প্রণয়ের জলসাঘরে পর্ব -১১

#প্রণয়ের_জলসাঘরে
#পর্বঃ১১ #লেখনীতে_রেহানা_পুতুল
” রাতের কুমুদ যেভাবে চেয়ে থাকে নভোনীল পেতে।
ঠিক তেমনিই আমিও অপেক্ষায় রবো কভু তোমায় পেতে। ”

কুয়াশার চাদরে মোড়ানো গ্রামের শীতকে বিদায় জানিয়ে আর একদিন পরই ওরা ফিরে যাবে শহরে ওদের অস্থায়ী গন্তব্যে। পরিযায়ী পাখির মতো দুদিনের অতিথি হয়ে এলো যেন। ওদের সবার মন সঙ্গী হারা একলা পাখিটির মতন বিষন্ন।

আয়মানের মন মাঝ সমুদ্রে ঝড়ের কবলে পড়া জাহাজের নাবিকের মত বিপন্ন । কারণটা কোন এক রহস্যময়ী নারী। যার হাসি মোনালিসার হাসির চেয়েও মোহনীয়। যার হাঁটা যেন চপল ছন্দ। নুপুরের ধ্বনি। যার ব্যক্তিত্ব পাহাড়ের মতো মজবুত। যার ছায়া দেখেও তার হৃদয়ে কাঁপন ধরে। সে তার নাগালেই। সে তার চোখের সামনেই ছোট্ট হাঁসের ছানার মত তিরতির করে হেলেদুলে চলে। এত কাছে থেকেও সে যোজন যোজন দূরে। সে যেন দূর আকাশের শুকতারা। নয়তো কোন ছায়া মানবি। শুধু বক্ষ জুড়ে তৃষিত চাতক পাখির ন্যায় তাকিয়েই থাকা যায়। চাইলেও ছোঁয়া যায়না। চাইলেও কাছে যাওয়া যায়না। একটা অদৃশ্য শিকল দিয়ে তার হৃদয়টাকে কেউ যেন বেঁধে রেখেছে। প্রকাশ করার কোন সামর্থ্য নেই তার।

তার মায়ের মন ও খারাপ গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে বলে। বালিকা বয়সে তার বধু জীবন শুরু হয়েছে এই বাড়িতেই। চার বেহারা পালকি করে তাকে নিয়ে এসেছে এই শ্বশুর বাড়িতে। কত অল্প বয়স ছিল। ভারী ভারী পা ফেলে গানের তালে তালে তারা গাঁয়ের এবড়ো থেবড়ো মেঠো পথ মাড়িয়ে গ্রামের পর গ্রাম পার করলো। সেই মধুময় দিনের কথা স্মরণ করে তার দুচোখ আদ্র হয়ে উঠল। কোথায় আজ সেই মানুষটা। কেন হাত ছেড়ে চলে গেল। এই বুঝি জীবনের নিষ্ঠুর নিয়ম।

আলিশার ও ভীষণ মন খারাপ চারদেয়ালের বন্ধী নাগরিক জীবনের কথা ভেবে। গ্রামের মুক্ত হাওয়া,নির্মল সবুজের সমারোহ, আকাশের বিশালতা, গাছে গাছে পাখিদের মুখরিত কলরব, পদ্ম পুকুরে পানকৌড়ির ডুব সাঁতার, বিকেলে সাথীরা মিলে দল বেঁধে খেলা করা, এই উচ্ছ্বলতার দিনগুলো আবার কবে ফিরে পাবে তা কে জানে।

দাদীর ও মনটা খুব বেজায় ভার, এতদিন ঘর ভরা মানুষ ছিল। তাই মনটাও বেশ প্রফুল্ল ছিল। সবাই চলে যাবে তাকে ছেড়ে। সে হয়ে যাবে রাত জাগা দুঃখীনি মায়ের মতো।

পিয়াসার সুপ্ত অন্তরটাও বড্ড ছন্নছাড়া হয়ে আছে। মা বাবা ছাড়া কে তুলে দিবে তাকে বরের হাতে। সে যে বড় অনাথ। সে কি সত্যিই ঢাকায় গেলে কারো বউ হয়ে যাবে৷ শত বিক্ষিপ্ত ভাবনা তাকে আষ্ঠে পৃষ্ঠে ধরেছে স্বর্ণলতিকার ন্যায়।

