বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব -১৩+১৪

#বাবুইপাখির_অনুভূতি🕊️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম🕊️
— পর্বঃ১৩
_________________

শ্রীমঙ্গলের সারি সারি আঁকা বাঁকা পথ পেরিয়ে এগিয়ে চলছিল নীরব,অথৈ,মীরা,আহি,সোহান,রিনি, সুজন আর শরীফ। মস্ত বড় গাড়ির জানালার পাশে মুখ বাকিয়ে বসে আছে আহি। প্রকৃতির প্রেমে যেন বার বার পড়ছে সে। সরু রাস্তা দিয়েই চলছে ওঁরা,রাস্তার চারপাশে যেমন রয়েছে সারি সারি গাছপালা তেমন চারপাশের মাঠ জুড়ে রয়েছে অসংখ্য সারি সারি চা বাগান। যদিও ওঁরা এই মুহূর্তে চা বাগানের উদ্দেশ্য বের হয় নি৷ কিন্তু তারপরও দূর থেকেই চারপাশের চা বাগান দেখেই প্রায় মুগ্ধ সবাই। আহি তো নিশ্চুপে গাড়ির জানালার পাশে বসে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে বাহিরে। হিম শীতল ঠান্ডা বাতাস এসে লাগছে আহির মুখে এতে আরো বেশি ভালো লাগছে আহির। সময়টা সকাল আটটার কাছাকাছি হওয়াও রোদ্দুর নেই তেমন। এই রোদ্দুর বিহীন সরু রাস্তার মুগ্ধ করা পরিবেশ আর চা বাগানের সৌন্দর্যের যেন প্রেমে পড়েছে সে। আহি নীরবে তার চোখ দুটো ভুজে ফেললো। আজ যেন চোখ বন্ধ করতেই প্রকৃতিকে কাছ থেকে ফিল করছে সে। একরাশ মুগ্ধতা আর অভিরাম ভালো লাগা নিয়েই এগিয়ে চলছে সে। বাকিরাও প্রায় একইরকম আহির পাশেই বসে আছে রিনি সে মোবাইল দেখছে আর রিনির পাশে অথৈ সে চুপচাপ বসে আছে মুখে তেমন কথা নেই। ওরা বসেছে গাড়ির শেষের সিট জুড়ে। আর মাঝখানের সিটে বসেছে মীরা,সুজন আর সুজনের পাশ দিয়ে নীরব আর সামনের সিটে বসেছে শরীফ আর সোহান। ওঁরা বেশ হাসাহাসি করছে আর নীরব মাঝে মধ্যে ওদের কথার তালে তালে মাথা নাড়াচ্ছে। তবে প্রকৃতির এই দমকা হাওয়া বেশ সবাই ফিল করছে। গাড়ির সব জানালা গুলো খোলা ছিল কিনা?’

____

জানালার কার্নিশ বেয়ে দমকা হাওয়া এসে বার বার আদ্রিয়ানের থাইগ্রাস জুড়ে থাকা সাদা পর্দাগুলো উড়িয়ে দিচ্ছে বার বার। রাতের চাঁদ মামা চলে গেছে অনেক আগেই এখন আস্তে আস্তে সূর্য্যিমামা তার আলো ছড়াচ্ছে। পরিবেশটা বেশ মিষ্টি আর সাচ্ছন্দ্য পূর্ণ। কিন্তু এসবের ওপর বিন্দুমাত্র নজর নেই আদ্রিয়ানের সে তো তার মতো গভীর ঘুমে ব্যস্ত। আদ্রিয়ান এতটাই গভীর ঘুমে ব্যস্ত যে তার ফোনটা বেশ কয়েকবার বেজে বেজে কেটে যাচ্ছে সেটা একবারও বুঝতে পারছে না সে।’

অন্যদিকে অফিসে বসে লাগাতার নিলয় কল করে যাচ্ছে আদ্রিয়ানকে কিন্তু আদ্রিয়ানের হুস নেই। বিকেলেই একটা ভিডিও কনফারেন্স মিটিং রয়েছে আদ্রিয়ানের। সে ব্যাপারেই কিছু কথা বলতো নিলয়। কিন্তু আদ্রিয়ানের তো ফোন তোলার খবরই নেই। লাস্ট আর একবার কল করলো নিলয় কিন্তু সেটাও আদ্রিয়ান না ধরাতে খানিকা চিন্তিত মাখা মুখ নিয়ে বসে পড়লো সে চেয়ারে। পুরোটা না বুঝতেও খানিকটা আন্দাজ করতে পারছে নিলয়। ছোট্ট একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ফোনটা রেখে দিল সে টেবিলে।’

