#প্রাপ্তি____(০৫)
____🍂___________
অন্ধকারাচ্ছন্ন রুমে একাকী নিঃচুপে বসে আছে হুমায়রা। মনে হাজারো জল্পনা-কল্পনা। কত কি ভেবে চলেছে। হুমায়রার ভাবনার বিরাট একটা অংশ হচ্ছে হেমন্ত নামক সুদর্শন শুভ্র পুরুষ। যার নিখুঁত সৌন্দর্য হুমায়রা মানষপটে আকিবুকি দিচ্ছে। মনে হচ্ছে কে যেন বলে চলেছে, পাখি! ও পাখি, পাখি। এক সময়ের বিরক্তির সম্বোধন হুট করেই ভালো লাগতে শুরু করেছে হুমায়রার। ইচ্ছে হচ্ছে যদি আবারও একটু ডাকতো। হাহ্! সেকি হয়!
শব্দ করেই এলেন মেয়ের রুমে। মূলত নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে তার সশব্দে আসা। বিছানার এক কোনায় মেয়ের কাছাকাছি বসলেন। মায়ের আগমনে হুমায়রার মধ্যে কোন হেলদোল দেখা গেল না। আগের ন্যায় চুপচাপ বসে আছে। যেন গভীরভাবে কিছু ভেবে চলেছে। দৃষ্টি তার জানালা পেড়িয়ে শূণ্য অন্ধকার গগনে। একাকিত্বের অবসান ঘটাতেই বোধহয় হালিমা খাতুন বলে উঠলেন, “কি হয়েছে মা? মন খারাপ!”
“না আম্মু, আমি ঠিক আছি।”
“তবে ঘর অন্ধকার করে একা বসে আছিস কেন?”
“অন্ধকার ভালো লাগছে, তাই।”
“অন্ধকারও বুঝি কারও ভালো লাগতে পারে? আজ শুনলাম।”
“আগে যেহেতু শুননি তবে আজ শোন। নিজেকে জানা বোঝার জন্য একটু অন্যরকম পরিবেশ দরকার বুঝলে? শব্দ বিহীন অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশটাই বেশি প্রযোজ্য এক্ষেত্রে। নিজেকে জানা বোঝার জন্য একান্তে নিজের সাথে কিছু সময় কাটাতে চাইছি। বুঝেছো আম্মু?”
“বুঝলাম। তা কি জানলে নিজেকে?”
“অনেক কিছুই। জানো আম্মু? আমরা অনেক সময় বিভিন্ন সমস্যার জন্য বিজ্ঞ ব্যাক্তিগনের স্বরণাপন্ন হয়। তাদের সান্নিধ্য পেতে চাই। নিজের সমস্যাগুলো তাদের বলি। খুব করে চাই সমস্যার একটা সুন্দর সমাধান বের করুক। নতুবা চাই আমাদের আপনজনের সান্নিধ্য পেতে। মন খারাপে এক্সট্রা কেয়ার করুক। পাশে থাকুক। পাশে না থাকতে পারলেও দুর থেকে খোঁজখবর নেক। বলো চাই না?”
“হ্যাঁ চাই তো। খুব করেই চাই। আপনজনের সান্নিধ্য মন খারাপের যেমন অবসান ঘটাই তেমনি মন মেজাজ ফুরফুরে রাখে।”
“হুট করেই নতুন কিছু আবিষ্কার করলাম। বুঝতে শিখলাম সবসময় মন খারাপে আপনজনের কাছে না যাওয়াই উচিত। মাঝেমধ্যে মন খারাপের কারন নিজের উদঘাটন করা উচিত।”
“বুঝলাম না মা।”
“আচ্ছা, বুঝিয়ে বলছি। হুট করেই তোমার মন খারাপ হলো কিন্তু তুমি যে বা যার সঙ্গ পেতে চাচ্ছো হোক ব্যস্তায় বা ইচ্ছায় সে তোমাকে সঙ্গ দিতে পারছে না। তখন তোমার মনক্ষুন্ন হবে। খারাপ লাগার পরিমানটাও বহুগুণে বেড়ে যাবে। তাই আমি ভেবেছি, মাঝেমধ্যে খারাপ সময়ে নিজেকে নিজে সময় দিবো। নিজেকে জানবো। কি করাণে বিষণ্ণতা সেটাও বুঝতে পারবো। নিজেকে জানা এবং বোঝার জন্য একাকিত্বই শ্রেয়। তাই আমার মনে হয়, মাঝেমধ্যে নিরিবিরি পরিবেশে নিজের সাথে নিজের কথা বলা উচিত। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। অন্যের অনুগ্রহ থেকে মুক্ত থাকার অনেকটা ভালো উপায়।”
“হঠাৎ এতো বড় বড় কথা বলছিস কেন? তোর কোথাও অযত্ন অবহেলা হচ্ছে? বল?”
