#ভালোবাসি হয়নি বলা
#সাদিয়া নওরিন
পর্ব— ৩
সিড়ি দিয়ে নিচে নামতেই আমার খালামনি আর কাজিনদের সাথে দেখা.. বড় আন্টি আসে নাই.. ওনার ছেলের বিয়ে বলে কথা…তবে সিয়াম চলে এসেছে.. সিয়াম বড় আন্টির মেঝ ছেলে… বড় ভাইয়ার বিয়ে ইষা আপুর সাথে.. সুনান ভাইয়া, আদি, সাদাত মেঝ আন্টির ছেলে, আর আলভি, আরাফ সেজ আন্টির. ভাইয়াদের পুরো বহর কিচেনে বসে বসে মামিদের সাথে গল্প করছে.. আর আম্মুরা সব বোনরা মিলে নানুর রুমে গল্প জুড়ে বসে আছে।। অবশ্য আমি সেইখানে যাব না.. সেখানে ওরা আমাদের দোষগুলো নিয়ে কাহিনী করবে তাই আমি আর ইফ্ফাত ভাইদের দিকে প্রস্হান করলাম… আমি ডুকেই নতুন বৌকে দেখলাম.. হাটুমোড়ে বসে আছে.. আলভী আর সুনান ভাইয়ের সেইকি ইমোশনাল ডাইলগ.. মনে হচ্ছে ইষা আপুকে কোন জঙ্গলে বিয়ে দিয়ে আসতেছি.. এমনিতে ইষা আপুর সাথে কেন জানি আমার বনে না.. ও আর আমি যেন দুই দিকে দুই মেরুর বাসিন্দা.. তার ওপর কেন যেন মেজ মামী আর তার এই গুনধর মেয়ে আমাকে সহ্য করতেই পারে না.. আমি ধুপ করে ইষা আপুর পাশে বসে পড়লাম আর সুনান ভাইয়ের দুঃখী মুখের দিকে তাকালাম.. বেচারা ক্রাশিত ছিল ইষা আপুর ওপর.. আর হবে নাই বা কেন ইষা আপু কতো সুন্দর স্লিম ফিগার,ফর্সা সুন্দরী!! যেকোন ছেলের ক্রাশ হওয়ার জন্য যথেষ্ট কিন্তু পড়ালেখায় বেচারীর অবস্হা সন্ধিহান…
আমি তাদের বোনের বিদায়ের কথা শুনে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না.আচমকাই আমার দাতগুলো বেরিয়ে গেল.. আর আমি হি হি করে হেসে দিলাম..
আজব তাদের সবার লুক দেখে মনে হচ্ছে কেউ আমাকেই কবুল বলতে বলেছিল আর তার বদলে আমি আমার ফেভারিট রং লাল বলে দিয়েছি.. আমি হালকা ঢুক গিলে বললাম— ওরে কি দূরে কোথাও দিচ্ছি,, নিজেদের ঘরেই তো দিচ্ছি… তাদের মুখের ভাবের পরিবর্তন না দেখে ইফ্ফাত ও সুর মিলিয়ে বলল– হুম.. আর এইছাড়া তো আর কোন কথায় নাই.. আগে জাষ্ট আপু ছিল আর এখন আপুর সাথে ভাবীও হয়ে গেল…
আমি মিনমিনিয়ে বললাম— হু.. আগে তো এখানে আসলে শান্তি দিত না.. এখন এই অশান্তির বস্তা খালামনির বাসায় ও থাকবে.. এই দুঃখে এখন আমারি কান্না আসছে.. আমি দুঃখী মুখ নিয়ে আবার সুনান ভাইয়ের দিকে তাকালাম.. সে কি এই “”এখনো না হওয়া” ভাবীর জন্য “ছান্না মেরিয়া “” গাইবে.. আহা তাকে যদি পিংক কালার বিষ টা দিতে পারতাম.. বেচারা খেয়ে কতোদিন পেট কষা করতে পারতো..
