তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায় পর্ব ৯+১০

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana (Saba)
#পর্ব_৯+১০
–“দিশা! তুমি এখানে। মানে কবে ব্যাক করলে। খানিকটা হেসে বলে ওঠে সাঁঝ।
.
–“এই তো কিছুক্ষণ মাত্র। আর এয়ারপোর্ট থেকে সোজা তোমার কাছে চলে আসলাম। দিশা হেসে দু হাত দিয়ে সাঁঝ এর গলায় জড়িয়ে রেখে বলে ওঠে।
.
–“আই মিস ইউ বেব। সাঁঝ কে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা দিয়ে বলে ওঠে দিশা।
.
–“ওকে ওকে । সাঁঝ হেসে বলে ওঠে।
.
. এদিকে বেলার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। বেদ নিশান ওম রুহি অসহায় মুখ নিয়ে বেলার দিকে তাকিয়ে আছে। এদিকে সারা আর সারিফ বেলার চোখে পানি দেখে অবাক হয়ে যায়।
.
–“মিষ্টি ভাবি। কি হয়েছে তোমার তোমার চোখে পানি কেনো। সারা বলে ওঠে।
.
. এদিকে সারার কথা শুনে সাঁঝ পিছনে ঘোরে দিশা কে ছাড়িয়ে। অবাক হয়ে বেলার দিকে তাকায়। যেই মুখে এতক্ষণ আনন্দ খুশির ঝলক দেখা যাচ্ছিলো। এখন সেই মুখে ফুটে আছে অসহ্য ব্যাথা বেদনা। যেটা দেখে সাঁঝ এর বুকের মধ্যে ছ্যাৎ করে ওঠে।
.
–“ভাবি কি হয়েছে তোমার? সারিফ বলে ওঠে।
.
–” কিছু না। তোমরা অযথা চিন্তা করছো। আসলে আমার হাতে চিলি পাউডার এর গুড়ো লেগেছিল আর সেটা ভুল করে চোখে চলে গেছে। বেলা মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলে বলে ওঠে।
.
–“বেলা। আর ইউ ওকে ।দেখে কাজ করবে তো। এত কেয়ারলেস কেনো তুমি সাঁঝ বেলার দিকে আসতে আসতে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ বেলার কাছে এসে হাত দিয়ে বেলা কে ধরতে গেলে বেলা সরে দাঁড়ায়।
.
–” বেদ নিশান ওম রুহি চল আমাদের প্র্যাক্টিস দেরি হয়ে যাচ্ছে। বেলা একটা তাচ্ছিল্য ভরা হাসি দিয়ে সাঁঝ এর দিকে না তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
. এদিকে বেদ নিশান এরা জানে বেলার কি হয়েছে। তারা এখন এটা ও জানে যে বেলা এই মুহূর্তে প্রচুর পরিমাণে ভেঙে পড়েছে।
.
–” হ্যাঁ হ্যাঁ। আমাদের দেরি হচ্ছে চল। বেদ তাড়াতাড়ি করে বলে ওঠে।
.
–“আরে এটা বেলা না। দিশা হেসে বলে ওঠে।
.
–“হ্যাঁ এটাই বেলা। আর বেলা এ হলো দিশা মির্জা এস.আর গ্রুপ এর ন্যাশনাল ট্রেজার। সুপার মডেল। আর ওর নিজের একটা ফ্যাশন লেভেল আছে যা ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির টপে আছে। আর হ্যাঁ পরেশ আঙ্কেল এর মেয়ে আর আমার ফ্রেন্ড। সাঁঝ হেসে দিশা কে দেখিয়ে বলে ওঠে।
.
–“হে বেলা। বলে দিশা বেলা কে জড়িয়ে ধরে।
. বেলা কোনো কথা না বলে শুধু বিষাদময় একটা হাসি দেয়।
.
–“হে সারিফ সারা কেমন আছো তোমরা। দিশা বলে ওঠে।
.
–“অনেক ভালো। সারা মিষ্টি হেসে বলে ওঠে।
.
–” সাঁঝ তুমি অফিসে যাচ্ছ তো চলো আমিও যাব। দিশা হেসে বলে ওঠে।
.
–” হুম চল । বলেই সাঁঝ আর দিশা বেরিয়ে যায়।
.
. এদিকে পিছনে দাঁড়ানো বেলা ওদের যাওয়া দেখতে থাকে। চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। এতক্ষণ আটকে রাখলে ও এখন অঝোর ধারায় গড়িয়ে পড়ছে গাল বেয়ে। বেলা কোনো কথা না বলে মিউজিক রুমে চলে যায়। ওর এখন নিজেকে শান্ত করার প্রয়োজন।
.
