প্রেমময় আসক্তি ২ পর্ব ৬+৭+৮

#প্রেমময়_আসক্তি_২
#পর্ব_৬
#নন্দিনী_চৌধুরী

৬.
রোদেলা বারান্দায় বসে আছে মুন কিছুক্ষন আগে এসে ওকে খাবার খাইয়ে দিয়ে গেছে। রোদেলার শরীলের গ্রোথ আগের থেকে একটু ভালো হইছে। রোদেলা বারান্দায় বসে আকাশ দেখছে আকাশে কিছু সময় পর পর বাজী ফাঁটছে রোদেলা সেগুলা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। অনেকটা সময় পর রোদেলা রুমে এসে শুয়ে পরলো। আজকাল অল্পতেই ক্লান্ত লাগে ওর।

রাত ১০টায় আদৃতারা বাসায় আসে। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে নেয়। বাহির থেকে ওরা খেয়ে আসছে আর খাবার নিয়ে আসছে। রাফসান বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে ওদের সাথে রুমে বসে কথা বলছে।

রাফসান: তারপর কেমন মজা করলে আজকে?
রুবা: আর বলোনা যেই গায়কের আজকের সো ছিলো সে আসেনাই তার জায়গায় আরেকজন এসেছে। আজকে আরিয়ানের সো ছিলো কিন্তু পার্সোনাল সমস্যার কারনে সে আসেনাই। তবে ভালো লেগেছে আজকে অনেক। ঘুরেছি অনেক।
মুন: তোদের সাথে রোদেলাকে নিয়ে গেলে ভালো হতো। মেয়েটা সারাদিন ঘরে একা বসে থাকে।
রাফসান: ভাবছি কাল রোদকে নিয়ে পাহাড় দেখতে নিয়ে যাবো। সবাই যাবো আমরা। একটু ঘুরলে ওর ভালো লাগবে।
রুবা: কিন্তু পাহাড়ে নেওয়া ঠিক হবে? না মানে আমি কেন বললাম এটা বুঝতেই পারছো!
রাফসান: হ্যাঁ, বুঝতে পেরেছি। কিছু হবেনা এতে।
মুন: আচ্ছা।

এরপর সবাই সবার রুমে ঘুমাতে চলে গেলো। রোদেলা ঘুমিয়ে আছে রাত আরেক পাশে ঘুমানো। রোদেলা আজকেও অনুভব করছে ওর পেটে কেউ মুখ গুঁজে আছে। রোদেলা চোখ খুলে দেখে আদ্রিয়ান। রোদেলা আদ্রিয়ানকে দেখে আজকেও অবাক হয়। রোদেলা উঠে বসতেই আদ্রিয়ান রোদেলার কপালে চুমু দিয়ে বলে,

আদ্রিয়ান: আমার বউটা আর আমার বাচ্চারা কেমন আছে?
রোদেলা: ভালো নেই। আপনাকে ছাড়া ভালো নেই আমরা।
আদ্রিয়ান: ভালো যখন থাকতে পারবেনা আমাকে ছাড়া তবে কেন মারলে আমাকে।
রোদেলা:………..।
আদ্রিয়ান রোদেলার পেটে অনেক গুলো চুমু দিয়ে পেটে কান পেতে রাখে। বাচ্চাদের অনুভব করছে সে। তার বাচ্চারা তাকে জানান দিচ্ছে বাবা আমরা ভালো আছি। আদ্রিয়ান উঠে রোদেলার সামনে বসে ওর গালে হাত রেখে বলে,

আদ্রিয়ান: কেন করলা এমন রোদেলা? একবার মনে হয় নাই আমাকে ছাড়া তুমি অচল! আমাকে ছাড়া কিভাবে থাকবা তুমি? আমাকে মেরে দেখো আজ তুমি কি ভালো আছো? নেইতো ভালো। আজ দেখো আমার বাচ্চারাও তার বাবার ভালোবাসা পাচ্ছেনা। এটা কি অন্যায় করলেনা তুমি তাদের সাথে? কেন করলে এমন?
রোদেলা এবার মুখ খুললো,

