তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায় পর্ব ১৩+১৪

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_১৩+১৪
.. তানভী উঠে দাঁড়িয়ে আসতে এগোতে থাকে সাঁঝ এর দিকে। সাঁঝ এর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে। তার ককটেইল ড্রেস এর আপার পোর্শান টা খুলে ফেলে। সাঁঝ পাশে গিয়ে বসে পড়ে। সাঁঝ এর ওপর ঝুঁকে পড়ে। তানভীর শরীর বলতে গেলে এখন পুরোই উন্মুক্ত হয়ে আছে। সাঁঝ কোনো কথা না বলে নিজের ফোন থেকে মেসেজ টাইপ করতে থাকে।
.
–“সাঁঝ ডিয়ার । আমাকে দেখ ।তোমার বউ এর থেকে কম সুন্দরী নয়। বরং তোমার বউ এর থেকে আমি বেশি অ্যাট্রাকটিভ। তানভী বলে ওঠে।
.
. এদিকে সাঁঝ কোনো কথা না বলে গ্লাস খালি করছে। তানভী উঠে সাঁঝ ওপর পড়তে নিলেই পিছন থেকে দুজন তানভী কে ধরে।
.
–” স্যার। আকাশ ধীর গলায় জিজ্ঞেস করে ওঠে।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে চোখের ইশারা করতে আকাশ এর সাথে আসা দুটো বডিগার্ড তানভী কে নিয়ে চলে যায়। আর সাঁঝ মাথা হেলিয়ে বসে চোখ বন্ধ করে নেয়। মুখে লেগে আছে বাঁকা হাসি। আকাশ তার বস কে চেনে। সাঁঝ এর সাথে এটা নতুন কিছু না। তাকে এইরকম সিচুয়েশন হার সময়ে সামলাতে হয়। প্রায় এইরকম মেয়েরা সাঁঝ কে নিজেদের রূপের মায়া দিয়ে সাঁঝ কে পেতে চেয়েছিলো। তাই আকাশ এর এগুলো সামলাতে সামলাতে আর অস্বস্তি বোধ হয় না। আর সে প্রথম প্রথম যখন এমন দেখত। তখন সে শুধু সাঁঝ কে দেখত। যে কিভাবে একটা মানুষ নিজেকে গুটিয়ে রাখতে পারে। এত খোলা মেলা দেখে ও সাঁঝ এর মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখতে পেতো না।
.
.সাঁঝ। চরিত্র টাই একদম আলাদা একদম ইউনিক। ইন্টারন্যাশনাল ট্রাক রেকর্ড। রওশন ফ্যামিলি এক নামে পরিচিত। আর শুধু তাই নয় যেমন ভয়ানক তেমনই আন্তরিক। সাঁঝ রওশন এখন বর্তমান রওশন ফ্যামিলির একমাত্র লিডার। নর্থ ইন্ডিয়ার নাম্বার ওয়ান রেপুটেটেড ফ্যামিলি। আর ইন্টারন্যাশনাল বিসনেজম্যান । নর্থ ইন্ডিয়ার সব কিছু চলে রওশন ফ্যামিলির কথা মত। আর চার বছর আগে সাঁঝ ব্যাঙ্গালোর আসে তার বিসনেজ ও ব্যাঙ্গালোর সিটির লিডার সিপ নিতে। সাঁঝ রওশন যেমন হট চকলেট। তেমন একজন রাগী বদ মেজাজ অ্যাটিটিউড আরোগেন্ট পার্সেন।সব সময়ে মেয়েদের থেকে দূরে থাকে। যখন কেউ তাকে ফুসলিয়ে ছলাকলা করে তাকে পেতে চায়। তখন সাঁঝ তাকে পুরো বরবাদ করে ছাড়ে। আর এই মেয়েদের ব্যাপার তো তার কাছে এখন মাথা যন্ত্রণা মত হয়ে গেছে।
.
–“বেলা । হুম বেলা একমাত্র বেলা কে দেখলেই তার নেশা লাগে। এক মাত্র বেলা কে দেখলে তার হার্টবিট বেড়ে যায়। এক মাত্র বেলার মুখের হাসি দেখলে সাঁঝ এর পৃথিবী থমকে যায়। এক মাত্র বেলা কে দেখলে তার শরীরে শিহরন জেগে যায়। বেলার পুরো টাই মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরোটাই তাকে নেশায় আসক্ত করে ফেলে। এক জনম ভোরে দেখলে ও যেনো তার তৃষ্ণা মিটবে না। একমাত্র বেলা যে পারে তাকে হিলিয়ে দিতে। হ্যাঁ বেলা শুধুমাত্র তার বেলা। তার স্ত্রী। যে শুধুমাত্র তার হ্যাঁ শুধু তাকে দেখলে তার দুনিয়া থেমে যায়। বেলার থেকে ও সুন্দরী সুন্দরী মেয়েরা তাকে পেতে চেয়েছিল কিন্তু সাঁঝ বেলার ওই টানা টানা কাজল কালো চোখের মাঝে ডুবে গেছিলো। আর উঠতেই পারেনি। দিন দিন আরো গভীর ভাবে ডুবে যেতে থাকে।
.
