দ্যা_বিউটি_অফ_লাভ পর্ব ২৪+২৫

#দ্যা_বিউটি_অফ_লাভ
#লেখিকাঃরাকিবা_ইসলাম_আশা
#পর্বঃ২৪_২৫

ওকে—- আমি তোমাকে ছাড়তে পারি এক শর্তে। যদি তুমি আমাকে আপনি আপনি সম্মোধন করা বন্ধ করো।

কিনারা মাথাটা কিছুটা সরিয়ে কপাল কুচকে বলল— মানে —-

মানে হলো তুমি যখন আমাকে,, আপনি আপনি তারপর মিস্টার চৌধুরী মিস্টার চৌধুরী করোনা,,তখন তোমার কাছে নিজেকে তোমার কাছে কেমন পরপর লাগে।তাই তুমি আমাকে সাদিত এবং তুমি বলে ডাকবে।

কিনারা সাদিতের কথায় শুনে পাত্তা না দিয়ে বলে উঠলো —অসম্ভব আমি পারবো না।উমম আসছে উনাকে নাম ধরে ডাকতে হবে,তুমি তুমি করতে হবে।পারবোনা।আপনি যখন যা বলবেন আমাকে তখন তাই করতে হবে হ্যাঁ।শুনবোনা আমি আপনার কথা আর প্লিজ আমাকে ছাড়ুননন তো।

কিনার বলতে দেরি সাদিতের ধাক্কা দিতে দেরি হলোনা।সাদিত কিনারাকে দু’হাতে জড়িয়ে কাছে টেনে নিয়ে অনবরত গলায়,ঘাড়ে চুমু দিচ্ছিলো এমন সময় কিনারার কথাগুলো শুনে,,,সাদিত কিনারাকে এক ধাক্কা দিয়ে খাটে শুয়িয়ে। একহাতে কিনারার কোমড় জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নিয়ে। অন্য হাতে ভর দিয়ে কিনারার দিকে অনেকটা ঝুঁকে গেলো সাদিত।ও আচ্ছা ঠিক আছে,তুমি আমার কথা শুনবে না তাই তো।

কিনারা বিষয়টা কি হলো তা বুঝতে না পেয়ে, সাদিতের দিকে তাকিয়ে বারবার চোখের পাতা ফেলে, মাথা নেড়ে— না জানালো—যে ও সাদিতের কোনো কথা শুনবে না।

সাদিত আবার শিওর হওয়ার জন্য বলে উঠলো —- ঠিক তো।

কিনারা আবার মাথা নাড়ালো।যে হ্যাঁ ঠিক।

সাদিত কিনারার মুখের আরো কাছে ঝুঁকে গেলো।সাদিতের ঠোঁটের থেকে কিনারার ঠোঁটের দূরত্ব এক ইঞ্চি মতো হবে। সাদিতের প্রত্যেকটা নিশ্বাস কিনারার ঠোঁট আর মুখের উপর পড়ছে। সাদিতের ঘন নিশ্বাস কিনারার ঠোঁটের উপর পড়তেই,কিনারা অজানা ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে,কিনারা খুব দ্রুত শ্বাস ফেলছে,, কেমন অস্বস্তিবোধ করছে ।

সাদিত কিনারাকে খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।কিনারার বুকের এমন ধীর গতির উঠা-নামা আর মুখের এক্সপ্রেসন দেখে হঠাৎই সাদিতের মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধি খেলে গেলো।সাদিত বিষয়টাকে নিয়ে আরও একটু মজা নেওয়ার জন্য,, কিনারার সারা কোমড়ে খুব গভীরভাবে স্লাইড করতে শুরু করলো।সাদিত কিনারার কোমড়ে এমন ভাবে স্লাইড করছে,,কিনারা তা যেনো সহ্য করতে না পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিছানা চাদর টা খামচে ধরলো,, কিনারা যেনো সাদিতের প্রত্যেকটা স্পর্শে কেঁপে উঠে,, হিমশীতল বরফের মতো জমে গেলো। কিনারা আর একটুও নড়াচড়া করতে পারছেনা।