. এদিকে বেদ নিশান ওম রুহি ও পিছন পিছন ছুটে যায়। এই মুহূর্তে তারা বেলা কে একা ছাড়তে চাইছে না। সারা আর সারিফ ওদের দিকে তাকিয়ে আছে হতভম্বের মত যা হচ্ছে সব ওদের মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। ওরা দাঁড়িয়ে থেকে ওদের পিছনে যায়।
.
. মিউজিক রুমে আসতে দেখে দেখে চেয়ারে বসে ইলেকট্রনিক গিটার নিয়ে হার্ড রক টন প্লে করছে। গিটার এর আওয়াজ পুরো রুমের চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বেলা চোখ বন্ধ করে আছে। রুমের এক পাশে দাঁড়িয়ে বেদ নিশান রুহি ওম অসহায় হয়ে বেলার দিকে তাকিয়ে আছে। বেলা যখন খুব কষ্ট পায় যখন নিজেকে আর সামলাতে পারে না তখন ও মিউজিক আর ডান্স এর মধ্যে ডুবে যায় তখন হার্ড থেকে হার্ড মিউজিক প্লে করতে থাকে।আর ডান্স ও ঠিক পুরো উন্মত্ত হয়ে থাকে তখন। সারা আর সারিফ। মুখে হাসি নিয়ে বেলার গিটার বাজানো দেখছে। বেলা যে এত ধরনের গিটার প্লে করতে পারে তারা জানত না প্রথমে একটু অবাক হয়েছিলো বটে।
.
. বেলা গিটার বাজাতে বাজাতে চোখ বন্ধ করে আছে। চোখের সামনে চলে আসছে কিছু পুরোনো বিষাক্ত স্মৃতির দৃশ্য পট। আসতে আসতে যেনো বেলার দম আটকে আসছে। শেষে আর না পেরে গিটার এর তার টেনে ছিড়ে ফেলে। গিটার টা কে পাশে ছুড়ে ফেলে। চোখ খুলে উঠে দাঁড়িয়ে যায়। বেলার হাত থেকে রক্ত পড়ছে। গিটার এর তারে জোরে টান দেয়ার ফলে হাত কেটে গেছে। এদিকে বেদ নিশান বেলার কাছে ছুটে যেতে নিলে বেলা পাশ কেটে বেরিয়ে যায়।
.
.আর বাকিরা সব এখনও হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর তারাও ছুটে যায়। বাইরে এসে দেখে বেলা টেবিলে বসে খাচ্ছে। চোখ মুখ লাল রক্তের মত হয়ে গেছে চোখে পানি টলমল করছে। কিন্তু বেলা সেটা কে পড়তে দিচ্ছে না।
.
–“আরে মিষ্টি ভাবি তুমি ভাই এর রাখা খাবার টা খাচ্ছ। বাহ কত ভালোবাসা। সারা হেসে বলে ওঠে।
.
–” ওহহো ভাবি তোমার খিদে পেয়েছিল তাই তুমি কান্না করছিলে। সারিফ হেসে বলে ওঠে।
.
. বেলা কোনো কথা না বলে চুপ চাপ খেয়ে যাচ্ছে। এদিকে বেদ নিশান অবাক হয়ে দেখছে বেলার লাল হয়ে ফুলে যাওয়া চোখ মুখের দিকে।
–” বেলা খাবার টা কি খুব ঝাল নাকি। রুহি বলে ওঠে।
.
–“হোয়াট দ্য হেল বেলা। তুই এই খাবার কি করে খাচ্ছিস এতে তো প্রচুর ঝাল। বেদ চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
–“হোয়াট! বেলা এটা তুই কি করে করতে পারলি। তুই জানিস তোর ঝাল খাওয়া বারণ। খেলে তোর প্রবলেম শুরু হয়। তার পর ও কি করে। রুহি চিৎকার দিয়ে বলে ওঠে।
.
–“নিশান জলদি মেডিসিন এর ব্যবস্থা কর। বেদ নিশান কে বলে।
.
–“ইয়েস । আমি এক্ষুনি আসছি। বলে নিশান ছুটে বেরিয়ে যায়।
.
. এদিকে সারা সারিফ অবাক হয়ে দেখছে তাদের মাথায় কিছু ঢুকছে না। কোথায় থেকে কি হয়ে গেলো কিছুই বুঝতে পারছে না। এদিকে বেলার থেকে খাবার এর প্লেট টেনে সরিয়ে নেয়। বেলার চোখ থেকে এবার পানি গড়িয়ে পড়ছে চোখ ভয়ঙ্কর ভাবে লাল হয়ে ফুলে গেছে। বেদ রুহি ওম দু দিকে থেকে বেলা কে জড়িয়ে রেখেছে।
.
