প্রেমময় প্রহর পর্ব ১৪+১৫

#প্রেমময় প্রহর (deewana 2)
Urme prema (sajiana monir)
পর্ব :১৪

সায়রার শরীর অস্বাভাবীক ভাবে কাপছেঁ কিন্তু আজ সে ভয়ে কাপছেঁ না আজ আরসালের এই স্পর্শ আর তার কথাগুলো সায়রাকে কাপাঁচ্ছে ।
তার মনে বারবরই উঠাল -পাথাল করে দিচ্ছে ।আস্তে আস্তে আরসালের ঠোঁট জোড়া তার চুল ভেদ করে ঘাড়েঁ স্পর্শ করছে আর কোমড়ে জরিয়ে ধরা হাত দুটো আস্তে আস্তে পেট স্পর্শ করছে ।হঠাৎ শীতল হাতের স্পর্শ পেতেই তার পুরো শরীরে শিহরন তুলে দিচ্ছে সায়রা নিজের শরীরের পুরো ভর আরসালের উপর ছেড়ে দেয় এতে যেন আরসাল সায়রার সম্মতি পেয়ে যায় ।সে এক ঝাটকায় সায়রাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয় ।
সায়রা চোখজোড়া বন্ধ করে আছে ঠোঁট দুটো অস্বাভাবীক ভাবে কাপঁছে ।আরসাল সায়রার গালে আলতো করে হাত রাখে অদ্ভুদ এক অদৃশ্য মায়া যেন সায়রা ঠোঁট জোড়ার দিকে তাকে আকর্ষন করে যাচ্ছে ।সে না চাইতেও সে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তার কাছে এমন মনে হচ্ছে হয়তো এখন এই মুহূর্তে এই ঠোঁট জোড়া স্পর্শ যদি সে না নিতে পারে তাহলে হয়তো সবকিছু বৃথা এই পরিবেশ এই সকালের স্নিগ্ধ মাতাল হাওয়াও যেন তাই চাইছে অদ্ভুদ মায়া অদ্ভুদ মৌহ কাজ করছে তার মাঝে সে পারবেনা এই মুহূর্তে সায়রা থেকে দূরে সরে যেতে আর সে এই বৃথা চেষ্টা করতেও চাইছেনা আজ সে খুব করে চাইছে এই ঠোঁট দুটোর মধুর স্পর্শ নিতে নিজেকে বিলিন করে দিতে ।
সে আর এক মুহূর্ত ও বিলম্ব না করে সায়রার গোলাপী রসালো ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁটের ভাজে নিয়ে নেয় ।
এই স্পর্শ সায়রার পুরো শরীরে প্রতিটা শিরা উপশিরার মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে ।এক অদ্ভুদ ভালোলাগা কাজ করছে তার মাঝে ।এই প্রথমবার আরসাল তার একটা কাছে ।এই প্রথমবার আরসালের স্পর্শগুলো সে অনুভব করতে পারছে আজ আরসালের মাঝে এক মাদকতা কাজ করছে যা শুধুই তার রূপমোহীকে কাছে পাবার নেশা !
হঠাৎই দরজায় কেউ নক করতেই আরসালের হুস ফিরে সে সাথে সাথে সায়রা থেকে দূরে সরে যায় ।
সায়রার গাল লজ্জায় লাল হয়ে আছে মাথা নিচের দিকে করে রেখেছে লজ্জায় আরসালের দিকে তুলে তাকাতে পারছেনা ।মুখের কোন এক অজানা লজ্জা মাখা হাসি ।
আরসাল নিজেকে ঠিক করে বড় শ্বাস নিয়ে গলা ঝেড়ে দরজার কাছে যেয়ে দরজা খুলে দেখে রহিমা দাড়িয়ে আছে ।আর জিগাসা করতেই সে উত্তরে জানায় যে নিচে মুনতাহা বেগম আরসালকে নিচে ডাকছে ।আরসাল রহিমাকে জানাতে বলে যে সে আসছে ।রহিমা চলে যায় ।
আরসাল কিছুসময় সায়রাকে গভীর ভাবে দেখে সেখান থেকে চলে যায় ।
আরসাল বের হতেই সায়রা বেডে বসে দ্রুত বড় বড় নিশ্বাস ছাড়তে লাগে পাশে বেড বক্সের উপর রাখা পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে ঢক ঢক করে এক নিশ্বাসে পানিটুকু শেষ করে ।এখনো তার শরীর ভয়ংকর ভাবে কাপঁছে ।কিছুসময় আগের কথা মনে করতেই লজ্জায় মুখখানা হাত দিয়ে ডেকে ফেলে ।
সায়রা হালকা আওয়াজে বলে
-“ইসসসস কবে যেন এই লোকের এই হুটহাট প্রেমের অত্যাচারে আমার মরণ হয় !”

