“ভালোবাসার_ভুল Part-15+16

#ভালোবাসার_ভুল
#Writter_Sp_sanjana_(সাগরিকা)
🍁🍁🍁🍁🍁
Part-15+16
চিরকুট রেখে পার্সেল খুলে দেখলো সেই মেলায় দেখা সুন্দর নুপুর জোড়া।দেখে মনটা অনেক ভালো লাগলো।এটাও হয়তো রাত ই নিয়েছে।রাতের ডিনার শেষে নিঝুম এসে রুমের ব্যালকনিতে ঐ ডায়েরী নিয়ে বসে। ডায়েরীর প্রথম পাতা খুলতেই চোখে পড়ে তীক্ষ্ণ হাতের ছোঁয়ায় গুটি গুটি করে লেখা বৃষ্টিবিলাসী আজকের দিনটা আমার কাছে স্মরনীয় হয়ে আজ আমি তোমায় প্রথম দেখলাম সাদা শাড়ি জড়িয়ে রাস্তার পাশে দুহাত বারিয়ে বৃষ্টি ভিজছিলে।আমি তোমায় দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম সেই দেখাতেই তোমায় ভালোবেসেছিলাম কিন্তু গাড়ি ছেড়ে দেওয়ায় তোমায় আর খুঁজে পাইনি।তারপর আবার ঐদিন রেস্টুরেন্ট এ দেখতে পাই তখন পিছু নিয়ে তোমার ঠিকানা জানি।তোমার সামনে আসা হয়ে উঠেনি তাই দূর থেকেই তোমায় রোজ চিরকুট লিখব সাথে দিব আমার প্রিয় ফুল ভয় ছিল সমানে আসলে তুমি ও হয়তো শুধু আমার রকস্টার হওয়া রুপকে ভালোবাসো ফেলে আমার আমিকে।আমি খুব করে চাই কেউ আমাকে ভালোবাসোক শুধুই আমায়। এরপরের পৃষ্ঠা থেকে শুরু একটা করে ফুল আর চিরকুট লাগানো যেমনটা আমার কাছে আসত। প্রতি পেজে থাকে ঐদিন গুলোর তারিখ দেওয়া।তারপর একপেজে লেখা দেখলাম এবার আমি ই আসব তাইতো মানালী টোর প্ল্যান করেছি রাগ করো না তিনদিন তোমায় ফুল পাঠাতে পারিনি চতুর্থ দিনে সব একসাথে পাবে।সেই মনমুগ্ধকর হাতের লেখা দেখেই নিঝুম বুঝতে পারে রাত ই সে অপ্রকাশিত মানুষ যাকে এতদিন সে খুঁজে বেরিয়েছে। আমি ভেবে নিলাম আমি এখন বলব না রাতকে যে আমি সব জানি অপেক্ষা করব তার সামনে এসে ভালোবাসি কথাটা বলার।এসব ভাবতে ভাবতেই ডায়েরীটা দেওয়ার জন্য নিজের রুমে থেকে বের হয়ে রাতের রুমে ঢোকে ভাগ্য ভালো রাত তখন ওয়াশরুমে ছিল।তাই নিঝুম ডায়েরি টা টেবিলের উপর রেখে বের হতে নিতে রাত টায়াল পেঁচিয়ে বাথরুম থেকে বের হয়।নিঝুমকে দেখেই রাত আবার বাথরুমে ঢুকে চেন্জ করে নেয়। রাত বের হতে দুজন আবার মিষ্টি ঝগড়ায় জড়ায়।
রাত:- করো রুমে ঢুকতে নক করে ঢুকতে হয় ম্যানারস নেয় তোমার?😡
নিঝুম:- নিজে জানো না রুমের দরজা লক করে বাথরুমে যেতে হয়।
রাত:- এটা আমার রুম আমি যা চাইব করব তুমি এখানে কি করছ?
নিঝুম:- এই বাবা এখন ই তো ধরা পরে যাবো কি বলি 😒। ও আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে এসেছিলাম ঐ যে আপনি আমাকে বাঁচালেন বিপাসার ধারে তাই।
রাত:- ওয়েলকাম।
নিঝুম:- কিসের ধন্যবাদ তোকে মনে মনে তো খুব খুশি হয়েছিলি কুলে নিতে পেরে আমায় (মনে মনে বকে)
রাত:- বসা যায় কিছুসময় আমার সাথে।
নিঝুম:- হো বসা তো যায়।তবে এইখানে নয় ব্যালকনিতে।
রাত:- যো হুকুম মহারানী।তবে সবাই তো আমার গান শুনতে ভালোবাসে আমি কি তোমার গান শুনতে পারি।
নিঝুম:- এমা আমি আবার কখন গান গাইতে পারি।আমি এসব পারব না এটা আপনিই ভালো পারেন।
রাত:- আমার জন্য তো একটু গাইতেই পারো তুমি।এযা আপনাকে তুমি বলে ফেললাম।
নিঝুম:- তুমি ই বল এটাই শুনতে ভালো লাগছে।আছো দেখো আমি গান গাইব তুমি হাসতে পারবে না।
রাত:- এখন গান তো শুরু করো আমি গিটার বাজাচ্ছি।
নিঝুম গাইতে শুরু করে আর রাতের আজ অবাক হওয়ার পালা।

