প্রেমাধিকার পর্ব ৮

#প্রেমাধিকার💝[ The_Egoistic_Love ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr [ Mêhèr ]
Part: 08…….

ওদিকে রাজের মাথা ঠিক নেই। সাদ প্রচন্ড ভয় পেয়ে আছে। এই প্রথম ও রাজকে এতটা রাগতে দেখল। রাজ ড্রিংক করেই যাচ্ছে। সাদ ভয়ে কিছু বলতেও পারছে না।

রাজ: সাদ যাও এখান থেকে……

সাদ: কিন্তু স্যার…..

রাজ: আমি বলছি তো যাও এখান থেকে…. [ খুব জোরে চিল্লিয়ে ]

সাদের আর ওখানে দাড়ানোর সাহস হলো না। ও বেড়িয়ে গেল। এতটা রাগতে এর আগে কখনো দেখেনি রাজকে……

রাজ তো থামছেই না ড্রিংক করেই যাচ্ছে। চোখ বন্ধ করলেই তখনকার দৃশ্যটা চোখের সামনে ফুটে উঠছে….. তখনি গ্লাসটাকে একটা আছাড় দেয়…..

রাজ: তুমি যদি ভেবে থাক আরিয়া তোমার সাথে অন্য কারো সম্পর্ক থাকলে তুমি মুক্তি পাবে তাহলে সম্পুর্ন ভুল ভাবছ। রাজ তার চাওয়াকে কখনো হেরে যেতে দেয় না। আমি চাই তোমাকে আরিয়া। আর সেটা তোমাকে দিতে হবে। তোমাকে পাওয়ার পথে যদি কোনো কিছু বাধা হয়ে দাঁড়ায় তবে আমি সেটাকেই শেষ করে দেব……. সে যদি তোমার বয়ফ্রেন্ড ও হয়……

[ বলেই পুরো বোতল মুখে পুরে নেয় ]

রাজ: cause I love u ariya….. I really lave u…… [ খুব জোরে চিল্লিয়ে ]

,
,
,
,
,
,
,
,
,
পরের দিন সকালে আরিয়া বাড়ি ফেরে।

বাবা: কোথায় ছিলে তুমি….

আরিয়া: আমার কাজ ছিল। তাই বাইরে ছিলাম।

বাবা: তুমি বাইরে থাকবে সেটা একবার জানানোর প্রয়োজন মনে হয়নি তোমার…..

আরিয়া: এতে জানানোর কি আছে। আমি তো এর আগেই কতবার বাইরে থেকেছি।

বাবা: তুমি ভুলে যাচ্ছ তুমি বড় হয়েছ।

আরিয়া: সেইটাই আপনাকে মনে করিয়ে দিচ্ছি। আমি এখন বড় হয়েছি আর সো নিজের ভালো মন্দটা আমি নিজে বুঝে নেব।

বাবা: তুমি দিন দিন আরো বেশি অবাধ্য হয়ে যাচ্ছে আরিয়া……

আরিয়া: আপনি যদি আমার কথাটা মেনে নিতেন তাহলে এরকম কিছুই করতে হত না আমার।

বাবা: তুমি কি চাও বলত…..

আরিয়া: আমি ইশাদকে বিয়ে করতে চাই। আপনারা যদি এটা মানতে পারেন তাহলে ভাল আর যদি না মানতে পারেন সেটা আপনাদের ব্যাপার…….

ব্বাবা: সেটা সম্ভব না।

আরিয়া: তাহলে আমার পক্ষে আপনাদের বাধ্য থাকা পসিবল না।

বাবা: আরিয়া…….

আরিয়া আর কোনো কথা না বলে চলে গেল।

বাবা: এই মেয়েটাকে নিয়ে আমি কি করব……
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
এদিকে আরিয়া সব কাগজপত্র গুছিয়ে নিয়ে রাজের অফিসে যায় …..

সাদ: স্যার, আরিয়া মেম এসেছেন…..

রাজ: আসতে দেও। [ কফি খেতে খেতে ]

তখনি আরিয়া রাজের কেবিনে ঢোকে। রাজ ইশারা করতেই সাদ বেড়িয়ে যায়….. আরিয়াকে দেখে বোঝা যাচ্ছে ও কেন এসেছে….. রাজ খুব শান্ত ভাবে চেয়ারে বসে। তারপর একদিকে তাকিয়ে কফি খেতে থাকে…..

আরিয়া: আপনার সাথে কথা রয়েছে….

