বাবুইপাখির অনুভূতি পর্ব -১৫+১৬

#বাবুইপাখির_অনুভূতি🕊️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম🕊️
— পর্বঃ১৫
_________________

ভয়ে কাচুমাচু হয়ে খরগোশ ছানাকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে বসে আছে আহি। শরীরও থর থর করে কাঁপছে তার। বৃষ্টির পানিতে অনেকটাই ভিজে গেছে সে। আদ্রিয়ান আহির অবস্থা বুঝতে পেরে বেশি কিছু না ভেবে বিছানার ওপর থাকা তার কোটটা এনে পিছন থেকে জড়িয়ে দিলো আহির তারপর বললো,

‘ চলো আমার সাথে?’

আচমকা গায়ে কোনো কিছুর স্পর্শ লাগতেই চমকে উঠলো আহি। পরক্ষণেই আদ্রিয়ানের ভয়েস শুনে উঠে দাঁড়ালো সে। তারপর কিছু না বলেই আস্তে আস্তে আদ্রিয়ানের সাথে ঢুকে পড়লো ভিতরে। আদ্রিয়ান আহিকে সোফার উপর বসতে বললো। আহিও চুপচাপ গিয়ে বসে পড়লো সেখানে। শীতে প্রায় কাঁপা কাঁপা অবস্থা তাঁর গায়ে থাকা জামা কাপড় সব ভিজে গেছে তাঁর। আদ্রিয়ান কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো আহির দিকে এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে তাঁর তখন রেগে বের করে না দিলেই ভালো হতো। আদ্রিয়ান ছোট্ট একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে চলে যায় তার ব্যাগের কাছে তারপর ব্যাগ থেকে একটা ফুলহাতার ওয়াইট টিশার্ট সাথে ব্লাক জিন্স এগিয়ে দিল আহির দিকে। তারপর উল্টো ফিরেই বললো সে,

‘ এগুলো পড়ে নেও?’

আদ্রিয়ানের কথা আর কাজ দেখে বেশ অবাক হয় আহি। সে ভাবে নি আদ্রিয়ান এমন কিছু করবে। আহি বেশি কিছু ভেবেই আদ্রিয়ানের হাত থেকে জামা কাপড় গুলো নিয়ে চলে যায় ওয়াশরুমের দিকে। আহি যেতেই খরগোশ ছানা গিয়ে লুকিয়ে পড়লো সোফার পিছনে। হয়তো সেও বুঝতে পেরেছে আদ্রিয়ান খুব রাগী।’

আদ্রিয়ানের মটেও এসব করতে ভালো লাগছে না কিন্তু তারপরও সে রাগী হতে পারে কিন্তু মনুষ্যহীন নয়। ছোট্ট দীর্ঘ শ্বাস ফেললো আদ্রিয়ান। এমন সময় দরজায় নক করলো কেউ। আদ্রিয়ানও বেশি কিছু না ভেবে চলে যায় দরজার কাছে। দরজা খুলতেই ছাতি মুঁড়ি দেওয়া একজন লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আদ্রিয়ান কিছু বলবে তার আগেই বলে উঠল লোকটি,

‘ দাদা বাবু আপনার খাবারে কি কি লাগবে আসলে যে ছেলেটা আপনারে খাবার দিতে আইতো ওরা এই বৃষ্টির জন্য আইতে পারে নাই তাই আমি আইছি।’

আদ্রিয়ান কিছু ভেবে দুজনের জন্যই খাবার অর্ডার করলো। যদিও লোকটি এতো খাবারের অর্ডারের কথা শুনে বেশ অবাক। এত খাবার একলা কেমনে খাবে?’ তবে আপাতত সে ব্যাপারে প্রশ্ন না করে বলে উঠল লোকটি,

‘ আচ্ছা দাদাবাবু আমি কিছুক্ষনের মধ্যে খাওন নিয়া আইতাছি।’

উওরে হাল্কা হেঁসে বললো আদ্রিয়ান,

‘ ঠিক আছে।’

বলেই দরজা আটকিয়ে পিছন ঘুরতেই আচমকা চোখে পানির ছিঁটে আসতেই চমকে উঠলো আদ্রিয়ান। পরক্ষণেই সামনে আহিকে দেখে মাথা থেকে অবদি স্ক্যান করলো সে। সাদা ওয়াইট টিশার্ট লুস অনেকটাই আহির,ব্লাক জিন্স চুলগুলো ভেজা,মুখে কোনো সাজ নেই একদম অগোছালো লাগছে আহিকে। হঠাৎই আহি বলে উঠল আদ্রিয়ানকে,

‘ আই এম সরি।’