অলস দুপুরের সাথে পাল্লা দিয়ে পিয়াসার মাঝেও অলসতা এলো। আয়মানদের ঘরের পাশ ঘেঁষেই একটি পুকুর। পিয়াসা হেঁটে গেল সেদিকে। চারদিক থেকে রোদ্দুর তার তেজ কমিয়ে নেমে এলো পুকুর পাড়ে। পাড়ের এক পাশে একটি আম গাছের গোড়ায় পিয়াসা বসল। দুপুরের খাওয়ার পর সবাই ভাতঘুম দিচ্ছে। পিয়াসা অনেক চেষ্টা করেও তন্দ্রাঘোরে যেতে পারেনি। তাই নিরবে দরজা খুলে বেরিয়ে এলো।

পুকুরের দিকে ঝুঁকে আছে একটি বরই গাছের ডাল। একটি মাছরাঙা পাখি পুকুরের মাঝ বরাবর উপর দিয়ে ওপাড় থেকে উড়ে এসে সে ডালে বসল। পিয়াসার দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো সেদিকে। পাখি তার খুব প্রিয়। কত চড়ুই ধরেছে গ্রামে থাকতে। আবার ফুরুৎ করে দুহাত মেলে ছেড়েও দিত।

স্বচ্ছ পানির নিচে স্থির চোখে মাছরাঙাটি ওৎ পেতে আছে মাছ শিকারের জন্য। একটু পরেই ঝুপ করে পানিতে ডুব দিল। চোখের পলকেই ছোট একটি পুঁটি মাছ ধরে ফেলল। ঠোঁটের মাঝ বরাবর কামড়ে ধরে ডালে উঠে বসল। মাথা এপাশ ওপাশ করে খেয়ে ফেলল। পিয়াসা আপন মনে কিটকিটিয়ে হাসল। পাখিটি উড়ে গেল।

পিয়াসাও পাখিটির মতো পাড়ে বসে পানির নিচে তাকালো। ওমা! তার চোখ চকচক করে উঠলো রুপোলী থালার মতো। পুকুর পাড়ে রোপণ করা অনেক গুলো পাটি গাছের সবুজ গোড়া আকঁড়ে আছে ছোট ছোট চিংড়ি। কি মন ভালো করা দৃশ্য। কি অদ্ভুত সুন্দর। মনে হচ্ছে কেউ নিজ হাতে রক্তশূণ্য সাদা চিংড়ি গুলোকে সিরিয়াল করে প্রতিটি গাছের গোড়ায় সাজিয়ে রেখেছে। নিজেকে দমাতে পারছেনা সে।

পিয়াসা সেলোয়ারের দুই পা ভাঁজ করে হাঁটুর কাছাকাছি তুলে ভিড়িয়ে দিল। স্যান্ডেল রেখে আস্তে করে পানিতে নামলো। আয়মান বাইরে ছিল। এখন পুকুরের বিপরীত পাড় দিয়ে বাড়ির দিকে আসছিল। হঠাৎ ঘাটের দিকে চোখ পড়তেই দেখে পিয়াসা নিচের দিকে ঝুঁকে কি যেন করছে। আয়মান নিরবে চুপিচুপি ঘাটের কাছাকাছি এলো। একটি মোটা আমগাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে গেল। উদ্দেশ্য পিয়াসা কি করছে পানিতে তা অবলোকন ও অনুধাবন করা।

না চাইলেও আয়মানের চোখ গেল পিয়াসার উদাম পায়ে। ডুবো পানিতে পিয়াসার ফর্সা ভেজা পা দুটি ভারী কমনীয় লাগছে। তার উপরে পাতলা কালো কুচকুচে লোম। যেন সাদা কাগজের বুকে শিল্পীর আঁকা কালো তুলির শৈল্পিক আঁচড়। যুবতী মেয়ের পা যুগলে যে দুর্নিবার আকর্ষণ থাকতে পারে তা এইমাত্র আয়মান টের পেল।

কিন্তু পিয়াসা দুইহাত দিয়ে মাটিতে কি খুঁজছে? কিছু হারিয়ে গেল নাকি? তার কানের ইমিটেশন দুল বা হাতের আংটি? যাই জিজ্ঞেস করি বলে আয়মান এগিয়ে পাড় বরাবর দাঁড়াল। পিয়াসা তাকে দেখিনি। সে চিংড়ি মাছ ধরার চেষ্টা করছে।

পিয়াসা কি খুঁজছ?

