প্রণয়ের সূচনা পর্ব -২২

#প্রণয়ের_সূচনা
#লেখিকা_Nazia_Shifa
#পর্ব_২২
____________________________
রুম জুড়ে নিরবতা,বিছানায় বসে আছে প্রণয়, তার কিছু টা দূরে দাঁড়িয়ে আছে ইরা আর সূচনা। বিগত বিশ মিনিট ধরে এই পরিস্থিতিতে ই আছে তারা।নিরবতার অবসান ঘটলো ইরার প্রশ্নে।

–‘ভাইয়া আমরা কী সত্যি সত্যি চলে যাব।

ইরার চাপা,ভারী কণ্ঠ। তার প্রশ্নের উত্তর দিল না প্রণয়।ইরা আবার প্রশ্ন করল-

–‘ভাইয়া আমরা কী আব্বুর,,,,

মুখের প্রশ্ন মুখেই থাকল ইরার।প্রণয় ঝট করে তাকালো তার দিকে। আঁখি জোড়া যেন জলন্ত তার,চোখ দিয়ে ই ভস্ম করে দিবে ইরাকে।ইরা কেঁপে উঠলো তার দৃষ্টি দেখে।সাথে সাথে পিছিয়ে গেল দু কদম। সূচনার আড়াল হলো না কিছু। সেই প্রশ্নের পর প্রণয়ের চোখমুখ একেবারে শক্ত, গম্ভীর রূপ ধারণ করেছে,ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছে সে। সূচনা অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো তার দিকে।ইরার মুখশ্রীতে ভ/য়ের ছাপ।ভীত মুখশ্রীতে বারবার আড় চোখে দেখছে প্রণয়কে। সূচনা বুঝে উঠতে পারলনা কিছু। ইরা তার বাবার কথা বলায় প্রণয়ের এমন দৃষ্টির মানে কী? এ পর্যন্ত প্রণয়ের মা/য়ের কথা শুনলেও বাবার কথা নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি,এ প্রশ্ন টা আগে থেকেই ছিল তার মনে, এবার গাঢ় হলো আরও।

মিসেস আফিয়া হন্তদন্ত হয়ে রুমে আসলেন।প্রণয়ের পাশে বসে তার হাত ধরে কড়া গলায় শোধালেন –

–‘কেউ কোথাও যাবে না।আমি এই বিষয়ে আর কোনো কথা শুনতে চাইনা।

সূচনা আর ইরা প্রণয়ের মুখ পানে তাকালো।মিসেস আফিয়া কাঁদতে কাঁদতে বললেন-

–‘তুই কী চাস আমি এখন তোকে অনুরোধ করি? আমি তাতেও রাজি কিন্তু আমার ছেলে মেয়েরা কোথাও যাবে না,আমি যেতে দিবনা।

প্রণয় নিশ্চুপ রইলো পুরোটা সময়। মিসেস আফিয়া একের পর এক কথা বলেই যাচ্ছেন।
_________________________________
–‘ আফিয়া তুমি কি তোমার সিদ্ধান্তেই অটল থাকবে?তারা সত্যি আসবে না? ব্যাপারটা কেমন দেখায় না?

বিছানায় বসে ছিলেন মিসেস আফিয়া,তখনই প্রশ্ন টা করলেন ইসহাক সাহেব। মিসেস আফিয়া রুদ্ধ কণ্ঠে জবাব দিলেন –

–‘ আমার মেয়ের বিয়ে, তার বিয়ে তে তার মা-বাবা,ভাই-ভাবি,বোনরা উপস্থিত আছি সেটা কি যথেষ্ট না?

–‘তবুও।

–‘আমি আর এ বিষয়ে কথা বলতে চাইনা,তাদের আনা হলে তারা আবার কথা বলবে আমি চাইনা ওরা আর কোনো কথা শুনুক।এই ভুল কয়েকবার করেছি আর না।