উওরে আদ্রিয়ান কিছু না বলে চলে যায় বিছানায়। আর আহিও তাঁর চুল মুছে গিয়ে বসে পড়লো সোফায়। তারপর সোফার পাশ দিয়ে খরগোশ ছানাটাকে সুন্দর মতো মুছে শুয়ে দিলো সোফার ওপর। কিছুটা অস্থিরতা আর সামান্য ভয় হচ্ছে আহির। ভয়ের চোটে আদ্রিয়ানের দিকে তাকাতেও পারছে না সে। হঠাৎই আদ্রিয়ান তাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল,

‘ তুমি যদি ভেবে থাকো তোমায় রুমে নিয়ে এসেছি বলে আমি তোমায় ক্ষমা করে দিয়েছি তাহলে তুমি ভুল ভাবছো?’ কাল সকালে আমার ঘুম ভাঙার আগে এখান থেকে চলে যাবে আর হা যাওয়ার আগে আমার শার্ট ধুয়ে দিয়ে যাবে।’

আদ্রিয়ানের কথা শুনে শুধু মাথা নাড়ালো আহি। এমন সময় দরজায় নক করলো কেউ। আদ্রিয়ান বুঝতে পেরেছে তখনকার সেই লোকটা এসেছে। আদ্রিয়ান চোখের ইশারায় আহিকে সরে যেতে বললো আহিও বেশি কিছু না ভেবে সোফা থেকে উঠে চলে যায় একটু সাইডে। আহি সরতেই আদ্রিয়ান আস্তে গিয়ে তার দরজাটা হাল্কা ফাঁক করে লোকটার হাত থেকে খাবার ট্রেটা নিয়ে নিলো। তারপর লোকটিকে ধন্যবাদ দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।’

আদ্রিয়ান খাবার ট্রে-টা নিয়ে রাখলো টেবিলের উপর তারপর বিছানায় বসে আবারো আহিকে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘ খেয়ে নেও?’

আদ্রিয়ানের এবারের কথা শুনে যেন আহি আরো চমকে গেল হুট করে এতো ভালো কিভাবে হয়ে গেল?’– কথাটা মাথায় আসতেই কেমন একটু লাগলো আহির। আহিকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে একটু রাগী কন্ঠে বলে উঠল আদ্রিয়ান,

‘ তুমি কি বাংলা বুঝতে পারো না খেতে বলেছি তোমায়?

সাথে সাথে আহি দৌড়ে চলে যায় সোফার কাছে তারপর এতো খাবার দেখে সে বুঝতে পেরেছে আদ্রিয়ান তাঁর জন্যই বেশি খাবার অর্ডার দিয়েছে। আহি একবার খাবার গুলোর দিকে আর একবার আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ আপনি খাবেন না?’

‘ হুম খাবো তুমি আগে খাও?’ এতটুকু বলে আদ্রিয়ান তাঁর ফোনে হাত দিয়ে বিছানায় বসে গেম খেলতে শুরু করলো। আর আহিও পাল্টা কিছু না বলে আদ্রিয়ানের জন্য আলাদা আলাদা খাবার রেখে চটজলদি খেতে শুরু করলো প্রচন্ড খিদে পেয়েছে কি না?’

আহি খেতে খেতে দু’ তিনবার তাকালো আদ্রিয়ানের দিকে কিন্তু আদ্রিয়ান সেটা খেয়াল করে নি সে তো তাঁর মতো গেম খেলতে ব্যস্ত। এই মুহূর্তে আহি বুঝতে পেরেছে ‘আদ্রিয়ান মানুষটা রাগী হলেও এমনিতে ভালো’।

____

হঠাৎই আকাশে খুব জোরে গর্জন দিতেই অথৈ ঘাবড়ে গিয়ে নীরবের হাত ধরে বসলো। আর নীরবও আচমকা অথৈর কাজে শুধুতে একটু চমকে উঠলেও পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,

‘ কুল ডাউন ভয় পেয়ো না আমি তো আছি?’

নীরবের কথা শুনে অথৈ তাকালো নীরবের দিকে তারপর বললো,

‘ আহিকে তো পাচ্ছি না এখন কি হবে?’

অথৈর কথা শুনে নীরবও চিন্তিত মাখা মুখ নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো তবে কিছু বললো না। বেশ কিছুক্ষন যাবৎই তাঁরা খুঁজে চলছে আহিকে কিন্তু আশেপাশে কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না তাঁরা। হুট করে কোথায় হারিয়ে গেল আহি এটা ভাবতেই ভিষণ খারাপ লাগছে অথৈর সাথে কান্না পাচ্ছে তাঁর। আহিকে কাঁদতে দেখে নীরব অথৈর দিকে ঘুরে বললো,

‘ আরে তুমি কাঁদছো কেন দেখবে আমরা ঠিক খুঁজে পাবো হয়তো বৃষ্টি দেখে, ও কোথাও দাঁড়িয়ে পড়েছে।’

নীরবের কথা শুনে অথৈ শুধু ছলছল চোখে তাকালো অথৈর দিকে। নীরব অথৈর চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,

‘ ডোন্ট ওয়ারি।’

এমন সময় সেখানে উপস্থিত হলো রিনি আর সোহান। ওদের দেখেই বলে উঠল নীরব,

‘ কি হলো কোনো খোঁজ পেলি আহির?’