আমি যখন বিড়বিড়িয়ে এইসব বলতেছিলাম তখন আমার হাতে চিমটি কেটে ইফ্ফাত পরম আগ্রহে জিঙ্গেস করলো— পেট কষা হলে লাভটা কি…
আমি নিচু স্বরে বললাম— আরে ইষা আপুর ফেভারিট রং হলো হলুদ.. আর ভাই যদি বার বার হলুদ পায়খানা করে তাহলে তার ইষা আপুর কথা আরো মনে পড়বে না..
ইফ্ফাত ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল– পায়খানা কি শুধু এক রয়ের হয় নাকি আহাম্মক??
আমি আরো কিছু বলতে মুখ খুলছিলাম হটাৎ কারো আগমনে আমার মুখের কথা মুখেই রয়ে গেল..
এই মহান ব্যাক্তি আমাদের এইখানে নিজের পায়ে ধুলো দেওয়ার কারন কি।তাই ভাবাচ্ছে আমাকে… সে ধুপ করে সুনান ভাইয়ের পাশে বসে পড়লো তারপর মিষ্টি হেসে বলল– ভাবতেছি চড়ুইভাতি খাব.. তোরা কি বলিস??
সুনান ভাই হাসতে হাসতে বলল– আমি রাজি ভাই.. ভালোই হবে নিউ ক্রাশ কে খুজে নিব সেইখানে..
আমি বেকুবের মতো তাকালাম তার দিকে.. এ ছেলে এমন কেন..জিবনে সে কতো ক্রাশ খেয়েছে কোন হিসেব নেয়..
হঠাৎ ইফতি ভাইয়া ডুকতে ডুকতে বলল– আমিও খেলতে চায়.. সেই কতো পিচ্ছিকালে খেলেছি…
সুনান ভাই ইফতি ভাইয়ের বন্ধু.. তিনি তার বন্ধুরে নিজের বুকের সাথে লাগায় বলল– অবশ্যই.কলিজা আমার..
হাসনাত ভাই তিতা খেয়েছে এমন মুখ করে মাথা ধোলান.. আজব ইফতি ভাই আবার তার কোন পাকা ধানে মই দিল।। এরে দেখলে কেন পেটে সুতাক্রিমি নাড়া দিছে মতো মুখ করে এই হিটলার…
আচমকা হাসনাত ভাই দাঁড়িয়ে পকেটে হাত পুরে বলল– আমি ভেবে দেখলাম রান্না বান্না আর বাকি কাজ আমরাই করবো.. কোন আম্মু রা ছাড়া…
আমার মাথায় বড় একটা বাশ পড়লো.. আমি জানতাম এই মসিবত যেখানেই যায় সেইখানে এমন গন্ডগোল মার্কা কথা বলে!! আমি হালকা ডুক গিলে বললাম— ভাই আমি সব থালাবাসন ধৌব…
আমার দিকে তাকিয়ে সে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল– সেইটা ইস্পা করবে বলেছে.. সানিয়া ও নাকি করবে.. তুই ঝাড়ু লাগাবি আর আমার সাথে রান্না করবি…
আমি তার দিকে করুণাভরা দৃষ্টিতে বললাম— ভাই, পারিনা আমি রান্না.. আর ঝাড়ু লাগালে কোমড়ে প্রবলেম হয়.. হঠাৎ সানিয়া এসে বলল– তো শিখে নাও.. কে বলছে শিখার কোন বয়স আছে.. আর তুমি এখন শিখবা..