ইসহাক সাহেব বললেন না আর কিছু। কিন্তু মনে মনে খুশি হলেন। তার বোনের ছেলে মেয়ে প্রণয় আর ইরা। আজকাল এমন কয়জন স্ত্রী আছে যারা নিজের স্বামীর মৃত বোনের ছেলেমেয়েদের নিজের সন্তানের মতো আগলে রাখে।সত্যি ই তো ওনার ভাগ্য ভালো যে মিসেস আফিয়া কে নিজের স্ত্রী হিসেবে পেয়েছেন।দাড়ানো ছিলেন উনি,মিসেস আফিয়ার পাশে যেয়ে বসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন একহাতে।মুচকি হসলেন দুজনই।
_____________________________
দিনা আর তিথি গোমরা মুখ নিয়ে বসে আছে প্রণয়ের রুমে।বিছানার দুপাশে দুজন দু দিকে মুখ ঘুড়িয়ে রেখেছে। মূলত রা/গ করেছে তারা প্রণয়ের সাথে,তার চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে। ক্লান্ত শরীর নিয়ে রুমে ঢুকতেই দর্শন হলো গোমরা মুখ দু’টো।ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইলো প্রণয়।সে জানে তাদের এখানে এভাবে বসে থাকার কারণ।আজকে প্রথম না, যখন যখন এরা দু’জন প্রণয়ের ওপর রা/গ করেছে তখন তখনই এভাবে তার রুমে গোমরা মুখ নিয়ে বসে থেকে রা/গের প্রকাশ করেছে।প্রণয় তাদের সামনে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো-

–‘ কী হয়েছে মুখ এমন পে/চার মতো করে রেখেছিস কেন?এমনিতেই তো দুটা দেখতে পে/ত্নীর মতো এখন আরও ভয়ংক/র লাগছে।

তিথি কথা বললো না, দিনা ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বললো –

–‘ বাই এনি চান্স তুই যদি আমার ছোট হতি না, তাহলে দিনের মধ্যে একবার হলেও কানের নিচে দিতাম তোর।শুধু ছোট দেখে কিছু বলতে পারিনা।নিজেকে একেবারে মহান মনে করে, সব কিছু সেক্রি/ফাইস করে দিবে মানুষের জন্য, মানুষের ভালো চিন্তা করে।এহহহ আসছে,, শখ কত মহান সাজতে আসে।

দিনার কথা শুনে নিঃশব্দে হাসলো প্রণয়। দুজনের মাঝে যে ফাকা জায়গাটুকু সেখানটা দখল করে বসে পড়ল সে।দিনা আর তিথির দু হাত নিজের হাতের মাঝে নিয়ে কোমল স্বরে বললো-

–‘যাইনি তো, যাবনা।কিন্তু তোরা এমন ভাব করছিস যেন চলে গেছি।

–‘ আর কখনো বলবেনা যাওয়ার কথা, প্রমিজ করো।

প্রণয়ের সামনে আরেক হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো তিথি। প্রণয় হাতের ওপর হাত রেখে বললো-

–‘প্রমিজ বলব না আর।

দুইজন দুইদিক দিয়ে জড়িয়ে ধরলো প্রণয়কে।

–‘আমরা বাদ গেলাম কেন?

