নুর পর্ব ১+২

#নূর💔
[#Dangerous_Lover_3]
Writer-Moon Hossain
[Shabnaj Hossain Moon]
Part-01
“মুসলিম হলে কি আমার ভালোবাসা গ্রহণ করতে? আমার প্রিয়তমা হতে?
আমি নাস্তিক বলে কি তোমাকে ভালোবাসার অধিকার নেই?তোমাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার অধিকার নেই? আস্তিক নই এজন্য আমাকে এতো ঘৃণা করো? আমার ভালোবাসাকে ঘৃণা করো? আমি তোমার মাধ্যমে ঐশ্বরিক শক্তির নূর অনুভব করেছি।অনুভব করেছি একজন আছে সর্বত্র।যিনি এই সুন্দর জাহানের সৃষ্টিকর্তা।
সুন্নতে খৎনা করব। মেহেরাব ইসলাম খান আমার নাম এখন থেকে। নাস্তিকতার সকল চিহ্ন মুছে ফেলব। হ্যাঁ আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করব সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার সাহস আছে তাই মুসলিম হয়ে তোমাকে ভালোবেসে জীবনসঙ্গী করতে চাচ্ছি। তোমার কি এই সাহস আছে একজন নাস্তিক কে ভালোবেসে আস্তিক বানানোর? এবার বলো,আমাকে ভালোবাসবে?জীবনসঙ্গী হবে?হবে আমার প্রিয়তমা? হাতে হাত রাখবে আমাকে ইসলামে দীক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য?
ভয় পাচ্ছো? আমি ইসলাম গ্রহণ করলে তোমাকে আমার হতেই হবে এজন্য?ভয় পেলে তোমার ঘন কালো পাপড়ি যুক্ত চোখ দুটো লজ্জায় নুইয়ে পড়ে,মুখশ্রীতে লাল আভা ছড়ায় লজ্জাতে। তোমাকে তখন দারুণ মানায় হা!হা!হা!।
একজন নাস্তিক,যে ধর্মের কঠোর বিরোধিতাকারী,জোর যার মুল্লুক তার নীতিতে বিশ্বাসী এমন ব্যাক্তি একজন মুসলিম নারীকে ভালোবেসে তার নূরে আলোকিত আস্তিক হয়ে গোটা পৃথিবীকে চমকিয়ে দেয়।পৃথিবী এক পলকে যেন থমকে গিয়েছিল এমন পবিত্র ভালোবাসা দেখে।
____‌_:_______
_পূর্বকথা_
খুব ভীড়।মেয়েদের ভীড়। মনে হচ্ছে ইংল্যান্ডের কোন কিং ভীড়ের মাঝখানে।ভীড় ঠেলে দেখা গেলো এক সত্যি সত্যি একজন কিং অথবা প্রিন্স।চমৎকার একটি গাড়ির সামনে হেলান দিয়ে বসে পা তুলে কানে হেড ফোন লাগিয়ে গান শুনছে দুটো সুন্দরী মেয়ের কোমরে হাত রেখে। মনে হয় মেয়ে দুটি গার্লফ্রেন্ড কিংটির। গালে কিছু লিপস্টিকের দাগ দেখা যাচ্ছে। দারুণ সুদর্শন। যেন স্বর্গের দূত দেখছে সব মেয়েরা৷ দূর থেকে সবাই সেলফি নিচ্ছে।
আকাশে অন্ধকার নেমে এসেছে। এই বুঝি ঝড় উঠবে।
কিছু ছেলের চিৎকার শোনা গেলো। পাঞ্জাবি পড়া কয়েকটা ছেলেকে কিছু দেশীয় বিদেশি ছেলেরা লোহা দিয়ে আঘাত করছে। আশেপাশে সবাই হা করে দেখছে। প্রফেসরাও কিছু বলছেনা। স্বাভাবিক ভাবে তারা ক্লাসে লেকচার দিচ্ছে। যেন এসব স্বাভাবিক। ছেলেগুলোর আত্ম চিৎকার আকাশে মেঘ গর্জন করে উঠলো। ভয়ে সবাই এই অমানবিকতা দেখে যাচ্ছে। বাঁধা দেওয়া বা কিছু বলার সাহসও কারও মধ্যে নেই। মার খাওয়া ছেলেগুলো কাশ্মীর থেকে এসেছে। মুসলিম। রক্তে রঞ্জিত হয়েছে ছেলেগুলোর শরীর। কতটা অমানবিক আর ঘৃণ্য মনের হলে কাউকে এভাবে কেউ আঘাত করতে পারে তা কারও জানা ছিলোনা।
সকালের সেই ভীড়ের কিংয়ের মতো দেখতে ছেলেটি একটি ছূরি নিয়ে এক ছেলের গলায় আঘাত করতে গেলে হঠাৎ এক মেয়ে ছূরি হাতের মুঠোয় নিয়ে বাঁধা দেয়। মেয়েটির হাত কেটে রক্ত ঝরছে৷
