পথে হলো দেরি পর্ব ১৮

#পথে_হলো_দেরি
#নুশরাত_জেরিন
#পর্বঃ১৮

,
,
সকালের মিষ্টি রোদ তীর্যক ভাবে চোখে পরতেই ইরা চোখ মেলে তাকায়।
নিজেকে সে শৌখিনের বাহুডোরে আবদ্ধ দেখেতে পেয়ে লজ্জায় গুটিয়ে পরে সে।
রাতের কথা মনে পরে।
ইরার মনে হয় সে সপ্ন দেখছে।
এতোটা ভালো সপ্ন যা কল্পনাতেও ভাবতে পারেনি ইরা।
নিজেকে আজ তার পরিপূর্ণ মনে হচ্ছে।
সে শৌখিনের হাত থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে।
কিন্তু ব্যার্থ হয়।
শৌখিন শক্ত করে জরিয়ে রেখেছে তাকে।
ইরা বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে।
হঠাৎ চোখ পরে রুমের একপাশে টানানো দেয়াল ঘরির ওপর।
ইরা আঁতকে ওঠে।
ঘরির কাটা নয়টার ঘরে।
এতোক্ষণ পর্যন্ত ঘুমিয়েছে সে?নামাজটাও আজ কাজা হয়ে গেলো!তাছাড়া ফুপুকে চা ও দেওয়া হয়নি।
উফফ্ এতোটা দেরি কিভাবে যে হলো?
ইরা শৌখিনের দিকে তাকিয়ে তাকে মৃদু ধাক্কা দিতে শুরু করলো,

—এইযে,শুনছেন!উঠুন না!
এই যে!

শৌখিন খানিকক্ষণ মোচড়ামুচড়ি করে আবার ঘুমিয়ে পরলো।এবং সাথে ইরাকে ছাড়ার পরিবর্তে আরও শক্ত করে ধরলো।
ইরা এবার কন্ঠ উঁচু করলো।
বললো,

—শুনছেন,উঠুন প্লিজ!
আমাকে ছাড়ুন!

পরক্ষনেই চুপ হয়ে গেলো।এতো জোরে চিৎকার করা তার উচিৎ হচ্ছে না।বাইরে ফুপু আছে,রহিমা খালা আছে।
যদি তারা শুনে ফেলে?তখন কি হবে?
ইরাকে কতোটা লজ্জার মুখোমুখি হতে হবে?
ইরা এবার জোরে জোরে শৌখিনকে ধাক্কালো।এতেও কাজ না হওয়ায় শৌখিনের বুক বরাবর মুখ নিয়ে পেশিতে জোরেসোরে কামড় বসিয়ে দিলো।
শৌখিন ইরাকে ছেড়ে এক ঝটকায় বসে পরলো।
হাত দিয়ে বাহু ডলতে ডলতে এক কঠিন দৃষ্টি ফেললো ইরার উপর।
ইরা ততক্ষণে ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেছে।
সে বাধ্য হয়েই তো এমন কাজ করেছে নাকি?এতো ডাকাডাকির পরও যদি কেউ না ওঠে তখন তাকে তো কামড়ানোই উচিত।
শৌখিন হঠাৎ দুষ্টু হেসে বলে উঠলো,

—আয় এদিকে আয় তো ইরা।

ইরা আরও গুটিয়ে বসলো।শৌখিনের ভাবগতি তার কাছে সুবিধার লাগছেনা।
বললো,

–কেনো?

—আদর করবো।

—হুহ,বললেই হলো?

—অবশ্যই! তাছাড়া তুই নিজেই তো আমায় ইশারা করলি!

ইরা বিস্ময়ে মুখ হা করলো।সে ইশারা করেছে?কখন?কিভাবে?
বললো?

—কখন?

শৌখিন দুষ্টুমির হাসিটা আরও প্রসারিত করলো।
ইরার একহাত ধরে টেনে নিজের বুকে ফেললো।
ইরা সরে যেতে চাইলে আরও শক্ত করে আটকালো।
নিজের বাহু সামনে এগিয়ে ধরে বললো,

—এইযে এখানে কামড় দিলি।
কামড় দিয়েই তো ইশারায় বোঝালি।যাতে তোকেও আমি উল্টো কামড়াই।

গর্বিত ভঙ্গিতে বললো,

—তুই কি ভেবেছিস আমি ইশারা বুঝিনা?

