প্রিয় প্রহর পর্ব ৪+৫+৬

#প্রিয়_প্রহর
লেখনীতে: #নুরুন্নাহার_তিথি
#পর্ব-৪
দশ মিনিটের মাথায় ফর্মাল ড্রেসআপে ড্রয়িং রুমে আসে শুভ্র। শুভ্রকে ফরমাল ড্রেসআপে দেখে তার বাবার চোখ কুঁচকে ফেলেন। আরোহী ও রিয়ানা জানেন এমন কিছু হবে তাই তারা চুপ করে দেখে যাচ্ছে। শুভ্রর বাবা বলেন,

–এখন কি তুমি হসপিটালে যাচ্ছ শুভ্র?
–হ্যাঁ বাবা।
–আজকে তোমার রিসেপশন তা কি তুমি ভুলে গেছো? আজকে তোমার মামা-মামি আর আত্নীয়-স্বজন ও গেস্টরা আসবে। তুমি না থাকলে খারাপ দেখা যাবে।

শুভ্র একটা তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে বলে,
–ঠিক আছে বাবা। আমি চেষ্টা করবো সময়ের মধ্যে চলে আসার। আসি আম্মু।

শুভ্র চলে গেলে আরোহী মাথা নুইয়ে নিজেকে তাচ্ছিল্য হাসে অতঃপর খাবার শেষ করে শুভ্রর রুমে যেটাতে এখন তারও সমান অধিকার আছে কিন্তু এই রুমে থাকা মানুষটার উপর যে নেই! ব্যলকনিতে যেয়ে নীল আকাশে দৃষ্টিপাত করে মনে মনে বলে,

” সত্যি! ভালোবাসা বড়ই অদ্ভুত। কাউকে হাসায় তো কাউকে কাঁদায়। কেউ মরীচিকার পিছনে ছুটে ছুটে ক্লান্ত হয়ে যায় তাও তার সেই মরীচিকাকেই লাগবে। ”

আপনমনে হেসে আরোহী একটা উর্দু/হিন্দি শায়েরী আউরায়,
” হামনে জিসে চাহা, ভো চাহে কিসি অর কো!
হামনে জিসে চাহা, ভো চাহে কিসি অর কো!
খোদা কে লিয়ে, জিসে ভো চাহে,
ও ভি চাহে কিসি অর কো! ”

রিয়ানার আগমনে ভাবনার ছেদ ঘটে আরোহীর। রিয়ানা তার তিন বছরের মেয়ে রিপ্তিকে নিয়ে এসে আরোহীর সাথে পাশে দাঁড়িয়ে বলে,
–কি ভাবছিস আরু? মন খারাপ? শুভ্রকে নিয়ে ভাবছিস?
–না! না! আপু। আমি এমনি নিজেকে নিয়ে ভাবছিলাম।
–নিজেকে আর কতো লুকাবি? আমি জানি কাল শুভ্র তোর সাথে নিশ্চয় রুড বিহেভ করেছে। শুভ্র তো বিয়েতে রাজী ছিলো না।
–আপু, উনারো কষ্ট হয় সেটা আমি বুঝতে পারি। তবে আয়ু যেখানে উনাকে ভাই ভাবে আর আয়ু ধ্রুবকে ভালোবাসে। সেখানে শুভ্র ভাইয়ের দখল দেওয়াটা ভালো দেখায় না।

আরোহী এগুলো বলে রিয়ানার কোল থেকে রিপ্তিকে নিজের কোলে নেয়। রিয়ানা মলিন হেসে বলে,
–শুভ্র তো বুঝতে পারেনি এসব কিছু হবে। ডাক্তারি পড়তে এব্রোড চলে গেল। আর ছয় মাস আগে ফিরে এখানে সরোয়ার্দিতে জয়েন করলো। তারপর তো দুই মাস আগে আয়ানাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল। শুভ্র এটা বুঝতে পারেনি যে, “সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়।”

এর মধ্যে ছোট রিপ্তি আরোহীর মুখে হাত দিয়ে বলে,
–আলু (আরু) মিমি! তুমি তালতে (কালকে) এয়েচো (এসেছো) তাহলে তালা (তারা) মিমিকে তেনো (কেনো) আনলে না?

