দখিনা হাওয়া পর্ব -০৯

#দখিনা_হাওয়া
#মারিয়া_আক্তার
[০৯]

ফুলে সজ্জিত ঘরটায় ড্রীম লাইটের টিমটিম করা নীল আলোয় আবছা আবছা দেখা যাচ্ছে সবকিছু। রুমের চারদিকে গাঁদা, বেলী আর গোলাপের গন্ধে ‘ম ম’ করছে। ফুলের গন্ধে বিন্দুর মাথা ধরে যাচ্ছে। এই দিনে হয়তো অন্য মেয়েরা বিছানার মাঝখানে গোল হয়ে বসে মাথায় ঘোমটা টেনে বরের জন্য অপেক্ষা করে। তবে বিন্দুর ব্যাপারটা ভিন্ন। সে রুমের জানালাটার কাছে দাঁড়িয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে। আরাধের রুমে এই নিয়ে দু’বার আসলো বিন্দু। একবার কৌতূহলবশত, আর আজ সবাই মিলে তাকে প্রবেশ করালো। আজ বিন্দুর বিয়ে হয়েছে। ঘরোয়াভাবেই হয়েছে। আজ থেকে বিন্দু বিবাহিত। এখন রাত কয়টা তা বিন্দুর জানা নেই। তবে মধ্যরাত হবে এখন। বিন্দু জানালার পাশে দাঁড়িয়ে নিজের জীবনের হিসাব মিলাতে ব্যস্ত। কি থেকে কি হয়ে গেল, বুঝতে পারছে না সে। ভাগ্য এ কোথায় এনে দাঁড় করালো তাকে? এর পরিণত-ই বা কি তা বিন্দুর জানা নেই। বিন্দুর ভাবনার মাঝেই কেউ খুব সন্তর্পণে দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করে। আরাধ রুমে ঢুকেই আবছা আলোয় বিন্দুকে খোঁজার চেষ্টা করে। কিন্তু সে বিন্দুকে খুঁজে পায় না। তাই হাঁক ছেড়ে বিন্দুকে ডাকতে নেয়। কিন্তু তার আগেই আরাধের নজর পড়ে তার রুমের দক্ষিণ দিকের জানালাটার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক মানবীর দিকে। যার পরনে গাঢ় লাল বেনারসি। দখিনা হাওয়ায় মানবীর চুপগুলো উড়ছে। আরাধ ছোট ছোট পা ফেলে বিন্দুর পাশে এসে দাঁড়ায়। গলার স্বরটা নরম করে বিন্দুকে ডাক দেয়।

– বিন্দু!

বিন্দুর ভাবনার মাঝে পুরুষালী কন্ঠে নিজের নাম শুনে কিছুটা নড়েচড়ে উঠে। তারপর সে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। দুর্বল দৃষ্টিতে আরাধের দিকে তাকায়। সেই দৃষ্টি ছিল অনুভূতিশূন্য। না ছিল কোনো আনন্দের লেশ, না ছিল দুঃখের লেশ। আবছা আলো থাকায় আরাধ বিন্দুর চোখের ভাষাটা ঠিক দেখলো না।

– তুমি ফ্রেশ হয়ে এসো। এই ভারী বেনারসি, ভারী জুয়েলারী এগুলা নিয়ে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলে কেন? যাও চেঞ্জ করে নাও।

কিছুটা আদেশের সূরে বলে আরাধ। বিন্দু কিছু বলতে নিয়েও থেমে যায়। কেন যেন তার কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না। সে নিশ্চুপে তার ট্রলি থেকে একটা থ্রি-পিছ নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় চেঞ্জ করতে।

