নীল হতে নীলান্তে পর্ব ১০+১১

# নীল হতে নীলান্তে
#লেখিকাঃ তামান্না
দশম পর্ব

অর্নিতা- আমি আমার আম্মুর হত‍্যাকারীর খোজঁ পেয়েছি মামনি!

অর্নিতার মা অবাক চোখে তাকিয়ে আছেন। এত বছর পর সেই লোকের দেখা কি করে পেল?

অর্নিতার মামনি- কি বলছিস তুই? জানে আলম তো সেই বিশ বছর ধরেই দেশে নেই। তার খোঁজ আজ পর্যন্ত তোর বাবাই পায়নি আর তুই কিনা পেয়ে গেলি?

অর্নিতা- আমি পেয়েছি মামনি আমাকে মহাজন অধিকারীর লোকেরা বলেছে সে দুবাই থাকে।

জাহিদ আফসারী- দুবাই কোথায় থাকে? আর তাকে পাবেই বা কি করে?

অর্নিতা- এতদূর যেহেতু এসেছি তাকে খুজেঁ বের করতেও আমার সময় লাগবে না।

জাহিদ আফসারী- কিন্তু তাকে ধরা যে কঠিন মা!
আমি তোমার জীবনের ঝুঁকি নিতে পারব না!
আর এত সহজ নয় সে আন্ডারওয়াল্ডের প্রভাবশালী কোন ব‍্যাক্তি! এত সহজে সে ধরা দিবে না।

অর্নিতা- আমি এত কিছু জানিনা! বাবা বুঝার চেষ্টা করো ওর কারনে আমি আমার শৈশব হারিয়েছি।
পাড়া প্রতিবেশি আমার উপর আঙ্গুল তুলতো।
আমার মা এতগুলো লোকের ধারা ধর্ষণের স্বীকার হলো। রাতের আধারে খাল পাড়ে তাকে মেরে ফেলে আসলো। কেউ যখন তার অপরাধ নিয়ে কিছুই বলছেনা কেইস নিচ্ছে না আমার বাবাই সেই কেইস নিয়েছিল আর আমার বাবাকে তারা নৃশংস ভাবে খুন করলো।
তুমিই বলো আমি কি করে চুপ থাকতে পারি?

জাহিদ আফসারী- তবুও মা! তুমি ওই কেস এ যেয়ো না!
আমি স্পেশাল ফোর্সের ব‍্যাবস্থা করছি।
তারা তাকে ধরার জন‍্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।
আরেকটু ধর্য‍্যশীল হও সময়ের আঘাত সময়ই দিবে।

