পবিত্রতার_ছোঁয়া পর্ব ১০+১১+১২

#গল্পের নাম:#পবিএতার_ছোঁয়া (সিজন২)
#পর্ব:১০, ১১,১২
#লেখিকা :#জাবিন_মাছুরা[ছদ্মনাম]

বাসার ভিতরে ঢুকে মনে হলো কিছু একটা ফেলে রেখে এসেছি। কিন্তু কি রেখে এসেছি মনে পড়ছে না।অনেকদিন পরে ছোট ভাইয়াটাকে দেখে সব চিন্তা বাদ দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম মেঘকে। দুজনেই কান্না করতে লাগলাম।

মেঘ কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগল,

মেঘ: আপু তুই অনেক পঁচা।আমাকে ভুলে গিয়েছিস।

আমি: না রে ভাই, তোকে ভূলে কি থাকা যায়।

মেঘ:এত দিন পরে এলি কেন? চলে যা এখান থেকে।

আমি:রাগ করিস না।তুই আমার সাথে ফোনে কথা বলিস নি কেন?

মেঘ: কথা বললে তোকে অনেক দেখতে ইচ্ছে করবে তাই বলতাম না। তুই আর তাহসিন ভাইয়াদের বাড়িতে যাবি না। আমার কাছে থাকবি।

মন হচ্ছে মেঘ আমাকে যেতে দিবে না।ছেলেটা ভিষন রেগে আছে। কিন্তু স্যারেকে ছেড়ে আমি কি করে থাকব। এই কয়েদিনে সে তো আমার অনেক আপন হয়ে গিয়েছে। তার কথা মনে পড়তেই পিছনে তাকালাম। দেখলাম মা তার সাথে কথা বলছে।খুব অভিমান হলো মায়ের উপর।আমাকে চোখে পড়ল না,,

মিহুর মা:বাবা কেমন আছো?

তাহসিন :আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো। আপনারা সবাই কেমন আছেন?

মিহুর মা:আমরাও ভালো আছি। কিন্তু মেঘ প্রতিদিন মিহুর জন্য কান্নাকাটি করে।

তাহসিন মিহুর মায়ের কথা শুনে মেঘের কাছে গিয়ে দাঁড়াতে মেঘ দূরে সরে গেল। তাহসিন মুচকি হাঁসি দিয়ে পকেটে থেকে চকলেট বের করে মেঘের সামনে ধরল। কিন্তু তাতে কোন কাজ হলো না। মেঘ দৌঁড়ে নিজের ঘরে চলে গেল।

মিহুর মা মেঘকে বকতে লাগলেন,

মিহুর মা: মেঘ তুমি কি দিন দিন বিয়াদপ হয়ে যাচ্ছ? ভাইয়া সাথে কথা বলছ না কেন?

তাহসিন: আন্টি ওকে বকবেন না। ছোট মানুষ।

মিহুর মা: তুমি আমাকে আন্টি বললে কেন?

তাহসিন : ওহ সরি।ভূল হয়ে গিয়েছে মা।

মা স্যারের সাথে কথা বলা শেষ করে, আমার সাথে কথা বলতে লাগলেন,

মিহুর মা: কেমন আছিস?

আমি :ভালো। তুমি তো জামাই পেয়ে মেয়েকে ভূলে গিয়েছো।[অভিমান সুরে]

মিহুর মা: না রে পাগলী। তোরা দুই ভাই বোন একদমই একই রকম। আচ্ছা বাবা ভূল হয়ছে, মাফ করে দে।

আমি: এবারের মতো মাফ করলাম।

মিহুর মা: মিহু তুই তো অনেক চিকন হয়ে গিয়েছিস। খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করিস না?

আমি :করি তো। এখন হাত দিয়ে খাই।

মিহুর মা: আসলে তুই বড়ো হয়ে গিয়েছিস। হাত দিয়ে হাওয়া শিখে ফেলেছিস।

তাহসিন সোফায় বসে মিহুর মা আর মিহুর কথা শুনছিল। কিন্তু যখন শুনতে পেল’মিহু হাত দিয়ে খেতে পারে না’ তখনি তাহসিনের মুখ থেকে চ শব্দটা বের হলো,