উওরে না বোধক মাথা নাড়ালো সোহান আর রিনি। ওদের কথা শুনে নীরব কিছু না বলে ছাতা থেকে বেরিয়ে গেল এমনিতেও তাঁরা ভিজে গেছে। নীরব আশেপাশে তাকিয়ে বলে উঠল,

‘ কোথায় হারিয়ে গেলি তুই আহি?’

____

একরাশ হতাশা নিয়ে সোফার উপর বসে আছে আহি পাশেই তাঁর খরগোশ ছানা ঘুমিয়ে আছে। আহি বুঝতে পারছে না এখন সে কোথায় ঘুমাবে তারওপর সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়ায় এখন প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে তাঁর। সোফার উপর ঘুমাবে সেটাও হবে না কারন দুটো এক সোফাটা সাইজে ছোট আর দুই আহি ঘুমাতে পারে না সোফাতে। তাই একরাশ হতাশা নিয়েই বসে আছে সে। হঠাৎই আদ্রিয়ান বলে উঠল,

‘ ওইখানে আলমারির ভিতর চাঁদর আর কাঁথা আছে ওগুলো নিয়ে যেন ঘুমানো হয়।’

আদ্রিয়ানের কথা শুনে শুরুতে একটু চমকে উঠলেও পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিলো সে তবে কিছু না বলেই এগিয়ে গেল সে আলমারির দিকে। তারপর চাঁদর আর কাঁথা বের করে আদ্রিয়ানের খাটের পাশ দিয়েই নিচে চাঁদর পেতে শুতে নিলো আহি। আহিকে শুতে দেখতেই আদ্রিয়ান তার বিছানার পাশে থাকা বালিশটা রাখলো নিচে। তারপর আর কি আহিও বেশি কিছু না ভেবে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো নিচে। আর আদ্রিয়ান কিছুক্ষন গেম খেলে সেও শুয়ে পড়লো খাটে। আজ আর কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না তার। নিমিষেই চোখ দুটো বুঁজে ফেললো আদ্রিয়ান।’

বাহিরে মুসল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে মনে হয় না আজ রাতে এই বৃষ্টি থামবে বলে। ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় রাত ১১ঃ০০টা ছাড়িয়ে গেছে।”

____

নীরবদের রুমে বসে আছে অথৈ,রিনি,মীরা,সোহান,শরীফ আর সুজন। সবার মুখেই চিন্তার ছাপ। আর ওদের সামনেই রুমের মধ্যে পায়চারি করছে নীরব কি করবে না করবে কিছুই বুঝতে পারছে না সে। কিছুতেই নীরবের মাথায় আসছে না হুট করে আহি গেল কই? তাহলে কি ও রাস্তা হারিয়ে ফেলেছিল নাকি ‘উফ আর ভাবতে পারছে না নীরব মাথার মধ্যে ভন ভন করছে তাঁর। কতক্ষণ আগেই তাঁরা আসে তাদের রিসোর্টের ভিতর একই প্রচুর বৃষ্টি, তাঁর ভিতর কোথাও আহিকে না পেয়ে এক প্রকার ব্যর্থ হয়ে চলে আসে তাঁরা তাদের রিসোর্টে। হঠাৎই মীরা নীরবের দিকে এগিয়ে এসে বললো,

‘ এখন কি করবি?’

উওরে নীরব মীরার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে বললো,

‘ জানি না। আন্টিকে কি জবাব দিবো বলতো,আমাকে বিশ্বাস করে আহিকে পাঠিয়ে ছিল এখন আমি কি বলবো তাকে?’

নীরবের কথা শুনে মীরা ছলছল চোখে নীরবের দিকে তাকিয়ে ওর হাত ধরে বললো,

‘ টেনশন নিস না দেখবি কাল সকালের মধ্যেই আহি চলে আসবে হয়তো বৃষ্টির জন্য কোথাও আঁটকে পড়েছে?’