অর্নিতা বাবার কথা শুনে চুপচাপ তার বুকে মাথা রাখলো।
আর জাহিদ আফসারী মেয়েকে বুকে আগলে রাখলো।
অর্নিতা জানে তার বাবা তাকে কখনো নিরাশ করবে না তবে এটাও সত‍্যি তাকেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
সম্পর্কে জাহিদ আফসারী অর্নিতার চাচা হোন।
অর্নিতার বাবা আজাদ আফসারী বড় এবং জাহিদ আফসারী ছোট ভাই। আজাদ আফসারী একজন সৎ পুলিশ অফিসার পরিবার নিয়ে তিনি চট্টগ্রাম এ থাকতেন। সেখানকার পরিবেশ ছিল প্রচন্ড উগ্র এবং উশৃঙ্খল। জানে আলম ছিলেন সেই এলাকার একজন প্রভাবশালী নেতা বলা চলে পুরোদস্তুর একজন গুন্ডা!
বড় বড় মন্ত্রীরাও তার ভয়ে তটস্থ থাকতো। কেউ তাকে নিয়ে ভয়ে কেইস বা মামলা মকাদ্দমায় জড়াতো না।
সেই জানে আলমের নামেই কেইস ফাইল করেছেন আজাদ সাহেব।
জানে আলম এ নিয়ে হুমকি দিলেও তিনি তার কথার খেলাপ করেননি।
সেইদিনই রাতের আধারে তার স্ত্রীকে তার বাড়িতেই জানে আলম এ তার সহযোগীরা গণধর্ষণ করে এবং সেখানেই তাকে হত‍্যা করে মেরেফেলে।
ছোট্ট অর্নিতা তখন চার বছরের। তার মায়ের সাথে কি হচ্ছে সে না বুঝলেও এটা ঠিকই বুঝেছিল সেদিন তার মায়ের সাথে খুব খারাপ কিছু হচ্ছে।
অর্নিতার মা যখন চিৎকার করে সাহায‍্য চেয়েছিল তখন কেউ তার মায়ের পাশে আসেনি।
অর্নিতার চোখে এখনো ভাসছে তার মায়ের আর্তনাদ।
সেদিন রাতে যখন অর্নিতাদের বাড়িতে ঐ লোকগুলো আসে তখনই অর্নিতার মা তাকে একটি রুমের বারান্দায় দরজা বন্ধ করে গিয়েছিল। তারপর আবার বারান্দার সঙ্গে সংযুক্ত রুমটিকে ও তিনি বন্ধ করে ফেলেছিলেন।
হয়তো নিজের সর্বনাশের কথা আগেই বুঝে গিয়েছিলেন।
অর্নিতার বাবা রাতের ডিউটি করে বাড়িতে ফিরে এসে স্ত্রী আর মেয়েকে খুজেঁ পাননি। বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনিও হয়েযান লাপাত্তা!
অর্নিতার মায়ের লাশ খাল থেকে উঠানোর পর পরেরদিন আজাদ সাহেবের লাশ ও পাওয়া যায় সেই খালেই।
জাহিদ আফসারী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এসে সেদিন অর্নিতাকে সেই রুম থেকে বের করে আনেন।
ছোট্ট অর্নিতা সবাইকে ছেড়ে চাচার কোলে উঠে পরে।
জাহিদ ও তার ভাই ও ভাবীর শেষ সম্বলকে সেদিন বুকের মাঝে আগলিয়ে নিয়েছিলেন।
অর্নিতাকে অনেকে দেখে মুখ ছিটকাতো কারন তার মা ধর্ষিতা! ছোট্ট অর্নিতা তখন অনেক ভেঙ্গে পরতো। তখন তার ছায়া হয়ে পাশে দাড়িয়ে ছিল তারই চাচা জাহিদ আফসারী।
নিজের সন্তানের মত লালন-পালন করে বড় করে তুলেছিলেন তাকে।

এইদিকে……

চব্বিশ ঘন্টা পাড় হওয়ার পরই আজ অরুপকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে।
অরুপের কিছুটা রেসপন্স পাওয়া গিয়েছে।
ডাক্তারেরা তাকে নিয়ে আশাবাদী খুব তাড়াতাড়ি সে সুস্থ হয়ে উঠবে।
অর্নিতা অরুপকে দেখতে এসেছে আজ অরুপ কিছুক্ষণ আগেই চোখ খুলেছে। কথা বলতে না পারলেও সবার দিকে তাকিয়ে থাকে। খুব কষ্ট হচ্ছে তার কথা বলতে।
অর্নিতা তার পাশেই দাড়িয়ে আছে।

অর্নিতা -খুব কি কষ্ট হচ্ছে আপনার অরুপ?

অরুপ মাথা নাড়িয়ে সায় জানালো তার কষ্ট হচ্ছে।

অর্নিতা- ঠিক হয়ে যাবেন আপনি, একটু সময় লাগবে।
আপনি সুস্থ হোন আমরা আবার ও একসাথে কাজ করবো।

অরুপ – একটা মুচকি হাসি দিয়ে দিল।

অর্নিতাও তার সাথে হেসে উঠলো। অরুপ অর্নিতার সঙ্গে কথা বলেই তার মা বাবার দিকে একবার তাকালো।
অর্নিতা তা বুঝতে পেরে তার হাতের মুঠোয় নিজের হাত নিয়ে বলে উঠলো-

চিন্তা করবেন না সব ঠিক হয়ে যাবে। আপনি সুস্থ হলে আন্কেল আন্টি ও আর কান্না করবে না। তাদের একমাএ সন্তান আপনি! আপনার চিন্তায় তারা সারাদিন চিন্তিত।