রিদ্ধি আদিকে রেডি করিয়ে দিচ্ছে ।আদি বেশ দুষ্টুমি লাফালাফি করছে ।রিদ্ধি আদির গায়েঁ ব্লেজার পরিয়ে দিতে দিতে বলে
-“বাবা দুষ্টুমি করেনা !
আম্মু কষ্ট হচ্ছে জামা পড়িয়ে দিতে ।”
আদি একদম রিদ্ধির কথা শুনছেনা আগের মতই লাফালাফি করে যাচ্ছে ।এমন সময় সায়ন রুমে প্রবেশ করতেই তার চোখ দুটো আটকিয়ে যায় রিদ্ধির দিকে গোল্ডেন আর সাদা কালারের কম্ভিনেশনের নেটের শাড়ি পড়ছে চুল গুলো খোপা করা ভারী মেকওভার করা একদম কোন অপশ্বরীর মত লাগছে তাকে ।চোখ জোড়া যেন একদম ফিরছেনা তার থেকে ।
সায়ন মনে মনে বলতে লাগে
-“উফফ বিয়ের ৫ টা বছর চলছে এখনো সেই প্রথম বারের মত নজর কাড়া রূপ যাতে বিন্দু মাত্র পরিবর্তন আসেনি ।
পাগল করে দিবে এই মেয়েটা !”
সায়ন রিদ্ধির দিকে এক পা এক পা করে এগিয়ে যাচ্ছে যতটা এগিয়ে যাচ্ছে ততটাই বুকের মাঝে অস্থিরতাটা বাড়ছে ।
রিদ্ধির কাছে যেতেই আদি সায়নের গলা জরিয়ে ধরে আদুরে কন্ঠে বলতে লাগে
-“বাবাাাাাাা দেখ আম্মু আমাকে বোকছে !”
রিদ্ধি অবাক চোখে একবার আদির দিকে তাকায় আরেকবার আদির দিকে তাকায় তারপর রিদ্ধি রেগে বলে
-“আমি কখন তোমাকে বোকলাম !
মিথ্যা বলছো কেন আদি ।”
আদি সায়ন কে জরিয়ে ধরে আগের মত আদুরে গলায় বলে
-“সত্যি বাবা !”
রিদ্ধি ছোট ছোট চোখ করে সায়ন আর আদিকে দেখছে তার গাল ফুলিয়ে হাত গুজে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে ।
সায়ন তা বুঝতে পেরে আদির দিকে তাকিয়ে বলে
-“তুমি মিথ্যা কেন বলছো বাবা তোমার আম্মু তো
শুধু দুষ্টামি করতে না করেছে ।
মিথ্যা বলা একদম ঠিক না ।
সরি বলো মা কে !”
আদি কান ধরে রিদ্ধির সামনে দাড়িয়ে বলে
-“সরি মা !
আর মিথ্যা বলবোনা ।”
রিদ্ধি আগের মত গাল ফুলিয়ে বলে
-“ইটস অকে “
সায়ন আদিকে বলে
-“তোমার দাদুন তোমাকে খুঁজছে ।
যাও দাদুর সাথে দেখা করে আসো !”
আদি সায়নের কোল থেকে নেমে বাহিরে চলে যায় ।
আদি যেতেই সায়ন রিদ্ধিকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বলতে লাগে
-“উফফ আমাকে খুন করার ইচ্ছা আছে নাকি ?
পাচঁ বছর হয়ে গেছে বিয়ের কিন্তু আজ ও সেই প্রথম দিনের মত নতুন বৌ লাগে ।
একটুও বদলাও নি !”
রিদ্ধি সায়ন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে
-“আপনি ও বদলানি আগের মতই রয়ে গেছেন না আপনার মন বদলিয়েছে !”
সায়ন বেশ বুঝতে পারছে রিদ্ধি কি উদ্দেশ্য করছে ।রিদ্ধি সায়নের দিকে নিজের ঘৃনার দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চলে যায় ।

বাড়ির গার্ডেনে বড় করে পেন্ডেল করা হয়েছে পুরো বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজানো বাড়ির একমাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা কোন কিছুতে কোন কমতি রাখেনি ।
ভিতরের ডেকোরেশন দেখে সবাই হা হয়ে আছে বেশ পরিপাটি করে সবটা সাজিয়েছে খানঁ বাড়ির বিয়ে বলে কথা সব কিছু একদম নজরকারা ।
সবাই মেহমানদের নিয়ে ব্যস্থ ।মুনতাহা বেগম সবার সাথে কথা বলছে ।অন্যদিকে মিস্টার খানঁ ও তার অফিসের ক্লাইডদের নিয়ে ব্যস্থ তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করতে ব্যস্থ ।

