নোনাজলের শহর পর্ব ২৫+২৬

নোনাজলের শহর
লেখিকা: হৃদিতা আহমেদ

পর্ব-২৫

আদিবের পাগলামি সামলাতে না পেরে বাধ্য হয়ে গতকাল ডক্টরের কাছে গিয়েছিল মুমু।ডক্টর সব জেনে প্রেগ্ন্যাসি টেস্ট সহ আরো কিছু টেস্ট করেন।তবে আদিবের ধারণা সে এবার অবশ্যই বাবা হবে। কাল থেকে তাকে ভীষণ খুশি খুশি দেখাচ্ছে।প্রয়াকে তো বার বার বলছে, ‘ পরী মাম মামের পেটের মধ্যে ঠিক তোমার মতো আরেকটা পরী আছে বুঝলে।’ প্রয়া কি বুঝছে সেই জানে তবে আদিব যতবার কথাটা বলছে সে ততবার মুমুর পেট থেকে শাড়ী সরিয়ে পেটের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলছে, ” মাম মাম সত্যি পলি আছে? ”

একেতো অসুস্থ তার উপর দুইজনের অত্যাচারে আরো ক্লান্ত লাগছে মুমুর।সকাল থেকে কোন কিছুই আদিব করতে দেয়নি। নিজেই নাস্তা বানিয়ে প্রয়াকে নাস্তা করিয়েছে।মুমু কোনরকম একটু রুটি মুখে দিয়েছে, আদিব জোর করে ডিম খাওয়ানোর একমিনিট পরই বমি করে দিয়েছে।এখন সে বিছানায় বসে বাবা-মেয়ের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।আদিব ভীষণ ফুরফুরে মেজাজে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে রেডি হচ্ছে উদ্দেশ্য মুমুর রিপোর্ট আনতে যাবে।আর প্রয়া পাপার সাথে যাবে বলে রেডি হয়ে ড্রেসিং টেবিলের উপর দাঁড়িয়ে আছে।

রেডি হয়ে প্রয়াকে কোলে নিয়ে মুমুর সামনে এসে দাঁড়ায় আদিব, একটু ঝুকে মুমুর কপালে চুমু দিয়ে বলল,
-” একঘন্টার মধ্যেই চলে আসবো, গেটে রঞ্জিত কাকা আছেন কিছু লাগলে বলিস।আর বেশি খারাপ লাগলে আমাকে ফোন দিবি।”

অনেকক্ষণ শুয়ে বিছানায় এপাশ ওপাশ করে নিচে নেমে আসে মুমু।ভীষণ খুধা পেয়েছে, কিছু খেতে হবে।সবকিছুই বাজে লাগছে তাই লেবু শরবত করে খাচ্ছে মুমু।ল্যান্ড লাইনে ফোন আসায় ভ্রু কুঁচকে ফেলে মুমু, এই নাম্বার তো কেউ জানেনা।দুইবার বাজতেই ফোন তুলে মুমু, হ্যালো বলতেই আদিব অস্থির হয়ে বলল,
-” মুমুপাখি তোর মোবাইল কই বলতো? কখন থেকে ফোন দিচ্ছি, এত খুশির খবর তোকে না জানিয়ে আমার তো পেট ফেটে যাচ্ছে। ইসস মুমুপাখি আমি সত্যিই আবার বাবা হবো রে!!”
আদিবের কথা শুনে মুমু নিজের পেটে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে।তার ভেতরে সত্যি একটা প্রাণ আছে ভেবেই খুশিতে চোখ ভরে ওঠে মুমুর।চোখে টলমল পানি,ঠোঁটের কোণে এক টুকরো হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মুমু।জীবনে প্রথম মা হওয়ার অনুভূতি, উফফ সুখে তার পাগল হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।

-” হ্যালো মুমু, হ্যালো।” আদিবের কথায় ধ্যান ভাঙে মুমুর, উত্তর দেয়,
-” হুম ”
-” কথা বলছিস না কেন? তোর কি শরীর খারাপ লাগছে?”
-” না না ঠিক আছি আমি, তুমি কখন আসছো?”
-” এইতো এখনই বের হবো, ইসস মুমু আমার না এখনই তোকে দমবন্ধ করা চুমু খেতে ইচ্ছে করছে।”
আদিবের কথা শুনে ফট করে ফোন রেখে দেয় মুমু।গাধাটা এতো অসভ্য কেন?

