প্রথম_প্রতিশ্রুতি পর্ব ৬

#প্রথম_প্রতিশ্রুতি
পর্ব—-০৬(!!ধামাকা এপিসোড!!)
মূল ভাবনা।কাহিনী।নির্মাণ : প্রদীপ চন্দ্র তিয়াশ।

একটু পরে প্রথম এক গ্লাস পানি নিয়ে ছুটে আসলো।প্রতিশ্রুতি পানির গ্লাসটা হাতে নিয়েই ঢকঢক করে পুরোটা সাবাড় করে দিলো।তারপর ধীরে ধীরে সোফার ওপরে গিয়ে বসে ….

—আচ্ছা,কি হয়েছে এবার তো বলো!?তোমার মাথায় আঘাত লাগলো কিকরে….???কে করেছে এই অবস্থা তোমার?

—আমি জানি না!

—জানো না,জানো না মানে কি….??

—আমি সত্যিই জানি না,,

—কিন্তু কেউ তোমাকে কেন মারতে যাবে… আর বাঁচালোই বা কে তোমায়..??আমি বলতে চাইছি তোমার চিকিৎসা কে করলো।

—নির্জন আমায় দেখতে পেয়ে ওর বাসায় নিয়ে যায়…সেখানেই ট্রিটমেন্ট হয় আমার।

(প্রতিশ্রুতির প্রাক্তনের নাম নির্জন,গত পর্বে তাড়াহুড়ো করে লিখতে গিয়ে নাম বিভ্রাট করে ফেলেছি,একারনে আন্তরিক দুঃখিত)

(নির্জনের কথা শুনে যেন অবাক হলো প্রথম…!)

—নির্জন…!!!নির্জন কে….??!

–ইস,,মুখ ফসকে এভাবে নির্জনের নামটা বেরিয়ে আসা ঠিক হয়নি।কিন্তু এখন ওর কথা চেপে গেলে প্রথম আরো বেশী করে সন্দেহ করবে হয়তো(মনে মনে ভাবলো প্রতিশ্রুতি)

—কি হলো বলো….???

—নির্জন আমার এক পূরনো বন্ধু।মাঝখানে দীর্ঘদিন পরিচয় ছিলো না ওর সাথে।আজকে বহুবছর পরে দেখা হলো।ওই আমায় উদ্ধার করে ওর বাসায় নিয়ে যায়।

—ও আচ্ছা…বুঝতে পারলাম।কিন্তু তুমি কখনো আমায় সেই ভদ্রলোকের কথা তো বলো নি।

—বলি নি, কারণ বলার প্রয়োজন হয় নি।তাছাড়া আমি নিজেও ভুলেই গিয়েছিলাম ওকে। মাথায় ছিলো না।

—আচ্ছা,যা হয়েছে হয়েছে।তুমি ভালোয় ভালোয় বাসায় ফিরে এসেছো এই অনেক… এবার বেডরুমে চলো রেস্ট নেবে।

প্রথম প্রতিশ্রুতিকে নিয়ে বেডরুমে চলে গেলো।তারপর ওকে বিছানায় শুইয়ে দেয়।প্রতিশ্রুতি এখন পুরোপুরি সুস্থ বলা যায়।এদিকে তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়।

একটু পরে নির্জনের কল আসলো প্রতিশ্রুতির ফোনে…এমনিতেও প্রথম নেই এখন রুমে,,তাই নির্ধিদ্বায় ফোন রিসিভ করলো প্রতিশ্রুতি।।

—বাসায় পৌঁছেছো তো ঠিকমতো??

—হ্যাঁ,পৌঁছেছি।

—শরীরের কি অবস্থা এখন তোমার….??

—এইতো,মোটামুটি।অনেকটাই ভালো।

–কি করছো এখন….,,খাবার দাবার খেয়েছো কি??

–না এখোনো খাইনি…প্রথম আই মিন আমার হাসবেন্ড আর ওর ছোট ভাই ওরা দুজন রান্না করছে।

—বাহহ!ভালোই তো।ওরা তোমার খুব টেক কেয়ার করে তাই না….??

—হ্যাঁ,করে।আচ্ছা তুমি কোথায় এখন… বাসায়!??

–নাহ!আমি অফিসে আছি।একটু পরে বাসায় ফিরবো।

—ঠিক আছে,কাজ শেষ করে বাসায় যাও… আমি দেখি ওদের কতোদূর হলো।

—ওকে।গুড বাই।টেক কেয়ার।

ফোনটা রেখে কিচেনের দিকে গেলো প্রতিশ্রুতি!!ওদের রান্নাবান্না কমপ্লিট হয়ে গেছে ইতিমধ্যে!!সবাই খেয়ে দেয়ে যে যার রুমে চলে যায়।।সার্থক ওর ঘরে আছে….এদিকে প্রথম আর প্রতিশ্রুতি ওদের ঘরে।তখন রাত দশটা ওভার।

—তুমি কিন্তু আমাকে সেই জিনিসটা শেখালে না…??

—কোন জিনিসটা…..??

—আরে ঐ যে সেদিন বাসর রাতে তোমায় যেটা জিজ্ঞেস করেছিলাম।

—ওহ!মেয়েদের সন্তান কিকরে হয় তাই তো…??(হেসে….)