অপত্যাশিতভাবে আয়মানের কন্ঠ শুনেই পিয়াসা চমকে গেল। ওমা আপনি এখানে কেন? এই বলতেই অসাবধানতাবশত কাত হয়ে পড়ে গেল পানিতে।

আঃ পড়ে গেলে কেন?
আপনার জন্যইতো।
আমিতো তোমার উপকার করতে আসলাম।
উপকার না অপকার করেছেন এই ঠান্ডায় তাতো দেখতেই পেলেন,পানি থেকে উঠতে উঠতে বলল। জুবুথুবু হয়ে কাঁপছে শীতে।

পানিতে কি পড়েছে তোমার?

উফফস! আমি চিংড়ি মাছ ধরতে নামলাম।
হোয়াট! বলে আয়মান উদ্দাম হাসি হেসে ফেলল।

কই চিংড়ি মাছ দেখি? রাতে তাহলে ভেজে খাব।

আমার হাতেই ছিলমুঠোবন্দি। পড়ার সাথে সাথেইতো ওরাও পানিতে পড়ে গেল।

বেশ হয়েছে। তাদের জলেই মানায়। মানুষের হাতে নয়। যাই। তোমার জামা কাপড় তো আমি চিনিনা আলিশাকে ডেকে দিচ্ছি। আয়মান চলে গেল।

পিয়াসা ভ্যাঁ করে পিছন দিয়ে ভেংচি কাটলো আয়মানকে। কারণ সে জানে আয়মান শুনতে পাবেনা। বেশ খানিকটা এগিয়ে ঘরের দিকে চলে গিয়েছে।

আলিশা জামা সেলোয়ার এনে দিল।পিয়াসা চেঞ্জ করে ঘরে চলে গেল। রোদে দিয়ে এনে রাখা লেপের গরম ভাঁজে পা ঢুকিয়ে বসলো। তারপর লেপের উষ্ণতায় নিজেকে ঢেকে ফেলল।

আয়মান তার খাটে লেপ না পেয়ে অন্য রুমে খুঁজলো। বুঝল লেপ মুড়ি দিয়ে আছে পিয়াসা। শব্দ করে বলল,
আলিশা আমার গরম লেপ কই?
আমি পিয়াসা আপুকে এনে দিয়েছি। কারণ রোদ থেকে সব শেষে তোমার লেপ আনা হয়েছে। তোমার লেপে উম বেশী। এক্কেবারে টাটকা গরম। তাই।

পিয়াসা শুনেই লেপের নিচ থেকে বের হয়ে উঠে বসলো। ধলাই মলাই করে আয়মানের খাটে গিয়ে লেপটি রেখে দিল। আয়মান পিছন দিয়েই দু কদম লম্বা পা ফেলে তার রুমে চলে গেল।

আজব তো পিয়াসা। আমি তোমাকে কিছু বলছি? এমন করে এনে দিলে যে?
অনুযোগের সুরে জিজ্ঞেস করলো আয়মান।

মৃদু হেসে পিয়াসা জানাল,
আরেহ তা নয়। আমি যদি জানতাম এটা আপনার লেপ তাহলে গায়েই জড়াতাম না। সত্যিই বলছি।

নাও বলছি। ঠান্ডা লাগবে যে। আমার জন্যইতো পানিতে পড়ে গেলে এই অবেলায়।
লাগুক ঠান্ডা। হোক অসুখ। কেন যে বেঁচে আছে এই দুই পয়সার প্রাণটা। অভিমানী গলায় বলল পিয়াসা।

আয়মান খুব দুঃখ পেল পিয়াসার এমন কথায়। আর পারছেনা সহ্য করতে। পিয়াসার হাত চেপে ধরলো।

জিজ্ঞেস করল, তোমার ধারণা আমি জেনেও লেপ কই জিজ্ঞেস করলাম?