মুমু শরবতের গ্লাসটা নিয়ে সিড়ির দিকে আগাতেই কলিংবেল বেজে উঠে।রঞ্জিত কাকা এসেছে ভেবে দরজা খুলে দেয় মুমু, সামনে দাড়ানো মানুষটাকে দেখে অবাক হয়ে বলল,
-” ভাইয়া আপনি!!”
মুমুকে দেখার সাথে সাথেই ঝট করে জড়িয়ে ধরে রূপক।হঠাৎ রূপকের অযাচিত জড়িয়ে ধরায় মুমু ভয় পেয়ে যায়, হাত থেকে গ্লাসটা পড়ে খন্ড খন্ড হয়ে যায়।কাচের ঝনঝন শব্দে মুমুকে ছেড়ে সোজা হয়ে দাড়ায় রূপক।মুমু কিছু বলতে যাবে তার আগেই রূপক চট করে মুমুর দুই হাত ধরে হাঁটু গেড়ে বসে পাগলের মতো বলতে শুরু করে,
-” আমাকে একটু ভালোবাসবে জান? শুধু একটু, আচ্ছা ভালবাসা লাগবে না শুধু আমার সাথে থাকবে তাহলেই হবে।” বলেই পাগলের মতো মুমুর সারা হাতে চুমু খেতে শুরু করে।

রূপকের কাজে মুমু ঝট করে হাত সরিয়ে নেয়।অবিশ্বাস্য চোখে রূপকের দিকে তাকিয়ে কাঁপা গলায় বলল,
-” আ আ আপনিই?” বলতে বলতে একপা পিছাতেই ভাঙা কাচের টুকরোতে পা পড়ে মুমুর।

-” তোর মাথামোটা বোন তো মনে হয় ভুলেই গেছে আজ ওকে সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা।” বলেই হেসে উঠে আদিব।তারপর আবার ফিসফিস করে বলল,
-” অবশ্য ভুলবারই কথা, মা হবে বলে কথা।”
আদিবের হাস্যজ্বল সুখী মুখ দেখে ভীষণ ভালো লাগছে মিমনের।বাবা হবার অনুভূতি আসলেই অন্যরকম, তার জীবনেও তো এই মুহূর্তটা এসেছিল।তাই সে আদিবের এক্সাইটমেন্ট বুঝতে পারছে।আদিব ব্যাক সিটে বসা সৃজাদের দিকে তাকিয়ে বলল,
-” সবাইকে একসাথে দেখে ভীষণ খুশি হয়ে যাবে মুমু।আমিতো ভাবছি সবাইকে দেখে ওর প্রথম রিয়াকশনটা কেমন হবে?” বলেই প্রাণখোলা হাসি দেয় আদিব।