. বেলা আসতে আসতে নিসতেজ হয়ে পড়ছে। চোখ দুটো বুঝে আসছে। আসতে আসতে ঢোলে পড়ে বেলা।

——————-

–“বেব । আজ অনেক দিন পর এখানে এসে সব কিছু আবার নতুন লাগছে। আমাদের কত স্মৃতি আছে তাই না দিশা পিছন থেকে সাঁঝ এর গলায় হাত রেখে বলে ওঠে।
.
–” হুম ঠিক তাই। এখন তুমি নিজের কেবিনে যাও। আমার কিছু ইমপটেন্ট কাজ পেন্ডিং আছে সেগুলো করতে হবে। সাঁঝ নিজের গলায় থেকে দিশার হাত ছাড়িয়ে বলে ওঠে।
.
–” ইয়ার সাঁঝ ।চলো না আজ আমরা আগের মত ঘুরতে যাই। শুধু তুমি আর আমি। দিশা আবার ও সাঁঝ এর ঘাড়ে মুখ রেখে পিছন থেকে জড়িয়ে বলে ওঠে।
.
–” আমার কাজ আছে দিশা। আর প্লিজ এটা আমার অফিস। তাই সোজা হয়ে দাঁড়াও। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–“বেবি । দিশা কিছু বলতে নিলে সাঁঝ এর ফোন বেজে ওঠে।
.
. সাঁঝ এর ফোনে সারিফ নাম সো হতেই সাঁঝ চমকে ওঠে। অজানা কোনো কারণে বুকের মধ্যে ব্যাথা হতে শুরু করে। তাড়াতাড়ি করে ফোন কানে ধরতে ওপারে থেকে ভেসে আসে সারিফ উদ্বিগ্ন গলা।
.
–” ভাই ভাবি।
.
–“কি হয়েছে সারিফ। সাঁঝ চিন্তা ভরা কন্ঠে বলে ওঠে।
.
–“ভাই ভাবি সেন্সলেস হয়ে গেছে আধঘণ্টা হয়ে গেছে। তারপর একটু আগের বেলার খাবার খাওয়ার কথা বলে ওঠে সারিফ।
.
–” হোয়াট দ্য হেল সারিফ। এতক্ষণ পর আমাকে জানাচ্ছিস। আর তোরা কি করছিলিস ওকে কেনো বাধা দিস নি। সাঁঝ রাগে ভয়ে চিন্তায় চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
.এদিকে সাঁঝ এর এমন চিৎকার শুনে দিশা সাঁঝ এর কাছে হাত জড়িয়ে ধরতে সাঁঝ ঝটকা দিয়ে দিশার হাত সরিয়ে দেয়। চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
.
. এদিকে রুমের মধ্যে মেঝেতে পড়ে আছে দিশা। সাঁঝ ওকে এত জোরে ধাক্কা দিয়েছে যে তাল সামলাতে না পেরে মেঝেতে পড়ে যায়। রাগী চোখে সাঁঝ এর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর হঠাৎ বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে। সাথে সাথে সে ও ছুটে বেরিয়ে যায়।

————-

–শাওয়ার এর নিচে দাঁড়িয়ে আছে। পিঠ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। পিছন থেকে এই দৃশ্য যতো দেখছে নিজের ইচ্ছা বেড়ে যাচ্ছে। নিজেকে আর আটকে রাখতে পারে না। নিজের ড্রেস খুলে পিছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে নেয়।
.
–“আই মিস ইউ বেবি। তোমার কাছে আসার জন্য অপেক্ষা করছিলাম আর এম।
.
–” তাই নাকি। তাহলে সাঁঝ এর কি হবে। পিছন থেকে হ্যাচকা টানে সামনে ঘুরিয়ে এনে কোমর ধরে দেয়ালের সাথে চেপে বলে ওঠে।
.
–“রনি বেবি। সাঁঝ কে তো আমার চাই। প্রতিশোধ নিতে। কিন্তু এখন আমার তোমাকে চাই। বলেই ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরে। দুজনে মেতে বন্য শরীরের প্রেমে। ডুবে যায় একে অপরের মাঝে। শরীরি খেলায়। বেশ কিছুক্ষণ মজা নেয়ার পর। ঠোঁট থেকে ঠোঁট সরিয়ে বলে ওঠে রনি।
.
–” তোমার কাজ কতদূর হল তানভি । সব রেডি তো। রনি বলে ওঠে।
.