শুধু ধারণা নয় এটা আমার বিশ্বাস। বলেই পিয়াসা জ্বলজ্বল চোখে আয়মানের হাতের দিকে চাইলো। আয়মান এক ঝটকায় তার হাত ছেড়ে দিল। মোটা গলায়, আচ্ছা ঠিকাছে । যাও তুমি ।

পিয়াসা চলে গেল আয়মানের সামনে থেকে। আয়মান ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। অনেক রাত করে ঘরে এলো।

গভীর আফসোসের সাথে চিন্তা করল, কেন এমন হচ্ছে আমার সাথে। বলি একটা ভেবে। ঘটে যায় বিপরীত কিছু। শুরু থেকেই এই মেয়েটার সাথে আমার এমন হয়ে আসছে।

না খেয়ে ঘুমিয়ে গেল। তার আগে ইউটিউবে বেস্ট অফ অবসিকিউর লিখে সার্চ দিল। লো ভলিউমে গান বেজে যাচ্ছে।
” মাঝ রাতে চাঁদ যদি আলো না বিলায়/বুঝে নিব তুমি আজ চাঁদ দেখনি।”

” ছাইড়া গেলাম মাটির পৃথিবী/
জীবন খেলায় হারাইলাম সবই/বুকে জমাট বাঁধা অভিমান/
কী নিঠুর এই নিয়তির বিধান।”

গ্রাঁয়ের মাটিকে বিদায় জানিয়ে নির্ধারিত দিনে তারা ফিরে এলো ঢাকায়। তাদেরকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আয়মান কলেজে চলে গেল। আলিশা ফ্রেস হয়েই বিছানায় গিয়ে গা ছেড়ে দিল। পিয়াসা আয়মানের মায়ের সাথে বাসা ঝাড়া মোছার কাজে হাত লাগালো কোমরে ওড়না বেঁধে। তা দেখে আয়মানের মা মনে মনে ভেবে উঠলো। ইসস! রায়হান পছন্দ করে পিয়াসাকে। নইলে এই সংসারি মেয়েটাকে আমিই রেখে দিতাম।

রাতে রায়হান আয়মানদের বাসায় গেল। সবার সাথে দেখা করে কুশলাদি জানলো। পিয়াসার কাছে গেল।
কেমন আছ তুমি?

এইতো ভালো। আপনি কেমন আছেন স্যার?

জানিনা কেমন আছি।

আপনাকে কেমন বিদীর্ণ দেখাচ্ছে স্যার ?

ঠিক ধরেছ তুমি। শুরুতেই বলি আমার খুব ইচ্ছে ছিল তোমার জন্য একটা উপহার নিয়ে আসি। কিন্তু তুমি তা নিবেনা। তাই আনিনি।

খুব ভালো করেছেন।

মানুষ চা চায় তা পায়না। আর যা পায় তা চায়না।

এই ধ্রুব সত্যিটাই আজ আমার জীবনে ঘটতে যাচ্ছে। রায়হান রিক্তার বিষয়ে ডিটেইলস জানালো পিয়াসাকে। বলল, কার্ড ছাপাতে দিয়েছে বাবা। বিয়েতে তুমি আসলে আমার খুব ভালো লাগবে।

বলতে বলতে রায়হানের গলা ধরে এলো। উঠে দাঁড়িয়ে গেল। পিয়াসার দুগাল চেপে ধরলো।
কপালে বেশ কয়েকটি এলোপাতাড়ি চুমু দিলো পাগলের মতো। বলল,খুব খুব সর‍্যি এ সুখটুকু ছিনিয়ে নিলাম বলে। এইতো শেষ পিয়াসা। হনহন পায়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল রায়হান।