সাদিত কিনারার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে নেশালো কন্ঠে বলে উঠলো —- ওকে শুনতে হবে না।তাহলে তুমি চাচ্ছো আমি যেনো এভাবেই থাকি,তোমাকে যেনো না ছাড়ি।আরে সরাসরি বললেই তো হতো।আমি তো চায় সবসময় তোমার সাথে এমন মিশে থাকতে।আমার প্রত্যেকটা নিশ্বাসে তোমাকে ফিল করতে ।বলেই সাদিত কিনারার ঠোঁট আবদ্ধ করে নিতেই কিনারা সঙ্গে সঙ্গে চোখ মেলে তাকালো,কিনারা যেনো বেকুব বনে চলে গেলো,কিনারা বুঝতে পারছে না, সাদিত কখন কিভাবে হুটহাট করে যখন-তখন ওর উপর অ্যাটাক করছে।কিছু বুঝে উঠার আগেই হুটহাট করে কিস করে বসছে।

এদিকে কিনারা এসব ভেবেই চলেছে,অন্য দিকে সাদিত নিজের মতো করে কিনারার ঠোঁটের স্বাদ নিতে ব্যস্ত।মিনিট দুয়েক পর সাদিত বুঝতে পারলো,কিনারার কোনো রেসপন্স নেই,কিনারার রেসপন্স নেই দেখে সাদিত কিনারার ঠোঁটে কামুড় দিতেই। কিনারা আঁতকে উঠে ——আআআআ বলে উঠলো।

সাদিত বাঁকা হেসে বললো — তবুও তুমি আমার কথা শুনবেনা।তাই তো।

এদিকে কিনারা ব্যথায় চোখের কোণায় পানি চলে আসার উপক্রম।

কিনারাকে চুপ করে থাকতে দেখে। সাদিত কিনারার ঠোঁটের কামুড়ের জায়গায় আঙুল ছোঁয়িয়ে ছোঁয়িয়ে বলল—–তাহলে কি ডোজটা কম পড়ে গেলো বউ, আমি কি ডোজটা আর একটু বাড়াবো।

কিনারা সাদিতের কথা শেষ হতেই,দুহাতে নিজের মুখ চেপে ধরে মাথা নাড়ালো।

ঠিক এই মুহুর্তে সাদিতের ইচ্ছে করছে কিনারার এই ভয়ে,কাচুমাচু হওয়া মুখের এক্সপ্রেসনটা ক্যামেরা বন্দী করে রাখতে,কিন্তু তা ঠিক এই মুহুর্তে সম্ভব হচ্ছে না।সাদিতের প্রচুর হাসি পাচ্ছে।সাদিত নিজের নিচের ঠোঁটটা উপরের ঠোঁট দিয়ে হালকা চেপে হাসি আটকিয়ে,কিনারার হাতটা মুখ থেকে সরিয়ে বলল—আরে না করছো কেন বউ— শুনো না—বলি কি আজকের পর থেকে তুমি না,,, আমার কোনো কথাই শুনবে না কেমন।আর আমি তোমার কাছে যখন ইচ্ছে তখনি যেতে পারবো।আর তোমার কোনো না করার ওয়ে থাকবেনা।বলেই আবার কিনারার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে গেলো।

সাদিতের ঠোঁট কিনারার ঠোঁটকে আবার স্পর্শ করতে যাবে, তখনি কিনারা ফট মাথাটা ঘুরিয়ে বলে উঠলো —কে বলল আমি আপনার কথা শুনবোনা।আমি আপনার প্রত্যেকটা কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো।তবুও আপনি আমাকে আর কিস করবেননা প্লিজ।দেখুন আমার ঠোঁট টা কেমন কেটে গেছে, জ্বালাও করছে।কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে উঠলো কিনারা।

