#গল্পের নাম :#পবিত্রতার_ছোঁয়া (সিজন ২)
#পর্ব:৪
#লেখিকা :#জাবিন_মাছুরা [ছদ্মনাম]
রিহাত ভাইয়া চলে যাওয়ার পর স্যার গাড়িতে জোরে একটা লাথি মারলেন আর ফুসতে ফুসতে আরাফকে বললেন,
তাহসিন : আরাফ গাড়িতে উঠো। আর তোমার মামিকে বলো উঠতে।
আমিও চুপ করে আরাফকে কোলে নিয়ে গাড়িতে উঠলাম। তারমানে কি স্যার জেলাস। ভাইয়ার সাথে কথা বলা তার পছন্দ হয়নি। আহ কি যে খুশি লাগছে।এখন থেকে এভাবেই স্যারকে জালাব। কিন্তু সে তো রেগে আছে যদি আমাকে কোন শাস্তি দেয়।
প্রায় পনেরো মিনিট পর আমরা বাসায় পৌঁছে গেলাম। আরাফ ও বুঝতে পেরেছ স্যার রেগে যার জন্য গাড়িতে একটা কথাও বলেননি। স্যার গাড়ি থেকে নেমে কোন কথা না বলে তার রুমে চলে গেলেন। আমি আরাফকে নিয়ে মাইশা আপুর ঘরে গেলাম।
মাইশা: কিরে আরাফ তোরা এতো তাড়াতাড়ি চলে এলি কেন?
আরাফ কোন কথা বলছে না হয়তো স্যারের রাগ দেখে ভয় পেয়ে আছে।
আমি : এমনেই আপু।
মাইশা: আচ্ছা চলে এসে ভালো করেছো। নাহলে আমাকেই ফোন দিতে হতো।
আমি : কেন আপু?
মাইশা: আরাফের দাদু অর্থ্যাৎ আমার শাশুড়ি মা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাই আমাকে যেতে হবে।
আপুর চলে যাওয়ার কথা শুনে আমার অনেক খারপ লাগছে। আরাফ যেতে চাইছে না কান্না শুরু করে দিয়েছে। আমি আরাফকে কোলে নিয়ে কান্না থামাতে চেষ্টা করছি।
আমি : বাবা, কান্না করে না।তুমি থেকে যাও আমার কাছে।
আরাফ: না আমি থাকবু না আম্মুকে ছাড়া।
মাইশা: মিহু আরাফ আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবে না। তুমি চলো আমাদের সাথে।
আরাফ কান্না থামিয়ে বলল,
আরাফ: হ্যাঁ মামি চলো।
আমি কিছুক্ষণ চিন্তা করলাম। গেলেই ভালো হয়। স্যারের রাগ আর দেখতে হবে না। আমি খুশি মনে রাজি হয়ে গেলাম।
আমি : ঠিক আছে যাবো।
আমি যবো বলতে না বলতে পিছন থেকে স্যার শক্ত গলায় বললেন,
তাহসিন : না ও যাবে না।
মাইশা: ভাইয়া যেতে দে।
তাহসিন : যাবে না ব্যাস।
মাইশা আপু স্যার রেগে আছে বুঝতে পেরে আর কিছু বললেন না। তারপর বাবার সাথে দেখা করে চলে গেলেন।
আরাফ চলে যাওয়াতে পুরো বাড়ি স্তব্ধ হয়ে গেয়েছি।ছেলেটা অনেক মিশুক কয়েক ঘন্টায় আমাকে কওটা আপন করে নিলো। দূর ভালো লাগছে না।আমি বাবার ঘরে গিয়ে বাবার সাথে অনেক গল্প করলাম। তারপর রান্না ঘরে গেলাম। রান্না আর করতে হবে না দুপুরের অনেকটা খাবার বেঁচে আছে। গরম করে খাওয়া যাবে।
অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম রুমে যাব। কিন্তু সাহস হচ্ছিল না। আল্লাহ ভালো যানে আজকে আমার কি যে হবে। ঘরের সামনে যেয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম।ভিতরে ঢুকলাম না।বসার ঘরে এসে টিভিতে কাটুন দেখতে লাগল।
এশার আজান দেওয়া সাথে সাথে বাবার কথা মনে পড়ল। বাবাকে এখন ওষুধ খাওয়াতে হবে। আমি বাবার ঘরে খাবার নিয়ে গেলম।
আমি : বাবা খেয়ে নিন,,
তামিম সাহেব: তুই খাবি না। একসাথে খেলেই তো হতো।
আমি: পরে খাব। আগে আপনি খেয়ে নিন।
তামিম সাহেব : আচ্ছা। তাহলে তোরা খেয়ে নিস।
আমি:হুম।
বাবাকে খাইয়ে ঘরে এক প্লেট ভাত নিয়ে স্যারের ঘরের উদ্দেশ্য পা বাড়ালাম।
ভয়ে ভয়ে ঘরে ঢুকলাম। দেখলাম সে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। আমি আস্তে করে তাকে ডাক দিলাম।
আমি : খেয়ে নিন,,
তাহসিন : নিশ্চুপ,,
আমি: তাড়াতাড়ি উঠে খেয়ে নিন। নাহলে অসুস্থ হয়ে পড়েবেন।
তাহসিন : কোথায় ছিলি এতোক্ষণ?
তার রাগ মিশ্রত কন্ঠে তুই শব্দ শুনে আমার ভয় হতে শুরু করল।
তাহসিন : খাবার নিয়ে এই ঘর থেকে সর। আর এক মিনিট যদি তোকে এখানে দেখি তাহলে কিন্তু তোর কপালে কঠিন শাস্তি আছে।
আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। প্লেট হাতে নিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম।
স্যার বিছানা থেকে নেমে বারান্দায় চলে গেলেন। সিগারেট ধরিয়ে খেতে লাগলেন। আমি নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করাতে পারছি না সে সিগারেট খাই।
সে পলকহীন দৃষ্টিতে বাইরে দিকে চেয়ে সিগারেটের ধোঁয়া ওড়াছে। আমি এক বুক সাহস নিয়ে প্লেট ধরে তার পাশে চুপটি করে দাঁড়ালাম। আবারো আস্তে করে বললাম।
আমি : প্লিজ খেয়ে নিন। রাগ করে থাকবেন না।
হঠাৎ করে স্যার প্লেট ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন। খাবারগুলো চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল। আমার ভিতটা কেঁপে উঠল।আমি কি কোন ভূল করে ফেলেছি,,
তাহসিন : তোকে বার বার বলার পড়েও তুই এখানে এসেছিস,,
আমার মাথা নিচু করে ঠাই দাঁড়িয়ে রইলাম।হয়তো আমার দাড়িয়ে থাকা তার পছন্দ হলো না। তাই ভয়ানক কাজ করে বসলেন। আমার গলায় জলন্ত সিগারেট চেপে ধরলেন। ব্যথায় আমার চোখ মুখ কুঁচকে উঠল। সহ্য করতে না পেরে চোখ দিতে টপটপ করে জল পড়েতে লাগল। দাঁতে দাঁত চেপে কান্না করতে লাগলাম। কিন্তু আমার চোখের জল সামনে থাকা নিষ্ঠুর মানুটার হৃদয় অবদি পৌঁছেলো না।
(#চলবে)
[আম্মু লিখতে দেয় না।অনেক বকা খেয়েও আপনাদের জন্য লিখলাম।তারপরেও যদি আপনাদের রিসপন্স না পাই তাহলে তারাতারি সমাপ্ত করে দিব।]