নারীর_সতীত্ব পর্ব ১

#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_০১
Wohad Mahmud

বাসর ঘরে ঢোকার সময় আমার মা আমার হাতে একটা সাদা রুমাল দেয়।
আমি বললাম কি হবে মা এটা?
মা বলে এটা রাখ তোর স্ত্রীর সতীত্ব পরীক্ষার জন্য এটা দরকার হবে। সহবাসের সময় যদি তোর স্ত্রীর রক্তপাত হয় তাহলে বুঝবি তোর স্ত্রী ভালো আর না হলে বুঝতেই পারছিস। রুমাল টা কালকে আমাকে দেখাবি।

আমি তখন অবাক হয়ে বললাম ছিঃ ছিঃ লজ্জা করছে না মা ছেলের সাথে এসব কথা বলতে। আর সবথেকে বড় কথা হলো এসব কুসংস্কার আগের কালের মানুষ এগুলো বিশ্বাস করত। এগুলোর প্রতি বিশ্বাস ছাড়ো।

মা তখন বলে তুই কি আমার থেকে বেশি জানিস।

হ্যাঁ মা অবশ্যই আমি বেশি জানি তোমার থেকে। আর আমি একজন ডাক্তার। তোমার থেকে এসব বিষয়ে আমি ভালো জানি মা।

বেশি কথা না বলে যা বলছি তাই কর। আমি তোর সন্তান না তুই আমার সন্তান। মুখে মুখে তর্ক করিস না।

আমি আর কোনো কথা বললাম না। রুমাল টা নিয়ে রাগে রাগে রুম ঢুকে গেলাম। আমি কখনো অন্যায়ের প্রশ্রয় দিই না। কিন্তু আজ বিয়ের দিন কোনো ঝামেলা করতে চাচ্ছি না। বাসায় সবাই কত আনন্দ করছে। তাদের আনন্দ মাটি করতে চাচ্ছি না। বাসায় নতুন বউ এসব বিষয় জানলে লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাবে। কখনো তার সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব না।

রুমে ঢুকে খাটের উপর বসলাম রুমাল টা পকেটে রাখলাম। মা যেমনটা বলেছে যদি এমনটা করি তাহলে আমার আর আমার পরিবারের মান সম্মান সব নষ্ট হয়ে যাবে। যদি সে মা তারপর সব কথা মেনে চলা আমার দায়িত্ব কিন্তু মা হোক বা বাবা হোক অন্যায় কোনো কাজ করতে বললে সেটা তো করা যাবে না। বুঝাতে হবে, না বুঝলে প্রতিবাদ করতে হবে।

পৃথিবীর কোনো মেয়ে চায় না তার স্বামী প্রথম রাতেই তার সাথে সহবাস করুক। আমার স্ত্রীর পাশে বসার সাথে সাথে কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। তারপর আস্তে আস্তে কান্না করতে থাকে।

আমি বললাম কান্না কেন করছেন। স্ত্রী ( সানজিদা সাবনাজ) বলে আমার ভয় করছে।

আমি তখন বললাম আপনার মাঝে হয় না জড়তা কাজ করছে আর বেদনা। কারণ নতুন জায়গা নতুন পরিবেশে। সবারই এমন হয়। বাবা মা আত্মীয় স্বজন ছেড়ে নতুন জায়গায়। মা বাবা থেকে দূরে থাকা বেশ ভালোই কষ্ট। আমি সাধারণত পড়াশুনার জন্য ক্লাস এইট থেকে বাইরে থেকেছি বাবা মা ছেড়ে। মাঝে মাঝেই মা বাবার জন্য ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠতাম। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমাকে শুধু স্বামী না একজন বন্ধু হিসেবে পাবেন আপনার পাশে। অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়েন।

আর কিছু না বলে বিছানা থেকে উঠে একটা বালিশ নিয়ে নিচে একটা বিছানা পেড়ে, রাইট অফ করে শুয়ে পরলাম। কিছুক্ষণ পরে ঘুমন্ত অবস্থায় শুনতে পারি মাহমুদ মাহমুদ বলে কে যেন ডাকছে। কিন্তু এটা স্বপ্ন নয়। আমার হাতের বাহু ধরে সাবনাজ ডাকছে।
আমি বললাম কি হয়েছে সাবনাজ?

ভয় করছে আমার।

ভয় কেন করবে আমি আছি ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

আসলে আমি অন্ধকার রুম ঘুমাতে পারি না। ছোট থেকেই লাইট জ্বালিয়ে ঘুমাই। লাইট বন্ধ করা তো তাই ঘুমাতে পারছি না।
আমি নিজেকে মনে মনে ধিক্কার দিলাম। কেমন মানুষ আমি। একটু জানতেও চাইলাম না লাইট অফ করে দিব নাকি জ্বালানো থাকবে।

আমিও আবার একদম ঘুমাতে পারি না লাইট জ্বালিয়ে রাখলে। তারপর লাইট টা জ্বালিয়ে দিয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে আবার ঘুমিয়ে গেলাম।

ভোর রাতে দেখি আবার কে ডাকছে মাহমুদ মাহমুদ বলে। উঠে দেখি সাবনাজ ডাকছে। আমি বললাম কি হয়েছে কোন সমস্যা?