অরুপ মন্ত্র মুগ্ধের মত চেয়ে আছে অর্নিতার দিকে। এই মেয়েকে সে সব সময় একটা কঠিন কঠিন ভাব নিয়ে চলতে দেখেছিল। এই মেয়েকেই সে সব সময় সবার সঙ্গে শক্ত ভাবে কথা বলতে দেখেছিল আর আজ এই মেয়েকেই সে এতটা নরম ভাবে কথা বলতে দেখল।

আসলেই নারী জাতি সব যায়গায় সব পরিস্থিতিতে নিজেকে নিখুঁত ভাবে মানিয়ে নিতে পারে। কথাটা একদম যুতসই।
অরুপ অর্নিতার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকার কারনে অর্নিতা তাকে প্রশ্ন করল কি? ব‍্যাথা করছে?
অরুপ বুকের উপর ইশারা করে এখানে।

অর্নিতা ব‍্যাস্ত হয়ে- বুকে ব‍্যাথা করছে?
দেখি দেখি কি বেশি ব‍্যাথা করছে?

অরুপ অর্নিতাকে ব‍্যাস্ত হতে দেখে আবার মাথা নাড়িয়ে জানালো তেমন নয়।
অর্নিতা উঠতে যাবে অরুপ তার হাত ধরে বসতে ইশারা করল।

অর্নিতা বসে পরল আবার ও।
অর্নিতা কিছুক্ষণ বসে তার সঙ্গে সময় কাটিয়ে বেরিয়ে পরল অফিসের জন‍্য।

অফিসে এসে ডাইরেক্টর স‍্যারের সঙ্গে কথা বলল অর্নিতা। অরুপ কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর এবং মহাজন অধিকারীর উপর কঠিন নজরদারি রেখে তাকে সেই এলাকায় আবার পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ডিলারদের মাধ‍্যমে যে করে হোক অর্নিতা জানে আলম চৌধুরীর খোঁজ বের করে ছাড়বেই

ডাইরেক্টর স‍্যার- ইনটারন‍্যাশনাল টেরোরিজম এর উপর আমাদের অফিসারদের নজর আছে। মনে পরেছে আমাদের একজন স্পেশাল ডিপার্টমেন্ট এর অফিসার আছেন যিনি আন্ডারওয়ার্লডের এইসব কাজে খুব দক্ষ।
আমি যতটুকু জানি সে সেখানকার সেই লোকদের সঙ্গে খুব সহজে মিশে গিয়েছে। তাকে এখনো কেউ চিনতে পারেনি। কারন সেও তোমার মত চাকরিতে জয়েন দেওয়ার পর নিজের পরিচয় লুকিয়ে দুবাইয়ে চলে গিয়েছে।
এক্ষেত্রে সে খুব চৌকস এটা আমি বলতে পারি।
তুমি চাইলে আমি তোমাকে সব তথ‍্য বের করে দিতে সাহায‍্য করতে পারি।

অর্নিতা – আপনি আমাকে তার সাথে যোগাযোগ করতে সাহয‍্য করুন স‍্যার। আমি চাই আমার বাবা মায়ের খুনিকে নিজের হাতে ধরতে।
তাকে শাস্তি দিতে এবং তাকে দেশের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রয়োগ করতে।

ডাইরেক্টর স‍্যার – অবশ‍্যই তোমার ইচ্ছে পূরণ হবে।
আমি সেই আশাই করি তোমার থেকে।
অর্নিতা স‍্যারের সঙ্গে কথা বলেই বেরিয়েগেল বাহিরে।
#নীল হতে নীলান্তে
#লেখিকাঃ তামান্না
একাদশ পর্ব

অর্নিতা – আপনি আমাকে তার সাথে যোগাযোগ করতে সাহয‍্য করুন স‍্যার। আমি চাই আমার বাবা মায়ের খুনিকে নিজের হাতে ধরতে।
তাকে শাস্তি দিতে এবং তাকে দেশের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রয়োগ করতে।

ডাইরেক্টর স‍্যার – অবশ‍্যই তোমার ইচ্ছে পূরণ হবে।
আমি সেই আশাই করি তোমার থেকে।
অর্নিতা স‍্যারের সঙ্গে কথা বলেই বেরিয়েগেল বাহিরে।