হুমায়রা লক্ষ্য করলো তার মা অভিমান করেছে। উহু একটু না অনেক খানি। হুমায়রা আলতো হাসলো। এতোক্ষণ একভাবে কথা বলায় গ’লা শুকিয়ে গিয়েছিল। ঠোঁট ভিজিয়ে বলল, “রেগে যাচ্ছো কেন? আমি শুধু তোমায় ব্যাখাটা দিলাম। এইযে কিছুক্ষণ একা কাটিয়েছি বলেই না এত সুন্দর একটা বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারলাম। তবে আমার অবগত বিষয় আপাতত জীবনে ট্রাই করবো না।”
“কেন? কেন করবি না? ক্রিয়েটিভ কিছু ভেবে ফেলেছেন কেন ট্রাই করবেন না?”
“আহা! আম্মু তুমি আবারও রেগে যাচ্ছো?”
“না রাগবো কেন? হাসিখুশি থাকা উচিত। মেয়ে আমার বড় হয়ে গেছে। একাকী কত কি ভেবে ফেলছে। এখন আর মাকে দরকার পড়ে না।”
ধপাস করেই মায়ের কোলে নিজের মাথাটা রাখলো হুমায়রা। বলল, ”তুমি আছো না। আমার মানসিক শান্তি। আর কি চাই বলো? তুমি আব্বু, মিনহাজ তোমরা থাকতে কষ্ট কিসের বলো? শুধু ওটুকু চিন্তা করলাম। এই যা। তবে আমার ভাবনা কিন্তু খারাপ না। সেটা বিশ্বাস করি। যাদের তোমার মতো মানসিক শান্তির অভাব তাদের জন্য কথাগুলো খুবই কার্যকরি।”
“হুম, বুঝলাম। মেয়ে আমার বড্ড বড় হয়ে গেছে। জামাই বাড়ি পাঠানোর সমস্যা হয়ে গেছে। ওনাকে বলি ছেলে খোজ।”
“মোটেও না। আমি তোমার থেকে কোথাও যেতে চাই না আম্মু।”
শক্ত করে আকড়ে ধরে মাকে। হালিমা খাতুনেরও চোখে ভিজে। ইদানিং এসব ভাবলেই তার মুখখানা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। নানা চিন্তা মাথায় ঘোরে। বহুক্ষণ চলে মা-মেয়ের আদুরে কথোপকথন। যেন জান্নাতের সুখ নাযিল হয়েছে ইটপাথরের তৈরি ওই কাঙ্খীত কামরাতে।
___🍂______________
“হেমন্ত তুমি সিরিয়াস যা বলছো? আই মিন ভেবে বলছো তো?”
“মামনি আমি একশো পারসেন্ট সিরিয়াস এ বিষয়ে ইনশাআল্লাহ।”
“তুমি হামিদুর সাহেবের মেয়েকে বিয়ে করতে চাও?”
“হ্যাঁ।”
“তোমাকে কয়টা কথা বলি। মন দিয়ে শোন।”
“বলো।”
“তুমি উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। দামি গাড়ি বাড়িতে থাকা তোমার অভ্যাস। ব্রান্ডের পণ্য না হলে তোমার পছন্দ হয় না। আমি মা, তোমার আমি চিনি। তোমার বিষয়ে সব খবরই আমার কর্ণগোচর হয়। হামিদুর রহমান মধ্যম আয়ের একজন মানুষ। যথেষ্ট ভদ্রলোক। পরিবারের বাকিরাও তাই। মেয়েও ভালো। খারাপের কিছু নেই। তবে তারা আমাদের সাথে যায় না।”
“মামনি…”
“আগে আমার কথা শোন। পরে তুমি বলবে। কথার মধ্যে অন্য কেউ কথা বলাটা আমার পছন্দ না। ভুলে যাওনি নিশ্চয়ই?”
