দিওয়ানা পর্ব শেষ

#দিওয়ানা
#Sabiya_Sabu_Sultana (Saba)
#অন্তিমপর্ব

রাতের অন্ধকারে ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে সোহা। দৃষ্টি দূরের দিকে স্থির হয়ে আছে। হওয়ার জন্য মাথার সব চুল গুলো এলোমেলো হয়ে উড়ছে। হাত দুটো ভাঁজ করে বুকে বেঁধে রেখেছে। সোহার মনের মধ্যে ও এখন ঝড় চলছে। সে ভাবতে থাকে তার জীবন কোথায় থেকে কি হয়ে গেলো।

কিছুক্ষণ আগেই ডিনার করার সময়ে জানতো পারলো তার বাপি মানুষিক ভাবে অসুস্থ হয়ে গেছিলো। এর থেকে বড় কিছু হল তার বাপি তাকে দুবার অ্যাটাক করতে চেয়েছিলো সব কিছু হারিয়ে গিয়ে সে আরো বেশি হিংস্র হয়ে উঠেছিলো। কিন্তু সোহার অজান্তেই সোহার সাথে সব সময়ে গার্ড থাকতো আর তার সাথে সোহা যতক্ষণ বাইরে থাকতো সব সময়ে আমন না হয় অ্যাস তার সাথে সাথে ছিল। তাই তিনি চেষ্টা করেছিল কিন্তু পারেন নি তার আগেই আমন এর লোক ওনাকে ধরে ফেলেন। সাজিদ মল্লিক কে একটা অন্ধকার রুমে আটকে রাখা হয় আর তারপর তিনি ধীরে ধীরে মানুষিক রোগীতে পরিনত হয়। ওনাকে মেন্টাল অ্যাসাইলাম পাঠানো হয়েছে অবস্থা খুব একটা ভালো না যেকোনো সময় নিজের ক্ষতি করতে পারেন।

সোনিয়ার ওপরে আরো চার্জ আনা হয়েছে। প্রথমত খুন এর আর তারপরেই মানসিক নির্যাতনের তাও একটা নাবালিকা মেয়ের ওপর। আর তার সাথে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া। আর এইসব কিছুর পিছনে যখন একজন নামী দামী মানুষের হাত থাকে তখন জাস্টিস তো হাসতে হাসতে চলে আসে। সব মিলিয়ে ওকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ওর পাপের সাজা জেলে বসে কাটিয়ে দিক।

আর মণিকা সে তো ওকে খুনের চেষ্টা করেছে তাই এখন জেলে আছে। আর তার সাথে শুধু সোহা নয় আরো অনেকের সাথেও মণিকা এমন কাজ করেছে। তাই তাকে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে।

সোহা ভাবতে থাকে তার জীবন কেমন থেকে কেমন হয়ে গেলো। ছোটোবেলা থেকে বাবা মায়ের ভালোবাসায় ছটা বছর কাটানোর পর নিজের মা কে হারিয়ে ফেলে সাথে তার নিজের বাপি কেও। আর তারপর জীবনের বারোটা বছর কাটিয়ে দিয়েছে শুধু অত্যাচার সইতে সইতে। ভেবেছিল কখনই হয়তো তার জীবন থেকে এই কালো অন্ধকার এর রেস কাটবে না। কিন্তু আঠারো বছর পার হতে তার জীবন থেকে আসতে আসতে অন্ধকার সরে যেতে থাকে। আবারও সে তার বাবা মা ফিরে পেয়েছে তার সাথে পেয়েছে তার মন ও আয়ু কে। আর সারাজীবন এর জন্য মন কে নিজের করে । এটা ভাবতেই এতক্ষণ গম্ভীর মুখে একটা হাসি ফুটে।

হঠাৎ করেই কোমরে স্পর্শ পায়। আসতে আসতে তাকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে নিচ্ছে দুটো হাত। সোহা জানে এই হাতের মালিক কে। তাই মুখের হাসিটা আরো বেড়ে যায় আর তার সাথে হার্টবিট। কাঁধের ওপরে উষ্ণ নিঃশ্বাস আর তার সাথে ঠোঁটের স্পর্শ পায় ।সাথে সাথেই শিহরিত হয়ে ওঠে। নিজের পিঠের সাথে আমন এর আদুল গায়ের স্পর্শ পায় সাথে সাথে শরীরের মধ্যে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়। আমন পিছন থেকে সোহা কে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে রেখে সোহা ঘাড়ে কাঁধে গলায় নিজের ঠোঁটের স্পর্শ দিতে থাকে। সোহা ফিল করে আজ আমন এর স্পর্শ গুলো অন্য রকম আগের থেকেও আরো বেশি গভীর বুঝতে পারে আমন পুরো নেশায় বুঁদ হয়ে গেছে তার।

