প্রেমের উষ্ণ ধোঁয়াতে পর্ব -০৮

#প্রেমের_উষ্ণ_ধোঁয়াতে
#লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা
#পর্ব___৮

কোমল, গৌরবর্ণ অঙ্গে সহনীয় ব্যথা নিয়ে প্রাণখোলা হাসিতে মেতে উঠল পিংকি। সেই হাসির ধ্বনিতে সহযোগী হলো শিমুল। থা প্পড়েই ভালোবাসা?বাক্য টা অত্যন্ত রসাত্মক নয় কি?ঢের হাস্যকর। নিশাতের ভয়মাখা বদন চুপসে গেল। এভাবে অপমান তাকে?টমটমে চড়ে স্কুলে গিয়ে অ,আ,ই শেখার দিনক্ষণ যখন এলো সেই থেকে পিংকি,প্রত্যয়, শিমুল সকলেই দেখেছে হুটহাট প্রহরের থা”প্পড় খেয়ে তিলে তিলে ওর এই অবধি বড় হওয়া। বছরের পর বছর আকস্মিক হলদেটে কপোল দুটো রক্তাভ হয়েছে। মুখ বুঁজে, ঠোঁটে ঠোঁট চেপে সহ্য করেছে ও। মাঝে মাঝে মায়ের কোলে মুখ গুঁজে কেঁদেছেও অবাধে।
রোকেয়া বুঝ দিতেন,’ প্রহরকে আমি বকে দেবো মা। তুই কানলে তোর বাপ দেখে ফেলব না?পরে প্রহরকে গা লিগা লাজ করব। তুই কি এটা চাস?’

নিশাত কান্নারত মুখশ্রী তুলে মা’য়ের দিক চেয়ে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করত। বাচ্চা কণ্ঠ কাঁপত ক্রন্দনের দাপটে। বলত,’ না আম্মা। আব্বা জানলে আমি আর ফুপুর বাড়িতে যাইতে পারমু না। প্রহর ভাই মা রলে আমি চুপ থাকব৷ তুমি শুধু তারে বকে দিও। ‘

প্রহরকে দেখে যেমন ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে থাকে অপরদিকে প্রত্যয়কে দেখলে খুশিরা বাধ মানে না। প্রত্যয় কখনও ওকে মা রে নি,শাসন করে নি। বরঞ্চ মাঝে মাঝে প্রহরের হাত থেকে বাঁচিয়েছে। আজ প্রত্যয় ভাই থাকলে ওকে এমন অপমানের, তিরস্কারের শিকার হতে হতো না। কি নি ষ্ঠুর সবগুলো!

নিশাত উঠে দাঁড়াল। থাকবে না এখানে। ওদের হাসি সহনের চেয়ে ফুপুর কাছে গিয়ে রান্নাঘরে বসে থাকা অধিক ভালো। চোখের কোণা দিয়ে ক্লান্ত প্রহরকে এক নজর চেয়ে এক পা ফেলতেই কর্ণধারে পৌঁছায় আদেশমূলক বাক্য,
‘ আমার জন্য কফি নিয়ে পাঁচ মিনিটে আবার হাজির হবি। ‘

ঘাড় ঘুরিয়ে প্রহরের দিকে তাকাল নিশাত। প্রহরও উঠে দাঁড়িয়েছে। নিজের রুমের দিকে যেতে যেতে বলে,’ রুমে নিয়ে আসিস। ‘
আনমনে নিশাতের কণ্ঠে প্রশ্ন, ‘ আমি?’
প্রহর থেমে গেল। কপালে ভাঁজ পড়ল গুটি কয়েক। রসকষহীন, কাঠখোট্টা গলায় বলল,
‘ নয়তো কে?ফুপুর বাড়িতে এসে মেহমান সেজে না থেকে কাজকাম কর। সারাদিন আজাইরা থেকেই তোর যত কাঁপাকাপি। তাছাড়া বিয়ের পর হাসবেন্ডের থা প্পড় খেয়েই দিন কাটাবি?কাজ করবি না?আগে থেকে শিখে রাখ। ‘

