প্রণয়ের সূচনা পর্ব – ৩৭

#প্রণয়ের_সূচনা
#লেখিকা_Nazia_Shifa
#পর্ব_৩৭
___________________________
এক হাত দিয়ে চেয়ার আক/ড়ে ধরে হতবি/হ্বলের ন্যায় দাড়িয়ে আছে ইরা।বিস্মি/ত চোখ জোড়া মেঝেতে ছড়ানো ছিটানো কা/চের টু’করো গুলোতে।সে ভুল শোনেনি,না ভুল দেখেছে,সত্যি ই মুগ্ধ এসেছে। ইসহাক সাহেবের কণ্ঠ শুনে সবার অগোচরে উকি দিয়েছিল ড্রয়িংরুমে।চোখজোড়া থমকে গিয়েছিল তার ওপর,হৃদকোমলে অস্বাভাবিক রকমের স্পন্দন আর ক্রমেই যেন তা বেড়ে চলেছিল।হাতে থাকা কাচের প্লেট টা শব্দ করে নিচে পড়ে যেতেই হুশ ফিরল ইরার।সাথে সবার নজরে এলো আড়ালে থাকা ইরার ওপর।নজর এড়ায়নি মুগ্ধর।ইরাকে বিধ্ব/স্ত লাগলেও মুগ্ধ মুগ্ধ নয়নেই তাকিয়ে ছিল তার ইরাবতীর দিকে।কিন্তু বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারেনি কারণ ইরা সড়ে এসেছে সেখান থেকে। প্রণয় ও মুগ্ধ কে নিয়ে সোফায় বসিয়ে দিয়েছে।ইসহাক সাহেবের সাথে কুশলাদি বিনিময়ের পরে মুগ্ধর কাজ সম্পর্কে ও মোটামোটি জান কারি নিয়ে নিচ্ছেন ইসহাক সাহেব। মুগ্ধ কিছুটা ভী’ত স/ন্ত্রস্ত বটে। চিন্তা হচ্ছে তার ইরাবতীর জন্য। সে কোথায়?দেখার জন্য ছট/ফট করছে কিন্তু করবেই বা কী? ইসহাক সাহেবের সাথে কথা বলছিল মুগ্ধ তখনই পাশ থেকে প্রণয় বলে উঠলো-

–‘মামা ও একটু ফ্রেশ হয়ে নেক।

ইসহাক সাহেব ও অনুমতি দিলেন।মুগ্ধ কে গেস্টরুমে দেখিয়ে দিয়ে নিজের রুমে গেল প্রণয়। রুমে আসলেও সূচনাকে পাওয়া গেল না। কিঞ্চিৎ অবাক হলো, সে দেখেছে তাকে রুমের দিকে আসতে। তাহলে গেল কোথায়?কয়েক পল ভাবার পরেই মাথায় হাত দিয়ে বলে উঠলো-

–‘শি’টট

তড়িঘড়ি করে বেরোলো রুম থেকে।
__________________________
বিছানায় দু’পাশে দু হাত প্রসারিত করে বসে আছে ইরা।বসে আছে বললে ভুল হবে হাত-পা তার অস্বাভাবিক ভাবে কা/পছে। আখি জোড়া জ্বা/লা করছে ভীষণ।মন -মস্তিষ্কে একটা কথাই বিচরণ করছে কেন এসেছে মুগ্ধ?মুগ্ধ প্রণয়ের বন্ধু, প্রণয় জানলে কী করবে তাকে?নিশ্চয়ই সে কষ্ট পাবে।তার নিজের বোন তারই বন্ধুর সাথে…ছি/হ।মুখেও একই বুলি আওড়াচ্ছে সে -আপনি কেন এসেছেন মুগ্ধ সাহেব?কেন আবারও ঝা/মেলা বাধা/চ্ছেন?

–‘মুগ্ধ তার ইরাবতীর অভিমান ভা/ঙাতে এসেছে।ইরাবতী কী দিবে না সেই সূযোগ?

