“বন্ধুর বোন যখন বউ part – 6

গল্প – বন্ধুর বোন যখন বউ
part – 6
লেখক – মুসাফির

আমি রুমে এসে সব কিছু গুছিয়ে নিলাম। সেই লেখা চিঠিটা নীলার রুমে বিছানার উপর ফেলে আসলাম। জানি না হয়তো নীলা চিঠিটা পড়ার পর আমাকে ভুল বুঝবে। আমাকে হয়তো ভুলে যাবে।
তারপর আমি সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিলাম কিন্তু নীলাকে কিছু বললাম না। একবার নীলার চোখে চোখ পড়েই আমি ওর চোখে জল টলমল করছে আমি স্পশট দেখতে পেলাম। আমাকে কিছু ইশারাই বলতে চাইছিলো আমি অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম।
তারপর আমি বাসা থেকে বেড়িয়ে পড়লাম। স্টেশন এ এসে বাস এ উঠলাম। কিছু ভালো লাগছে না এভাবে সব কিছু নষ্ট হয়ে যাবে ভাবতেও পারিনি। এই সব ভাবতে চোখের কোনে ২ ফুটা পানি কখন যে চলে এসেছে বুঝতেও পারিনি।
আমার এই অবস্থা দেখে আমার পাশে বসা একটা মেয়ে বললো
মেয়েটা – আপনি কাঁদছেন কেন….???
আমি – কই না এমনি চোখে পানি এসেছে আমার চোখে সমস্যা আছে
মেয়েটা – আপনি আমাকে শিখাবেন কোন পানি চোখে সমস্যা এর জন্য আসে…?
আমি -….
মেয়েটা – আমি সুপ্তি বন্ধু ভেবে সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এতে মনটা হালকা হবে। আর আমি চেষ্টা করবো সমস্যা টা সমাধান করতে…
আমি – আপনার কাছে পানি হবে…
সুপ্তি ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে আমাকে দিলো।
আমি পুরু এক বতল পানি খেয়ে ফেললাম।
সুপ্তি – এবার বলেন..?
তারপর আমি আমার জীবনে গঠে যাওয়া সব গঠনা বললাম।
সুপ্তি – আমার কথা গুলা শুনে নিজেও কেঁদে দিলো।
আমি – এই হচ্ছে আমার সমস্যা
সুপ্তি – কি বলবো বলার মতো কোন ভাষা আমি খুজে পাচ্ছি না।
আমি -……..
সুপ্তি – আপনি কিন্তু কাজ টা খারাপি করেছেন…??
আমি – কি কাজ খারাপ করেছি…?
সুপ্তি – আপনি মেয়েটাকে এভাবে কষ্ট দিয়ে মাঝ রাস্তা থেকে পালিয়ে আসলেন
আমি – আমি কি করবো বলেন আমার তো কিছুই করার ছিলো না…
সুপ্তি – কেন আপনি তো নীলার সাথে সব কিছু শেয়ার করতে পারতেন তাই না…??
আমি – শাহিন সুধু আমার বন্ধু না বলতে পারেন বড় ভাই কলিজ্বা ওর সব কথা আমি রাখতে পারবো।
সুপ্তি – সত্যি আমারি এখন গর্ব হচ্ছে আপনার মতো একজন এতো বন্ধু বক্ত মানুষ এর সাথে কথা বলে….
আমি -……
সুপ্তি – আপনার বন্ধু জীবনে খুব বড় ধরনের ভুল করলো আপনাদের আলাদা করে।