ইরা আমতাআমতা করলো।সে কি কামড় দিয়েছে ঐই জন্য নাকি।
বললো,

—ছাই বোঝেন আপনি।আমি তো আপনাকে ঘুম থেকে উঠানোর জন্য কামড় দিয়েছি।

—ঘুম থেকে উঠানোর জন্য?

—হুম।

শৌখিন কিছুটা আর্তনাদ করে উঠলো।
মিছেমিছি ভান করে বললো,

—হায় হায়!কি কপাল আমার!
অন্য সবার বউরা স্বামীকে মর্নিং কিস দিয়ে ঘুম থেকে উঠায় সেখানে আমার বউ উঠায় কামড় দিয়ে।
হ্যারে তুই কি আগের জন্মে রাক্ষুসী ছিলি?

শৌখিনের আমার বউ কথাটা শুনে ইরার মনে যে ভাললাগার পরশ বয়ে গিয়েছিলো তা এক নিমিষেই রাগে পরিনত হলো রাক্ষুসি কথাটা শুনে।
সে শৌখিনের বাহুডোর থেকে নিজেকে এক ঝটকায় সরিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

—আমি রাক্ষুসি?আমি?

—সন্দেহ আছে?

ইরা রেগে ফুসে উঠলো।শৌখিনের দিকে তেড়ে আবার হাতে আরেকটা কামড় বসালো।আরো কামড় বসানোর আগেই শৌখিন ইরার বাহু ধরে মুখ উপরে তুলে ফিসফিস করে বললো,

—এভাবে কেউ কামড়ায়?কামড় কাকে বলে বুঝাচ্ছি তোকে।

ফিসফিসানির শব্দে শরীর শিহরিত হলেও সেদিকে মনোযোগ দিতে পারলোনা ইরা।
ততক্ষণে তার ওষ্ঠদয় শৌখিনের দখলে।

💮💮

নামিদামী রেস্টুরেন্টটার চারপাশটা কাচে ঘেরা।দামী দামী আসবাবে পূর্ণ।
টেবিলের মাঝে ফুলদানীতে নাম না জানা ফুল।
দেখে বোঝার উপায় নেয় ফুলগুলো নকল।
সবকিছু কি দেখলেই বোঝা যায়? এই যেমন টেবিলের ওপাশটায় বসা মানুষটা,তাকে দেখেও তো মিতালি বুঝতে পারেনি,তার ভালবাসাটা নকল ছিলো।
মিতালি দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
তার ইদানিং কষ্ট পেলে কান্না আসেনা।
বুক ভার হয়ে থাকে।
অথচ কিছুদিন আগেও সামান্য কারনেই ফ্যালফ্যাল করে কেঁদে ফেলতো সে।
মানুষ কি এভাবেই বদলায়?হুট করে?
সে আবার শৌখিনের দিকে তাকায়।
বলে ওঠে,

—কি বলতে ডেকেছো শৌখিন?এতো ইমার্জেন্সি ভাবে?

শৌখিন ঢোক গিলে গলা ভেজায়।অপরাধবোধ তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।মিতালির চোখে চোখ রাখার ক্ষমতা পর্যন্ত তার নেই।
সে আমতা আমতা করে।গলা কাপে তার।
বলে,

—কি খাবে বললে না?

—আগে তোমার জরুরি কথাটা বলো।

শৌখিন চমকে মিতালির মুখপানে তসকায়।মিতালির গলাটা কেমন যেন শোনায়।
গম্ভীর!
এতোটা গম্ভীর হয়ে হয়তো মিতালি কখনো কথা বলেনি!
সে মাথা নিচু করে চুপ থাকে।
মিতালি সেদিকে তাকিয়ে হেসে ওঠে।
শৌখিন আরেকদফা চমকায়।
ভাবে,মেয়েটা হাসছে কেনো?হাসির মতো কি বলেছি আমি?
তার অবাক ভরা মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে মিতালি বলে ওঠে,

—তুমি প্রায়ই আমায় একটা কথা বলতে, মনে আছে?

—কোন কথা?

