#প্রাপ্তি💔
#পর্ব-৩
#সেলিনা_আক্তার_শাহারা
__________________________
প্রতিদিন নিত্যনতুন গল্প পড়তে গল্পের ঠিকানা ইন্সট্রাগ্রাম একাউন্টে ফলো দিয়ে রাখুন
একাউন্ট https://www.instagram.com/p/CWQQ7v4PH6g/?utm_medium=copy_linkলিংক—-)
প্লিজ ফলো দিয়ে রাখুন যাতে এখানে নতুন গল্প শেয়ার দিলে সরাসরি আপনাদের কাছে পৌঁছাতে পারে)
“- সকালে দিল হিয়াকে ডেকে চলছে।কেন সারা নেই।তাই পা দুটো তার মায়ের রুমের দিকে বারিয়েছে।
-মা!!
” হ্যা রে আয় আয়।
-দিলের মায়ের মনে তো হজার কষ্ট আর রাগ তবুও মা ডাক শুনে কষ্ট রাগ সব মাটি।
তুই হঠাৎ আমার ঘরে???
“মা হিয়াকে দেখছিনা যে।
-ওহহ হিয়া একটু বেরিয়েছে তুই ঘুমিয়েছিলিতো তাই হয়তো ডাকেনি।
” দিল হিয়ার এমন টা করা মেনে নিতে পারল না।আজ অবদি হিয়া না বলে তো মেন গেট অবদি যায়নি আর আজ হঠাৎ বাড়ি থেকে হাওয়া!!!
-কপাল টা ভাজ করে মায়ের রুম থেকে বিদায় নিয়ে রেডি হয়ে অফিসে ছুটছে।
—-
“দিল তো অফিসে বেশ খুশ মিজাজ থাকে তবে আজ চরম রাগে গজ গজ।এর কারন হিয়া;
তাকে না বলে কোথায় গেলো?
তার উপরে আবার আজ রেডি হতে গিয়ে মহা ঝামেলায় পরেছে।
-ওর পরনের কাপর থেকে শুরু করে পায়ের মোজা টা অবদি হিয়া চুজ করে বিছানায় রাখে।
ঘরি মানিব্যাগ থেকে শুরু করে সর্বত্র ওর সামনে।আসলে হিয়ার ওপরে পুরো পুরি ভাবে ডিপেন্ট দিল।
আর আজ প্রথম সে নিজে থেকে রেডি হয়েছে।
–খিট খিটে মেজাজ নিয়ে তার কেবিনে ঢুকে আরেক টা ধাক্কা খেলো দিল।
” হিয়া!!!
-হুম হিয়া দিলের কেবিনে বসে কর্নের সাথে হেসে হেসে কথা বলায় মুসগুম।
-খিপ্ত কন্ঠে আওয়াজ নয়।সুন্দর করে হিয়াকে ডাক দেয় দিল।
হিয়া—
“হিয়া দিলকে দেখেও না দেখার ভান এমন ভাব করছে জেনো আদিল এলে বা গেলে কোন সমস্যা নেই।
” ওহহ আদিল তুমি!এসো এসো কর্ন যা জোক্স বলে না দম ফাটানো হাসিতে মরে যাই।
-ওমা দিল কিছুটা অবাক।আমায় যে মেয়ে দিল ছারা ডাকেনা ঐ মেয়ে আজ আদিল ডাকছে।তাও কোন পাত্তাও দিচ্ছে না।
“কর্ন???
-Yes sir.
” এটা অফিস তা মনে হয় তুমি ভুলে গেছো।
তাই কাজ ছেরে আড্ডায় মেতেছো!!!
“কর্ন তার মাথা টা নত করে রেখেছে-sry sir…
-আরেহ কর্ন তুমি sry বললে কেন?
হিয়া আগ কেটে আদিলের সামনে দাড়িয়ে।আদিল আসলে কর্ন কে আমিই বলেছি বসতে।আর তা ছারা এখানের সবাই অফিসে তো কাজ করতে আসে না।আড্ডা মৌজ মস্তিরই মানুষই উর্দ্ধে।আর গুরু যেমন শির্ষ তো তেমনই হয়।
-কর্ন তাদের মধ্যে নেই।পাশ কাটিয়ে ছু মন্তর।
তবে অবাক তো আদিল এটা কে?হিয়া কেমন কথা বলছে তা আদিলের মাথায় আসছে না।
-তুমি অফিসে এলে যে??
” কেন আসতে নেই?
-না তা নয় তবে তোমার মধ্যে কেমন পরিবর্তনের ছোয়া লেগেছে মনে হয়।
“আদিলের বিমস্কর চেহারায় বেশ বুঝা যাচ্ছে ও জ্বলছে ভিতরে।
-না এমনি ভাবলাম আমার স্বামীর অফিস আমায় মাঝে মধ্যে আসা দরকার তাই।
আর এসেছিলাম তো তৃপ্তির জন্য।
” তৃপ্তির জন্য কেন???