রোদেলা: আপনি আমার বাবা-মাকে মেরেছেন। আমাকে ঠকিয়েছেন। তাই আমি আপনাকে শাস্তি দিয়েছি। লিজার পেটেও তো আপনার সন্তান ছিলো। তাকে আপনি ঠকিয়েছেন।
আদ্রিয়ান রোদেলাত পেটে হাত রেখে বলে,
আদ্রিয়ান: আমার বাচ্চাদের কসম করে বলছি লিজার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক ছিলোনা। তাকে শুধুই আমি আমার বন্ধু মনে করতাম। সিডনিতে তার সাথে আমার পরিচয়। ওর সংসারের অনেক খরচ আমি বহন করেছি। ওর দিকে আমি কোনোদিন কোনো খারাপ নজরে তাকাইনি। আমি শুরু থেকেই শুধু আর শুধু তোমাকে ভালোবেসেছি। তুমিই সেই নারী যাকে আমি ছুঁয়েছি। আর তুমিই সেই নারী যার গর্ভে এখন আমার সন্তান আছে। লিজার সাথে আমার যখন কোনো রিলেশন হয়নি সেখানে ওর পেটের বাচ্চা আমার কিভাবে হবে?
রোদেলা: ঠিক আছে মানলাম লিজা মিথ্যা বলছে। কিন্তু আমার বাবা-মা তারা কি ক্ষতি করেছিলো আপনার? তাদের কেন মারলেন আপনি? কেন আমাকে এতিম করে দিলেন বলেন কেন?
আদ্রিয়ান: তুমি কিভাবে বিশ্বাস করলে যে আমিই তাদের মেরেছি?
রোদেলা: আমার কাছে প্রমান এসেছিলো। সেখানে দেখাই যাচ্ছিলো আপনি ওদের মেরেছেন।
আদ্রিয়ান: তোমার কাছে কি প্রমান আছে? এখনো সেগুলো আছে?
রোদেলা: হ্যাঁ, আমার পার্সের ব্যাগে ভিডিও রেকোর্ডারটা আছে।
আদ্রিয়ান: আমাকে দেওতো।
রোদেলা উঠে গিয়ে পার্স থেকে রেকোর্ডারটা এনে দিলো।
আদ্রিয়ান: খুব তাড়াতাড়ি আসলে সত্যি তুমি জানবে। সেদিন তুমি হাজার চাইলেও আমাকে পাবেনা রোদেলা।

রোদেলা আবার কিছু বলবে কিন্তু সেদিনের মতো আবার সব ধোঁয়া ধোঁয়া হয়ে গেলো। আর রোদেলা আবার সেদিনের মতো জ্ঞান হারালো।

~পরেরদিন সকালে~

রোদেলা আজকেও সকাল উঠে রাতকে আদ্রিয়ানের আসার কথা বলছে। কিন্তু রাত আজকেও তা হেসে উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু রোদেলা এটা এড়িয়ে যেতে পারছেনা। সে তার ব্যাগ চেক করে দেখে যে আসলেই কাল রাতে সে আদ্রিয়ানকে ভিডিও ক্লিপ দিয়েছে। মানে সত্যি আদ্রিয়ান এসেছিলো। কিন্তু এটা রাত বিশ্বাস করছেনা। রোদেলা বুঝতে পারছেনা আদ্রিয়ান শুধু তার সামনে কেন আসে। আর আদ্রিয়ান আসলে রাতকে হাজার ডাকলেও সে ঘুম থেকে উঠেনা। রোদেলাকে রাত নাস্তা করিয়ে মুনের কাছে যায়।

_____________________________

আরিয়ান, নীলাদ্র, নন্দিনী, রুহি মিলে নাস্তা করছে। আজকাল রুহি আর আরিয়ানের দিকে তেমন তাকায়না তাকালেই সেদিনের অপমানের কথা মনে পরে যায়। রুহি মাথা নিচু করে নাস্তা করছে তখন নন্দিনী বলে,

নন্দিনী: আচ্ছা শুনো। চলোনা আজকে পাহাড় দেখতে যাই। এখানে আসলাম কিন্তু এখনো পাহাড় দেখা হলোনা।
আরিয়ান: হুম যেতে চাইলেও যাওয়া যেতে পারে।
নীলাদ্র: তাহলে চলো আজকে যাই।
নন্দিনী: হ্যাঁ আজকে যাই চলো।
আরিয়ান: আচ্ছা ঠিক আছে।

আরিয়ান নাস্তা করে উঠে চলে আসে। বাকিরাও নাস্তা করে যার যার মতো চলে যায়।

~এদিকে~

রাফসান রোদেলার রুমে এসে দেখে রোদেলা বসে আছে। রাফসান এসে রোদেলার মাথায় হাত রাখে। মাথায় কারো হাত টের পেয়ে রোদেলা তাকিয়ে দেখে রাফসান। রোদেলা মুচকি হাসে ভাইকে দেখে। রাফসান রোদেলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,

রাফসান: বিকালে রেডি থাকিস আজকে সবাই মিলে পাহাড় দেখতে যাবো। আর শোন কোনো বাহানা চলবেনা ওকে। তুই যাবি মানে যাবি।
রোদেলা: 😒আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিলেই না বাহানা করমু।
রাফসান: এই জন্যতো সুযোগ দিলাম না, যাতে তুই বাহানা করতে না পারিস।
রোদেলা:😒

রাফসান রোদেলার সাথে আরো কিছুটা সময় কথা বলে চলে আসে।

___________________________

দীর্ঘসময় লিজাকে খুবলে খেয়ে আশরাফ এখন শুয়ে আছে। পাশে লিজা গায়ে চাদর টেনে বসে আছে। আশরাফকে তার অনেক চিন্তিত মনে হচ্ছে তাই আশরাফকে জিজ্ঞেশ করে,

লিজা: কি হয়েছে তোমার? তোমাকে এতো চিন্তিত লাগছে কেন?
আশরাফ: লাখ টাকার ক্ষতি হয়েগেছে আমার। তার উপর ওই আদ্রিয়ানের মতো দেখতে ছেলেটার এখনো কোনো পেলাম না।
তো চিন্তা হবেনাতো কি হবে।
লিজা: আচ্ছা তুমি অহেতুক চিন্তা করছো কেন ওই ছেলে যে আদ্রিয়ান হবে এমন কোনো মানে নেই। দুনিয়ায় অনেক মানুষ আছে যাদের দেখতে একই রকম লাগে কিন্তু আসলে তারা এক নয়।
আশরাফ: হুম বুঝলাম।