আমার ইচ্ছা হলো এই মেয়েরে কাটা পেয়াজের স্তুপে দু ঘন্টা চুবাই রাখি তাহলে সে বুঝতো রান্না কতোটা কষ্ট।
দেখলাম সবাই তারেই সাপোর্ট করল.. আমি হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলাম.. আর সিঁড়িতে ইস্পা আর তার সাথীদের সাথে দেখা আমার…
গেন্জি আর স্কার্ট এ অনেক মায়াবী লাগছে তাকে.. যদিও শুধু চেহারা মায়াবী কাজগুলো ডাইনীর মতো লাগে আমার.. সারাক্ষণ হাসনাত ভাইয়ের আগে পিছে ঘুরতে থাকে সে.. হাসনাত ভাইয়ের খালাতো বোন ও.. সব সময় ওর বহর নিয়ে চলতে থাকে এই মেয়ে .. প্রিমিয়াম ভার্সিটিতে পড়ে এতেই কতো দেমাক তার. সে দেখতে হলদে ফর্সা ও আর আমি লাল ফর্সা… আমার দিকে তাকিয়ে আফসোসের ভঙ্গিতে বলল– ওহ হ… একটা মেয়েকে কাজের বেটি রহিমা বানায় দিল আমার হাসনাত..
আমার ইচ্ছে করছে তার কোকড়া চুলগুলো ঝাড়ু বানিয়ে ঘর পরিষ্কার করি.. কিন্তু সেই আশা বাদ দিয়ে আমি সিড়ি দিয়ে হনহনিয়ে ওঠে ছোট মামির রুমে গিয়ে টিভি দেখতে লাগলাম..
শালা হিটলার.. মানুষকে সারাক্ষন জ্বালাস.. দেখবি তোর বউ আস্ত একটা হিটলারনি রাক্ষসী হবে.. যে তোকে জ্বালাবে, পোড়াবে তারপর টুপ করে গিলে ফেলবে তা ও সস ছাড়া.. যদি রোদেলাকে বিয়ে করতি রোদেলা অন্তত তোরে সস দিয়ে খেত… এইসব বিড়র্বিড় করে সামনে তাকাতেই দেখলাম মুনিরা আমার সামনে বসে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে… আমি মুখ ভেঙ্গিয়ে বললাম— এইভাবে কি দেখ?? আমি কি পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য নাকি যে এইভাবে স্কেন করছ??
সে ধুপ করে বসে বলল– তার থেকেও বেশি, এইজন্যই তো ভাবি নখ খাও কেন?? আসলে তুমি বোধহয় রাক্ষসী হয়ে গেছ. না হয় সস দিয়ে মানুষের রোস্ট খাও কেন…
ইফ্ফাত দৌড়ে এসে বলল– কি খাচ্ছ তোমরা?? বার্বিকিউ নাকি.. গোলমরিচ ও সাথে দিও প্লিজ..
মুনিরা মাথায় হাত দিয়ে বলল– একটা রাক্ষসী হয়েছে তো আর একটা টিউবলাইট… ও হাসনাত বার্বিকিউ খাবে.. সস দিয়ে.. তুৃমি খেতে চাও…??
ইফ্ফাত নাক সিটকে বলল– ছি ছি মানুষের মাংস তিতা… চিনি ছাড়া খাওয়া যাবে নাকি… আমি খাব না.. তারপর হঠাৎ চোখ বড় করে বলল– কি??? মানুষ?? আরে আপু দুনিয়াতে কতো সুন্দর জিনিস আছে.. আমি মেহেদীকে বলব তোমার জন্য আসার সময় চিকেন ফ্রাই আনতে.. ও বড় আপুকে আনতে গেছে..তাও এইসব খাইও না তুৃমি..
আমি দুইটার মাথায় জোরে দুইটা গাট্টু দিয়ে বললাম— গাধা দুইটা.. আমি এইসব কেন খাব.. আমাকে দেখতে কি তোদের হাসনাত খেকো হনুমান মনে হয়…
মুনিরা হাসতে হাসতে বলল– আহ্ একটা মুভির নাম পেয়েছি”” রোদেলা কেন হনুমান” যাই সবাইকে বলে আসি.. এই বলে সে ভৌদৌড়…
আর আমি মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লাম.. সত্যি জিবন যেন স্টার প্লাসের মতো বেদনাময়.. কেউ আমারে এক চিমটি লবন দাও খেয়ে মরে যায়…
ইফ্ফাত আমার মাথায় হাত দিয়ে বলল– বইয়ে তো কোথাও পড়ি নাই লবন খেলে মারা যায়.. কোন বইয়ে আছে আপু..