–“হুম বেলা ।শুধু তুমি আমার নেশা আসক্তি অতিরিক্ত। যা আমি চেয়ে ও কাটাতে পারি না। তুমি একমাত্র আমাকে নেশা লাগিয়ে দিতে পারো। অন্য কোনো মেয়ে তাদের কে পুরো নগ্ন অবস্থায় দেখলেও আমার মধ্যে কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি হয়না। কিন্তু তোমার ওই লজ্জা মাখা হাসি মুখ দেখলেই আমার শিহরন বয়ে যায়। সাঁঝ মনে মনে বলে ওঠে।

—————–

বেলা মিউজিক রুম থেকে বের হয় তার প্র্যাক্টিস শেষ করে। রুমে এখনও রুহি ওম নিশান বেদ আর সারা রয়েছে। বেদ আর সারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে। আর ওদের থেকে একটু দূরে বসে রুহি ওম নিশান ক্যান এর বোতলে চুমুক দিচ্ছে আর বেদ আর সারার শুভদৃষ্টি দেখতে থাকে।
.
. বেলা সিঁড়ির কাছে আসতেই হটাৎ করে পিছন থেকে তাকে কেউ কোলে তুলে নেয়। ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকাতে দেখে সাঁঝ তাকে কোলে নিয়েছে। সাঁঝ এর চোখ মুখ পুরো লাল হয়ে আছে। চোখে রয়েছে ঘোর লাগা দৃষ্টি। সাঁঝ কোনো কথা না বলে সিঁড়ি বেয়ে রুমে চলে যায় বেলা কে নিয়ে। বেলা সাঁঝ এর মুখের দিকে দেখে আর কোনো কথা বলেনি।
.
. সাঁঝ বেলা কে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বেলার ওপর ভর দিয়ে শুয়ে পড়ে। বেলা নাড়াচাড়া করছে। সাঁঝ এর কাছে থেকে সরে আসতে নিলে। সাঁঝ বেলার কানে কানে ফিসফিস করে বলে ওঠে।
.
–“আই নিড ইউ বেলা ব্যাডলি। প্লিজ ডোন্ট মুভ। অ্যান্ড স্টপ ফাইট।
.
. সাঁঝ এর এমন ফিসফিস করে বলে ওঠার জন্য বেলার শরীরে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়। হার্ট বিট বেড়ে যায়।। সাঁঝ বেলার গলায় মুখ ডুবিয়ে লিক করতে থাকে। সাঁঝ এখন বেলার নেশায় ডুবে যেতে চায়। সে এখন বেলার স্পর্শ নিতে চায়। বেলা কেঁপে কেঁপে ওঠে সাঁঝ এর এমন স্পর্শে ।প্রতি টা স্পর্শ তার হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে। দম আটকে আসছে। মনে হচ্ছে সাঁঝ এর এই আদর নামক অত্যাচারে মরে যাবে।
.
. সাঁঝ বেলার গলায় থেকে মুখ তুলে বেলার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। শুষে নিতে থাকে বেলার রসালো ঠোঁট। আর নিজে ও নিস্বেঃশ হতে থাকে বেলার ঠোঁটের মাঝে। বেলার কাঁধের থেকে শাড়ির আঁচল সরিয়ে ফেলে গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়। আসতে আসতে নিচে নামতে থাকে। বুকের কাছে এসে সাঁঝ থেমে যায়। মুখ উঠিয়ে বেলা কে দেখে। যে এই মুহূর্তে চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে রেখেছে। চোখের কোন থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। নিচের ঠোঁট টা কে দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে আছে।
.
. সাঁঝ বেলার অবস্থা আর এখনকার অবস্থা দেখে সাঁঝ বেলার ওপর থেকে উঠে ওয়াশরুমে চলে যায়। আর এদিকে বেলা বেড থেকে উঠে বসে। কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে ওয়াশরুমের দিকে দেখে উঠে দাঁড়ায়। কাবার্ড থেকে সাঁঝ এর ড্রেস বের করতে গিয়ে পিছনের দিকে অসাবধানতায় হাতে শক্ত কিছু লাগে। বেলা ড্রেস সরিয়ে দেখতে পায় একটা ব্রাউন কালার এর ডায়েরি। দরজা খোলার আওয়াজ হতে বেলা সরে দাঁড়ায়। সাঁঝ বেরিয়ে রেডি হয়ে বেলার কপালে একটা চুমু দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
.
. সাঁঝ বেরিয়ে যেতেই বেলা ডায়েরি বের করে নিয়ে বারান্দায় চলে যায়। দোলনায় বসে ডায়েরি পাতা উল্টাতে বেলার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। বিস্ময় লাগা চোখে তাকিয়ে আছে বেলা ডায়েরি দিকে। যেখানে রয়েছে তার আর সাঁঝ এর ছবি । বেলা বাইক চালাচ্ছে আর তার কোমর জড়িয়ে বসে আছে সাঁঝ। পিছন থেকে পুরো বেলার সাথে লেগে বসে আছে সাঁঝ। মুখে ফুটে আছে মুচকি হাসি। আর বেলার অবস্থা পুরো মনে হচ্ছে কোনও চাঁদ পেয়ে গেছে হাতে।
.