–“কাজ। হা হা হা। সেটা তো শুরু হয়ে গেছে বেবি। তানভি বাঁকা হেসে বলে ওঠে। তার পর চোখ মুখ শক্ত করে আবার ও বলে ওঠে। আমাকে ইনসাল্ট করা। আমাকে রিজেক্ট করেছিলো ওই সাঁঝ রওশন। তাই ওকে তো এবার শেষ হতে হবে।
সব প্ল্যান মত এগিয়ে যাচ্ছে বেবি। শুধু সময়ের অপেক্ষা। তারপর আমি ও দেখি ওই সাঁঝ কি ভাবে নিজেকে এই তানভির মায়া জাল থেকে বেরোতে পারে।
.
–“ইয়েস ওকে তো আমি শেষ হতে দেখতে চাই ওর জন্য আমি বেলা কে পাই নি। ওর জন্য আমি লিডারশিপ হারিয়েছি। সবার সামনে আমাকে ও অপমান করেছে সেই অপমান এর বদলা তো আমি নেবো। সব হিসেব পাই টু পাই মিলিয়ে নেবো। এই আর এম রনি মেহতা কখন ও নিজের অপমান ভোলে না। আমার শিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। ওকে তো আমি শেষ করেই ছাড়ব। রনি দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।
.
–“বেলা কে পাওয়ার জন্য ওর মামী অর্থাৎ ওর সো-কল্ড মা কে টাকার লোভ দেখিয়ে ওকে আমার করে নিতে চেয়েছিলাম। টাকা দিয়ে ওই মহিলা কে বশ ও করে নিয়েছিলাম কিন্তু শেষ মুহূর্তে ওই সাঁঝ এসে সব কিছু গুলিয়ে দেয়। বেলা কে বিয়ে করে নেয়। আমার শিকার কেড়ে নেয় ওই সাঁঝ রওশন। কিন্তু আমি এত সহজে মানব না। বেলা কে তো আমার চাই চাই। যে কোনও উপায়ে। রনি দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।
.
#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana (Saba)
#পর্ব_১০
…গভীর ঘুমের মাঝে ও মাথায় ক্রমাগত ঠোঁটের উষ্ণ স্পর্শ পাচ্ছি । কপালে বারবার তার ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে চলেছে। আর তার সাথে পানির ও অস্তিত্ব ও পাচ্ছি। ঘুমের মাঝে ও বুঝতে পারছি না আমার গায়ে পানি কোথায় থেকে পড়ছে। আচ্ছা বৃষ্টি হচ্ছে নাকি। আর তার সাথে ক্রমাগত ফিসফিসিয়ে আমাকে ডেকে চলেছে।
.
–“বেলা।
.
.বেলা আর চোখ বুঝে থাকতে পারে না আসতে আসতে চোখ খুলে তাকায়। সাথে সাথে যেনো হামলা হয়ে যায় ওর মুখের ওপর। সারা মুখের ওপর চুমু বর্ষণ হতে শুরু করে। বেলা পুরো হকচকিয়ে গেছে। সে সাঁঝ এর কোলের মধ্যে বুকের সাথে লেগে গুটিয়ে আছে। আর তাকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে রেখেছে সাঁঝ। মুখ একটু ঘোরাতে ওদের থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে দিশা। আর সাথে চোখের পাতায় ভেসে বিষাক্ত স্মৃতি পট। বেলা সাঁঝ কে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরানোর চেষ্টা করে।
.
. সাঁঝ এতক্ষণ পর বেলা কে চোখ খুলতে দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারিনি তাই রুমের মধ্যে যে সবাই আছে সেটা ও ভুলেই গেছিলো। বেলার ধাক্কা খেয়ে বাস্তবে ফেরে। যদিও ওর লাজ লজ্জা একটু কম। এতক্ষণ সবাই ওদের দিকে মুগ্ধ হয়ে দেখছিল। সাঁঝ একটু সরে যেতে বেলা সাঁঝ এর কোলে থেকে বিছানা হেলান দিয়ে বসে যায়।
.
. বেলা কে সাঁঝ এর থেকে সরে যেতে চারজন চার দিকে থেকে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে। বেদ নিশান ওম রুহি। রুহি তো আরেকটু হলে কেঁদে দেবে এমন অবস্থা।
.
–“এই আমাকে তোমাদের সাথে নাও না। সারা মুখ টা কাঁদো কাঁদো বানিয়ে বলে ওঠে।
.
. এদিকে সারার কথা শুনে সবাই হেসে ফেলে বেদ নিশান দুজন দু দিকে একটু সরে গিয়ে সারা কে জায়গা করে হাত বাড়িয়ে দেয়। সাথে সাথে সারা গিয়ে বেলার গলা জড়িয়ে ধরে। ওরা পাঁচ জন এক সাথে বেলা কে জড়িয়ে রেখেছে। বেলা ও চোখে পানি আর মুখে এক টুকরো হাসি নিয়ে ওদের জড়িয়ে রেখেছে। ও জানে ওর এই চার বন্ধু তাকে কত ভালোবাসে। তার একটু কিছু হলেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে যায়।
.