রাজ: বসো…..

আরিয়া: আমি এখানে বসতে আসিনি শুধু এইটুকু বলতে এসেছি আমি আপনার সাথে কোনো কাজ করছি না। তার সমস্ত ডকুমেন্ট এখানে….

রাজ কোনো কথা বলছে না শুধু শুনে যাচ্ছে।

আরিয়া: আশা করি এর পর আমার আর কোনো দায় বধ্যতা নেই…. যে ডিলটা হয়েছে তা ভেঙে দিচ্ছি….. [ ফাইল গুলো রাজের টেবিলে ছুড়ে মেরে চলে যেতে নেয়। কিন্তু দরজা খুলতে পারে না। দরজ লক করা। ]

আরিয়া: মি. রাজ এর মানে কি???

রাজ:…… [ একটা পেন্সিল ঘুরিয়ে পিন্সিলটাকে দেখছে ]

আরিয়া: মি. রাজ আমি আপনাকে কিছু বলছি…. [ রাজের টেবিলে বাড়ি মেরে ]

এবার রাজ মুখ খোলে…..

রাজ: ভালোবাসি তোমাকে। বিয়ে করে নিজের ওয়াইফ হিসেবে চাই….. আশ করি এতে তোমার সন্মানে লাগবে না। আর না নিজেকে ছোট মনে করবে….

আরিয়া: আমি আপনাকে আগেই বলেছি আমি…..

এবার রাজ উঠে আরিয়ার দিকে এগোতে থাকে…..

রাজ: কি তুমি…. আর কেনই বা বিয়ে করবে না। কি চাই তোমার….. [ খুবি উত্তেজিত হয়ে আরিয়ার দিকে এগিয়ে ]

আরিয়া: আমি আপনাকে বিয়ে করব না এটাই রিজন আর কিছু না….. [ রাজ ওর কাছে আসার জন্য ও পিছনে দিকে চলে যাচ্ছে। যেতে যেতে একসময় দেয়ালের সাথে মিশে যায়। আর রাজ ওর খুব কাছে চলে যায়…. ]

রাজ: কেন বিয়ে করবা না আমাকে…. কোন দিক দিয়ে কমতি আছে আমার। হ্যা বলো কি চাই তোমার…. তুমি যা বলবে আমি তাই তোমাকে দেব।।।

আরিয়াকে দেয়ালের সাথে আটকে রাখার কারনে ও ছুটতে পারছে না। যেদিকে যাবে তাতেই রাজকে ছুয়েই যেতে হবে। যেটা আরিয়া একদম চাইছে না।

আরিয়া: কোনো কিছুর কমতি নেই। শুধু একটাই আর সেটা হচ্ছে ইশাদ…[ বলে জিহবায় কামর দেয় ]

রাজ: কি বললে???

আরিয়া: আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই না। আর আপনাকে বিয়ে না করার জন্যই এইটুকু রিজন আমার জন্য যথেষ্ট….. [ রাজকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। ]

রাজ: তুমি…… [ রাজ কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায় ও গিয়ে লক খুলে দিতেই আরিয়া বেরিয়ে যায় ]

সাদ: স্যার আমি কিছু বুঝতে পারছি না। আরিয়া মেম তো আপনাকে সহ্য করতে পারে না। ওনি এখন আমাদের সাথে কাজ করবে না তাহলে…..

রাজ: তাতে কি….. সাদ….

সাদ: yes sir….

রাজ: আমি ওর বাবার সাথে কথা বলতে চাই…….. কিন্তু তার আগে আমাকে আরেকজনের সাথে দেখা করতে হবে।

সাদ: কার সাথে….

রাজ: ইশাদ……..

সাদ: ওকে স্যার…..
,
,
,
,,
,
,
,
,
,

,
,
,রাজ ইশাদকে ফোন দিয়ে আসতে বলে। ইশাদ এসব ব্যাপারে কিছুই জানে না। ও ভেবেছে আরিয়ার সাথে কোম্পানির কোনো সমস্যা হয়েছে কারন আরিয়ার বিজনেসের সাথে ইশাদ নিজেও জরিয়ে যদিও ওর কাছে এটা মেটার করেনি। তাই ও স্বাভাবিক ভাবে রাজের কাছে যায়……..

ইশাদ: আসতে পারি……

রাজ: এসো…

ইশাদ: জি আমি মিস. আরিয়ার পার্টনার। কোনো সমস্যা হয়েছে….