আচমকা কারো কণ্ঠ পেয়ে চ/মকে উঠলো ইরা।তার চেয়ে বেশি চ/মকালো সেই কণ্ঠের মালিক কে দেখে।
ঘো/লাটে চোখ জোড়া নিয়ে অপলক তাকিয়ে আছে সামনের মানুষটার দিকে।তাকে কতদিন দেখে না এই চোখ জোড়া, মন ভরে দেখা হয় না তাকে কত শত প্রহর।জলে টইটম্বুর আখি জোড়া থেকে অশ্রু গড়াতে সময় লাগলো না।অভিমান,রা/গ, জে/দ সব মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। চোখ মুছে,নিজেকে স্বাভাবিক করলো।মুখ শ’ক্ত করে ক/ড়া কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো-

–‘একটা মেয়ের রুমে আসার আগে নক করে আসতে হয় সেই নূন্যতম সেন্সটুকু কী আপনার নেই?আর আপনি আমার রুমে কেন এসেছেন?

দুই ঠোঁ/ট কিঞ্চিৎ প্রসারিত হলো মুগ্ধর।হাসলো বুঝি?ইরার লক্ষ্য করলো না তেমনভাবে,দৃষ্টি সরিয়ে নিল। মুগ্ধ স্বাভাবিক স্বরেই বললো-

–‘আমি কেন এসেছি তা আপনি ভালো করে ই জানেন ইরাবতী।আর আপনার রুমে আসার আগে পারমিশন তো নিয়েছি, স্বয়ং আপনার ভাই দিয়েছে।
____________________________
লম্বা লম্বা শ্বাস নিচ্ছে সূচনা।এতক্ষণ যেন শ্বাস তার গলায় আট/কে ছিল।হা/পাতে হা/পাতে বললো-

–‘আপনার মাথা খা/রাপ? আরেকটু হলে দম বন্ধ হয়ে এখনই উপরে চলে যেতাম আমি।

প্রণয় মুখ বা’কিয়ে বললো-

–‘নাটক কম করো, অমনভাবে ও ধরিনি যে দম বন্ধ হয়ে যাবে।

–‘আমি নাটক করি?

–‘একটু আগে করছিলে।

–‘তাহলে আপনি আমার মুখ চে/পে ধরেছিলেন কেন?

–‘ তোমার মুখ চে/পে ধরার পর তোমার রিয়েক্শন কেমন হয় সেটা দেখার শখ জেগেছিল তাই।

–‘ফা/জলামো না করে বলেন।

–‘তার আগে তুমি বলো তুমি এখানে কী করছিলে?

–‘কী করছিলে মানে?ইরার রুমে যাচ্ছিলাম কিন্তু আপনার কল্যাণে তা আর হলো কই?আপনার মাথায় যে উদ্ভ/ট শখ জেগেছে।

–‘তোমার মতো হাতে হাত রেখে বসে থাকার মতো মানুষ না আমি।কাজ করে খেতে হয়,কাজ নিয়ে ভাবতে হয়।তা রেখে এসব নিয়ে পড়ে থাকব কোন সুখে?

–‘এক মিনিট এক মিনিট আপনি কী আমাকে খো/টা দিচ্ছেন যে আমি বসে বসে আপনার টা খাচ্ছি?

প্রণয় যেন আকাশ থেকে পড়লো সূচনার কথা শুনে। সে বলেছে এমনি এমনি কিন্তু সূচনা যে তার কথার এই মানে বের করবে তা জানলে বলতোই না বেচারা।আলতো করে সূচনার হাত ধরে বললো-

–‘ছিঃ জান কী বলো এসব, তুমি না আমার বিয়ে করা বউ।

–‘ছাড়ুন…ছুবেন না আমায়।

–‘আরে আস্তে, চেঁ/চাচ্ছ কেন?