গেটের সামনে এসে ভ্রু কুঁচকে ফেলে আদিব, দ্রুত গাড়ি থামিয়ে রঞ্জিত কাকার দিকে এগিয়ে যায়।মিমনও নেমে আসে।বেহুশ রঞ্জিত কাকাকে কয়েকবার ডেকে জাগানোর চেষ্টা করে, মিমন দৌড়ে গাড়ি থেকে পানি নিতে যায়।ততক্ষণে মা-বাবা, সৃজা বাচ্চাদের নিয়ে নেমে দাড়িয়েছে।মিমন পানি নিয়ে কাছে আসতেই হঠাৎ আদিব রঞ্জিত কাকাকে রেখে দৌড়ে ভেতর চলে যায়। মেইন ডোরের সামনে এসে আদিব সামনে তাকিয়ে ফ্লোরের বেশ খানিকটা জায়গায় রক্ত দেখে আঁতকে ওঠে। আদিব দৌড়ে ভেতরে ঢুকে মুমুকে ডাকতে থাকে।পুরো বাড়ি খুঁজেও মুমুকে না পেয়ে দিশাহীন হয়ে দৌড়ে আবার গেটে আসে।ততক্ষণে মিমন রঞ্জিত কাকার চোখে মুখে পানি দিয়ে জাগিয়ে তুলেছে। আদিবকে দেখে রঞ্জিত কাকা অসহায় কন্ঠে বলে উঠে,
-” বাবা একটা লোকে বৌমারে হাত- মুখ বাইন্ধা নিয়া গেছে।আমি থামাইতে গেলে আমারে মাইরা বের হইয়া গেছে।”আদিব অস্থির হয়ে বলল,
-” কাকা লোকটাকে দেখলে চিনতে পারবেন আপনি?”
রঞ্জিত কাকা মাথা নেড়ে হ্যা জানাতেই আদিব দৌড়ে ভেতরে চলে যায়।কিছুক্ষণের মধ্যেই ল্যাপটপ নিয়ে এসে রঞ্জিত কাকাকে কিছু ছবি দেখায়।

চোখ থেকে নোনাজলের স্রোত বয়ে পড়ছে মুমুর।রূপার ঘরে খাটের উপর মুখ হাত বাধা অবস্থায় বসে আছে মুমু।রূপক ফ্লোরে বসে মনোযোগ দিয়ে মুমুর পা ড্রেসিং করছে।
-” মুমু মনে আছে তোমার,এই ঘরটাতে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল।” বলে ড্রেসিং শেষে মুমুর পায়ে চুমু দিতেই মুমু চট করে পা সরিয়ে নেয়।আট বছর আগের সেই দিনের কথা ভাবতেই মুমু ভয়ে কুঁকড়ে পিছনে সরে যায়।আজকেও যদি রূপক কোনো খারাপ কিছু করে ভেবেই মুমু ফুপিয়ে কেঁদে দেয়।রূপক মুমুর কান্না দেখে চোখের পানি মুছে দিতে হাত আগাতেই মুমু ভয়ে আরো সরে যায়।রূপক মুমুর বাধা হাত ধরে নরম কন্ঠে বলল,
-” মুমু,জান আমি কিচ্ছু করবো না, আমার শুধু তোমাকে চায় জান।তুমি শুধু আমার কাছে থাকলেই হবে জান, আর কিচ্ছু চাই না আমার।”
রূপকের কথা শুনে মুমু আরো জোরে ফুপিয়ে কাঁদতে শুরু করে।
নোনাজলের শহর
#লেখিকা_হৃদিতা_আহমেদ

পর্ব-২৬

-“মুমু? এই মুমু?পাখিটা, তাকা আমার দিকে,দেখ আমি চলে এসেছি।প্লিজ চোখ খোল,,,,,,মুমুসোনা আমি ভয় পাচ্ছি একটু চোখ খোল, দেখ আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে প্লিজ কথা বল।”
-“উফফ এই বালের এম্বুলেন্সটা এতো আস্তে যাচ্ছে কেন? এই মিমন দেখনা ও কথা বলছে না, তুই প্লিজ ওদেরকে তাড়াতাড়ি যেতে বল।” বলেই এম্বুলেন্সের পাটাতনে বসে রক্ত মাখা দুই হাত মুখে ঠেকিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠে আদিব।