. আবার ও বেলার চোখের সামনে পুরোনো সেই দৃশ্য ভেসে ওঠে।

——————–

এস আর গ্রুপে আজ প্রথম দিন ছিল বেলা বেদ ওম রুহি নিশান এর জন্য। তারা এখন এস আর গ্রুপে সিঙ্গার হিসাবে জয়েন করেছে। আজ এসেছিল তাদের প্রথম সং রেকর্ড করতে। অফিস থেকে বেরোতে বেলার চোখ যায় বেসমেন্ট এর দিকে সাঁঝ এর পার্কিং এ রাখা গাড়ি। বেলা হাতের ঘড়ির দিকে একবার দেখে নিয়ে বেদ নিশান ওদের দাঁড়াতে বলে বাঁকা হেসে এগিয়ে যায় সাঁঝ এর গাড়ির দিকে। অতি সন্তরপনে মাথার কাঁটা দিয়ে গাড়ির হাওয়ায় চাকা নেই করে দেয়।
.
.বেলা পার্কিং এর দিকে নিজের বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুখে ফুটে আছে বাঁকা হাসি। অফিসের গেটের দিকে একবার তাকাতে হাসি টা আরো বেড়ে যায়। সাঁঝ এগিয়ে আসছে পার্কিং এর দিকে।
.
–“স্যার গাড়ির হাওয়ায় চাকা নেই। না মানে চাকাতে হাওয়া নেই লিক হয়ে গেছে। আকাশ ভীতু মুখে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে একবার বিরক্তিকর লুক দিয়ে এগিয়ে আসতে বেলা তার বাইক নিয়ে সাঁঝ এর সামনে এসে দাঁড়ায়। মুখে হাসি নিয়ে সাঁঝ এর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে ।
.
–” আমি কিছু মনে করব না। আমি আপনাকে লিফট দিতে পারি। যদি আপনি চান তো। তাছাড়া আমার কাছে আপনার এটা পাওনা ছিল। আমাকে যে লিফট দিয়েছিলেন।
.
. সাঁঝ কিছুক্ষন কোনা চোখে বেলার দিকে তাকায়। সাঁঝ মুখে রহস্যময় একটা হাসি রেখে বেলার পিছনে উঠে বসে। এদিকে আকাশ বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে। আকাশ ভেবেছিল আজ হয়তো এই মেয়েটার রক্ষে নেই। এত টা বল্ড ভাবে সাঁঝ কে বলার জন্য। কিন্তু একি ওর সব ভাবনায় পানি ঢেলে দিয়ে সাঁঝ বেলার বাইক এর পিছনে উঠে বসে। সাঁঝ একবার আকাশ এর দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারা করে মাথায় হেলমেট পরে নেয়। নাহলে ওকে এই ভাবে বাইক রাইড করতে দেখলে তাও আবার কোনো মেয়ের পিছনে। তাহলে এটা কাল খবরে হেড লাইন হবে পুরো ইন্ডিয়াতে
.
. বেলা তো যেনো আকাশে উড়ছে এমন ভাব। বাইক জোরে পিক আপ নিতেই সাঁঝ বেলার দিকে ঝুঁকে এসে পড়ে সাথে সাথে হাত দুটো বেলার কোমর চেপে বসে শক্ত করে। আচমকা সাঁঝ এর হাত বেলার কোমরে চেপে বসতে বেলার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় দম আটকে যাওয়ার জোগাড় হয়ে বসে শরীরে শিহরন বয়ে যায়। সাথে সাথে বাইক এর গতি আরো বাড়িয়ে দেয়। এবং আকা বাঁকা ভাবে সাঁঝ কে নিয়ে বাইক রাইড করতে থাকে।
.
. বেলা সাঁঝ এর বাড়ির সামনে এসে বাইক থামাতে। সাঁঝ বেলার কোমরে থেকে নিজের হাত সরিয়ে নেয়ার আচানাক বেলা নিজের নিজের কাঁধে হালকা ভেজা কোমল স্পর্শ পায়। সাথে সাথে বেলা কেঁপে ওঠে। তার শরীরে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাঁঝ ভিতরে চলে যাওয়ার পর ও থমকে থাকে।
.
. ওখানে বেদ নিশান আর বাকিরা এসে ওকে নাড়াতে বেলার ঘোর কেটে যায়। মুখে ফুটে ওঠে একটা মিষ্টি হাসি। লজ্জার জন্য গাল গুলো লাল হয়ে যায়। সে বুঝতে পারে যে সাঁঝ এর নামার সময়ে অসাবধানতায় তার ঠোঁট বেলার কাঁধ ছুয়ে গেছে। বেলা ওদের চার জন কে অবাক করে দিয়ে বাইক এর ওপর বসেই নাচানাচি শুরু করে দেয়।
.
. বাইক নিয়ে টেনে বেরিয়ে যায় একবার সাঁঝ এর বারান্দায় দেখে নিয়ে। এবার যেনো বেলা বাইক চালাচ্ছে না বাইক নিয়ে খেলা শুরু করেছে। হেলে দুলে একে বেঁকে ছুটে চলেছে। কখন হাত ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে তো কখন ও ফুল স্পিড তুলে।
.