আমি তেড়ে ওঠে বললাম— তুই টিউব লাইট না তুই হল মোমবাতি.. যা সামনে থেকে..
বেচারী বোধহয় মনে কষ্ট পেল.. দুঃখী মুখ নিয়ে বেরিয়ে গেল আর যেতে যেতে দোয়া করে দিল– তোমার লাইফে যেন হাসনাত ভাইয়ার মতো একটা হিটলার পড়ে যে সারাদিন তোমারে দৌড়ের ওপর রাখে…
আমি তবে রে বলতেই ভৌ দৌড়.. আর যথারীতি আহ্ শব্দ… এই মেয়েকেমনে হচ্ছে চশমা একটার জায়গায় দুইটা দিতে হবে.. শুকনাতে ও আছাড় খাই.. গিয়ে দেখি সে বলিউড স্টাইলে ইফতী ভাইয়ার কোলে ঝুলছে..
ইফতী ভাই অপলকে তাকিয়ে আছে তার দিকে..
ইফতী ভাই মানুষটা অনেক ভালো.. ফর্সা বেশি না আবার শ্যামলা ও না.. একটা ছেলের গায়ের রং যেমনটা হলে তাকে সুদর্শন বলা চলে ঠিক তেমন.. সুঠাম দেহ.. লম্বাই ৫.১০.. ইফ্ফাত ও লম্বা ভাইয়ার সাথে মানাবে.. আর ভাইয়ার বিশেষ পার্ট হলো হাসলে গালে টোল পড়ে.. এতে কিউট লাগে অনেক.. ইফ্ফাত তাড়াতাড়ি ইতস্তততা নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো তারপর সরি বলে আবার সেই ধুপধুপিয়ে তার প্রস্হান.. ইফতী ভায়ের মুখে মৃদু হাসির রেখা.. আর চোখে খুশির ঝিলিক.. নিজের হাতগুলোর দিকে বারবার তাকাচ্ছে সে.. তখন আমি জোরে বলে ওঠলাম — হুম হুম.. ঐ হাত দিয়েই আজ ইফ্ফাত কে ধরেছিলেন আপনি.. ভাই আজকে ভাততো ঐ হাত দিয়ে খেতে পারবেন…. তাই না?? নাকি চামচ লাগবে… এই বলে একটা চোখ টিপ দিলাম…
ভাইয়া লজ্জায় লাল হয়ে ওঠলো.. ছেলে মানুষের লজ্জা রাঙ্গা মুখ দেখে হাসি পেল আমার.. আসলে ভাইয়া ইফ্ফাতের জন্য পার্ফেক্ট.. কারন আমার বোনটা বদরাগী. আমার সন্দেহ হয় এই মেয়ে নিঘার্ত জামাইয়ের চুল সব ছিড়ে বাতাসে ওড়িয়ে দিবে.. যদি ওল্টাপাল্টা করে তো.. কিন্তু ভাইয়া হলে বলবে– তুমি ছিড়িও না হাতে ব্যাথা পাবে আমি ছিড়ে তোমার হাতে দি…
ভাইয়া হেসে ইতস্তত হয়ে বলল– আরে তেমন কিছু না.. ও আসলে দেখতে পাই নি.. আর আমি জাষ্ট হেল্প করেছি..