____

প্রায় কয়েক ঘন্টা পর নীরবদের গাড়ি এসে থামলো মাধবপুর লেক এর ভিতরে যাওয়ার গেটের সামনে। আর এখান থেকে বাকিটা পথ সবাই মিলে হেঁটে যাবে। অতঃপর সবাই গাড়ির ভাড়া মিটিয়ে নেমে পড়লো। তারপর এঁকে এঁকে সবাই হেঁটে পাড়ি জমালো লেক পর্যন্ত যাওয়ার উদ্দেশ্যে। একদম গ্রামীণ মাটির পথ পেরিয়ে এগিয়ে চলছে সবাই, ধবধবে সাদা আকাশ, মেঘেরা আজ চলছে আকাশের চারপাশ দিয়ে। বিন্দু বিন্দু জায়গায় রোদ্দুরেরা ভিড় করছে খুব। চারপাশের বাতাসের শব্দ ম ম করছে সাথে গাছের পাতাগুলো নড়ছে খুব। নীরব নিমিষেই তার মুঠো ক্যামেরায় আশপাশের পরিবেশের ছবি ক্যাপচার করে নিলো। এমন সময় আকাশ পথ দিয়ে উড়ে গেল একঝাঁক পাখি এতে যেন মুগ্ধতার একদম চরম সীমানায় পৌঁছে গেল সবাই৷ তারপর বলতে না বলতেই মুগ্ধতার এই পথ পেরিয়েই পৌঁছে গেল সবাই মাধবপুর লেকের সামনে। মস্ত বড় এক বিশাল লেক হলো মাধবপুর লেক, যার চারপাশ দিয়ে ঘিরে আছে অসংখ্য সবুজের পাহাড় সাথে অসংখ্য গাছপালা। পুরো লেকটার প্রায় প্রায় জায়গা জুড়ে রয়েছে পদ্ম ফুল। এতে যেন লেকের সৌন্দর্য আরো দিগুণ বেড়ে গেছে। সবাই বেশ মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইলো লেকের চারপাশ জুড়ে। লেকের পাশেই রয়েছে বসার জন্য একটা সুন্দর জায়গা সবাই গিয়ে বসে পড়লো সেখানে। তারপর সবাই মিলে একে একে লেকের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে লাগলো নীরবের সাহায্যে। রিনি আহি আর অথৈ তিনজন একসাথে ছবি তুলতে লাগলো। বেশ বড় জলাভূমিও বলা যায় এটাকে কিন্তু সমস্যা হলো এই লেকটাকে শুধু পাড় থেকেই দেখতে হবে। আশেপাশের কোনো নৌকা নেই থাকলে সেটায় চড়ে বেশ ঘুরে ঘুরে দেখা যেত পুরো জায়গাটা কিন্তু আফসোস এটা হলো না।’

বেশ কতক্ষন লেকের পাশে কাটিয়ে এগিয়ে গেল সবাই সামনেই থাকা একটা উঁচু টিলার উপর যেখান থেকে নিচের এই লেকটাকে আরো সুন্দরভাবে দেখা যায়। সবাই বেশ আগ্রহ নিয়ে উঠলো উপরে। নীরব সবার আগে উপরে উঠে একে একে সবার হাত ধরে উপরে উঠালো অথৈকেও উঠালো সে। তারপর সবাই একসাথে উপর থেকে দেখতে লাগলো নিচের লেকটা। এখান থেকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে লেকটাকে। সবাই একসাথে সারি সারি হয়ে দাঁড়িয়ে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইলো লেকের দিকে।’

বেশ কয়েক ঘন্টা পর।’

লেক থেকে বের হতে হতে প্রায় দুপুর দুটোর কাছাকাছি সময় লেগে গেছে নীরবদের। জায়গাটাতে এতটাই হারিয়ে গিয়েছিল সবাই যে কখন যে এতটা সময় হয়ে গেল বুঝতেই পারে নি। আড্ডা, হই হুল্লোড়, ফটোশুট আর এই সুন্দর প্রকৃতি দেখতে দেখতে প্রায় সুন্দর সময় পাড় করলো সবাই। বর্তমানে গাড়ি করে একটা ভালো রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিচ্ছে ওঁরা তারপর সেখান থেকে লান্স সেরে চা বাগান ঘুরে সন্ধ্যার দিকে রিসোর্টে ফিরবে সবাই।’

_____

সাদা টাওয়াল পড়ে ওয়াশরুম থেকে গোসল সেরে বের হলো আদ্রিয়ান। চুল দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে তার। আদ্রিয়ান আস্তে আস্তে হেঁটে চলে যায় আয়নার সামনে, চোখ মুখ হাল্কা ফুলে গেছে তার। ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় দুপুর বারোটা ছাড়িয়ে গিয়েছিল যখন আদ্রিয়ানের ঘুম ভাঙে। কাল শেষ রাতে ঘুমের ঔষধ খাওয়ার ফলে এমনটা হয়েছে তাঁর। আদ্রিয়ান ছোট্ট দীর্ঘ ফেলে আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজের মাথার চুলগুলো মুছতে লাগলো এমন সময় তার দরজায় নক করলো কেউ আদ্রিয়ানও বেশি কিছু না ভেবে চলে যায় দরজার সামনে। দরজা খুলতেই দেখলো সে দুজন ছেলে হাতে খাবারের ট্রে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আদ্রিয়ান ওদের হাত থেকে খাবার নিয়ে বললো,

‘ থ্যাংক ইউ!’