রাজ:…..

রাজের উত্তর না পেয়ে ইশাদ কিছুটা ইতঃস্তত হয়।

ইশাদ: কিছু কি হয়েছে। মানে আরিয়া কোনো প্রব্লেম করেছে। আসলে ও একটুতে রেগে যায় সো কোনো সমস্যা…

রাজ: খুব ভালো করে চেন তুমি আরিয়াকে…..

ইশাদ: Excuse me….. বুঝলাম না।

রাজ: কতবছর ধরে চেন….

ইশাদ: এটা আমাদের পার্রসোনাল কথা আপনি এটা কিভাবে ask করতে পারেন।

রাজ: যেটা জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দেও।

ইশাদ: i am sorry but এটা একটা প্রফেশনাল জায়গা আর আপনি আমাকে পার্রসোনাল কিছু জিজ্ঞেস করতে পারেন না।

রাজ: এটা আর এখন প্রফেশনাল নেই আমার জন্য ও পার্রসোনাল….

ইশাদ: মানে…..

রাজ: দেখ আমি ঘুড়িয়ে পেচিয়ে কোনো কথা বলি না যা বলার স্পষ্ট করে বলতে পছন্দ করি….

ইশাদ: কিন্তু আপনি এমন কি বলতে চান। আর আমার সাথে আমার পার্রসোনাল কি কাজ থাকতে পারে আপনার….

রাজ: I love ariya… I want her…. বিয়ে করতে চাই ওকে….

কথাটা শোনা মাত্রই ইশাদের ইশাদ নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলল। ও দুপা পিছিয়ে গেল।

ইশাদ: কিসব বলছেন আপনি???

রাজ: হুমম তুমি ঠিক শুনেছ আমি আরিয়াকে বিয়ে করতে চাই।

ইশাদ: আরিয়া কি জানে???

রাজ: হুমম। আমি ওকে বলেছি। ও আমাকে তোমার কথা না বললেও আমি জানি ও তোমার জন্য আমাকে বিয়ে করতে চাইছে না। তুমি আমার আর আরিয়ার মাঝখানে চলে এসেছ ইশাদ…. আমাদের মাঝ থেকে সরে যায়……

এবার ইশাদের কাছে সবটা ক্লিয়ার হয়। ও যেন ধোয়াশা থেকে বেড়িয়েছে। আরিয়ার ওভাবে কান্না ওভাবে ভয় পাওয়া। ইশাদকে জড়িয়ে ওর কাছে আসতে চাওয়ার সবটা ব্যাপার ইশাদের কাছে এখন পরিষ্কার।

ইশাদ: [ তারমানে এজন্য আরিয়া ওইদিন ভয় পেয়ে বলেছিল আমার থেকে ওকে কেউ ছিনিয়ে নিতে চায়। কিন্তু বলেনি। আর তারজন্য আমাকে বিয়ের কথা বলেছে। ]

রাজ: কিহল কি ভাবছ….. এমনি এমনি ওকে ছেড়ে দিতে বলছি না। তার বদলে তুমি আমার কাছে যা চাইবে আমি তাই দিতে রাজি আছি। I just want her…. ….

ইশাদ রাজের কথা শুনে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দেয়। খুব জোরেই হাসে…..

ইশাদ: Oh my god…. এতদিনে বুঝলাম আসলেই আমি কতটা বোকা। মানে really আমি আসলেই খুব বোকা….

রাজ: আমি তোমাকে মজার কোনো কথা বলিনি….

ইশাদ: আমার কাছে এটা মজাই মি. রাজ। আপনি জিজ্ঞেস করেছিলেন না আমি কতদিন ধরে ওকে চিনি। যখন ও ক্লাস ওয়ান তখন থেকে…. আমি এর মধ্যে কোনোদিন ওকে ভয় পেয়ে কাদতে দেখেনি। কিন্তু কাল রাতে প্রথম আমি ওকে ভয় পেতে দেখেছি……..

রাজ: মানে…..

ইশাদ: আপনার কাছে আমি অনেক ঋনী। কারন এই প্রথম আপনার জন্য আমি আরিয়ার চোখে ভয় দেখেছি তাও নিজেকে হারানোর….. এটা যে আমার কতবড় পাওনা তা হয়ত আপনাকে বোঝানো সম্ভব না।

রাজ: ইশাদ….. [ চিতকার করে ]

ইশাদ: এটা আপনার অফিস আপনি চিতকার করতেই পারেন কিন্তু আমার উপরে আপনার কোনো জোর নেই। আমি আপনার বাধ্যগত নই…..