_____________________

মুখ মুছতে মুছতে ওয়াশরুম থেকে বেরোয় বিন্দু। হাত মুখ ধুঁয়ে কিছুটা ভালো লাগছে তার। রুমের চারদিকে চোখ ভুলিয়ে আরাধকে দেখে না সে। আরাধ গেল কোথায়? বিন্দু গিয়ে রুমের লাইট জ্বালায়। পুরো রুমটাকেই গাঁদা, গোলাপ আর বেলীফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। বিন্দু ধীরে ধীরে হেঁটে আবারও দক্ষিণ দিকের জানালাটার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। জানালার পর্দাটা সরিয়ে দেয়। আবারো বাহিরের দিকে তাকায়। আবার কি মনে করে যেন বিছানার কাছে যায়। খুব ঘুম পাচ্ছে তার। নিজের ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করে সময় দেখে। এখন রাত দু’টো।

– তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল বিন্দু।

নিঃস্তব্দ রুমে আরাধের কণ্ঠস্বর পেয়ে বিন্দু হকচকিয়ে যায়। এভাবে হঠাৎ করে ভূতের মত ডাকার মানে কি? আরাধকে কিছু কথা শোনানোর জন্য বিন্দু পিছনে ফিরে। কিন্তু আরাধের দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে যায়। আরাধও নিজের সেরোয়ানি পাল্টে ট্রাউজার আর টি-শার্ট পরেছে। কোথায় চেঞ্জ করলো? হয়তো অন্যরুমে গিয়ে চেঞ্জ করেছে। বিন্দু সেসব আর না ভেবে অন্যদিকে ফিরে তাকায়। মুখটাকে গম্ভীর করে বলে,

– আমারও আপনাকে কিছু বলার আছে। তবে সেসব কাল বলবো। আজ কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। আর আপনারও যা বলার কালকে বলবেন, আজ আমার ভালো লাগছে না কিছু। মাথাটা ভীষণ ধরেছে। আমি এখন ঘুমাবো।

আরাধ বিন্দুর সাথে কিছুটা নম্রস্বরে বলে উঠে,

– আমি তোমার সাথে এখনই কিছু কথা বলতে চাইছি।

আরাধের কথার বিপরীতে বিন্দু খানিকটা রেগে বলে,

– আমি বলেছি না এখন কিছু বলতে চাইছি না। আমার এখন ভালো লাগছে না। আমি আপনার সাথে কাল কথা বলবো আর আপনিও আমার সব প্রশ্নের উত্তর কাল দেবেন। আমি এখন ঘুমোতে চাই। আমি কি ঘুমোতে যেতে পারি?

আরাধ বিন্দুর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। বোঝার চেষ্টা করে মেয়েটার আসলে হয়েছে কি? হয়তো বেশি খারাপ লাগছে, তাই কথা বলতে চাইছে না। কাল না হয় কথা বলা যাবে। আরাধ একটা দীর্ঘঃশ্বাস ছেড়ে বলে,

– তুমি ঘুমিয়ে পড়ো। যাও।

বিন্দু বিনাবাক্যে বিছানার কিনারায় শুয়ে পড়ে। আরাধ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে উশখুশ করে রুমের লাইট অফ করে বিছানার পাশঘেঁষা সোফাটায় গিয়ে শুয়ে পড়ে। আরাধ শুয়ে পড়ার কিছুক্ষণ পর বিন্দু চোখ খুলে তাকায়। ঘাড়টাকে আরাধের দিকে কিঞ্চিৎ ফেরায়। আরাধ বুকে হাত রেখে উপরে সিলিং ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আছে। বিন্দু জানে আরাধ তাকে কি বলতে চায়। বলেতো দিল কালকে কথা বলবে, কিন্তু কাল কি উত্তর দিবে বিন্দু? আদৌ উত্তর দিতে পারবে সে? বিন্দু কোলবালিশটাকে বিছানার মাঝখানে রেখে গলা খাঁকারি দিয়ে আরাধের উদ্দেশ্যে বলে,

– আপনি চাইলে বিছানায় ঘুমোতে পারেন। বিছানাটা অনেক বড়। দু’জনের জন্য যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। আর এত ছোট একটা সোফায় আপনি কিভাবে ঘুমাবেন? বিছানায় এসে ঘুমান।

আরাধ বিন্দুর দিকে কিয়ৎক্ষণ তাকিয়ে থাকে। মৌনতা ভেঙ্গে বলে,

– সমস্যা নেই। তুমি ঘুমিয়ে পড়ো। আমি ম্যানেজ করে নিবো।

বিন্দু কিছু না বলে চুপচাপ শুয়ে থাকে। না আসলে না আসুক বিন্দুর কি? বিন্দুতো অস্বস্তি ভেঙ্গে আরাধকে আসতে বলেছে, সে না আসলে বিন্দু কি করবে?