উওরে মুচকি হেঁসে চলে গেল ছেলেগুলো। ছেলেগুলো যেতেই আদ্রিয়ানও দরজা বন্ধ করে দিয়ে খাবারগুলো টেবিলের উপর রাখলো। এর মধ্যে ফোনটাও বেজে উঠলো তাঁর আদ্রিয়ান এগিয়ে গেল ফোনের কাছে উপরে নিলয়ের নাম্বার দেখে তার আর বুঝতে বাকি নেই নিলয় কেন ফোন করেছে। আদ্রিয়ান ফোনটা তুলে বললো,

‘ হ্যালো।’

আদ্রিয়ানের হ্যালো শুনে নিশ্চিত মুখ নিয়ে বললো নিলয়,

‘ তুই ঠিক আছিস তো?’

নিলয়ের কথা শুনে বেশ অবাক হয়ে বললো আদ্রিয়ান,

‘ আমার আবার কি হবে।’

‘ না কিছু না তা খেয়েছিস?’

‘ না খাবো বিকেলের মিটিং এর কথা বলেছিস তো সবাইকে?’

‘ হুম পাঁচটার আগেই সবাই তৈরি থাকবে।’

‘ হুম গুড, বাকি কথা মিটিং এ হবে।’

এতটুকু বলে ফোনটা কাটে আদ্রিয়ান। তারপর চটজলদি খাবার শেষ করে মিটিং এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সে।’

___

পরন্ত বিকেল বেলা লান্স সেরে চা বাগানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো সবাই বলতে না বলতেই অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে পৌঁছে গেল ওঁরা চা বাগানের সামনে। তারপর একে একে সবাই ঢুকলো বাগানের ভিতর। বিশাল এক মাঠ জুড়ে ঘিরে ধরে আছে সবুজের সমোরোহ চায়ের বাগান। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজেই যেন মুগ্ধ করা দেশ। আমাদের এই বাংলা দেশ। প্রকৃতির সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়ে তাকিয়েই বলে উঠল নীরব,

‘ সবাই বেশ সাবধানে ঘুরিস আর বেশি দূর যাস হারিয়ে গেলে খুঁজে পাওয়া মুসকিল।’

নীরবের কথা শুনে সবাই বললো,

‘ ঠিক আছে।’

তারপর শুরু হলো চা বাগান জুড়ে ঘোরাঘুরি। পুরো জায়গার মাঝখান জুড়েই হাঁটছে ওঁরা সাথে ফটোশুট করছে। এবারের ঘোরাঘুরিতে আহি রিনি আর অথৈ তিনজন একসাথে ঘুরছে আর নীরব মীরা ওঁরা অন্যদিকে ফটোশুট করছে।’

আহি, রিনি আর অথৈ একসাথে ঘোরাঘুরি করছে সাথে ছবি তুলছে আশেপাশে খুব বেশি মানুষজন নেই। এতে বেশ খারাপ লাগছে না। একটা লম্বা গাছের কিনারায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত আহি,রিনি আর অথৈ। হঠাৎই আহির ফোনটা বেজে উঠল উপরে মায়ের নাম্বার দেখে কিছুটা সাইডে চলে যায় সে। তারপর ফোনটা তুলে বললো,

‘ হ্যা…

আহি আর কিছু বলার আগেই ঐদিকে কর্কশ কন্ঠ নিয়ে বললো আহির মা,

‘ রাখ তোর হ্যালো শ্রীমঙ্গল গিয়ে তো মাকে একদম ভুলে গেছিস,কাল থেকে একটাও ফোন করিস নি কেন?’

মায়ের কথা শুনে ঠোঁটে কামড় দিল আহি, সে একদমই ভুলে গিয়েছিল বিষয়টা। ঠোঁটে কামড় দিয়ে বললো আহি,

‘ আসলে হয়েছে কি মা এখানে নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায় না তাই আর কি?’

‘ হয়েছে আর মিথ্যা কথা বলা লাগবে না।’

‘ বিশ্বাস করো আমি মিথ্যে বলছি না তোমার বিশ্বাস না হলে তুমি নীরব ভাইয়াকে বাসায় গিয়ে জিজ্ঞেস করো।’

‘ হয়েছে আর বলতে হবে না এখন বল কেমন আছিস কাল ফিরবি তো?’