🥀🥀🥀🥀
Meri Rahein Tere Tak Hain,
Tujhpe Hi Toh Mera Hakk Hai,
Ishq Mera Tu Beshak Hai,
Tujhpe Hi Toh Mera Hakk Hai,

Saath Chhodungi Naa,
Tere Pichhe Aaungi,
Chheen Lunga Ya Khuda Se Maang Laaungi,
Tere Naal Taqkdeeran Likhvaungi,
Main Teri Ban Jaungi,
Hm..Main Teri Ban Jaungi,

Sohn Teri Main Qasam Yahi Khaungi,
Keetay Vaadeyan Nu Umraan Nibhaungi,
Tujhe Har Vaari Apna Banaungi,
Main Teri Ban Jaaungi,
Main Teri Ban Jaaungi.

Lakh’an Ton Judaa Main Hoyi Teri Khatir,
Tu Hi Manzil Dil Tera Musaafir,

Lakh’an Ton Judaa Main Hoyi Teri Khatir,
Tu Hi Manzil Dil Tera Musafir,

Rab Nu Bhula Baithi Tere Karke,
Main Ho Gaya Kaafir,

Tere Liye Main Jahaan Se Takraungi,
Sab Kuch Kho’ke Tujhko Hi Paungi,

Dil Banke Main Dil Dhadkaungi,
Main Teri Ban Jaungi,
Main Teri Ban Jaungi.

Sonh Teri Main Qasam Yahi Khaungi,
Kitay Waadeyan Nu Umraan Nibhaungi,
Tujhay Har Vaari Apna Banaungi,
Main Teri Ban Jaaungi,
Main Teri Ban Jaaungi.
🥀🥀🥀
গান শেষ হলে রাত অবাক নয়নে নিঝুমকে দেখে আর বলে-
রাত:- বাহ তুমি এতো ভালো গান গাইতে পারো।আমি তো জানতাম ই না।
এইভাবে কিছুক্ষন কথা বলে নিঝুম রুম থেকে বের হতেই কেউ পিছন থেকে নাকে রুমাল দিয়ে চেপে ধরে আর সে জ্ঞান হারায়।
কিছুক্ষন পর যখন জ্ঞান ফিরে তখন নিজেকে আবিষ্কার করে একটা বন্ধ ঘুরে।হাত পা একটা চেয়ারের সাথে বাঁধা।চারিদিকে দেখে যা বুঝলাম এটা হয়তো এই কর্টেজের স্টোর রুম।কিন্তু আমাকে এখানে কে নিয়ে এলো বুঝতে পারছি না। এইসব ভাবতে ভাবতে ই কেউ একজন দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করল।
চলবে………….

Part-16

দরজা খুলে ভেতরে ঢোকা মানুষ টি হল প্রহর।প্রহরকে দেখেই নিঝুম অনেক রেগে যায়।আর বলে:- কি চাই তোমার এখন আবার আমার কাছ থেকে? কেন নিয়ে এসেছ এখানে আমায় ? কিসের প্রতিশোধ নিতে চাও তুমি? কি করতে চাও আমার সাথে?😡

প্রহর:- আরে থাম বেবী থাম এইভাবে আতো প্রশ্ন একসাথে করলে কি জবাব দিতে পারব বল।তাহলে এইবার তোমার প্রশ্নের উওর দিচ্ছি তোমায় আমি দিল্লী নিয়ে যেতে এসেছি তোমায় আমি বিয়ে করব।আমি কাল সকাল হতেই আমরা যাচ্ছি।আর প্রতিশোধের কথা সেটা তুমি তোমার বাবাকে জিজ্ঞেস করো।😆