– তুমি কিছু খেয়েছো?

আরাধ চোখবন্ধ করেই বলে। বিন্দু তার বিনিময়ে কিছু বলে না। কেন যেন কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না। সে জানে না পরবর্তীতে তার সাথে আসলে কি হবে? তার ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাবে? বিন্দু এবার পাশ ফিরে। সাথে সাথে তার চোখ থেকে নোনাজল গড়িয়ে পড়ে।
__________________

– কিরে নতুন বউয়ের কোনো খবর নেই কেন? সারাক্ষণ রুমে কি করে? আমাদেরকি নতুন বউয়ের মুখ দেখা আর হবে নারে শাপলা?

মুখে আপেল পুড়তে পুড়তে কথাটা বলে কুহিনূর বেগিম। সম্পর্কে উনি আরাধের বাবার ফুফাতো বোন। কুটকাচালিতে উনি শীর্ষে আছেন। কার সংসারে কি ঘটেছে সেসব নিয়ে ঘাটাঘাটি করাই ওনার একমাত্র কাজ। শাপলা বেগম সোফায় ঠেস দিয়ে আরাম করে বসেন।

– আরে ওই মুচির বাড়ির মেয়ের মির্জা বাড়ির বৌ হয়ে সাপের পাঁচ পা দেখে ফেলেছে। কত করে ভাইকে বললাম ওই মেয়েকে এ বাড়ির বউ না করতে কিন্তু ভাই আমার কথাই শুনলো না। ওর কোনো যোগ্যতা আছে আরাধের বউ হওয়ার?

– আলী আকবর ভাইজানকে কত করে বললাম আমার বড় মেয়ে মিলি ওর ছোট ননদটাকে আরাধের জন্য আনতে কিন্তু আলী আকবর ভাই শুনলেতো। দেখবো ভাইজান কেমন বউ এনেছে ছেলের জন্য। কোন রাজকুমারী আনলো দেখেই যাবো।

– রাজকুমারী না ছাঁই। মেয়েটা দেখতে ততটা খারাপ না তবে আমাদের আরাধের যোগ্য না ও।

বিন্দু জানতো একদিন এসব কথার সম্মুখীন ওকে হতে হবে। তাও চুপচাপ একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। নতুন বউ কোনদিকে যাবে কিছু বুঝে উঠতে পারছে না। আরাধের মামাতো বোন নাজমা ওকে এখানে নিয়ে এসেছে। তারপরে তার ডাক পড়ায় বিন্দুকে এখানে একটু দাঁড়াতে বলে ছুটেছে। কিন্তু তার এখনো আসার কোনো নামগন্ধ নেই। মেয়েটা গেল কই কে জানে?

বিন্দুর ভাবনার মাঝেই কহিনুর বেগমের নজর পড়ে বিন্দুর ওপর। বিন্দুকে ইশারা করে তিনি শাপলা বেগমকে বলেন,

– এটাই কি আরাধের বউ?

শাপলা বেগম বিন্দুর দিকে তাকান। মুখ ভেঙ্গিয়ে বলেন,

– হুম, এটাই আরাধের বউ।

– এই যে বউ এদিকে আসো।

কহিনুর বেগিমের ডাকে বিন্দু গুঁটিগুঁটি পায়ে ওনার সামনে দাঁড়ান। মুচকি হেসে নম্র ভাষায় কহিনুর বেগমের উদ্দেশ্যে বলে,

– আসসালামুআলাইকুম।

কহিনুর বেগমের ভ্রুঁ যুগল কুঁচকে আসে। আজকালকার মেয়েদের মধ্যে এত আদব কায়দা আছে? বিন্দুর এই ব্যবহারটা ভালো লাগলো কহিনুর বেগমের। তারপরও তিনি গম্ভীরভাবে উত্তর দিলেন,

