তোলপাড় পর্ব শেষ

#তোলপাড়💓
#পর্বঃঃ৫৩(অন্তিম পর্ব)
#শান্তনা_আক্তার(Writer)

তারেক ও নাদিয়া ইন্সপেক্টর সাহেবকে ওদের বাড়িতে দেখে চরম আকারে চমকে ওঠে। সেই সাথে চমকে ওঠে রঞ্জিত আর আহসানকে দেখে। তারেক ও নাদিয়া ওদের দেখে বিপদের আচ করতে পারছে। ইতোমধ্যে ওদের শিরদাঁড়া বেয়ে ঘাম পড়তে লাগলো। তারেক যথাসম্ভব নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে বলল,

-আপনারা এখানে? আর রঞ্জিত তুই এতো বড় জঘন্য কাজ কি করে করতে পারলি?

রঞ্জিত গিয়ে ঠাস করে চড় বসিয়ে দিল তারেকের গালে। তারপর বলল, জঘন্য কাজ আমি করেছি? নাকি তোরা বাবা মেয়ে মিলে আমাদের ফাঁসিয়েছিস!

-কি যা তা বলছিস? আমরা কি করলাম? নিজেদের দোষ আমার আর আমার মেয়ের উপর চাপাতে এসেছিস নাকি?

-কে কার উপর দোষ চাপাচ্ছে সেটা তো এই সিসিটিভি ফুটেজই বলে দেবে। বলে ইন্সপেক্টর সাহেব সিসিটিভি ফুটেজ তারেক ও নাদিয়ার সামনে তুলে ধরলো। ফুটেজ দেখে তারেক নাদিয়া দুজনই ঢোক গিলছে। দুজনে রীতিমতো কাঁপছে। রঞ্জিত তারেকের কলার চেপে ধরে বলল, বেস্ট ফ্রেন্ড ভেবে এসেছি তোকে। তুই তার কি প্রতিদান দিলি? কি ক্ষতি করেছি তোর বলতে পারিস? কেন করলি তুই এমনটা? তারেক রঞ্জিতের হাত ছিটকে ফেলে দিল।

-যা করেছি বেশ করেছি। খুব অহংকারী তুই। বিখ্যাত এমবিবিএস ডক্টর বলে আমার মেয়েকে তোর ছেলের বউ করতে চাসনি তুই। আমার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলি। বেস্ট ফ্রেন্ড ভেবেই ফ্যামিলি রিলেশন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুই আমাকে বুঝিয়ে দিলি তুই আমার থেকে যোগ্যতায় বড়।

-তুই কি বলছিস এসব? আমি কখনো ছোট বড় ভেবে তোকে ফিরিয়ে দেইনি। আমরা আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম আমার বোনের মেয়ে স্রুতির সাথে আহসানের বিয়ে দেব। ঠিক এই কারণেই আমি রাজি হইনি। তোকে তো এটা কতবার বলেছি। আমি ভাবতে পারিনি তুই কিনা অন্য মতলব পুষে রেখেছিস মনে!

-তোর কথা বিশ্বাস করি না। বোনের মেয়ের দোহাই দিয়ে আমাকে কাটিয়েছিস তুই। আসলে তোর নিয়ত ছিলো বড় কোনো পরিবারে ছেলেকে বিয়ে দেওয়ার। আর তোর বোনের হাসবেন্ড তো তোর মতোই বিত্তবান। তাই আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দিয়েছিস।

-তুই ভুল ভাবছিস। আমি সেসব কিছুই ভাবিনি। আমার কাছে তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার থেকে তুই কম খ্যাতিমান, তা আমি কখনোই ভাবিনি। এসব ভেদাভেদ কখনোই আমার মনে আসেনি।