উওরে নীরব কিছু বললো না। একরাশ অস্থিরতা, আর চিন্তিত মাখা মুখ নিয়ে বেরিয়ে গেল সে রুম থেকে।’

আর বাকি সবাইও চুপচাপ বসে রইলো রুমে মধ্যে। সবাই বেশ চিন্তিত আহির জন্য, সবাই এই মুহূর্তে এই দোয়াই করছে আহির যেন কোনো বিপদ না হয়।’

_____

ঘড়িতে তখন একটার কাটায় ছুঁই ছুঁই। বিছানায় আদ্রিয়ান আর নিচে বেঘোরে ঘুমাচ্ছিল আহি। বাহিরেই আকাশে তুমুল বেগে গর্জন দিচ্ছে সাথে বিদুৎ চমকাচ্ছে। বৃষ্টির শব্দে পুরো চারপাশ ঝনঝন করছে। এর মাঝেই বিছানায় আদ্রিয়ানের ঘুমের ঘোরে আবারো তাঁকে দুঃস্বপ্নে আঁকড়ে ধরলো।’

আবারো সেই রক্তের ছাপ ছাপ ফ্লোর ভেঁসে আসলো আদ্রিয়ানের, পুরনো ভাঙাচোরা সেই বাড়ি, মধ্যম বয়স্ক লোকটি তার দিকে তেড়ে আসছে,সেই নিচে লুটিয়ে পড়া কুকুর ছানার ছটফট করা আর্তনাদ, রক্তের দাগ ছাপ আবারো সেই একই জিনিস চোখের সামনে ভেসে আসতেই অস্থিরতা ফিল হচ্ছে আদ্রিয়ানের,এই ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যেও কপালে ঘাম জমে গেছে তাঁর, কিন্তু আজ যেন চোখ খুলতেই ভুলে গেছে আদ্রিয়ান,প্রচন্ড অস্থিরতা ফিল হচ্ছে তাঁর বিছানার চাঁদরটা শক্ত করে চেপে ধরলো আদ্রিয়ান। ঘুমের ঘোরেই বলে উঠল সে,

‘ প্লিজ আমায় মেরো না..

হঠাৎই কানে অস্পষ্টনীয় কিছু ধ্বনি কানে আসতেই আহির ঘুম ভেঙে গেল। আশেপাশে তাকিয়ে উঠে বসলো সে। হঠাৎই আদ্রিয়ানের দিকে তাকাতেই আদ্রিয়ানকে ছটফট করতে দেখে চমকে উঠলো আহি, কোনো কিছু না ভেবেই সে চলে যায় আদ্রিয়ানের কাছে তারপর বলে উঠল,

‘ কি হলো আপনার এমন করছেন কেন?’

কিন্তু আহির কথা যেন কান অবদি পৌঁছাচ্ছে না আদ্রিয়ানের। আদ্রিয়ানের ছটফটানি যেন আরো বেড়ে গেল, আদ্রিয়ানের কাজে প্রচন্ড ঘাবড়ে যায় আহি এখন কি করবে সে। আহি আদ্রিয়ানের কাছে এগিয়ে গিয়ে পাশে বসে বললো,

‘ কি হলো কথা বলছেন না কেন এত ভয় কেন পাচ্ছেন কে মারবে আপনাকে।’

হঠাৎই কি হলো ঘুমের ঘোরে আদ্রিয়ান ভয় পেয়ে জড়িয়ে ধরলো আহিকে। আদ্রিয়ানের কাজে চমকে উঠলো আহি,কিন্তু কিছু বলতে পারলো না। অন্যদিকে আদ্রিয়ান আহির বুকে মাথা রাখতেই কিছু একটা ফিল হলো তাঁর। সেই চেনা এক গ্রান,চেনা এক স্পর্শ যেন ছুঁয়ে দিল তাঁকে। অল্প বয়সি একটা বাচ্চা মেয়ে গোলাপি রঙের ফ্রক পড়নে তাঁর,হাত পা তাঁরও বাঁধা আর কিছু ভাবতে পারলো না আদ্রিয়ান। আহিকে জড়িয়ে ধরতেই ধীরে ধীরে যেন তার ছটফটানি কমে যেতে লাগলো। আদ্রিয়ান ঘুমের ঘোরেই আর একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আহিকে।’

কিছুক্ষন পর,,

আহিকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমিয়ে পড়লো আদ্রিয়ান। আর আহিও চুপচাপ বসে রইলো খাটে। হুট করে আদ্রিয়ানের কি হলো ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না সে। আদ্রিয়ান যেভাবে তাকে জড়িয়ে ধরে আছে মনে হয় ছেড়ে দিলেই পালিয়ে যাবে সে। আহির এইভাবে থাকতে মটেও ইচ্ছে করছে না কিন্তু আদ্রিয়ান যেভাবে তাকে ধরে আছে তাঁর মতো দুজন থাকলেও মনে হয় না তাদের ছাড়াতে পারতো?’