—আমি তোমায় বুঝি শৌখিন।

মিতালি কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করে আবার বলে,

—তুমি আমায় বলতে পারতে সবটা,আগেই বলতে পারতে।
আমি কি বুঝতাম না?আমি কি তোমার কথা শুনতাম না?তুমি কি এতটুকুও ভরসা করোনা আমার উপর?আমি কি…

আর কথা বলতে পারেনা মিতালি।তার কথা আটকে আসে।
কান্না আসতে চায়।মিতালি খুব চেষ্টা করে কান্না আটকায়।
রেস্টুরেন্টভরা মানুষ,তার উপর সামনে শৌখিন বসা,তার সামনে মিতালি কাঁদতে চায়না।
কান্না মানেই তো নিজেকে দুর্বল প্রমানিত করা।
মিতালি নিশ্চয় নিজেকে শৌখিনের সামনে দুর্বল প্রমান করতে চায়না।
শৌখিন বলে ওঠে,

—তোমায় কিছু বলার মুখ নেই আমার মিতালি।কি বলবো,কি বলা উচিত আমি জানিনা।শুধু এইটুকু বলবো,তুমি আমায় ক্ষমা করে দাও।আমি অন্যায় করেছি।তোমার সাথে,ইরার সাথে দুজনার সাথেই আমি অন্যায় করেছি।
তবে দুজনের সাথে একসাথে ন্যায় করা যায়না।একজনকে সুখি রাখতে গেলে অন্যজনকে অসুখি করতে হবে।
আমি ইরাকে বেছে নিয়েছি মিতালি।
এ সিদ্ধান্ত আমার আরো আগে নেওয়া উচিৎ ছিলো।তাহলে হয়তো তোমার সাথে অন্যায়টা হতোনা।
কিন্তু কি করবো?আমি ভুল করেছি।
আমাকে ক্ষমা করো প্লিজ।

মিতালি শৌখিনের চোখে চোখ রাখে।
বলে,

—তুমি আর ইরা খুব সুখি হবে শৌখিন।খুব সুখি হবে।

শৌখিন আরও কিছু বলতে চায় মিতালি বাধা দেয়।
বলে,

—এখন এখান থেকে চলে যাও তুমি।

শৌখিন আবারও কিছু বলতে চাইলে মিতালি আবার বলে,

—আমি কিছুক্ষন একা থাকতে চাই।
প্লিজ যাও।

শৌখিন উঠে চলে আসে।
তার ভেতরটা পুড়ে ওঠে।অনুতাপের আগুনে জ্বলে সে।
নিজেকে এতোটা ছোট মনে হয়!
তবু আবার ইরার কথা ভাবে।
আর যাই হোক ইরাকে হারানোর আগে সে সঠিক সিদ্ধান্ত তো নিতে পেরেছে!
তবে মনের কোনে কোথায় ঝড়ের কোন পূর্বাভাস উঁকি দেয়।
শৌখিন সে ভাবনা মন থেকে ঝেরে ফেলে।

💮💮💮

মিতালি রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়।
বাইরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে।সকাল থেকেই মেঘ জমে ছিলো।আকাশ ছিলো গুমোট হয়ে।
এতোক্ষণে তার বুক হালকা করার সময় এলো বুঝি!
মিতালি এলোমেলো ভাবে রাস্তা দিয়ে হাটে।
বুকের কষ্টগুলো কান্না হয়ে বাইরে নামে।
মিতালি চোখ মোছে না।
রাস্তায় মানুষজনের চলাচল অল্প।
কেউ ব্যস্তভাবে রাস্তা পার হচ্ছে।
তারমধ্যেই কেউ মিতালিকে আঁড়চোখে দেখছে।
হয়তো মিতালির কান্নার কারন খুঁজছে।
মিতালি সেদিকে পাত্তা না দিয়ে নিজের মতোই হাটতে লাগলো।
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ গান গেয়ে উঠলো,

—চুমকি চলেছে একা পথে,সঙ্গী হতে দোষ কি তাতে?

মিতালি পেছন ফিরে তাকালোনা।শুধু হাত দিয়ে চোখ মুছে নিলে।
সে পেছনে না ঘুরেই মুগ্ধর কন্ঠ চিনতে পেরেছে।
মুগ্ধ দৌড়ে পথ আগলে দাঁড়ালো।
বললো,

—কি ব্যাপার সিনিয়র বেয়াইন?না,দাড়িয়ে কই যাও?