লিজা উঠে শাওয়ার নিতে যায় আর আশরাফ আবার চিন্তায় মগ্ন হয়ে যায়।

~এদিকে~

বিকালে আরিয়ানরা বের হলো পাহাড়ের উদ্দেশ্যে। এদিক দিয়ে রাফসানরাও বেরোলো পাহাড়ের জন্য। আরিয়ান মাস্ক আর হুডিওয়ালা জ্যাকেট পরেছে। যাতে আসে পাশের কেউ তাকে চিনতে না পারে।

আরিয়ানরা পাহাড়ে আসে নীলাদ্র নন্দিনী ও রুহিকে ছবি তুলে দিচ্ছে। রাফসানরাও আসছে এখানে। রোদেলা একটা মিষ্টি কালারের গোল জামা পরেছে সাথে কালো হিজাব। দেখতে ভালোই লাগছে ওকে। রোদেলা পাহাড়ের আসে পাসের জায়গাটা ঘুরে ঘুরে দেখছে। হঠাৎ অসাবধানতায় পিছলে পরে যেতে নিলে কেউ ওকে খুব শক্ত করে টেনে জরিয়ে ধরে। রোদেলা আচমকা এমন হয়ায় খুব ভয় পেয়ে যায়। আসতে করে রোদেলা চোখ খুলে দেখে একজন মাস্ক পরা লোক ওকে বাঁচিয়েছে। আরিয়ান কণ্ঠ শক্ত করে বলে,

আরিয়ান: Are You Crazy! আর একটু হলেই আপনি সোজা নিচে পরে যেতেন। এই অবস্থায় পাহাড়ের এতো কাছে আসার কি দরকার আজব! সাবধানে চলা ফেরা করতে পারেন না?
রোদেলা আরিয়ানের বকার থেকে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। এই চোখ যে ওর খুব চেনা। রোদেলা আরিয়ানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আসতে করে বলে,

রোদেলা: জ্বী ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য। আসলে বুঝতে পারিনি যে এমন হবে।

ওদের কথার মাঝে নীলাদ্র আসলো সেখানে। নীলাদ্র এসে আরিয়ানকে বলে,
নীলাদ্র: হেই কি হয়েছে এখানে?
আরিয়ান: কিছুনা নীলাদ্র। এই মেয়েটা আর একটু হলেই অসাবধানতায় পরে যেতো নিচে আমি বাঁচিয়েছি।
নীলাদ্র: ওহ আচ্ছা। তা আপু আপনি কি একা আসছেন?
রোদেলা: না ওইযে আমার ভাইয়া আর বাকিরা।
নীলাদ্র: তাহলে চলেন তাদের কাছে আপনাকে দিয়ে আসি।

নীলাদ্র রোদেলাকে নিয়ে রাফসানদের কাছে দিয়ে আসে আর বলে আসে ওকে সাবধানে রাখতে একটু আগের ঘটনাও বলে ওদের। রাফসান দুঃখিত জানায় আর বলে এখন আর রোদেলাকে একা ছাড়বেনা।

নীলাদ্র চলে আসতে নিলে রোদেলা পিছন থেকে ওকে ডাক দেয়,,,,

“এইযে শুনেন ভাইয়া।”
#প্রেমময়_আসক্তি_২
#পর্ব_৭
#নন্দিনী_চৌধুরী

৭.
নীলাদ্র রোদেলার ডাকে পিছনে ঘুরলো তারপর রোদেলাকে বললো,

নীলাদ্র: জ্বী বলেন।
রোদেলা: আচ্ছা আপনি কি RJ Niladro?
নীলাদ্র: জ্বী কিন্তু আপনি আমাকে চিনলেন কিভাবে?
রোদেলা: আমি আপনার সো শুনি। একটা কুইজে আমি বিজয়ি হইছিলাম।
নীলাদ্র: অহ আপনি মিস রোদেলা?
রোদেলা: জ্বী। আচ্ছা কিছু মনে না করলে একটা কথা বলতাম।
নীলাদ্র: হ্যাঁ বলুন।
রোদেলা: আপনার সাথে সো তে আরেকজন থাকে সে কি উনি যে আমাকে বাঁচালো?
নীলাদ্র: হ্যাঁ, উনি আমার বড় ভাই আরিয়ান। আমার চাচাতো ভাই সে।
রোদেলা: ওহ আচ্ছা ঠিক আছে।

নীলাদ্র তারপর চলে আসে রোদেলাদের থেকে। রাফসান রোদেলাকে বকা দেয় একা একা পাহাড়ের কাছে যাওয়ার জন্য। রাফসান রাতকে বলে দিয়েছে রোদেলাকে আর একা না ছাড়তে। বাকিটা সময় রোদেলার সাথে ছিলো রাত। পাহাড় দেখে বাহিরে থেকে খেয়ে রাফসানরা বাসায় আসে। রোদেলা অনেক ক্লান্ত থাকায় ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে যায়।