কিছু একটা ভেবে আহি তাকালো আদ্রিয়ানের মুখের দিকে। এখনও চোখে মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট তাঁর। আহি আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়েই বলে উঠল,

‘ হুট করে কি হলো আপনার,আর এত ভয়ই বা কেন পাচ্ছিলেন?’
!
!#বাবুইপাখির_অনুভূতি🕊️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম🕊️
— পর্বঃ১৬
_________________

সকালের ফুড়ফুড়ে আলোতে ঘুম ভাঙলো আদ্রিয়ানের। আশেপাশে তাকিয়ে কিছু একটা মনে করতেই এক প্রকার লাফ মেরে উঠে বসলো সে। ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় দশটার কাঁটায় ছুঁই ছুঁই। আদ্রিয়ান আহির কথা মনে করে আশেপাশে তাকিয়ে চোখ বুলালো একবার। না আহি নেই কোথাও,কাল রাতের তাঁর পাশে থাকা বিছানার চাঁদরটাও ভাজ করে সোফার উপর রাখা। খরগোশ ছানাটাকেও দেখতে পাচ্ছে না আদ্রিয়ান। ‘তাহলে কি আহি চলে গেছে’– কথাটা মাথায় আসতেই আদ্রিয়ান বিছানা থেকে নেমে পড়লো। তারপর আর বেশি কিছু না ভেবেই চলে গেল সে ওয়াশরুমে। কিছুক্ষন পর বেরিয়ে টাওয়াল হাতে নাক- মুখ মুছে বসলো সে বিছানার ওপর। হঠাৎই আদ্রিয়ানের চোখ যায় তাঁর বিছানার পাশে টেবিলের ওপর থাকা একটা ভাঁজ করা সাদা কাগজের দিকে। আদ্রিয়ান বেশি কিছু না ভেবেই কাগজটা হাতে নিলো। কাগজটা খুলতেই উপরে লেখা,

‘ চলে যাচ্ছি আমি। কাল রাতে আমাকে সাহায্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার এই উপকারের কথা আমি কোনোদিনও ভুলবো না। আপনার কথা মতো আপনার ঘুম ভাঙার আগেই আমি চলে যাচ্ছি আর হ্যাঁ আপনার শার্টটাও আমি ধুয়ে বেলকনিতে মেলে দিয়েছি শুকিয়ে গেলে গুছিয়ে নিবেন।’

এই কথাটা পড়তেই আদ্রিয়ান তাকালো বেলকনির দিকে। বাতাসে হাল্কা নড়ছে শার্টটা, আদ্রিয়ান কাল রেগে এমনি বলেছিল শার্টটা ধোঁয়ার কথা কিন্তু আহি যে সত্যি সত্যি শার্টটা ধুয়ে দিয়ে যাবে এটা ভাবে নি আদ্রিয়ান। আনমনেই মুচকি হাসলো সে। আদ্রিয়ান আবারো তাকালো কাগজটার দিকে সেখানে আরো লেখা,

আপনার দেওয়া শার্ট আর জিন্সটা নিয়ে যাচ্ছি আমি আসলে আমার জামা কাপড়গুলো শুকায় নি তাই বাধ্য হয়েই নেওয়া লাগলো প্লিজ কিছু মনে করবেন না। আর এমনিতেও আমার মনে হয় না এই জামা কাপড়গুলো আর আপনি পড়বেন তাই সাথে করেই নিয়ে গেলাম। আরো কিছু কথা, জানি না কাল রাতে হুট করে আপনার কি হয়েছিল তবে যতটুকু বুঝলাম আপনি কোনো কারনে খুব ভয় পাচ্ছিলেন। শুনুন বেশি ভয় পাবেন না আপনার মতো রাগী মানুষের সাথে ভয়টা ঠিক মেচ করে না। তবে আপনি মানুষটা রাগী হলেও মন থেকে কিন্তু খুব ভালো। অবশেষে বলবো, ‘ভালো থাকবেন’

‘ইতি আপনার অপ্রিয় একজন মানুষ’

‘আহি’

পুরো লেখাটা পড়ে আনমনেই হাসলো আদ্রিয়ান। হঠাৎই তাঁর মনে পড়লো কাল রাতের কথা। কালকে ঘুমের রেশটা একটু বেশি থাকায় ঘুমের ঔষধ খেতে ভুলে গিয়েছিল সে। কিন্তু কাল রাতে ধীরে ধীরে সব কিছু আদ্রিয়ানের মনে পড়ে গেল। আহিকে জড়িয়ে ধরেছিল বিষয়টা মাথায় আসতেই কেমন একটু লাগলো আদ্রিয়ানের।’

‘ কিন্তু কাল রাতে ওঁকে জড়িয়ে ধরতেই কিছু একটা ফিল হচ্ছিল আমার যেন চেনা কেউ তবে কি আহির সাথে এর আগে আমার কোথাও দেখা হয়েছিল?’