রিপ্তির কথায় ওরা দুজনে হেসে দেয়। রিয়ানা তার মেয়েকে বলে,
–রিপ্তি আম্মু, তোমার আরু মিমি এখন তোমার শুভ্র মামার বউ। মানে আরু মিমি এখন মামি! মামি তো মামার সাথেই থাকবে।

রিপ্তি খুশিতে হাতে তালি দিতে থাকে। সে আয়ানাকে তার মামার মতো “তারা” বলে কিন্তু উচ্চারন সমস্যার কারণে “তালা” বলে। আরোহীকে সবার মতো আরু বলতে যেয়ে নামের দফারফা করে “আলু” বলে। রিপ্তি আয়ানার থেকে আরোহীকে বেশি ভালোবাসে কারণ আরোহী রিপ্তির সাথে দুষ্টামিটাও বেশি করে।

রিয়ানা আরোহীকে জলদি করে বলে,
–আরু, একটু পর মামা-মামিরা চলে আসবে। পার্লার থেকে মানুষজনও এখনি চলে আসবে রেডি হয়ে নিস। আমি যাই, দেখি তোর দুলাভাইয়ের কিছু লাগে কিনা।

রিয়ানা রিপ্তিকে রেখে চলে যায়। রিপ্তি আরোহীর সাথে খেলতে ব্যাস্ত।
_______
এদিকে শুভ্র হসপিটালে নিজের কেবিনে বসে আছে। আজকে তার ডিউটি বলতে গেলে নেই। তাও সে একটু আগে একবার ওয়ার্ডে রাউন্ড দিয়ে এসেছে। একটা সার্জারিতে সে সিনিয়র ডাক্তারের সাথে জুনিয়র ডাক্তার হিসেবে থাকবে সাথে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাক্তার তো থাকবে। সার্জারিটা সে সকালে এসে রিকুয়েস্ট করে নিয়েছে।

হঠাৎ শুভ্রর কেবিনে আসে শুভ্রর কলেজ জীবনের ফ্রেন্ড শিলা এবং এখন সে তার কলিগ হয়। শিলা শুভ্রকে এভাবে বিমূর হয়ে বসে থাকতে দেখে বলে,
–বিয়ের বর! এতো উদাসীন কেন?

শিলার ডাকে ধ্যান ভাঙ্গে শুভ্রর। শিলা কিন্তু দরজায় নর করে এসেছে তাও শুভ্রর ধ্যানে বিঘ্ন ঘটে নি। শুভ্র শিলার দিকে তাকিয়ে বলে,
–ওহ তুই! বস।
শিলা বসে। এরপর বলে,
–জবাব দিলি না? এতো উদাসীন কেনো যে তোর কেবিনে চুরি হলেও তুই ধরতে পারবি না!

শুভ্র চেয়ারে গা এলিয়ে মলিন ভাবে বলে,
–যার মনটা আর ঠিক নেই তার এসব জিনিস পত্রের কি মূল্য থাকবে!

শিলা বুঝতে পারে তাও এখন শুভ্রকে এগুলো থেকে বের করতে হবে তাই বলে,

–তোর মনে আছে? এইচএসসি প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার শেষ দিন তোকে আমি প্রোপোজ করেছিলাম। আমি কিন্তু তোকে কম ভালোবাসি নি! তোর সাথে দশম শ্রেণী থেকে ফ্রেন্ডশীপ আমার। তিন বছরে তোকে অনেকটাই ভালোবেসে ফেলেছিলাম। কিন্তু পরিনাম কি হলো! তুই রিজেক্ট করলি আমায়। আমি সেদিন তুই রেগে ফ্রেন্ডশীপ নষ্ট করে চলে যাবার পর চিৎকার করে কেঁদে ছিলাম। সেদিন তুই ফিরিস নি। সেদিন তুই বলে গিয়েছিলি তোর ভালোবাসার মানুষ আছে। তারপর শুনলাম তুই এব্রোড চলে যাবি ডাক্তারি পড়তে। আমি কিন্তু তখনো তোর রিজেক্ট করার কষ্ট কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তুই চলে গেলি আর আমি তোর সাথে ফ্রেন্ডশীপটাও ধরে রাখতে পারি নি। এরপর আমার সাথে রিসাবের বিয়ে হয়। মেডিকেলের প্রথম বর্ষের পরেই। রিসাব আমায় প্রথম থেকে ভালোবাসতো। যেদিন প্রথম আমায় দেখে সেদিন থেকেই। আমিও আর রিসাবের ভালোবাসা প্রত্যাখ্যান করি নি। কারণ প্রত্যাক্ষিত হবার কষ্টটা আমি বুঝি। দেখ, এখন আমি রিসাবকে অনেক ভালোবাসি। আমদের এক মেয়ে আছে।

শুভ্র শিলার কথা শুনলো। শুভ্র ভাবে,
” এই শিলা মেয়েটা স্কুল থেকে আমাকে এতো হেল্প করতো আর আমার কিছু লাগলে, বলতে না বলতে তা হাজির করতো। আর তাকে আমি রিজেক্ট করে ফ্রেন্ডশীপ টাও নষ্ট করে চলে গিয়েছিলাম। ”