‘ হুম মা কাল সকালেই ফিরবো।’

‘ খুব ভালো তা লান্স করেছিস?’

‘ হুম

এই রকম আরো হাজারে কথা বলায় মগ্ন হয়ে পড়লো আহি তার মায়ের সাথে। হঠাৎই কিছু একটা সামনে দিয়ে যেতে বেশ চমকে উঠলো আহি। তবে জিনিসটা কি ছিল এটা দেখার আগ্রহে সেটার পিছন পিছন চললো আহি। আর মাকে বললো,

‘ তোমায় আমি পরে ফোন দিচ্ছি মা?’

‘ ঠিক আছে ভালো থাকিস আর কাল ফিরে আসিস সবাই মিলে।’

‘ ওকে মা।’

এতটুকু বলে ফোনটা পকেটে নিয়ে নিলো আহি। আশেপাশে ভালো ভাবে তাকাতেই আহি দেখতে পেল একটা ছোট্ট সাদা রঙের খরগোশ ছানা। এই সুন্দর চা বাগানের মধ্যে এমন একটা প্রানি দেখতে পাবে আহি এটা সে বুঝতেই পারে নি। খরগোশ আহির অনেক পছন্দের একটা প্রানি। আহির ইচ্ছে জাগলো খরগোশ ছানাকে ধরার তাই সে খরগোশ ছানার পিছন পিছন দৌড়াতে লাগলো। আর আহিকে নিজের দিকে আসতে দেখে খরগোশ ছানাও দিচ্ছে দৌড়।’

বেশ খানিকটা দৌঁড়ানোর পর প্রায় হাঁপিয়ে উঠলো আহি কিন্তু খরগোশ ছানার দেখা মিললো না তাঁর। একটা বড় গাছের সামনে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে শ্বাস ফেলতে লাগলো সে। হঠাৎই তার থেকে দু’কদম দূরে খরগোশ ছানাটাকে নিচের ঘাস চিবাতে দেখে বুদ্ধি আসলো আহির মাথা। আহি হুট করেই ধপাস করে লাফ মেরে গিয়ে ধরলো খরগোশ ছানাকে। কিন্তু পড়তে গিয়ে দুটো ক্ষতি হলো আহির এক তাঁর জামাকাপড় নষ্ট হয়ে গেছে আর দুই আর ফোনটা পকেট থেকে পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে। আহি খরগোশ ছানাকে কোলে নিয়ে বলে উঠলো,

‘ দেখিছিস তোকে ধরতে গিয়ে কি কি ক্ষতি হলো আমার,,তবে তোকে ধরেছি এতেই আমার শান্তি আর তোকে যেতে দিচ্ছি না এখন থেকে তুই আমার সাথেই থাকবি।’

বলেই খরগোশ ছানাকে জড়িয়ে ধরে চুমু কাটলো আহি। তারপর বললো,

‘ এখন চল আমার সাথে বাকি সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।’

বলেই আশেপাশে তাকাতেই চোখ তাঁর চড়ুই গাছ কারন সে কোথায় থেকে কোথায় এসে পড়েছে বুঝতে পারছে না।’

‘তাহলে কি হারিয়ে গেলাম আমি’– কথাটা মাথায় আসতেই শরীর কেঁপে উঠলো আহির।’

____

কালো কোট প্যান্ট পড়ে বিছানার ওপর বসে মিটিং সেরে নিচ্ছিল আদ্রিয়ান। সময়টা তখন প্রায় সন্ধ্যার কাছাকাছি, আদ্রিয়ান তার মিটিং এর একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে হঠাৎই আদ্রিয়ান বলে উঠল,

‘ তাহলে আমি যেভাবে বললাম সেভাবেই কাজটা শুরু করুন সবাই। দু’দিনের মধ্যে আমরা আমাদের প্রজেক্ট শেষ করবো আর আমি কালকের মধ্যেই ঢাকা যাওয়ার ব্যবস্থা করছি বাকি কথা সামনাসামনি হবে।’

আদ্রিয়ানের কথা শুনে আদ্রিয়ানের অফিসের একজন লোক বলে উঠল,

‘ ওকে স্যার।’

‘ হুম।’

বলেই ভিডিও কল বন্ধ করে দেয় আদ্রিয়ান। হঠাৎই আকাশে কালো মেঘ এসে ভর করলো। সাথে আকাশে গর্জনও দিতে শুরু করলো। আদ্রিয়ান বিছানার ওপর থেকে ল্যাপটপটা অফ করে চলে যায় বেলকনির দিকে। আকাশে বেশ মেঘ করেছে হয়তো তুমুল বেগে বৃষ্টি হবে আজ। এতটুকু ভেবে গায়ের কোটটা খুলে বিছানার ওপর রেখে চলে যায় সে ওয়াশরুমের দিকে।’