হেমন্ত নত মস্তকে বসা। নিচু স্বরে জবাব দিল, “সরি মামনি। তুমি বলো।”
“আমার দিক থেকে সমস্যা নেই। হবার কথাও না। একজন শিক্ষিত নারী হিসাবে অর্থবিত্তের জন্য অন্যকে ছোট করে দেখার কোন অধিকার আমার নেই। বাকিদের কথা বলতে পারছি না। তবে সবাইকে রাজী করানোর দায়িত্ব আমার। তুমি এ নিয়ে চিন্তিত হয়ও না। তবে এখনো সময় আছে। তুমি ভাবো। গভীর ভাবে ভাবো। যখন তোমার স্টাটাশের সাথে হুমায়রার মিলবে না তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে পারবে না। শশুর বাড়ি থেকে দামি কোন উপহার পাবে না। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হয়ে এটুকু জানি এবং বূঝিও। তবে সম্মানের কমতি হয় না। আবেগ দিয়ে নয় বিবেক দিয়ে ভাবো। ভেবে আমাকে জানাবে। ঠিক আছে?”
“ভাবার কিছু নেই। তবে তোমার মন রক্ষার্থে ভেবে জানাবো।”
মুচকি হাসলেন তিনি। অতঃপর বললেন, “তবে আমি যায় মাই সন। অনেক কাজ জমে আছে। সামনে নতুন বুটিক হাউজ ওপেন করবো। টেক কেয়ার।”
হেমন্তের কাপালে ছোট্ট করে একটা চু’মু একে দিয়ে, গটগট শব্দ তুলে চলে গেলেন। মুগ্ধ নয়নে হেমন্ত সেদিক পানে তাকিয়ে থেকে নজর নিচু করলো। বয়স পাঁচচল্লিশ পেড়িয়েছে। অথচ তাকে তিরিশের জোয়ান মহিলার মতো লাগে। হেমন্ত ভাবতেও পারেনি তার মা বিষয়টা এতো সহজে মেনে নিবে। তার মা যে সুশিক্ষায় শিক্ষিত একজন মহিলা তা বুঝতে বাকি নেই। মা রাজি মানেই বাবা রাজি। সুন্দরী বউয়ের কথা ফেলতেই পারবে না। হেমন্তের দারুণ খুশি লাগছে। মন চাইছে কেউ একজন থাকলে তার সাথে ইনজয় করতে পারতো। মাথায় আসলো তার পছন্দের রমনীর কথা। হাসি যেন চওড়া হলো। বিড়বিড়ায়ে আওরালো, “পাখি, আমি আসছি পাখি। হেমন্ত কথা রাখে। ইনশাআল্লাহ।”
ইনশাআল্লাহ,,চলবে…
#সুমাইয়া_ইসলাম_জান্নাতি (লেখনীতে)
🍂🍂#প্রাপ্তি____(০৬)
___🍂___________
“তোমার কি মাথা খা’রা’প হয়ে গেছে? মিডিল ক্লাস একটা ফ্যামেলির মেয়েকে তোমার ছেলে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছে আর তাতে তোমার পূর্ণ সমর্থন। আমি কখনও চাইবো না আমার ছেলে এমন পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করুক। ঢাকায় একটা ফ্লাট পর্যন্ত নেই। ভাড়া বাড়িতে থাকে। তুমি জানো? আমাদের এই বাড়িটা দরদাম করলে কতটাকা দাম হবে। কি হলো? কথা বলছো না কেন?”
“ভাবছি।”
“আজব, এখানে ভাবাভাবির কি আছে? তোমাকে তো বললামই আমার কথা।”
“আছে অনেক কিছু আছে। তুমি শিক্ষায় অর্থে অনেক এগিয়ে তবে তোমার মধ্যে প্রকৃত শিক্ষার খুব অভাব।…”
“কিহ্! এ কথা আমাকে আমাকে বলতে পারলে সাহানা? আমার মধ্যে শিক্ষার অভাব!”