-হাহা, হাসালি তুই রঞ্জিত। তুইযে ছোট বড় ভেদাভেদ করিস তার জলজ্যান্ত প্রমাণ হচ্ছে তোরই পুত্রবধূ রিমি। ওতো এখানেই আছে। ওকে জিজ্ঞেস কর তোর উত্তর পেয়ে যাবি।

রঞ্জিত নিশ্চুপ সাথে রিমিও বিষয় টা অনুভব করলো। তবুও রিমি বলল, ক্ষমা করবেন কাকু। আমার আর আপনার ব্যাপার পুরোটাই আলাদা। আপনি বেস্ট ফ্রেন্ড। আর আমি অজানা একজন। আপনি তো তাও বড় ক্লাসের মধ্যে পড়েন৷ আর আমি পড়ি মিডিলক্লাসের মধ্যে। তাই আপনার সাথে আমার তুলনাটা সাজে না। যাই হোক, আপনি যে কাজটা করলেন তাকে বিশ্বাসঘাতকতা বলে। কি দরকার ছিল এসব করার? রিজেকশনের জন্য এতোটা ভয়াবহ হয়ে গেলেন? নিজের বেস্ট ফ্রেন্ডকে ধোঁকা দিলেন!

-হ্যাঁ দিয়েছি তো?

-তো আঙ্কেল, আপনি এখন আমার আর আমার বাপির চিন্তা বাদ দিয়ে আপনার মেয়েকে নিয়ে জেলের ভাতের স্বাদ নিয়ে আসুন।

আহসান কথাটা শেষ করতেই নাদিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে ওঠে, ড্যাড আমি জেলে যেতে পারবো না। আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানতে পারলে আমাকে আর মেনে নেবে না। তুমি কিছু একটা করো প্লিজ।

নাদিয়ার কথায় রঞ্জিতসহ আহসান রিমিও আশ্চর্য হয়ে গেল।

-শ্বশুরবাড়ির লোকজন মানে? তোর মেয়ে কি বিবাহিত?

-হ্যাঁ বিবাহিত।

-তুই কেন বলিসনি আগে?

-তোকে শাস্তি দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে ইচ্ছে হয়নি।

-এখন শাস্তি কে পাবে? তুই না আমি?

-এখন আমি হাসিমুখে সকল শাস্তি মাথা পেতে নেব। কারণ কয়েক ঘন্টার জন্য হলেও তোকে আমি মরণযন্ত্রণা দিতে পেরেছি। জেলে পুরে ছেড়েছি।

-আমার ভাবতেই ঘৃণা লাগছে যে তোকে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড ভেবেছি। স্যার আপনি ওকে নিয়ে যান আমার সামনে থেকে। ওর মুখ আর দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে না।

পুলিশের একটা গাড়ি তারেক ও নাদিয়াকে নিয়ে গেল। আরেকটা দিয়ে আহসানদের সবাইকে ওদের বাড়িতে দিয়ে আসলো। পুরো রাস্তা রঞ্জিত কল্পনা করতে করতে এসেছে যে উনি রিমির সাথে খুব বড় অন্যায় করে ফেলেছে। আজ মুখ ফুটে ক্ষমা চাওয়ারও সাহস হয়ে উঠছে না। এমনকি মাথাটাই উপরে তুলতে পারছে না রঞ্জিত। কিন্তু ক্ষমা তো তাকে চাইতেই হবে। এই ভেবে ভেবে বাড়ি অবধি আসলো। আর ইতস্তত না করে রঞ্জিত রিমির কাছে গিয়ে বলেই ফেলল, আমাকে কি শাস্তি দিতে চাও তুমি মা?