____

আদ্রিয়ানের বেলকনির সামনে থাকা বাগানের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসলো আহি,কোথা থেকে কোথায় চলেছে সে বুঝতে পারছে না নীরবকে একটা কল করবে সেটাও পারছে না কারন ফোনটা বন্ধ হয়েছে তো আর খুলছে না। এর মধ্যে আকাশের এমন ডাক শুনে ভয়ে আত্মা কেঁপে উঠছে আহির। কি করবে না করবে কিছুই বুঝতে পারছে না সে। পুরো জায়গাটা একদম ঘন কালো অন্ধকারে ডুবে গেছে। আশেপাশের পরিবেশ দেখে বোঝাই যাচ্ছে এখন তুমুল বেগে বৃষ্টি হবে। আর বলতে না বলতে এক ফোটা দু’ফোটা করে বৃষ্টি পড়তে শুরু হলো আচমকা এমনটা হওয়াতে আহি ভিজে যাওয়ার ভয়ে বেশি কিছু না ভেবেই সামনের বেলকনি টপকে চলে যায় ভিতরে। এরই মধ্যে ওয়াশরুমের দরজা খুলে বাহিরে বেরিয়ে আসলো আদ্রিয়ান।’

ওয়াশরুম খোলার শব্দ কানে আসতেই আহি ভয় পেয়ে গিয়ে লুকিয়ে পড়ে সামনের পর্দায় আড়ালে।’

ওয়াশরুম থেকে বের হতেই কেমন একটু লাগলো আদ্রিয়ানের বেলকনির দরজাটা এতটা খোলা ছিল না তাঁর ভেবেই আশেপাশে তাকালো সে। হঠাৎ পর্দার আড়ালে কাউকে লুকিয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে গেল সে।

অন্যদিকে ভয়ে শরীর বুক সব কাঁপছে আহির। সে ভাবতেই এই রকম একটা বাজে পরিস্থিতিতে তাকে পড়তে হবে।

আদ্রিয়ান আস্তে আস্তে গিয়ে সাদা পর্দা সরাতেই আহিকে কাঁদা মাখা অবস্থা দেখে অবাক হয়ে বললো,

‘ তুমি?’

‘তুমি’ শব্দটা কানে আসতেই আহি সামনে তাকাতেই আদ্রিয়ানকে দেখে চরম অবাক আর ভয়ে ঢোক গিলে বললো,

‘ আপনি এখানে?’
!
!#বাবুইপাখির_অনুভূতি🕊️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম🕊️
— পর্বঃ১৪
_________________

থাইগ্লাসের সাথে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছে আদ্রিয়ান আহিকে। চোখে মুখে স্পষ্ট রাগ বোঝা যাচ্ছে তার। আর আদ্রিয়ানের এমন চাহনি দেখে ভয়ে প্রান যায় যায় অবস্থা আহির। আহি শুকনো ঢোক গিলে বললো,

‘ প্লিজ আমায় মারবেন না আমি বুঝতে পারি নি এখানে আপনি থাকবেন।’

আদ্রিয়ান আহির কথার তেমন পাত্তা না দিয়ে রাগী লুক নিয়ে বলে উঠল,

‘ তুমি বার বার আমার সামনেই কেন আসো?’ আর শ্রীমঙ্গল কি করছো?’

‘ বিশ্বাস করুন আমি ইচ্ছে করে এখানে আসি নি আসলে বন্ধুদের সাথে চা বাগান দেখতে এসেছিলাম তখন রাস্তা হারিয়ে ফেলে এইখানে চলে আসছি?’

‘ মিথ্যে বলার জায়গা পাচ্ছো না আর, তুমি আমায় ফলো করছো না তো?’

‘ না না বিশ্বাস করুন এমন কিছু নয়।’

এমন সময় আহির হাতে থাকা খরগোশ ছানা লাফ মেরে উঠে চলে গেল আদ্রিয়ানের গায়ের উপর। আচমকা এমনটা হওয়াতে পুরো চমকে উঠলো আদ্রিয়ান। আদ্রিয়ানের সাদা শার্টকে কাঁদা দিয়ে চলে যায় সে। খরগোশের কাজে আদ্রিয়ান সরে এসে নিজের শার্টের দিকে তাকিয়ে রেগে বলে উঠল,

‘ হোয়াট দা হেল?’

আদ্রিয়ানের কথা আর শার্টের অবস্থা দেখে আহির অবস্থা তো আরো খারাপ সে ছিঁটকে এগিয়ে এসে খরগোশ ছানাকে কোলে তুলে নিয়ে বললো,

‘ প্লিজ প্লিজ ওকে কিছু করবেন না আমি আপনার শার্ট ভালো মতো ধুয়ে দিবো?’