আরিয়ানরা হোটেলে ফিরে আসে। আরিয়ান ফ্রেশ হয়ে এসে খাটে বসে। আরিয়ান মনে মনে ভাবতে লাগে,,,

“যখন কেউ কারো জন্য কাঁদে,, সেটা হলো আবেগ”
“যখন কেউ কাউকে কাঁদায় সেটা হলো প্রতারণা”
“আর যখন কেউ কাউকে কাঁদিয়ে নিজেও কেঁদে ফেলে,,
“সেটাই হলো প্রকৃত ভালোবাসা”
[হুমায়ুন আহমেদ স্যার🥀]

আমিও তো তোমাকে কাঁদিয়ে কেঁদে ফেলি। আমিতো পারিনা তোমার থেকে দূরে থাকতে। কিন্ত তোমার জন্য আজ আমি তোমার থেকে দূরে।

“যার রাগ বেশি সে নীরবে অনেক ভালোবাসতে জানে ”
“যে নীরবে ভালোবাসতে জানে তার ভালোবাসার গভীরতাও বেশি”
“আর যার ভালোবাসার গভীরতা বেশি তার কষ্টটাও বোধহয় অনেক বেশি”
[হুমায়ুন আহমেদ স্যার]

আমার রাগ বেশি ছিলো কিন্তু ভালোবাসাটাতো কম ছিলোনা। কিন্তু তুমি আমাকে বিশ্বাস করলোনা। কেন এমন করলা আমার সাথে?

“ভালোবেসে তাকে যদি বিশ্বাস না করতে পারো, তবে তাকে ভালোবেসোনা। জানোতো মেরুদন্ড ছাড়া মানুষ চলতে পারেনা, বিশ্বাস ছাড়াও ভালোবাসা টিকতে পারেনা।”
[নন্দিনী]

আরিয়ান কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরে।

~এদিকে~

রুহি নিজের রুমে বসে ভাবছে,,

রুহি: আজকে আরিয়ান ওই মেয়েটাকে বাঁচানোর পর থেকে ওই মেয়েটাকেই শুধু দেখে যাচ্ছিলো। ইভেন মেয়েটা পরতে নিলে আরিয়ান ধরে ফেলে। ওর চোখে আমি ভয় দেখতে পাচ্ছিলাম ওই মেয়েটার জন্য। আরিয়ান মেয়েটাকে নিয়ে এতো পজিসিব কেন হচ্ছিলো তাহলে কি আরিয়ান! না না কি ভাবছি আমি এসব। অই মেয়েটা বিবাহিত প্রেগন্যান্ট। আরিয়ান এসব ছিহ ছিহ। না আমাকে জানতে হবে আরিয়ান কাকে ভালোবাসে। আমার আরিয়ানকে আমি কাউকে দেবোনা।

রুহি গিয়ে নন্দিনীর পাশে শুয়ে পরে।

সকালে,,
রোদেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় আসে। বারান্দায় চেয়ারে বসে সকালে বাতাস নিচ্ছে। যেহতু শীত পরেছে এখন তাই হালকা কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। রোদেলা শরীরে একটা চাদর জরিয়ে নিয়েছে। এই সময় ঠান্ডা লাগলে বেবিদের সমস্যা হবে। রোদেলা বাহিরে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলো তখন ওর নজর গেলো জগিং স্যুট পরা আরিয়ানের দিকে। আরিয়ান জগিং করার সময় মাস্ক পরে এসেছে এটা দেখে রোদেলা আরো অবাক হয়েছে।

রোদেলা: জগিং করতে এসেও মাস্ক পরে কেউ জানতাম না। কি আজব লোকরে বাবা।

রোদেলা আরিয়ানকে খুব ভালো করে অভজার্ব করলো। আরিয়ান জগিং শেষ করে হোটেলের দিকে চলে গেলো। আর রোদেলাও উঠে রুমে চলে আসলো।

মুন উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা বানালো সাথে রুবাও হেল্প করলো। রাত এসে রোদেলার খাবার নিয়ে গিয়ে ওকে খাওয়ালো তারপর বাকিরাও খেয়ে নিলো। রুবা আজ অনেকদিন পর ফেসবুকে এসেছে। ফেসবুকে এসেই দেখে আরাভ মেরিড স্টেটাস দিয়েছে কিন্তু কার সাথে সেটা দেয়নি। রুবা এটা দেখে হাত থেকে ফোনটা পরে যায়। শরীরটা কেমন কাঁপছে ওর। রুবা ধপ করে বিছানায় বসে পরে। অবশেষে আরাভ সারাজীবনের মতো হারিয়ে গেলো ওর জীবন থেকে। রুবা শব্দ করে কান্না করে দিলো। আজ ওর বাবার কথা রাখতে গিয়ে ভালোবাসাকে হারিয়ে ফেললো। রুবার বাবা রুবার বাবাকে নিজের কসম দিছে তার পছন্দে বিয়ে না করলে রুবা তার মরা মুখ দেখবে। রুবা তাই আরাভের থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলো। আর আজতো হারিয়ে ফেললো আরাভকে একেবারের জন্য।