রাজ: তারমানে তুমি আরিয়াকে ছাড়বে না।

ইশাদ: আপনি আরিয়াকে ভালোবাসেন তাই না। এটাই তো বলবেন…..

রাজ:……

ইশাদ: সে যাই হোক…. এই কয়দিনের ভালোবাসার জন্য আপনি আমার ছোটবেলা থেকে জমানো অনুভুতির মুল্য নির্ধারন করতে চাইছেন…… আসলেই অদ্ভুত। মানুষ শুধু নিজের স্বার্থটাই দেখে।

রাজ: তুমি আরিয়াকে ছাড়বে কিনা….

ইশাদ: আরিয়াকে ছাড়ব কিনা। [ কিছুক্ষন ভেবে ] আপনি বিজনেসম্যান সবকিছুই বিজনেস দিয়ে করতে চাইবেন এটাই স্বাভাবিক……. ওকে আরিয়াকে আমি ছেড়ে দিতে রাজি আছি বদলে আমার শর্তগুলো আপনাকে পুরন করতে হবে…..

রাজ: কি শর্ত…..
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।

ইশাদ: বেশি কিছু না। বিগত ১৮ বছরে আমি আরিয়াকে যতটুকু ভালোবেসেছি তার বিনিময় দিন৷ ১৮ বছর সবকিছু থেকে আরিয়াকে আগলে রেখেছি তার মুল্যদিন। জানেন ওর রাগ উঠলে ও কাউকে কিছু বলে না এসে আমাকে চড় দেয়। এমনকি আপনার চড়টাও আমি খেয়েছি। আরিয়ার হাতে যতগুলো থাপ্পড় খেয়েছি সেটার মুল্য দিন। আরিয়ার জন্য আমি স্কলারশিপ পাওয়া সত্ত্বেও বাইরে যায়নি তার মুল্য দিন।।।

রাজ:……..

ইশাদ: কি হল পারবেন না…. [ মৃদু হেশে ] যদি পারেন তাহলে বলতে আসবেন আমি এমনিতে ওর জীবন থেকে সরে যাব।

রাজ:……

ইশাদ: আরেকটা কথা…. কি জানি বললেন…. 🤔🤔🤔 ও হ্যা মনে পরেছে আপনার আর আরিয়ার মাঝখান থেকে আমাকে সরে যেতে হবে। [ তাচ্ছিল্যের হাসি দেয় ] You know what…. আমি নই আপনি এসেছেন তাও আবার আমার আর আরিয়ার মাঝখানে। আমার আর আরিয়ার মাঝখানে আপনি 3rd person… আশা করি আপনি আপনার উওর পেয়েছেন৷

রাজ: ছাড়বে না তুমি ওকে…. 😡😡😡

ইশাদ: ওই যে বললাম আমার শর্ত পুরন করুন এমনি চলে যাব।

রাজ: তুমি কিন্তু ভুল করছ….

ইশাদ: আরিয়া ছাড়া আমার কাছে সব কিছুই ভুল। আরেকটা কথা কি জানেন আমি এতদিন জানতাম আরিয়ার কাছে আমি ওর ফ্রেন্ড। কিন্তু আপনার জন্য জানলাম ও আমাকে ভালোবাসে…. অনেক অনেক ধন্যবাদ……

ইশাদের কথা গুলো রাজের গায়ে কাটার মত বিধছে….

রাজ: একটা কথা মনে রেখ ইশাদ কোনোকিছুই কারো কাছে সারাজীবন স্থায়ী হয়না।

ইশাদ: অনুভুতি অধিকার কখনো কারো কেনা থাকেনা। এটাই একমাত্র যার মালিকানা চাইলেও অন্য কাউকে দেওয়া যায় না। নিমিক্ত হারিয়ে গেলেও অনুভুতি কখনো হারায় না। যার যার #প্রেমাধিকার💝 তার কাছে আপনি যদি জোর করে পেতে চান.. আমি কেন ছেড়ে দিব। [ বলেই বেড়িয়ে যায় ]

রাজ: ওকে……
,
,
,
,
,

,
,
,

,,

,
,
,
,[ বাকিটা পরের পর্বে জানবেন ]
🙄🙄🙄🙄🙄🙄🙄🙄🙄🙄🙄🙄🙄

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here