ধপাস করে আওয়াজ হলো। ছেলেটির গালে মেয়েটি থাপ্পড় দিয়েছে। ছেলেটির মুখ মুসলিম ছেলেদের রক্তে লাল হয়েছিলো। মূহুর্তেই তার চোখ আগুনের ন্যায় জ্বলে উঠলো। চোখ থেকে যেন টগবগ করে জলন্ত অগ্নি লাভা থেকে আগুন বের হচ্ছে। চারপাশের সবাই একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে। কে এই সাহসী মেয়েটা! এখানকার ভাইসচ্যান্সেলরের ছেলের গায়ে হাত তুললো!যাকে দেখতে কিংয়ের ন্যায় সুদর্শন, শক্তিশালী,বিত্তশালী,ক্ষমতাশালী,চোখা ধাধানো ব্যাক্তিক্তের অধিকারী।যাকে একবার দেখলেই মেয়েরা প্রেমে পড়তে বাধ্য।যাকে শুধু একবার দেখার জন্য মেয়েরা প্রতিদিন পার্লার থেকে সেজেগুজে ভার্সিটি আসে। যদি একবার দৃষ্টি পড়ে তাহলে মেয়েদের সৌন্দর্য সার্থক। যার দিকে তাকিয়ে থাকে এক পলকে সকাল কে বিকেল বানিয়ে ফেলে, যার পাশ দিয়ে গেলে হার্টবিটের আওয়াজ শোনা যায়,যার একটিবারের স্পর্শে জীবন সার্থক হয় মেয়েদের। যার ভয়ে অক্সফোর্ড কাপে,যার পাশ দিয়ে যাওয়াও নিষিদ্ধ এবং অসম্ভব । যাকে গুডমর্নিং বলে অনুমতি নিয়ে ভার্সিটি ঢুকতে হয় সকল স্টুডেন্ট ও প্রফেসরকে তাকে কিনা সবার সামনে থাপ্পড় দেওয়া হলো। এটা কি মানা যায়! অবুঝ মেয়েটি তো ছেলেটাকে জানেও না। মেয়েটির কপালে দুর্ভোগ লেখা হয়ে গিয়েছে। স্বয়ং ইশ্বরও বাঁচাতে পারবেনা অক্সফোর্ডের কিং ফায়ারের কাছ থেকে।
.
লিডস শহড় পৃথিবী বিখ্যাত বৃষ্টির জন্য। প্রায় সারা বছর বৃষ্টি পড়ে ইংল্যান্ডের লিডস শহরে। দু’ধারে সমুদ্র। মাঝখানে সরু মারবেলের রোড।বৃষ্টিতে জনমানবহীন রোডের প্রান্তে দাঁড়ালে মনে হবে আমরা সবাই রাজা-রানি। সমস্তটা যেন মহা আল্লাহর তৈরি করা জান্নাতের এক চিলতে।
রোড টাকে এখন জাহান্নাম লাগছে। মৃত্যু যেন স্পর্শ করতে চাচ্ছে বৃষ্টির ফোঁটায়। রোডের দুই প্রান্ত থেকে হাই স্পিডে গাড়ি আসছে। ব্ল্যাক জ্যাকেটে মাথায় হুডি পরা একজন দাড়িয়ে আছে রোডের মাঝখানে।পরিবেশটা ভয়ংকর। গাড়ি স্পর্শ করার আগেই কেউ একজন স্পর্শ দিয়ে চিৎকার করে তাকে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে আনলো।স্পর্শ পেয়ে তার পৃথিবী থমকে গেলো।তার চোখজোড়া আবরণে ঢাকা একজোড়া ঘন কাজল পাপড়ি যুক্ত চোখে আটকে গেলো। বৃষ্টির ফোঁটায় মুখের আবরণী লেপ্টে আছে, অস্পষ্ট ভাবে হরিণী চোখজোড়া দেখা যাচ্ছে। চোখের গভীরতায় হাড়িয়ে অতল রহস্য সমুদ্রে সে হারিয়ে গেলো।হাসতে হাসতে সমুদ্রের উপর তার দেহখানি যেন ধীরেধীরে ডুব দিলো।
মেয়েটি ক্লাসে চিৎকার করে উঠলো। ভার্সিটির সবচেয়ে সিনসিয়ার প্রফেসরের ক্লাস চলছিলো। যার ক্লাসে নিশ্বাসের আওয়াজও নিষিদ্ধ। আবারও সেই ঘটনা মনে পড়ে গেলো। ছেলেটি কি সমুদ্র থেকে উঠতে পেরেছিল নাকি সমুদ্রে ডুবে মারা গিয়েছিলো!
– ডোন্ট সাউট ইউ ইডিয়ট গার্ল! স্ট্যান্ড আপ।হোয়াট ইজ ইউর নেইম? -মোছাঃ ইয়াসমিন।
প্রফেসর বড় বড় চোখ করে ঠোঁট টেনে বলল-ইসনি?