শিলা আবার বলে,
–ভাবিস না তোকে এগুলো বলছি বলে এখনো তোর প্রতি আমার ফিলিংস আছে! সত্যি বলতে আমার তোর প্রতি ফ্রেন্ডশীপ ছাড়া অন্য ফিলিংস আসে না। জীবনে আমি দ্বিতীয়বার এমন কাউকে ভালবেসেছি যে আমার হাতটা শক্ত করে ধরেছে। আমার অতীত জেনে আমাকে গ্রহণ করেছে। “আই রিয়েলি লাভস এ লট টু রিসাব।”

শুভ্র ভাবলেশহীন ভাবে বলে,
–কিন্তু আমার সাথে যার বিয়ে হয়েছে সে আমার ভালবাসার মানুষটার জমজ বোন। একরকম চেহারা তবে স্বভাব যেনো দুই মেরুর মতো। আমি কিভাবে “তারা” কে ভুলবো বলতে পারিস?

শিলা মুচকি হেসে বলে,
–সময় দে। দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে। কথায় আছে না,
“টাইম উইল হিলস এভরিথিং!”
একসময় তুইও তোর অর্ধাঙ্গিনীকে অনেক ভালোবেসে ফেলবি।

শিলা চলে যায় সেখান থেকে। শুভ্র ভাবতে থাকে কিন্তু তখনি সার্জারির জন্য ডাক আসে তো শুভ্র চলে যায় সার্জারি করতে।
______
আরোহী তৈরি হচ্ছে রিসেপশনের জন্য। একটা হালকা মিষ্টি রঙের বেনারসি শাড়ি পড়েছে আরোহী। হালকা করে ফাউন্ডেশন, ফেস পাউডার, হালকা পিংক ব্লাসন, হাইলাইটার, চোখে কাজল, আইলাইনার সাথে হালকা পিংকিশ আইশ্যাডো, চোখের পাঁপড়িতে মাস্কারা দিয়ে ঠোটে বেবি পিংক লিপস্টিক দিয়ে সাজ কমপ্লিট করেছে আরোহী। পার্লারের মানুষজন যখন আরোহীকে আরো ভারী মেকআপ করতে চাইছিলো। একদম ব্রাইডাল মেকআপ তখন আরোহী নাছোড়বান্দা কারণ কালকের মতো সে ভারী মেকআপ করবে না। আরোহীর বাবা-মা ও আয়ানা এসে যখন দেখে এই অবস্থা তখন আয়ানা পার্লারের মানুষজনকে বলে হালকা করে যেভাবে বলছে সেভাবে মেকআপ করে দিতে।
মেকআপের পর্ব শেষ হলে যখন স্টোন জুয়েলারি গুলো পড়ানো হয়। আরোহীর চুল গুলো মাঝে সিঁথি করে একটু কার্ল করে ছেড়ে রেখেছে। মাঝ সিঁথিতে স্টোনের বড় টিকলি। তখন আয়ানা নিজে নিজের বোনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।

আয়নাকে এভাবে হাঁ করে তাকিয়ে থাকতে দেখে আরোহী বলে,
–মুখ বন্ধ করা আয়ু। তোকেও আমার মত সেম লাগবে যদি একই রকম সাজ দিস তবে।

আয়ানা দাঁত বের হেসে করে বলে,
–এজন্যই তো তোর দিকে তাকিয়ে আছি। নিজের দিকে তো তাকিয়ে থাকতে পারবো না এভাবে হা করে!

আরোহী হেসে ফেলে আয়ানার কথায়।
আয়ানাকেও কিন্তু কম সুন্দর লাগছে না! আয়ানা নিজেও আজকে পিংক পড়েছে। পিংকি স্টোন বসানো জর্জেট শাড়ি। সাথেই স্টোনের জুয়েলারি। মেকআপ টাও আরোহীর মতো করেই শুধু চুলের স্টাইলটা ভিন্ন। আয়ানা সাইড সিঁথি করে সাইড টিকলি (নামটা ভুলে গেছি) দিয়েছে।