আরসালও বিভিন্ন কাজে ব্যস্থ হঠাৎ তার বন্ধুর সাথে কথা বলতে বলতে স্টেজের দিকে তার চোখ যায় একবার তাকিয়ে দ্বিতীয় বার আর চোখ ঘোরানোর সাদ্য হলোনা পলক ফেলার কথাও সে ভুলে গেছে চোখ জোড়া সেখানেই আটকিয়ে আছে ।কোন মেয়েকে যে লাল রং এ এতোটা ভয়ংকর রাখতে পারে তা তার জানা ছিলোনা ।
আজ তার রুপমোহিনী লাল রঙের শাড়িতে ভয়ংকর লাগছে যাকে বলে ভয়ংকর সুন্দর !
সিদুঁর লাল শাড়ি কমোড় পর্যন্ত বড় কার্লি খোলা চুল গুলো বার বার কমোড় ছুড়েঁ যাচ্ছে হরিণ টানা চোখ দুটোতে মোটা করে কাজল দেওয়া ঠোঁট দুটোতে ডার্ক রেড লিপিস্টিক গালে হাইলাইটারে চিকচিক করছে কানে ঝুমকা গুলো বার বার গলা স্পর্শ করছে আর কমোড়ে শাড়ির উপর দিয়ে বেল্টটা কমোড়টা জড়িয়ে আছে ।
আজ তার রূপ মোহিনী জলন্ত ‌অগ্নির রূপ নিয়েছে অগ্নি যেমন দেখতে সুন্দর হলে ভয়ংকর আজ সায়রার এই সৌন্দর্যটাও আরসালের বুকটাকে সেইভাবে জ্বালাচ্ছে ।
বুকের ভিতর অস্থিরতা কাজ করছে এক ঝড় উঠছে তার বুকের মাঝে যা কেবল সায়রাই পারবে থামাতে ।
আরসালের চোখ জোড়া এখনো সায়রার দিকে আটকানো সায়রার ঠোঁটের কোনার হাসিটা যে তার এই বুকের হাহাকার কি পরিমান বাড়িয়ে দিচ্ছে তা কেবল মাত্র আরসালই জানে ।
আজ আরসাল বার বার নিজেকে এই প্রশ্ন করে যাচ্ছে যে
-“সত্যি কি এই মেয়েটি তার স্ত্রী ?
তার সেই পিচ্ছি সায়রা যাকে এতটা বছর ধরে সে ভালোবেসে এসেছে ?
এই মেয়েটাকে পাওয়ার যোগ্য কি সে !”
পরোক্ষনেই আনমনে হেসে আবার ভাবতে লাগে
-“এই মেয়েটা তো তারই স্ত্রী ।
যার উপর পুরো অধিকার আছে তার ।
যোগ্য হোক আর না হোক সায়রা শুধু তারই দরকার পড়লে নিজের বুকের পাজরে বন্ধি করে রাখবে সায়রাকে তবুও কারো নজর পড়তে দিবেনা সে ।
ওর এই ভালোবাসাকে কেউ পাগলামো ভাবুক তাকে কি ও ওর মতই ভালোবেসে যাবে মন উজাড় করে !”
এসব ভাবতে ভাবতেই আরসাল আনমনে আবার হেসে উঠে এই ভেবে যে সায়রার ভালোবাসা তাকে পাগল করে দিয়েছে তার দিওয়ানা করে দিয়েছে ।
উফফফ আর পারছেনা এভাবে দূর থেকে নিজের ঘায়েল মন নিয়ে সেখান থেকে চলে যায় আর কিছু সময় এভাবে দেখলে হয়তো কোন অঘটন ঘটিয়ে ফেলবে ।

বর পক্ষ এসে গেছে ।আদিল আর সায়রী পাশাপাশি বসে আছে সায়রা রিদ্ধি আর সায়রীর বান্ধুবীরা বেশ মজা করছে তাদের সাথে আদিলের বন্ধুরা সাথে আছে ।
আরসালের পুরো দৃষ্টি সায়রার দিকে সেদিন তার অসাবধানতার কারনে সায়রার উপর ঐ বিপদ এসেছে তাই সে চায়না আজ এমন কিছু ঘটুক ।
সায়রাকে এক সেকেন্ডের জন্য ও নিজের চোখের আড়াল করছেনা ।
অন্যদিকে বরপক্ষ থেকে আসা মেয়ে গুলো চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে আরসালকে ।কেউ কেউ তো সিদ্ধান্ত ও নিয়ে নিয়েছে আরসালকে প্রপোজ করবে সায়রা আসে পাশে থাকায় ব্যপারটা সায়রার চোখের আড়াল হয় না ।
সায়রা পারছেনা মেয়েগুলো চুল টেনে ছিড়ে তাদের টাক করে দিতে ।
চিৎকার করে তার বলতে ইচ্ছে করছে যে
-“উনি আমার স্বামী !
স্বামীর দিকে চোখ দিলে তোদের চোখ খুলে বিরিং খেলবো ।”
কিন্তু শুধু বলতে পারছেনা ননদের বিয়ে বলে আর মেয়েগুলো বরপক্ষের বলে তারপরও নিজের রাগটাকে নিজের মধ্যে দমিয়ে রাখছে ।