দীর্ঘ একমাস পর,,,
অরুপ কিছুটা আগের থেকে সুস্থ হয়েছে। হাটতে কিছুটা পারে ও বেডে বসতে পারে। গুলির ক্ষতটাও শুকিয়ে গিয়েছে তার। অর্নিতা কাজের ফাকে ফাকে তাকে দেখতে চলে আসে।
অরুপের মা ও বাবার সাথে বেশ ভালোই সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তার।
এরই মাঝে অর্নিতা দুবাইয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে ফেলেছে। অনেকটা কাউকে না জানিয়েই সে একাই এইসব করে ফেলেছে। অর্নিতার কাছে তার বাবা মার খুনি কে নিজের হাতে শাস্তি দেওয়াই যেন বড় চ‍্যালেঞ্জ এখন।
এমনিতেই এতটা বছর সে এই দিনের অপেক্ষায় ছিল। এখন আর দেরী করা যাবে না।
তবে অর্নিতা তার বাড়িতে এবং অন‍্যান‍্যদের সাথে বলেছে সে একটিকাজে থাইল্যান্ড যাচ্ছে।
অর্নিতার বাবাকে ও সে এই কথাই বলেছে।
তার ধারণা বাবা এই কথা শুনলে তাকে কোনকালেই আসতে দিবে না।

এয়ারপোর্ট এ দাড়িয়ে আছে অর্নিতা, সঙ্গে তার বাবা জাহিদ আফসারী ও তার মামনি।
এই প্রথম সে বাংলাদেশ এর বাহিরে যাচ্ছে।
তাকে এগিয়ে দিতেই তার মামনি এসেছেন।
থাইল্যান্ডের ফ্লাইট নাম্বার এনাউন্স হচ্ছে।

মামনি অর্নিতার হাত ধরে রেখেছে। আর পাশেই অর্নিতার বাবা তাকে উপদেশ দিচ্ছে কিভাবে কি করতে হবে। অর্নিতার জীবনে সবচেয়ে বড় শিক্ষক বা আদর্শবান ব‍্যাক্তি হচ্ছে তার বাবা।
বাবার পর আর কেউই তার জায়গায় আসতে পারবে না অন্তত।

অর্নিতার সময় হয়েগেছে একটু পরেই হয়তো এনাউন্স হবে। মামনিকে জড়িয়ে ধরেছে সে, আজ থেকে তার যুদ্ধের শুরু! এই যুদ্ধের শেষ কবে হবে তা ঠিক নেই। মামনিকে জড়িয়ে ধরেই তার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরছে। সবার আড়ালেই চোখের পানি লুকিয়ে ফেলল সে।
মুখে হাসি ফুটিয়ে মামনির পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলো। বাবার পায়ে ধরে সালাম করে নিল।
তিনিও অর্নিতাকে জড়িয়ে ধরলেন।
মেয়েকে এতদূরের পথ অতিক্রম করতে হবে।

জাহিদ আফসরী- সাবধানে থেকো! কোন সমস‍্যা হলে আমাকে জানিয়ে দিও।

অর্নিতা- জ্বী!

জাহিদ আফসারী – তোমার জন‍্য সব সময় আমার আশির্বাদ রয়েছে, যাও সময় হয়েগেছে, তোমাকে আর ধরে রাখতে চাই না।

অর্নিতা- ঠিক আছে বাবা,মামনি তোমরা নিজেদের খেয়াল রেখো,যাই।

অর্নিতা সবাইকে বিদায় জানিয়ে চলেগেল তার গন্তব‍্যে।
থাইল্যান্ডের থেকে দুদিন পরই সে দুবাই শহরে পৌছবে।
দীর্ঘ সময়ের পর থাইল্যান্ডে ল‍্যান্ড করলো বিমানটি।
অর্নিতা সেখানকার একটি রেস্টুরেন্টে এ অপেক্ষা করতে লাগল এক বিশেষ ব‍্যাক্তির জন‍্য।
যার জন‍্যই অর্নিতার এখানে আসা আর সবাইকে থাইল্যান্ডের কথা বলাও এই কারনে।

