার অর্ধেক কথা শুনে ঝরঝর করে কেঁদে দিলেন। বললেন, যে কয়দিন আমি যাওয়ার অন্য জায়গা না পাই যেন ওনার সঙ্গে থাকি।

খালাম্মার বাড়ি দুইদিন থাকলাম। সাথে বাসা ভাড়ার খোঁজ করছি। সব কিছুই স্বাভাবিক। শুধু খেয়াল করি রাত বারোটা একটার দিকে মা-ছেলে মিলে কি কি যেন ফিসফিস করে।

আমি আর খালা এক রুমে ঘুমাতাম। অনেক রাত পর্যন্ত ঘুম আসে না আমার। ঘুমের ভান করে থাকি। হঠাৎ শুনলাম

মোস্তাক(ছেলেটার নাম): বাসা ভাড়া টাড়া পাইছে? কিছু কয় তোমারে?

মহিলা: না মনে হয়। নাইলে কি পইড়া থাকত? কিন্তু যা করার তাড়াতাড়ি করন লাগব। এইবার তর কষ্ট করন লাগে নাই। ফ্রিতেই পাওয়া গেছে। কবে নিবি এরে?

মোস্তাক: ওস্তাদের কল আসলেই এটারে বর্ডারে নেওন লাগব। ততদিন যেন কোনভাবেই না যায়।

মহিলা: মাইয়াটা ভালা আছে। তর ওস্তাদের থেকা ভালা দর হাঁকাবি এইবার। এই মাইয়ার পিছে কিন্তু আমার কম যাইতাছে না। আমার এইবার চল্লিশ ষাটে হব না। হাফ দেওন লাগব।

মোস্তাক: আচ্ছা যা কোও।

ওরা অনেকক্ষণ আলোচনা করল। বুঝতে পরলাম কত বড় চক্রগুহে ফেঁসে গেছি। ভয়ে আমার হাত-পা শীতল হয়ে যাচ্ছে। তবে কাজের মধ্যে একটা কাজ করেছি ওদের সব কথা রেকর্ড করে নিয়েছি ফোনে। হয়তো কোন কাজে লাগবে আমার।

পরেরদিন ভদ্রমহিলাকে মিথ্যা করে বললাম, বাসা ভাড়া পেয়েছি। আমি চলে যাব।

ভদ্রমহিলা কিছুক্ষণ আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলল, তুই কালকে রাতে আমাগো সব কথা শুনছস, তাই না?

মোস্তাক আর ভদ্রমহিলা মিলে আমাকে হাত-পা বেঁধে একটা রুমে আটকে রাখল। আগে যাও খাবার পাচ্ছিলাম তখন তাও দিত না। পরেরদিন মোস্তাক ছেলেটা রুমে আসল। হাতে ইনজেকশন পুশ করাতে চোখে রাজ‍্যের ঘুম নেমে এলো।

ঘুম ভেঙে নিজেকে অন‍্য এক জায়গায় পেলাম। বুঝতে পারলাম আগামী কাল ওরা আমাকে বেআইনি পথে বিদেশে পাচার করবে। মাথায় কিছু কাজ করছিল না। যে ফোনে ওদের কথাগুলো রেকর্ড করি সেটা কোথাও পেলাম না। তারমানে একবিন্দু আশাও নেই বাঁচার।

আমাকে একটা বদ্ধ ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। হাত-পা মুখ কিছুই বাঁধে নি। কারণ প্রথমত আমি দুর্বল আর দ্বিতীয়ত এখানে আমার চিৎকার শোনার কেউ নেই।

হে আল্লাহ এই নরপিশাচ গুলোর থেকে বাঁচাও আমাকে। তুমি ছাড়া আমার যে কেউ নেই। আমায় সাহায্য করো আল্লাহ। আমি জানি না কিভাবে বাঁচব এদের হাত থেকে,, কিভাবে নিজেকে রক্ষা করব। আমায় তুমি উপায় দাও মা’বুদ।
মোনাজাত শেষ এ কান্নায় কখন ঘুমিয়ে গিয়েছি খেয়াল নেই। হঠাৎ প্রচণ্ড জোরে দরজা খোলার শব্দে ঘুম ভাঙল। দেখলাম অন্ধকার ঘরের দরজা ঠেলে একজন ভিতরে প্রবেশ করছে। তার পেছনে খোলা দরজা দিয়ে প্রবেশ করছে একরাশ আলো।