এদিকে মুনতাহা বেগমের সাথে আদিলের ফুপির বেশ খাতির হয়েছে দুজন এদিক সেদিকের আলাপে মগ্ন ।এমন সময়ই সায়রা কিছু খুজঁতে খুজঁতে মুনতাহা বেগমের কাছে এসে বলে
-“মা বর মালা গুলো কোথায় ?”
মুনতাহা বেগম হাসি মুখে উত্তর দেয় তা রিদ্ধির কাছে রয়েছে সায়রা রিদ্ধির কাছে স্টেজে চলে যায় ।
এদিকে সায়রার দিকে একমনে তাকিয়ে আছে আদিলের ফুপি । তার সায়রাকে বেশ মনে ধরেছে ।সায়রাকে নিজের ছেলের বউ করতে চায় ।মুনতাহা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে
-“আপা আপনার মেয়েটা তো দেখতে মাশাল্লা বেশ রূপবতী ।সেই হলুদের দিন থেকে দেখছি যেমন রূপবতী ঠিক ততটাই গুনবতী ।
আমার ছেলের জন্য মনেমনে ঠিক এমনই একটা মেয়ে খুজঁছিলাম ।আমার ছেলে হলুদের দিন বাসায় ফিরে জানিয়েছে আপনার মেয়েকে নাকি তার খুব পছন্দ ।
আমি ও বলেছি যে আদিলের বিয়ের ঝামেলা শেষ হলে ব্যপারটা আপনাকে জানাবো প্রস্তাব নিয়ে আসবো ।
দেখেন দুজনকে পাশাপাশি কত মানাচ্ছে !”
মুনতাহা বেগম স্টেজের দিকে তাকিয়ে দেখে সায়রা পাশে আদিলের ফুফাতো ভাই দাড়ানো সায়রার দিকে তার নজর ।মুনতাহা বেগম ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকাতেই দেখে আরসাল দাড়ানো তার মানে সে সবটা শুনেছে ।মুনতাহা বেগমের ভয়ে কলিজা চাপ খেয়ে গেছে কারন তিনি নিজের ছেলেকে খুব ভালোভাবে চিনেন সায়রাকে নিয়ে সে কতটা পসেসিভ তা আর কতটা পাগল তা সে জানে ।নিজের রাগের বসে আবার কোন ঝামেলা করবে কিনা সেই ভয়েই তিনি আছে ।

আরসাল রেগে স্টেজের উপরে উঠে সায়রার হাত ধরে নিয়ে আসতে লাগে ।হঠাৎ আরসালের এমন কিছু করায় সায়রা বেশ অবাক হয় সে ‌অবাক চোখে তাকিয়ে আরসালের পিছনে পিছনে আসতে লাগে ।
আরসাল সায়রাকে মুনতাহা বেগম আর আদিলের ফুফির সামনে এনে দাড় করায় ।সায়রার যেন পুরো ব্যপারটা মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে কি হচ্ছে বা কি হবে সে কিছুই বুঝতে পারছেনা ।
তিনি ঐ মহিলাকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগে
-“মিড মাই ওয়াইফ মিসেস সায়রা আরসাল খানঁ ।
এই বাড়ির বড় বউ ।
আপনার ছেলের ভাগ্য ভালো যে সে এখনো সুস্থ আছে শুধু আজ আমার বোনের বিয়ে বলে আমি কোন ঝামেলা চাচ্ছিনা নয়তো আমার স্ত্রীকে দেখার আর তাকে নিজের বউ করার স্বাদ মিটিয়ে দিতাম এতক্ষনে হসপিটালে আইসিইউ তে থাকতো
আশা করি আপনি ব্যপারটা বুঝতে পারছেন দ্বিতীয় বার যেন আপনার ছেলের চেহারা আমার সামনে না পড়ে তাহলে খুব খারাপ হবে ।”
আরসালের এইসব কথা শুনতেই মহিলাটি ভয়ে ঢোক গিলে ।আরসাল সায়রার হাত ধরে টানতে টানতে বাড়ির দিকে যেতে লাগে চোখ মুখে ভয়ংকর রাগ ।
সায়রাকে রুমে নিয়ে যেয়ে দরজা লক কোন শব্দ না করেই সায়রার গলায় মুখ ডুবায় হঠাৎ এমন কিছু হওয়ায় সায়রা আশ্চর্যের সপ্তম আকাশে !

চলবে ……..❤️
#প্রেমময় প্রহর (deewana 2)
Urme prema (sajiana monir)
পর্ব :১৫

বাড়ির সব গেস্ট প্রায় চলে গেছে শুধু বাসার লোকজন রয়েছে সায়রীর বিদায়ের সময় সবাই খুব কান্না করেছে বাড়ির একমাত্র মেয়ের বিদায় পুরো বাড়ির মানুষ ভেঙ্গে পড়েছে মুনতাহা বেগমও অনেক কান্না করছে তার যেন কলিজার টুকরাটা তার থেকে দূরে সরে চলে গেল ।জন্ম দিলেই শুধু মা হয়না সায়রী বেশ ছোট যখন তার মা বাবা মারা গিয়েছে তখন থেকে মুনতাহা বেগম সায়রীকে লালন পালন করে বড় করেছেন ।আজ নিজের মেয়েকে বিদায় দিতে গিয়ে বেশ ভেঙ্গে পড়েছে মিস্টার খানের একই হাল রিদ্ধি আর মুন সবাইকে সামলিয়েছে ।
বিদায়ের সময় বেশ কয়েকবার সায়রী সায়রা আর আরসালকে খুজেঁছে কিন্তু মুনতাহা খান তাকে বলেছে তারা একটু কাজে বের হয়েছে কারন তিনি চাননি মেয়েটা বিদায়ের সময় কোন দুশচিন্তা নিয়ে যাক ।
এখন মুনতাহা বেগম বার বার শুধু দোয়া করে যাচ্ছে যাতে সব কিছু ঠি ক হয়ে যায় ।কারন তার নিজের ছেলের রাগ সম্পর্কে বেশ ধরনা আছে।