আদিলের চোখ ভয়ে চুপসে রয়েছে।হিয়া তৃপ্তি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না তো?কোন আভাস কি পেয়েছে।
-ও তো…
“হ্যা জানি এখানে নেই।তা ওকে সব সময় আমাদের যে কোন অনুষ্ঠানে আমরা আমন্ত্রন করি।আর ও ওর বিয়েতে ডাকলোই না??
–বিয়ে??
” হ্যা শুনেছি ও প্রেগনেন্ট.বিয়ে কখন হল জানলামই না।তাই এসেছি ওকে দেখতে। তবে এখানে এসে শুনলাম ও নাকি চাকরি ছেরে দিয়েছে!!
-ঘামা ঘামা প্রায় দিল কি বলবে?
হিয়া কি সব টা জানতে পেরেছে? নাকি না।
এই টেনশন আমায় গিলে খাবে।
আর খাবেই তো পাপ তো কখনো মানুষকে শান্তি দেয় না।পাপ কর্মে কখনো জীবনে শান্তি বইয়ে আনতে পারে না।
—এদিকে হিয়ার হেয়ালি হেয়ালি কথা।
ওহহহ ভাবা যায় না।এর মধ্যেই নক ছারাই আরেক জন কেবিনে হাজির।–
দিলের নতুন পি এ..
হিয়া তো এটাই দেখতে এসেছিলো। নতুন পি এ নিয়ে এবার মেতেছে দিল।
“নক না করে ঢুকেছে বাহ বেশ কাছের মানুষ ছারা আসতে পারে নাকি?
” হিয়া একবার দিলের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে নিলো ওর মুখ টা। মাথা নত করে এখনও দাড়িয়ে আর রাগ টা চোখে মুখে বেশ বুঝা যাচ্ছে।তবে রাগ টা কার উপরে,আমার নাকি পি এ টার উপর।
–আপনার তারিফ…
“হিয়া তো প্রশ্ন টা নতুন আগমন কারিকে জিজ্ঞাসা করেছে তবে উওর টা দিলই দিয়েছে।
” ওহহ আমার নতুন পি এ-
পলক।
-আদিল প্রশ্ন টা তোমার জন্যে ছিলো না।আচ্ছা ভালোই হল বলে দিলে। এক জন পরিচয় দিলেই হয়।তোমরা আলাদা তো কেও নও এক জোরাই তো।
“নাহ আজ দিলের মাথা কাজ করছে না।হিয়াটা কি করছে বুঝতেই পারছে না।
না হিয়া ঐ।
-আদিল এত ফরমালিটির কি আছে শুনি। এই ঐ করে যাচ্ছো কেন? নাকি আমি অফিসে আসায় তোমাদের অসুবিধা হচ্ছে।
” না না হিয়া কি সব বলে যাচ্ছো তোমার অফিস যখন ইচ্ছা আসবে যাবে।
—হুম। শব্দটা করে এবার পলকের দিকে তাকিয়েছে হিয়া।
তা মিস পালক না পলক যাই হন। আপনার পলকে কি ঐ জিনিস টা পরছে??চোখের ইশারায় দরজাটা দেখিয়ে প্রশ্ন টা ছুরেছে হিয়া।
–ম্যাম ওটা তো দরজা”!!
“আরেহ বাহ আমার তো জানাই ছিলো না ওটা দরজা।
তা দরজা কেন দেয়া হয় জানেন??আমার তো মনে হয় এই টুকু কমন সেন্স আছে।আর না থাকলে আদিল তো আপনায় কাজে রাখতো না।
” দিল পলক দুজনেই বুঝতে পারছে, হিয়া বেশ খিপ্ত কারন নক না করে রুমে ঢুকা ওর একদম পছন্দ নয়।
–আর শব্দ না করে হিয়া অফিসের সেই নোংরা কেবিন টা ত্যাগ করেছে।বেশ বমি বমি লাগছিলো সেখানে।খুলে শ্বাস নিতে পারছিলো না।দম বন্ধ হয়ে আসছিলো।সইয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ওর আর নেই তাই এমন টা হয়েছিলো।
——
“সন্ধা সন্ধায় অফিস থেকে দিল বাসায় এসেছে।ভাবা যায় সন্ধায় চলে এলো?আজ রাত ভর জেগে ওর অপেক্ষা করতে হল না।
–
তুমি আজ এত জলদি!
” আদিল হিয়া পাশে দাড়িয়ে পকেটে হাত দিয়ে এক পলকের তাকিয়ে রইল।
-কি হল হিয়া ভাবলাম তুমি খুশি হবে।তা না করে উকিলি প্রশ্ন একের পর এক সকাল থেকে কেন হিয়া?