আদ্রিয়ান ভয়ংকর ভাবে রেগে গিয়ে আহির দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে উঠল,

‘ একি তো না বলে আমার রুমে ঢুকেছো তারওপর তোমাদের তো আমি..

বলেই আদ্রিয়ান তেড়ে আসলো আহির দিকে। আদ্রিয়ানের কাজে আহি ভয় পেয়ে এদিকে সেদিক দৌড় লাগালো আর বললো,

‘ প্লিজ এমন করবেন না ওর হয়ে আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি।’

কিন্তু কে শোনে কার কথা আদ্রিয়ান মনে হয় আজকে আহিকে মেরেই ফেলবে এমনিতেও সেদিনের অফিসে বসে বলা কথা আদ্রিয়ান এখনো ভোলে নি।’

_____

একটা টি শপের দোকানে বসে আছে নীরব অথৈ,মীরা,সোহান,শরীফ, সুজন আর রিনি। দৌড়াতে দৌড়াতে অবস্থা তাদের বেজায় খারাপ। সবাই বেশ জোরে জোরে শ্বাস ফেলছে এখানে বসে। আর একটু হলেই বৃষ্টিতে ভিজে সবার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যেত। যদিও এখনও অল্প স্বল্প ভিজে গেছে তারা। তখন হুট করে আকাশের বাজে অবস্থা দেখে নীরব সবাইকে উদ্দেশ্যে করে বললো ফেরার জন্য এরই মধ্যে বলতে না বলতে বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো। বৃষ্টি পড়তে দেখে সবাই একপ্রকার দৌড়ে বেরিয়ে আসলো চা বাগানের ভিতর থেকে। সামনে এই চায়ের দোকানটা দেখতে পেয়ে এসে বসলো সবাই। হঠাৎই অথৈ আশেপাশে তাকিয়ে বলে উঠল,

‘ আহি কোথায়?’

অথৈর কথা শুনে এতক্ষণ পর সবার মনে পড়লো আহির কথা। সবাই আশেপাশে তাকালো কিন্তু কোথাও আহিকে দেখতে না পেয়ে নীরব বলে উঠল,

‘ ওহ তো তোমাদের সাথে ছিল তাহলে..

এতটুকু বলে শপের আশেপাশে খুঁজতে লাগলো নীরব কিন্তু কোথাও আহিকে দেখতে না পেয়ে চিন্তিত কন্ঠ নিয়ে বললো,

‘ ও কি তবে তখন চা বাগান থেকে বের হতে পারে নি?’

বাহিরের মুসল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে!’ আর শপের ভিতরে সবাই চিন্তিত মাখা মুখ নিয়ে বসে আছে এখন কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না তাঁরা?’

____

‘ প্লিজ প্লিজ আমায় আর আমার খরগোশ ছানাকে মারবেন না?’

এক প্রকার হতাশা ভরা কন্ঠ নিয়ে সোফার পিছনে দাঁড়িয়ে কথাটা বলে উঠল আহি আদ্রিয়ানকে। আর আদ্রিয়ান আহির দিকে তেড়ে এসে বললো,

‘ কিছু করবো না মানে এমনিতেও সেদিনের অপমান আমি এখনো ভুলি নি মিস আহি।’

আদ্রিয়ানের কথা আর কাজ দেখে আহি আরেকদিকে সরে বললো,

‘ সেদিনের জন্য সরি প্লিজ প্লিজ আমায় ছেড়ে দিন আমি আর কোনোদিন আপনাকে ওইনামে ডাকবো না।’

বলেই আর একটু সরতে গেলেই আদ্রিয়ান এগিয়ে গিয়ে ধরে ফেললো আহির হাত। তক্ষৎনাত আহির হাতে থাকা খরগোশ ছানা লাফ মেরে চলে গেল অন্যদিকে। আদ্রিয়ানের কাজে আহি ভয়ে ঘাবড়ে উঠলো এবার নির্ঘাত তাকে মেরেই ফেলবে। আদ্রিয়ান আহির হাত ধরে নিজের কাছে এনে রাগী কন্ঠ নিয়ে বললো,

‘ তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে উল্টো পাল্টা নামে ডাকার?’Do you have any idea what I can do with you now?

আদ্রিয়ানের এবারের কথা শুনে শুকনো ঢোক গিললো আহি। না জানি সত্যি সত্যি রেগে গিয়ে এই লাল চোখওয়ালা হনুমান কি করে তাঁর সাথে। আহি কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠল,

‘ প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দিন না।’

‘ ক্ষমা ইজ মাই ফুট?’