সোহা চোখ বন্ধ করে নিজের মাথা এলিয়ে দিয়ে আমন স্পর্শ গুলো ফিল করতে থাকে আর তার সাথে কেঁপে কেঁপে ওঠে। আমন এর স্পর্শ গুলো আজ তাকে পাগল করে দিচ্ছে। নিজের মধ্যে এক অদ্ভূত শিহরন অনুভব করে। সোহা অনুভব করে তাদের ঘাড়ে কাঁধে গলায় অংশ পুরো ভিজে গেছে আমন চুমু বাইট আর লিক এর জন্য। আর আমন এর হাত তার ড্রেস ভেদ করে তার কোমর থেকে ওপরে দিকে স্লাইড হচ্ছে। আমন এর এমন স্পর্শে সোহা আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। তার পা দুটো যেনো অবশ হয়ে আসছে।

সোহা পিছন মুড়ে আমন কে জড়িয়ে ধরে। নাহলে এখুনি সে নিচে পড়ে যাবে। তার পা ভেঙে আসছে। সারা শরীর কাঁপতে শুরু করেছে। আমন কে জড়িয়ে ধরে বুকে মুখ গুঁজে রেখেই বড় বড় করে নিঃশ্বাস নিতে থাকে। আমন ও সোহা কে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। সোহার এই কাপুনি তাকে আরো পাগল বানিয়ে দিচ্ছে তাকে পুরো নেশাগ্রস্ত করে ফেলছে। আজ এতদিন তাদের নিজেদের মধ্যে একটু হলেও বাঁধা থাকলেও আজ কোনো বাধা নেই তারা স্বামী স্ত্রী এখন। তাই এখন আর এই অনুভূতি নিজের মধ্যে দমিয়ে রাখতে পারছে না।

আমন সোহার থুতনি ধরে মুখটা উঁচু করে তোলে। সোহার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে মাতাল এর মত চাঁদের আলোয় সোহার মুখ যেনো আরো বেশি আসক্তি করছে তাকে। সোহা চোখ তুলে আমন এর দিকে তাকাতেই দেখতে পায় নেশা ভরা দুই চোখ। যেখানে আছে তার জন্য অধেল ভালোবাসা আর তাকে কাছে পাওয়ার নেশা। সোহা বেশি ক্ষণ ওই চোখে তাকাতে পারে না সেও কেমন ওই নেশাময় চোখে তাকিয়ে ঘোরের মাঝে চলে যাচ্ছে। আসতে আসতে চোখ বুঝে আসে তির তির করে কাঁপতে থাকে ঠোঁট দুটো। আমন সোহার মাথার পিছনে হাত রেখে ঘাড় টা ধরে মুখটা তার মুখ বরাবর করে নেয়। আরেক হাত কোমরে রেখে নিজের দিকে টেনে নিয়ে একবারে তার সাথে মিশিয়ে নেয়। আমন এর চোখ এখন গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সোহার কাঁপতে থাকা ঠোঁট।

আমন আসতে আসতে তার মুখ নামিয়ে আনে। সোহার এই কাঁপতে থাকা ঠোঁট তাকে পাগল বানিয়ে দিচ্ছে। তাকে পুরোই বেসামাল করে ফেলেছে। আমন নিজের ঠোঁট বসিয়ে দেয় সোহার কাঁপতে থাকে ঠোঁটের ওপর। সাথে সাথে সোহা আমন এর পিট ও মাথার চুল খামছে ধরে। সোহার চুল গুলো উড়ে এসে তাদের মুখ পুরো ঘিরে ফেলছে। আর তার সাথে মেতে উঠছে দুজন দুজনের ঠোঁট এর নেশায়। ঠোঁটের স্পর্শ গভীর থেকে আরো গভীর হতে থাকে। বেঁধে যায় একে অপরের জিহ্বার লড়াই। শুষে নিতে থাকে একে অপরের ঠোঁটের মধু সুধা।

আধা ঘন্টা পর একে অন্যের ঠোঁটের নেশা কাটিয়ে দম নিতে থাকে তারা না চাইলেও তাদের একে অপরের ঠোঁট ছাড়তে হয় দম নেয়ার জন্য। দুজন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে হাফাতে হাফাতে থাকে। সোহা আমন এর বুকের ওপর এলিয়ে পড়েছে। আর আমন সোহার মাথায় নাক ডুবিয়ে রেখেছে। তার হাত বিচরণ করে চলেছে সোহার সারা পিঠের ওপরে। পিঠের উন্মুক্ত অংশ টুকুতেই আঙুল দিয়ে আঁকিবুকি টানতে থাকে আর এতে করে সোহা কেঁপে কেঁপে উঠছে। আমন সোহার কোমরে হাত রেখেই সোহা কে নিজের কোলে তুলে নেয়। মিশিয়ে নেয় তার উন্মুক্ত বুকের সাথে। সোহা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমন এর দিকে আর আমন ও তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে। তাদের মধ্যে এই চোখের ইশারায় ও প্রেমের খেলা চলতে থাকে।