. সাঁঝ বিছানার কিনারে বসে ওদের এই মুহূর্ত টা দেখছে আর ভাবছে ওদের মধ্যে বন্ধুত্ব পূর্ণ ভালোবাসা টা।
.
–“ভাবি তুমি ঠিক আছো। সারিফ বলে ওঠে। সে ও এতক্ষণ রুমের মধ্যেই ছিল।
.
–” হে বেলা। ঠিক আছো তুমি এখন। কি হয়েছিলো তোমার হ্যাঁ। জানো আজ কত কাজ ছিল অফিসে শুধুমাত্র তোমার জন্য এস আর সব কাজ ফেলে ছুটে এসেছে। সব মিটিং ক্যানসেল করিয়েছে। তুমি একটু সাবধানে থাকতো পারনা। আজকে সাঁঝ আর আমার ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান ছিল। দিশা বিরক্ত হয়ে বলে ওঠে।
.
–” মাফ করবেন ম্যাম। আমার জন্য আপনাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটেছে। আপনাদের উচিত হয়নি এত কাজ ফেলে সামান্য একটা কারণে এখানে ছুটে আসা। তাছাড়া আমি আপনাদের জানায় ও নি। আপনাদের আসার কোনো দরকার ছিল না। এখন আপনারা যেতে পারেন। আপনাদের কেউ আটকে রাখেনি। আমার জন্য আমার বন্ধুরা যথেষ্ট। বেলা তাচ্ছিল্য পূর্ণ ভাবে বলে ওঠে।
.
. রুমের সবাই বিরক্তি নিয়ে দিশা কে দেখছে। আর বেলার বন্ধুরা রাগে ফুসছে।
.
–“ভাই এখন তুমি দিশার সাথে যেতে পারো। আমরা ভাবি কে দেখে রাখব। ।সারিফ এবার কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে ওঠে।
.
–” সাঁঝ বেবি দেখো বেলা তো এখন ঠিক আছে। আর তার সাথে এরা ও ওকে দেখে রাখবে বলছে। আর তাছাড়া বেলা কোনো বাচ্চা মেয়ে নয়। চলো আমরা বেরিয়ে পড়ি। দিশা সাঁঝ কাছে এসে গায়ে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বলে ওঠে।
.
–” আমি কোথাও যাবো না দিশা। আর আমি তোমাকে এটা ও বলিনি যে আমি তোমার সাথে কোথায়ও যাব। তুমি এখন আসতে পারো। সাঁঝ খানিকটা রুক্ষ ভাবে বলে ওঠে।
.
–” বেবি । দিশা আবার ও কিছু বলতে নিলে।
.
–“জাস্ট লিভ। চিৎকার করে বলে ওঠে সাঁঝ।
.
. সাঁঝ এর এমন ধমক শুনে দিশা মুখ ফুলিয়ে বেরিয়ে যায়। বাকি সবার দিকে ইশারা করতে সবাই আসতে আসতে কেটে পড়ে। সাঁঝ উঠে দরজা লক করে আবার ও বিছানায় ফিরে আসে। বেলা চোখ বন্ধ করে বসে আছে। সাঁঝ বেলার কাছে গিয়ে এক টান মেরে বেলা কে নিজের বুকের ওপর ফেলে।
.
. বেলা এতক্ষণ চোখ বুঝে ছিল তাই হটাৎ এমন টান খাওয়াতে চমকে ওঠে। চোখ খুলে সামনে তাকাতে দেখে তার দিকে ছলছল করে গভীর নীল চোখ জোড়া তাকিয়ে আছে তার দিকে। এই চোখে কষ্ট যন্ত্রণা অসহায়ত্ব ফুটে আছে। চোখ গুলো লাল হয়ে ফুলে আছে। মুখের দিকে তাকাতে দেখতে পায় মুখ টা শুকনো হয়ে আছে। বেলা আসতে আসতে নিজের হাত উঠিয়ে সাঁঝ এর গালে রাখে। আলতো হাতে সাঁঝ এর গালে স্লাইড করতে থাকে। সাঁঝ বেলার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। যে চোখে এখন তার জন্য কষ্ট ভালোবাসা চিন্তা দেখতে পাচ্ছে। সাঁঝ নিজের মুখ আলতো ঘুরিয়ে বেলার হাতে নিজের ঠোঁট ছোঁয়ায়। বেলা সাঁঝ এর ঠোঁটের স্পর্শে কেঁপে ওঠে। বেলা নিজের মুখ সাঁঝ এর মুখের কাছে সরিয়ে আনে। হঠাৎ সাঁঝ এর কাঁধের দিকে চোখ যেতেই বেলা থমকে যায়। বেলার হাত সাঁঝ এর গালে থেকে নিচে পড়ে যায়। চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। বেলা কোনো কথা না বলে সাঁঝ এর থেকে সরে আসতে নিলে সাঁঝ বেলার কোমর ধরে আটকায়।
.