“আদিলের গলা থেকে টাইটা খুলতে খুলতে হিয়া স্বাভাবিক গলায় জবাব দিল, নাহ আদিল খুশি হওয়ার জন্য কারন টা তো শেষ তাই হয়েও হতে পারছি না মনে হয়।
” দুকদম পা পিছিয়ে এসেছে দিল।রাগ টা আবার চোখে দেখতে পারছে হিয়া।হিয়া মাথা টা নত করে দাড়িয়ে, জানতে চাইছে দিলের মনের অবস্থ্যা।
তবে একটা জিনিস বেশ দেখতে পারছে।দিল হিয়ার সাথে রাগ টা করেও করতে পারছে না।
-সকাল থেকে দেখছি তোমার মধ্যে অনেক টা পরিবর্তন হিয়া।
কি বলছো কি না।তার উপরে আজ থেকে তো আমায় পুরো নাম ধরে ডাকছো।সেই আগের মত করে দিল বলে ডাকছো না কেন হিয়া!!
তুমি কি পাল্টে গেলে?
“-পাল্টানোর কথা শুনে হিয়ার বেশ হাসিই পেলো।বদলে যাওয়া রং তো উল্টে আমায় প্রশ্ন করে যাচ্ছে।
-হাসিটা না হেসে এবার শক্ত মনে দিলের দিকে পাল্টা প্রশ্ন ছুরে দিলো হিয়া।
” হ্যা পাল্টে গেছি। রাতের পর রাত যখন তোমার পি এ এর সাথে রুমে নষ্টামি করে বেরাও তখন চুপ থেকে নিজেকে পাল্টেছি।রাগের পরিবর্তে মায়ায় কাছে টেনেছি।
রাতের পর রাত যখন বাড়ি ফেরোনি তখন আর সব বৌ দের মত প্রশ্নের পাহার নিয়ে সামনে আসিনি তাই বলছো পাল্টে গেছি!!
-তোমার ফোনে নানান রোমান্টিক মেসেজ দেখেও নিজেকে সামলে নিয়েছি। তৃপ্তির সাথে তোমার আগে থেকে সম্পর্ক ছিলো।আর ও প্রেগনেন্ট হওয়ায় তোমার মন উঠে গেছে তাই ছুরে ফেলে দিয়েছো।জেনেও আমি চুপ তাই বলছো পাল্টে গেছি? না ভালো বাবা তুমি না স্বামী – একটা মেয়ের সাথে যা অন্যায় করলে তা জেনেও চুপ তাই বলছো পাল্টে গেছি??
কেন দিল কেন? কোন কি দুষ ছিলো আমার,?,কোন অন্যায় থাকলে বলতে।এভাবে শাস্তি দিলে কেন কেন?
—
-দিল হা হয়ে এখনও হিয়ার পানে তাকিয়ে রয়েছে।
কি হল হিয়া কিছু বলছো না যে?
“হিয়ার সাহস হচ্ছে এই মাএ কল্পনায় ভাবা কথা গুলো দিলের মুখো মুখি হয়ে বলতে।যদি ভয় টাই না থাকে তাহলে আমাদের সম্পর্কটা শেষ হয়ে যাবে।আমার মেয়েটা পিতাহীন হবে।এই দুনিয়ায় পিতা ব্যাতিত একটা সন্তানের কতটা কষ্ট তা হিয়া জানে।আর এই মেয়েটার জন্যেই হিয়া চুপ।
এত ক্ষন হিয়া কল্পনা করে থমকে আছে।কি বলবে??
–হিয়া!!
কি কোন দেশে মন তোমার??
” কোন দেশে না দিল।যেখানে আছি সেখানের খুজই মেলেনা আবার অন্য দেশের সপ্নে ভাবা যায়।
-হিয়া কেমন কথা বলছো সব আমার মাথার উপরে যাচ্ছে।
কি হয়েছে তোমার?তোমার মধ্যে এত পরিবর্তন কি করে এলো. তুমি কি আমার হিয়া??
“-সরাসরি না বলেও ইশারায় বা কথার ভাজে হিয়া দিলকে আভাস দিচ্ছে একটা বেশ বড় ধরনের ঝড়ের আভাস।তা দিল বুঝলো কি না তা জানা নেই।
-মানুষ পরিবর্তনশীল তাই হয়তো আমিও সবার মত পাল্টে গেছি।
তবে আমি তোমার আগের হিয়া কি না তা জানার আগে তুমি আমার সেই দিল কিনা তা একটি বার ভেবে দেখে নাও।
” কি বলেছে হিয়া এই নিয়ে দিলের রাতের ঘুম হারাম।দুইয়ে দুইয়ে চার নয় বরং বাইশ হয় এই হিসাব লাগিয়ে দিল এবার কিছুটা আন্দাজ করেছে।
—আজানের পর হিয়া দিলের বালিশে চোখ বুলাতেই দিল গায়েব।কোথায় এত সকাল সকাল!!