– ওয়ালাইকুমুসসালাম। তা বলছি কি বউ এখানে চুপ করে না দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের জন্য চা বানিয়ে নিয়ে এসো।

– বিন্দু এইযে ডানপাশে কিচেন। যাও চা করে নিয়ে আসো আমাদের দু’জনের জন্য।

শাপলা বেগম কথাটা বলে একটা পান মুখে পুড়ে নিলেন। বিন্দু চুপচাপ নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। তার এখন কি করা উচিৎ সেটা বিন্দু বুঝতে পারছে না। এমন না যে বিন্দু রান্না করতে পারে না, বিন্দু টুকটাক রান্না করতে পারে। কিন্তু এখন কিভাবে, নতুন জায়গায় এসেছে। কিছু বলতেও পারছে না।

– ভাবি আজকে কোনো কাজ করতে পারবে না ফুফু। তোমার এত চা খেতে ইচ্ছা করলে মর্জিনাকে বলো চা করে দিতে।

বিন্দুর পিছন থেকে আরান কথাটা বলতে বলতে বিন্দুর পাশে এসে দাঁড়ায়। বিন্দুর ভ্রুঁ কুঁচকে যায়। আরান তাকে ভাবি বলে ডাকা শুরু করে দিয়েছে, ভাবা যায় এগুলা?

– তুই কি বলতে চাস আরান? বিন্দু এবাড়ির বড় বউ। এটুকু চা বানিয়ে আমাদের খাওয়াতে পারবেই, তাই না?

– খাওয়াবে না কেন? অবশ্যই খাওয়াবে কিন্তু তার জন্য একটু সময় আসুক। কালকে আমাদের বাড়িতে আসলো ও। একটু সময়তো দেওয়া দরকার তাই না? আর তাছাড়া আজকে ওর বৌ-ভাত, আজকে না হয় এসব আর না বললে!

কহিনুর বেগম এতক্ষণ নিরব দর্শকের মত তাকিয়ে ছিলেন। এবার মুখ খুললেন।

– আমি বুঝতে পারছি না আরান। তোর আবার নতুন বউয়ের জন্য এত দরদ কেন?

আরান ভ্রুঁযুগল কিঞ্চিৎ কুঁচকে কহিনুর বেগমকে বললেন,

– আপনি হয়তো জানেন না ফুফু। বিন্দু মানে ভাবি, আমার বেস্টফ্রেন্ড। তার জন্য একটুতো দরদ দেখাতেই হয়, তাই না?

আরান এবার শাপলা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে,

– ফুফু, তোমার চা খেতে অনেক ইচ্ছা করছে? তাহলে দাঁড়াও। আমি মর্জিনাকে বলে আসছি চা বানিয়ে দিতে। আর মর্জিনাও তো মনে হয় কাজে আছে এখন। তবে ভাবি চা বানাবে না। আর এতই যদি খেতে ইচ্ছা করে নিজে করে খাও।

কথাটা শেষ করে আরান বিন্দুর দিকে ফিরে একটা চোখ মারে। বিন্দু তা দেখে মাথানিচু করে মুচকি হাসে। অন্যদিকে শাপলা বেগম মুখটাকে থমথমে করে ভাই বলে চিল্লিয়ে আলী আকবর মির্জাকে ডাকেন। আলী আকবর মির্জা ডাক শুনে হন্তদন্ত হয়ে ড্রয়িংরুমে আসেন।

– কি হয়েছে শাপলা? এমন চেঁচামিচি করছিস কেন?