ধ্রুব তো আসার সময় পুরোটা সময় আয়ানার দিকে বারবার তাকাতে তাকাতে এসেছে।
#প্রিয়_প্রহর
লেখনীতে: #নুরুন্নাহার_তিথি
#পর্ব-৫
শুভ্রর বাড়ি ফিরতে প্রায় দুপুর গড়িয়ে যাবার দশা। দুপুর দুইটার পর শুভ্র বাড়ি ফেরে। অনুষ্ঠানটা বাড়িতে হবার কারণে আরোহী স্টেজে দশ মিনিট শুভ্রকে ছাড়া বসে আবার নিজের রুমে ফেরত আসে। আরোহী ধরেই নিয়েছে শুভ্র আজকে ফিরবে না সময়মত। এদিকে গেস্টরাও শুভ্র কোথায় তা জিঙ্গাসা করছে। শুভ্রর বাবা শুভ্রর ইমারজেন্সিতে সার্জারি আছে বলে কাটিয়ে নিচ্ছে কিন্তু তাও কিছু মানুষের মুখ তো বন্ধ হয় না। শুভ্র নিজের রুমে এসে দেখে আরোহী ও আয়ানা দুজন বসে আছে। শুভ্র কিছুটা হকচকিয়ে গেলেও পরে নিজের নজর সরিয়ে নেয়। আরোহী এটা খেয়াল করে সাথে আয়ানাও।

শুভ্র ওদেরকে কিছু না বলে টেবিলে উপর ওয়ালেট ও ফোন রেখে ওয়াশরুমে চলে যায়। ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার অন করে ভিজতে থাকে। আজ তার এতোদিনের ভালোবাসা ঠিকই তার ঘরে প্রবেশ করেছে কিন্তু বউ হিসাবে নয় শালী হিসাবে।
আয়ানা আরোহীকে একা রাখা সমীচীন মনে করে সেখান থেকে চলে যায়। আরোহী একই জায়গায় বসে মনে মনে ভাবে,

” জানিনা কোনোদিন আপনি আমাকে ভালোবাসবেন কিনা! তবে আমার মনে আপনার জন্য ভালোবাসা ফুরাবে না। অভিমানে অভিমানিনী হতে আমিও জানি তবে আপনি কি সেই অভিমান ভাঙ্গতে আসবেন! হয়তো আসবেন না। আপনার প্রতি অব্যাক্ত অনুভূতি আমি স্বভাবসুলভ ব্যাক্ত করতে পারিনি। আমি আয়ুর মতো নিজের অনুভূতি ব্যাক্ত করতে পারিনা। তাই বলে এটা না যে আমি ভালোবাসতে পারি না! আমিও আপনাকে ভালোবাসি এবং তা আমার দীর্ঘ সময়ের অনুরুক্তি। ”

শুভ্র শাওয়ার নিতে থাকার সময় বুঝতে পারে সে কাপড় ছাড়াই ওয়াশ রুমে চলে এসেছে। ওয়াশরুমের হ্যাঙ্গারে শুধু তাওয়ালটা আছে। এখন তাওয়াল পড়ে বাহিরে যাবে এটা তার কাছে কেমন যেন লাগছে! ওয়াশরুমের দরজা সামান্য খুলে রুমে চোখ বুলিয়ে কাউকে না দেখে তাওয়াল পেঁচিয়ে বেরিয়ে আসে। আরোহী তখন ব্যালকনিতে গিয়েছিলো। আরোহীর কাছে ব্যালকনিটা অনেক সুন্দর লাগে। ব্যালকনির এক সাইড থাই গ্লাস দিয়ে কভার করে সেখানে ডিভান রাখা আছে। আর তার সামনে মানে ডিভানের পাশে খোলা থাই গ্লাস বিহীন জায়গায় বেলি, কাঠগোলাপ, পর্তুলিকা এসব ফুলের গাছ আছে। বারান্দার স্থানটা দক্ষিণ দিকে হওয়ায় অনেক সুন্দর বাতাস আসে।

শুভ্র ওয়াশরুম থেকে তাওয়াল পরিহিত অবস্থায় বের হয়ে, তাড়াতাড়ি করে রুমের দরজাটা ভিতর থেকে লক করে দেয়। আরোহী ব্যালকনি থেকে হঠাৎ দরজা লক করার শব্দ পেয়ে রুমে এসে দেখে, শুভ্র কাবার্ড থেকে তার রিসেপশনের ড্রেসগুলো বের করছে আর শুভ্রর শরীরে নিম্নাংশে শুধু তাওয়াল পেঁচানো। আরোহী চোখ দুটো বন্ধ করে পেছোন ফিরে বলে,

–এই! আপনি ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার আগে দেখবেন না, রুমে বা ব্যালকনিতে কেউ আছে কিনা!