রিমিসহ সবাই বিস্মিত হয়ে যায় রঞ্জিতের মুখে মা ডাক শুনে। রিমিকে চুপ করে থাকতে দেখে রঞ্জিত আবারও বলে ওঠে,

-বলো মা, তুমি চাইলে আমি তোমার পা ধরে ক্ষমা চাইতে পারবো। আমার অসুবিধা হবে না।

-ছি ছি, আপনি এভাবে কেন বলছেন? আপনি আমার থেকে বয়সে বড় আপনি যদি আমার পায়ে ধরেন তাহলে মনে হবে আমার বাবা আমার পায়ে ধরে মাফ চাচ্ছে। এভাবে বলবেন না। আপনি ভুল বুঝতে পেরেছেন এটাই অনেক।

-আমার প্রায়শ্চিত্ত করা প্রয়োজন। তুমি তাহলে আমাকে কঠিন কোনো পানিশ দাও।

-না তার দরকার নেই। কেউ অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইলে সেটাই তার সবচেয়ে বড় শাস্তি বলে আমি মনে করি। কারণ সে শুধু অনুতপ্তই হয়না, সাথে তার মনে এক প্রকার ব্যথা অনুভব করে। যে ব্যথা অদৃশ্য হয়েও খুবই কষ্টদায়ক। আপনি আজ সেটা অনুভব করছেন। তাই আলাদা করে কোনো শাস্তির প্রয়োজন নেই।

-তুমি এতোকিছুর পরও আমাকে মাফ করে দিলে তাও আবার এতো সহজে?

-হুম কারণ আমি বিশ্বাস করি ধৈর্য ধরে ক্ষমা করাই প্রকৃত প্রতিশোধ। আমি এটাকে প্রতিশোধ বলে সম্মোধন করলাম কারণ ক্ষমা এমন এক প্রতিশোধ যা খারাপ থেকে খারাপ মানুষের মনেও অনুশোচনা নামক শব্দকে জাগিয়ে তোলে। আর এর ফল সর্বদা সুমধুর হয়।

-আমি মুগ্ধ হলাম তোমার ক্ষমা করার গুণে। আসলে এর শ্রেয় তোমার বাবা মাকে যায়। রঞ্জিত নাজমুলের মুখোমুখি হয়ে বললেন, জানেন বেয়াই সাহেব, আমার ছেলে একদিন আমাকে বলেছিল রিমির বাবা একজন আদর্শ বাবা। সেদিন ওই কথাটা শুনে আমি এতোটাই আঘাত পেয়েছিলাম যে আমি হার্ট অ্যাটাক করে ফেলি। যে ছেলের সুখের জন্য সারাজীবন এতো পরিশ্রম করলাম, টাকার পেছনে ছুটলাম। সেই ছেলের মুখে ওই কথাটা শুনে সত্যি সেদিন হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে ছেলে আমার ঠিকই বলেছিল৷ আমি আদর্শ বাবা নই। আপনি আপনার মেয়ের মাধ্যমে আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে আমি সত্যি কোনো বাবার কাতারে পড়ি না। ভালো খাবার, ভালো পোশাক পড়ালেই কেউ বাবা হয়ে যায়না। আর ভালো রেজাল্ট করলেই কেউ জ্ঞানী হয়ে যায়না। ভালো বাবা হতে লাগে প্রকৃত জ্ঞান। যে জ্ঞান সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্য ব্যবহারযোগ্য। যা আমার নেই। তবে আপনার আছে। তাইতো এমন মেয়ের বাবা আপনি। আমাকে মাফ করে দিয়েন আপনিও।

-আমার কাছে মাফ চেয়ে লাভ নেই। যার সাথে অন্যায় করেছেন সেই আপনাকে ক্ষমা দিয়েছে। এটাই আসল। আর আমি জানি আমার মেয়ে আমার গর্ব। আলাদা করে না বললেও আমি জানি। এখন কথা সেটা না। এখন কথা হচ্ছে আপনি তো এখনো পর্যন্ত আমার মতো মধ্যবিত্ত বেয়াইয়ের বাড়ি পা রাখলেন না। তাই যদি আপনার খেদমত করার সুযোগ পেতাম।

-এভাবে বলে আর আমার পাপের বোঝা বাড়াবেন না। আপনি আমার থেকেও অনেক উঁচু পর্যায়ের মানুষ বলে নাজমুলের সাথে আলিঙ্গন করলেন। ওদিকে আহসান ওর কপালে হাত ছুঁইয়ে রিমিকে Salute জানালো। রিমি মুচকি হেসে চোখ সরিয়ে নিল। তারপর বলল, আচ্চা আপনারা কি এখন না খেয়ে থাকবেন, নাকি আমাদের বাড়ি যাবেন?