– ভাই দেখো, আমি তোমার পুত্রবধূকে একটু চা করে খাওয়াতে বলেছিলাম কিন্তু তোমার ছোটছেলে আমাদের সাথে তর্ক করছে। বলছে বিন্দু নাকি আমাদের চা করে খাওয়াতে পারবে না। আর বলছে আমার খেতে ইচ্ছা করলে নাকি নিজে করে খেতাম।

আলী আকবর মির্জা আরানের দিকে তাকান।
তারপর শাপলা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলেন,

– আরান এসব কি? ফুফুকে এসব বলে কেউ? আর শাপলা আরান কিন্তু একটা জিনিস ঠিকই বলেছে, আজকে বিন্দুর চা বানানোর প্রয়োজন নেই। ও এ বাড়ির নতুন বউ। আর তাছাড়া বাড়িতে আমি কাজের মেয়ে আনিনি, বউ এনেছি।

সদর দরজা দিয়ে আরাধ ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করে। আরাধকে দেখা মাত্র শাপলা বেগম একই বুলি আওড়ানো শুরু করেন। সব শুনে আরাধ সকলের দিকে তাকিয়ে বলে,

– তুমি বসো ফুফু। আমি তোমার জন্য চা করে নিয়ে আসছি।

আরাধের কথা শুনে বিন্দুর চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। গোলগোল করে আরাধের দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। রাতের পর আরাধের সাথে তার আর কোনো কথা হয় নি। সকালে ঘুম থেকে উঠে আরাধকে রুমে পায় নি বিন্দু।

– বাবা, তুই কেন চা বানাবি? বিন্দু বানাবে। এ বাড়ির বড় ও। সব দায়িত্বতো ওকেই নিজের কাঁধে তুলে নিতে হবে, তাই না?

– অনেক হয়েছে ফুফু। আধাঘণ্টা ধরে তোমার এই বাংলা সিরিয়াল দেখছি। এবার একটু বন্ধ করবে প্লিজ। ভাইয়াতো বলছে চা বানিয়ে দিবে। তাহলে এমন করছো কেন? তোমারতো চা পেলেই হল তাই না?

শাপলা বেগম একবার আরানের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে হনহন করে নিজের রুমে চলে যান। কহিনুর বেগমও মেকি হেসে শাপলা বেগমের পিছুপিছু ছুটেন। আরান তা দেখে শব্দ করে হেসে দেয়। আলী আকবর মির্জাও হাসতে হাসতে বাহিরে চলে যান। বাড়িতে অনেক কাজ। আজকে বৌ-ভাত। অনেক মানুষকে দাওয়াত করেছেন আলী আকবর মির্জা। বাহিরের সব তদারকি করতে চলে গেলেন আলী আকবর মির্জা।

– বিন্দু রুমে চলো, তোমার সাথে আমার কথা আছে।

কথাটা শেষ করে আরাধ রুমে চলে গেল। আরান নিঃশব্দে হেসে বিন্দুর পিছনে এসে দাঁড়ায়।

– কিগো ভাবি! ভাইয়া আপনাকে রুমে কেন ডাকলো?

– এই তুই আমায় ভাবি ভাবি করছিস কেন?

– ওমা! আমার একমাত্র ভাইয়ের একমাত্র বউ তুই তোকে ভাবি ডাকবো না? আর তুই আমায় না করলেও আমি তোকে ভাবি বলেই ডাকবো। ওকে? এখন এটা বল, ভাইয়া তোকে রুমে ডাকলো কেন? কেইস কি মামু?

চোখ মেরে বলে আরান। বিন্দু আরানের দিকে রাগিদৃষ্টিতে তাকায়। মিথ্যে রাগ দেখিয়ে বলে,

– এই তুই কি বলতে চাস? অসভ্য ছেলে একটা।

আরান মুখটাকে ইনোসেন্ট করে বলে,

– যাব্বাবাহ! আমি আবার কি বললাম?আমিতো কিছুই বললাম না এতেই অসভ্য হয়ে গেলাম। তোকে শুধু জিজ্ঞেস করলাম ভাইয়া তোকে কেন ডাকলো? এটুকুই।

– আমি তোর ভাবি। আর বড় ভাবিরা মায়ের সমতুল্য হয়। তাই আমায় সম্মান দিয়ে কথা বলবি। এরকম অসভ্যের মত কথা বলবি না। ওকে?

আরান মুখটাকে কিউট করে বলে,

– ওকে।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here