কয়েকঘন্টা আগে_____

রূপক একটা খাবার প্লেট হাতে মুমুর সামনে বসে মুমুর মুখের বাধন খুলে দেয়।বাধন খুলতেই মুমু কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠে,
-“রু রূপক ভাইয়া প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন।প্লিজ ভাইয়া আ আপনার পায়ে পরছি, প্লিজ আমাকে যেতে দিন।
রূপক মুমুর মুখের দিকে তাকিয়ে একটা নিশ্বাস ফেলে বলল,
-” তুমি চাও বা না চাও তোমাকে আমার কাছেই থাকতে হবে মুমু।এখন চুপচাপ খেয়ে নাও।”
বলেই জোর করে মুমুর মুখে খাবার পুড়ে দেয়।খাবার মুখে দিতেই মুমু হরহর করে রূপকের গায়ে বমি করে দেয়।মুমুর বমি করা দেখে রূপক হতবাক হয়ে যায়।কিছু না বলেই ওয়াশরুমে ঢুকে যায় ফ্রেশ হতে।এই ফাঁকে মুমু দাঁত দিয়ে হাতের দড়ি খুলেই হুরপার করে বিছানা থেকে নেমে যায়।দরজা পর্যন্ত যেতেই রূপক হেঁচকা টানে মুমুকে নিজের দিকে ফেরায়।দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে,
-” আমার সাথে চালাকি করছো, আমার সাথে? আদিবের কাছে যাবার এতো তাড়া? এমন অবস্থা করবো জীবনেও আদিবের কাছে যেতে পারবে না।” বলেই মুমুকে বিছানায় ছুড়ে ফেলে দেয়।রূপককে রেগে তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে মুমু ভয়ে প্রাণপণে আল্লাহকে ডাকতে থাকে।রূপক মুমুর কাছে আসতেই মুমু কেঁদে চিৎকার করে বলে,
-” ভাইয়া আপনার পায়ে পরি।প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন।”
রূপকের হিংস্রতা থেকে মুমু নিজেকে রক্ষা করতে কোনরকম সাইড টেবিল থেকে পানির গ্লাস নিয়ে প্রচন্ড জোরে রূপকের মাথায় হিট করে।
একটানে দরজা খুলে কোনদিকে না তাকিয়ে ছুটতে শুরু করে মুমু।কোনদিক ছুটে কোথায় যাচ্ছে জানেনা, তার শুধু একটাই চিন্তা রূপকের থেকে পালাতে হবে।শরীর অবশ হয়ে আসছে আর দৌড়ানো সম্ভব না তারপরও প্রাণপণে ছুটছে, হঠাৎই তীব্র আলোর ঝলকানিতে চোখ বন্ধ করে ফেলে মুমু।

সিলেটে আসার পরপরই মুমু আর প্রয়াকে সবসময় ব্যবহারের জন্য লোকেটসহ চেইন গিফট করেছিল আদিব।সুপ্ত একটা ভয় থেকেই সে লোকেটে ট্রেসার যুক্ত করে দিয়েছিল। সেই ট্রেসারের মাধ্যমেই মুমুর লোকেশান ট্র্যাক করেছে আদিব। তবে তার পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যাবে তাই তরুণকে দ্রুত ফোর্সসহ যেতে বলেছে আদিব।

রঞ্জিত কাকা রূপকের ফটো দেখানোর পর থেকে একটা কথাও বলেনি মিমন।আসলে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।এতটা বোকা,বোধহীন কী করে হতে পারলো সে,ভেবেই নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছা করছে।ঝড়ের গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে আদিব, তার পাশের সিটে চোখ বন্ধ করে দুই হাতে নিজের চুল টেনে ধরে বসে আছে মিমন।

তরুণ রূপককে অচেতন অবস্থায় পেলেও মুমুকে পাইনি জানাতেই মাথা ভো ভো করছে আদিবের।দ্রুত গাড়ি সাইড করে ফোনটা নিয়ে আবার লোকেশান চেক করে আদিব।হঠাৎ গাড়ি থেমে যাওয়ায় চোখ খুলে আদিবের দিকে তাকায় মিমন, দেখে আদিব অস্থির হয়ে ফোনে কিছু একটা দেখছে।তারপর ফোনটা হাতে নিয়েই ড্রাইভ করতে শুরু করে। লোকেশনটা বেশ কাছেই দেখাচ্ছে, আদিব দিকবিদিকশুন্য হয়ে গাড়ি চালাচ্ছে।

