বাতাসা ❣️ পর্ব -০১

#বাতাসা❤
writter:Ishanur Tasmia
পর্ব-০১
.
— হেই দিইইইসা! কিমুন আচো টুমি?
জেন ভাইয়ার কথাটা শুনে হেসে দিলো দিশা।তারপর হাসতে হাসতে বলল….
— জেন ভাইয়া আমার নাম দিশা।দিইইইসা না!
— সরি সরি দিইইইসা।আসলে তোমার নাম অনেক কঠিন।আমি উচ্চারণ করতে পারি না।
কিচ্ছুক্ষন জেনের দিকে তাকিয়ে থাকলো দিশা।পরক্ষনেই হাঁটা ধরলো।এই বিদেশি বিলাইয়ের সাথে থাকলে চলবে না।সারাদিন পকপক করে তার মাথা খেয়ে ফেলে!এখনও পিছনে পড়ে আছে জেন।দিশার সামনে এসে দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে সে বলে উঠে….
— দিইইইসা!আমি নতুন নতুন বাংলা শিখেছি, শুনতে চাও?
— না ভাইয়া আমার অনেক কাজ আছে।পরে কখনও শুনবো।
— না তোমার এখনই শুনতে হবে। প্লিজ দিইইইসা ডোন্ট সে নো!
চোখে-মুখে বিরক্তি ভেসে উঠল দিশার।বিরক্তি নিয়ে বললা….
— আচ্ছা বলুন।
বুক ভরে শ্বাস নিলো জেন।তারপর বলে উঠল….
— আ..আমি টোমাকে পচন্দ ক..করিই দিইইসা।
মুহুর্তেই দিশার চারপাশে একরাশ অস্বস্তি ছেয়ে পরল।পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বলল…
— আপনার বাংলা আরও শুদ্ধ ভাবে শিখতে হবে ভাইয়া।উচ্চারণগুলো ঠিক হচ্ছে না।
মন খারাপ হয়ে গেল জেনের।পরক্ষনেই হাসলো সে। তারপর বলল….
— সমস্যা নেই দিইইসা।আমি ঠিক করে ফেলবো উচ্চারণ।
তার হাসি দেখে হাসলো দিশা। তারপর পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিবে তখনই জেন তার হাত ধরে ফেলে।সাথে সাথে জেনের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো দিশা। দিশার এভাবে তাকানোতে হাতটা সরিয়ে ফেললো জেন।অপরাধির নেয় বলল…
— সরি দিশা আমি তোমার হাত ধরতে চাই নি।আসলে….
— যেটাই হোক ভাইয়া।আপনার এভাবে হাত ধরাটা ঠিক হয় নি।এটা বাংলাদেশ।এখানে মেয়েদের হাত এভাবে ধরা যায় না।
— সরি!সরি!সো সরি! আমি ইচ্ছা করে করি নি সত্যি। তোমাকে একটা কথা বলার ছিল আর তুমি চলে যাচ্ছিলে তাই।সরি দিশা!
— ভাইয়া এতবার সরি বলতে হবে না।আমি আপনাকে মাফ করেছি।এখন বলুন কি বলতে চান।
— তুমি তো একটু পর ভার্সিটি যাবে।তাই না দিইইসা?
— হ্যাঁ!কেন?
— আসলে আমি তোমার সাথে তোমার ভার্সিটি ঘুরতে যেতে চাই।আমি দেখতে চাই আমেরিকা আর বেংলাদেসের ভার্সিটির পার্থক্য কেমন।আমাকে কি তোমার সাথে নিয়ে যেতে পারবে?
কিছুক্ষম ভ্রুঁ কুঁচকে তাকিয়ে রইল দিশা জেনের দিকে।তারপর বলল….
— আচ্ছা।
সাথে সাথে মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল জেনের।দিশাকে ধন্যবাদ জানাতেই দিশা বলে উঠল….
— আমি রেডি হতে যাচ্ছি।আপনিও রেডি হয়ে নিন জেন ভাইয়া।
মাথা নাড়ালো জেন।তারপর হাওয়ার গতিতে চলে গেলে নিজের রুমে।জেনকে দিশার মাঝে মাঝে অদ্ভুদ লাগে।সবসময় উদ্ভট কথা বলে দিশার সাথে।জেন ফ্রেন্ডিস!আমেরিকার বাসিন্দা।কয়েকদিন আগেই এসেছে দিশার ভাইয়ের সাথে বাংলাদেশ। পড়ালেখার খাতিরে দিশার ভাই রাফসানকে আমেরিকা যেতে হয়ে ছিল।সেখানেই জেন আর রাফসানের দেখা। খুব ভালো বন্ধুত্ব তাদের। এত ভালো বন্ধু যে জেন বলা মাত্রই তাকে নিয়ে নিজের দেশে,নিজের শহরে ভার্সিটির ছুটিতে নিয়ে এসেছে রাফসান।মাস-খানিক থাকবে ওরা।
১.