-ইয়াসমিন।
-ইনসি
প্রফেসর সহ ক্লাসের সব মেয়েরা মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে।বিদেশিরা কেউ তার নাম বলতে পাচ্ছেনা।
মেয়েটি সহজ করে বলল- ক্যান্ডেল। মাই নেইম ইজ ক্যান্ডেল।
বাংলায় যার অর্থ মোম। ইংল্যান্ডের লন্ডনের অক্সফোর্ডে সে বাবার ইচ্ছেতে এডমিশন নিয়েছে। যুক্তরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ড,আয়ারল্যান্ড ,স্কটল্যান্ড, ওয়েলস মোট চারটা দেশ নিয়ে যুক্তরাজ্য। যাকে গ্রেট ব্রিটেইন নামেও ডাকা হয়। ইংল্যান্ডের আয়তন একলক্ষ ত্রিশ হাজার দুইশত ঊনআশি। মোট জনসংখ্যার ৬০% খ্রিস্টান।২১% মুসলিম। দিন দিন মুসলিমদের সংখ্যা বাড়ছে ইংল্যান্ডে। এছাড়া অন্যান্য ধর্মও রয়েছে। পাশাপাশি বিশাল নাস্তিকের জনসংখ্যাও কম নয়। ইংল্যান্ডের রাজধানী হলো লন্ডন। যা টেমস নদীর ধারে অবস্থিত।যেখানে অক্সফোর্ডে অবস্থিত ৩৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় অক্সফোর্ড। এইচ এস সি এক্সামের আগেই অল প্রিপ্রারেশন নেওয়া হয়ে গিয়েছিলো মোমের। ছোট থেকে তাকে প্রচন্ড পড়াশোনায় খাটতে হয়েছে।অজস্র সার্টিফিকেট অর্জন করতে হয়েছে অক্সফোর্ডে আবেদন করার জন্য। এইচ এস সি তে স্ট্যান্ড করে সোজা অক্সফোর্ডে এডমিশন পেয়ে গেলো খুব সহজে।
ইয়াসমিন নাম কেউ উচ্চারণ করতে পারেনা বলেই সে ক্যান্ডেল নামে পরিচিত অক্সফোর্ডে। প্রফেসরের কানে কানে কি যেন বলে গেলো একজন। কালকের ঘটনাটা বলেছে বোধহয়। আজ কলেজে আসার পর থেকেই সমস্ত প্রফেসর, স্টুডেন্টরা মোমকে আড়চোখে দেখছিলো। মোম যেন সপ্তাশ্চর্য কিছু। খ্রিস্টান একজন ছেলে এসে তাদের একটা ধর্মীয় চিহ্ন দিয়ে বলল- যিশু এন্ড মাদার মেরি অলসো সেভ ইউর লাইফ৷
মোম হতভম্ব! কোন ভয়ানক প্রাণী কি তাকে খেয়ে ফেলবে। এজন্য সবাই মোমের চিন্তায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিং ফায়ার,বাংলায় যার নাম আগুন। ছেলেটা আসলেই জলন্ত আগুনের মতোই ভয়ংকর ডেঞ্জারাস।
আগুন সারা রাত জেগে ছিলো। চোখ বন্ধ হতেই থাপ্পড়ের আওয়াজে তার চোখ খুলে যায়।এতো বড় অপমান।সারা রাত সে ড্রিংকস করেছে। বাবার ফোন পর্যন্ত রিসিভ করেনি। দুপাশে সোনালী চুলের দুটো সুন্দরী মেয়ে তার চুলে গায়ে বিলি কেটে অশান্ত মন শান্ত করার বৃথা চেষ্টা করছে। আগুনের রাগ প্রতিনিয়ত বেড়ে শতগুণ হচ্ছে। প্রতিনিয়ত কালো আবরণে পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা মেয়েটি চোখের সামনে ভেসে উঠছে। কানে বাজছে মেয়েটির কথার প্রতিবাদের গুঞ্জন।
মোম থাপ্পড় দেওয়ার পর কিছু লেকচারও দিয়েছিলো আগুনদের ইংরেজি ল্যানগুয়েজে। যার বাংলা অনুবাদ-
أَنَّهُ مَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا
কোনো মানুষকে হত্যা করার কিংবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ (করার শাস্তি বিধান) ছাড়া (অন্য কোনো কারণে) কেউ যদি কাউকে হত্যা করে, সে যেন গোটা মানব জাতিকেই হত্যা করলো; (আবার এমনিভাবে) যদি কেউ একজনের প্রাণ রক্ষা করে তবে সে যেন গোটা মানব জাতিকেই বাঁচিয়ে দিলো। (সূরা মায়িদা-৩২)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিনে মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যে বিচার করা হবে, তা তাদের মধ্যে সংঘটিত রক্তপাত ও হত্যার বিচার। (বোখারী, মুসলিম)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যেখানে কোনে ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, সেখানে যেনো কেউ উপস্থিত না থাকে। কারণ এ হত্যাকান্ডের সময় যে ব্যক্তি উপস্থিত থাকবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে রক্ষা করার চেষ্টা করবে না, তার ওপরও অভিশাপ অবতীর্ণ হবে। (বায়হাকী)
.