স্বামীর উত্তেজিত কন্ঠেও ভদ্রমহিলার মধ্যে কোন হেলদোল দেখা গেল না। নির্বিকার বসে আছেন তিনি। শান্ত কন্ঠে বললেন, “আহ্ রাখো। এতো উত্তেজিত হচ্ছো কেন? আমার কথাগুলো শোন। অর্থবিত্তের প্রাচুর্যে কখনও কোন মানুষকে বিচার করা উচিত নয়। হামিদুর সাহেব যথেষ্ট ভদ্রলোক। এবং তার স্ত্রী সন্তানেরাও। তাছাড়াও হেমন্ত আমার একটা মাত্র ছেলে। আমি কখনও চাইবো না ছেলের পছন্দে অসম্মতি জানিয়ে নিজের থেকে তার দুরত্ব বাড়ুক। হেমন্তের ওপর আমার ভরসা আছে। ও কখনও খারাপ কিছু নিজের জন্য নির্বাচন করবে না। তাছাড়া আমরা তো যাচাইবাছাই করবোই। মেয়েটাকে তোমার পছন্দে বিয়ে দিয়ে তার জীবন নর’ক করে দিয়েছো। আমি চাইবো না তোমার কতগুলো লেইম যুক্তি সমর্থন করে ছেলেকে হারাতে বা তাকে কষ্ট দিতে।”
স্ত্রীর কথায় ভদ্রলোকের তেজে ভাটা পড়েছে যেন। উচ্চবাচ্য করলেন না। অনুধাবন করলেন অর্থবিত্ত দেখেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়ে এখন এক সমুদ্র দুঃখের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। বাচ্চাটা হওয়াই কিছুতেই তাকে সে সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন করা গেল না।
“কি হলো? কথা বলছো না কেন?”
“কি বলব, সব তো ঠিক করেই ফেলেছো। নাতাশাকে জানানো উচিত। তার ভাইয়ের বিয়ের কথাবার্তা চলছে সে অনুপস্থিত থাকবে সে কি করে হয়?”
“তোমার কি মনে হয় আসতে দিবে? কু’কু’রের জাতের সাথে আমার মেয়েটাকে দিয়ে রেখেছো তুমি। ওরা কি আর মেয়েটার দুঃখ কষ্ট বুঝে!”______মেয়ের কথা উঠলেই ভদ্রমহিলার আখিদ্বয় অশ্রুতে টইটুম্বু হয় যায়। এবারও তাই। সন্তপর্ণে শাড়ির আঁচল দিয়ে মুছে নেয়।
স্ত্রীর চোখের পানি ভদ্রলোকের মনে বিষাদ নামাতে যথেষ্ট। মেয়ে যে তার প্রাণ। তবুও তার হাত পা বাধা বলতে গেলে। চাইলেও কিছু বলতে পারে না। তার মনে কি কম দুঃখ! কিন্তু পুরুষ মানুষের তো এ সমাজে চাইলেও চোখের পানির বহিঃপ্রকাশ করে আবেগ ঝ’ড়া’তে না। প্রকৃতি তাদের অদৃশ্য শক্ত খোলসে আবৃত করে রেখেছে। প্রসঙ্গ কাটাতেই বলে উঠলেন,
“আমি দেখবো ব্যাপারটা। তুমি চিন্তিত হয়োও না। আর আমাদের মত থাকলে তো হবে না। মেয়ের বাবা-মা কে তো জানাতে হবে। যদিও অমত করার কোন কারণই আমার চোখে বাধছে না। আগে তাদের জানাও। নাতাশাকে আনার ব্যাবস্থা আমি করছি। অত ভেবো না।”
____🍂_________________
হুমায়রা মন দিয়ে হুমায়ুন আহমদের দেবী উপন্যাসটি পড়ছে। রানু চরিত্র তার কাছে বেশি কৌতূহলী লেগেছে। প্রধান চরিত্র মিসির আলীকেও খুব ভালো লেগেছে।
ধোয়া ওটা গরম দু-কাপ চা নিয়ে হাজির হালিমা খাতুন। হুমায়রা মাঝেমধ্যে মাকেও পড়ে শোনায়। তিনি এখন আগের মতো চোখ লাগিয়ে বই পড়তে পারেন না। তবে আগ্রহ প্রচুর। তিনিও এক সময় হুমায়ুন আহমদের দারুণ ভক্ত ছিলেন বলা যায়। মেয়ের দিকে এক কাপ চা এগিয়ে দিয়ে বিছানায় আয়েশ করে বসলেন। আগ্রহ নিয়ে শুধালেন, “কি পড়ছিস?