হঠাৎ কারও গলার আওয়াজে শুভ্র হকচকিয়ে ওঠে। জলদি করে পেছন ঘুরে দেখে আরোহী তার দিকে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে। শুভ্র তোতলানো স্বরে বলে,

–তুতুমি এখানে কি ককরো? আমি তো রুম চেক করেই নিয়েছিলাম। সাবধান পেছোন ফিরবে না। আর যেখান থেকে এখন এসেছো সেখানে ফেরত যাও।

আরোহী হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়িয়ে আবার ব্যালকনিতে চলে যায়। দশ মিনিটের মাথায় শুভ্র পরিপাটি হয়ে আরোহীকে ব্যালকনি থেকে ডাক দেয়। শুভ্র এক ঝলক আরোহীর দিকে তাকিয়ে নজর সরায়। এরপর একসাথে রুম থেকে বেরিয়ে স্টেজের উদ্দেশ্যে যায়।

হ্যাঁ! আরোহীকে শুভ্রর কাছে সুন্দর লাগছে। যতোই হোক রূপ তো একই। তবে এখন মনটাকে ভালোবাসার অপেক্ষা।
শুভ্র একটা জিনিস বিয়ের পর থেকে খেয়াল করেছে, আরোহী অনেকটা চুপচাপ হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে নিজের রৌদ্রি ও চঞ্চল রূপ দেখায় তবে চুপচাপ থাকতে দেখা যায় এখন।

বর-বউকে স্টেজে দেখে সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়। যারা এতক্ষন কানাঘুষা করছিলো, তারা চুপ হয়ে যায়। আরোহীর বাবা-মা ও ভাইদের য়ের সাথে শুভ্র ভাব বিনিময় করে। এতদিন তারা ছিলো শুধু মামা-মামি ও বড় ভাই।
ধ্রুব ও আয়ানা এখন এখানে নেই। তারা কোথাও কিছুটা চুপিসারে নিজেদের সময় দিচ্ছে যাতে অপরপাশে আরোহী-শুভ্র একে অপরকে স্বস্তি পায়।

বর ও বউয়ের খাবারের জন্য টেবিল সাঁজাতে থাকে আর তাই এখন স্টেজ অনেকটা ফাঁকা। শুভ্র আরোহীর পাশেই বসে আছে। মানুষজনের আনাগোনা কম দেখে শুভ্র আরোহীকে আস্তে আস্তে বলে,

–আমার জন্য নিজেকে পরিবর্তন করো না। তুমি যেমন ছিলে তুমি কেমন থাকো। কারো মতো হবার প্রয়োজন নেই তোমার। প্রতিটা মানুষ তার নিজের মধ্যে অন্যতম। নিজের গুণে গুণান্বিত হয় প্রত্যেকে। তুমি চঞ্চল ও রৌদ্রময়ী সেটাই ঠিক আছো।

আরোহী মুচকি হেসে বলে,
–আমি কারো জন্য পরিবর্তন হচ্ছি না। আর যদি পরিবর্তন হই, সেটা হবো নিজের প্রয়োজনে। একটা কথা মনে রাখবেন, “মানুষ পরিবর্তনশীল।” সময়ের সাথে সাথে মানুষ পরিবর্তন হয়। পরিবর্তন হয় মানুষের চিন্তা, চেতনা, ভাব, অনুভূতি সবকিছুর কিন্তু কিছু অনুভূতি অপরিবর্তনীয়। আমি বা আপনি যদি নিজে কঠোর চেষ্টা না করি তাহলে তা পরিবর্তন করা অসম্ভব। আমার মনের কিছু অনুভূতি আছে যেটাতে আমার নিজেরে কন্ট্রোল নেই। সেগুলোকে আমি শত চেষ্টা করেও পরিবর্তন করতে পারবো না। আর এখন এমন এক জায়গায় আছি যেখানে সেই চেষ্টা করাটা বেমানান।

শুভ্র এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আরোহীর চোখের দিকে। কালো মণি যুক্ত চোখের ভাষা সে এখন বুঝতে পারছে না পুরোপুরি তবে এটুকু তার বোধগম্য হয়েছে যে কিছু তো লুকিয়ে আছে ওই দুটি চোখে। আরোহী চোখ নামিয়ে চাহনি সরিয়ে বলে,

–ভালোবাসার অনুভূতি সত্য বলতে অপরিবর্তনীয়। সেটা যদি সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে সেটা ভালোবাসা না! তবে হ্যাঁ, মিথ্যা মোহ কেটে যাওয়া ভালো। মিথ্যা মোহ ও ভালোবাসা নিয়ে বাঁচার থেকে সেটা থেকে উঠে আসা ব্যাক্তির নিজের জন্য ভালো এবং সকলের জন্য। একটা কথা সত্যি,
” যা আপনার তা আপনার। ”
হিন্দিতে শুনেছিলেন না!,
” আগার কিসিকো দিল সে চাহো তো,
পুরি কায়নাত তুমহে উছছে মিলানে কি
সাজিস মে লাগি জাতিহে। ”
(হিন্দি বলতে পারলেও উচ্চারন লিখতে কষ্ট)

শুভ্র সবটা শুনছে। আরোহীর বলা দুটো কথার মমার্থ বুঝতে পারলেও কোনটা কার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তা বুঝতে পারছে না। দুটোই যদি শুভ্রর নিজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়, তাহলে আজকে সে কেন তার ভালোবাসার মানুষটা থেকে দূর হয়ে গেলো?