কথাটা মাথায় আসতেই এক প্রকার অবাক হয় আদ্রিয়ান। কিন্তু তাঁর তো মনে পড়ছে না এর আগে কখনো সেইভাবে আহির সাথে মিট হয়েছিল প্রথম মিট তো বিয়ে বাড়ি,সেকেন্ড মিট গাড়ি আর থার্ড মিট অফিস কিন্তু এর মাঝখানে কোনোটাতেই তো জড়িয়ে ধরার মতো কিছু হয় নি। আর ওকে জড়িয়ে ধরতেই অস্থিরতা কেন কমে যাচ্ছিল আমার? কি কানেকশন থাকতে পারে আমার ওই মেয়েটার সাথে?’

একের পর এক কথা এসে মাথায় বারি মারছিল আদ্রিয়ানের কিন্তু উওর যেন মিলছে না কোনোভাবেই। এমন সময় আদ্রিয়ানের ফোনটা বেজে উঠলো উপরে নিলয়ের নাম্বার দেখে ফোনটা তুলেই নিলয়কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বলে উঠল সে,

‘ আসছি আমি।’

বলেই ফোনটা কেটে দেয় আদ্রিয়ান। তাঁর মাথায় এখন অনেক প্রশ্ন? আর এই প্রশ্ন নিয়েই ফিরবে সে ঢাকায়।’

_____

নীরবদের রিসোর্টের সামনে এসে থামলো একটা গাড়ি। সেই গাড়ি থেকে কিছুটা এলোমেলোভাবে বের হয় আহি। আদ্রিয়ানের ওয়াইট টিশার্ট আর ব্লাক জিন্স পড়েই রিসোর্টের সামনে এসে এক প্রকার জোরে নিশ্বাস ফেললো সে। শেষমেশ আসলো সে রিসোর্টের কাছে। আহি ড্রাইভারকে একটু দাঁড়াতে বলে চলে যায় ভিতরে। সেই সকালেই আদ্রিয়ানকে ছাড়িয়ে বিছানা থেকে উঠে পড়ে আহি। সারারাত আদ্রিয়ান তাকে জড়িয়ে ধরেই ছিল সেই ভোরের দিকে আহি আদ্রিয়ানকে ছাড়িয়ে উঠে পরে তারপর আদ্রিয়ানের শার্টটা খুব সুন্দর মতো ধুয়ে শুকাতে দেয় বেলকনি। হঠাৎ টেবিলের নিচে কলম আর কাগজ দেখে আহিও চিঠি লিখে চলে আসে এখানে। যদিও একটু কষ্ট হয়েছে ওখান থেকে বের হতে মানুষকে জিজ্ঞেস করতে শেষমেশ এসে পৌঁছালো সে রিসোর্টের কাছে। না জানি তাকে না পেয়ে সবাই কতটা দুশ্চিন্তা করছে। এসব ভাবতে ভাবতে আহি দৌড়ে চলে যায় ভিতরে। একহাতে ছোট্ট একটা ব্যাগ আর অন্য হাতে খরগোশ ছানাটাকে নিয়ে এগোচ্ছে সে।’

নীরবের রুমে, রিনির কাঁধে মাথা দিয়ে বসে বসে ঘুমিয়ে আছ অথৈ। শরীর তাঁর বড্ড ক্লান্ত, ওদের পাশে সোফাতে ঘুমিয়ে আছে মীরা। আর খাটের তিনদিকে ঘুমিয়ে আছে সোহান,সুজন আর শরীফ। আর নীরব খাটে ওপর মাথা দিয়ে নিচে বসে ঘুমিয়ে আছে। এঁরা সবাই কাল শেষ রাতের দিকে ঘুমিয়ে ছিল। হঠাৎই নীরবের আহি কথা মনে পড়তেই এক প্রকার লাফ মেরে উঠলো সে। তারপর চটজলদি নিজের চোখের চশমাটা ঠিক করে উঠে দাঁড়ালো সে। আহিকে খুঁজতে হবে যে। এই ভেবে একে একে সবাইকে ডাকলো সে।

শুরুতে আহি চলে যায় তাঁর রুমের ব্যাগের কাছে ড্রাইভারকে ভাড়া দিতে হবে কি না। আহি ড্রাইভারের টাকা মিটিয়ে আশেপাশে চোখ বুলালো একবার কিন্তু আশেপাশে কোথাও কাউকে দেখতে পাচ্ছে না হঠাৎই নীরবে রুমে উঁকি মারতেই সবাইকে একসাথে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে ভিতরে ঢুকে পড়ে সে। আহি নীরবকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেই খুশি মনে বললো সে,

‘ ভাইয়া।’

আচমকা আহির কন্ঠ কানে আসতেই পিছন ঘুরে তাকালো নীরব সত্যি সত্যি আহিকে দেখে প্রচন্ড খুশি হয়ে এগিয়ে আসে সে আহির দিকে। তারপর উত্তেজিত কন্ঠ নিয়ে বললো সে,