. সাথে সাথে বেলা এক ঝটকায় সাঁঝ এর হাত নিজের কোমর থেকে সরিয়ে দেয়। তার শরীরে যেনো কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। সাঁঝ অবাক হয়ে বেলার দিকে তাকিয়ে হাত এগিয়ে আবারো বেলা কে ধরতে গেলে বেলা চিৎকার করে ওঠে।
.
–“ডোন্ট টাচ মি। ছোঁবেন না আমাকে। আপনার ওই হাত দিয়ে আমাকে স্পর্শ করবেন না। বুঝতে পেরেছেন ঘৃণা করি আমি। ঘৃণা করি। আপনার এই স্পর্শ এখন আমার কাছে বিষাক্ত লাগছে। দম আটকে আসছে আমার মনে হচ্ছে কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে আমাকে। যেখানে যেখানে স্পর্শ করেছে সেখানে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। আপনার এই স্পর্শ কে আমি ঘৃণা করি। আপনাকে ঘৃণা করি। আপনাকে আমি সহ্য করতে পারছি না। আর নিতে পারছিনা আমি আপনাকে। মুক্তি দিন আমাকে।এখন তো আপনার দিশা এসে গেছে। তাহলে আমাকে কেনো আটকে রেখেছেন আপনি ছেড়ে দিন আমাকে মুক্ত করে দিন আমাকে। বেলা চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ অবাক হয়ে বেলা কে দেখছে। তার চোখ মুখ পুরো লাল হয়ে গেছে। বেলার যে চোখে এতক্ষণ তার জন্য ভালোবাসা দেখেছিল। সেই চোখে ফুটে আছে এখন একরাশ ঘৃণা। কষ্ট যন্ত্রণা অভিমান রাগ।
.
–“আপনার এই মিথ্যা ভালোবাসার নাটক বন্ধ করুন এবার। আপনি আমার জীবন টা পুরো নরক বানিয়ে দিয়েছে। পুরো নাটকের রঙ্গ মঞ্চ। যখন মনে হবে কষ্ট দেবেন যখন মনে হবে মিথ্যে ভালোবাসা দিয়ে কাছে টেনে নেবেন। কেনো কেনো বলুন তো। আমি কি আপনার হাতের পুতুল। অফিসে রোম্যান্স করে ও আপনার মন ভোরেনি এখন আপনি আমাকে নিয়ে খেলতে চাইছেন। আর তারপর আবারো ছুড়ে ফেলবেন। সেটা আর কখন হবে না। কখন না। আমি থাকব না আপনার কাছে। আপনাকে আমি ঘৃণা করি শুধু ঘৃণা। বেলা চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
. বেলার কথা শুনে রাগে সাঁঝ এর কপালের রগ ফুলে উঠেছে। চোখ মুখ শক্ত হয়ে গেছে। হাত মুঠো বেঁধে রেখেছে। তার কানে বাজছে বেলার কথা গুলো ঘৃণা করি। বেলার দিকে তেড়ে যেতে গিয়ে মনে ওঠে একটু আগে বেলার বলা কথা টা আপনার স্পর্শ আমার কাছে বিষাক্ত লাগছে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। সাঁঝ উঠে বেড বক্সে থাকা কাঁচের জগ টা কে আছাড় দেয়। বেলার দিকে একবার তাকিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় দমদমিয়ে।
.
. বেলা হাঁটু মুড়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। তার বুক ফেটে কান্না আসছে। রক্তপাত শুরু হয়ে গেছে তার মধ্যে। এতদিন একটু একটু করে নিঃস্বেস হয়ে যাচ্ছে।
.
–“কেনো করলে এমন। কেনো। আমার সাথে এটা করার কি খুব দরকার ছিল। কেনো। মম বাপি তোমরা কেনো আমাকে একা করে চলে গেলে। কেনো আমাকে এই পৃথিবীতে একা ছেড়ে গেলে। আমাকে ও তোমাদের সাথে কেনো নিয়ে গেলে না।
বেলা কাঁদতে কাঁদতে বলে ওঠে।
.