ওকে,,,তাহলে তখন যা বললাম মনে থাকবে তো —- আজ থেকে আমাকে—- তুমি আর সাদিত বলে ডাকবে।আর তোমার যদি আমাকে ভালোবেসে কোনো নাম দিতে ইচ্ছে করে তাহলে দিতে পারো,ওই যেমন সোনা,বাবু,জান,পাখি,………………..যা ইচ্ছে বলতে পারো তবুও একলিস্ট মিস্টার চৌধুরী মিস্টার চৌধুরী বলো না প্লিজ।তখন মনে হয় তোমার সাথে আমার অফিসের কোনো কাজের সম্পর্ক।তারপর সাদিত খুব নম্রস্বরে বলল— কিনারা —–তুমি কবে বুঝবে—————
তোমার সাথে আমার ভালোবাসার সম্পর্ক,তার থেকে বড়ো কথা কিনারা তুমি আমার স্ত্রী, তোমার সাথে আমার বিবাহ নামে পবিত্র একটা সম্পর্কে আবদ্ধ আমরা।সারা জীবনের একটা সম্পর্ক আমাদের দুজনের,যেখানে আমরা সারা জীবন দুজনে এক সাথে থাকবো।আমি চায়না সেখানে — আমাদের মাঝে কোনো দূরত্ব থাকুক,কোনো জড়তা থাকুক,বা আমাকে নিয়ে তোমার মনে কোনো রকম ভয়- ভীতি থাকুক।আমি সবসময় চায় আমাকে যেনো তুমি বুঝো—-না বুঝলেও এখন থেকে একটু হলেও বুঝার চেষ্টা করো প্লিজ।কারণ এটা ছাড়া তোমার আর কোনো উপায় নেই।তুমি চাইলেও আমার কাছে থাকতে হবে,না চাইলেও এই আমার কাছেই থাকতে হবে।ব্রিকস ইউ আর মাই মাইন।আই হেব টু বি ফোর লাইফ।বলে সাদিত কিনারার একহাত নিজের হাতের মুঠোয় আবদ্ধ করে নিয়ে,কিনারার হাতের মুঠোর উপর গভীরভাবে চুম্বন করে,হাতটা নিয়ে সাদিত নিজের বুকের উপর রাখলো।

কিনারা বুঝতে পারলো —- সাদিতের কথাগুলো না শুনা অব্দি ওকে আজ কোনো মতে ছাড়বেনা।কিনারা চাইলেও সাদিতের যা জিম করা বডি এক ইঞ্চিও নড়াতে পারবেনা।যে সাদিতকে সরিয়ে উঠে পড়বে।তাই কিনারা মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো সাদিতের কথা মেনে নেওয়াই শ্রেয়।

কিনারা গলাটা ঝেড়ে ফেলতেই—- সাদিত বুঝতে পারলো কিনারা কিছু বলতে চায়।তাই সাদিত তাই অধীর আগ্রহে চেয়ে চোখ দিয়ে কিনারাকে ইশারা করলো —- কিছু বলবে—যদি বলার থাকে বলো।

সাদিতের চোখের ইশারায় তাকাতেই,,সাদিতের ওই কালো গভীর চোখে তাকাতেই কিনারা যে সাহসটা নিয়ে সাদিতকে কিছু বলতে চেয়েছিলো তা হঠাৎই যেনো দমে গেলো।আর মুখ দিয়ে বলে ফেলল—
আপনি যা বলবে আমি আপনার—সাদিত তোমার ধ্যাত—-কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল আমাকে দিয়ে হবে এখন।আমার এতো দিনের অভ্যাস টা চেঞ্জ হতে,আমার একটু তো টাইম লাগবে,।।।। আমি চেষ্টা করবো নেক্সট টাইম থেকে ওই তুমি আর সাদিত বলতে।এবার তো ছাড়ুন। বলে ঠোঁট উল্টে ফেলল।

সাদিত কিনারাকে ছেড়ে উঠে বসতেই। কিনারা যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলো,,মনে মনে সাদিতকে হাজারটা গালি দিলো।মনে মনে বলল—আরে আপনাকে তো রাক্ষস আর ড্রাগন বলা উচিত।সব সময় হামলে পড়েন। বেটা উজবুক।এ মা আমার ঠোঁট বলে হাতটা ঠোঁটে চলে গেলো।

সাদিত কিনারার দিকে ফিরে কিনারাকে কিছু বলতে যাবে—-

কিনারাকে আর পাই কে দিলো ভৌ করে দৌড় দেয়। এক দৌড়ে সোজা ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা নক করে ফেলল।ফেলে জোরে জোরে শ্বাস নিলো।

#চলবে

#দ্যা_বিউটি_অফ_লাভ
#লেখিকাঃরাকিবা_ইসলাম_আশা
#পর্বঃ২৫

সাদিত হাসতে হাসতে লাগেজ গুলোর কাছে এসে ওর জিনিস পাতি গুলো বের করছে,আর ফ্রেশ হবার পর কোন কাপড় গুলো পড়বে তা বের করছে।