শুভ্র ও আরোহীকে খাবার খাওয়ার জন্য নিতে এসেছে। নীড় ও মেঘ দুই ভাই তাদের ছোট বোন ও বোনজামাইকে খাবার টেবিলে নিতে এসেছে। ধ্রুব ও আয়ানা টেবিলেই ওদের অপেক্ষা করছে।

শুভ্র টেবিলের কাছে যেয়ে ধ্রব ও আরোহীকে পাশাপাশি বসে থাকতে দেখে তার বুকের ভিতরে সুক্ষ্ণ ব্যাথা অনুভুব হয়। আরোহী শুভ্রের তাকানোর দিকে লক্ষ্য করে নিজে গিয়ে আয়ানার পাশে বসে। শুভ্রকে আরোহীর পাশে বসানো হয়।
নীড় গিয়ে শুভ্রর পাশে বসার পর মেঘ বসতে নিবে তার আগেই সাদিয়া এসে নীড়ের পাশে বসে। মেঘ তা দেখে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে আছে আর সাদিয়া দাঁত কেলিয়ে মেঘের দিকে চোখ টিপ মারে। এরপর মেঘ সাদিয়ার পাশে বসবে তার আগেই সাবিলা এসে সাদিয়ার পাশে বসে। মেঘ এবার সাবিলার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায়। সাবিলা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে সাদিয়ার সাথে কথা বলছে।
আরোহী ও আয়ানা তাদের মেঘ ভাইয়ের অবস্থা দেখে হাসতে হাসতে শেষ! মেঘকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ধ্রুব নিজের পাশের চেয়ারটায় মেঘকে বসতে বলে। মেঘ সাবিলার থেকে চোখ সরিয়ে সাদিয়ার দিকে “খাইয়া ফালামু” লুকে তাকায়।

নীড় মেঘকে এভাবে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে,
–মেঘ, বসে পর। এখানে টম এন্ড জেরীর মতো শুরু করিস না আবার।

মেঘ নীড়ের কথায় বসে পরে।

পাশের টেবিল থেকে মিস্টার মুনতাসির ও মিসেস নূর তাদের চার ছেলে মেয়েকে নিজেদের সঙ্গীর সাথে দেখে তৃপ্তির হাসি হাসে।
#প্রিয়_প্রহর
লেখনীতে: #নুরুন্নাহার_তিথি
#পর্ব-৬
খাবারে পর্ব শেষে সবাই যে যার মতো ছবি তুলছে। শুভ্র ও আরোহীর ছবি তুলছে ক্যামেরাম্যান। আয়ানা ও ধ্রুব তারাও ওদের সাথে ছবি তুলতে গিয়েছে নাহলে ব্যাপারটা চোখে লাগে। শুভ্র নিজের আর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। সে স্বাভাবিক আছে।

এদিকে সাদিয়া নীড়কে পটানোর উপায় খুঁজছে! হঠাৎ সামনে মেঘের মতো কাউকে দেখে খুশিতে ডগমগ হয়ে তার কাছে যায়। এরপর ওই ছেলের বাহুতে জোরে কিল বসিয়ে বলে,

–কিরে কালোমেঘ! তোর সাবুদানা কই? তুই এখানে একা একা, চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছিস কেন? আমিতো এখন সাবুদানার সাথে নাই! আর আমি না থাকলে তো তুই সাবুদানার সাথে সুন্দর করে কথা বলতে পারিস।
(সাবিলাকে “সাবুদানা” আর মেঘকে “কালোমেঘ” বলা হয়েছে।)

সাদিয়ার কথার বিপরীতে ছেলেটা ভ্রু কুঁচকে তাকায়। সাদিয়া তা পাত্তা না দিয়ে ছেলেটার হাত ধরে ঝাকিয়ে বলে,
–আচ্ছা শোন না! আমি যেই কারনে এসেছি। তোর ভাইটাকে যে আমার কথা বলবি, সেটা বলছিলি? কালকে আমার সাথে না তোর ডিল হলো যে তুই নীড়কে পটিয়ে দিবি! দে না ভাই! নীড়কে পটিয়ে দে। তুই যদি নীড়কে পটিয়ে দিতে পারিস তো আমিও তোরে সাবুদানার সাথে সেটিংস করিয়ে দিবো।