এত এত তিক্ত কথা হজম করতে কষ্ট হলো নিশাতের। প্রহর চলে গেল। এই লোকের সমস্যা কি?কেন ওকে দেখতে পারে না?বিমর্ষ মনে রান্নাঘরে এসে আলতার পাশে দাঁড়ায়। ছোট্ট করে বলে,
‘ কফি বানাব ফুপু। ‘
‘ প্রহর বলেছে?’
নিশাতের নির্দ্ধিধায় স্বীকারোক্তি, ‘ হুম। বলেছে আমাকেই বানাতে হবে। ‘
‘ পারিস তুই? ‘

ফুপুর প্রশ্নে নিশাত চমকে উঠল। ও কফি বানাতে পারে না। কোনোকালে কফির স্বাদ কেমন হয় সেটাও জানে না। কফি নামটাই কেমন অপছন্দের তালিকায় তুলে রেখেছে। এখন উপায়?মিনমিনিয়ে প্রতুত্তর করে,
‘ না। ‘
আলতা মুচকি হাসলেন। আদুরে,নরম ভঙ্গিতে বললেন,’ আমি বানিয়ে দিচ্ছি। ‘
তাৎক্ষণিক গলার স্বর উঁচু হলো ওর অল্পস্বল্প, ‘ তুমি বানালে প্রহর ভাই বুঝে ফেলবে। পরে মা””রবে আমাকে। ‘

‘ তুই দু দিন বাদে কলেজে উঠবি এখনও ওর মা”রকে ভয় পাস?’
‘ ছোট থেকেই ভয় পাই। ‘
‘ আর তুই ভয় পাস বলেই ও ভয় দেখায়। ‘
‘ তোমার ছেলে দুই বছর আসে নি। এবার কেন এলো?ফুপার সাথে রাগ করে না চলে গিয়েছিল?’
‘ ঊষার বাবা মানিয়ে পাঠাল এবার। গ্র্যাজুয়েট কমপ্লিট করে রাজনীতিতে ঢুকল বছর হলো। কিছু সুবুদ্ধি হয়েছে হয়তো। ওদের দুই ভাইয়ের ওপর কি আমার নিয়ন্ত্রণ চলে?’

নিশাতের নেত্রদ্বয়ে কল্পনায় ভেসে ওঠে ঊষার গোলগাল চেহারাখানা। খাড়া নাক,বৃহৎ আকৃতির চোখ, হাসলে গালে টোল পড়ে। প্রথম চাহনিতে যে কেউ সুন্দর এই রমণীতে আকর্ষিত হবে। চেয়ে থাকবে মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় অনিমেষনেত্রে।

‘ দুই বছর ধরে ঊষা আপুরাও আসছে না কেন ফুপু?’
‘ ঊষাকে কত বার করে বললাম আসতে ও নাকি সময় পাচ্ছে না। উল্টো আমাকে বলছে তুমি এসো কাকিমা। মেয়েটা বড্ড আদুরে। ‘
‘ হ্যাঁ, ভীষণ সুন্দরও। ‘

আলতার শ্বাসনালি বেয়ে উন্মুক্ত হলো দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস। ঊষাকে কোনো এক সময় অন্য বাড়িতে দিতে হবে ভাবলেই বুকটা ভারী হয়ে ওঠে। তীব্র ইচ্ছে ছিল দুই ছেলের যেকোনো একজনের মাধ্যমে মেয়েটাকে নিজের বাড়িতেই রেখে দিতে। কথা বলতে বলতে কফির মগটা নিশাতের হাতে ধরিয়ে দিলেন।

‘ নে। আর দেরি করলে প্রহর সত্যি সত্যিই মা””রবে তোকে। ‘
‘ কিন্তু তুমি বানালে যে?আমি তো বানাই নি। ‘
‘ কিছু হবে না। মা’র’লে সোজা আমার কাছে আসবি। না কি আগের মতোন প্রহর ভাইকে কেউ বকবে সেই ভয়ে বিচার আনবি না?’