—রাস্তা থেকে সরুন।
আজ ঝগড়া করার মুড নেই।

—আরে ঝগড়া কে করতে চাইলো।
আমি তো সঙ্গী হতে চাইলাম।
চলার পথের সঙ্গী!

মিতালি মুগ্ধর চোখে চোখ রাখলো।
শান্ত গলায় বললো,

—ভালোবাসেন?

মুগ্ধ মিতালির মুখে হঠাৎ এমন কথা শুনে অবাক হলো খুব কিন্তু তা প্রকাশ করলোনা।পরক্ষনে খুশিও হলো খুব।
সেও বললো,

—খুব?

—কখনো ছেড়ে যাবেননা তো?

—কক্ষনো না!

—প্রমান কি?

—কি প্রমান চাও?

—বিয়ে করতে পারবেন?এখন?এই মুহুর্তে?

মুগ্ধ মাথা নিচু করলো।হাসি হাসি মুখটা তার গম্ভীর হয়ে গেছে।
মিতালি সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
উল্টো পথে হাটার জন্য পা বাড়াতেই মুগ্ধ বলে উঠলো,

—এখানে আশেপাশে কোথাও কাজি অফিস আছে?
জানা থাকলে চলো তো!

এগিয়ে এসে মিতালির হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে হাটতে লাগলো।
মিতালি মুগ্ধের মুখের দিকে তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করলো।
মানুষের কাজ সুখের খোজ করা।কষ্টের মাঝেও একটু আশা করা।সে আশাটা মিতালি আবার করে ফেলেছে।
আবার কাউকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে।
আবার নতুন করে ভালবাসতে ইচ্ছে করছে।
পুরনো জখম ঢেকে রাখতে নতুন করে কি ভালবাসা যায়না?

,
#পথে_হলো_দেরি
#নুশরাত_জেরিন
#Extra_part_2

,
,
ইরাকে বেলকিনতে দাড়িয়ে থাকতে দেখে শৌখিন পা টিপটিপে পিছে গিয়ে দাড়ায়। পেছন থেকে জরিয়ে ধরতে চায়।
তার আগেই ইরা একটু সরে দাড়ায়। বলে ওঠে,

—বাইরে থেকে এসেছেন,আগে ফ্রেশ হয়ে আসুন।তারপর নাহয় জড়িয়ে ধরবেন।

শৌখিন মুখ গোমড়া করে।জিজ্ঞেস করে,

–তুই পেছনে না তাকিয়েই কি করে বুঝলি আমি এসেছি?

—জানিনা।

–মানে?

—আমি জানিনা কিকরে বুঝেছি।তবে কিভাবে যেন,আপনি আমার আশেপাশে থাকলেই আমি বুঝে ফেলি।
আপনার শরীরের ঘ্রান আমার চেনা।
কথাটা যদিও একটু ফিল্মি শোনায়,তবুও এটাই সত্যি।

শৌখিন হেসে ইরাকে জড়িয়ে ধরে।আদুরে গলায় বলে,

–আমার ফিল্মি বউ!

ইরা চেঁচিয়ে ওঠে,

—আরে ফ্রেশ না হয়েই আমায় জড়িয়ে ধরলেন?ছাড়ুন বলছি!
যান ফ্রেশ হয়ে আসুন!

শৌখিন ইরাকে ছেড়ে মুখ আরও গোমড়া করে।বলে,

—তুই ভালবাসার কিচ্ছু বুঝিস না রে ইরা।

—থাক লাগবে না আমার বোঝা।
সারাদিন বাইরে বাইরে ঘুরে,কোন খোজ খবর না নিয়ে এই রাত দশটায় বাড়ি এসে উনি খুব ভালবাসা বোঝাচ্ছেন!

শৌখিন মাথা নিচু করে হেসে ফেলে।ইরা সেদিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকায়।
বলে,

—হাসছেন কেনো?

শৌখিন হাসতে হাসতেই বলে,

—এইজন্য আমার বউটা বুঝি অভিমান করে আছে?