—হুম।

—কিকরে শেখাতাম…আপনি তো নিজেই আমাকে কথা শুনিয়ে উঠে গেলেন।

—ওটা তো লজ্জার কারণে বলেছিলাম…

—তো আজ কি লজ্জা করছে না….???

—হ্যাঁ,করছে তবে কম। একটু একটু….

—আপনি আমার সাথে মজা করেছেন তাই না। আমি জানি আপনি সব জানেন…সব বুঝতে পারেন শুধু শুধু বোকা বানালেন আমায়।

—নাহ!বিশ্বাস করো…. আমি কিচ্ছু জানি না।আর তোমাকে বোকা বানানোর কোনো ইচ্ছে নেই আমার।

—সত্যি, বলছেন….. আমার কিন্তু বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে!

—হ্যাঁ,সত্যি বলছি।

—ঠিক আছে,তবে শেখাচ্ছি …..

এই বলে প্রতিশ্রুতি ঝপ করে প্রথমের ওপরে উঠে পড়লো।ভয়ে যেন প্রথমের কাঁচুমাচু অবস্থা…

—কি হলো এতো ভয় পেলে চলে…

–আমার বুক কাঁপছে…প্লিজ ছেড়ে দাও আমায়।

—নাহ!আজকে আর ছাড়ছি না আপনাকে।আজকে আমি শিখিয়েই ছাড়বো।আর শুধু শেখাবো না… আজকে আপনাদের সন্তানের…….থাক….যাজ্ঞে সে কথা।

প্রতিশ্রুতি প্রথমের শার্ট টা খুলে ফেললো.. এরপর ওর মুখের কাছাকাছি গিয়ে ঠোঁটের ওপরে একটা চুমু দিলো….যে পুরুষ কোনো মহিলার সংস্পর্শে এতোটা নাজেহাল হয়ে পড়ে সে আর যাই হোক রেপ করতে পারে না।তাও আমার সিরিয়াল রেপিস্টের মতো কিছু।এটা অসম্ভব।যাই ঘটে যাক না কেন প্রথমের ওপর থেকে সব সন্দেহ যেন দূরীভূত হয়ে যাচ্ছে প্রতিশ্রুতির।

প্রথমের লজ্জা আর ভয় কেটে যাচ্ছে ধীরে ধীরে….প্রতিশ্রুতি দুহাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো নিজের স্বামীকে…তারপরে তার মাথাটাকে চেপে নিজের গলার অঞ্চলে সাথে মিলিয়ে একাকার করে নিলো!!প্রথম একটা চাদর টেনে নেয় ওদের দুজনের ওপরে।

এরপরে আর কারো মুখ থেকে কোনো কথা বেরোলো না…শুধু ভালোবাসার আদান প্রদানের পালাবদল চলতে থাকে…তার রেশ ধরে মাঝে মাঝে নরম কাঠের বিছানাটা আন্দোলিত হচ্ছিল!!তার সাথে সাথে দুজন নরনারীর নিঃশ্বাসের শব্দ।।

(এরপর আর কি হয়েছে না হয়েছে পাঠকরা নিজ দায়িত্বে বুঝে নেবেন….)



রাত প্রায় একটা।হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো প্রতিশ্রুতির।পাশ ফিরেই দেখে প্রথম নেই বিছানায়।বুকটা যেন ধরফর করে উঠলো তার।

—কি হলো ব্যপারটা,এতো রাতে প্রথম কোথায় গেলো!??বাথরুমে গেলেও ওতো একা যায় না কখনো।

লাইটটা অন করে চারদিক খুঁজতে লাগলো প্রতিশ্রুতি।ঠিক তখন একটা ফোনকলের মৃদু আওয়াজ আসলো।এটা তো প্রথমের ফোনের রিংটোন মনে হচ্ছে। তার মানে ওর ফোন ঘরেই আছে।

ফোনটা আর কোথাও না,প্রথমের বালিশের নিচেই ছিলো।তাই শব্দটা স্পষ্ট আসছিলো না।

কিন্তু এতো রাতে প্রথমকে কে আবার ফোন দিলো, কি এমন কথা আছে তার ওর সাথে… তাও এতো রাতে। কৌতূহল বশত ফোনটা রিসিভ করে প্রতিশ্রুতি।ওপাশ থেকে একটা সুপরিচিত কন্ঠ ভেসে আসলো তার কানে…

—কি হলো প্রথম , ফোন ধরতে এতো দেরী হলো কেন …..????

কন্ঠস্বরটা শুনে যেন মাথায় বাজ পড়লো প্রতিশ্রুতির… নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না সে।কারন আওয়াজটা আর কারোর নয় নির্জনের ছিলো!!

তার মানে নির্জন আর প্রথম এরা একে অপরকে চেনে…😱কিন্তু সেটা কিকরে সম্ভব হতে পারে…!? আর ওরা একে অপরকে চিনবেই যখন দুজনের কেউ স্বীকার করলো না কেন সেটা????কি এমন সম্পর্ক আছে ওদের দুজনের ভেতর…????

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here