আলোতে সামনে থাকা ব‍্যক্তির মুখটা স্পষ্ট হয়ে উঠল,,আকাশভাইয়া।

আকাশভাইয়া রক্তরাঙা চোখে কিছুক্ষন দেখল আমাকে। তারপর চুলের মুঠি ধরে ঠাস ঠাস থাপ্পড় মারতে লাগল।

“খুব সাহস বেড়েছে না তোর? এতো সাহস যে আমার খাচা ভেঙে তুই উড়াল দিস? দেখলি তো কোথাও পালাতে পারবি না তুই। খাচায় বন্দি পাখির মুক্তির আশা করতে আছে, কিন্তু মুক্তির চেষ্টা করতে নেই। যার খাচা সে না চাইলে কোনদিন মুক্তি হবে না,,,বুঝেছিস? তুই যা করেছিস এর ফল তুই পাবি। অনেক বেশি পাবি।”

এরপর এই খানবাড়ি হলো আমার আশ্রয়। তবে বৌ হিসেবে না, কাজের মেয়ে হিসেবে। আমার থাকার জায়গা হলো স্টোররুম। আমার শাস্তি হিসেবে বাড়ির সব কাজের লোক বিদায় করে দেওয়া হলো। বড়মামি আর অদ্বিতী ব‍্যতীত প্রত‍্যেকটা মানুষের আমি চক্ষুবিষ। এমনকি আমার নিজের নানু পর্যন্ত মানুষের সামনে আমাকে নাতিবৌ পরিচয় না দিয়ে পরিচয় করায় কাজের লোক।

আকাশভাইয়া এইসব দেখেও দেখে না। সে থাকে তার মতো। শুধু প্রতিরাতে সবার অগোচরে আমার ঘুপচি ঘরে তার প্রবেশ ঘটে। আমার ওপর শরীরের চাহিদা মেটায়। চাহিদা ফুরিয়ে এলে ছুঁড়ে দেয়।

মাঝে মাঝে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কিংবা আমার বুকে মাথা দিয়ে কেঁদে দেয়,,আমাকে শক্ত করে ধরে রাখ। শক্ত করে বেঁধে রেখে দে তোর সঙ্গে। যেন চাইলেও তোকে ছাড়ার ক্ষমতা না পাই। আমার ভীষণ কষ্ট রে পুতুল। খুব কষ্ট রে আমার। এই কষ্টের কারণ টা কে জানিস? তুই তুই তুই। আমাকে বুকে জড়িয়ে নে না পুতুল। তোর কোলে একটু ঘুমাতে দে। তোর স্প‍র্শে আমার কষ্টগুলো মুছে দিবি পুতুল? আমার কষ্ট পাওয়ার কারনটা তুই হলে কষ্ট কমানোর উপায়টাও তুই।

নাশতা রেডি করার পর সবাই খেতে আসল। অদ্বিতী আমাকে চেষ্টা করছিল সাহায্য করার। তখনই আকাশভাইয়া নেমে এসে কোন কথা না বলে বেরিয়ে যায়।

মামি: কি রে ,,,খেয়ে যা

আকাশ: মা আমার হাতে এক সেকেন্ড সময় নেই। খুব আর্জেন্ট।

বেবিন: হা হা। ওকে আটকিও না। পলিটিক্যাল লিডারদের অত খাওয়া-ঘুম বলতে কিছু নাই। ওদের দিন-রাত সব এক।

সকালের নাশতা শেষে সবার কাপড়গুলো নিয়ে ওয়াশিং মেশিনে ঢুকাচ্ছি হঠাৎ ফোন। আননোন নাম্বার।

: হ‍্যালো‌।
: হ‍্যালো‌ সারা। আমি ফারিহা রে।
: ফারিহা তুইই!
: সর্বনাশ ঘটছে সারা। আকাশভাই…..

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here