কথাগুলো শোনার পর মনে হলো আগুনের কানে কেউ গরম গলিত লোহা ঢেলে দিয়েছে। যারা আগুনের কাছে মাথা নত করে রাখত, আজ কিনা তারা মাথা উচু করে তার অপমান দেখছে। মনে মনে নিশ্চয়ই মিটিমিটি হাসছে।
মোম কোন পরোয়া না করে তার মুসলিম ভাইদের কাছে গেলো। তাদের সেখান থেকে নিয়ে যাবার সময় আগুনের ফ্রেন্ডসরা বাঁধা দিতে চাইলো।
আগুন হাত দিয়ে ইশারা করলো কিছু না করার।
আগুনের হাত থেকে টগবগিয়ে রক্ত ঝরছে। মোমের হাত কাটা ধারালো ছূরিটা তার হাতেই ছিলো। নিজের অজান্তেই ছূরি টাকে সে চেপে ধরেছিলো। হাত কেটে ফালা-ফালা হয়েছে ঠিক মোমের মতোই।
আগুন প্রফেসরদের পার্সোনাল হলে টেবিলের উপর পা রেখে ইজি চেয়ারে বসে আছে হল অন্ধকার করে, হাতে সুইচ নিয়ে একবার অন করছে একবার বন্ধ করছে।
হাত ডেসিং করে ব্যান্ডেজ করা হয়নি।টপটপ রক্ত ঝরে নিচে ফ্লোরে পড়ে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে।টেবিলের সাইডে রাখা সেলফোন থেকে রিংয়ের আওয়াজ হচ্ছে। সে ডিস্টার্ব হয়ে সেলফোনটা হাতে নিয়ে একটা আছাড় মারলো। এতে আগুনকে আরও ভয়ানক দেখালো। ভেসে উঠলো তার হিংস্রতা।
আগুনের ফ্রেন্ডসরা কেউ সাহস করে হিংস্র সিংহের গুহায় যেতে পাচ্ছেনা। গুহায় গেলে নির্ঘাত মারা পড়বে এতে সন্দেহ নেই। ঘায়েল সিংহ আগের থেকেও শক্তিশালী, হিংস্র, মারাত্মক ভয়ংকর হয়ে উঠে।
দুটো প্রফেসর আগুনের বাবার ফোন নিয়ে সিংহের গুহায় ঢুকলো।
-Why are you sitting in dark?
প্রফেসরের কথা শুনে সুইচ অন করলো আগুন। আগুনের চোখ থেকে অগ্নি লাভা বের হচ্ছে।
পায়ের আওয়াজ এবং কথার আওয়াজে আগুনের মগ্নতায় বাঁধা পড়লো। সে হিংস্রতার সাথে গলা চেপে ধররলো ফ্লোরে।
একজন বহু কষ্টে বলতে পারলো আগুনের বাবা লাইনে আছে। তিনি অর্ডার করেছে ছেলের কাছে বাবার ফোন নিয়ে যেতে।
বাবার কথা শুনে আগুন গলা ছেড়ে দিলো। আরেকটু হলেই প্রাণ চলে যেত আগুনের হাতে।
ওপাশ থেকে কিছু শোনা গেলো না। আগুন রাগ কন্ট্রোল করে শুধু ইয়েস ডেড, ইয়েস ডেড বললো।
কথা বলার মধ্যেই সে রাগ কন্ট্রোল করতে পেরেছিলো।
কিন্তু সমস্ত ক্ষিপ্রতা, হিংস্রতা তার শরীরে ফুটে উঠেছে। তার কাছে আসার বা নেক্সট স্টেপ কি হবে তা বলার জিরো % সাহসও কারও মধ্যে তৈরি হয়নি।
এক প্রফেসর কাঁপা গলায় বলল(অনুবাদ)- মেয়েটি এদেশীয় নই। সে বিদেশী। She is Bengali!
আগুনের এক ফ্রেন্ডস ভয়ে ভয়ে বলল (অনুবাদ)- মেয়েটা কে তোমার বেডে এনে দেব। তখন দেখে নিও মেয়েটার কত সাহস।We are listing,She lokes like an angle! (আমরা শুনেছি, সে একটি পরীর মতো দেখতে)
আগুন ইজি চেয়ার থেকে দাড়িয়ে হাতে প্রফেসরের সেল ফোনটা গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে আছাড় মেরে টেবিল লাথি দিয়ে ভেঙে বলল- How dare she! Who is she?
আগুন কল্পনা থেকে বেরিয়ে এলো একটা ফোন কলের আওয়াজে। কল শেষ হতেই তার ঠোঁটে টেডি হাসি ফুটে উঠলো।
.