বলেই আদ্রিয়ান ঝুঁকে পড়ে আহির দিকে। আদ্রিয়ান কাজে আহিও ঘাবড়ে গিয়ে নিচের দিকে ঝুঁকে পড়ে। আদ্রিয়ান যত তাঁর দিকে এগোচ্ছে আহিও ততই তাঁর মাথাটা নিচু করছে। আর আদ্রিয়ান আহির দিকে ঝুঁকতে ঝুঁকতে বলে উঠল,

‘ আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ের সাহস হয় নি এই আদ্রিয়ানের সাথে বাজে ব্যবহার করার আর সেখানে তুমি আমায় ইন্সার্ট করেছো। তোমার সাথে যে কি করবো আমি নিজেও জানি না..

বলেই আহির হাত ছেড়ে দিল আদ্রিয়ান। অনেকখানি নিচের দিকে ঝুঁকে যাওয়ার কারনে আদ্রিয়ান আহির হাত ছেড়ে দিতেই ধপাস করে নিজের দিকে পড়ে যেতে নিলো আহি। চোখ বড় বড় করে তাকায় সে আদ্রিয়ানের দিকে হঠাৎই তাঁর হাত চলে যায় আদ্রিয়ানের গলার টাইয়ের দিকে। আচমকা গলায় টান লাগতে আদ্রিয়ান পড়ে যেতে নিলো আহির দিকে। তারপর আর কি যা হওয়ার তাই হলো আহির পিছনে সোফা থাকায় ধপাস করে সোফার উপর পড়লো সে আর আদ্রিয়ান আহির উপর হুমড়ে পড়তে যাবে তাঁর আগেই সোফার ওপর হাত রেখে নিজেকে সামলে নিলো সে। তবে আহির অনেকটাই কাছে চলে গিয়েছিল সে। চোখাচোখি হয় দুজনেরই হঠাৎই আদ্রিয়ানের কেমন একটু লাগতেই চটজলদি নিজেকে সামলে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো সে। তারপর কর্কশ কন্ঠে বললো,

‘ Get out of my room?’

বাহিরে তুমুল বেগে বৃষ্টি হচ্ছে তাঁর সাথে আকাশেও জোরে জোরে ব্রজপাত হচ্ছে,বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে এমন একটা মুহূর্তে আহি কোথায় যাবে?’ — কথাটা ভাবতেই ভয়ে আত্মা কেঁপে উঠছে তাঁর। আহিকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে আদ্রিয়ান আরো রেগে গিয়ে ধমকের স্বরে বলে উঠল,

‘ কি হলো তোমায় কিছু বলেছি আমি, বের হও আমার রুম থেকে?’

আদ্রিয়ানের কথা শুনে কেঁপে উঠল আহি। কিছুটা কাঁপা কাঁপা গলায় বললো সে,

‘ এই বৃষ্টির মধ্যে কোথায় যাবো আমি? ‘প্লিজ আজকের রাত আমাকে এখানে থাকতে দিন আমি কথা দিচ্ছি কাল সকালেই আমি চলে যাবো।’

আহির কথা শুনে আদ্রিয়ান অবাক হয়ে বললো,

‘ what?’

___

আহির হাত ধরে একপ্রকার টেনে দরজার বাহিরে বের করে দিলো আদ্রিয়ান। কারণ আর যাই হোক এই মেয়ের সাথে কোনোভাবেই একসাথে এক ঘরে থাকবে না আদ্রিয়ান। আদ্রিয়ান আহিকে রুমের বাহিরে বের করে দিয়ে ধারাম করে দরজা বন্ধ করে দিলো। দরজাটা এতটাই জোরে বন্ধ করলো আদ্রিয়ান যে দরজার শব্দে আহি পুরো কেঁপে উঠলো। একরাশ হতাশা আর নিরাশ হয়ে দরজার নিচে বসে পড়লো আহি। কি করবে না করবে কিছুই বুঝতে পারছে না সে। ফোনটাও বন্ধ হয়ে পড়ে আছে কাউকে যে একটা কল করবে সেটাও পারছে না সে। এমন সময় আদ্রিয়ান আবার তাঁর দরজাটা খুললো আদ্রিয়ানের কাজে আহির চোখে মুখে হাল্কা হাসি ফুটে উঠলো কারন সে ভেবেছিল হয়তো তার ওপর একটু মায়া হয়ে আদ্রিয়ান দরজাটা খুললো কিন্তু তার সেই ভাবনাটাকে বেঘাত ঘটিয়ে আদ্রিয়ান আহির কোলের উপর তাঁর খরগোশটাকে আস্তে ছুঁড়ে মেরে আবার দরজা বন্ধ করে ফেললো। আদ্রিয়ানের কাজে আবারো কেঁপে উঠলো আহি। তারপর খরগোশ ছানাকে ধরে বললো সে,

‘ এই সব তোর জন্য হয়েছে এখন কি করবো বল তো এই অচেনা জায়গা,তারওপর বৃষ্টি!’