“ভালোবেসে তাকে পেতেই হবে এটাই কথা নয়। নাহয় মানুষটা হলোনা আমার! নাহয় সে বাস্তবে অন্য কারো! কিন্তু কল্পনায় সে শুধুই একান্ত আমার।”
[নন্দিনী]

রুবা নিজেকে শান্ত করে বাহিরে আসে। যা হয়েছে তা কাউকে জানানো যাবেনা।

____________________________

আশরাফের আরেক কালো টাকার গোডাউন পুরে ছাই হয়ে গেছে। আশরাফের এবার মাথায় হাত দেওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। আশরাফ মাথায় হাত দিয়েই বসে আছে তখন ওর এক লোক আসে ওর কাছে।

লোক: বস!
আশরাফ: কি?
লোক: বস ওই আদ্রিয়ানের মতো দেখতে লোকটার খবর পাইছি।
আশরাফ: কি খবর পাইলি বল।
লোক: বস লোকটার নাম আরিয়ান খান। হাসান খানের ছেলে। এতোদিন অস্ট্রেলিয়া ছিলো এখন বাংলাদেশে আসছে। পেশায় একজন গায়ক। দেখতে আদ্রিয়ানের মতো কিন্তু আমার মনে হয়না এটা আদ্রিয়ান।
আশরাফ: তুই আদ্রিয়ানকে চিনস না। আমার থেকে ভালো। এটা আরিয়ান না আদ্রিয়ান তা জানার উপায় আছে আমার কাছে।
লোক: কি?
আশরাফ: রোদেলা! রোদেলা শুনছি প্রেগন্যান্ট। আদ্রিয়ানের জান রোদেলা আর এখন তো বাচ্চাও আছে। কোনো বাপ নিশ্চই তার সন্তানকে মরতে দেবেনা আর কোনো স্বামীও স্ত্রীকে মরতে দেবেনা। খোজ লাগা রোদেলারা কোথায় আছে।
লোক: আচ্ছা বস।

লোকটা যাওয়ার পর আশরাফ একটা বিশ্রি হাসি দেয়।যদি তুই আদ্রিয়ান হয়ে থাকিস তবে আমার হাতে তুই আবার মরবি।

~এদিকে~

আরিয়ান নতুন গানের সিডি নিয়ে কাজ করছে আর নীলাদ্র বসে বসে বাদাম খাচ্ছে। দূরে নন্দিনী আর রুহি বসে আড্ডা দিচ্ছে।

নীলাদ্র: ব্রো আমি একটা জিনিশ ভাবতেছি?
আরিয়ান: কি?
নীলাদ্র: ভাবছি গতকাল অই রোদেলা মেয়েটা তোমাকে চিনলো কিভাবে?
আরিয়ান: কিভাবে মানে সো দেখে তাই শুনছে।
নীলাদ্র: ব্রো আমাদের সো দেখা না শুনা যায়। সে তো জাস্ট তোমার কন্ঠ শুনেছে দেখেনি। মাস্ক পরা অবস্থায় তোমাকে চিনে ফেললো।
আরিয়ান: ছাগল তোকেও তো চিনছে,, তো তোকে কি দেখছে নাকি!
নীলাদ্র: 🌚

___________________

আজকার হাসপাতাল টু বাড়ি এই নিয়েই কাটছে জীবন আরাভের। সবাইকে ইগনোর করে নিজের মতো থাকছে সে। যাকে ভালোবাসলো সেও ধোঁকা দিলো ওকে।

এক নিমিষে ভেংগে দিলো ওর ভালোবাসা। আরাভ বাসায় এসে কলিং বেল চাপ দিলে এক রমনী দরজা খুলে। আরাভ তাকে দেখে মিষ্টি হাঁসে।

জুঁই: এতো লেট করলা ভাইয়া?
আরাভ: রোগী ছিলো অনেক।
জুঁই: ঠিক আছে ফ্রেশ হয়ে খেতে আসো।
আরাভ:আচ্ছা।
জুঁই: ওহ হ্যাঁ দিপা আপু কল দিছিলো। তোমাকে দেখা করতে বলছে।
আরাভ: আচ্ছা ঠিক আছে।

আরাভ নিজের রুমে চলে আসে ফ্রেশ হতে।
ফ্রেশ হয়ে খেয়ে দিপাকে কল দেয় আরাভ। কথা বলে তারপর একটু ঘুমাতে যায়।

~অন্যদিকে~

রোদেলা পেটে হঠাৎ করে বেথা হচ্ছে। রোদেলা বিছানার চাদর খামছে ধরে চিৎকার দিলো। ড্রইং রুমে বসে থাকা সবাই দৌড়ে ওর রুমে আসলো। রোদেলা চিৎকার করে কান্না করছে।

মুন: কি হলো রোদেলা?
রোদেলা: আমার পেটে কেন জানি ব্যাথা করছে অনেক।
আদৃতা: কি বলো ৬মাসে তো পেইন হবার কথা না।
রাত: আরে আপনারা আগে মেডামকে হাসপাতালে নিয়া চলেন।

রাতের কথা শুনে আদনান রোদেলাকে কোলে নেয় মুন, রুবা, আদৃতা একটা গাড়ি মিল করে তারপর রোদেলাকে নিয়ে হাসপাতালের জন্য বের হয়। মুন গাড়িতে বসেই রাফসানকে কল দিয়ে জানিয়েছে। রাফসান জানিয়েছে ও আসছে।