ঠিক তখনি একটা ফোন বেজে উঠলো — সাদিত ঘুরে তাকাতেই দেখলো কিনারার ফোনটা বাজছে।ফোনটা বাজছে দেখে সাদিত বুঝতে পারলো না ফোনটা ওর ধরা উচিত হবে কিনা।ফোনটা ওর পাশেই রাখা ছিলো।সাদিত ফোনটার কাছে গিয়ে নিজের হাতে তুলে দেখলো।সানজু কলিং।সাদিত বাথরুমের দিকে তাকাতেই পানির আওয়াজ ভেসে এলো,সাদিত বুঝতে পারলো কিনারা গোসল করছে।এসব ভাবতেই ফোনটা কেটে গেলো, সাদিত ফোনটা টেবিলের উপর রেখে দিতে গেলে ফোনটা আবার বেজে উঠলো।বারবার ফোনটা বেজে উঠায়,সাদিত ঠিক করলো,ফোনটা ও রিসিভ করবে।ফোনটা রিসিভ করতেই সাদিত শুনতে পেলো—-আরে কিনারা।একটা দরকারী ফোন করেছি।এই শুন আমি কাল এডমিশনের জন্য কোচিং এ ভর্তি হতে যাচ্ছি। তুই তো আমাকে জানাতে বলেছিলি।আমি যখন ভর্তি হবো তোকে যেনো জানায়।তো কাল যাবো আমি তুই ও কি যাবি আমার সাথে।

ফোনের ওপার থেকে মৃদু একটা ছেলে মানুষের কন্ঠের আওয়াজ পেতেই। সানজু ঘাবড়ে গেলো।সানজু খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেসা করলো—আর-রে সাদিত ভাইয়া নাকি।

সাদিত খুব শান্ত হয়ে বলল— হ্যাঁ হ্যালো

সাদিতের কথা শুনে সানজু খুবই এক্সাইটেড হলো।ভাইয়া আপনি আমি সানজু কিনারার বেস্টফ্রেন্ড।ওর বোন হয়।যদিও মায়ের পেটের না,কিন্তু আমরা তার থেকে কোনো অংশে কম না।হিহি।

সাদিত বলল —-, ও আচ্ছা। তাই।

সানজু আবার বলা শুরু করলো।ভাইয়া আমার কিনারার সাথে কিছু দরকারী কথা ছিলো।আমাদের ভার্সিটির এডমিশনের কোচিং শুরু হয়ে গেছে।কিনারা আমাকে জানাতে বলেছিলো।তার জন্য ওকে কল করা।তো ভাইয়া কিনারা কোথায় ফোনটা ওকে একটু দেওয়া যাবে।

সাদিত বলল —- আসলে কিনারা ওয়াশরুমে। ও বের হোক আমি ওকে জানাবো যেনো তোমাকে কল ব্যাক করে।আর আমরা এখন দুজনে একটু ঢাকার বাইরে আছি,আর ঢাকার ফেরার পর পরই কিনারাকে কোচিং এ ভর্তি করিয়ে দিবো।

ওকে ভাইয়া, আপনি কেমন আছেন, আর কিনারা কেমন আছেন, জানেন ভাই কিনারা অনেক ভালো একটা মেয়ে,কিন্তু ওর একটা বাজে অভ্যাস কি জানেন ভাইয়া।ও সব সময় সব কিছু চেপে রাখতে পছন্দ করে।কাউকে কিচ্ছু বলতে চায়না।ওর মনের অনুভুতি কখনো প্রকাশ করে না, কাউকে বলেনা।ওর সাথে নতুন নতুন কেউ মিশলে ভাববে ও হয়তো অহংকারী।কিন্তু আপনি যদি মন খুলে ওর সাথে একবার মিশবেন দেখবেন ওর সবটা আপনি বুঝতে পারবেন।এভাবে আরও কিছুক্ষন ওদের মাঝে কথা বলার পর সাদিত বিদায় নিয়ে ফোনটা রেখে দিলো।এমন সময় সাদিত শুনতে পেলো,——-সাদিত