-তুমি থাকতে না খেয়ে থাকবো কেন? যাও গিয়ে রান্না করো। আজ তোমার হাতে রান্না খাই। তারপর কাল সকালে যাব বেয়াই বাড়ি। বেয়ানের হাতের রান্না খেতে। তারপর আড্ডা দিয়ে একেবারে তোমার শ্বাশুড়িকে নিয়ে আমরা আমাদের বাড়ি চলে আসবো। আর তার পরের দিন দাওয়াত দেওয়ার পালা আমাদের।

রঞ্জিতের কথায় সকলের মুখে হাসির ঝলক।

রিমি বলল, ঠিক আছে বাবা। রিমি রান্না করে সকলকে খাওয়াতে রাত ২টো বেজে গেল। নাজমুল তার বেয়াই বাড়িতেই থেকে গেল আজ। রঞ্জিত আর নাজমুল একসাথে ঘুমিয়েছে আজ। অবশ্য রঞ্জিতই বায়না ধরেছে দুই বেয়াই আজ একসাথে ঘুমাবে। এদিকে চারটা চোখ এখনো পর্যন্ত জেগে আছে। বারান্দায় বসে নিশি দেখছে। রিমি আহসানের বুকে মাথা ঠেকিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ছে। কেউ কিছুই বলছে না। আজ ওরা স্বাধীন। কেউ নেই ওদের মাঝে যে ওদের বাঁধা দেবে। নীরবতা ভেঙে আহসান বলে ওঠে, কিছু বলবে না আজ?

-না, আজ আপনার বুকে মাথা রাখার প্লান শুধু। আজ কোনো ভয় নেই আমার মনে। নিশ্চিন্তে আপনার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে পারবো আজ থেকে।

-সব তোমার জন্য হয়েছে। আমি তোমাকে যত ধন্যবাদ দেব ততই কম পড়বে।

রিমি সোজা হয়ে বসে বলল,

-আর একটাও ধন্যবাদ শুনতে চাইনা আমি। এই শব্দটা শুনে রাগ হচ্ছে আমার এখন। আর আপনি আমাকে ধন্যবাদ কেন দিচ্ছেন? উল্টো ধন্যবাদ আমার দেওয়া উচিত আপনাকে।

আহসান ভ্রু উঁচিয়ে বলল, কেন আর কিভাবে?

-আপনি যদি আমাকে আর জিসানকে নিয়ে সন্দেহ করে খুফিয়া ক্যামেরা না লাগাতেন তাহলে এতোক্ষণে আপনারা বাপ ব্যাটা হাওয়ালাতের হাওয়া খেতেন।

-কথাটা ঠিক তবে আমি যদি কৃতজ্ঞতার ভাগীদার হই, তাহলে জিসানও। ও আমাদের বাড়িতে না আসলে তো আমার মাথায় সিসি ক্যামেরার বিষয় টা আসতোই না।

-হুম ঠিক।

-কিছুই ঠিকনা।

-কেন?

-আমার বয়স ৩০+ হয়ে গেছে।

-তো?

-আমার বয়সী ছেলের বাচ্চারাই কলেজে পড়ে।

রিমি ঠোঁট উল্টে বলল, হুম তো?