রোদেলাকে নিয়ে হাসপাতালে আসলো সবাই। ডাক্তার রোদেলাকে চেকাপ করার জন্য ভিতরে নিয়ে গেলো। বেশ অনেকটা সময় পর ডাক্তার আসলো।

ডাক্তার: বাচ্চাগুলো একটু নরে গেছে পজিসন থেকে। আমার মনে হয় ওনার চলাফেরায় ভুল আছে ওনাকে সোজা ঘুমাতে বলবেন বসতেও বলবেন সোজা। তাহলে ঠিক আগের পজিসনে বাচ্চা গুলো আসবে। বাচ্চা পজিসন থেকে নড়ে গেছে তাই কিক করায় ব্যাথা বেশি লাগে। ওনাকে ভিটামিন গুলো খাওয়াবেন সময় মতো আর টেনশন ফ্রি রাখবেন। তাহলে সব ঠিক থাকবে।
মুন: আচ্ছা ডাক্তার
ডাক্তার চলে যাওয়ার পর রোদেলার কাছে গেলো সবাই। রোদেলাকে সেলাইন দিছে শরীল দুর্বল ওর তাই। মুন রাফসানকে কল দিয়ে জানায় আসতে হবেনা বেশি সিরিয়াস কিছুনা।

রাতের দিকে রোদেলাকে নিয়ে বাসায় চলে আসে সবাই। রোদেলাকে খাইয়ে ঘুম পারিয়ে দেয় রাত। তারপর ফোন নিয়ে বারান্দায় যায় আর ডায়াল করে একজনকে।
#প্রেমময়_আসক্তি_২
#পর্ব_৮
#নন্দিনী_চৌধুরী

৮.
সকালের মিষ্টি রোদে ঘুম ভেংগে যায় রোদেলা। ভালোভাবে ঘুমের রেশটা কাটিয়ে আসতে করে উঠে বসে। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে ৬:৩০ বাজে। নামাজটা আজকে পড়া হলোনা তার। রোদেলা উঠে ফ্রেশ হয়ে আসে তারপর গায়ে একটা চাদর দিয়ে বের হয় বাহিরে। হাঁটতে ইচ্ছে করছে ওর। রাত ঘুমিয়ে আছে তাই ও একাই এসেছে। রোদেলা হেঁটে হেঁটে চারিপাশটা দেখছে। খুব কম লোক বের হয়েছে কেউ কেউ অনেক গরম কাপড় গায়ে জরিয়ে বেরিয়েছে, কেউ আবার কিছুই গায়ে নেয়নি রোদেলা সব চেয়ে চেয়ে দেখছে। হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা দূরে এসেছে রোদেলা। হঠাৎ পা মচকে পরে যেতে নেয় রোদেলা,তখনি কেউ ওকে ধরে ফেলে। কিন্তু পায়ে ব্যাথা পাওয়ায় রোদেলা চিৎকার দেয়,

রোদেলা:আহহ!
রোদেলা লোকটার কাধে ভর দিয়ে বসে পরে। রোদেলার চোখ বন্ধ করে রেখেছিলো আসতে করে চোখ খুলে দেখে আরিয়ান। আজকেও আরিয়ান কালো মাস্ক কালো হুডি পরা। আরিয়ান রক্তচক্ষু দিয়ে তাকিয়ে আছে রোদেলার দিকে রেগে বলে,,,

আরিয়ান: What The F***** এতো কেয়ারলেস কেন আপনি? সেদিনও পরে যেতে নিয়েছিলেন আজকেও। আইডিয়া আছে আপনার কোনো এই সময়টা কত রিস্কি হয়। তাও কত কেয়ারলেস আপনি। একা একা এখানে কি করছেন। আপনার সাথে আপনার কেয়ার করা মেয়েটা কই?
রোদেলা ভয়ে কোনো কথা বলতেপারছেনা। আরিয়ান সেটা বুঝে ওর হাতের পানির বোতলটা রোদেলার দিকে এগিয়ে দেয়। রোদেলা গটগট করে পানি খেয়ে নেয়। তারপর আসতে আসতে বলতে লাগে,

রোদেলা: আসলে আমার বাসায় একা ভালো লাগছিলোনা তাই একটু হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। আসলে রাত ঘুমিয়ে আছে তাই ওকে ডাকিনি। বুঝতে পারিনি আমি যে এমন হবে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাকে বাঁচানোর জন্য।

রোদেলা উঠে দাঁড়াতে গেলে পায়ের ব্যাথার কারনে আবার বসে পরে।

রোদেলা: আহ!
আরিয়ান: কি হলো?
রোদেলা: পা মচকে গেছে।
আরিয়ান হাঁটু গেড়ে বসে পা দেখে যে আসলেই মচকে গেছে।
রোদেলা: এবার কি করবো। আমিতো ফোনও আনিনি সাথে।
আরিয়ান কিছু না বলে রোদেলাকে কোলে তুলে নেয়। ঘটনা হঠাৎ হওয়ায় চমকে যায় রোদেলা।
রোদেলা: আরে আরে কি করছেন? নামান আমাকে।
আরিয়ান: মচকে যাওয়া পায়ে কি উড়ে উড়ে যাবেন বাসায়।
রোদেলা আর কিছু বলেনা। আরিয়ান ওকে নিয়ে হাঁটছে আর মনে মনে বলছে,