সাদিত এদিকে একটু শুনবেন।কিনারা বাথরুম থেকে বলল।

কিনারা বাথরুমে থাকায় ওর গলার আওয়াজটা স্পষ্ট সাদিত শুনতে পেলোনা।কিন্তু ওর নাম ধরে যে কিনারা ডাকছে এটা৷ ঠিক বুঝতে পারছে।

সাদিত কিছু না ভেবে এগিয়ে গেলো, বাথরুমের দরজার কাছে।তারপর নক করে বলল।কিনারা তুমি কি বললে, আমি ঠিক শুনতে পায় নি।

কিনারা আমতাআমতা করে বলল —- আমি আসলে, আমি আমার জামাগুলো আনতে ভুলে গেছি।আপনি যদি একটু কষ্ট করে লাগেজ থেকে এনে দিতেন।আমি তো সাওয়ার নিয়ে ফেলেছি।এখন এই অবস্থায় রুমে ঢুনা পসিবল না, ঢুকলে রুম ভিজে যাবে।

সাদিত কিনারার কথাটা বুঝতে পেয়ে—– লাগেজ থেকে কিনারার একটা ফ্রেশ জামা নিয়ে —বাথরুমের দরজায় নক করে বলল—কিনারা দরজাটা,খুলো।আমি তোমার জামাটা দিয়ে দেয়।

বাথরুমের দরজাটা খুলা মাত্রই সাদিত উষ্ণবাষ্প অনুভব করলো।সাদিত কিনারাকে পুরোপুরি ফ্রেশ না হয়ে ওভাবে দেখতে চায়নি।তাই সাদিত নিজের মুখটা,অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিলো।।তবুও জামাটা পার্স করার সময় সাদিত নিজের চোখ টা আস্তে আস্তে খুলে ঘুরে দাঁড়ালো।।
কিনারা যেহেতু সাদা কুর্তি পড়ে ছিলো, সেহেতু কিনারার শরীরের অনেক জায়গা দৃশ্যমান।কিনারা লজ্জায় ভয়ে কাচুমাচু করছে আর জামাকাপড় ঠিকে করছে।

সাদিতের না চাইতেও চোখ চলে যাচ্ছে,আর অজানা নেশা সাদিতকে জেঁকে বসলো।সাদিতের গলা শুকিয়ে আসছে,সাদিত চোখ পিটপিট করতে করতে হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে একটু নার্ভাস হয়ে বলল— এই-যে তোমার জামা।এগুলো পড়ে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসো।

কিনারাকে কাঁপা কাঁপা হাতে জামা গুলো নিতে দেখে সাদিত একটু মুচকি হেসে বলল — একি কিনারা, তুমি ভয় কেন পাচ্ছো।তোমাকে গিলে খেয়ে নিবো নাকি।

কিনারা সাদিতের এমন ঠোঁট কাঁটা কথা শুনে ভিষণ লজ্জায় পড়ে যায় আর তাড়াহুড়ো করে হাত বাড়িয়ে ড্রেস গুলো নিতে যায়। হাত বাড়াতেই পায়ের সাথে প্লাজু আটকে পড়ে যেতে নিলেই, কিনারা তখন অনুভব করলো সাদিত ওর হাতের কব্জিটা তখন শক্ত করে ধরে আছে,কিনারা রীতিমতো থতমত খেয়ে গিয়ে চোখটা খুলে দেখলো ও বাথরুমে নিজের ভিজা গা সাদিতের উপর হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে।সাদিত কিনারার এতো কাছে যে ওদের মাঝ খান দিয়ে হাওয়া পার্স করারও জায়গা নেই।সাদিত আস্তে আস্তে কিনারার মাথাটার পিছনে হাত দিয়ে কিনারার মাথাটা নিজের বুকের উপর হেলিয়ে দিলো।পুরো বাথরুম জুড়ে তখন উষ্ণবাষ্প গুলো ভেসে বেড়াচ্ছে। একটা গরম আবহাওয়া অনুভব করা যাচ্ছে।কিনারা যেহেতু গোসল শেষ তো কিনারার গা থেকে বডি ওয়াশের সুগন্ধিটা হুরহুর করে সাদিতের নাকে ভেসে আসছে।কিনারা বুঝতে পারলো না উষ্ণ অনুভূতিটা কি বাথরুমে ভেসে থাকা গরম বাষ্পের জন্য নাকি।সাদিত ওকে যেভাবে হ্যাচকা টানে নিজের কাছে টেনে জড়িয়ে নিয়েছে তার জন্য।এসবের মাঝে কিনারার কানের কাছে অনুভব করতে পেলো।সাদিতের হার্টবিট কেমন বাড়তে শুরু করেছে।কিনারা নিজের মাথা টা একটু সরিয়ে সাদিতের বুকের বা পাশে রেখে ওর হার্টবিটটা স্পষ্ট শুনতে পারছে।এতো জুড়ে হার্ট টা বিট দিচ্ছে যা আটকানো খুবই মুশকিল।সে বিট গুলো শুনতে শুনতে কিনারার নিজেরও হৃদস্পন্দন ও বাড়তে শুরু করলো।