কোন এক অদ্ভুত কারণে পিয়াসার মনটা বিষন্নতায় ভরে গেল। আঁখি কোন ছলছল করে উঠল। রায়হান তাকে চেয়েও পায়নি। এ দোষ কারোই নয়। রায়হান পিয়াসাকে ভালোবাসে এটা তার ভুল নয়।
আবার তার পরিবার ম্যাচ না হওয়া মেয়েকে ঘরে তুলবেনা। এটাও তাদের দোষ নয়। সমাজে চলতে গেলে কিছুটা হলেও লেভেল ম্যাচ করতে হয়। বেশী উঁচুনিচু হয়ে গেলে এডজাস্ট করা মুশকিল।

পিয়াসা রায়হানকে ভিন্ন চোখে দেখেনা। এটাও তার দোষ নয়। মনের বিরুদ্ধে লড়াই করে বেশীক্ষণ ভালো থাকা যায়না। এই পৃথিবীতে কিছু কিছু দূর্ঘটনা ও ঘটনার জন্য কেউই দায়ী নয়।

পিয়াসা আলিশার সাথে রায়হানের বিষয়টি শেয়ার করল। আলিশা ছুটে গিয়ে তার মাকে জানাল। তার মা তাকে নিয়ে আয়মানের রুমে গেল।
আয়মানকে জিজ্ঞেস করল,
পিয়াসাকে তোর কেমন লাগে?

হঠাৎ একথা কেন বলছ মা? রহস্যভরা কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলো আয়মান।

রায়হানের পরিবার পিয়াসাকে কিছুতেই মেনে নিবেনা।

হুম শুনলাম। রায়হান বলছে সব।

তাই বলছি কি, অনাথ মেয়েটা কেমন লোকের ভাগ্যে পড়ে খোদায় জানে। তুই বিয়ে করে ফেল বাবা।

হ্যাঁ ভাইয়া। সব দিক দিয়ে খুব ভালো পিয়াসাপু। তুমি রাজী হও। চনমনিয়ে বলল আলিশা।

আয়মান সংকোচপূর্ণ গলায় বলল,
মা ধরো আমার দিক থেকে ইয়েস। বাট তার মতামত নিবেনা?

হুম। এভাবেতো চিন্তা করিনি। আচ্ছা আমরা চলে যাই। ওকে ডেকে পাঠাই। তুই সরাসরি প্রপোজ কর। ইনশাআল্লাহ রাজী হবেই।

তারা মা মেয়ে উঠে গেল। আয়মান পিছন দিয়ে ডাকল,এই মা…আলিশা..কি আশ্চর্য কাণ্ডতো। তোমরা জিজ্ঞেস করলেইতো হয়।

সামান্য পরেই পিয়াসা আয়মানের রুমের ভিতরে ঢুকল। মেঘমুখে জিজ্ঞেস করল,
স্যার আলিশা বলল আমাকে ডেকেছেন আপনি?

আয়মান যেন বাক্যহারা হয়ে পড়লো। গুছিয়ে কি বলবে বুঝে উঠতে পারছেনা।

অতিরিক্ত আবেগের সময় এবং প্রিয়জনের সামনে মানুষ গুছিয়ে কথা বলতে পারেনা।

স্যার বলেন কেন ডেকেছেন?

বসনা একটু। জানি তোমার মন খারাপ এখন।
তাই বুঝি শান্তনার বুলি ছুঁড়তে ডেকেছেন?

একদম না।

তো বলেন বলছি। নইলে চলে যাব বলছি।

আয়মান পিয়াসার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। নিবেদিত সুরে,
মা আর আলিশা একান্তই চায় তোমাকে আমাদের বাসার বউ বানাতে।

পিয়াসার কান লাল হয়ে গেল শুনে। কেউ যেন তাকে হঠাৎ করে বিদুৎ শক দিল। উত্তেজিত হয়ে গেল তড়িতেই। কন্ঠকে চড়ায় নিয়ে তাতানো চোখে,
তারা চায় আর আপনি?

আমি মায়ের কথার অবাধ্য হই কিভাবে।

কিন্তু আমি চাইনা। চাইনা। চাইনা। বলে পিয়াসা দৌড়ে গিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে ফুঁফিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল।

চলবেঃ১১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here