অর্নিতার গায়ে স্লিভলেস একটি গাউন। হাইলাইট করা মেকাপের কারনে আসল চেহেরা তেমন ফুটে উঠেনি।
বাস্তব ও মেকাপ বিহীন চেহেরায় তার সৌন্দর্য যেমন ফুটে উঠে মেকাপে যেন সেই সৌন্দর্য ফিকে হয়েগেছে।
অর্নিতার চালচলন দেখে কেউ সহজেই বুঝতে পারবে না সে একজন গোয়েন্দার কর্মকর্তা।
বাঙ্গালী নারী হলেও আজ তাকে অন‍্যরকমই লাগছে।
বরং সবাই তাকে কোন মডেলই ভেবে নিবে।

এরই অর্নিতার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রতিক্ষিত সেই ব‍্যাক্তিটি চলে এলো।
অর্নিতা হয়তো জানেই না তার উপরে একজন নজর রেখেছে।

অনেকক্ষণ বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে অর্নিতা ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে চলেগেল।
দীর্ঘ জার্নির পর এমনিতেই সে এয়ারপোর্টের ওয়াশরুমে ফ্রেশ হয়েছিল। এখন আবার এখানে এসেও।
অর্নিতা ওয়েটারকে ডেকে একটি কফির অর্ডার দিয়েদিল।

এর মধ‍্যেই একটি লোক তার সামনের চেয়ার টিতে বসে পরলো।
অর্নিতা তার হ‍্যান্ড ব‍্যাগ থেকে মোবাইল বের করে এখানকার সময় আর ম‍্যাপ দেখতে লাগল।
অর্নিতা তারদিকে একবার তাকিয়ে থেকে আবার মোবাইলে নজর দিলো।

লোকটি- Hi ! I am dihan, I think you are from Bangladesh! Am I right?

অর্নিতা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে – yes, I am bangladeshi !

লোকটি- oh! can I speak to you in Bangla?

অর্নিতা- Why not?

লোকটি- Thank you so much!

লোকটি – আসলে আপনাকে দেখে আমার ভালো লাগলো! বাঙ্গালী মেয়ে থাইল্যান্ডের শহরে এসে একা একটা রেস্টুরেন্টে একা একা বসে আছেন তাই ভাবলাম
একটু আপনার সাথে সময় কাটানো যাক।

অর্নিতার কাছে বিরক্ত লাগছে। তবুও ধর্য‍্যের সহিত উত্তর দিলো অবশ‍্যই।

অর্নিতা এবার উঠে দাড়ালো। লোকটি ও দাড়িয়ে পরলো অর্নিতার সাথে।
এর মাঝেই একটি মেয়ে ডেকে উঠলো। আর লোকটিও সেই দিকে ফিরে তাকালো। ও তার মানে লোকটির নাম সাব্বির!
পিছনে ফিরে তাকানোর ফলে অর্নিতার মনে হলো লোকটির ব‍্যাক পকেটে কিছু একটা দেখেছে সে ।
অর্নিতা দেখেও না দেখার ভান করে বেরিয়েগেল রেস্টুরেন্ট থেকে।

থাইল্যান্ডের র রাজধানী ব‍্যাংকক হলেও! থাইল্যান্ডের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান হচ্ছে পাটায়া। পাটায়া যে শুধু শহর তা নয় , এখানে বিভিন্ন বড় বড় পর্যায়ের লোকজনের সমাগম এখানে।
রাজনীতি থেকে শুরু করে বড় বড় মাফিয়াদের অঞ্চল এই পাটায়া।
অর্নিতা দিনভর ঘুরাঘুরি করে এখানকার একটি হোটেলে উঠে পরেছে।
পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলল কিছুক্ষণ তারপর শুয়ে পরল বিছানায়।
অরুপ ফোন করেছে সবেমাত্র।

অরুপ – মিস অর্নিতা আমাকে বিদায় না জানিয়ে চলেগেলেন কাজটা কিন্তু একদম ঠিক নয়।

অর্নিতা- সরি সময় পাইনি জানানোর।

অরুপ- কখন সময় হবে আপনার?