. 🎶 উলা লা লা আই লাভ ইউ মাই সড়িয়া
উলা লা লা ও সড়িয়া
উলা লা লা আই লাভ ইউ মাই সড়িয়া
উলা লা লা লা~~🎶
.
. বেলা এবার খুব জোরে পিক আপ পাকিয়ে স্পিড তুলতে থাকে। ওর সাথে আছে ওর বন্ধু গুলো।
.
. 🎶করে যে দুরু দুরু দুরু দুরু মন আমার
করে যে দুরু দুরু মন আমার
হল যে শুরু শুরু শুরু শুরু দুজনে
চেনা পথ হারাবার 🎶
.
.
. 🎶উলা লা লা আই লাভ ইউ মাই সড়িয়া
উলা লা লা ও সড়িয়া
উলা লা লা আই লাভ ইউ মাই সড়িয়া
উলা লা লা লা লাআ~~🎶
.
. সারা রাস্তা বেলা গান গাইতে গাইতে আর পাগলামি করতে বাড়ি ফিরেছে। আর তার সাথে ছিল তার চার দোসর। সাঁঝ এর নেশায় মাতলামি করে পুরো রাস্তা জুড়ে। কখন বাইক থামিয়ে রাস্তার ওপর বসে পড়ে হাত পা ছিটিয়ে উঠে। তো কখন গড়াগড়ি খেতে লাগে রাস্তার মাঝে শুয়ে পড়ে। রাতের অন্ধকারে তার এই পাগলামি দেখার মত কেউ নেই বলে যেনো সে ভর পুর পাগলামি তে মেতে উঠেছে। আর পুরো রাস্তা জুড়ে তার কান্ড কাহিনী কেউ চোখের সামনে বসে দেখছে আর হাসছে। সেটা কেউ জানতে পারলো না।
.
. কোনো মেয়ে ও যে এত টা আসক্ত হতে পারে কোনো ছেলের প্রতি সেটা হয় তো তার বন্ধুরা জানতো না আর না জানতো সেই অজানা ব্যাক্তি। তারা বেলার করা পাগলামি তার করা প্রতি টা কাজ বলে দিচ্ছে সে কত ভয়ানক ভাবে সাঁঝ এর প্রতি নেশাগ্রস্ত হয়েছে। কত টা তার আসক্তি পাগল হয়ে আছে।
.
.
.#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_১৪
.. বেলার মনের মধ্যে চলছে তুমুল অশান্তি। অনেক প্রশ্নের উত্তর। যে প্রশ্ন গুলো জট পাকিয়ে আছে মাথার মধ্যে যেখান থেকে কিছুতেই বেরোতে পারছে না। বেলার যেনো সব কিছু তাল গোল পাকিয়ে যাচ্ছে। আর সব থেকে বড় কথা ও আসতে আসতে আবার ও সাঁঝ এর প্রতি দুর্বল হতে শুরু করেছে। আবার ও সাঁঝ এর আসক্তির মাঝে ডুবে যাচ্ছে। একটু একটু করে আবার সাঁঝ এর মায়াতে জড়িয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত সাঁঝ এর ভালোবাসা নামক অত্যাচার। তার কেয়ার। তার জন্য অতিরিক্ত চিন্তা। সব কিছু ব্যক্ত করছে যে সাঁঝ তাকে ভালোবাসে। সাঁঝ তার প্রতি আসক্ত। কিন্তু এটা কি করে হতে পারে সাঁঝ তো আমাকে ভালোবাসতে পারে না। সে তো দিশা কে ভালোবাসে। কিন্তু। হ্যাঁ এই সব কিছুর মাঝে একটা বড় কিন্তু চলে আসছে। যেটা আমি চেয়ে ও সলভ করতে পারছি না। না পারছি সাঁঝ এর থেকে দূরে সরে যেতে আর না পারছি আমি সাঁঝ এর প্রতি দুর্বল হতে থেকে আটকাতে। না না এটা ঠিক না। আমাকে সাঁঝ এর থেকে দূরে থাকতে। কোনো ভাবে আর আমি সাঁঝ এর আসক্তির মাঝে ডুবে যেতে পারি না কিছুতেই না।
.
–“এবার আমি এমন কিছু করব যে তুমি নিজেই আমার থেকে দূরে চলে যাবে মিস্টার সাঁঝ। বেলা বাঁকা হেসে বলে ওঠে।

——————–

আজ জে কে মিউজিক অ্যান্ড ডান্স ইন্ডাস্ট্রি অফ একাডেমী লাইভ কনসার্ট প্রোগ্রাম। পাঁচ টা গ্রুপ এর সিঙ্গার আর ডান্সারদের নিয়ে হবে এই লাইভ কনসার্ট। তবে বেলাদের রেনবো ব্র্যান্ড হিসাবে পরিচিত। তারা কোনো গ্রুপ এর সঙ্গে যুক্ত নয়। তারা তাদের ইউনিভার্সিটি থেকে এখন যুক্ত আছে।
এটা একটা বড় লাইভ শো। এই কোম্পানির থেকে প্রোগ্রাম করা খুব বড় ব্যাপার।
আজ এখানে গেস্ট হিসাবে আসছে ন্যাশনাল ট্রেজার দিশা মির্জা। আরো একজন স্পেশাল গেস্ট আসছে যার নাম ও এখন প্রকাশিত হয়নি।
.