সাদিয়ার কথা শুনে ছেলেটা মনে মনে হাসছে কারণ এই ছেলেটাই নীড়! নীড় ও মেঘ যেহেতু জমজ তাই এদের দেখতেও একইরকম লাগে। আরোহী ও আয়ানার মতো ওদেরও কিছু ভিন্নতা আছে।
নীড় চশমা ব্যাবহার করে এবং সে গম্ভীর ও শান্ত থাকে। নীড় হুটহাট রাগে না তবে গম্ভীর্যতা ও কন্ঠস্বর ওকে মেঘের থেকে পার্থক্য করে। আর মেঘ, সে রগচটা এবং দুষ্ট তবে ক্ষতিকর দুষ্টামি করেনা। মেঘ চশমা ব্যাবহার করে না। মেঘের হুটহাট রেগে যাওয়ার সমস্যা আছে।

আজকে আরোহীর রিসেপশনে দুই ভাই একই রংয়ের পাঞ্জাবি পরেছে। পাঞ্জাবী কালো রংয়ের। একটু আগে নীড়ের চশমা মেঘ নিয়ে গেছে, সাবিলাকে একটু ভয় দেখতে। তাই নীড় চশমা ছাড়া যেহেতু চোখে কম দেখে তাই সে এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে। এরইমধ্যে সাদিয়া এসে নীড়কে মেঘ ভেবে এগুলো বলা শুরু করেছে। সাদিয়াকে একটু লজ্জা দিতে নীড় বলে,

–আগে মেঘকে খুঁজে বের করো তারপর ওরেই বলো আমাকে পটিয়ে দিতে!

সাদিয়া হকচকিয়ে যায়। সে তো চোখে চশমা নেই দেখে এই ছেলেকে মেঘ ভেবেছে আর এই ছেলে কিনা নীড় সয়ং! থতমত খেয়ে সাদিয়া সেখান থেকে কেটে পড়তে নিলে নীড় বলে,

–যেখানে যাচ্ছ যাও। মেঘকে পেলে বলবে সে যেন আমার চশমাটা দিয়ে যায়।

সাদিয়া আর কথা না বাড়িয়ে সেখান থেকে জলদি করে চলে যায়। নীড় সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে মুচকি হাসতে থাকে। হ্যাঁ, নীড়ও সাদিয়াকে ভালোবাসে তবে সে প্রকাশ না করে ভালোবাসতে চায়। যেখানে দুজনেই দুজনকে চুপিসারে ভালোবাসবে আর আড়ালে তা প্রকাশ করবে। মুখে ভালোবাসি বললেই ভালোবাসা হয়ে যায় না! মনের না বলা কথা যদি বিপরীত পাশের মানুষ বিনা বাক্য ব্যয় করে বুঝতে পারে তাহলে সেই ভালোবাসাতে কোনো তিক্ততা আসে না।
তাছাড়া নীড় জানে যে তার মা ও সাদিয়ার বাবার সাথে অলরেডি নীড়-সাদিয়ার বিয়ের কথা বলেছে। ওদের বাবা-মারা চায় ওদেরকে সারপ্রাইজ করতে তাই সব কিছু ওদের না বলেই ঠিক করছে। কিন্তু নীড় একদিন রাতে তার বাবা-মায়ের কথা শুনে ফেলেছিল। সেদিন তার মা মিসেস নূর কিচেনে কাজ করছিলো তো মিস্টর মুনতাসির নিজের বউয়ের সাথে প্রেম করতে কিচেনে গেছিলো। তখন মিসেস নূর কথায় কথায় এটা বলে ফেলে আর নীড় ডায়নিংয়ে পানি খেতে এসে এগুলো শুনো পানি না খেয়ে মুচকি হেসে চলে যায়।——-

সাদিয়া এখন বর-বউয়ের স্টেজের সামনে এসে মেঘকে খুঁজছে। আজকে সে মেঘকে ধোলাই দিয়েই ছাড়বে! খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেলো। মেঘ স্টেজের এক কোণে সাবিলার সাথে বসে আছে। সাবিলা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছে আর মেঘকে দেখে মনে হচ্ছে সে নিজের রাগকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে। সাদিয়া ওদের দেখে কনফিউজড হয়ে ওদের কাছে যায়।

–কিরে? তোরা দুইটা এভবে বসে আছিস কেন?

মেঘ এবার সাদিয়ার দিকে তাকায় এরপর কিছু না বলে চলে যায় সেখান থেকে। সাদিয়া ভ্যাবলার মতো চেয়ে আছে। নিজে আসছিলো কিছু বলবে কিন্তু কিছু বলার আগেই সে নিজেই কিছু বলতে পারলো না। সাদিয়া আর কি করবে! সে সাবিলার কাছে যেয়ে বসে। এরপর বলে,

–কিরে সাবুদানা? তোদের আবার কি হলো? আমি না থাকলেও তোরা এমন মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকিস জানতাম না তো!