অর্নিতা চুপ করে আছে তারপর বলল- বিশেষ একটা কাজ পরে গিয়েছিল তাই চলে এসেছি যখন কাজ শেষ হবে তখন আপনার সাথে দেখা করে সব বলব।

অরুপ -ও, আচ্ছা ঠিক আছে, সেই বিশেষ কাজের শেষে বিশেষ দিনে আপনার সাথে আমার দেখা হবে আবারো। কি দেখা করবেন তো?

অর্নিতা- জ্বী।

অরুপ- আচ্ছা রাখছি তাহলে কাল কথা হবে আবারো।

অর্নিতা- আচ্ছা আমিও কাল আপনার সাথে কথা বলবো।
____________________

রেস্টুরেন্টের আবারো এসেছে অর্নিতা।
দিহান রুপি সাব্বির এই মাত্রই এসেছে এখানে।
অর্নিতা যেন এই সময়েরই অপেক্ষায় ছিল।
সাব্বির আজ আবারো একটা মেয়ের সাথে তবে আরো কয়েকজন তার সঙ্গে আছে।

সাব্বির বসা থেকে উঠে সিড়ির কাছে একটা জায়গা এ গিয়ে দাড়িয়েছে। অর্নিতা ও পিছু নিয়ে তার পিছন দিয়ে গিয়েছে।
সিগারেটের গন্ধ পাচ্ছে সে। অর্নিতা আরেকটু কাছে যেতেই সাব্বির এক টান দিয়ে তাকে সিড়ির পাশেই সেই রুমে নিয়ে গেল। অর্নিতার মুখে তার হাত আর ওর হাতগুলো তার হাতের মুঠোয়।

অর্নিতা তার পা দিয়ে লোকটির পায়ে জোরে লাথি দিয়ে দিল লোকটি কিছু বুঝে উঠার আগেই অর্নিতা পকেট থেকে পিস্তল বের করে লোকটির বুকের পাশে ধরলো।

অর্নিতা- হ‍্যান্ডস আপ মিস্টার দিহান আয়াজ খান!
ক্রিমিনালদের সঙ্গে হাত মেলানোর জন‍্য আপনাকে আইনের আওতায় নেওয়া হলো।

দিহান কিছুক্ষণ বোকার মত চেয়ে রইল।
এমন ভাব যেন সে আকাশ থেকে পরল সবেমাত্র।
কিছুক্ষণ এভাবে থেকে হেসে দিয়ে অর্নিতার হাতে হাত মিলিয়ে নিল।
অর্নিতাও হেসেদিল,

দিহান- কেমন কাটলো থাইল্যান্ডের প্রথম দিন?

অর্নিতা- ভালোই,

দিহান – Good! একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা আমার সঙ্গে

অর্নিতা- আপনার সঙ্গে অবস্থান করা লোকগুলো এবং মেয়েগুলোর থেকে সাবধানে চলবো তাই তো?

দিহান – হ‍্যা, ওরাও! ওরা যেন কোন ভাবেই বুঝতে না পারে আমরা এক এবং আমাদের কাজ হচ্ছে ক্রিমিনালদের সব ইনফরমেশন সরকারের কাছে পৌছে দেওয়া।

অর্নিতা- হুম, আপনার কি মনে হয় কতটুকু আমরা এগুতে পারবো?

দিহান – আমি পুরোপুরি আশাবাদী। এখান থেকেই তুমি
জানে আলমের খোঁজ পেয়ে যাবে।
শুনো কাল সকাল বেলায় আমার সঙ্গে শহর থেকে একটু দূরেই একটি গ্রাম আছে সেখানে আমার সাথে দেখা করতে আসবে।
সেখানে আমি তোমাকে সব কিছু খুলে বলবো।
কি করে কি করতে হবে।

অর্নিতা- আচ্ছা। তাহলে কাল দেখা হচ্ছে আবারো।

দিহান- হুম, এখন চলো। বেশিক্ষণ সময় হলে ওরা আমাকে খুজতে শুরু করবে।

চলবে।
গল্পের রিয়েক্ট এত কম কেন আপনাদের?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here