‘ কোথায় হারিয়ে গেছিলি তুই? , জানিস কাল থেকে কতটা দুশ্চিন্তায় ছিলাম আমরা।’

নীরবের কথা শুনে হাল্কা হেঁসে বললো আহি,

‘ সরি ভাইয়া আসলে কাল আমি চা বাগানে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছিলাম তারপর হুট করে বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়াতে আমি আর বের হতে পারি নি।’

‘ একটা ফোন তো করতে পারতি আমি না হয় তোকে গিয়ে নিয়ে আসতাম।’

‘ আসলে ভাইয়া আমার ফোনটা নিচে পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাই আর কি?’

‘ তোর টেনশনে সারারাত ঘুমাতে পারে নি আমি।’

নীরবের কথা শুনে আহি হাল্কা হেঁসে বললো,

‘ সরি ভাইয়া।’

এতটুকু বলে তাঁর পিছনে থাকা খরগোশ ছানাকে নীরবের সামনে এনে বললো,

‘ সারপ্রাইজ ভাইয়া, দেখো তো এটা কেমন আমার নতুন বন্ধু?’

উল্টোদিক ফিরে ছিল নীরব হঠাৎই আহির কথা শুনে তাকালো সে। সামনেই আহির হাতে খরগোশ ছানা দেখে পুরোই চমকে উঠলো নীরব পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বললো সে,

‘ এটা কোথায় পেলি?’

‘ চা বাগানে এটার জন্যই তো কাল হারিয়ে গিয়েছিলাম।’

‘ কি?’

এরই মধ্যে সেখানে উপস্থিত হলো সবাই। আহির কন্ঠ কানে আসতেই সবার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল।
আহিকে দেখে সবাই বেশ খুশি মনে বললো,

‘ আহি কোথায় গিয়েছিলি তুই?’

উওরে আহি কাল রাতে হয়ে যাওয়া সব ঘটনা বলে। শুধু আদ্রিয়ানকে বাদ দিয়ে। ওর কথা শুনে সবাই বেশ রাগ নিয়ে বললো,

‘ তোর কি আর কোনো কাজ ছিল না যে একটা খরগোশ ধরতে গিয়েছিলি। তোর জন্য কাল সারারাত আমাদের ঘুম হয় নি (রিনি)

রিনির কথা শুনে আহি হাল্কা হেঁসে বললো,

‘ সরি রে আমি বুঝতে পারি নি।’

এতটুকু বলে আহি সবার দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,

‘ তোমাদের সবাইকেও সরি বলছি, আমি সত্যি বুঝতে পারি নি এমনটা হবে সরি ভাইয়া,সরি মীরা আপু, সরি সোহান ভাইয়া এভাবে একে একে সবাইকেই সরি বললো আহি। হঠাৎই নীরব বলে উঠল,

‘ হইছে আর কিছু বলতে হবে না এখন সবাই যে যার রুমে গিয়ে রেডি হ আমাদের যেতে হবে।’

উওরে সবাই মাথা নাড়ালেও অথৈ বেশি কথা বললো না। আস্তে আস্তে এগোতে নিলো সে সামনে। প্রচন্ড খারাপ লাগছে তার, চোঝ জ্বলছে সাথে মাথা ঘুরাচ্ছে। কাল রাতে বৃষ্টিতে ভেজার কারনে জ্বর এসেছে তাঁর। এই একটা সমস্যা হলো অথৈর অল্প একটু বৃষ্টিতে ভিজলেই তাঁর জ্বর চলে আসে। আর এই কারণে বৃষ্টি নামক জিনিসটা খুব একটা পছন্দ করে না অথৈ। সবার পিছনেই ছিল সে হঠাৎই মাথা ঘুরানোটা তীব্রভাবপ বেড়ে যেতেই পড়ে যেতে নিলো সে। তাঁর পিছন দিকেই ছিল নীরব হুট করে অথৈকে পড়ে যেতে দেখে দৌড়ে গিয়ে ধরলো সে। অথৈও নিজেকে সামলাতে না পেরে ফেললো নীরবকে।’

হুট করে কিছু ঘটার আলাপ পেতেই পিছন ফিরে তাকালো সবাই অথৈকে এভাবে পড়ে যেতে দেখে সকলেই এগিয়ে আসলো তাঁর দিকে।’

অন্যদিকে অথৈকে ধরতেই এক প্রকার চমকে উঠলো নীরব। কারন অথৈর গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। নীরব কিছুটা চিন্তিত কন্ঠ নিয়ে বললো,

‘ ওর তো জ্বর এসেছে?’

এতটুকু বলে নীরব আস্তে আস্তে অথৈকে ধরে বসিয়ে দেয় খাটে। অথৈ বসতেই রিনি গিয়ে ধরলো তাকে তারপর,

‘ তোর জ্বর কি করে আসলো?’