মোমের দিকে আজ সকলে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালেও সে পরোয়া করলো না। ভার্সিটি লাইফের মজা সে নিজেই খুঁজে নিলো।
মোমের আজ দারুণ কাটলো ভার্সিটিতে। সবচেয়ে ভালো লাগলো যখন এদেশীয় ছেলেমেয়েরা তার মতো অপরিচিতা ভীনদেশী মেয়ের জন্য দোয়া করতে দেখা। মোম ভাবছে, আগুন নামের ছেলে টাকে সবাই এতো ভয় পায় কেন!রাজার মতো এটিটিউট কেন তার! সে তো আমাদের মতোই স্টুডেন্ট।
ভার্সিটি থেকে বের হতেই টুপ টুপ বৃষ্টি নামলো।
দৌড়ে দৌড়ে সবাই চলাফেরা করছে। দৃশ্যটা সুন্দর।মোমের এদেশীয় কিছু বান্ধবীও হয়ে গেলো। তাদের সাথেই সে দৌড়াদৌড়ি করছিলো হালকা বৃষ্টির ফোঁটা থেকে বাঁচতে। অন্যরকম এডভেঞ্চার!
মোম বলল- I am getting wet (আমি পুরো ভিজে যাচ্ছি)।
-Me too (আমিও)
রোডে বৃষ্টির ফোঁটার ঝমঝম আওয়াজ হচ্ছে। একটা কালো মাইক্রো দেখা যাচ্ছে। এদিকে আসছে। কিছু বোঝে উঠার আগেই স্প্রে করা শুরু করলো মোমদের।
মোমের মাথা ভারি। চোখ জ্বলছে স্প্রের জন্য। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর নিজেকে একটা নরম তুলতুলে বিশাল বেডে আবিষ্কার করলো।
সোফায় ওটা কে? হ্যাঁ কিং ফায়ার। সোফায় বসেছে টেবিলে পা উঠিয়ে। দেখে মনে হচ্ছে একহাতে ল্যাপটপে কাজ করছে। অন্য হাতে ড্রিংকসের বোতল! ভয়ংকর।
আগুন ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে মোমের দিকে না তাকিয়ে বলল- Good morning dear Bengali angle!
I am going to take shower.(আমি গোসল করতে যাচ্ছি)।
Have you already taken shower? (তুমি কি গোসল করে নিয়েছো?)
#নূর💔
[#Dangerous_Lover_3]
Writer-Moon Hossain
[Shabnaj Hossain Moon]
Part-02

আগুন ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে মোমের দিকে না তাকিয়ে বলল- Good morning dear Bengali angle!
I am going to take shower.(আমি গোসল করতে যাচ্ছি)।
Have you already taken shower? (তুমি কি গোসল করে নিয়েছো?)
এটা কেমন কথা। এই সাদা চামরা ওয়ালা লোক গোসল করতে এবং আমাকে গোসল করাতে কিডন্যাপ করেছে শেষপর্যন্ত।
মোমের মাথা শকট খেয়েছে কারণ জীবনের প্রথম কিডন্যাপ হলো।
এর আগে একবার হলে না হয় একটু এক্সপিরিয়ান্স থাকতো।
বড় ধরনের শকট খেয়ে সে ইংরেজি ভুলে গেলো।
-আপনি গোসল করবেন সেজন্য আমাকে কিডন্যাপ করেছেন কেন? আপনি কি কচি খোকা যে একা একা গোসল করতে ভয় পান?
আমাকে আপনার পাহারাদার মনে হয়? আপনি গোসল করবেন আর আমি পাহারা দেব? আপনার এতোই ভয় একা গোসল করার তাহলে পাহারাদার লোক রেখে দিলেই হয়। আমাকে কেন টানাটানি করছেন গোসলের মধ্যে?
আগুন কে একটু চিন্তিত মনে হচ্ছে!
-কি হলো উওর দিন?
আবার বলছেন আমি গোসল করেছি কিনা! আমি গোসল না করলেও আপনাকে বলব কেন? কে আপনি আমার? আপনি কি আমার চাকর? আমি গোসল করেছি কিনা সেসব জিজ্ঞেস করছেন যে?
আমি গোসল করব! বৃষ্টিতে গোসল করতে আমার খুব ভালো লাগে। তাছাড়া আপনার কিডন্যাপের জন্য আমাকে রাস্তার কাঁদার মধ্যে হুটোপুটি খেতে হয়েছে। গোসল না করলেই নয়।হ্যাঁ আমি গোসল করব বাট আপনার এখানে প্রশ্নই উঠে না।হোস্টেলে গিয়ে গোসল করব।
You got it? What can i say? Mind it!
আগুন রাগ সামলে বলল-
_What are you saying?Nonsenses!
_কিডন্যাপ করে আবার বলছেন কি বলেছি বুঝতে পারেন নি। মজা করছেন আমার সাথে? খাঁটি বাংলা বলেছি বাংলা। বাংলা বলব নাতো ইংরেজিতে বলব? ইউ সাদা চামরা মূর্খ কোথাকার!
_I Can’t understand! Talk to English! Rabies!
