“বন্ধুর বোন যখন বউ পর্ব – ১

0
4425

গল্প – বন্ধুর বোন যখন বউ
পর্ব – ১
লেখক – মুসাফির
আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড শাহিন। বেষ্ট ফ্রেন্ড বলতে ভাই ও বলা যায় ও ছাড়া আমি ছাড়া ও চলতেই পারে না। আমি তামজিদ পড়ালেখা শেষ করে একটা কম্পানিতে চাকরি করি।
আমার আর শাহিন এর দেখা হয় প্রথম ভার্সিটিতে সেখান থেকেই আমাদের বন্ধুত্বের শুরু।আমার বাসা টাংগাইল ওর বরিশাল। আচ্ছে আচ্ছে আমাদের বন্ধুত্ব টা গারো হতে থাকে এখন কেউ কাউকে ছাড়া চলতেই পারি না। একটা মজার বেপার হচ্ছে পড়ালেখা শেষে আমাদের দুজনের এক কম্পানিতেই চাকরি হয়। আমি আমার ফ্যামিলি সহ ঢাকাই থাকি আর শাহিন আমাদের সাথে একা থাকে। আমাদের বন্ধুত্বটা নষ্ট হওয়ার ভয়ে কেউ কোনদিন প্রেম করি নাই। কিন্তু কিছুদিন যাবত ফেসবুকে তানজিল নামের একটা মেয়ে আমার মন কেড়ে নিছে তানজিল এর বাসা বরিশাল। মেয়েটাকে আমি দেখি নাই অনেকবার ছবি চেয়েছি কিন্তু দেইনি তানজিল বলেছে তাকে দেখতে চাইলে তার সাথে সরাসরি দেখা করতে হবে ওর ফোন নাম্বার টা দিছে ফোনে অনেক কোথায় হয়। আমার খুব ইচ্ছে তানজিল কে দেখার। শাহিন অনেক বার ওর সাথে বলেছে ওর সাথে বরিশাল যেতে কিন্তু আমি যায়নি। এভার ঈদে ১০ দিনের ছুটি দিল আমি মনে মনে ঠিক করলাম এবার ঈদ শাহিন এর সাথে বরিশাল কাটাবো। তাহলে ওর মন টাও রাখা হবে আর মেয়েটার সাথেও দেখা হবে। কিন্তু ও কি এবার বলবে ওর সাথে যেতে দেখা যাবে কি হয়।আমি বসে ছিলাম এমন সময় শাহিন আসলো.
শাহিন – শোন এবার যদি তুই আমার সাথে না যাস তাহলে আমি কোথাও যাচ্ছি না।
আমি – কিন্তু কিভাবে যাবো বল মা বাবা কে একা রেখে ( একটু ভাব নিলাম)
শাহিন – চুপ শালা আন্টি আর আংকেল কিছু বলবে না তুই যাবি না তাই বল।
আমি – না দোস্ত..
শাহিন – চুপ আমি যা বলছি তার উত্তর দে..?
আমি – ঠিক আছে যাবো…
শাহিন – সত্যি..?
আমি – হ্যা সত্যি
শাহিন – খুব খুশি হলাম
আমি – আমি কি তোরে কোন সময় নারাজ করেছি নাকি…?
শাহিন – না এজন্য তো তুই আমার বেষ্টফ্রেন্ড।
আমি – যা আর পাম দিতে হবে না..
শাহিন – শালা কি বললি আমি পাম দেই..?
আমি – ওই আমি তোর কোন কালের শালা তুই আমারে শালা বলস..?
শাহিন – শালা না তোবে তোর একটা মামাতো ফুপাতো বোন আমার কাছে বিয়ে দিলেই তো পারিস তাহলেই তো শালা হয়ে যাবি..
আমি – আশা করে বসে থাক তুই
শাহিন – কথা বাদ দিয়ে সব কিছু গুসিয়ে ফেল কালকেই রওনা দেবো..
আমি – ওকে
তারপর আমি সব কিছু গুসিয়ে ফেললাম।
রাতে তানজিল কে ফোন দিলাম।
তানজিল – হ্যালো
আমি – কি করছো..?
তানজিল – কিছুনা বসে আছি তুমি..?
আমি – তুমার কথা ভাবছি ভাবতেই যেনো কেমন লাগছে অবশেষে তুমার সাথে আমার দেখা হবে..
তানজিল – মানে…?
আমি – আমি কালকে বরিশাল আসতেছি এবার ঈদ বরিশাল করবো..
তানজিল – সত্যি তাই নাকি..?
আমি – হ্যা এবার তো তুমাকে দেখে ফেলবো এতোদিন অনেক লুকিয়ে ছিলে আর থাকতে পারবে না।
তানজিল – দেখা যাবে
আমি – দেখা যাবে মানে..?
তানজিল – কিছুনা তুমি বরিশাল কোথায় আসতেছো..?.
আমি – বাকেরগঞ্জ..
তানজিল – বাকেরগঞ্জ থেকে আমার বাসা আরো অনেক দূর
আমি – ও তাই..