দরজার কাছে দাড়িয়ে আছে মিহু আর ইরা।অভিমানী কণ্ঠে কথাটুকু বললো মিহু।তিনজন মুচকি হেসে ইশারা করল তাকে।তারাও এসে জড়িয়ে ধরল দুদিক থেকে। ভাই বোনের সুন্দর, মিষ্টি এক মূহুর্তের সাক্ষী হলো দরজার আড়ালে দাড়ানো সূচনা। মিহু, ইরার পেছনে পেছনে ই এসেছিল সে।অথচ তাদের সে খেয়াল ই নেই।সূচনা মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইলো তাদের দিকে। কত সুন্দর মূহুর্ত।সে এই মুহূর্ত পায়নি নিজের আঠারো বছরের জীবনে,সেটা নিয়ে আক্ষেপ ছিল তার এক আকাশ সমান। কিন্তু কী করার,তবে এই মূহুর্তটা দেখতে ভালো লাগছে তার।
______________________________
সন্ধ্যা সাতটা। ড্রয়িং রুমের এক পাশ টা বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে।মেহেদীর সমস্ত কার্যক্রম এখানেই হবে। লাল,গোল্ডেন আর কালো রঙের ম্যাট বিছানো ফ্লোরে। তার পেছনে লাল রঙের নেটের উপরে লাল,কমলা,সবুজ রঙের আর্টিফিশিয়াল ফুল,লতা-পাতার ছড়াছড়ি। একপাশে হলুদ রঙা আর্টিফিশিয়াল সূর্য মুখী ফুল নিচ থেকে উপরে উঠে গেছে। গোল্ডেন রঙের মরি/চ বাতি ও জ্ব/লছে।মাঝ বরাবর দু পাশে হলুদ রঙের ময়ূর এর পাখার মতো কিছু, যার মধ্যিখানে বসে আছে দিনা।টকটকে লাল রঙের শারারা তার পড়নে যাতে গোল্ডেন রঙের কারুকার্য শোভা পাচ্ছে। অর্নামেন্টস এর মধ্যে আছে কানে দুল আর মাথায় টিকলি মতো।যেন একদম লাল পরীর মতো লাগছে।তার দু হাতে মেহেদি পড়িয়ে দিচ্ছে দুজন-ইরা আর তৃণা। তৃণা দিনার বান্ধবী।দিনার বন্ধু-বান্ধব খুব একটা নেই। দুই একজন ই আছে আর তারাই নাকি ক্লোজ ফ্রেন্ড তার।তিনজন এসেছে তারা তৃণা সহ। বাকি দুজন হচ্ছে মুনতাহা আর তাসনিন। থিম অনুযায়ী সবার পড়নেই সবুজ রঙের লং কুর্তি সাথে ডিপ পিংক কালারের সালোয়ার আর ওড়না। বাদ যায়নি সূচনা ও। সবার মতো তার পড়নেও সবুজ রঙের লং কুর্তী,ডিপ পিংক কালারের সালোয়ার আর ওড়না। চুল গুলো খোঁপা করা তাতে বেলী ফুলের গাজরা।সাজার ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন, কন্সিলার,হাইলাইটার সবই স্থান পেয়েছে মুখে।তবে নরমাল সজ্জা,অত ভারি না।পো/ড়া জায়গায় ফো/সকা পড়ে গেছে এখন।কোথাও একটু লাগলেই জ্ব/লে উঠছে।তাই হাতে মেহেদি দিবে না বলেই ঠিক করেছে সে। রুম থেকে বের হবার আগে মিসেস দিশার সাথে কথা হয়েছে সূচনার।বিয়ের দিন আসবেন তারা।এই কয়দিনে ইরাদ সম্পর্কে কোনো কথা সে বলেনি,না জিজ্ঞেস করেছে তার কথা,আজকেও করেনি। ইরাদ ও চেষ্টা করেনি কিছু করার,হয়তো করেছে,হয়তো না।কে জানে? সে খবর নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। সেই বিকেলের পর প্রণয়কে দুই নয়নে দেখা হয়নি আর। তন্ময় এসেছে আজকে, চট্টগ্রাম গিয়েছিল সে।চট্টগ্রাম থেকে সোজা এখানে এসেছে। ফ্রেশ হয়ে খেয়ে -দেয়ে এখন প্রণয়ের সাথে। আজকেও এসব নিয়ে আলোচনা করতে হবে?আশ্চর্য, তার বোনের বিয়ে অথচ সে অফিসের কাজ নিয়ে পড়ে আছে।অদ্ভুত মানুষ। মিসেস আনহা চলে গেলেও নিহা আর নিষাদ কে আবার রেখে গিয়েছেন। তিথি,মিহু,মুনতাহা,তাসনিন,তনয়া, নিহা আর ফিহা সবাই দিনার সাথেই আছে।সবাই ব্যস্ত মেহেদী নিয়ে। সূচনা একবার সেখানে গিয়ে আবার চলে এসেছে। নিহার মুখ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে সে বিরক্ত।আশ্চর্য, বিরক্ত হলে আসতে কে বলেছিল, ঢং।মনে মনে ডজন খানেক কথা নিহাকে বলেছে সূচনা।ফিহা আর তনয়া দুজন ই মিষ্টি, কিউট একেবারে। তনয়া ক্লাস নাইনে আর ফিহা এবার এসএসসি দিয়েছে।নিহা অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ছে,কিছুদিন পর ই হয়তো তার ফাইনাল পরীক্ষা, কথায় কথায় মিসেস আফিয়ার কাছ থেকে শুনেছিল সূচনা। নিষাদ,, এই ছেলেটাকে কেন যেন সূচনার কাছে ভালো ঠেকছে না। তার চাহনি কেমন যেন অদ্ভুত, গায়ে কা/টা দেয়ার মতো। মেয়েরা নাকি দৃষ্টি দেখেই বুঝতে পারে কে তার দিকে কোন নজরে তাকাচ্ছে। সূচনার কাছে এই মূহুর্তে তেমনই মনে হচ্ছে। নিষাদ এসেছে সন্ধ্যার একটু আগে,অফিস শেষ করে। সূচনার সাথে এখন ও তার কথা হয়নি তবে চোখাচোখি হয়েছে কয়েকবার। আসার পর থেকেই ড্রয়িং রুমে বসেছিল নিহার সাথে। কাজের জন্য রান্নাঘর থেকে ড্রয়িং রুমে কয়েকবার আসতে হয়েছে সূচনাকে। অপ্রত্যাশিত ভাবে দুবার চোখাচোখি হয়ে গেছে দুজনের।সূচনা অপ্রস্তুত হয়ে সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিলেও এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল নিষাদ,একটু নড়চড় করে নি। কোনো অপ্রস্তুত ভাব ও ছিল না তার মধ্যে।
___________________________________