নিশাত লজ্জা পেল। কেন বাঁচায় ও এই লোকটাকে?কফি হাতে নিয়ে অনেক বছর পর প্রহরের রুমের সমুখে এসে দাঁড়ায়। গত চার বছর ধরে ঢোকা হয় না এই কক্ষে। দরজা ঠেলে মাথা বাড়িয়ে প্রহরের উপস্থিতি পরখ করে নেয়। ওই তো বেলকনির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছে। নিশাত নিচু কণ্ঠে ডাকে,

‘ প্রহর ভাই! ‘

নত স্বরের ডাকটা অবলীলায় রুমে উপস্থিত শ্যামবর্ণ পুরুষের শ্রবণ হয়। ফিরে তাকায়। ফোনের অপর পাশের ব্যক্তি টাও শুনতে পায় সেই মুগ্ধ ডাক। বলল,’ কে এটা?নিশু না ভাই?’

‘ হুম। তোদের বাথরুমের ঘুমন্ত পরী। ‘

নিশাতের দিক তাকিয়ে জবাব দেয় প্রহর। চাউনি নিষ্পলক। আবার অপ মান?যার তার কাছে ওকে এভাবে অপ মান করার অধিকার কে দিল প্রহর ভাইকে?প্রত্যয় হাসছে ভাইয়ের উক্তি শুনে। কফি রেখে চলে যাবে এমন সময় প্রহর কড়া শব্দ উচ্চারণ করে,

‘ দাঁড়া। ‘
তৎপরে মোবাইল টা ওর দিকে দিয়ে বলে,’ নে,ধর। ‘
নিশাত প্রশ্নবিদ্ধ আঁখিদ্বয় মেলে রাখে। শুকনো ঢোক গিলে। কয়েকটা শব্দ বলার প্রস্তুতি নেয়। তন্মধ্যে শুনল,
‘ প্রত্যয় কথা বলবে তোর সাথে। ‘

প্রত্যয়ের কথা শুনে লাফ দিয়ে উঠল যেন হৃৎপিণ্ড খুশির ঠ্যালায়। মোবাইল টা প্রহরের হাত থেকে নিয়ে বারান্দার দিকে এগোতে নিলে ওর চুলে টান পড়ে। ব্যথায় মৃদু চিৎকার করে উঠল নিশাত। প্রহর ওর চুল ধরে রেখেই নিরলস গলায় বলল,

‘ বারান্দায় ভূত আছে। আমার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বল। ‘

ভূত!এসব হয় না কি?বিশ্বাস করে না নিশাত। প্রহর যে ওকে ইচ্ছে করে জ্বালাচ্ছে দিব্যি টের পেল। মোবাইল কানে ধরে হ্যালো আওড়ায় ভেজা ভেজা কণ্ঠে। প্রত্যয় আলতো হাসে।

‘ কিরে কেমন আছিস?ভাইয়ের জ্বালাতন সহ্য করছিস?’
‘হু। ভালো। ‘
‘ হু?বুঝেছি তোর ভয় তোর পাশে দাঁড়িয়ে। থাক কাঁদিস না৷ ছোট থেকেই তুই অভ্যস্ত, আরও হয়ে যা। সারাজীবন সহ্য করতে হবে। ‘

নিশাত মনে মনে কয়েকটা কথা সাজায়,’ শশুর বাড়ি চলে গেলে প্রহর ভাই আমায় কোথায় পাবে?তখন আমার জামাইয়ের সামনে আমাকে মার তেও পারবে না। প্রহর ভাইয়ের থেকে মুক্তি পেতে হলে তাড়াতাড়ি বিয়ে বসে যেতে হবে। ‘

প্রত্যয় আরও দু এক কথা বলে ফোন রেখে দেয়। এখন একটা জায়গায় যেতে হবে তার। না গেলে আজ রাতে ঘুমই হবে না। নিশাত মোবাইলটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। প্রহর ততক্ষণে কফির মগে চুমুক দিয়েছে। নিমিষেই মুখটা বিকৃত করে ফেলল। তীর্যক চোখ চাইল ওর দিকে। ধরা পড়ে যাওয়ায় অভ্যন্তরের জল শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম নিশাতের। সরব করে বলে উঠল,

‘ আমি কফি বানাতে পারি না,তাই ফুপি বানিয়ে দিয়েছে। ‘

প্রহর ক্ষিপ্ত দৃষ্টি তাক করল। বলল,
‘ তুই হলি নিষ্কর্মা। রফিক আজমের রক্ত বহনকারী অকর্মার ঢেঁকি। তোর দ্বারা কিছু হবে না। হবে শুধু কাঁপাকাপি। তোর জামাইয়ের ফুলশয্যার পথে সব থেকে বড় বাঁধা প্রদানকারী তুই হবি। নিজেকে বেচারা মনে হচ্ছে আমার। না ছুঁতেই খিঁচুনি শুরু হয়ে যাবে তোর। থা প্পড় মে রে মে রেও সোজা করতে পারলাম না। ‘