আরসাল সায়রার গলায় চোখ বন্ধ করে মুখ ডুবিয়ে আছে সায়রা বেডের সাথে চোখ বন্ধ করে হেলান দিয়ে আছে ।আরসালের ঘনঘন গরম নিশ্বাস তার গলায় পড়ছে আর তাতেই তার শরীর বার বার কেপেঁ উঠছে ।
সায়রা নিজের চোখ বন্ধ করে সময়টাকে অনুভব করছে অন্যদিকে আরসাল নিজের রাগ কমানোর চেষ্টা করছে ।
আগের মত গলায় মাথা ঠেকিয়ে আরসাল হালকা নেশা ধরানো আওয়াজে বলতে লাগে
-“কার উপর নিজের রাগ দেখাবো ?
তোমার উপর নাকি নিজের !”
সায়রার গালটা নিজের দু হাতের ভাজে নিয়ে গভীর ভাবে সায়রার দিকে তাকিয়ে থাকে তার চোখ দুটোতে যে কোন মৌহ লেগে যাচ্ছে মাথাটা ঝিমঝিম করছে সায়রার গালে হাত বোলাতে বোলাতে মাতাল কন্ঠে বলে
-“পাগল করে দেও তুমি আমাকে !
হ্যা একদম পাগল করে দেও ।
কে বলেছে এতটা সাজতে আজকের পর থেকে একদম সাজগোজ বন্ধ !
কারন আমি তোমার দিকে অন্যকারো নজর সয্য করতে পারিনা সে যেই হোক না কেন ।
আজকের পর থেকে তোমার সাজগোজ শুধু আমার জন্য হবে ।
তুমি শুধুমাত্র আমার জন্য সাজবে ।
যদি সম্ভব হতো তোমাকে নিজের বুকের পাজরে আবদ্ধ করে রাখতাম নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখতাম !”
আরসাল কাপাঁ কাপাঁ হাতে সায়রার চুল চোখ ঠোঁট স্পর্শ করতে করতে বলে
-“তোমার এই খোলা চুল তোমার এই হরিণটানা চোখ আর এই রসালো অমৃত স্বাদের ঠোঁট যে আমাকে কতটা অস্থির করে কতটা পাগল করে তোমার তার ধারনা আছে ?
আমি আস্তে আস্তে নিজেকে হারিয়ে ফেলছি তোমাতে ডুবে যাচ্ছি ।
তোমার এই চন্চল চোখ দুটোর মায়াবী চাহনি যে আমার বুককে হাজার বার ক্ষত বিক্ষত করে দেয় তা কি তুমি জানো ?
তুমি যে আমার নেশা তা কি তুমি জানো ?
তোমার নেশায় যে আমি বার বার নিজেকে হারিয়ে ফেলি তাকি তুমি বুঝ ?”
সায়রা আরসালের মুখে এমন অদ্ভুদ কথাবার্তা শুনে ফ্যাল ফ্যাল করে তার দিকে তাকিয়ে আছে আরসালের চোখ জোড়ায় আজ অন্যরকম পিপাসা অন্য এক নেশা দেখছে ।আরসালের এই অস্থির নেশা ভরা চোখ দুটো হাজার কথা বলতে চাইছে কিন্তু তা যেন মুখে বলে উঠতে পারছেনা ।
কোথাও দ্বিধা আর বাধাঁ রয়েছে ।
আরসাল সায়রার কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে বলতে লাগে
-“এতটা বছর তোমাকে না পাওয়ার যন্ত্রনা না পাবার পিপাসা আমাকে পাগল করে দিয়েছে !”
সায়রা মাথা তুলে আরসালের দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে বলল
-“এতটা বছর মানে ?
প্লিজ আজ অন্তত নিজের মনের কথা গুলো খুলে বলুন আর কত নিজের মধ্যে দমিয়ে রাখবেন !
প্লিজ আমাকে সবটা বলুন ।”
আরসাল সায়রাকে ছেড়ে সায়রার কোলে মাথা রেখে বড় নিশ্বাস নিয়ে চোখজোড়া বন্ধ করে শুয়ে পড়ে সায়রার কৌতহল দৃষ্টি এখনো আরসালের দিকে জুঁকে আছে ।আরসাল নিজের পুরোনো স্মৃতিতে ডুব দেয় ।মৃদ্যু শব্দে বলতে লাগে ।