সাবিলা চোখ মুখ খিঁচে সাদিয়াকে বলে,
–মেঘ জেনে গেছে সব।
সাদিয়া কপাল কুঁচকে জিঙ্গাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সাবিলার দিকে। সাবিলা মুখ ভার করে বলতে লাগে,
——-
” মেঘ নীড়ের মতো সেজে তার কাছে এসেছিলো আর এসে বলে,
–সাবিলা, তুমি কি মেঘকে নিজের মনের কথা বলবা না?
সাবিলা তখন চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিল নীড় রুপি মেঘের দিকে। পরে কিছুক্ষন চুপ থেকে মিনমিন করে বলে,
–আসলে ভাইয়া, আমার মেঘ ভাইয়াকে ভয় করে। উনি কতো রাগী। আমার তো বুঝে আসে না, আপনার মতো শান্তশিষ্ট ছেলের এমন বদরাগী ভাই কি করে হয়!

মেঘ নিজের নামে এগুলো শুনে ভিতরে ভিতরে রাগে ফুঁসছে তবে সে যেহেতু তার শান্তশিষ্ট ভাই নীড় সেজেছে তাই তাকে মুখ বুঁজে শুনতে হবে। সাবিলা আবার বলে,

–কিন্তু আমি মেঘ ভাইয়ার রাগ দেখেই তাকে ভালোবেসেছি। তার দুষ্টামি গুলোই আমার মনে ভালোবাসা তৈরি করেছে। হ্যাঁ, আমি ভালোবাসি “মেঘরাজ” কে। আমার মেঘরাজ সে!

আর মেঘ আবেগে আপ্লুত হয়ে চশমা খুলে খুশিতে বলে দেয় সে মেঘ। ”
—–

সাদিয়া সব শুনে খুশি হয় কারণ আজ তারা দুইজন না চাইতেও তাদের ভালোবাসার কথা তাদের ভালেবাসার মানুষটার সামনে জাহির করেছে।
সাদিয়া সাবিলাকে নিজের কথা গুলোও বলে এরপর দুই বান্ধুবী হাসতে থাকে।

রিসেপশন শেষ হবার পর আরোহী ও শুভ্রকে আরোহীদের বাড়িতে আনা হয়। আরোহী ও শুভ্রের জন্য দুইটা গেস্ট রুমের একটা আগেই পরিপাটি করে রেখেছিল। আরোহীর মন মতো ওই রুমটা সাজানো। রুমটা উত্তর মুখী। অফহেয়াইট দেয়াল আর দৈর্ঘ্যে ছোট তবে প্রস্থে বড় ব্যালকনি আছে। আর ব্যালকনিতে একটা রাউন্ড দোলনা রাখা। ব্যালকনির শুধু সামনেই গ্রিল। আর ছোট ছোট ফুলের গাছ। জারবেরা, বেলি, অপরাজিতা, পর্তুলিকা, ক্যাকটাস ও গেইটফুল (লাল রঙের ফুল যেগুলোর গাছ লতার মতো বেয়ে বেরায় এবং চিকন সরু পাতা) গাছ আছে। অপরাজিতা ও গেইটফুলের লতা ব্যালকনির গ্রিল বেয়ে আছে। লাল ও নীল ফুলের সমাহার গ্রিলের দুই পাশ জুরে যেনো অপরূপ সৌন্দর্য ফুটিয়ে রেখেছে।
রুমে বেড, কাঠের আলমিরা, দেয়াল আয়না ও আর যা প্রয়োজনীয় আসবাব লাগে সব আছে। তবে সবকিছু ডার্ক চকলেট রঙের।

আরোহী রুমে এসে দেখে শুভ্র ইতিমধ্যে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় সটান হয়ে শুয়ে পরেছে। সারাদিন তার মন ও শরীরের উপর দিয়ে কম তো ধকল যায় নি!
আরোহী আত্নীয় স্বজনদের হাত থেকে মাত্র নিস্তার পেলো। আত্নীয় স্বজনরা শুভ্রকেও ধরেছিল কিন্তু শুভ্রকে বেশিক্ষন রাখতে পারে নি। নাস্তা-পানি খাওয়ার পর সে রুমে চলে এসেছিল। আর আরোহী এখন রাত নয়টা বাজে সেখান থেকে ছাড়া পেয়েছে। আরোহী তোয়ালে ও নিজের কম্ফোর্টেবল ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে। সেই দুপুর বারোটা থেকে এই ভারী বেনারসি পড়ে আছে সাথে তো এই ভারী স্টোনের জুয়েলারি। মেকআপটা হালকার মধ্যে করাতে কালকের থেকে একটু স্বস্তিতে আছে।

চলবে ইনশাআল্লাহ,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here