কিছুদূর যেতেই রাস্তার মধ্যে লোকজনের ভিড় দেখে আদিবের বুক ধকধক শুরু করে দেয়।লোকেশনটা এখানেই দেখাচ্ছে, গাড়ি থেকে নামতে নামতে একটা এম্বুলেন্স এসে দাঁড়ায়।ভিড় ঠেলে সামনে আগাতেই স্তব্ধ হয়ে বসে পড়ে আদিব।তার পাখিটা রক্তে মাখামাখি হয়ে নিথর হয়ে রাস্তায় পড়ে আছে।মিমন দৌড়ে মুমুকে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে।
আশেপাশের লোকজন দ্রুত মুমুকে এম্বুলেন্সে তোলার কথা বলতেই মিমন তাড়াহুড়ো করে মুমুকে এম্বুলেন্সের বেডে শুইয়ে দেয়।আদিবের কথা মনে হতেই পিছনে তাকিয়ে দেখে আদিব একভাবে রাস্তায় লেগে থাকা রক্তের দিকে চেয়ে আছে।মিমন দৌড়ে আদিবকে নিয়ে এম্বুলেন্সে বসিয়ে নিজেও উঠে বসে।

বর্তমানে___

রিকোভার বেডে চোখ বন্ধ করে নিথর হয়ে পড়ে আছে মুমু।ডক্টর মুমুর বুকে হিট দিয়ে পুশ করছেন।দুই বার দিয়েও নো রেসপন্স, তৃতীয় বার পুশ করতেই জোরে শ্বাস নেয় মুমু।নার্স দ্রুত অক্সিজেন মাস্ক পড়িয়ে দেয় মুমুকে।বাইরে দাঁড়িয়ে কাচের ভেতর দিয়ে সবকিছু দেখছিল আদিব।মুমুকে শ্বাস নিতে দেখে দরজার সাথেই হেলান দিয়ে ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়ে।দুই হাত মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে উঠে আদিব।তার কিছু দূরে দাঁড়িয়ে মিমন কাঁদছে।

কিছু সময় পর ডক্টর এসে জানাই প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে পেসেন্টের,মাথায় গভীর চোট পেয়েছে খুব ক্রিটিকাল অবস্থা।দ্রুত ব্লাড এর ব্যবস্থা করেন আর পেসেন্ট মেবি প্রেগন্যান্ট আই থিংক উই সুড এবোর্ট দ্যা বেবি।আদিব ব্যস্ত গলায় বলল,
-” করে দিন এবোর্ট, করে দিন আমার কোনো বাচ্চা চাই না আপনি শুধু ওকে ঠিক করে দিন।যত রক্ত লাগে আমি ব্যবস্থা করছি।আমার জাস্ট ওকে চাই,আপনি ওকে ঠিক করে দিন।”

প্রায় দু’ঘন্টা পর মুমুকে ওটি থেকে আই সি ইউ তে শিফট করা হয়।ডাক্তার জানিয়েছেন চব্বিশ ঘন্টার ভিতর জ্ঞান না ফিরলে পেসেন্ট কমায় চলে যাবে।পরিবারের সকলে চলে এসেছে, সকলের মুখে চিন্তার ছাপ। প্রয়া আদিবের গলা জড়িয়ে ধরে ঘুমচ্ছে।প্রয়াকে শাশুড়ীর কাছে দিয়ে ডাক্তারের থেকে পারমিশন নিয়ে ভেতরে যায় আদিব।সাদা বেডে অক্সিজেন মাস্ক পড়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গা বেন্ডেজ নিয়ে শুয়ে আছে মুমু।ধীর পায়ে মুমুর বেডের কাছে যায় আদিব, বুকে খুব ব্যাথা করছে তার চোখটাও জ্বলছে।মাথার বেন্ডেজর উপরে একটা চুমু দেয় আদিব।মাস্কের সাইড দিয়ে আলতো করে মুমুর গালটা ছুয়ে দিল। অনেকক্ষণ মুমুর মুখের দিকে চেয়ে থাকলো। হঠাৎই মুমুর গলায় কামড়ের দাগ দেখতেই চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, রাগে হাত মুঠো করে বের হয়ে যায় আদিব।

চলবে
চলবে
🤫🤫🤫

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here