–‘কীসের আস্তে হ্যা,,চেচা/ব না কেন একশো বার চে…

আর বলতে পারলনা সূচনা, আবারও মুখ চে/পে ধরেছে প্রণয়।এবার মুখ চে/পে ধরে এক প্রকার টে/নে হি/চড়ে নিয়ে গেল ইরার রুমের সামনে থেকে।
______________________________
ইরার পূর্বের থেকে দ্বিগুণ পরিমানে বিস্মায়া/বিষ্ট।মুগ্ধ কে তার রুমে আসার অনুমতি স্বয়ং তার ভাই দিয়েছে মানে প্রণয়।তার মানে প্রণয় জানে তাদের ব্যাপারে।মাথা খা/রাপ হয়ে যাচ্ছে তার ভাবতে ভাবতে।কিন্তু আশ্চর্যজ/নক ভাবে সব রা/গ এখন তার মুগ্ধর ওপর চা/পছে। সে না আসলে এই ঝা/মেলা হতই না।সব দো/ষ তার।মেঝে থেকো দৃষ্টি সরিয়ে মুগ্ধর দিকে তাক করলো।তার দৃষ্টি দেখে মুগ্ধ বুঝতে পারল সে রে/গে আছে।দৃষ্টি তে যেন আ/গুন ঝরছে তার।মুগ্ধ কিছু বলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল তার আগেই ইরা যেন ঝড়ে/র বেগে তার সামনে আসলো।মুগ্ধর টি-শার্টের কলার ধরে ক্ষিপ্ত হয়ে বললো-

–‘কী সমস্যা আপনার?কেন এসেছেন আপনি?কেন আমার জীবনটা এলোমেলো করছেন?চলে গিয়েছিলেন তাই তো ভালো ছিল আবার কেন এসেছেন?খবরদার যদি আবার আমার চোখের সামনে এসেছেন,খা/রাপ কিছু হয়ে যাবে। আমার সামনে আসবেন না আর।

ইরা কলার ছেড়ে দিল মুগ্ধর।বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে সে।চোখ ফে/টে কান্না আসছে তার।এদিকে ইরার ব্যবহারে কিংকর্ত/ব্যবিমূঢ় মুগ্ধ। সে কল্পনা ও করেনি ইরা এমন ব্যবহার করবে।কিন্তু হার মানলো না সে ও।নরম স্বরে বললো-

–‘ ইরাবতী এভাবে দূরে ঠেলে দিবেন না,আর কয়দিন এভাবে থাকলে ম/রে যাব আমি।অভিমান হয়েছে আমাকে শা’স্তি দিন কিন্তু দূরে সরিয়ে দেয়ার মতো শা’স্তি আর দিবেন না।দোহাই লাগে।

ইরা গলে গেল না তবুও।শক্ত চোখেমুখে দাড়িয়ে রইলো ঠাই।মুগ্ধ আবারও বললো-

–‘আমাকে একটা সূযোগ দিন আমি সব বুঝিয়ে বলবো,এক বার ভালো মতো একটু কথা বলতে দিন।

আগের ন্যায় ই ক্ষু/ব্ধ কণ্ঠে ইরা বললো-

–‘আপনাকে যেতে বলেছি না মি.মুগ্ধ। আমার রুম থেকে বেরোন সাথে আমার জীবন থেকেও।

ব্য/থিত হলো মুগ্ধর প্রেমিক হৃদয়।মন মানলো না,আবার ও রোবটের ন্যায় আওড়াতে লাগলো আগের কথাগুলো। যদি ভা/ঙে তার ইরাবতীর অভিমান। যদি গ’লে যায় মন সেই আশায়।
__________________________
–‘আপনি আমাকে টে/নে নিয়ে আসলেন কেন?

–‘তুমি চেচা/চ্ছিলে কেন?

–‘আপনি ব/কা দিয়েছেন কেন?

–‘আমি ব/কা কবে দিলাম?

–‘ইয়া আল্লাহ আব্বু দেখে শুনে আমাকে এ কার কাছে বিয়ে দিয়েছে?