আমার জীবন ছিল বরাবরই বেশ গোছালো নিজের প্রত্যেকটা কাজ পার্ফেক্টলি শেষ করতে বেশ পছন্দ করতাম ।একা থাকতে পছন্দ করতাম তাই বন্ধু ও হাতেগনা ছিলো বেশি লোকালয় পছন্দ ছিলোনা তাই ফেমিলি প্রোগ্রামেও খুব কম দেখা যেত ।
কিন্তু কে জানতো ঝড়ো হাওয়ার মত কেউ আমার জীবন একদম উলোট পালোট করে দিবে আমার পার্সোনালিটিটাই সে পরিবর্তন করে দিবে !
সেদিন ভার্সিটি থেকে ফিরতেই দাদু কড়া নির্দেষ দেয় যে তার সাথে তার বন্ধুর বাড়িতে যেতে হবে ।পুরো পরিবার যাচ্ছে আমাকেও যেতে হবে ।আমিও দাদুকে আর না করতে পারিনা যাওয়ার জন্য রাজী হয়ে যাই । যদিও ছোট বেলায় বেশ কয়েকবার ঐ বাড়িতে গিয়েছি তাই বাড়ির রাস্তা চিন্তে আর ভুল হলো না ।বাড়ির সামনে গাড়ি থেকে নামতেই হঠাৎ কানে নুপুরের শব্দ ভেসে আসে নুপুরের শব্দ যে দিক থেকে আসছে সেদিকে তাকাতেই দেখে সাদা জামা পড়া একটি মেয়ে বাড়ির পিছনে বাগানের দিকে দ্রুত পায়ে যাচ্ছে তার উড়নাটা মাটি স্পর্শ করছে কমোড় পর্যন্ত চুল গুলো হেলে দুলে বার বার তার কমোড় ছুয়েঁ যাচ্ছে মেয়েটা চোখের আড়াল হতেই আমি ভিতরে চলে গেলাম ।ভিতরে সবার সাথে কুশল বিনিময় করে ড্রইং রুমে সোফায় বসতেই হঠাৎ আমার চোখ যায় ড্রইং রুমের বা দিকের দরজার দিকে পর্দার আড়ালে এক জোড়া হরিণটানা চোখের দিকে ।চোখ জোড়া ফ্যাল ফ্যাল করে পর্দার আড়াল থেকে আমাদের দেখে যাচ্ছে চোখ দুটোতে যেন হাজার মায়া ভরা ।হঠাৎ তার চোখ আমার চোখে পড়তেই সাথে সাথে পর্দার আড়ালে সে চলে যায় তার পায়ের নুপুরের শব্দ আস্তে আস্তে দূরে ভেসে যায় ।সে চলে যেতেই আমি আর তা নিয়ে আর ভাবিনা ।
দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে সায়নের সাথে বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম হঠাৎই এক রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ কানে খিল খিল করে হাসির শব্দ এসে পৌছায় কেন জানো আমার মনে কৌতহল জাগলো সে কে তাকে দেখার ।তাই অবাদ্ধ মনের কারনেই আবার দু কদম পিছনে গেলাম পিছনে যেতেই আমার চোখ জোড়া আটকিয়ে যায় রুমের বারান্ধায় বসে থাকা সাদা পরীটির উপর ।খিল খিল করে মুখে হাত রেখে হেসে যাচ্ছে এই হাসি যেন ভুবন ভুলানো হাসি যা হাজার হাজার কোটি টাকার চেয়েও মূল্যবান ।এই হাসিতেই যেন যে কেউ নিজের সবটা উজাড় করে দিতে পারবে বাহিরের ঝড়ো হাওয়ায় তার লম্বা ফ্লোর স্পর্শ করা চুল গুলো বার বার মুখে বারি খাচ্ছে সে তা আটকানোর বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে আর তার এই বৃথা চেষ্টা দেখে তাক পাশে বসা মেয়েগুলো হেসে যাচ্ছে আর সে সাথে সে নিজেও ।অদ্ভুদ সুন্দর মেয়েটা তার রূপ যে কাউ কে মোহিতো করে দিবে ।কেন জানো আনমনেই তাকে দেখে মুখ থেকে বেরিয়ে আসে “রূপমোহিনী “
সেদিন নিজের কাছে নিজেকে খুব অদ্ভুদ লেগেছে যে আমি কোন মেয়ের দিকে তাকানো প্রয়োজন মনে করতাম না সেই আমি কিনা হঠাৎ একটা মেয়েতে এতটা মগ্ন ছিলাম যে নিজেকে তার মাঝে হারিয়ে ফেলেছি ?
সায়নের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে সে বলে মেয়েটা দাদুর বন্ধুর নাতনী নাম সায়রা !
সেদিন থেকে নামটা যেন আমার রক্তের সাথে মিশে যায় আমার কল্পনা জুড়ে শুধু সেই ।সেদিন বাড়িতে আমি তো ফিরি কিন্তু মনটা সেখানেই রেখে আসি রাত দিন সকাল বিকাল শুধু তার চিন্তাই বিভোর থাকতাম । আস্তে আস্তে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে লাগি দাদুর সাথে ঐ বাড়িতে প্রায়ই যেতাম ।তা দেখে দাদু অবশ্য বেশ অবাক হতো ।
ঐ মেয়েটা যেন আস্তে আস্তে আমার নেশা হয় যাচ্ছিলো নেশা যেমন না নিলে মাথা বিগড়ে যায় পাগলামো করে মানুষ আমি তার নেশায় এতটাই পাগল হয়ে গিয়েছিলাম যে তাকে না দেখলে পাগল পাগল হয়ে যেতাম