নিঝুম:- আমার ভাবতেও ঘৃনা হয় আমি তোর মতো একটা মানুষকে ভালোবেসেছিলাম।তুই আমাকে এখান থেকে নিয়ে যেতে পারবি না রাত আসবে দেখিস আমায় নিয়ে যেতে।😡
প্রহর:- বাহ্ বাড়ি থেকে বের হতে না বের হতে নতুন প্রেমিক জুটিয়ে নিয়েছিস।কিন্তু কি লাভ সে তো আমায় চিনেই না আর এখানে কেউ তোকে খুঁজতে আসবে না।তুই এখানেই থাকবি সকাল পর্যন্ত।😊
অন্যদিকে রাতের রুম থেকে বের হতেই নিঝুম জ্ঞান হারানোর আগে রাত বলে চিৎকার করে ঐ আওয়াজ শুনে রাত বাইরে এসেছিল কিন্তু নিঝুমকে কোথাও দেখে না তাই নিঝুমের রুমে চেক করে সেখানেও তাকে না পেয়ে পুরো কর্টেজে খুঁজতে থাকে।শেষ রাতের দিকে যখন স্টোর রুমের পাশ দিয়ে যাওয়ার হালকা গোঙ্গানীর আওয়াজ পায় আর রুমের দরজা ও খোলা দেখে যেটা সবসময় বন্ধ থাকে ।দেখে সন্দেহ হওয়ায় রাত লুকিয়ে ভেতরে যায় আর যা দেখে চোখের সামনে তার বিশ্বাস করতে পারে না😳।নিঝুমকে কিছু লোক জোড় করে কোথাও নিয়ে যাওয়ার জন্য বের করছে নিঝুমের মুখে কাপড় বাঁধা তাই আওয়াজ করতে পারছে না।তাই রাত সামনে আসে আর ছেলেগুলো কে বলে-
রাত:- নিঝুমকে ছেড়ে দেয় নয়তো তোরা এখান থেকে কেউ বেঁচে ফিরে যেতে পারবি তোরা জানিস না আমি কে আর কি করতে পারি তাই বলছি ভালোয় ভালোয় ছেড়ে দে।
সামনে থেকে একটা ছেলে বলে উঠে:- তাই নাকি ছেড়ে না দিলে কি করবি শুনি?😒