আমি ব্রু নাচিয়ে বললাম— ভাই,, মিথ্যা আর কাউকে বলিও.. তুমি যে সেই কখন থেকে আমার বোনটিকে দেখছো আমি কিন্তু খেয়াল করেছি…
সে লাজুক হেসে নিচে তাকিয়ে বলল– আসলে তার চোখ গুলো খুব মায়াবী!! চোখ ফেরানো দায়.. আর মিষ্টি হাসিটা.. ওইটার জন্য আমি যা বলে করতে পারবো..
আমি আনমনে হেসে দিলাম.. তখন পিছন থেকে হটাত হাসনাত ভাই বলে ওঠলো— কার হাসি সুন্দর??
ইফতী ভাই আমাতাআমাতা করতে লাগলো.. আমি পিছনে ঘুরে দাড়িয়ে বললাম— আমার.. ওনি আমার হাসির কথা বলছিল. কেন কোন সমস্যা…
হাসনাত ভাই ইফতী ভাইয়ের দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল– মানুষকে পাম দিয়ে ফোলাস কেন… তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল– ঘোড়ার হাসি শুনেছিস কখনো কতো বাজে?? তোর হাসিটাও তেমন শোনায়।।।
তারপর আচমকা আমার হাত ধরে বলল– চল আমার বিছানা ঠিক করে দিবি.. এই বলে আমাকে টানতে টানতে নিয়ে চলল.. ইফতী ভাই বেকুবের মতো সেইদিকে তাকিয়ে রইল…
আমি আমার হাতের দিকে তাকালাম.. তার স্পর্শ যেন মনে ঝড় তুলছে.. মনে হচ্ছে পেটের ভিতরে সাইক্লোন টা মোচড় দিচ্ছে.. হাসনাত ভাইয়া এতো সুন্দর কেন.. এইযে তার কর্নারের দাতটা যেইটা কথা বলার সময় দেখা যায় আমি রোজ ক্রাশিত হয়ে পড়ি!!! তার সবকিছু সুন্দর.. লম্বাই ৫’১১।। লম্বা লম্বা আন্গুল.. হাতটা আরো সুন্দর.. কিন্তু এই হাতটা যেন শুধু আমার হাতের সাথেই মানায়!!!
বিছানার সামনে এনে আমাকে দাড় করিয়ে বলল– তাড়াতাড়ি ঠিক কর.. আমি ঘুমাব. মাথা ব্যাথা করছে..
হঠাৎ সানিয়া কোথা থেকে এসে বলল– মাথা টিপে দিব আমি.. আম্মু বলে আমার হাতে জাদু আছে..
আমি দাত কটমট করে বললাম— জাদু কাজের মধ্যে দেখা.. যাও গিয়ে আম্মুকে সাহায্য কর গা..
সে আমাকে মুখ ভেঙ্গিয়ে হঠাৎ মুখ উজ্জ্বল করে বলল– রোদেলা কেন হনুমান মুভি দেখেছেন ভাইয়া…
আমি তার দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম.. ইচ্ছে হচ্ছে মুনিরাকে তুৃলে ফাসিতে লটকাই দি.. তাও আবার বিনা টিকেটে.. তারপর হঠাৎ মনে হলো নাহ্।এইটা বাদ যাবে কেন… মুনিরা আর সানিয়াকে দুইটা রশিতে ঝুলিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দিব তাও আবার এই হিটলারের ফ্যানে তাহলে ফ্যান ভেঙ্গে তিনটার ই উচিত শিক্ষা হবে।।
নিজের আইডিয়া দেখে আমি নিজেই ক্রাশিত!!! বাহ রোদেলা.. তোর মাথায় এতো বুদ্ধি তোর তো ট্রাম্পের সাথে মিটিং এ থাকার কথা.. তুই এখানে কি করিস..এই বলে নিজের কাধে নিজে চাপড় দিয়ে শাবাশী দিলাম..
হাসনাত ভাই হঠাৎ গর্জে বলল– ঐ.. কাজ করতে বলছি.. নিজের বডি ফিটনেস দেখতে বলি নাই.. ঢঙ্গি.