–“ইয়ার বেলা ।আজ আমাদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এই একাডেমী তে পারফর্ম করার পর আমাদের ব্র্যান্ড এর কিছু সু গতি হবে। আর আমরা আমাদের অনাথ আশ্রম এর জন্য আরো ভালো কিছু করতে পারবো। বেদ বেশ উৎফুল্ল নিয়ে বলে ওঠে।
.
–“একদম তাই । এমনিতে ও আমাদের ব্র্যান্ড এর নাম বেশ। আর আজকের এই কনসার্টে আমাদের পপুলারিটি আরো বাড়বে। আর তার পর আমরা আমাদের বাচ্চাদের জন্য আরো ভালো কিছু করতে পারবো। ওম বলে ওঠে।
.
–” ইয়ার আজকে এখানে ওই মুখপুড়ি দিশা টা ও আসছে গেস্ট হিসাবে। রুহি বলে ওঠে।
.
–“হুম আরো একজন স্পেশাল গেস্ট আসছে। তার নাম এখনও প্রকাশিত নয়। নিশান বলে ওঠে।
.
–“সাঁঝ রওশন । বেলা সবার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
–” হওও । তুই কি করে জানলি। রুহি বলে ওঠে,
.
–“ফোন করেছে ইডিয়ট। বেলা তার ফোনের দিকে ইশারা করে বলে ওঠে।
.
–“ওহ আমরা ভেবেছিলাম হয়তো সত্যি জিজ আসছে। সব কোটা গোমরামুখ করে বলে ওঠে।
.
. বেলা কোনো কথা না বলে রহস্যময় একটা হাসি দেয়। যার অর্থ কেউ বোঝে না। সব কোটা গ্রিন রুমে বসে রেডি হচ্ছে তাদের প্রোগ্রাম আরো এক ঘন্টা পরে শুরু হবে। বেলার ফোন হঠাৎ একটা নোটিফিকেশন আসে। বেলা ফোন ওপেন করতে স্তব্ধ হয়ে যায়। মুখে ফুটে ওঠে একটা তাচ্ছিল্য ভরা হাসি। একটা আননোন নাম্বার থেকে এসেছে মেসেজ টা। সেদিন এর রুমে সাঁঝ আর তানভী কিছু ক্লোজ ছবি। যেখানে তানভী পুরো উন্মুক্ত হয়ে সাঁঝ এর ওপর ঝুঁকে আছে । যার জন্য সাঁঝ এর মুখ এর প্রতিক্রিয়া বোঝা যাচ্ছে না। এটা দেখেই বেলার চোখ গুলো ছলছল করছে। বেলার মনে ভয়ানক ঝড় উঠে গেছে। হ্যাঁ সে একদম ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে সরে যাবে সাঁঝ এর জীবন থেকে। আবারও একই দৃশ্য দেখতে হল তাকে আগে এই জায়গা ছিল দিশা আর আজ তানভী। চোখের সামনে আবার ও সেই বিষাক্ত স্মৃতি টা ভেসে আসছে। বেলা কিছুতে নিজেকে শান্ত করতে পারছে না। সেদিন ও এই একই অবস্থা হয়েছিলো বেলার।

——————-
স্মৃতি পট…

বেলার সাঁঝ এর প্রতি আসক্তি টা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এস আর গ্রুপে জয়েন করার পর সাঁঝ এর সাথে তার প্রায় কথা হয়। প্রায় সময়ে সে সাঁঝ কে তার বাইক করে ড্রপ করে। সে আস্তে আস্তে সাঁঝ এর সাথে অনেকটাই সহজ হতে শুরু করেছে প্রায় সময়ে দেখা যায় তাদের দুজন কে। একেই পাবলিক উত্তপ্ত হয়েছিলো বেলার সাঁঝ এর সাথে ফটো দেখে আর তার সাথে বেলার লেখা ক্যাপশন টা ও গদের উপর বিষফোড়ার মত কাজ করছে এখন। মিডিয়া পাবলিক ভেবে যাচ্ছে নিশ্চয়ই বেলার সাথে সাঁঝ এর কোনো রিলেশন আছে। নাহলে যে সাঁঝ রওশন সব মেয়ের থেকে দূরে থাকে সেই এখন একটা মেয়ের সাথে ঘুরে কেনো।
.
. এদিকে বেলার পাগলামি টা ও দিন দিন বেড়ে চলেছে। সে এখন জানে সে খুব গভীর ভাবে সাঁঝ এর মাঝে ডুবে গেছে যেখান থেকে একমাত্র মৃত্যু তাকে টেনে বের করতে পারে। সে গভীর ভাবে ভালোবাসে সাঁঝ কে। চার মাস অতিক্রম করে ফেলেছে এস.আর গ্রুপ আর তার জীবনে সাঁঝ এর আগমন চারমাস আঠাশ দিন।
.