. বেলা আসতে আসতে বিছানা ছেড়ে উঠে থাই গ্লাস সরিয়ে গার্ডেন যুক্ত খোলা বারান্দায় চলে আসে। এটা বারান্দা কম গার্ডেন যুক্ত ট্যারেস বলা যায়। বেলা আসতে আসতে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যায় সামনের দিকে। তার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। শাড়ির আঁচল মাটিতে টানা খাচ্ছে। চুল গুলো সব এলোমেলো হয়ে আছে। চোখ গুলো কান্নার ফলে আরও ফুলে গেছে। একদম কিনারে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে বেলা। মুখ আকাশের দিকে। রাতের আকাশে পুরো কালো মেঘে ডেকে আছে। তার জীবন ও তো কালো মেঘে ঢাকা। যেখানে শুধু এক পাহাড় সমান দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা বেদনা লুকিয়ে আছে। যেখানে নেই কোনো ভালোবাসার ছোঁয়া। পুরোটাই নিকশ কালো অন্ধকারে ঢাকা।
.
. হটাৎ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়। তার কান্না দেখে আকাশ ও কান্না করছে। এটা ভাবছে। তার পর নিজের ভাবনা দেখে নিজেই একটা তাচ্ছিল্য ভরা হাসি দেয়। তার সাথে কান্না করার মত কেউ নেই। সে এক মুহূর্তের জন্য ভুলে গেছিলো এটা ব্যাঙ্গালোর সিলিকন ভ্যালি অফ ইন্ডিয়া আর এখানে আকসার বৃষ্টি শুরু হয়ে যায় আর তার কিছুক্ষন এর মধ্যে বৃষ্টি থেমে যায়। বৃষ্টির কোনো ঠিক নেই যখন তখন বিনা নিমন্ত্রণে চলে আসে।
.
. বেলা আকাশের দিকে মুখ উচু করে চোখ বন্ধ করে নেয়। হাত দুটো ছাড়িয়ে দেয় দু দিকে। মিশে যেতে চায় এই বৃষ্টির সাথে। বৃষ্টির পানির সাথে তার চোখের পানি মিলে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। চোখের সামনে এসে ভেসে উঠছে সেই বিষাক্ত অতীতের কিছু দৃশ্য। এই রকম এক বৃষ্টির রাত ছিল সেদিন ও। আসতে আসতে ধুলো পড়ে থাকা স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে আসে।

—————–

বৃষ্টির রাত। চারিদিকে শুনসান কেউ কোথাও নেই রাস্তার পাশে চারিদিকে বৃষ্টির ফোটা মুখরিত হচ্ছে সা সা করে শব্দ হচ্ছে। এই বৃষ্টির রাতে ও রাস্তায় আছে পাঁচ জন ছেলে মেয়ে।
.
–“আরে ইয়ার আজকে প্রোগ্রাম টা সেরে বেরোতে বড় দেরি হয়ে গেলো। বেদ বলে ওঠে।
.
–” আরে ইয়ার দেরি হয়েছে বলেই তো এত সুন্দর ভাবে বৃষ্টির মজা নিতে পাচ্ছি দেখ। বেলা হাত দুটো তার দু দিকে ছাড়িয়ে দিয়ে আকাশের দিকে মুখ করে রাস্তার মাঝে ঘুরতে ঘুরতে বলে ওঠে।
.
–“ধুর পুরো ড্রেস খারাপ হয়ে গেলো এই বৃষ্টির জন্য রুহি বলে ওঠে।
.
–“আরে বেলা ওই দেখ সামনে নিশান বলে ওঠে।
.
. সবাই সামনে তাকাতে দেখে এক জন লোক রাস্তার মাঝে পড়ে আছে পাশেই পড়ে আছে তার জিনিস পত্র। চারদিকে ছড়িয়ে আছে তরকারি জিনিসপত্র। ওরা তাড়াতাড়ি গিয়ে লোকটা কে তুলতে দেখতে পায় মাথা ফেটে রক্ত পড়ছে।
.
–” লাগছে কোনো আমির বাপের বিগড়ে যাওয়া ছেলের কাজ। মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয় সাধারণ মানুষের ওপর। বেদ রেগে বলে ওঠে।
.
–” এখন ওসব ছাড় আমাদের কে এক্ষুনি ওনাকে হসপিটাল নিয়ে যেতে হবে। বেলা বলে ওঠে।
.
. দূর থেকে গাড়ির লাইট দেখতে পেয়ে বেলা উঠে দাঁড়িয়ে যায়।
.
–” তোরা ওনাকে দেখ আমি দেখছি গাড়ি দাঁড় করাতে পারি কিনা। বলে বেলা সামনে এগিয়ে যায়।
.
. দূর থেকে গাড়ি ছুটির আসছে আর বেলা ও মাঝ রাস্তা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে হাত উচু করে থামার জন্য। গাড়ি বারবার হর্ন দিচ্ছে তবুও বেলা এগিয়ে আসছে।
.