তাহসিন :আমার তো খেয়াল করা উচিত ছিল যে মিহু হাত দিয়ে খেতে পারে না। আমি যে কীভাবে এত কেয়ার লেস হলাম। [মনে মনে]

||

মিহুর মা:তাহসিনকে তো কিছু খেতে দিলাম না।

আমি :মা আমরা খেয়ে এসেছি।

মিহুর মা:তাহলে ঘরে যেয়ে ড্রেস চেন্জ কর। আমি রান্না করতে গেলাম।

মা রান্না ঘরে চলে গেলেন। আমি স্যারকে না বলেই রুমে চলে এলাম।
অনেকদিন পর নিজের রুমটা দেখে ছোটবেলার কথাগুলো মনে পরে গেল। তিনমাস আগেও যে রুমটা আমার ছিল সেই রুমটা এখন আমার না। ভেবেই কান্না পাচ্ছে।রুমটা একটু পরিষ্কার করে ড্রেস বের করলাম চেন্জ করার জন্য।

ওড়না খুলে বিছানায় রাখতে, সেই চিরচেনা কন্ঠে মিহু ডাকটা শুনলাম।হাত পা আপনাআপনি কাঁপতে শুরু করলো।
(#চলবে)

[আসলে একবার লিখার পর এক চাপে শব ডিলিট হয়ে গিয়েছে😭।আপনাদের জন্য বিরক্ত নিয়ে আবার লিখলাম]#গল্পের নাম :#পবিএতার_ছোঁয়া (সিজন২)
#পর্ব :১১
#লেখিকা:#জাবিন মাছুরা [ছদ্মনাম]

বিছান ায় ওড়না খুলে রাখতেই সেই চিরচেনা কন্ঠে মিহু ডাক শুনে হাত পা আপনাআপনি কাঁপতে শুরু করল। মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিল। আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম।

তাহসিন:মিহু,,

আমি :নিশ্চপ,,,

তাহসিন পলকহীন দৃষ্টিতে মিহুর দিকে তাকিয়ে রইল। ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারল মেয়েটা লজ্জা পেয়েছে।

তাহসিন :ওহহ, সরি।আসলে আমি বুঝতে পারি নি।

আমি:সমস্যা নেই। আপনি বসুন আমি ওয়াসরুমে যাচ্ছি।

দৌঁড়ে কাপড় নিয়ে ওয়াসরুমের ভিতরে ঢুকলাম। ইচ্ছে করে অনকটা সময় ওয়াসরুমের পার করলাম। বের হয়ে দেখলাম, স্যার চেয়ারে বসে আমার পদার্থ বই মনোযোগ সহকারে দেখছেন। আমি তার পাশে দাঁড়াতে গম্ভীর মুখ করে জিজ্ঞেসা করলেন,

তাহসিন :তোমার বই দেখে মনে হচ্ছে একদম নতুন। পড়াশোনা কর না কেন?

আমি : স্যার বইটা তো ও বাড়িতে নিতে ভূলে গিয়েছিলাম।

তাহসিন :নিতে ভূলে গিয়েছো নাকি ইচ্ছে করে নেওনি।

আমি :সত্যি নিতে ভুলে গেয়েছিলাম।

তাহসিন :সত্যি?

আমি : হুম।

তাহসিন :আচ্ছা তোমাকে এই বই থেকে প্রশ্ন করি তুমি উওর দিবে।হুম?

আমি: এখন না পরে,,

তাহসিন:কোন বাহানা দিলে চলবে না। এখনি বলতে হবে।

আমি: নিশ্চুপ,,

তাহসিন:কঠিন প্রশ্ন করবেন না কিন্তু।

আমি :ঠিক আছে ।

তাহসিন :নিউটনের তৃতীয় সূত্রটা বল?

আমি তো ভালোভাবে পড়িনি।আল্লাহ তুমি আমাকে কার সাথে বিয়ে দিলে। সে শুধু সুযোগে খুঁজে কখন পড়া ধরবে। ভেবেছিলাম বিয়ের পড়ে পড়তে হবে না । এখন দেখি বিয়ে করে ঝামেলায় পড়লাম। এই লোকটা সত্যি আমাকে বুঝে না।

তাহসিন :কি হলো এন্সার মি,,

আমি :আস, লে স্যার আমার মনে পড়েছে না,[কাঁপতে কাঁপতে]

তাহসিন মিহুর কথা শুনে ঠোঁট কাঁমড়ে ধরে নিজেকে শান্ত রাখতে চেষ্টা করল।শক্ত গলায় বলতে লাগল,

তাহসিন: মিহু,,,

আমি :নিশ্চুপ,,

তাহসিন :পরীক্ষার তিনমাস বাকি আছে। আর তুমি এখনো নিউটনের সূত্রই পার না,,

আমি :নিশ্চুপ,,

তাহসিন:তোমার পড়ার যে অবস্থা তুমি এ প্লাস পাবে কী করে?