. আজ এস আর গ্রুপ এর থেকে তাদের একটা বড় লাইভ কনসার্ট আছে। এস আর গ্রুপ জয়েন করার পরে অনেক লাইভ প্রোগ্রাম করেছে। তবে আজকের টা সব থেকে বড় কনসার্ট। তাই প্রস্তুতির সাথে সাথে উত্তেজনাতে ভর পুর হয়ে আছে বেলা বেদ ওম রুহি নিশান।
.
–“বেলা আজকে আমাদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। নিশান বলে ওঠে।
.
–“একদম তাই আজ আমরা আমাদের স্বপ্ন পূরণ এর দোর গোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছি বেদ বলে ওঠে।
.
–“ইয়ার বেলা তুই কবে প্রোপোজ করছিস সাঁঝ কে । রুহি বলে ওঠে।
.
–” আজকে প্রোগ্রাম এর পর। বেলা লজ্জা নিয়ে বলে ওঠে।
.
–” ওরে ওরে আমাদের বেলা লজ্জা পাচ্ছে। সবাই মিলে বেলা কে ক্ষ্যাপাতে থাকে।
.
. গ্রিন রুমে বসে সবাই যখন রেডি আর ভর উত্তেজনা নিয়ে মেতে আছে। তখন বেলার মোবাইলে একটা মেসেজ আসে। বেলা ফোন নিয়ে দেখতে তার পায়ের থেকে মাটি সরে যায়। কোনো কথা বলার মত অবস্থায় নেই আর। সব কিছু তার কাছে ছন্নছাড়া মনে হচ্ছে তার কাছে। তার হাত থেকে ফোন পড়ে যেতে সবাই মিলে অবাক হয়ে যায়। বেদ ফোন তুলে হাতে নিতেই তার মুখের ভাব ও পাল্টে যায় বাকিরা দেখতে তাদের অবস্থা ও এক হয়।
.
. মোবাইল এর স্ক্রিনে ভেসে আছে। দিশা আর সাঁঝ এর কিসিং সিন । যেটা তে সাঁঝ এর পিছনের অংশ দেখা যাচ্ছে আর তার সাথে মুখের একটু খানি। আর দিশা কে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। সে দু হাত দিয়ে সাঁঝ এর কোট খামছে ধরে আছে। দেখে বোঝা যাচ্ছে এটা পিছন থেকে তোলা। আর তার সাথে একটা ভিডিও ও আছে। যে টা তে সাঁঝ চোখ বন্ধ করে বসে আছে আর তার কোলে বসে আছে দিশা। সাঁঝ এর হাত দিশার কোমর জড়িয়ে আছে। আর দিশা তার মুখ নিয়ে সাঁঝ মুখের ওপর বুলিয়ে নিচ্ছে। এই মুহূর্তে সাঁঝ এর ড্রেস এর অবস্থা খুব করুন। শার্ট এর বোতাম গুলো অর্ধেক খোলা। আর দিশার শরীরে আছে শুধু একটা স্পোর্টস ব্রা। চুল গুলো সব আউলে আছে। তাদের এই মুহূর্তে খুব ক্লোজ লাগছে।
.
. এগুলো দেখেই সবাই অবাক হয়ে আছে একবার হাতে থাকা ফোনের স্ক্রিন তো একবার বেলার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। বেলার অবস্থা খুব করুন। তার চোখ ছাপিয়ে পানি পড়ছে। চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। ওদের সবাই কে আরো অবাক করে দিয়ে নিজের চোখের পানি মুছে নিয়ে বেদ এর হাত থেকে ফোন নিয়ে সাঁঝ কে মেসেজ টাইপ করে।
.
.সবাই বেলার এই স্টেপ দেখে আরো অবাক হয়ে গেছে। তারা একটাক বেলার দিকে তাকিয়ে আছে। বেলা তার দিকে সবাই কে প্রশ্ন সূচক ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে ওঠে।
.
–“এটা আমি নিজে চোখে দেখেনি। আর এর সব কিছু পিছন থেকে নেওয়া হয়েছে। আমি সাঁঝ কে বিশ্বাস করি। তাই আজ আমি ওকে প্রোপোজ করব। বলে দেবো ওকে নিজের মনের কথা। বেলা দৃঢ় কন্ঠে বলে ওঠে। যদিও সে নিজেই জানে না তার কথা গুলো তার যুক্তি গুলো কত টা ঠিক। তার মনে ও অনেক ঝড় উঠেছে। তবুও নিজেকে শান্ত করে সাঁঝ এর সামনে নিজের মনের কথা খুলে বলার প্রচেষ্টা করছে।
.
. এদিকে বাকিরা সবাই চুপ করে আছে কোনো কথা বলছে না তারা ও চায় বেলা যেটা দেখেও দেখছে না সেটা যেনো ওর সামনে পরিষ্কার হয়ে যায়।
.
. লাইভ কনসার্ট এর পর বেলা অপেক্ষা করছে সাঁঝ এর জন্য। চারিদিকে বেলা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে। সাদা পর্দা দেয়া মাঝখানে পর্দা ও লাইটিং করা তার মাঝে একটা টেবিল তার ওপর গোলাপের পাপড়ি ও শ্যাম্পেন এর বোতল ও একটা গোলাপের বুকে। খুব সুন্দর করে ডেকরেট করেছে। পাশে এক জায়গা বনফায়ার এর ব্যবস্থা করেছে। বেলা পিছন মুড়ে দাঁড়িয়ে আছে তার পরনে খুব সুন্দর একটা হোয়াইট এভিনিং গাউন।
.