আমার সবটা জুড়ে শুধু সেই ছিলো আমার রুমোহিনী প্রতিদিন তাকে নতুন নতুন রূপে দেখে মুগ্ধ হতাম বেশ ছোট ছিলো চেহারায় সবসময় বাচ্চাদের মত সরলতা ফুটে উঠতো ।অনেকটা ইমম্যচিউর ছিলো হওয়ারই কথা !
আমি মাঝে মাঝে শুধু ভেবে যেতাম আমি কি করে এক বাচ্চা মেয়ের প্রেমে এতটা মগ্ন হলাম ।আচ্ছা এই মেয়েটা আমার ভালোবাসা বুঝবে তো ?
আমাকে ভালোবাসবে তো !
নিজের মধ্যে সবসময় এক আতংক কাজ করতো তাকে হারানোর ।ভয় হতো যদি আমার থেকে দূরে চলে যায় ?
যদি তাকে হারিয়ে ফেলি !
তাকে প্রায়ই দেখতাম আমাকে সে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতো যতবার তার সামনে যেতাম তার চোখে মুখে আমার জন্য ভয় দেখতাম তার চোখে মুখে এক অন্যরকম আতংক দেখতাম ।
সময় অতিবাহিত হতে লাগে তার মধ্যে ও আস্তে আস্তে ম্যচুয়ড়রিটি আসতে লাগে সে পরিবর্তন হতে লাগে তার চোখে আর আমার জন্য আগের মত ভয় দেখতাম অন্যরকম অনুভূতি দেখতে পেতাম ইচ্ছে করতো তাকে বুকের মাঝে জরিয়ে নিতে কিন্তু আমার যে সেই সাদ্য ছিলোনা কারন সে যে তখনো বেশ ছোট ছিলো ।
এইভাবেই সময় কাটতে লাগে আর আমার তার প্রতি আমার ভালোবাসাও বাড়তে লাগে !
আমার পরিবার আমার ফ্রেন্ড সার্কেলের সবাই সায়রার ব্যপারটা জানতো ।তারা জানতো আমি কতটা ডুবে আছি তাতে !
কিন্তু হঠাৎ একদিন আমার চেনা পরীটা অচেনা হয়ে যেতে লাগে আমাকে দেখলে ইগনোর করতে শুরু করে বেশ চুপচাপ হয় যায় তার সামনে পড়লে নিজেকে ঘর বন্ধি করে রাখে আমার দিকে তার ঘৃনা ভরা চাহনি আমাকে পাগল করে দিচ্ছিলো বার বার ক্ষত বিক্ষত করছিলো আমাকে তাই এই সব সয্য করতে একদিন তার কাছে যেয়ে তাকে জিগাসা করলাম তার এমন ব্যবহারের কারন কি !
সে উত্তরে বলে তার আমাকে ভালো লাগেনা ঘৃনা হয় তার মনে হয় আমি কেরেক্টারলেস ।
কথাগুলো শুনে বেশ কিছু সময় আমি থমকিয়ে ছিলাম ।কারন আমার জীবনে কোন কালেই সে ছাড়া অন্যকোন মেয়ের প্রতি আমার কোন রকম ইন্টারেস্ট ছিলোনা ।
আমার প্রথম ভালোলাগা আর ভালোবাসার অনুভূতি তার থেকেই শুরু ।তাকে কতটা ভালোবাসতাম নিজের ও অজানা ছিলো ।আমার অস্তিত্বের সবটা জুড়েঁ যে শুধু সে রয়েছে !
তাই তার এই অপবাদটা আমার মাথা বিগড়ে দিলো রাগের বসে সেদিন ওর বাড়ি থেকে চলে আসি বাড়িতে এসেই জানাই যে আমি সায়রাকে বিয়ে করবো সবাই বেশ খুশি হয় আর রাজীও কিন্তু তাদের সবার একটাই শর্ত ছিলো বিয়ে সায়রার পড়াশোনা শেষ করার পর হবে ।কিন্তু আমার তাকে তখনই নিজের করার জিদ চেপে বসে তাই বাড়িতে সবাইকে বলি যদি তারা আমার কথা না শুনে তাহলে আমি নিজের কোন ক্ষতি করে বসবো আর সেই ভয়ে সবাই তার পরদিন বিয়ের কাজ শেষ করে প্রথমে সবাই অমত হলেও পরবর্তিতে সবাই রাজী হয়ে যায় শুধু আমার রূপমোহিনী ছাড়া তার চোখে বিয়ের আসরে আমি নিজের জন্য ঘৃনা দেখেছি কিন্তু এই ঘৃনাটা আমার কাছে কিছু মনে হয়নি কারন সে যে আমার হয়ে গিয়েছিলো এটাই ছিলো আমার সবচেয়ে বড় প্রপ্তি !