সাদিত নিজের একটা হাত কিনারার কোমড়ে শক্ত করে চেপে ধরে, অন্য হাত দিয়ে কিনারার থুতনিটা ধরে,কিনারার ভিজা সুন্দর ফুটফুটে মুখটা তুলে ধরলো।কিনারাকে তখন দেখে মনে হচ্ছে ছোট্ট একটা বিড়ালছানা ওর ভিজা শরীর নিয়ে ভয়ে লেপ্টে আছে।

কিনারার নিজেরও কোনো আইডিয়া ছিলো না ওই ভিজা অবস্থায় ওকে কতটা মিষ্টি লাগছিলো।এতোটা মিষ্টি আর সুন্দর লাগছিলো যে সাদিতের ওকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করলো।সাদিত ওর নিজের পারসোনালিটি বজায় রাখতে কিনারাকে ছেড়ে দিতে চাইলো,কিন্তু সাদিত দেখলো কিনারা ওকে৷ দুহাতে জড়িয়ে ধরে,ওর বুকে মাথা রেখে কিছু বুঝার চেষ্টা করছে।

কিনারা সাদিত কে জড়িয়ে ধরেছে,এটা ভেবেই সাদিত পেনিক করতে শুরু করলো। সাদিত আর পারলো না নিজেকে কন্ট্রোল করতে।সাদিত কিনারার মাথাটা উঠিয়ে কিনারার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে ওর কাছে এগিয়ে এলো।কিনারা সাদিতকে এগিয়ে আসতে দেখে সাদিতের চোখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।কিনারা বুঝতে পারলো সাদিত আসলে কি করতে চাইছে।তাই কিনারা নিজেকে একটু দূরে সরানোর চেষ্টা করে,সাদিতের থেকে একটু পিছিয়ে এলো।কারণ সাদিতের চোখের দিকে তাকাতেই কিনারা বুঝতে পেরেছিলো৷ আসলে সাদিত এই মুহুর্তে কি চায়ছে।সাদিতের চোখে মুখে তা ফুটে উঠছে।কিনারা লজ্জায় পিছনের দিকে আরো কিছু টা সরে গেলো।

সাদিত কিনারাকে সরে যেতে দেখে আবারও এক হ্যাচকায় নিজের কাছে এনে আবার কিনারার কোমড় জড়িয়ে ধরলো।কিনারাকে সাদিতকে বাঁধা দেওয়ার জন্য নিজের হাত দুটো সাদিতের বুকের উপর রাখলো।সাদিতের বুকের উপর হাত রাখতেই কিনারা আবারও সেই উষ্ণতা অনুভব করলো।যা কিনারার সারা শরীর কাঁপিয়ে দিলো।

সাদিত ওকে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে,চারিদিকে কেমন পিনপিন একটা নিরবতা কাজ করছে।নিরবতা কাটিয়ে কিনারা বলে উঠলো সাদিত প্লিজ আমাকে ছাড়ো।

কথা শেষ করতেই সাদিত নিজের ঠোঁট টা কিনারার ঠোঁটের উপর ছোঁয়ে দিলো।সাদিতের স্পর্শ পেতেই কিনারা অদ্ভুত ভাবে শিহরিত হতে শুরু করলো। তবুও কিনারা ছাড়াতে চেষ্টা করলো,কিন্তু সাদিত যেনো ওকে ছাড়তেই চাইলোনা।সাদিত যেনো আজ বেশিই নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলছিলো।