আগুন এতোক্ষণ ধরে বাঙালি মেয়েটির কথা শুনছিলো।
তার কাছে মনে হলো কথা গুলো পোকার মতো। মাথায় কিল বিল করছে।
চাইনিজ ভাষা থেকেও এই ভাষাটাও জটিল।
মাঝখানে মেয়েটি কিডন্যাপ সম্পর্কে কিছু একটা বলেছে যতোদূর মনে হচ্ছে।
আগুনের সামনে কোন প্রেসিডেন্টেরও কথা বলা দূরে থাক সামনে আসার সাহস নেই। আর এই ভীনদেশী মেয়েটা কিনা এতো বড় কান্ড ঘটানোর পরও এই সিচুয়েশনে থেকে কথা বলছে গড়গড় করে। মেয়েটির পার্সোনালিটি বাঁধিয়ে রাখার মতো।
এমন জংলী হরিণী কে পোষ মানানোর ক্ষেত্রে আলাদা মজা পাওয়া যাবে।
আগুন একটা চিতাবাঘ কে পোষ মানিয়েছিলো গতবার!
মোম চোখ বন্ধ করলো।
এই সাদা চামরা তো বাংলা বোঝেনা! সে তো টেনশনো বাংলা বলেছে। এরকম সিচুয়েশনে কেউ নিশ্চয়ই ইংরেজি মনে করে বলবে না।
.
.
আগুন মাথায় হাত দিয়ে বেডে বসে পড়লো। এই মেয়েটা কাল থাপ্পড় মেরেছে। আবার আজ কথা দিয়ে মারলো।
আগুন বসতেই মোম একটু নড়াচড়া করলো।
লাইফে প্রথম সে একটা বেগানা পুরুষের সামনে শুয়ে আছে আর লোকটা একই বিছানায় বসেও আছে নির্দ্বিধায়।
আগুন হঠাৎ মোমের দিকে ঝুঁকে পড়লো।
মোমের কলিজা শুকিয়ে গেলো। কি করতে চাচ্ছে কিং ফায়ার?
মোম কাঁপা কন্ঠে বলল-What are you doing?
আগুন কিছু বলল না।
সে এখন মোমের উপরে কিছুটা দুরত্ব রেখে। মোমের দুই পাশে আগুনের দুই হাত।
মোম চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে দোয়া ইউনুস পড়তে লাগলো। নবী ইউনুস যদি মাছের পেট থেকে বের হতে পারে তাহলে সেও এই সাদা চামরার কবল থেকে বের হতে পারবে। লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবাহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনায যোয়ালিমিন ।

হাত পা বাঁধা বলে। নইলে একটা কিক দিয়ে কিং ফায়ারকে সে কুপাত করার একটু ট্রাই হলেও করতো।
আগুন মোমের হাত পায়ের বাঁধন খুলে দিলো।
মোম চোখ খুলে আল্লাহ কে শুকরিয়া জানালো।আজ দোয়া ইউনুস ছিলো বলে একটুর জন্য রক্ষা পেলো।
আগুন মোমের দিকে তাকিয়ে আছে। আগুনের দৃষ্টিতে কি আছে তা দেখার সাহস নেই মোমের। মোম একটানে আগুনের নিচ থেকে গড়িয়ে উঠে পড়লো বেড থেকে।
একেবার বেড থেকে সোজা দরজায় চলে গেলো। দরজায় কিছু করতে বাকি রাখেনি সে। থাপ্পড়, কিল, ঘুষি, লাথি, ধাক্কা। কিছুতেই দরজা খোলে না। মোম ভুলেই গিয়েছিল বিশ্ব বিখ্যাত শহড় লন্ডনের দরজা। উন্নতমানের। সিডর হলেও এই দরজা খোলার নয়। মোম ঘুরে তাকালো। আগুন সোফায় বসে পায়ের উপর পা তুলে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
আগুন মোমের দিকে তাকিয়ে কি যেন দেখছে।
মোম বড় একটা ধাক্কা খেলো। হঠাৎ গোসল করবে কেন এই সাদা চামরা ? আর আমাকেও গোসল করতে বলছে কেন সাদা চামরা ওয়ালা? স্প্রে করার পর তো সে সেন্সলেস ছিলো। তখন কি হয়েছে তার সাথে সেটা তো মনে পড়ছেনা।
জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে সে একটু আগুনের দিকে তাকালো।
আগুনের গলায় তোয়ালে জরানো।
.
.
মোম এবার চিৎকার করে বলল-What are you doing to me? Tell me! (তুমি কি করেছো আমার সাথে ? বলো আমাকে?)
_Did you doubt on me? (তুমি কি আমাকে সন্দেহ করছো?)
বলেই আগুন একটা টেডিবিয়ারের মতো হাসি দিলো। যা দেখে মোমের শরীর টেডিবিয়ারের মতো জমে গেলো।
.
.