সায়রা অবাক চোখে আরসালের দিকে তাকিয়ে আছে এই লোকটা তাকে এতটা ভালোবাসে ?
অথচ এতটা বছরে একবার নিজের মনের কথাটা বলেনি !
আর সে ও কেমন মেয়ে যে একবার তার মনের কথাটা বুঝলোনা ।
কথায় আছে মেয়েদের এক অদ্ভুদ ক্ষমতা আছে যে কেউ যদি তাকে পছন্দ করে তাহলে তা বুঝে যায় ।
তাহলে সায়রা কেন বুঝলো না সে আরসালকে কতটা ভালোবাসে তাহলে কি সব ভালোবাসা অনুভূতিগুলো অভিমান রাগ আর ঘৃনার নিচে পড়ে গিয়েছিলো ।
হবে হয়তো জীবনের কত সুন্দর সময় গুলোকে সে মিস করে গেছে এই ঘৃনা অভিমান না থাকলে জীবনটা কতটা সুন্দর হতে পারতো !
তাদের জীবন কতটা গোছালো হতে পারতো ।
সায়রা গভীর ভাবে আরসালের দিকে তাকিয়ে আছে তার আঙ্গুলগুলো আরসালের কপালে ছোয়াঁচ্ছে ।আঙ্গুল দিয়ে বিভিন্ন আকিঁঝুকি করে যাচ্ছে আরসালের চোখ এখনো বন্ধ !
সায়রা আরসালকে দেখতে লাগে আর মনে মনে ভাবতে লাগে আরসাল যেকোন মেয়েরই স্বপ্নের পুরুষ ।বেশ সুদর্শ তার পার্সোনালিটি একদম সবার চেয়ে আলাদা যথেষ্ট কেয়ারিং নিজের ভালোবাসার মানুষকে মন প্রান উজাড় করে ভালোবাসতে জানে সে ।নিজের ভালোবাসার মানুষকে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে পারে ।
এমন ছেলেকে নিজের জীবনে পাওয়া প্রত্যেকটা মেয়ের স্বপ্ন অথচ সে নিজের জীবনে এমন একটা মানুষকে পেয়ে তাকে অদেখা করে গেছে ।
নিজের সত্যিকারের ভালোবাসাটাকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে ।
হঠাৎ আরসাল নিজের চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে সায়রা তার দিকে ঝুকেঁ কোন এক ভাবনায় ডুবে আছে আরসাল হুট করে সায়রাকে টান দিয়ে নিজের আরো কাছে নিয়ে আসে দুজন দুজনার শ্বাস গুনতে পারবে ঠি ক এতটা কাছে সায়রা আবাশে নিজের চোখ জোড়া বন্ধ করে ফেলে আরসাল আলতো করে সায়রার চুল গুলো কানের পিছনে গুজেঁ দিয়ে তার গালে নিজের ঠোঁট ছোঁয়াতে লাগে প্রত্যেকটা স্পর্শে সায়রার গায়েঁ শিহরন তুলে দিচ্ছে কোন এক ঘোরে সে চলে যাচ্ছে ।আরসাল সায়রার কানের কাছে নিজের মুখ এনে ফিসফিসিয়ে বলে
-“ভালোবাসি রূপমোহিনী !
তোমার এই রূপের মৌহে পড়ে গেছি আজীবন এভাবেই তোমার মৌহে ডুবে থাকতে চাই ।
তোমার মাঝে নিজেকে বিলিন করে দিতে চাই !”
আরসাল আর কিছু বলতে নিবে তার আগেই তার ঠোঁট জোড়াতে টপ করে নিজের ঠোঁট স্পর্শ করে বড় বড় শ্বাস নিতে নিতে একটা ডোক গিলে বলতে লাগে
-“আই লাভ ইউ
আমি এতকিছু জানিনা আই জাস্ট লাভ ইউ !”
আরসাল পুরো যেন শকে আছে সায়রার কথা আর কাজ তাকে সপ্তম আকাশ থেকে ফেলেছে ।
সায়রা কথাটা বলেই নিজের দিকে তাকিয়ে আছে তার হাত পা এখনো কাপছেঁ সে কি করে আরসালকে কিস করলো আর কি করে তাকে প্রপোজ করলো সে নিজেও জানে না হয়তো আর নিজের মনের কথা আরসালকে বলতে না পারলে কোন দিন তা সম্ভব হতো না ।সায়রার কাজে আজ এখন এই সময়টা কেই বেস্ট মনে হয়েছে তাই কোন রকম কোন কিছু চিন্তা না করেই এমন একটা কাজ হুট করে ফেলে !
আরসাল এতটা বছর ধরে এই সময়টারই অপেক্ষা করছিল আজ যেন তার অপেক্ষার অবসান ঘটলো ।
তার সকল অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো ।আরসাল আর এক সেকেন্ড ও দেরী না করে হুট করে সায়রাকে নিজের বুকের মধ্যে নিয়ে নেয় ।দুজন ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয় যায় ।#প্রেমময় প্রহরে দুজন ভালোবাসার মানুষ ডুবে যায় ।

চলবে……..❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here