না কোনো সমস্যা নেই আজান দিয়েছে উঠে ওজু করে নামাজ পড়ে নেন।
কত বছর যে নামাজ পড়ি নাই তার কোনো হিসেবে নেই। তাও আজ শিতের মধ্যে নামাজ পড়তে ডাকছে। না উঠলে মাইন্ড করবে তাই উঠে নামাজ পড়ে নিলাম।

নামাজ শেষে অনেক ঘুম পাচ্ছিল কিন্তু না ঘুমিয়ে বাইরে চলে গেলাম। বাসায় থাকলে সকাল সকাল ঝামেলা শুরু করবে মা। স্ত্রীর সতীত্ব টেনে নিয়ে এসে বলবে রক্তমাখা রুমাল দিতে বলবে। কিন্তু আমাদের মাঝে তো এমন কিছু হয়নি যে রক্তমাখা রুমাল দেখাতে হবে। আর যদি হয়ে থাকত তাহলে আমি এমন কাজ কখনো করতাম না। কারণ এটা একটা মেয়ের জন্য অনেক অপমান জনক। আর রক্তপাত হলেই যে একজন মেয়ের সতীত্ব ঠিক আছ আর রক্তপাত না হলে সতীত্ব ঠিক নেই এই যুগে এসেও এসব বিশ্বাস করতে পারে কেউ, আমার মাকে না দেখলে জানতেই পারতাম না।

ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বাইরে চলে আসলাম‌। অনেকক্ষণ হয়ে গিয়েছে কিন্তু বাড়িতে যেতে ইচ্ছে করছে না। কারণ বাড়িতে গেলে মায়ের সম্মুখীন হতে হবে। আর বিষয় টা অনেক খারাপ হবে‌‌। পরক্ষনেই ভাবলাম এভাবে আর কতক্ষন সারাজীবন তো আর এখানে থাকতে পারিনা। যখনিই বাড়িতে যাই মায়ের সম্মুখীন হতে হবে। তাই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। পকেট থেকে ফোন বাহির করে দেখি ২২ মিসড কল দিয়েছে মা। ফোন সাইলেন্ট করা ছিল তাই বুঝতে পারি নাই। জোরে জোরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

বাসায় যেতে যেতেই আপু হাত ধরে টান দিয়ে রুমে নিয়ে গিয়ে বলল তোর কি কোনো আক্কেল জ্ঞান নেই ভাইয়া। বাসায় নতুন বউ রেখে কোথায় চলে গিয়েছিস খোঁজ নেই। মা তোকে খুঁজছে অনেকক্ষণ থেকে। অনেকবার ফোন দিয়েছে ফোন রিসিভ করিস না অনেক রেগে আছে গিয়ে দেখ কি বলে।

মা বাবা আর অনেকেই ডাইনিং এ বসে ছিল। আমার যাওয়া দেখে মা ইশারা করে অন্য রুমে যেতে বলে মা। কিন্তু আমি না দেখার ভান করে বসে থাকি বাবার পাশে। আর বসে গল্প করছি। আর কোনো উপায় না পেয়ে মা আমাকে বলে মাহমুদ আমার সাথে আই একটু।

বাবা তখন বলল দাঁড়াও একটু পরে যাচ্ছে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলছি। আমি যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম যাক এবার মতো বাঁচলাম মায়ের সম্মুখীন হতে হবে না। আমি শুধু চাচ্ছি বাসার মেহমান আজ চলে যাক। কারণ সবার সামনে সমস্যা সৃষ্টি করতে চাচ্ছি না।

নামাজ পড়ে দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ বিশ্রাম নিচ্ছি। সারারাত ঘুম হয়নি লাইট জ্বালিয়ে রাখলে আমার ঘুম হয় না। কিছুক্ষণ ঘুমানোর পরে বুঝতে পারি কে যেন ডাকছে মাহমুদ মাহমুদ বলে। উঠে দেখি সাবনাজ ডাকছে।

আমি বললাম কি হয়েছে কোন সমস্যা হয়েছে?

সমস্যা না মায়ের সাথে কথা বলব কাল আসার পরে থেকে আর কথা হয়নি। আমার ফোন বাড়িতে রেখে আসছি। আপনার ফোন টা দিলে কথা বলতাম। তারপর ফোন টা দিয়ে বললাম কথা বলো। আমাকে কেউ যেন আর না ডাকে সারারাত ঘুম হয়নি।

বিকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বাজারে যাচ্ছিলাম বাজার করতে। কাল সাবনাজ এর বাসা থেকে মানুষ আসবে আমাদের নিতে তাই বাজার করা দরকার। বাজারে যাওয়ার সময় মা আমাকে পিছন থেকে ডাক দিয়ে বলে। মাহমুদ এদিকে আই শুনে যা।
আমি আবার মহা বিপদে পড়লাম এবার কিভাবে কাটিয়ে যাব। কাছে গিয়ে বললাম কি হয়েছে মা বলো আমার হাতে একদম সময় নেই। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যা হয়ে যাবে। অনেক বাজার করতে হবে। অনেক সময় লাগবে বেশি রাত হলে এই রাস্তায় আবার রিকশা আসবে না।

মা বলে এতো তাড়াতাড়ি করার দরকার নেই। আজ সকাল থেকে তুই আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছিস। রুমাল টা কই তাড়াতাড়ি রুমাল দেখা আমাকে।

আমি বললাম রাতে এসে দেখাচ্ছি মা বাজার করে এসে। সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে। কোনো ভাবে ওখান থেকে চলে আসলাম। তারপর বাজার করে রাতে বাসায় ফিরে আসলাম।

তারপর মা বলে রুমাল দেখা এবার আমাকে আর কোনো অযুহাত নয়। আমি বললাম আচ্ছা রুম থেকে নিয়ে আসছি। রুমাল আমার পকেটে ছিল কিন্তু তাও বললাম রুম আছে নিয়ে আসি।
তারপর এসে রুমাল টা মায়ের হাতে দিলাম।

মা আমার দিকে তাকিয়ে আছে অল্পকিছু ধরে।

চলবে,,,,,,

বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। পরবর্তী পার্ট আপনাদের মতামতের উপর ভিত্তি করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here