–‘স্যার তার সন্ধান পাওয়া গেছে অবশেষে।

তন্ময়ের কথা শুনে বা’কা হাসল প্রণয়। জিজ্ঞেস করলো-

–‘ এতদিন কোথায় ছিলেন জনাব?

–‘ দেশের বাইরে ছিলেন, দেশে এসেছেন দুই বছর আগে মিরপুর ****** হসপিটালে ছিলেন, দেশে এসেই নাকি হসপিটাল চেঞ্জ করেছেন।বর্তমানে চট্টগ্রামে **** হসপিটালে আছেন।

–‘ দ্যাট মিন’স এখন আবার চট্টগ্রাম উড়া/ল দিতে হবে।

–‘জ্বি স্যার কিন্তু এখন তো যাওয়া সম্ভব না আর ওনার কেস টা টাফ। একটু সাবধানে, ভেবে চিন্তে করতে হবে।

–‘ তুমি জানো তোমার কী করতে হবে,এম আই রাইট?

–‘ জ্বী স্যার।

–‘গুড। আর শোনো ওই প্রেজেন্টেশন টা রেডি তো? মাত্র দুইদিন সময় আছে হাতে।

–‘ জ্বি স্যার রেডি আছে।

–‘ পারফেক্ট, এখন চলো।

–‘জ্বি স্যার।
________________________________
–‘তুমি আমার মেহেদী নষ্ট করলে কেন?

ক/র্কশ গলায় ইরাকে কথাটা বলল নিহা। দিনার মেহেদী দেয়া শেষ হলে নিহা নিজেই আসে ইরার কাছে মেহেদী দিতে। ইরা রাজি হতে চায়নি আবার না ও করতে পারলনা।মেহেদী দেয়া শেষ হলে সেখান থেকে উঠতেই নিলেই ইরার মনে হলো কেউ তার ওড়না টেনে ধরেছে যার দরুন হোঁচট খেয়ে পড়তে পড়তে বাঁচে ইরা।কিন্তু তার হাত যে কোনোভাবে ই নিহার হাতে লাগেনি সে সম্পর্কে ও নিশ্চিত ইরা।তাহলে ন/ষ্ট হলো কীভাবে?

–‘কী হলো কথা বলছ না কেন? ইচ্ছে করে ই করেছ তাই না? একটু মেহেদী পড়তে এসেছি,দিয়ে দিয়েছ আবার ন/ষ্ট ও করে দিলে।দিনাপু তুমি কিছু বলবে না।

কথার সাথো ন্যা/কা কান্না জুড়ে দিল নিহা।দিনা কিছু বলার আগেই মিহু বললো-

–‘কী বলবে? এমন ন্যা/কা কান্না করছ কেন? এটা অরগ্যানিক মেহেদী নষ্ট হয়েছে মু/ছে ঠিক করে দিবে। এত সিন ক্রিয়েট কেন করছ? ইরা তো ইচ্ছে করে করেনি।

–‘তুমি মাঝে কথা বলছ কেন?

–‘ মুখ আছে কথা বলবই।

–‘তোরা থাম প্লিজ।ইরা তুই রুমে যা এখন অনেকক্ষণ বসেছিলি এবার একটু হাটাহাটি কর আর নিহা তুই লেপ্টে যাওয়া জায়গাটুকু টিস্যু দিয়ে মুছে ফেল তৃণা ঠিক করে দিবে। দয়া করে কাহিনি করিস না আর নিহা।(দিনা)

–‘দিনাপু তুমি আমাকে কেন বলছ?