বাবাকে নিয়ে তিরস্কার ভালো লাগে না নিশাতের। ও জানে মামা হিসেবে ভাগিনাদের কখনও আদর করে নি বলে ওনার প্রতি এত জেদ প্রহর, প্রত্যয়ের। প্রহর পুনর্বার বলে ধমকের সুরে,

‘ বিছানায় গিয়ে বস। ‘
পাল্টা প্রশ্ন ওর প্রহরের কথার ভাঁজে,
‘ কেন?’
‘ বসলেই দেখতে পাবি। ‘

বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসল নিশাত। প্রহর কাছে এসে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে উঠল,’ পা তুলে বস। ‘
কথা মোতাবেক পা তুলে বসল ও। পিঠ টা নরম বালিশে ঠেকানো। পাঞ্জাবি পাল্টে টি শার্ট পড়ে এলো প্রহর। বসল ওর খালি পায়ের নিকটস্থে। আকস্মিক পায়ে টান পড়তেই বিস্ময়কর চক্ষে তাকাল ও। প্রহরের স্পর্শ ওর পায়ে। পা একটা তুলে নিয়েছে হাতের করপুটে। দুই চক্ষু মুদে এলো আপনাআপনি। শিরা উপশিরায় ছলকে উঠে রক্ত। কানে এলো চিন্তিত,ব্যগ্র কণ্ঠস্বর,

‘ তোর শরীর এত ঠান্ডা কেন?এত ভয় কেন তোর?অল্পতেই জ্ঞান হারিয়ে বসিস। ‘

ক্রমাগত বলতে বলতে পা ঘষে গরম করে দিতে আরম্ভ করল প্রহর। গলাটা নিষ্প্রাণ, মায়াময় শোনাচ্ছে। কঠিন ধাঁচের প্রহর ভাই ওর সেবা করছে?বিহ্বল হয়ে প্রশ্ন করল,

‘ কি করছেন?’
‘ চুপ থাক। আসার পর থেকে খেয়াল করেছি দুর্বল তুই। শিমুল,পিংকির সাথে থাকলে বিশ্রাম নিতে পারতি না। উল্টো লাফালাফি করে আরও অসুস্থ হয়ে যেতি। তাই ওদের কাছ থেকে কিছু সময়ের জন্য আলাদা করে আনলাম। এখন চুপচাপ শুয়ে থাক,ঘুমানোর চেষ্টা কর। ‘

পা দুটো ঘষে কিছুটা তপ্ত করে দিয়ে, দুই হাত মুঠোয় পুড়ল সে। নজর বিঁধল গলার কাছে। ডাকল লহু স্বরে,

‘ তিলবতী। ‘
‘ হু!’
‘ বেশি ব্যথা পেয়েছিস?’
নিশাত বিমূঢ়তায় বাক হারা। নিজে ব্যথা দিয়ে কখনও অনুতপ্ত হয় না লোকটা। অথচ অন্য কেউ সামান্য কষ্ট দিলেও কেমন পাগলের মতো আচরণ করে। যত্নের অভাব রাখে না। ছোট থেকেই এতেও অভ্যস্ত ও।
‘ একটু কেটেছে প্রহর ভাই। ‘– সাদামাটা, প্যাঁচবিহীন উত্তর তার।
মুষ্টি শিথিল হয়ে আসে কিঞ্চিৎ। দৈবাৎ প্রশ্ন করে প্রহর,
‘ ধর,তোর হাসবেন্ডের এমন পেশা যেটায় মাঝে মাঝে ঝামেলা, ভয়া বহ পরিস্থিতি, রক্ত এসব দেখতে হবে তোর। তখন তুই এমন করে বেঁহুশ হয়ে যাবি?’