–‘আমার মতো দ্বিতীয় কাউকে হারিকেন দিয়েও খুজে পেতনা তোমার বা’প।তোমার তো ভাগ্য ভালো যে আমি নিজে এসে ধরা দিয়েছি।

–‘এহহ,কে বলেছে আপনাকে ধরা দিতে।

–‘কে বলতে যাবে?আমি তো…

কথা বলতে বলতে দৃষ্টি সামনে পড়তেই থেমে গেল প্রণয়। মুগ্ধ বেরিয়ে যাচ্ছে ইরার রুম থেকে। সূচনাকে কিছু না বলে প্রণয় ও তার পেছন পেছনে গেল।
____________________________
–‘আপনার এমন করা কী ঠিক হয়েছে?

উদাস কণ্ঠে প্রণয়কে জিজ্ঞেস করলো সূচনা। প্রণয় বলেছে তাকে সবটা।শুরুতে মন খা/রাপ করেছিল সূচনা কারণ সে জানত না যে ইরার মুগ্ধ সাহেব ই প্রণয়ের আগত এই বন্ধু। মুগ্ধ যে আজকে বাসায় আসবে আর কেন আসবে তা সম্পর্কে কিছু ই জানত না সূচনা। তা নিয়েই মন খারা/প ছিল কিন্তু যখন জানল যে তাদের সম্পর্ক ঠিক করতে যেয়ে আরও বি/গড়ে গেছে তখন সূচনার মন আরও ছোট হয়ে গেছে। সময়টা এখন রাত আটটা প্রায়।অনেক খানি সময় কে/টে গেছে।মিহু ও চলে গেছে,সবকিছুর মাঝে ঠিকভাবে বসে কথা ও বলতে পারেনি দু দন্ড। ইরার রুম থেকে বেরোনোর পর মুগ্ধ কে জিজ্ঞেস করলেও মুগ্ধ প্রণয়ের কাছে কিছু বলেনি।তখনই চলে যেতে চাইছিল কিন্তু এই ভরদুপুরে বাসায় আগত কাউকে কী না খেয়ে যেতে দেয়া যায়? আর সেখানে মুগ্ধ কে তো দাওয়াত করে আনা হ’য়েছে।বেচা/রা চায় নি এভাবে আসতে কিন্তু ইসহাক সাহেব বারবার বলছিলেন দুপুরেই যেন আসে তাই প্রণয় ও এক প্রকার বাধ্য হয়ে মুগ্ধ কে দুপুরেই আসগে বলেছে না হয় বিকেলে আসত সে।ভদ্রতার খাতিরে থেকে গিয়েছিল মুগ্ধ।কোনো রকম দু দানা খেয়ে কাজ দেখিয়ে বেরিয়ে গেছে বাসা থেকে।সবার সামনে তাকে বারবার ‘কী হয়েছে?’ জিজ্ঞেস করাটা নেহাৎ বো’কামি মনে হয়েছে প্রণয়ের কাছে।তাই ঘা’টায়নি আর,মুগ্ধ বেরিয়ে যাবার পরপরই সে বেরিয়ে গেছে তার পেছন পেছনে। মুগ্ধ অবাক হয় নি তাকে দেখে, তবে কয়েক পল মৌন ব্রত পালন করেছে।অতঃপর বাইকে উঠতে উঠতে স্বাভাবিক স্বরে বলে-

–‘আয়..বাইকে ওঠ বলছি।

দুই বন্ধু বেড়িয়ে গেছে, বহুদিন পর একসাথে। সন্ধ্যার সময়টায় রোড ফা/ক ছিল না একদম।ব্রিজের সাইডে মুগ্ধ বাইক টা থামিয়েছে।মাঝে ব্যস্ত ভঙ্গিতে শো শো আওয়াজ তুলে ছুটে চলেছে একের পর এক গাড়ি।মুগ্ধ রেলিঙ ধরে দাড়িয়েছে।প্রণয় তার পাশে দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করে –

–‘এখানে কেন থামলি?

–‘কেন?কোলা/হল বেশি বলে?