আগুন শাওয়ারে আছে। মোম সোফায় বসে আছে।
আগুন তো তার থেকে প্রতিশোধ নিতে এখানে এনেছে। তাহলে প্রতিশোধ নিচ্ছে না কেন? রক্তের বদলে রক্ত, মারের বদলে মার, থাপ্পড়ের বদলে থাপ্পড়।সে আগুন কে থাপ্পড় মেরেছে, এবার আগুন তাকে একটা থাপ্পড় মারলেই শোধবাদ সবকিছু। ঐ তো একটা সেলফোন। একটা কল করলেই পুলিশের কাছে। পুলিশ স্টেশনের নাম্বার তার জানা। সেলফোন ওপেন করতেই কিং ফায়ারের ছবি ভেসে উঠলো। চোখ গুলো এমন যেন ফোনের ভেতর থেকেই মোম কে খেয়ে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
জোরে একটা আওয়াজ হলো। আগুন ওয়াশরুমের দরজা ওপেন করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছে মোমের উপর।
চিলের মতো ছোঁ মেরে ফোনে তাকালো।
এই সর্বনাশ!যদি নাম্বার টা দেখে জেনে ফেলে মোম কোথায় ফোন করেছিলো।
মোম উঠে দাঁড়াতেই আগুন সামনে দাঁড়ালো। মোমের কলিজা গেলো শুকিয়ে।
একটা নাম্বার ডায়াল করে সে মোমের কানে ধরলো।
ওপাশ থেকে পুলিশের গলা শোনা গেলো।
_This is police Station! How can i help you?
মোম ইংরেজিতে এক নিমিষেই কিডন্যাপের ঘটনা বলল। তারপর আগুনের দিকে তাকিয়ে কিডন্যাপারের নাম বলল- কিং ফায়ার।
আগুন সব শুনেও স্বাভাবিক আছে। তার কোন ভাবান্তর হলো না।
মোম যেন জোক্স বলেছে তাই শুনে পুলিশ স্টেশনে হাসির রোল পড়ে গেলো।
.
.
অনেক্ক্ষণ হলো আগুন মোম একই সাথে সোফায় বসে আছে।নামাজের একটা ওয়াক্ত অলরেডি চলে গিয়েছে। এখন আরেকটা যাচ্ছে। এখন কি রাত হয়েছে? আগুন ফোনে গেইম খেলছে মোম উঁকি দিয়ে দেখলো। ফাজলামোর সীমা থাকার দরকার। প্রতিশোধ তাড়াতাড়ি নিয়ে হোস্টেলে পাঠিয়ে দিলেই হয়। খামকা লেট। মোম অবশ্য থাপ্পড় খাওয়ার জন্য তার নরম গাল রেডি করে ফেলেছে।
হঠাৎ আগুন ফোন রেখে মোমের দিকে তাকালো।
মোম চোখ নামিয়ে উঠে দাড়িয়ে পড়লো ভয়ে। হঠাৎ মনে হলো একটা ঝর উড়িয়ে নিয়ে গেলো মোম কে।
আগুন মোমকে সোফায় ফেলে দিয়ে তার দুই হাত নিজের হাতে শক্ত করে আবদ্ধ করলো।
জোরে জোরে চেঁচিয়ে বলল-How dare you? এতো বড় সাহস তোমার?(অনুবাদ) কিং ফায়ারের গায়ে হাত তোল? তোমাকে সবার সামনে কেটে টুকরো করতে আমার একটুও সময় লাগবে না। কিন্তু না। তুমি মরে গেলে আমাকে অপমান করার যথাযথ প্রতিশোধ নেওয়া হবে না। মৃত্যুর থেকেও ভয়ানক প্রতিশোধ নেব।
সবার সামনে আমাকে অপমান করার ফল তুমি এখন দেখবে। তোমাকে দু’দিন আটকে রেখে আমার পার্টনার বানাব। তারপর ভাবব তোমাকে ফেরত পাঠাব কিনা পাঠাব।
মোম বরফের মতো জমে গেলে। নিজের কানে বিশ্বাস হচ্ছে না তাকে কেউ এমন কথা বলছে।
আগুন নিজের সোনালী চুলে হাত বুলিয়ে বলল- তোমার সৌভাগ্য কত বড় জানো?
মোম মাথা না সূচক নাড়ালো।
-কিং ফায়ার তোমাকে নিজে প্রপোজাল দিয়েছে। আজ পর্যন্ত গার্লসরা তাকে প্রপোজাল দিয়েছে।মোম কাঁপছে! এই সাদা চামরা বলে কি!
আগুন রোমান্টিক একটা লুক নিয়ে বলল-এবার বলো, আমাকে তোমার পছন্দ হয়েছে?
.
মোমের কলিজা শুকিয়ে গেলো। এসব কি শুনছে সে। এরথেকে মৃত্যুও ভালো ছিলো। কিসের পার্টনার হবে সে? অবশ্য এসব তো এখানকার ডাল-ভাত।
এই বিপদ থেকে সে কিভাবে বের হবে! পড়াশোনার চাপে সে নামাজ ছাড়া এই কয়দিনে অন্য কোন এবাদত করেনি। তার মনে পড়েছে বাবা তাকে লন্ডনে আসার সময় কি বলেছিলো।
বাবা বলেছিল – মা শোন সব সময় দোয়া-দরুদ পড়বে। তাহলে আল্লাহর দয়ায় তোমার উপর কোনরকম বিপদআপদ আসবেনা।
সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস বিপদাপদে উপকারী।

হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সূরা এখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তা তাকে বালা-মুসীবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে যথেষ্ট হয়। [আবু দাউদ: ৫০৮২, তিরমিয়ী: ৩৫৭৫, নাসায়ী: ৭৮৫২]
.