আরিয়ান: আগে ছিলো বিড়ালের বাচ্চা এখন হয়ে গেছে গোলগাল পান্ডা। আর এখন এই পান্ডার ভেতরেই দুইটা পান্ডার বাচ্চা আছে। গোলুমলু হয়ে গেছে একদম।

আরিয়ান রোদেলাকে নিয়ে ওদের বাসায় আসে। দরজায় বেল দিতেই মুন দরজা খুলে দেয়। রোদেলার আরিয়ানের কোলে দেখে অবাক হয়ে মুন বলে,

মুন: কি হয়েছে রোদেলার? ও আপনার কোলে কেন?
আরিয়ান: আগে ভেতরে আসি তারপর বলি?
মুন: হ্যাঁ, আসুন।

আরিয়ান রোদেলাকে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসিয়ে দেয়।
মুন এর মাঝে রাফসান আর বাকিদের ডাক দেয়।
রাফসান এসে রোদেলাকে আরিয়ানকে দেখে অবাক হয়ে বলে,
রাফসান: কি ব্যাপার? কি হয়েছে?
আরিয়ান: উনি বাহিরে একা একা গিয়েছেন।অসাবধানতায় চলতে গিয়ে পা মচকে পরে যেতে নিয়েছিলেন কিন্তু আমি ধরে ফেলেছিলাম। পায়ে ব্যাথা পাইছেন উনি।
রাফসান: সকালে উঠে তোকে না দেখেই বুজেছিলাম তুই বাহিরে গেছিস। রাততো যাচ্ছিলোই এখোনি। কেন এমন করিস বলতো! এই সময় সাবধানে থাকা লাগে জানিসনা?
মুন: তোকে কালকেই ডাক্তার বললো সাবধানে চলা ফেরা করতে। আর তুই আজকেই, আরে গেছিস রাতকে নিয়ে যাবিতো নাকি সাথে।
আরিয়ান: আচ্ছা এখন আগে ওনার পাটা ঠিক করেন। বাকি কথা পরেও বলতে পারবেন।
রাফসান: হ্যাঁ, দেখিতো দেখা আমাকে পায়ে কোথায় লেগেছে।

রাফসান রোদেলার পায়ে হাত দিতেই চিৎকার দেয় রোদেলা।

রোদেলা: অনেক ব্যাথা ভাইয়া।
রাফসান: মচকে গেছে তাই ব্যাথা। আমাকে দেখতে দে।
রোদেলা: না না আমার পা দেখাবোনা যাও সরো।

রোদেলা কিছুতেই পা দিচ্ছেনা দেখে আরিয়ান রোদেলার সামনে বসে তারপর ওকে বলে,

আরিয়ান: আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকুন একদম চোখ সরাবেননা।
রোদেলা আরিয়ানের চোখের দিকেই তাকিয়ে থাকে। একদম হারিয়ে যাচ্ছে চোখের গভীরতায়। আর এদিকে আরিয়ান রোদেলার মচকানো পা চাপ দিয়ে ঠিক করলো আর রোদেলা টেরও পেলোনা।

কাজ হয়ে গেলে আরিয়ান বলে,
আরিয়ান: হয়ে গেছে।
আরিয়ানের কথা শুনে হুস আসে রোদেলার।ইসস!এতোক্ষন ওনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম না জানি কি ভাবছেন উনি আমাকে। রোদেলা খেয়াল করলো ওর পায়ের ব্যাথাটা এখন নেই।

আরিয়ান উঠে দাঁড়িয়ে বললো,

” এখন তাহলে আমি আসি। ”

রাফসান আরিয়ানকে বললো

” এখনি চলে যাচ্ছো করছো! আমাদের সাথে নাস্তা করে যাও।”

আরিয়ান: না আজকে না। অন্য আরেকদিন আসবো। আজকে আমার একটু দরকারি কাজ আছে। তাই আমাকে এখন যেতে হবে।
রাফসান: তাহলে ঠিক আছে। আরেকদিন কিন্তু আমাদের বাসায় আসবে আর খেয়েও যাবে সেদিন।
আরিয়ান: আচ্ছা ঠিক আছে।

তারপর আরিয়ান চলে গেলো। আরিয়ান যাওয়ার পর রাত মুন কে বললো রোদেলার জন্য নাস্তা আনতে। মুন নাস্তা আনতে গেলো। আর রাত রোদেলাকে নিয়ে গিয়ে ফ্রেশ করিয়ে দিলো। তারপর মুন রোদেলার জন্য নাস্তা নিয়ে এলো।আর রোদেলা নাস্তা করে নিলো।