–‘হ্যা।

–‘এত কোলা/হল, ভিড় ভাট্টা মধ্যে ও কিন্তু আমি একা ভাই।ধরে নেয় আমাদের আশেপাশে কেউ নেই।

–‘মনের শান্তি ই বড় শান্তি।

মুগ্ধ হাসতে হাসতে বলে –

–‘ হ্যা ঠিক বলেছিস,কিন্তু সেই শান্তির বড় অভাব ভাই।তুই তো ভালো করে জানিস,সেই শান্তির ছোট বেলা থেকেই তোর অভাব।

এবার প্রণয় ও হাসলো, বিষণ্ণ মুখে চেয়ে রইলো আকাশ পানে।

–‘এত ঝা/মেলা আমাট আর ভালো লাগছে না,নিতে পারছি না ভাই।

ভা’ঙা কণ্ঠে হঠাৎ বলে উঠলো মুগ্ধ।মুগ্ধর কাধ জড়িয়ে ধরলো প্রণয়। তার মনের অবস্থা সে জানে অথচ তার বোন ই বুঝল না আবার সে নাকি ভালোবাসে তাকে?

–‘শুনুননন

সূচনাার ডাকে খানিক হকচ/কিয়ে উঠলো প্রণয়।হক/চকানো কণ্ঠে ই জিজ্ঞেস করলো-

–‘এত চিৎ/কার কেন করছো?

–‘কতবার ডেকেছি তা শুনেছেন?

–‘সরি..খেয়াল করিনি।

–‘এতক্ষণ ধরে কী ভাবছিলেন?

–‘কিছু না।

–‘ হ্যা তা বলবেন কেন?

–‘রা/গ করছো?

–‘রা/গ করতে যাব কেন?বলবেন না বলেছেন বলবেন ই না, আমি তো আর আপনাকে জোর করতে পারবনা কিন্তু আপনি ঠিকই জোর করেন।হুহ।

প্রণয়ের এবার হাসি পেল খানিক।সে সোফায় বসেছিল আর তার সামনে দাড়ানো সূচনা। অন্য দিকে মুখ বা’কিয়ে দাড়িয়ে আছে সে।একটু সরে যেয়ে বসার জায়গা করে দিল প্রণয়। তারপর হাত দিয়ে ইশারা করল সূচনাকে। বললো-

–‘বসো।

সূচনা পূর্বের ন্যায় মুখ বা’কিয়ে বললো-

–‘বসব না।

–‘আরে বসো।

–‘আমি বসব না এখানে।

–‘তাহলে আমার কোলে বসো।কী বলো আসো।

চোখ মে/রে বললো প্রণয়।বিনা কোনো শব্দ প্রয়োগে ধ’প করে বসে পড়লো প্রণয়ের পাশে।তার দিকে ঘুরে
বসলো প্রণয়।আলতো স্পর্শে মুঠোবন্দি করলো সূচনার দু হাত।সূচনা কিছু টা অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো।এর মাঝে প্রণয় জিজ্ঞেস করলো-

–‘তুমি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছিলে কেন?

কণ্ঠ প্রগাঢ় প্রণয়ের।সূচনা থতমত খেয়ে গেল সাথে ভীতি সৃষ্টি হলো মনে।হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন করছে প্রণয়?

–‘এত অপ্রস্তুত হতে হবে না,ভ’য় পাচ্ছ কেন?বলো।

…..

–‘বলো..

–‘আ…আব্বুর কথায়।

–‘বিয়ে করেছো বাবার কথায় কিন্তু আমাকেই কেন বিয়ে করেছো সেটা বলো।

কয়েক মিনিটের নীরবতা অতঃপর সেই নীরবতা কে দূরে ঢে/লে দিয়ে সূচনা সহসা বলা শুরু করলো-