রিনির কথা শুনে স্লোলি কন্ঠে বললো অথৈ,

‘ আসলে কাল রাতে বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম না তাই আর কি, আর কাল রাতে আহি টেনশনে তেমন কিছু খাওয়া হয় নি তাই দূর্বল হয়ে পড়ে গেছি বাট ডোন্ট ওয়ারি আমায় নিয়ে টেনশন করার মতো কিছু হয়নি আমি ঠিক আছি।’

অথৈর কথা শুনে বেশ খারাপ লাগলো আহির তার জন্যই অথৈর জ্বর এসেছে আহি অথৈর পাশ দিয়ে বসে মাথা নিচু করে বললো,

‘ আই এম সরি আমার জন্য তোর..

আহি আর কিছু বলার আগেই অথৈ বলে উঠল,

‘ আর কিছু বলতে হবে না আমি ঠিক আছি।’

বলেই উঠতে যেতেই আবারো পড়ে যেতে নিলো সে। সাথে সাথে আহি এসে ধরলো তাঁকে। তারপর বললো,

‘ তুই তো হাঁটতেই পাচ্ছিস না, বাড়ি যাবি কি করে?’

আহির কথা শুনে নীরব বলে উঠল,

‘ আজকে দিনটা কি তবে এখানে থেকে যাবি?’

নীরবের কথা শুনে অথৈ নীরবের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ না না তার প্রয়োজন হবে না।’

অথৈর কথা শুনে আহি বলে উঠল,

‘ কিন্তু?’

অথৈই ছলছল চোখে আহির দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ কোনো কিন্তু নয় কিছু হয় নি আমার। আমায় ধর আর চল, বাড়ি ফিরতে হবে তো নাকি?’

অথৈর কথা শুনে আর জোর করলো না কেউ তারপর আহি রিনি তাকে ধরে চললো তাদের নিজেদের গন্তব্যের দিকে।’

এইবার আর ট্রেন নয় বাসে করে ঢাকাতে ফিরবে তাঁরা।’
অতঃপর সিলেটের শ্রীমঙ্গলের মায়া ত্যাগ করে চললো সবাই।’

বাসে বসে আছে আহি,অথৈ,নীরব,রিনি,মীরা, আর সুজন। বাকি দুজন গেছে একটু বাহিরে।
আর কিছুক্ষনের মধ্যেই তাদের বাস ছাড়বে। আহির কাঁধে মাথা দিয়ে বসে আছে অথৈ। শরীর প্রচন্ড খারাপ তার। যদিও আসার সময় সে ঔষধ খেয়ে ছিল। এরই মধ্যে সেখানে হাতে সাত রঙের চা নিয়ে হাজির সোহান আর শরীফ। এটা আনতেই তাঁরা গিয়েছিল বাহিরে। সিলেট আসলো কিন্তু সাত রঙের চা খেলো বিষয়টা মটেও মানাচ্ছে না। সোহান সবার হাতে এক কাপ করে চা দিলো,অথৈকেও দিলো। তারপর আর কি বাসের মধ্যে বসেই ক্যাফের মজা নিয়ে নিলো তাঁরা।’

কিছুক্ষনের মধ্যে বাস তাদের চলতে শুরু করলো আপন গতিতে। বাস চলতেই যে যার নিজেদের সিটে বসে রইলো চুপচাপ। বেশ মজাই করেছে তাঁরা এই দুজন। সেই স্মৃতি নিয়েই ফিরবে তাঁরা নিজেদের বাড়িতে। তবে এসবের মধ্যে নীরবের নজর শুধু অথৈর দিকেও মেয়েটা এমনিতেই চুপচাপ কিন্তু এখন যেন বেশি চুপচাপ লাগছে নীরবের। ভালো লাগছে না তাঁর?’

_____

প্লেনের জানালার পাশে বসে আছে আদ্রিয়ান মাথার তাঁর একটাই প্রশ্ন__

‘আহির সাথে কি এমন কানেকশন থাকতে পারে তাঁর যার কাল রাতে ওঁকে জড়িয়ে ধরতেই সব অস্থিরতা চলে যাচ্ছিল তাঁর। আর ভাবলো না আদ্রিয়ান। মাথা কাজ করা একপ্রকার বন্ধ করে দিয়েছে তাঁর, সাথে কেমন অগোছালো লাগছে নিজেকে। এমন সময় তাঁর ভাবনার মাঝখানে একটা মেয়ে এসে বললো,

‘ এক্সকিউজ মি, আপনি কিছু মনে না করলে আপনার উইন্ডো সিটে কি আমি বসতে পারি?’
!
!
!
!
!
#চলবে…..

!
#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here