রেডি হয়েই বাসার বাইরে বের হয় দিশা।জেন আগেই দাঁড়িয়ে ছিল গেটের কাছে। এক নজর দেখে নিলো দিশা জেনকে। একদম #বাতাসা মিষ্টির মতো সাদা জেন।জিম করা বডিতে কালো শার্ট-টা কেমন লেপ্টে আছে।চোখ দু’টো ধূসর রঙের।ঠোঁট একেবারে লাল,আর চুলগুলো!সেগুলো সর্বদা কপালে বিরাজমান।সব মিলিয়ে সুন্দর।হঠাৎ জেন দিশাকে বলে উঠে….
— তোমাকে সুন্দর লাগছে দিশা।
হাসলো দিশা।ধন্যবাদ জানিয়ে একটা রিকশা ডাকলো সে। কিন্তু বিপ্তত্তি হলো দু’জন একই রিকশায় কিভাবে বসবে।জেনের সাথে পাশাপাশি বসা তো দিশা জন্য অসম্ভব একটা ব্যপার।কিন্তু সিএনজিও নিতে পারবে না সে। তার মতে সিএনজিতে এত এত টাকা খরচ করে ভার্সিটি যাওয়ার কোনো মানেই হয় না।অগত্যা দু’জনেই পাশাপাশি বসে পড়ল।
রিকশা চলতে শুরু করলেই জেন দিশার হাত শক্ত করে ধরে ফেলে। দিশা অবাক হয়ে জেনের দিকে তাকাতেই দেখলো সে চোখ মুখ খিঁচে বসে আছে।হয়তো রিকশায় কখনও উঠেনি।এজন্য ভয় পাচ্ছে।তাই দিশাও আর কিছু বলল না।মানুষটা তো ইচ্ছে করে তার হাত ধরে নি।বিপদে পরে ধরেছে।
.
কিছুক্ষনের মধ্যেই তারা পৌঁছে যায় ভার্সিটিতে। দিশা ভাড়া চুকিয়ে লেগে যায় জেনকে নিজের ভার্সিটি ঘুড়াতে। এসিকে ভার্সিটির সবাই এমন বিদেশি #বাতাসা দেখে হা করে তাকিয়ে আছে।একটা মেয়ে তো সোজাসুজি এসে জেনের সামনে দাঁড়ালো।হাতে তার গোলাপ।জেনের দিকে গোলাপটা এগিয়ে দিয়ে বলল….
— আপনি অনেক সুন্দর!
ভ্রুঁ কুঁচকে এলো জেনের।মেয়েটা কি বলছে তা ঠিক বুঝতে পারছে না সে।তবে এটা জানে মেয়েটা হয়তো বাংলাতে কিছু বলেছে।তাই জেন দিশার দিকে তাকালো। দিশা জেনের তাকানো দেখে বলল….
— সি সেইড, ইউ আর হ্যান্ডসাম।
হাসলো জেন।মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল…
— থ্যাংক্স।
সাথে সাথে মেয়েটা হাতে থাকা গোলাপ জেনের হাতে দিয়ে বলল…..
— আমি আপনাকে ভালোবাসি।
কথাটা বলেই দৌড় দিল মেয়েটি।এদিকে মেয়েটার এহেন কান্ডে দিশা তো হাসতে হাসতে কুটিকুটি।আর জেন! সে তো আগামাথা কিছু বুঝেই নি মেয়েটা কি বলেছে।এক হাতে গোলাপ ফুলটা ধরে অন্য হাতে নিজের মাথা চুলকাচ্ছে আর দিশার দিকে তাকিয়ে আছে মাত্র।
জেন কিচ্ছুক্ষন এভাবে থেকে মেয়েটির বলা কথা ইংরেজি মিনিং জানতে চাইলেই দিশা বলে উঠে…
— সি সেইড দেট সি লাভ ইউ।
বলেই আবার হাসতে লাগলো দিশা।দিশার হাসি দেখে জেনও এবার হাসলো।হাতে থাকা ফুল দিইইসার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল….
— আ..আমি টুমাকে ভালুবাসি দিইইসা।
হাসি থেমে গেল দিশার। নির্বাক তাকিয়ে আছে জেনের দিকে।
.
.
চলবে…
~কপি করা নিষেধ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here