মোম এবার বুঝেছে। সে কয়েকদিন যাবৎ সূরা এখলাস, নাস, ফালাক পাঠ করেনি। এজন্যই এমন বিপদে পড়েছে। আজ সে যদি সূরা পাঠ করতো তাহলে নিশ্চয়ই এতো বড় মুসিবত থেকে উদ্ধার হয়ে যেত।
.
.
আগুন পারফিউম গায়ে মাখছে আর ফোনে কথা বলছে। হঠাৎ সে মোমের দিকে তাকিয়ে বলল- নো ডেট, নো ডেট।
আগুন নিশ্চয়ই তার বাবার সাথে কথা বলছে।
মোম ছোটবেলায় ক্লাসে সেকেন্ড হলেই কেঁদে অস্থির হয়ে যেতো।বাবার সামনে সমস্ত বইখাতা রেখে বলতো- আমি আর লেখাপড়া করব না।
-তাহলে কি করবে?
-বিয়ে করব। আমাকে বিয়ে দিয়ে দাও।
-বড় হলে অবশ্যই বিয়ে দেব। কাছে এসো একটু আদর করে দিই।
-না।আদর লাগবেনা।আর থাকব না বাবার বাড়ি৷
-কোথায় যাবে?
-শশুরবাড়ি চলে যাব। তাহলে আর সেকেন্ড হতে হবে না। মোমের বাবা হেঁসে মেয়েকে কাছে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল- ফাস্ট সেকেন্ড থার্ড কোনকিছু না। লেখাপড়ায় এসব হয়েই থাকে।এজন্য লেখাপড়ার ছাড়তে হবে?লেখাপড়া না করলে জ্ঞান অর্জন করে বিদ্বান হবে কি করে? জ্ঞান অর্জন করে বিদ্বান হওয়ায় আসল কথা।ফাস্ট বলে কিছু নেই।
মোমের বাবা বলতো-শোন মা,
জ্ঞান অর্জন শ্রেষ্ঠ ইবাদত”-আল হাদিস। “বিদ্বান ব্যক্তিরা নবীদের ওয়ারিস”-আল হাদিস। তুমি আমার ভালো মেয়ে। আল্লাহর নেক মমিনা। তুমি কি জ্ঞান অর্জন করে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ ইবাদত করতে চাওনা?
বিদ্বান নারী হয়ে নবী-রাসুলের ওয়ারিশ হতে চাও না?
-চাই।
-এইতো আমার নেক মা। কেঁদে কি করেছো তোমার সুন্দর চোখ দুটো। এসে মুছে দিই৷
মোমের বাবার কথা মনে পড়লো। ছোটবেলায় বাবা যদি তার কথা মেনে নিয়ে বিয়ে দিয়ে দিতো তাহলে সে স্বামি সন্তানের সাথে থাকতো। লন্ডনে এসে এভাবে বেগানা ছেলেমানুষের রুমে থাকতো না।
.
.
আগুন ফোন রেখে হিংস্র লুক নিয়ে তাকালো।মোমের মনে কি চলছে সব যেন ধরা পড়ে গেলো আগুনের হিংস্র চোখে।
আগুনের পার্সোনালিটি এমন।
মোমের কাছে একটা ফল কাটার ছূরি আছে লুকানো। কাছে আসলেই পেটে ঢুকিয়ে দেবে আগুনের। ছূরিটা সামনে রাখা ফলের প্লেটে ছিলো।
মোম কিছু বোঝে উঠার আগেই বিশাল রুম টায় নার্গিস ঝড় বয়ে গেলো। রুমের জিনিসপত্র সব ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে আগুন। একটা একটা জিনিসপত্র ভাঙছে আর মোমের দিকে তাকাচ্ছে। আগুন কে আগের থেকেও ভয়ানক লাগছে। তাকে মোমের আজরাইল মনে হচ্ছে, যেন ওর জান কবজ করবে।কি এমন ফোনে কথা হয়েছে যে এখন নার্গিস উৎপন্ন হলো।
মোম রুমের এক কোণে দাড়িয়ে আছে৷ সারা ফ্লোরে কাঁচের টুকরো। আগুনের হাত থেকে রক্ত ঝরছে।
মোমের পাশের কাঁচের জানালায় ঘুষি মেরে বলল- (অনুবাদ)তোমাকে আমি ছাড়ব না।আমার শরীরে রক্ত টগবগ করে উঠে যখন মনে হয় তোমার থাপ্পড়ের কথা। তুমি আমার মানসম্মান নষ্ট করেছো। তোমাকে কোন কিছুর বিনিময়ে হাত ছাড়া করব না বেঙ্গালি গার্ল!
.
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here