আমি :নিশ্চুপ

তাহসিন :দেখ মিহু তুমি যদি এ প্লাস না পাও তাহলে কিন্তু মেডিকেলে চান্স পাওয়ার আশা ছেড়ে দেও।

আমি:নিশ্চুপ.

তাহসিন :কালকেই আমার সাথে বাড়িতে যাবে। নাক মুখ বুজে পড়া শুরু করবে। আজকে তোমার শেষ ছুটি।

স্যার যে রেগে আছেন ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি।তাই তাড়াতাড়ি করে রুম থেকে বেরিয়ে মেঘের রুমে এলাম।বেশিক্ষণ থাকলে বিপদ হতে পারে,,

||
আমি:আমার ভাইটা এভাবে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে কেন?

মেঘ:নিশ্চুপ,,,

আমি :মেঘ,,

মেঘ:নিশ্চুপ

আমি:ওই ছেলে তুই যদি এখন কথা না বলিস তাহলে কিন্তু আমি চলে যাব।

মেঘ:সরি আপু। যাস না প্লিজ।

আমি:আচ্ছা , বল তো তুই বেলুনের মতো মুখ ফুলিয়ে আছিস কেন?

মেঘ:কারনটা হচ্ছে তাহসিন ভাইয়া।

আমি :কেন?

মেঘ:কারন ভাইয়া তোকে নিয়ে গিয়েছে।

আমি :তাই বলে রেগে থাকবি?

মেঘ:হুম,,

আমি মেঘের রাগ ভাঙাতে অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু কাজ হলো না।আমার ভাইটা স্যারের উপর অনেক রেগে আছে। মেঘ যে আমাকে কতটা ভালোবাসে বিয়েটা না হলো বুঝতে পারতাম না। মেঘের রুম থেকে বেরিয়ে রান্না ঘরে মায়ের কাছে গেলাম। সারা বাড়ি খাবারের ঘ্রাণে মম করছে।

মা:মিহু,,

আমি :হুম।

মা:তাহসিন কি করে?

আমি :যানিনা,,

মা:ছেলেটিকে একটু খেয়ালে রাখবি। যখন যা বলবে তাই শুনবি।

আমি:হুম।

মা:মিহু তুই এই গরমে ঘোমটা দিয়ে আছিস কেন?

মায়ের কথা শুনে আমি কি জবাব দেব বুঝে উঠতে পারছি না। ঘোমটা না দিলে তো দাগ বোঝা যাবে। আর মায়ের কাছে থাকলাম না। কারন আর কিছুক্ষন থাকলে আমার পেটে একটি কথাও থাকবে না।তাই আমার রুমে চলে এলাম।

রুমে ঢুকে দেখলাম স্যার বিছানায় বসে মনযোগ সহকারে ফোন স্রোল করছেন।

তাহসিন:আমাকে তো ভূলেই গিয়েছো,,

আমি :মানে?

আমি কিছু বুঝে উঠতে পারলাম না।

তাহসিন :এতক্ষনে মনে পড়ল আমার কথা?

আমি :আসলে মায়ের কাছে ছিলাম তো।

তাহসিন : মিহু,,

আমি :হুম,

তাহসিন : মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা করছে,,একটু হাত বুলিয়ে দিবে?

তার নরম কন্ঠে মাথা ব্যাথার কথা শুনে নিজের অজান্তেই খারাপ লাগতে শুরু করল।

(#চলবে)
#গল্পের নাম :#পবিএতার_ছোঁয়া (সিজন২)
#পর্ব :১২
#লেখিকা :#জাবিন_মাছুরা [ছদ্মনাম]

তার নরম কন্ঠে মাথা ব্যাথার কথা শুনে নিজের অজান্তেই খারাপ লাগতে শুরু করল। সিদ্ধান্ত নিলাম তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিব।আস্তে আস্তে তার দিকে অর্থাৎ বিছানার দিকে অগ্রসর হতে লাগলাম। বিছানার এক পাশে বসে পড়লাম। সে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। মুখটা কালো হয়ে গিয়েছে। দেখে বোঝতে পারলাম তার কতটা কষ্ট হচ্ছে। তার সিল্ক চুলগুলোর দিকে একপল তাকালাম।হাত গুলো কাঁপছে।গলা শুকিয়ে আসছে। তারপরও কম্পমান হাত দুটো তার মাথার কাছে এগুতেই, ঠিক তখনি মেঘ ঘরে এসে হাজির হলো। আমি ছিটকে তার থেকে দূরে সরে এলাম। নিজকে ঠিক ঠাক করে মেঘের দিকে লক্ষ্য করলাম।