ইরা মাথা নারে।অভিমানে সে গলা অবদি ডুবে আছে তবু স্বীকার করেনা।
বলে,

—কারো প্রতি আমার কিচ্ছু নেই।

—ভালবাসাও নেই?

—উহু!

শৌখিন ইরাকে পেছন থেকে আবার জাপটে ধরে।
হাতদুটো জামা ভেদ করে পেটে পৌছায়।
ইরা হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে চাইলেও পারেনা।
পরবর্তীতে হাল ছেড়ে দেয়।
পরম আবেশে চোখ বন্ধ করে।
শৌখিন ইরার ঘারের কাছে মুখ নিয়ে ওষ্ঠ ছোয়ায়।
সে স্পর্শে ইরা কেঁপে ওঠে।
শৌখিন ফিসফিস করে বলে,

—এখনো অভিমান আছে?

ইরা কথা বলেনা।সে অনুভূতিগুলো অনুভবে ব্যস্ত।
শৌখিন হুট করে পাঁজা কোল তুলে নেয় ইরাকে।
রুমের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়।
আচমকা কোলে নেওয়ায় ইরা ভড়কে যায়।
সে শৌখিনের শার্ট খামচে ধরে।
বলে,

—আরে কি করছেন টা কি?
পরে যাবো তো!

—পরতে দিলে তো পরবি?

—তাহলে নিয়ে যাচ্ছেন কোথায়,সেটা তো বলুন?

শৌখিন মুচকি হেসে জবাব দেয়,

—অভিমানিনীর অভিমান ভাঙাতে!

💮💮

সকাল সকাল বাড়িতে শাম্মির আগমন দেখতেই ইরা লাফিয়ে ওঠে।খুশিতে দৌড়ে গিয়ে শাম্মিকে জাপটে ধরে।শাম্মি ও খুশি হয়।
ইরা বলে,

—তুই?এখানে?এতো সকালে?
কি ব্যাপার?

শাম্মি মুখ গোমড়া করে।বলে,

—কেনো?কেনো?আমি আসাতে তুই খুশি হোসনি?

ইরা হেসে শাম্মির বাহুতে ধাক্কা দেয়।বলে,
—খুশি মানে?খুব খুব খুব খুশি হয়েছি।

রেহেনা বেগম সোফায় বসে ছিলেন।তিনি ইরা শাম্মির এতো ঘনিষ্ঠতাপূর্ণ সম্পর্ক দেখে খুশি হন।
বলেন,

—এসেছিস যখন জামাইকে সাথে নিয়ে আসতি?

শাম্মি ইরাকে ছেড়ে মায়ের পাশে সোফায় এসে বসে।
বলে,
—জামাইকে সাথে নিয়ে অন্যএকদিন আসবো মা।
আজ এসেছি অন্য কাজে।

ইরাও পাশে বসে।বলে,

—অন্য কাজ মানে?
কি কাজ?

–তুই জানিস না?

—নাতো?

—সে কিরে কোথায় থাকিস তুই?আমার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও আমি সব খবর রাখি আর তুই রাখিস না?

ইরা সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলে,
—ব্যাপারটা কি সেটা তো বল?

শাম্মি বলে,

—তুই ভার্সিটি যাসনা?

—উহু,

—সামনের সপ্তাহে যে ইয়ার ফাইনাল পরিক্ষা, সে খবর রাখিস?
আজ ভার্সিটি চল আমার সাথে।
রুটিন তো আনতে হবে।

ইরার মাথায় আকাশ ভেঙে পরে।তার খেয়ালই ছিলো না এসব বিষয়ে।
সে বলে ওঠে,
—ওমা! আমি তো জানিই না।
একসপ্তাহ পর?
কিচ্ছু তো প্রিপারেশন ও নেই নি।
এখন কি হবে?

—যা হবার তাই হবে।
এখন চল যাই ভার্সিটি।
যাবি তো?

ইরা জোরে জোরে মাথা নারে।সে যাবে।

শাম্মি বলে ওঠে,

—তাহলে বসে আছিস কেনো?ঝটপট রেডি হ।

কথাটা কানে যেতেই ইরা উঠে দাড়ায়।একপ্রকার দৌড়ে সিড়ি বেয়ে রুমে ছোটে।
,

,

চলবে……
,

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here