——-★.
–এত জুরে কে বেল বাজাচ্ছে..ঘুমের ছাপ মুখে নিয়েই এক বৃদ্ধা মহিলা দরজাটা খুলে দিয়েছে।
আপনি??
-দিল কোন দিক তাকানের দরকার মনে না করে সোজা তৃপ্তির রুমে পা চালিয়ে গেলো।
“এই নষ্টা মেয়ে উঠ বলেই গায়ের থেকে চাদর টা সরিয়ে দিয়েছে।
হুরমুরিয়ে তৃপ্তি উঠে ভয়ে কুকরানো।স্যার আপনি…
“-এই হারামজাদি তুই আমার বৌ কে কি বলেছিস!!
তুই কতটা খারাপ ছি ছি। তর সাথে তো আমি জোর করিনি নিজ ইচ্ছায় টাকার লোভে আমার বিছানায় এসেছিস।
না জানি আরো কত মানুষের বিছনায় গেছিস।টাকার জন্য তো তুই মরিয়া। এত টাকা দেবার পরেও তুই আমাকে ব্লেকমিল করতে চাইছিস???
–
” স্যার যা তা বলবেন না।আমি আপনায় ব্লেকমিল করব কেন?
-কেন আবার আমার টাকার জন্যে।
“স্যার হয়তো আমিও খারাপ তবে আপনার ছিলো লালসা আর আমার অভাব দুইয়েই আমাদের মাঝে সব হয়েছে।
আপনি আমার শরিল চেয়েছেন।আর আমি আপনার টাকা।আপনার বিছানায় যাওয়ার বিনময়ে যা পেয়েছি এতে আমার মায়ের অপারেশন করিয়েছি। দরকার পরেছিলো আমার আপনার বিছানায় যেতে টাকার জন্যে।আয়েশে থাকার জন্যে কোন মেয়ে শরিল বিলায় কিনা জানিনা তবে আমি বিলাইনি।
আপনার থেকে আমার আর কিছু চাওয়ার নেই স্যার।আপনার কথা মত তো আমি আপনার বাচ্চাটাই নষ্ট করে দিয়েছি। তাহলে আমি এমন করব কেন??
” এই নষ্টা গলির মেয়ে আমার বাচ্চা কিসের রে আমার বাচ্চা কিসের?কার না কার পাপ তর গর্ভে ছিলো কে জানে।
এই আদিলের সন্তানের মা শুধু একজনই হতে পারে আর সে আমার স্ত্রি হিয়া। তদের মত টাকায় বিলিন দেয়া মেয়ে রা নয়।
” স্যার এত বৌ এর প্রতি টান তাহলে অন্য মেয়েকে নিয়ে ফুর্তি করেন কেন?আপনাদের মত মানুষ কারো স্বামী হবার যোগ্য নয়।
আমি রাস্তার নষ্টা মেয়ে হলে আপনি ঐ নষ্টা গলির খদ্দের।
দিল এবার ভালো করে তৃপ্তিকে শাষিয়েছে।
—
তবে একটা কথা তো ক্লিয়ার তৃপ্তি হিয়ার সাথে দেখাই করেনি।তবে হিয়ার কথায় লাগছে হিয়া কিছুটা জানতে পেরেছে।
একবার গাদ্দার টা কে পাই তার পর।
সব কিছু করার আগে এবার হিয়াকে একটু বাজিয়ে দেখতে হবে।হিয়ার থেকে কথা বের করা বা হাতের খেলা।
গাড়ির স্পিড বারিয়ে দিল বাড়ির পানে ছুটছে।
—হালকা মদ গিলে গাড়ি ড্রাইভ করছে।
সামনে আসা গাড়ি একের পর এক তাকে সতর্ক করে যাচ্ছে।
তবে এতটা মদ খায়নি যে গাড়িটা সামালতে পারবে না।
গাড়ির ব্রেকে পা দিতেই বুঝতে পারলো ব্রেক ধরছে না।কয়েকবার চেষ্টা করে বৃথা।একি আসার সময় তো ঠিক ছিলো। এখন কি হল….
ব্রেক ফেল গাড়ি এবার সোজা গাছে ধাক্কা খেয়েছে।দিল কিছু বুঝার আগেই ওর চোখ বন্ধ হয়ে এসেছে………..
মুখ থেকে মা বলেই অচেতন হয়েছে আদিল নামক পাষন্ড টা।
চলবে…..
[দিলের কি শাস্তি পাওয়া উচিত? নাকি ক্ষমা পাওয়ার যোগ্যা???]