এদিকে কিনারার ঠোঁটদুটো যেনো জ্বলে যাচ্ছে।সাদিত কে থামাতে চেষ্টা করলেও, সাদিত যেনো কিছুতেই শান্ত হচ্ছে না।সাদিত যে কিনারার থেকে আরও কিছু চাইছে তা ওকে দেখে বুঝায় যাচ্ছে।

সাদিত কিনারাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো,কিনারার ঠোঁট ছেড়ে ঘাড়ে ঠোঁট স্পর্শ করে বলল—- কিনারা।

সাদিত ওকে এতো জুরে জড়িয়ে ধরে ছিলো,কিনারা ভয়ে ছটফট করতে শুরু করলো।কিনারা বলল—- সাদিত প্লিজ, প্লিজ ছাড়ো আমাকে।কিনারার চোখ মুখ তখনো লাল।চোখের কোণে জল এসে গেছে।মনে হচ্ছে কিনারা যখন তখন কেঁদে ফেলবে।

কিন্তু কিনারা যে এসব বলছে,তাতে সাদিতের যেনো কোনো যায় আসছেনা।সাদিত কিনারার ঠোঁট দুটো চেপে আবার কিস করতে শুরু করলো। কিনারার মনে হচ্ছে ও শ্বাস না নিতে পেয়ে এখনি মরে যাবে।সাদিত ওকে চেপে ধরায় কিনারা কিছুই করে উঠতে পারছিলোনা।সাদিত কিনারার মাথাটা ধরে, আরো কাছে টেনে নিয়ে কিস করতে শুরু করলো।কিনারা যেনো আর দম নিতে পারছেনা।কিনারা বুঝতে পারছে ও আর বেশিক্ষন এভাবে দম না নিয়ে থাকতে পারবেনা।কিনারার এতোটাই অস্বস্তি হচ্ছিলো।নিজের কান্না চেপে ধরে রাখতে পারছিলোনা।দুচোখ বেড়ে পানি পড়তে শুরু করলো।আর রীতিমতো সাদিতের বুকে ধাক্কা মেরে যাচ্ছিলো।সে ধাক্কায় যেনো কিনারার কোনো লাভই হচ্ছিলো না।সাদিতের শরীরের কাছে কিনারার এ ধাক্কা যেনো কিছুই না।কিনারার এ সামান্য জোর টুকুও যেনো৷ আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে।

সাদিত ওর হাতের বাঁধন কিছুটা আলগা করতেই।কিনারা সজোরে ধাক্কা দিলো,সাদিত দুপা পিছিয়ে গেলো। কিনারা মুখটা সরিয়ে কান্না করতে করতে হাঁপাতে হাঁপাতে সাদিতকে কিছু বলতে চাইলো।কিন্তু কিনারা শ্বাস নিতে পারছেনা,চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে,কিনারার শ্বাস নিতে এতোটা কষ্ট হচ্ছে যার জন্য ওর মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।

সাদিত ধাক্কা খেতেই যেনো হুসে ফিরে এলো,,,ও কিনারার দিকে তাকাতেই বুঝতে পারলো আজ খুব বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে।।সাদিত মনে মনে রিয়েলাইজ করলো,কিনারার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে এসবে কিনারা প্রচুর ভয় পাচ্ছে ।তাই সাদিত কিনারার কাছে এগিয়ে গেলো।কিনারাকে শান্ত করার জন্য একহাত কিনারার মাথায় রেখে বুলিয়ে দিচ্ছিলো,আর অন্য হাত দিয়ে কিনারার একটা হাতটা ধরে চুমু খেতেই—-

কিনারা ভয়ে কেঁপে উঠে —-কিনারার মনে হচ্ছে সাদিত আবার ওর উপর হামলে পড়বে,কিনারা ভয়ে আরো জোরে কান্না করে দেই ,এতে কিনারার আরো দম আটকে আসছে।তবুও আটকা আটকা গলায় বলে উঠলো সাদিত, আমাকে প্লিজ ছাড়ো।প্লিজ আমাকে যেতে দাও।এইটুকু বলতেই যেনো হাঁপিয়ে গেলো আরো,আর দম নিতে পারছেনা।প্রচুর শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কিনারার কথা টা সাদিতের কান অব্দি পৌঁছানোর আগেই কিনারা চোখ বুজে সাদিতের বুকের উপর পড়ে গেলো।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here