-তো আর কি? বলে রিমিকে পাজকোলে নিয়ে নেয়। রাতটা আরও একবার স্বাক্ষী হয়ে যায় ওদের ভালবাসার স্মৃতি হিসেবে।

~~~~~২ বছর পর~~~~~

পুরো বাড়িতে হই হুল্লোড়। বিয়ে বাড়ি বলে কথা। আজ জিসান ও তার জিএফ রুশার বিয়ে। আহসান খুব ব্যস্ত। ভাইয়ের বিয়ের সব কিছু নিজ হাতে সামলাচ্ছে। ওদিকে রিমি দু দন্ডও নিচে নামতে পারছে না ছেলের জন্য। আহসান রিমির ছেলের বয়স এক বছর প্রায়। রিমি ছেলের নাম রেখেছে আহনাফ। দুদিন ধরে আহনাফের জ্বর ঠান্ডা বলে রিমি জিসানের বিয়ের কোনো কাজেই হাত লাগাতে পারছে। এখন অবশ্য জ্বর নেই শুধু ঠান্ডা কাশি আছে সামান্য। রিমির বড় বোন রিমলির মেয়ে হয়েছে। স্রুতিরও মেয়ে হয়েছে। রিমলি ও স্রুতির মেয়ে দুই মাসের ছোট বড়। স্রুতির পরিবারও এসেছে জিসানদের বাড়িতে। স্রুতি বাচ্চাকে ঘুম পাড়িয়ে রিমির রুমে আসলো। এসেই বলল, কিরে তুই এখনো রেডি হচ্ছিস না কেন? কিছুক্ষণ পর গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে।

-ছেলেটা এখনো পুরোপুরি সুস্থ না। কিভাবে রেডি হই বল?

-তাও ঠিক তবে জিসান আর রুশা তো সাফ সাফ বলে দিয়েছে ওদের হলুদ সন্ধ্যা শুরু হবে তোর আর আহসানের নাচ দিয়ে।

-হুম কিন্তু আহনাফকে দেখবে কে?

-কে দেখবে মানে? ওদের দাদা দাদি আছে কি করতে? রিমি দেখলো রঞ্জিত দরজার কাছে দাঁড়িয়ে।

-বাবা আপনি পারবেন না ওকে সামলাতে। খুব জেদি ছেলে আহনাফ।

-তো কি হয়েছে? আমি আর তোমার শ্বাশুড়ি মিলে ঠিক সামলে নেব। তুমি আমার দাদুভাইয়ের প্রয়োজনীয় জিনিস সম্পাকে দিয়ে আমাদের রুমে পাঠিয়ে দাও। আর আমার দাদুভাইকে দাও আমি নিয়ে যাচ্ছি। ওকে দিয়ে তুমি রেডি হও তাড়াতাড়ি।

-কিন্ত আপনি আর মা যাবেন না নিচে?

-না ওসব গান বাজনা আমার ভালো লাগে না। মাথা ব্যথা শুরু হয়ে যায়। তোমার মায়েরও একই অবস্থা। তার থেকে আমরা আমাদের দাদুভাইকে নিয়েই থাকি।

-পারবেন তো সামলাতে?

-তুমি ভুলে যাচ্ছো তোমার শ্বশুর এমবিবিএস ডক্টর। তার থেকে বড় কথা আমি দাদা। চুপচাপ আমি যা বলছি শোনো। যাও গিয়ে মজা করো সকলের সাথে।

-ঠিক আছে বাবা।

রিমি আর আহসান হলুদ কালারের ড্রেস পড়েছে। রিমি হলুদ লেহেঙ্গা পড়েছে আর আহসান হলুদ পাঞ্জাবি। জিসান রুশার কথা মতো আহসান ও রিমিকেই ডাকা হলো প্রথম পারফরম্যান্স এর জন্য। আহসান রিমি স্টেজে উঠে। আহসান রিমির কানের কাছে আলতো করে বলল, তো শুরু করা যাক। রিমি মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল, হুম চলুন। মিউজিক ছাড়া হলো। আহসান নাচা শুরু করে দিল।

Tere ghar aya, main aya tujhko lene..
dilke badleme, dilka nazrana dene..