–” স্যার এক টা মেয়ে দেখুন রাস্তার মাঝখান দিয়ে এগিয়ে আসছে গাড়ির দিকে। মনে হচ্ছে মেয়েটা কোনো বিপদে পড়েছে।
.
–” ওকে ।
.
. গাড়ি এসে ঠিক বেলার সামনে থামে। বেলা তাড়াতাড়ি সরে এসে জানালা দিয়ে ড্রাইভার কে বলে ওঠে।
.
–“দেখুন সামনে একজনের খুব অবস্থা খারাপ হসপিটাল নিয়ে যেতে হবে। যদি আমাদের একটু সাহায্য করতেন। দেখুন এই বৃষ্টির রাতে কিছু পাচ্ছি না। একটু হেল্প করুন। ওনার অবস্থা খুব খারাপ। বেলা একদমে বলে ওঠে।
.
–” আকাশ দেখো কি হয়েছে। গাড়ির ভিতর থেকে একটা তীক্ষ্ণ পুরুষালি ঝংঙ্কারময় আওয়াজে বলে ওঠে।
.
. আওয়াজ শুনে বেলার হৃৎপিন্ড পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। সারা শরীরে একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়। বেলা একবার ভিতরে দিকে তাকিয়ে শব্দ এর উৎস খুঁজতে চেয়ে ও নিজেকে সরিয়ে নেয়। বেলা তাড়াতাড়ি করে বেদদের কাছে গিয়ে ধরা ধরি করে লোক টা কে গাড়িতে তুলে নেয়।
.
. বেলা গাড়ির পিছনে সবার সাথে বসে সামনে বসা ওই পুরুষালি ঝংঙ্কারময় কন্ঠের লোকটা কে দেখার চেষ্টা করে। কিন্তু সেটাও বিফলে যায়। ঘাড়ের এক অংশ ছাড়া কিছু দেখা যাচ্ছে না। কানের কাছে গলায় একটা কালো তিল ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছে না মুখের একটু দেখা যাচ্ছে হালকা দাড়ি আছে। গাড়ির হালকা আলোতে এটুকু দেখতে পাচ্ছে তার বেশি না।
.
. লোকটা কে ওরা হসপিটাল এ অ্যাডমিট করে ডক্টর এর সাথে কথা বলে তারা সবাই বাড়ি ফিরে আসে।
.
. পরের দিন স্কুলে টিফিন টাইম সবাই একসাথে বসে গ্রাউন্ডে আড্ডা দিচ্ছে তারা পাঁচজন ছাড়া ও আরও কিছু তাদের ক্লাস মেট বসে আছে। তারা এখন ক্লাস ইলেভেনে পড়ে। বসে বসে আড্ডা দিতে দিতে হঠাৎ করেই বেলার কানে আসে আগের দিন রাতের সেই তীক্ষ্ণ পুরুষালি কন্ঠ। সাথে কেঁপে ওঠে বেলা পিছন ফিরে শব্দ এর উৎস খুঁজতে থাকে তাদের থেকে একটু দূরে একটা ফোন হাতে বসে আছে আর সেখান থেকে এই আওয়াজ আসছে। বেলা ছুটে গিয়ে মেয়েটার হাত থেকে ফোন নিয়ে দেখতে থাকে। এটা কালকের রাতের লাইভ টেলি কাষ্ট হচ্ছে। ব্যাঙ্গালোর সিটি নিউ গভর্নমেন্ট লিডার শিপ। যেখানে অ্যানাউন্সমেন্ট হচ্ছে শফথ গ্রহণ এর। বিজনেস টাইকুন সাঁঝ রওশন ব্যাঙ্গালোর সিটি নিউ গভর্নমেন্ট লিডার। বেলা পুরো মুখটা তে চোখ বুলাচ্ছে। তার চোখ গিয়ে আটকে যায় ঠিক কানের নিচে একদম গলায় থাকা কালো তিল এর ওপরে। বেলা এবার পুরো কর্নফ্রম হয়ে যায় যে এই ব্যাক্তি সেই কাল রাতের ব্যাক্তি ছিল। বেলার মুখে ফুটে ওঠে একটা এক টুকরো হাসি। আর তার সাথে বুকের ভিতরে ধুকপুকানি টা আরো জোরে বাড়তে থাকে।
.
. হঠাৎ পিছন থেকে কেউ শক্ত জড়িয়ে ধরায় আতকে ওঠে বেলা ঘোর কেটে বেরিয়ে আসে স্মৃতি পট থেকে। নিজেকে হওয়ায় ভাসতে অনুভব করে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকাতে দেখে চোখ মুখ লাল করে তার দিকে তাকিয়ে আছে এক জোড়া গভীর নীল চোখ।
.
.
.
.💝💝💝
.
. চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here