–‘ আপনার সাথে প্রথম দেখা যেদিন হয়েছিল সেদিন আমার কাছে আপনি ছিলেন সম্পূর্ণ অচেনা, অপরিচিত একজন কিন্তু দ্বিতীয় বারের দেখায় সে অচেনা বা অপরিচিত এর ভাবটা আসে নি।আপনার কথাগুলো সহজভাবে বোধগম্য হয়েছে।আপনি আব্বুর অনেক বেশি পছন্দের ও আর আব্বুর পছন্দের ওপর বা তার নেয়া সিদ্ধান্তে আমার সন্দেহ ছিল না তাই রাজি হয়েছি।শুরুতে দ্বিমত করেছি কিন্তু সেটা আপনাকে নিয়ে না, আমি এখনই বিয়ে করতে চাইনি।কারণ আমি ভেবেছিলাম আমি পারবনা সামলাতে,বিয়ে নামক এক বন্ধন,কত-শত দায়িত্ব এতকিছু নিতে পারবনা আমি তাই।কিন্তু…কিন্তু আপনি এই অব্দি আলহামদুলিল্লাহ ভালোভাবে চলছে সবকিছু।

–‘সবকিছু ভালোভাবে চলছে?

–‘চলছে তো।

–‘মেনে নিতে পারছো?

নীরবতা আবার,, কিন্তু টিক/ল না বেশিক্ষণ। সূচনা স্বাভাবিক ভাবে উত্তর দিল-

–‘ একটু একটু সমস্যা হচ্ছে কিন্তু আপনি সাহায্য করলে সেই সমস্যা ও আর হবে না।

–‘আমার একার চেষ্টায় হবে?

–‘একা কেন আমি ও করব।

–‘বেশ তবে,,চলো চেষ্টা করি।(চোখ মে/রে)

–‘ছি/হ।

–‘আরে মজা করছি কিন্তু আস্তে আস্তে হবে তো।

–‘আপনি একথা জিজ্ঞেস করেছেন কেন সেটা বলেন।

–‘এমনি।তুমি আমার কথাগুলো বুঝেছিলে কারণ বুঝতে এফোর্ট দিয়েছ বা মন দিয়ে শুনেছো কিন্তু ইরা মুগ্ধর কথাগুলো বুঝতে পারছে না।বোঝার চেষ্টাই করছে না।তার মতে সে যা ভাবছে বা দেখেছে একমাত্র সত্যি। কিন্তু সত্যি সেটা না,বোঝাবে কে?

–‘একটু সময় দিন, ধৈর্য ধরতে বলুন ভাইয়াকে। সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

–‘হুম।

–‘আচ্ছা ইরা আপনার বোন সেটা ভাইয়া আগে জানতেন না?

–‘না।মুগ্ধ আর আমি কলেজ থেকে একসাথে আছি।কিন্তু আমাদের মধ্যে পরিবার নিয়ে আলোচনা হত না।দুজনই পড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম।আমার বোন আছে সেটা জানত কিন্তু ইরাই যে আমার বোন তা জানত না।কয়েকদিন বলেছে তার একজনকে ভালো লাগে কিন্তু জিজ্ঞেস করলে বলত -‘এক তরফা ভাই ঔদিক থেকে সাড়া পাই তারপর বলব।মুগ্ধ ই কোনভাবে জানতে পেরেছে যে ইরা আমার বোন আর সেদিনই আমাকে জানিয়েছে।

–‘আপ/ত্তি জানালেন না কোনো?

–‘কারণ মুগ্ধ যে তাই, মুগ্ধর জায়গায় অন্য কেউ হলে জানাতাম কিন্তু মুগ্ধ কে আমার থেকে ভালো চিনে না কেউ।

–‘আচ্ছা।

–‘হুম।

–‘শুনুন আমার মাথায় বুদ্ধি এসেছে একটা।

–‘তোমার মাথামোটা মাথায় বুদ্ধি ও আসে?বাহ বাহ।

–‘অপমান করছেন?

–‘না তো। প্রশংসা করলাম।

–‘হুহ

–‘প্ল্যান বলো।

–‘বলবনা।

–‘বলবে নাকি?

প্রণয়ের চোখ রা/ঙানি তে দমে গেল সূচনা।মুখ ভার করে বললো-

–‘আরে বলছি বলছি।

#চলবে

( আসসালামু আলাইকুম।কমেন্ট চাইই,সবাই পরে চলে যায়, কমেন্ট করলে কী হয়🥺।দোয়া করবেন আমার জন্য।হ্যাপি রিডিং 💙।ফি আমানিল্লাহ।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here