অন্য সাইড থেকে আর একটা ছেলে বলে :- কি আর করবে এই রকস্টার।তুই একে গাড়িতে নিয়ে তোল তো এই রকস্টারকে আমি দেখছি। তখনই রাত ওদের এক এক করে মারতে থাকে আর ওর মারার স্টাইল ও ছিল ভয়ানক কারো হাত ভাঙছিলো তো কারো পা।প্রহর এখানে না থাকায় প্রহরকে দেখতে পায়নি।নিঝুম প্রচন্ড ভয় পাওয়ায় রাতকে এসে জড়িয়ে ধরে আর জ্ঞান হারায়।রাত নিঝুমকে নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।নিঝুম অনেক ভয় পাওয়ায় বেহুশ অবস্হায় ও রাতকে ছাড়তেই চাইছিল না নিঝুমকে অনেক কষ্টে ছারিয়ে শুয়িয়ে দেয় নিজের রুমের বিছানায় আর হাত ধরে সেখানেই বসে থাকে সারা।সকালের দিকে চোখ লেগে আসায় উঠতে দেরী হয়ে যায়।ফলে টুরিস্ট বাস ওদের রেখে চলে যায় মানালীর উদ্দেশ্যে।যখন নিঝুম আর রাতের ঘুম ভাঙে আনেক সকাল।ঘুম ভাঙার পর থেকে ই নিঝুমের চোখের সামনে রাতের ঐ ছেলেগুলো কে মারার দৃশ্য ঘুরছে।ভালো লাগছে এই ভেবে যে বাবা ছাড়া এই প্রথম কেউ তার এতোটা খেয়াল রাখছে। ফ্রেশ হয়ে জলখাবার খেয়ে রিসেপশনে বাইকের ব্যবস্হা করতে বলে রাত।আর রুমে চলে যায় দুজনেরই প্যাকিং করতে কারন এখান থেকে তাড়াতাড়ি বের হতে হবে আর নিঝুমকে নরমাল করে কে আর কেন এমন করল জানতে হবে তার।নিঝুমকে রেডি হতে বলে রাত ব্যাগ প্যাকিং এ মন দেয়।কিছুসময় পর দুজনেই রেডি হয়ে বের হয় মানালির উদ্দেশ্যে।বাইক নেওয়ায় মানালির পথে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা।কিছুসময় যেতেই নিঝুম বলে হঠাৎ আপনি বাইক নিলেন কেন? গাড়িও তো নিতে পারতেন।
রাত:- কেন ভালো লাগছে না বুঝি?
নিঝুম:- না তাই নয় তবে প্রকৃতি অনুভব করছি।
রাত:- আচ্ছা এবার বলো তো ওরা তোমাকে কেন তুলে নিয়ে যাচ্ছিল?
নিঝুম:- ওরা আমার প্রাক্তন আসলে প্রাক্তন বললে ভুল হবে আমি একজনকে পছন্দ করতাম তার লোক ছিল।তারপর যা ঘটল সবটাই বললো।
এইভাবে কিছুদূর গিয়ে তারা একটা ছোট ধাবায় খাবার খেতে দাড়ায়।সেখান থেকে রাতে তারা একটা হোটেলে থাকে।সবটা সময় নিঝুমের অনেকটা ভালো লাগছে প্রহরকে বিশ্বাস করা তার ভুল হলে কেন যেন তার মনে হয় রাতকে বিশ্বাস করলে সে ঠকবে না।রাতের দিকে নিঝুমের ঘুম না আসায় দুজনে হোটেলের ছাদে যায়।সারা ছাদ জুড়ে গোলাপের বাগান দেখে নিঝুম অনেক একসাইটেড হয় আর ফুলগুলির ছবি তোলে।আর রাত কিছুটা দূরে দোলনায় বসে নিঝুমকে দেখতে থাকে।নিঝুমের চোখ পড়তে নিঝুম এসে দোলনায় বসে আর রাত কে বলে দেখ আকাশে আজকে কতো সুন্দর চাঁদ উঠেছে।জানো আজ কোজাগরী পূর্ণিমা কথায় আছে আজ আকাশে পূর্ণ চাঁদ দেখে মনে মনে যা চাওয়া হয় তা পাওয়া যায়।
রাত:- তাই নাকি তাহলে তো কিছু চাইতেই হয়।
নিঝুম রাত দুজনেই আকাশের চাঁদ দেখে একে অপরকে ই চায় মনে মনে।রাত নিঝুমকে জিঙ্গাসা করে তুমি কি চাইলে।
নিঝুম:- সময় হলে নিজেই জানতে পারবে।
রাত:- আচ্ছা অপেক্ষায় রইলাম।
হালকা বরফ ও পরছিল তখন নিঝুমের ঠান্ডা লাগায় রাত তার জ্যাকেট নিঝুমকে পরিয়ে দেয়।
নিঝুম:- আরে করছেন কি আপনার ঠান্ডা লাগবে তো।
রাত:- আমি অনেক হট আমার এতো ঠান্ডা লাগে না।বলতে বলতে একটা হাঁচি দেয় যা শুনে নিঝুম হাসতে হাসতে শেষ।
রাত:- আপনি হাসছেন কেন?
নিঝুম:- তো হাসবো না আপনার মতো হট মানুষের ও ঠান্ডা লেগে গেল যে।
বলে দুজনেই জোড়ে জোড়ে হাসতে লাগল।এইভাবে কিছুসময় কথা বলে তারা যে যার রুমে চলে যায়।পরদিন সকালে বের বিকালের দিকে মানালিতে পৌছায় তারা।সেখানে পৌঁছে তারা তাদের ট্রেবিল এজেন্সির টিমদের পায়।একে একে শোলং ভ্যালি,রেটাং পাস,ব্যাস কুন্ড ট্যাক,হিডিম্বা মন্দির,বৈষান্ত বাথ,আর দ্য গ্রেট হিমালয়ান ন্যাশনাল পার্ক,মনিকরন,মনু মন্দির,নেহেরু কুন্ড, মানালি সেঞ্চুরি, গায়েত্রী মন্দির, গৌরি শঙ্কর মন্দির সব দেখা হয়।তার মধ্যে নিঝুমের সবচেয়ে পছন্দ হয় জুগনি এবং জানা ঝর্না শান্ত পরিবেশে জলের কলকল ধ্বনি মনের শান্তি এনে দেয়। এইভাবে কিছুদিন কাটিয়ে তারা ফেরার প্ল্যান করে।ফেরার দিন সকাল সকাল রেডি হয়ে বাসে উঠে যাওয়ার জন্য এবার রাত নিঝুম দুজন ইচ্ছে করেই একসঙ্গেই বসে।সারারাস্তা দুজন অনেক কথা বলে। মান্ডিতে ঢুকতেই হঠাৎ বাসের সামনে একটা বড় গাড়ি এসে থামে যার জন্য বাসকে থামতে হয়।এর ঐ গাড়ি থেকে বের খুব সুন্দর একটি মেয়ে।পরনে জিন্স আর অফসোল্ডার টপস্, চোখে সানগ্লাস😎।মেয়েটি বাসে উঠে রাতকে নিয়ে চলে যায়।
চলবে…………..
(মেয়েটাকে হতে পারে গল্পে নতুন কারো আগমন হচ্ছে কি? কালকে গল্প দিতে পারিনী তাই দুঃখিত।তাই আজ একটু বড় করেই দিলাম।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here