মেঘ:আপু চল, আম্মু তোদের খেতে ডাকে।

আমি: তুই যা আমরা পরে আসছি।

মেঘ: না, এখুনি চল।

মেঘের উপর কিঞ্চিৎ পরিমাণ রাগ হলো। ছেলেটা কি ঘরে আসার কোন সময় পেল না? এখনই আসতে হলো। স্যারের তো কষ্ট হচ্ছে।
মেঘ আমাকে কথা বলতে না দিয়ে, আমার ওড়না ধরে টানাটানি করছে। মেজাজটা চরম পর্যায়ে বিগরে গেল।

আমি: ছাড়,, আমি আসছি তো।

আমার চিৎকারে স্যার উঠে বসলেন। আমি সাথে সাথে ওড়না ভালো করে গায়ে জড়িয়ে নিলাম।মেঘের উপর প্রচন্ড রাগ হতে লাগলো। এভাবে ওড়না ধরে টানাটানি না করলে কী হতো। ভাগ্য ভালো ছিল স্যার দেখেন নি। যদি স্যারের সামনে ওড়নাটা খুলে যেত? তাহলে কি বাঁজে অবস্থায় না পড়তে হতে আমাকে।

তাহসিন:মিহু, কি হয়েছে?

আমি :আম্মু খেতে ডেকেছে।

মেঘ: হ্যাঁ।

আমি :চলুন। পরে এসে করে দিব।

মেঘ:আপু কি করে দিবি?

মেঘ বড়ো বড়ো চোখ করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।জীবনে প্রথম মেঘের কথা শুনে লজ্জা অনুভব হচ্ছে। লজ্জায় মেঘের দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারছি না।নিচের দিকে তাকিয়ে আছি।

মেঘ:কিরে আপু, তোর গাল দুটো লাল হয়ে গিয়েছে কেন?

আমি:নিশ্চুপ

মেঘ:বল না আপু

আমার যার জন্য লজ্জা পেতে হচ্ছে, সে আমাকে রেখে বিছানা থেকে নেমে চলে গেলেন। বুঝি না,লোকটা কেন এত চুপচাপ।আমার সাথে একটু কথা বললে কি হয়। একটুও রোমান্টিক না। তাছাড়া বাইরে গেলে তো আমাকে চিনেই না। একদম মুডিস্ট,কিউট টিচার হয়ে যায়। প্রয়োজন ছাড়া একটা বেশি কথাও বলেন না।

মেঘ:আপু, কি ভাবছিস? চল না খেতে যায়। কতদিন ধরে তোর হাতে খায় না।

মেঘের ইমোশনাল কথা শুনে বুকের ভিতরে খারাপ লাগতে শুরু করল।

আমি:চল।আজকে তোকে খাইয়ে দিব।

মেঘ আমার কথা হেঁসে উঠল।আমার হাত ধরে খাবার ঘরে নিয়ে এলো।
||

খাবার ঘরে এসে দেখলাম স্যার চেয়ারে বসে ফোন চালাচ্ছেন। মুডটা মূহুর্তে খারপ হয়ে গেল, যে লোকটা এখটু আগে বলল মাথা ব্যাথা করছে। এখন সে মোবাইল চালাচ্ছেন।
মুড ঠিক করতে মায়ের কাছে চলে এলাম।আম্মু আমাকে দেখে মুচকি হাঁসি দিলেন। আমিও আম্মুকে মুচকি হাসি উপহার দিয়ে বললাম,

আমি:রান্না শেষ?

আম্মু :হুম।

আমি :আচ্ছা আম্মু বাবা আসবে কবে?

আম্মু :সামনে সপ্তাহে। প্রজেক্ট টা শেষ করতে আর এক সপ্তাহ লাগবে।

বাবার সাথে আর বোধহয় দেখা হবে না ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল।

আম্মু :খাবার গুলো টেবিলে গিয়ে রাখ।

আমি :হ্যাঁ রাখছি।

আম্মু :তাহসিনের তো মনে হয় খিদে পেয়েছে। তাড়াতাড়ি কর।

আমি তারাতারি করে খাবর গুলো সার্ভ করলাম। আম্মু এসে স্যারের প্লেটে খাবার তুলে দিলেন।

তাহসিন :আম্মু এত খাবার আমি কি করে খাব?