আমন সোহা কে নিয়ে ছাদ থেকে নেমে নিজের রুমে চলে আসে। পুরো রুম টাই ফুলে ফুলে সাজানো হয়ে আছে। রুমে চারিদিকে ক্যান্ডেল ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। এটাও যে তাদের মম ড্যাড এর কাজ বুঝতে পারে। আমন সোহা কে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দেয়। আর সাথে নিজেও ঝুঁকে যায় সোহার দিকে। মোম এর আলোয় যেনো সোহা কে আরো বেশি আবেদনময়ী লাগছে ।সোহা আমন এর এমন ঘোর লাগানো নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে দেখে পাশ কেটে উঠতে নিলেই আমন তার হাত দিয়ে কাঁধে চেপে ধরে। সোহা মুখ তুলে তাকায় আমন এর চোখে। যেখানে আছে তাকে পাওয়ার আর্জি। তার জন্য আছে একরাশ ভালোবাসা আকুলতা আর নেশা। আমন এর দৃষ্টি দেখেই সোহা বুঝতে পারে আমন কি বুঝাতে চাইছে তাকে। সোহা লজ্জা পেয়ে হাত বাড়িয়ে আমন এর কোমর জড়িয়ে ধরে আমন উন্মুক্ত পেটে মুখ গুঁজে দেয়। এতে আমন ও তার উত্তর পেয়ে যায়।

আমন সোহা কে বিছানায় ফেলে দেয়। আসতে আসতে নিজেও সোহার ওপরে ঝুঁকে আসতে থাকে। সোহার পা দুটো নিজের হাতে তুলে নিয়ে আসতে আসতে নিজের ঠোঁটের স্পর্শে ভরিয়ে দেয় সোহা বাঁধা দিতে গেলেও শোনে না। আসতে আসতে পেটের কাছে এসে হাত দিয়ে সোহার ড্রেস সরিয়ে দেয়। নাভির চার পাশে নিজের ঠোঁটের স্পর্শে ভরিয়ে দিতে থাকে। সোহা অস্থির ভাবে নিজের হাত বিছানার চাদর খামছে ধরে। আমন মাথা তুলে সোহা ওপরে চলে আসে সোহার মুখের দিকে তাকিয়ে কপালে একটা গভীর চুমু দেয় আর তার সাথে পুরো মুখ জুড়ে। ঠোঁট নেমে আসে সোহার ঠোঁটে। সোহার সারা শরীরে আমন এর হাত ঘুরে বেড়ায়। আমন সোহার ঠোঁট ছেড়ে গলায় নেমে আসে। দুজন এই আজকে তাদের ভালোবাসা পরিণতি দিতে চাইছে। আজ একে অপরকে উজাড় করে ভালোবাসতে চাইছে। দুজন একে অপর কে ভালোবাসতে ব্যস্ত। আলাদা হয়ে খসে পড়ে তাদের শরীরে থেকে পোশাক গুলো তাদেরও এখন সময় ফুরিয়ে গেছে। আসতে আসতে মিশে যেতে থাকে দুটো শরীর। ভালোবাসার সাগরে ডুবে যেতে থাকে। আজ তাদের ভালোবাসার পূর্ণতা পায় হয়ে যায় এক আত্মা। ভেসে যায় তারা তাদের ভালবাসার মাঝে। সারা জীবনের জন্য এক হয়ে যায় দুজন দিওয়ানা হ্যাঁ ভালোবাসার দিওয়ানা ।
.
.
.
. 💚💚💚
.. সমাপ্ত…..

ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন রিচেক করিনি।

(গল্পটা শুরু করেছিলাম চার কি পাঁচ পার্টে শেষ করব ভেবে কিন্তু সেটা পনেরোতে এসে ইতি টানলাম। এই গল্পটা লেখার কোনো ইচ্ছা ছিল না। অন্য গল্প লিখতে গিয়েই হুট করে এটা মাথায় চলে এসেছিলো তাই লিখে ফেললাম। এতদিন সাথে থাকার জন্য আপনাদের সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ। প্লিজ আজ কেউ নাইস আর স্টিকার কমেন্ট করে কেটে পড়বেন না। গল্পের শেষ দিন আপনাদের থেকে এই গল্পের অনুভূতির গঠনমূলক মন্তব্য এর আশায় রইলাম। ভালো থাকবেন সবাই আপনাদের জন্য রইলো অনেক অনেক ভালোবাসা)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here