meri har dhadkan kya bole hai sun sun sun sun..

sajan ji ghar aye, sajan ji ghar aye..dulhan qui sarmaye, sajan ji ghar aye..

আহসান থেমে গেলে রিমি নাচ শুরু করলো,

aye dil chalega,ab na koyi bahana..
gori ko hoga, ab sajan ke ghar jana..
mathe ki bindiya, kya bole hai sun sun sun sun..

sajan ji ghar aye, sajan ji ghar aye..dulhan qui sarmaye, sajan ji ghar aye..
আহসান রিমির নাচে সকলের চোখ ধাধিয়ে গেল। সকলে খুব আনন্দের সাথে ওদের চেয়ারআপ করে উৎসাহ দিচ্ছে।

(The End)

(#বিঃদ্রঃ গল্পটা নিয়ে কিছু কথাঃ-

১। প্রথমেই আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ প্রায় দুটো মাস আমার পাশে থাকার জন্য। এভাবেই সবসময় আমার পাশে থাকবেন আর আমাকে উৎসাহ দেবেন। এতোটুকু চাই আপনাদের কাছ থেকে।

২। গল্পটা লিখতে গিয়ে অনেক বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছে আমাকে। শুধুমাত্র আপনাদের ভালবাসা ও অনুপ্রেরণায় শেষ পর্যন্ত এসেছি। কখনো মন খারাপ ছিল, কখনো বা লিখার সময় হয়ে ওঠেনি, কখনো পান্ডুলিপির ঝামেলা, কখনো বা অ্যাসাইনমেন্ট এর জন্য গল্প দিতে দেড়ি হয়েছে। তবুও আমি ততোটাই লেট করিনি। অনেকে আছে সপ্তাহ পর গল্প দেন। আমি ২ দিনের বেশি বিরতি নিইনি। কি করবো বলেন? ঝামেলা তো আর বলে কয়ে আসে না। আগের মতো এখন আর ফ্রি থাকি না আমি। সামনেও থাকবো না। এখন শুধু ব্যস্ততার মধ্য দিয়েই যেতে হবে। তবুও আপনারা যদি আমার পাশে থাকেন, আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করবো গল্প লিখা চালিয়ে যাওয়ার।

৩। শুরু যার আছে, শেষও তার আছে। গল্পটার প্রতি আমার একটা মায়া আছে। আপনাদেরও আছে। অনেকে বলেন বারবার আমার পেজ চেক করেন। অপেক্ষা করেন গল্পটা পড়ার জন্য। এসব কমেন্ট দেখলে কতটা যে শান্তি লাগে বলে বোঝাতে পারবো না। তাই আমি এর সিজন টু লিখা শুরু করেছি। যাতে খালি খালি না লাগে। আহসান রিমিকেই রেখেছি তবে নতুন ভাবে। সবাইকেই পাবেন বাট অন্য রূপে। কিছু নতুন চরিত্রও থাকবে।

৪। সিজন একে রিমি আর আহসানের রোমান্টিক মুহুর্তের চেয়ে বাঁধা বিপত্তি বেশি ছিল। তাই সিজন টু টা একটু রোমান্টিক হবে। আর বাস্তব কিছু ঘটনা থাকবে যা না থাকলে গল্পের কোনো ভারসাম্য থাকবে না। তাই সব মিলিয়ে অন্যরকম কিছু পড়তে পারবেন।

৫। পরিশেষে বলবো, আপনারা সকলেই জানান গল্পটা কেমন লেগেছে আপনাদের কাছে। আর সাইলেন্ট রিডার্সদেরও দেখতে চাই। আপনারাও নিজেদের মতামত জানাতে ভুলবেন না যেন। সবাইকে অনেক ভালবাসা। হ্যাপি জার্নি।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here