নিশাত অপ্রতিভ হলো। ভাবল একটু। পরমুহূর্তেই বলে,
‘ এমন ছেলের কাছে আমি বিয়েই বসব না। ‘
অতীব কাছাকাছি রাগান্বিত, অগ্নি দৃষ্টি দেখে শরীর কাটা দিয়ে উঠল ওর। প্রহর ক্রুদ্ধ হয়ে বলে,
‘ এমন ছেলেই তোর স্বামী হবে। ঘুমো এখন। ‘
———————-
মৃন্ময়ী চেয়ারে দু পা তুলে সমস্ত মন মস্তিষ্ক বইয়ের পাতায় ডুবিয়ে রেখেছে। তার সেই মগ্নতা নষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াল কর্কশ,বিচ্ছিরি শব্দে বেজে উঠা ফোন টা। এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বিছানার উপর অবহেলিত হয়ে পড়ে থাকা মোবাইলটা তুলে নিল হাতে। আননোন একটা নাম্বার! গত কয়েক মাসে পাঁচ টা সিম কার্ড পাল্টেছে সে৷ পরিবর্তনের কারণ নিঃসন্দেহে প্রত্যয়। রাত বিরেতে কল দিয়ে কেবল ভালোবাসি শব্দ টা বলে। কণ্ঠ শোনার জন্য পাগলামি করে৷ জীবনটা পুরো তেজপাতা বানিয়ে ছেড়েছে। আন নোন নাম্বার দেখলেই এখন সন্দেহ জাগে প্রত্যয় নয়তো!রিসিভ করতেই সন্দেহ সঠিক হলো। কণ্ঠে তেজ ঢেলে বলল,

‘ আবার?আবার আপনি আরেকটা নাম্বার থেকে কল দিয়েছেন?আসলেই আপনার লাজ শরম নেই?একটা মেয়েকে এত বিরক্ত করে রাস্তার বেয়া””দব ছেলেগুলো। আঠার মতো পিছু লেগে আছেন। ‘

‘ নিচে এসো। ‘— গম্ভীরতা এঁটে বলল প্রত্যয়।
মৃন্ময়ীর একঘেয়েমি জেদ,’ আসব না। ‘

জানালার পর্দা সরাতেই চোখে পড়ে প্রত্যয় সোডিয়াম আলোর নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষারত।

‘ তুমি এখন না আসলে,আমি কাল তোমার বাবার ব্যাংকে গিয়ে বসে থাকব। সবাইকে বলব আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড এবং তুমি চিট করেছ আমার সাথে। ‘

‘ অতিরিক্ত হচ্ছে কিন্তু প্রত্যয় ভাই–‘

‘ তুমি সব অতিরিক্ত দেখো কিন্তু আমার অতিরিক্ত ভালোবাসা,চাওয়াটা কেন বুঝো না মৃন্ময়ী? ‘

নিশ্চুপ মৃন্ময়ী। ভেতরে জ্বলছে অনল। এর কারণ টা ও কাউকে বলতে পারবে না। কখনো না। কল টা কেটে বাহিরে আসল দশ মিনিট পর। পড়নে লং কুর্তি,জিন্স, গলায় হিজাব প্যাঁচানো। চুলগুলো ঝুঁটি করে এসেছে। মুখে কাঠিন্য ভাব। প্রত্যয়ের ঠোঁটে মৃদু হাসি খেলে গেল। ধুকপুক শুরু হলো হৃদয় অঙ্গে। প্যান্টের পকেটে এক হাত গুঁজে বিজয়ী হাসি হেসে বলল,

‘ পরিপাটি হয়ে আসলে যে?লং টাইম কাটানোর ইচ্ছে আছে আমার সাথে?’

‘ আমি পারলে এক সেকেন্ডও কাটাতে চাই না। সম্ভব হলে আপনাকে খু ন করে শান্তি পেতাম। জীবন অতিষ্ঠ করে ফেলছেন আমার। ‘

প্রত্যয় ভ্রুঁ যুগল উচিয়ে কপালে সূক্ষ্ম ভাঁজ ফেলে বলল,

‘ তাই?আমি রাজি। তবে খু ন করার পূর্বে আমাকে তোমার অধরসুধা পান করার সুযোগটুকু দিও। ‘

#চলবে,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাইকে রেসপন্স করার অনুরোধ রইল নয়ত লিখার আগ্রহ থাকে না। এমনিতেই আমি কঠিন রাইটিং ব্লকে।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here