আম্মু :চেষ্টা কর পারবে।

আমি স্যারের দিকে তাকালাম। সে ধীরে সুস্থে খাবার দিকে তাকিয়ে খাচ্ছেন। মানুষ এত সুন্দর করে যে খেতে পারে তাকে না দেখলে কখনো বুঝতাম না। আর আমি খালি প্লেট নিয়ে বসে আছি আম্মুর অপেক্ষায়। আজকে আম্মুর হাতে খাব।

মেঘ:ভাইয়া আপনাকে আর একটু বিরিয়ানি দেই?

তাহসিন :না গো সালা বাবু। আর খেতে পারব না।

মেঘ:আরে ভাইয়া না খেলে তো আবার আমার আপুকে আপার ইয়ে করে দিতে হবে।

মেঘের কথা শুনে স্যারের গলায় খাবার আটকে গেল। তিনি কাশতে শুরু করলেন। আমি রাগী দৃষ্টিতে মেঘের দিকে তাকালাম। ইতিমধ্যে আম্মু এসে হাজির। ভাগ্য ভালো যে মেঘের কথা আম্মু শুনে নি। নাহলে আম্মুর সামনে খারপ অবস্থা তৈরি হতো।

আম্মু :কি হয়েছে?

মেঘ:ভাইয়া,,

আমি:চুপ কর। কিছু হয়নি আম্মু। আম্মু খাইয়ে দাও তো।

আম্মু:আচ্ছা।

আম্মু ভাত মেখে খাইয়ে দিতে লাগলেন। স্যারের সামনে খেতে একটু হলেও লজ্জা লাগছে।

মেঘ:আম্মু আমার ও খিদে পেয়েছে,,

আম্মু :তাহলে হা কর। মিহুর সাথে তোকেও খাইয়ে দিচ্ছি।

মেঘ: না। আমি আপুর হাতে খাব।

আমি :আচ্ছা আমি তোকে খাইয়ে দিব।

তাহসিন :মিহু, আচ্ছা আমি রুমে যাচ্ছি।

আমি :আচ্ছা।

আম্মু আমাকে খাইয়ে দিল। অনেক দিন পরে আম্মু হাতে খেতে পেরে আনন্দ লাগছে।আমি খাওয়া শেষ করে মেঘকে খাইয়ে দিলাম। স্যারের মাথা ব্যাথা তাই আর বেশি দেরি করলাম না। মেঘের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে রুমে চলে এলাম।

||

তাহসিন স্যার চোখ বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে আছেন।পড়নে সাদা শার্ট,ব্ল্যাক প্যান্ট। বাতাসে তার সিল্কি চুল গুলো দোল খাচ্ছে। তাকে দেখতে একদম কিউটি বেবিদের মতো লাগছে। আমি এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রয়েছি। ভেবেছিলাম সে ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে মিহু বলে ডেকে উঠলেন। সাথে সাথে তার উপর থেকে দৃষ্টি সরালাম। ধরা পড়ে গিয়ে অস্বস্তি লাগছে,

তাহসিন :মিহু,

আমি:হুম,

তাহসিন :মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা করছে। একটু হাত বুলিয়ে দাও তো,,

আমি :এখু,, নি হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। [কাঁপতে কাঁপতে]

স্যারের বাচ্চা সুলভ আচরণ দেখে আমি কোন অযুহাত দিলাম না। তার কষ্ট দেখতে কষ্ট হচ্ছে।তাই তার মাথার পাশে গিয়ে বসলাম। হাত দুটো মাথার কাছে নিতেই, আমার আদুরের ভাই মেঘ এসে হাজির।
মেঘের আওয়াজ পেয়ে স্যার শুয়া থেকে উঠে বসলেন।

মেঘ:আফু,,

মেঘের মুখ থেকে আফু ডাক মনটা কু ডাকতে শুরু করল। এই ফাজিল যখনি আফু বলে ডাকে তখনি কোন ধান্দা করে আছে।

মেঘ:আফু আজকে আমি তোর কাছে ঘুমোব।

মেঘের কথা শুনে ওর দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম। সত্যি ছেলেটা আমার কাছে থাকার জন্যে হাতে করে ওর পছন্দের বালিশটা নিয়ে এসেছে। আজকে বোধহয় স্যারের মাথায় আর হাত দেওয়া হবে না।
মেঘের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে স্যারের দিকে তাকালাম। বেচারা অসহায় দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
(#চলবে)

[আজকে কেমন হয়েছে বলবেন প্লিজ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here