_________________________

রুহি নিজের রুমে বসে আছেম আজকে সকালের পুরো ঘটনাটা সে দেখেছে। আরিয়ানের পিছনে সেও বেরিয়েছিল হাঁটার জন্য। তখন সে খেয়াল করল কিছু পথ যাওয়ার পর আরিয়ান ওই সেদিনের মেয়েটাকে আজকে পরে যাওয়া থেকে বাঁচালো। তারপর সেই মেয়েটার জন্য আরিয়ান আজকেও কত কেয়ার দেখালো। সবশেষে মেয়েটাকে কোলে তুলে নিলো শুধুমাত্র মেয়েটা পায়ে ব্যথা পেয়েছিল বলে।

রুহি: আরিয়ানের ওই মেয়েটার জন্য এত কেয়ার কেন? কি হয় আরিয়ানের ওই মেয়েটা? যখোনই ওই মেয়েটা কোনো না কোনো বিপদে পড়ে তখনই আরিয়ান মেয়েটাকে বাঁচিয়ে নেয়। আচ্ছা মেয়েটার সাথে কি আরিয়ানের কোনো যোগাযোগ আছে।

রুহি এসব ভাবা বাদ দিয়ে ওর আরিয়ানের বাবাকে কল দিলো। এক মাত্র এখন সেই পারবে আরিয়ানকে তার করতে। ওদের বিয়ে আরিয়ানের বাবা ছাড়া কেউ দিতে পারবেনা।

~এদিকে~

আরিয়ান রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নেয়। খুব রাগ লাগছে ওর। রোদেলা এতো বেখেয়াল যে কেন সেটাই ও বুঝেনা। আরিয়ান রেডি হচ্ছে বাহিরে যাওয়ার জন্য আবার। আজকে ওর খুব দরকারি একটা কাজ আছে। আর মাত্র ৩দিন ওরা এখানে থাকবে তারপর চলে যাবে।

রোদেলা আদ্রিয়ানের ছবি নিয়ে বসে আছে। এই আরিয়ান আর আদ্রিয়ানের চোখের কতটা মিল তাই দেখছে রোদেলা।

রোদেলা নিজের পেটে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর বলছে,

“তোদের বাবা কত হ্যান্ডু ছিলো😇। তোরাও তোদের বাবার মতো হবি বুঝলি।”

রোদেলা আদ্রিয়ানের ছবিটা দেখছে আর বাবুদের এগুলা বলছে।

__________________________

২দিন পর,,,,,
পরশু এখান থেকে চলে যাচ্ছে আরিয়ানরা। রাফসান যাবে আরো ৪দিন পর। এক মাস লাগার কথা ছিলো ওর কিন্তু কাজ তাড়াতাড়িই হয়ে গেছে। তাই ৪দিন পর ওরা চলে যাবে। রোদেলারা সবাই সোফার রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে তখন বাসায় কেউ বেল দেয়। রাত গিয়ে দরজা খুলে দেখে কুরিয়ার ম্যান দাঁড়ানো। রাতকে দেখে রোদেলার কথা জানতে চায় আর জানায় রোদেলার নামে পার্সেল আছে। রাত পার্সেল নিয়ে রুমে আসে। রাতের। হাতে এতো বড় বক্স দেখে সবাই তাকিয়ে আছে।

রাত: রোদেলা আপু এটা তোমার জন্য আসছে?
রোদেলা: আমার জন্য! কে দিয়েছে?
রাত: জানিনা কুরিয়ারের লোকে তো বললো তোমার নামে।

রোদেলা বক্সটা ওপেন করলো। অনেক কালারের শাড়ি, গোল ঢিলাঢালা জামা, গাউন, অনেক জুয়েলারি, চকলেট, ফুল, গাজরা দিয়ে ভরা বক্স।
রুবা: এতো কিছু কে পাঠালো?
মুন: হ্যাঁ, তাইতো কে?
রোদেলা সাথে একটা চিরকুট পেলো।

চিরকুটটায় লেখা,,,

“এইযে বাবুদের আম্মু,,আপনিতো এখন পান্ডা হয়ে গেছেন। একদম পান্ডার মতো লাগে আপনাকে গোলগাল। শুনেন বাবুদের আম্মু এতো টাইফফিট জামা এখন আর পরা চলবেনা। ঢিলাঢালা জামা পরবেন তাহলে আরাম পাবেন। হাঁটাচলা করতেও সুবিধা হবে। মা হচ্ছেন এখন সচেতন হোন। আর বাচ্চাদের মতো কইরেন না। আপনার সন্তান আপনার সৌভাগ্য বয়ে আনুক দোয়া করি।”

রোদেলা চিরকুটটা পরে হা হয়েগেছে। কে পাঠালো এসব বুঝতে পারছেনা সে।

~এদিকে~

ক্যামেরায় রোদেলার এমন হা মুখ দেখে হাঁসছে একজন। তার পান্ডাটা ভালোই চিন্তায় পরেছে এসব পেয়ে।

“তুমি আমাকে যত দূরে ঠেলে দিয়েছোনা কেনো। আমি আছি সব সময় তোমার পাশে তোমার কাছে। ছায়া হয়ে হলেও তোমার পাশেই থাকবো। কারন আমি যে তোমাতেই সিমাবদ্ধ। তুমি যে আমার প্রেমের আসক্তি। ভয়ঙ্কর আসক্তি। তুমি আমার “প্রেমময় আসক্তি”।
[নন্দিনী]

#চলবে
#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here