বাতাসা ❣️ পর্ব -০৪

#’বাতাসা❤
#’ঈশানুর তাসমিয়া মীরা
#’পর্ব-০৪
.
জেনকে যথা সম্ভব এভোয়েড করা শুরু করেছে দিশা। সামনা-সামনি পড়ে গেলে কোনো মতে হেসে দু’চারটে কথা বলেই চলে যায় সে। এতে অবশ্যক জেন কিছু বলে নি এখন পর্যন্ত। যা প্রচন্ড ভাবে ভাবায় দিশাকে। এতদিন তো দিশা বলতে অজ্ঞান ছিল জেন। হঠাৎ দিশা এভোয়েড করা সত্তেও এত নিশ্চুপ কেন? দিশার ভাবনা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। আজকে সকালেরই ঘটনা। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়েই ছাদে চলে যায় দিশা। পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদে একজন ভাইয়াও ছিল তখন। দিশাকে দেখে হাসি-মুখে বলল,
— ” কেমন আছো দিশা? তোমার তো দেখাই পাওয়া যায় না। ”

প্রতিউত্তরে দিশাও হেসে বলল,

— ” আসলে ভাইয়া একটু ব্যস্ত ছিলাম তো। আপনি কেমন আছেন? ”
— ” এখন তো বেশ ভালো। শুনলাম তোমার ভাইয়ের সাথে নাকি তার বিদেশি বন্ধু এসেছে। কথাটা কি সত্যি? একবারও তো দেখলান না এখানে।”

জেনের কথা জিজ্ঞেস করায় দিশার অস্বস্থি হতে লাগলো। কিছুক্ষণ আমতা আমতা করে কিছু বলবে তার আগেই পাশ্ব থেকে ঝাঁঝালো কণ্ঠে ইংরেজীতে কেউ বলে উঠল,

— ” এই ছেলে কে দিইইসা? তুমি ওর সাথে হেসে হেসে কথা বলছো কেন? আর বলবে না। ”
একরকম শাসিয়ে বলল জেন। অনেকটা আদেশ দেওয়ার মতো। দিশার ভ্রু কুঁচকে গেল। তাকে আদেশ দেওয়ার মতো জেন কে? কথাটা জিজ্ঞেস করবে তার আগেই পাশের ছাদ থেকে ওই ছেলেটা আবারো বলল,

— ” উনিই তোমার ভাইয়ের বন্ধু দিশা? দেখতে তো পুরো দুধে আলতা। ”

বলেই নিজ মনে হেসে উঠল। বাংলায় বলায় জেন বুঝলো না কথাটা। ভ্রু কুঁচকে বলল,
— ” কি বলেছে ও? ”

দিয়া এবারো কিছু বলতে পারলো না। ছেলেটা মুচকি হেসে বলল,

— ” হ্যালো মিস্টার। আই এম শান চৌধুরী। নাইস টু মিট ইউ। ”

শানের কথার ধরণ দেখে মনে হলো সে প্রচুর খুশি জেনের সাথে দেখা করে। কিন্তু জেন খুশি হতে পারলো না। মুখে বিরক্তি ভাব এঁটে রেখেছে সে। কোনোমতে দ্রুত বলল,

— ” আমি জেন এন্ডারসন। ”

কথা বলেই আর এক মুহুর্ত দাঁড়ালো না জেন। দিশার হাত টেনে নিয়ে যেতে লাগলো সিড়ি ঘরের দিকে। দিশা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। এভাবে হুট করে চলে আসার মানে কি? শান কি না কি মনে করেছে। হয়তো খারাপ কিছুই ভাবছে সে। ভাবতেই রেগে গেল দিশা। জেনকে হাত ছাড়তে বললেও জেন ছাঁড়লো না হাত। উল্টো আরো শক্ত করে চেপে ধরল। এক প্রকার ধাক্কা দিয়ে দেওয়ালের সাথে ঘেঁষে দাঁড় করালো দিশাকে। দিশা ব্যথায় কুঁকড়ে যায়। রাগি কণ্ঠে বলে,

— ” সমস্যা কি আপনার? এমন করছেন কেন? ”

জেন সাথে সাথেই জবাব দিলো না। দিশার গা ঘেঁষে দাঁড়ালো। গাল চেপে দাঁত কটমট করে বলল,

— ” তুমি জানো না আমার সমস্যা কি? আমাকে ইগনোর করছো, তবুও কিছু বলিনি। বাট! অন্য ছেলেদের সাথে এমন হেসে হেসে কথা বলবে না। আমার পছন্দ নয়। ”

দিশা তেজ নিয়ে বলল,
— ” কেন? আপনার কথা মতো হবে সব? ”

জেন ঢোক গিলে তাকালো। আচমকাই আলতোভাবে দিশার কপালে ঠোঁট ছুইয়ে দিলো সে। দিশা বরফের মতো জমে গেল যেন। কথা গলায় দলা পাকিয়ে যাচ্ছে। চোখ বড় বড় হয়ে গেছে। জেন বাঁকা হাসলো। কানের কাছে এগিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে উঠল,

— ” আশা করি পরের বার আর প্রশ্ন করবে না। ”

বলেই একপলক তাকালো দিশার দিকে। চোখে চোখ রেখে শান্ত কণ্ঠে বলল,
— ” আ.. আমি টুমাকে বীষন ভালুবাসি দিইইসা। ”

দিশা আবারো চমকে গেল। জেনের চোখে হারিয়ে যেতে লাগলো যেন।

______________

#’চলবে…
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here