তানজিল – হ্যা ওই পরে কথা হবে আম্মু ডাকতেছে
আমি – ওকে বাই..
তানজিল – বাই
তারপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম একটু তাড়াতাড়ি কারন কালকে অনেক দূর যেতে হবে।
সকালে উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম বরিশাল এর উদ্যোগ এ। প্রায় ৫-৬ ঘন্টা পর বরিশাল পৌঁছালাম।শাহিন দের বাসায় যেতে আরো এক ঘন্টা লাগলো ওর বাসায় ওর আম্মা আব্বা আর ওর ছোট বোন থাকে। ওর ছোত বোন কে দেখেই আমি মনে হয় ক্রাশ খেলাম কিন্তু মাথা থেকে সব সরিয়ে ফেললাম বন্ধুর বোন মানে আমার বোন আর আমি তো ভালোবাসি অন্য একজন কে। এইসব ভাবতেছিলাম। এমন সময় শাহিন আমকে ডাক দিলো
আমি – কি কি হয়েছে..?
শাহিন – ওই বেটা তোরে কত গুলা ডাক দিছি..?
আমি – হ্যা বল..?
শাহিন তুই কি বাহিরেই দাঁড়িয়ে থাকবি নাকি ভেতরে আসবি..
আমি – হ্যা
আমার এমন অবস্থা দেখে শাহিন এর বোন হি হি হি করে হেসে দিলো।
আমি বাসার ভেতরে আসারপর তানজিল ফোন দিলো
আমি – হ্যা বলো
তানজিল – সত্যি সত্যি চলে আসলে দেখা করতে..??
আমি – আমি এসে গেছি তুমি জানলে কিভাবে..??
তানজিল – তুমি এখন থেকা যা কিছু করবে সব খবর আমি পাবো।
আমি – কিন্তু কিভাবে..??
তানজিল – সেটা তুমার না জানলেও চলবে..
আমি – আমার কিন্তু বিশ্বাস হচ্ছে না…?
তানজিল – তাই..
আমি – হ্যা..
তানজিল – আচ্ছা তুমি এখন কালো শার্ট পরে আছো না.??
আমি – হ্যা তুমি জানিলে কিভাবে..??
তানজিল – বলেছি না তুমি যা যা করবে সব খবর আমি পাবো ওকে বাই
বলেই ফোব কাট
আমার কেমন জানি সন্দেহ হতে লাগলো এই মেয়ে কে হবে।
শাহিন – ওই তুই ফ্রেশ হবি না
আমি – হ্যা..
শাহিন – জলদি যা আমার খুব খিদে লাগছে খাবো..
আমি – ওকে
তারপর শাহিন আমাকে ওয়াস রুম দেখিয়ে দিলো আমি ফ্রেশ হয়ে চলে আসলাম। শাহিন এর বোনের নজর ভালো দেখছি না আমার দিকে কেমন করে যেন চেয়ে থাকে। মেয়েটা দেখতে একদম পরী।কিন্তু আমার দিকে এমন করে তাকায় কেন। ওর নাম নাকি নীলা। তারপর খাওয়া দাওয়া করে একটু রেস্ট নিলাম। একটুপর তানজিল ফোন দিলো
আমি – হ্যা বলো..?
তানজিল – বিকেল বেলা তুমি স্কল এর মাঠে আসবে..
আমি – কোন স্কুল এর মাঠে আমি চিনি নাকি কিছু..?
তানজিল – তুমার চিনতে হবে না আমি বলে দেই কোন কোন পথ দিয়ে আসতে হবে.
আমি – তা বলতে হবে না তুমি সুদু স্কুলের নাম বল আমি শাহিন কে নিয়ে চলে আসবো..
তানজিল – খবর দার তুমার ওই বন্ধুকে সাথে আনবে না।।
আমি – কেন..??
তানজিল – এতো কিছু জানা লাগবে না আমি যা বলছি তাই করবে…
আমি – ঠিক আছে চলে আসবো।
তারপর ফোন রেখে দিলো
আমি বিকেলে চুপচাপ শাহিন কে না বলে বাসা থেকে বের হয়ে তানজিল এর কথা মতো পথ চলতে লাগলাম তারপর স্কুলে চলে আসলাম। কিছুক্ষণ পর কয়েকটা মেয়ে আসলো তারমধ্য শাহিন এর বোন ও ছিলো সবাই এসে সবাই এক সাথে বললো কেমন আছেন দুলাভাই..?
আমি – এই কি বলছেন আমি আপনাদের দুলাভাই হতে যাবো কেন..?
একজন বললো – দুলাভাই এতো ভয় পান কেন..?
আমি – দেখুন আপনাদের ভুল হচ্ছে আমি আজকে ঢাকা থেকে প্রথম বরিশাল এ আসলাম। আর নীলা তুমি তো আমাকে চিনই তাই না..?
নীলা – তো এখানে আসছেন কেন..??
আমি – না মানে মানে.??
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here