“দেবী, হুমায়ুন আহমদের। তুমি কি এটা পড়েছো?”
“না। সারসংক্ষেপ পড়ে শোনাস।”
“তবে এখনী শোন। অনেকটা পড়ে ফেলেছি।”
“আচ্ছা, বল।”
“এটা হুমায়ুন আহমদের মিসির আলী সমগ্রের একটি। মন দিয়ে না পড়লে উপন্যাসের অনেক কিছুই বুঝতে পারা যাবে না।………’
হামিদুর রহমানের উল্লসিত কন্ঠ। সবাইকে আগ্রহ নিয়ে ডেকে চলেছেন। মুখশ্রীতে খুশি খুশি ভাব। হুমায়রার আর বলা হলো না। মা-মেয়ে আগ্রহ, কৌতুহল নিয়ে বেড়োলেন রুম থেকে। দেখলেন, দুটো প্যাকেটে ছানার মিষ্টি আর জিলাপি রাখা। হুমায়রা জিলাপি ভালো খাই। সে অতি উৎসাহের সাথে জিলাপি খেতে বসে গিয়েছে। এদিকে তার বাবা মাকে নিয়ে জরুরি কথা বলবে বলে রুমে ঢুকেছে এ ব্যাপার সে খেয়ালই করেনি। অদ্ভুত সুন্দর দেখতে জিলাপি। খেতেও ভালো। কিন্তু ছানার থেকে বেশি সুস্বাদু নয়। তবুও হুমায়রার এটিই বেশি প্রিয়। যার যেমন রুচি।
“মেয়ে সামনে টেনে আনলে কেন? পরে বলা যেত না?”
“যেত বৈ কি। কিন্তু এত খুশির সংবাদ আমি বিলম্ব করে দিতে চাইনি যে।”
”কি হয়েছে? কিসের খুশির সংবাদ?”
“মেয়ের বিয়ের জন্য ভালো সম্বন্ধ এসেছে। ছেলে ভালো ঘর ভালো।”
“এর জন্য এত খুশির কিছু দেখছি না। মেয়ের জন্য প্রায় এমন সম্বন্ধ আসে।”
“ওগুলোর সাথে এটার তুলনা করো না। ওইযে মোড়ের মাথায় একটা ডুপ্লেক্স বাড়ি দেখেছো না? ও বাড়ি থেকেই এসেছে। ভদ্রলোক নিজে এসেছে বলেছেন আমায়।”
বিস্ময়ে কথা বলতেই ভুলে গিয়েছে যেন। কোনরকম বললেন, “কি বলছো তুমি? ঠিক শুনেছো তো? ওমন বাড়ি থেকে আমাদের মত একটা ঘরের মেয়ে নিতে চাইবেন কেন?”
”ভুল শুনবো কেন? ঠিকই শুনেছি। অফিস শেষে ভদ্রলোক দেখি দাড়িয়ে। আমি তো অবাক। ভালো-মন্দ জিজ্ঞাসা করার শেষে প্রস্তাবখানা রাখলেন।”
“তুমি কি বললে?”
” বাড়ি গিয়ে গিন্নির সাথে আলাপ করে জানাবো। আমাদের সম্মতি পেলে তারা দেখতে আসবেন মেয়েকে।”
“আমার কিন্তু এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। মেয়ের আমার এতো সৌভাগ্য!”
আনন্দে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো চিবুকে হালিমা খাতুনের। পকেট থেকে রুমাল নিয়ে মুছে দিলেন হামিদুর রহমান। বড় আনন্দের খবর তাদের জন্য। কন্যা দায়গ্রস্ত পিতার নিকট এহেন উত্তম পাত্রের ও ঘরের সন্ধান পেলে আনন্দ তো হবেই। উভয়ই একত্রে বলে উঠলেন, “আলহামদুলিল্লাহ্ আলহামদুলিল্লাহ্।”
ইনশাআল্লাহ,,চলবে..
#সুমাইয়া_ইসলাম_জান্নাতি(লেখনীতে)🍂
🍂