–‘দিনাপু কারো বোধহয় ঝ/গড়া করার শখ জেগেছে।
চুপ থাকতে বলো না হয় ঝ/গড়া লাগতে সময় লাগবে না।(মিহু)

নিহা কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু বলতে পারল না।রা/গে ফুসফুস করতে চলে গেল।
_______________________________
–‘তুমি হাতে মেহেদী লাগাও নি কেন?

দিনার মেহেদী কার্যক্রম শেষ হয়েছে একটু আগেই।রুমে আসতেই প্রশ্ন করল প্রণয়।সূচনা মুখ বা’কিয়ে বললো-

–‘সারা দিনে কোনো খবর ছিল না আর এখন আসছে মেহেদী লাগাও নি কেন? হুহ।

প্রণয় হাসল কিঞ্চিৎ ঠোট প্রসারিত করে। বললো-

–‘ কেউ কি আমার এটেন্শন চাচ্ছে। এখন ফ্রী আছি সারারাত এটেন্শন দিব। চাইলে আসতে পারে।

–‘বয়েই গেছে আপনার এটেন্শন পেতে।

–‘প্রশ্নের উত্তর দাও।মেহেদী লাগাও নি কেন?

–‘হাতে ফোস/কা পড়েছে।

–‘দেখি

সূচনার হাত ধরতে গেলেই হাত সরিয়ে নিল সূচনা।বললো-

–‘দেখবেন কেন?কিছু হয়নি, বেশি লাগেনি।

–‘ অভিমান করেছে দেখা যায়। কাহিনি কি?

–‘কিসের অভিমান? কিসের কাহিনি?

–‘জানো তো মানুষ তার সাথেই অভিমান করে যার ওপর তার অধিকার থাকে।অবশ্য আমার ওপর তোমার অধিকার আছে সম্পূর্ণ,অধিকার আদায় করে নিলেই হয়।

জবাবে কিছু বলল না সূচনা। আসলেই তো সে কী সত্যি ই অভিমান করেছে?কিন্তু কেন?অধিকার বোধ থেকে?

ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটা মেহেদীর কোণ বের করে সূচনার সামনে বসে পড়লো প্রণয়।সূচনার ডান হাতটা ধরে বললো-

–‘দেখি হাতটা।

শক্ত করে ধরেছে প্রণয়, এবার আর ছাড়াতে পারলনা সূচনা।ফোন বের করে গুগল থেকে মেহেদীর ডিজাইন বের করে চুজ করল দুইটা।
.
প্রায় এক ঘন্টা লাগল প্রণয়ের দুই হাতে মেহেদি পড়াতে। পুরোটা সময় সূচনা অবাক চোখে তাকিয়ে ছিল প্রণয়ের দিকে।বাম হাতের ডিজাইনটুকু পো/ড়া জায়গাটুকু স্পর্শ করে নি।তার নিচেই ইতি ঘটেছে ডিজাইনের।সূচনা জিজ্ঞেস না করে পারলোনা। অবাক কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো-

–‘আপনি মেহেদী দেয়া শিখলেন কিভাবে?

–‘ছোট বেলায় ইরাকে দিয়ে দিয়েছিলাম একবার,তখন অবশ্য অত পারতামনা।তার পরের ঈদে ইরাকে দিয়ে দেয়ার পরে,দিনা ও জেদ ধরল, ওকে ও দিয়ে দিয়েছি। এরপর থেকে প্রতি ঈদে একটু হলেও ওদের হাতে আমার মেহেদী দিয়ে দিতে হয়।

–‘আচ্ছা, আমি দিতে পারিনা।

–‘সমস্যা নেই,,এবার থেকে তোমাকেও দিয়ে দিব।এখন চুপ করে বসে থাকো,একটুও নড়বে না,রং গাঢ় না হলে খবর আছে।আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।

ল/ক্ষী মেয়ের মতো মাথা নাড়ালো সূচনা। চলে গেল প্রণয়। সূচনা হাসছে, কোনো এক অজানা কারণেই খুশি লাগছে তার।নতুন অনুভূতি একেবারে, নিজের স্বামীর হাত থেকে মেহেদী পড়েছে সে।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here