আমার মনে হয়না নীলা কখনো আপনার কাছ থেকে কষ্ট পেতো।
যায় হক এখন কি করা সিদ্ধান্ত নিলেন..?
আমি – জানি না.
সুপ্তি – যাই করেন ভাইয়া জীবন টা কষ্ট পেয়ে নষ্ট করবেন। নতুন করে সব কিছু শুরু করার চেষ্টা করেন দেখবেন সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে..
আমি – আমি জানি আমি আবার সব কিছু নতুন করে শুরু করতে পারবো না কখনো না। আমার পক্ষে সম্ভব না নীলাকে ভুলতে পারা।
সুপ্তি -দেখেন প্রতিটা মানুষ এর জীবনেই ঝড় আসে তাই কিন্তু সবাই থেমে থাকেনা। আপনি ও একজন মানুষ আপনার জীবনে ও ঝড় আসবেই তাই আগেই ভয় পেলে চলবে না মোকাবেলা করতে হবে। সাহস রাখেন পারবেন।
এই সব কথা বলতে বলতে আমরা ঢাকা এসে গেছি।
আমি – আসলেই আপনার সাথে কথা বলে আমার খুব ভালো লাগছে আর মন টাও একটু হালকা হয়েছে….
সুপ্তি – সত্যি আমি এখনো আমার বিশ্বাস হচ্ছে না আপনার মতো ছেলে এখনো আছে…
আমি – যদি কিছু মনে না করেন একটা কথা বলি.???
সুপ্তি – হ্যা বলেন..??
আমি – আপনার মোবাইল নাম্বার টা আমি পেতে পারি যখন মন খারাপ হবে তখন আপনার সাথে কথা বলে যদি একটু মনটা হালকা হতো..
সুপ্তি – আপনার নাম্বার টা দেন..
আমি – ওকে. 01749912087
সুপ্তি – ওকে আমি ফোন দেবো।
তাহলে এখন আমি আসি।
আমি – ওকে ।
তারপর সুপ্তি চলে গেলো। তারপর বাসায় চলে আসলাম বাসায় কেউ নাই আব্বু আম্মু ঈদে গ্রামে চলে গেছে।
বাসায় একা হয়ে আবার নীলার কথা সৃতি গুলা মনে পরে গেল। মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখি নীলা ২৫০ বার ফোন দিছে। অনেক গুলা এসএমএস দিছে।
এই সব দেখেতে দেখেতেই আবার ফোন দিলো। কেটে দিলাম আরো বেশি বেশি ফোন দিলো। আমি পরে রিসিভ করলাম।
আমি – হ্যালো কি হয়েছে এতো ফোন দেন কেন…..??
নীলা – কান্না কন্ঠে বললো তুমি আমার সাথে এমনটা করতে পারলে….??
আমি -……
নীলা – কেন আমার সাথে মিথ্যা ভালোবাসার অভিনয় করলে কেন কেন..????
আমি -……..
নীলা – চুপ করে আসিস কেন আমার কথার জবাব দে…?
আমি – আমি যা বলার বলে দিয়েছি..??
নীলা – না আমার প্রশ্নের জবাব চাই আমি….?
আমি – আমি কারো প্রশ্নের জবাব দিতে বাধ্য না..
নীলা – ফোনে চিৎকার করে কান্না করে বলতে লাগলো তুই আমার সাথে কেন এমন করলি।
আমি – জানি না আমি কেন করেছি আমি কখনো তুমাকে মন থেকে ভালোবাসি নাই বাসতেও পারবো না ক্ষমা করে দিও…??
নীলা -আম তোরে ক্ষমা করবো কখনো না। আর আমি ক্ষমা করলেও আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবে না..
বলেই ফোন খেটে দিলো।
আমি ইচ্ছে করছে আমার বুকটা কেটে যদি দেখাতে পারতাম আমি নীলাকে কষ্ট দিয়ে কত টা কষ্ট পাচ্ছি.।
তারপর আর ফোন দেইনি আমি ও দেইনি। এভাবে প্রায় ৫-৭ দিন চলে গেল। হঠাৎ করে একদিন রাত ৪ টার দিকে কলিং বেল এর আওয়াজ শুনতে পেলাম। অনেক বার বাজার পর উঠে দরজা খুলে যা দেখলাম আমি তো পুরা অবাক……
চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here