–“বেলা ।
.
. বেলা তার পিছন থেকে হঠাৎ সেই পুরুষালি কন্ঠ শুনতে। যে কন্ঠে তার শরীরে শিহরন জেগে যায়. বেলা পিছন ফিরতে দেখতে পায় সাঁঝ দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখে কিছুটা বিরক্তির ছাপ।
.
–” এইসব কি এখানে কেনো ডাকলে আমাকে। সাঁঝ বিরক্ত হয়ে বলে ওঠে।
.
. বেলা কোনো কথা না বলে সাঁঝ এর দিকে এগিয়ে আসে। তার মনে প্রশ্ন থাকলেও সেগুলো কে সাইড করে নিজের মনের অভিব্যক্তি জানানোর উদ্যোগ নেই।
.
–” সাঁঝ ।বেলা মৃদু ভাবে বলে ওঠে। এই প্রথম সে তার মুখে সাঁঝ এর নাম নেই।
.
–” তোমাকে আমার কিছু বলার আছে। বেলা টেবিল থেকে গোলাপের বুকে টা নিয়ে সাঁঝ সামনে ধরে হাঁটু মুড়ে নিচে বসে।
.
. বেলা কিছু বলতে নিলেই সাঁঝ হাত দেখিয়ে থামিয়ে দেয়।
.
–“বাই এনি চান্স তুমি আমাকে এখন তোমার ভালোবাসার কথা জানাতে চাইছো না তো। ওহ মাই গড। লাইক সিরিয়াসলি। সাঁঝ বেলার দিকে তাকিয়ে মাথায় হাত বসে পড়ে। কিছুক্ষণ পর বেলার সামনে এসে সজোরে বেলার গালে একটা থাপ্পড় বসায়। বেলার হাতের থেকে গোলাপের বুকে টা নিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। বেলা থাপ্পড় টা সামলাতে না পেরে মাটিতে পড়ে। অবাক হয়ে যায় সাঁঝ এর রূপ দেখে। আসতে আসতে উঠে দাঁড়ায় বেলা। করুন চোখে সাঁঝ এর দিকে তাকায়।
.
–“তোমার সাথে দুদিন ভালো করে কথা কি বলেছি। তুমি আমাকে ভালোবেসে ফেললে। তুমি এখন কিসে পড় হ্যাঁ কিসে পড়। ক্লাস ইলেভেন আর এখনই প্রেমের জুয়ারে নিজের গা ভাসিয়ে দিয়েছ। বাচ্চা একটা মেয়ে নাক টিপলে দুধ বেরিয়ে আসবে আর এখনই এই সব। সাঁঝ বেলার মুখে শক্ত করে চেপে বলে ওঠে।
.
. বেলা কোনো কথা না বলে চুপ করে তাকিয়ে আছে সাঁঝ এর মুখের দিকে যেখানে এখন রাগ দেখতে পাচ্ছে।
.
–“নিজের পড়াশোনা নিয়ে ভাবো বুঝতে পেরেছ।এই সাঁঝ কে পাওয়া অত সহজ নয়। বলেই বেলা কে ধাক্কা মেরে চলে যায়।
.
. বেলা উল্টো দিকে ঘুরে পড়ে আছে। চোখের পানিতে বন্যা বয়ে যাচ্ছে। বুক ফেটে কান্না বেরিয়ে আসছে। সে উঠে দাঁড়িয়ে পিছন ঘুরতে যেনো তার বুকটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। সামনে পড়ে থাকা ফুল গুলোর মত। ফুল গুলো পা দিয়ে পিষে গেছে।
.
.বেলা হাঁটু মুড়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। তার বুক ফেটে যাচ্ছে। তার ভালোবাসার পরিণতি দেখে। ভালোবাসে না বললেই পারতো। এই ভাবে তার দেয়া বুকে টা কে পা দিয়ে পিষে দিতে পারলো। কিছুক্ষণ পর বেদ নিশান রুহি ওম এসে বেলা কে জড়িয়ে নেয়। বেলা এবার উচ্চস্বরে কেঁদে ওঠে।
.