ভাবতেই কান্না পাচ্ছে আহির।’

____

অন্যদিকে দরজা আঁটকে পুরো রুমে চোখ বুলালো আদ্রিয়ান। পুরো রুম তাঁর উলোট পালোট হয়ে গেছে। রাগে গা জ্বলছে আদ্রিয়ানের, সে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারে না বার বার এই মেয়েটাই কেন তার সামনে চলে আসে। এতটুকু ভেবে নিজের শার্টের দিকে তাকাতেই আরো রাগ হয় আদ্রিয়ানের প্রচন্ড রাগ নিয়েই চলে যায় সে ওয়াশরুমের দিকে।’

.
.

বেশ কিছুক্ষন যাবৎই বসে আছে নীরব- অথৈ ওঁরা টি শপের ভিতর। কিন্তু এখনও আহির কোনো খোঁজ খবর না পাওয়ায় বেশ চিন্তিত তাঁরা। অনেকবার কলও করা হয়েছে আহিকে কিন্তু আহির ফোন বন্ধ। একরাশ অস্থিরতা নিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো নীরব তারপর বললো,

‘ আর এভাবে বসে থাকা যাবে না আহিকে খুঁজতে হবে?’

নীরবের কথা শুনে সোহান বলে উঠল,

‘ খুঁজতে তো যাবো কিন্তু এই ঝড় বৃষ্টিতে কি করে সম্ভব।’

‘ ওতোশতো জানি না আমি খুঁজতে যাবো মানে খুঁজতে যাবো আর সেটা এক্ষুনি?’

বলেই নীরব হেঁটে বের হতে নিলো শপের ভিতর থেকে। নীরবকে যেতে দেখে অথৈ আর রিনিও দাঁড়িয়ে বলে উঠল,

‘ আমরাও যাবো?’

ওদের কথা শুনে একে একে সবাই বলে উঠল,

‘ হুম আমরাও যাবো।’

সবার মুখে এক কথা শুনে নীরব বিস্ময় ভরা কন্ঠ নিয়ে বললো,

‘ সবাই একসাথে যাওয়া ঠিক হবে না এমনিতেই বৃষ্টি পড়ছে। তার চেয়ে একটা কাজ কর তোরা রিসোর্টে যা আমি আর সোহান যাচ্ছি আহিকে খুঁজতে।’

নীরবের কথা শুনে রিনি আর অথৈই দু’জনেই বলে উঠল,

‘ আমরাও তোমাদের সাথে যাবো?’

‘ একটু বোঝার চেষ্টা কর এভাবে বৃষ্টির মধ্যে সবাইকে নিয়ে যাওয়া যাবে না।’

কিন্তু নীরবের কথা শুনতে নারাজ অথৈ আর রিনি। শেষমেশ শরীফ, সুজন আর মীরাকে রিসোর্টে যেতে বলা হলো আর নীরব, অথৈ, সোহান, রিনি ওঁরা যাবে আহিকে খুঁজতে। মীরারাও যেতে চেয়ে ছিল কিন্তু পরে নীরবের কথা শুনতে বাধ্য হলো তাঁরা। অতঃপর গাড়ি করে চলে গেল মীরা,শরীফ আর সুজন। তিনজনই বেশ রেগে আছে। এরই মধ্যে ওদের সামনে দোকানদার এসে দুটো ছাতি এগিয়ে দিয়ে বললো,

‘ এই দুইটা ছাতি ছিল দোহানে তোমাগো লগে নিয়া যাও!’

দোকানদারের কথা শুনে খুশি হয়ে যায় নীরব ওঁরা। তারপর দুজন করে চারজন দু’দিকে চলে গেল। একদিকে রিনি সোহান আর অন্যদিকে নীরব অথৈ। দুজন এক ছাতিতে থাকায় বেশ অসস্থি ফিল হচ্ছে অথৈর। কারন কিছুক্ষন পরপর প্রায় তার সাথে টার্চ লাগছে নীরবের। তবে আপাতত কিছু করার নেই এটা ভেবে এগিয়ে চললো দুজন।’

কিছুদূর এগোতেই অথৈ নীরব দুজনেই আহি আহি বলে ডাকতে লাগলো কিন্তু আশেপাশে কোথাও আহির খবর নেই।’

____

বিছানার ওপর বসে আছে আদ্রিয়ান। ভিতরে ভিতরে প্রচন্ড আনিজি ফিল হচ্ছে তার, এভাবে একটা মেয়েকে বৃষ্টির মধ্যে বাহিরে বের করাটা ঠিক হয় নি। কিন্তু আহিকে দেখলেই যে তার মাথাটা গরম হয়ে যায়। হঠাৎ আকাশে ভিষণ জোরে বিদ্যুৎ চমকালো যেটা দেখে আদ্রিয়ান আর বসে থাকতে পারলো না আস্তে আস্তে বিছানা থেকে সরে চলে যায় সে দরজার কাছে।’

দরজা খুলতেই….
!
!
!
!
!
#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here