. পরের দিন বেলার জন্য সবাই মিলে এস আর গ্রুপ এর সাথে কনট্রাক ক্যানসেল করে। যেখানে তাদের বেলার কষ্ট সেখানে তারা কিছুতেই কাজ করতে চায় না বেদ নিশান ওম রুহি ওরা গিয়ে কনট্রাক ক্যানসেল করে আসে। বেলা যায়নি সে অনাথ আশ্রমে আছে। সে বেশির ভাগ এখানে কাটায়। পাঁচ বছর বয়সে নিজের বাবা মা কে হারিয়েছে। তার বাবা মা কার ব্লাস্টে মারা যায়। তারপরে তার মামা মামী তাদের বাড়িতে চলে আসে। বেলারা ও মোটামুটি বড়লোক বেলার বাবার ব্যবসা ছিল একটা। কিন্তু তার মামা মামী আসার পর তার জীবনের আরো অবনতি ঘটে। তার মা বাবার চলে যাওয়ার পর কষ্ট আরো বেড়ে যায়। তার মামী তার নিজের বাড়িতে তাকে দিয়ে কাজ করাতে থাকে দিন রাত কষ্ট দিত। তারপরে তার জীবনে আসে বেদ নিশান রুহি ওম এর মত বন্ধু যারা তাকে সব সময়ে তাকে আগলে রাখে। তারপর থেকে সে নিজের কাজ নিজে দেখা শুরু করে। এই অনাথ আশ্রম খোলে তার বাবার রেখে যাওয়া তার জন্য টাকা দিয়ে। বাকি সব কিছুত তার মামী নিয়ে রেখেছে।
.
. এইসব ভাবতে ভাবতে বেলা তার ফোনের টোন এর আওয়াজ এর ফলে ঘোর কেটে বেরিয়ে আসে। ফোন হাতে নিতেই দেখে সাঁঝ এর নম্বর থেকে কিছু মেসেজ এসেছে। কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন হাতে নিতেই চোখ ফেটে পানি আসে বেলার।
.
–“তোমাদের মত মেয়েদের কে আমি খুব ভালো করে চিনি। তোমরা টাকার জন্য নিজেকে ও বেঁচে দিতে পারো। বড়লোক ছেলেদের ফাঁসানো হচ্ছে তোমাদের কাজ। আমি তোমাকে অন্য রকম ভেবেছিলাম কিন্তু তুমি ও এক। নিশ্চয়ই তোমার মায়ের ও এমন স্বভাব ছিল। তোমরা তো আসলে এমন। তোমাদের শিক্ষা এমন। কৌশলে বড়লোক ছেলেদের কে নিজের বসে করা। আচ্ছা এইসব না করে দেহ ব্যবসা শুরু করলেই তো পারো। দেখব না কি তোমার জন্য আমার কোনো ক্লাইন্ড কে। যাকে তুমি তোমার শরীর দিয়ে নিজের কাছে আটকে রাখতে পারো। আমার সাথে তোমার নাম জড়িয়ে আর কোনো কিছু না দেখি ব্ল্যাডি স্ল্যাট।”
.
. নিচে তার করা ফটো পোস্ট এর ক্যাপশন গুলো স্ক্রিন শট করে পাঠিয়েছে। আর তার সাথে একটা মিডিল ফিঙ্গার এর ইমোজি।
.
. বেলা সাঁঝ এর করা মেসেজ দেখে হতবিস্ময় হয়ে গেছে মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না। চোখ ফেটে পানি আসছে। বুকের মধ্যে রক্তপাত শুরু হয়ে গেছে। বুক ফেটে কান্না আসতে চাইছে কিন্তু না সে আর কান্না করবে না। সাঁঝ তাঁকে এই ভাবে বলতে পারল। তার সম্পর্কে এই ভাবে তার মাকে নিয়ে কথা বললো তাকে স্ল্যাট এর সাথে তুলনা করলো। তার ভালোবাসা কে এই ভাবে অপমান করলো। না তার জন্য আর কাদবে না বেলা।
.
. যে ভালোবাসাতে নেশায় আসক্ত হয়ে গিয়েছিল যাকে ভালোবেসে ছিল সেই তাকে স্ল্যাট বলেছে তার মাকে ও তুলে ধরেছে। যার জন্য তার মনে ভালোবাসা অতিরিক্ত নেশা আসক্তি পাগলামি ভরা ছিল আজ থেকে সেখানে থাকবে এক রাশ ঘৃণা। শুধু ঘৃণা। আরো কিছুই না।

——————

–“বেলা বেলা । বেদ এর ধাক্কা দেয়ার জন্য পুরোনো বিষাক্ত স্মৃতি পট থেকে বেরিয়ে আসে বেলা।
.
–” আমাদের নাম অ্যানাউন্সমেন্ট হয়ে গেছে। আমাদের স্টেজ যেতে হবে। বেদ বলে ওঠে।
.
–“ওকে । বলে বেলা উঠে দাঁড়ায়। তারপর কিছু মনে পড়তে আবার ও বলে ওঠে।
.
–” চেঞ্জ দ্য মিউজিক অ্যান্ড টেক দিস। বেলা বেদ এর হাতে একটা লিস্ট ধরিয়ে বলে ওঠে।
.
–” হোয়াট । কিন্তু কেনো এই মুহূর্তে মিউজিক কেনো চেঞ্জ করা হবে। আর নিউ মিউজিক মানে। বেদ হকচকিয়ে বলে ওঠে।
.
–“এতে সব কিছু দেয়া আছে এই মতো সব কিছু হবে। বলে বেলা বেরিয়ে যায় বেদ হতভম্ব করে দিয়ে।
.
–“তোমার ভালোবাসা না আমি ও দুমড়ে মুচড়ে মাটিতে মিশিয়ে দেবো তৈরী থাকো আজকের শো দেখার জন্য তুমি। বেলা নিজের মনে মনে বলে ওঠে।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে…
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here