আমি মুখ ফুলিয়ে বিড়বিড় করে বললাম— হু. তোমার সাত পুরুষের ভাগ্য যে ট্রাম্পের সেক্টেটারী তোমার বিছানা পরিষ্কার করছে.. আর তুমি তার মূল্য ও দিচ্ছ না.. এইসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ সুনান আর ইফতী ভাইয়াকে দেখলাম..
হাসনাত ভাই পেচার মতো মুখ করে বলল– কিরে চাচী চিন্তা করবে.. যাস নি..
ইফতী ভাইয়া কিছু বলার আগে সুনান ভাই হেসে বলল– আমি মামি থেকে পার্মিশন নিয়ে এসেছি.. একসাথে থাকবো আজকে..
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল– রোদেলা চল তোকে ওরা খুঁজছে।। তোর বন্ধুরা..
আমি পা বাড়াতে হাসনাত ভাই গর্জিয়ে বলল– রোদেলা এদিকে আয়.. ফুফু এই ইংরেজি বইটা তোকে পড়াতে বলেছে সামনে নাকি তোর এক্সাম.. বসে পড়..
আমার মেজাজ হায়পার হয়ে এখন আকাশে ওড়ছে.. তারদিকে না তাকিয়েই বললাম— রাতের দশটাই পড়ব না আমি.. আর একদিনে বিদ্যাসাগর হয়ে যাব না.. এইবলে হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলাম.. পিছনে কিছু পড়ার শব্দ হলো কেয়ার করলাম না…
সানিয়া দৌড়ে এসে বলল– জান ভাইয়া হাতে কতো ব্যাথা পেয়েছে আমি দেখতে চায়লাম দেখতে দিল না.. আমার কান্না আসতে লাগলো মনে ভিতর যেন হু হু করে ওঠলো তাও নিজেকে শক্ত করে বললাম— ভালো হয়েছে মানুষকে জ্বালানোর শাস্তি…
আমরা সবাই ছোট মামির দুই রুমে ঘুমাব.. কাল রাতের মধ্য হয়তো আমাদের ম্যারিড আপুগুলো ও চলে আসবে.. দুইটা রুম একরুমে ছেলেরা বড়টাই. কারন ওরা বেশি.. আর আর একটা রুমে আমরা.. মেয়েরা. রুমটা ছোট.. আর দুইটা জানালা.. একটা গলির দিকে.. আর একটা পাশের রুমের দিকে.. এই জানালা কেন দিছে কে জানে। এই কোন দেশি স্টাইল.. তবে আশার কথা লক আমাদের রুমের দিকে.. আর জানালার ওপাশে জাষ্ট একটা সোফা.. ওরা সবাই ফ্লোরে বিছানা পেতেছে.. সোফাই কেউ থাকছে না. আর আমাদের রুমে আমরা তিন বোন, ইফ্ফাত, ইষা আপু, আর কিছু বাচ্চা পার্টি.. আমরা কেউ খাটে কেউ ফ্লোরে.. তবে আমাকে জায়গা দিয়েছে একটা বড় টেবিল আছে সেইটার ওপর.. সেইটা জানালার সাথে লাগালো.. আসলে টেবিলটা কাটের মতোই তবে ছোট আর মজবুত…
আমরা জানালা খুলে দিলাম আর ওদের সাথে নানা বিষয়ে গল্প করতে লাগলাম..
আদি, সিয়াম, আর আলভি আমার সমান.. আসলে আমাদের কাজিনদের মধ্যে সম বয়সী আমরা অনেকেই.. এমন একটা অবস্হা মনে হয় একজন ভেবেছিল বেবি নিবে তখন বাকিরা সবাই ভাবলো আমরা ও নিব.. আর সবাই একটা একটা করে নিয়ে নিল…
হঠাৎ দরজায় ধুমধাম আওয়াজ.. মনে হলো ঘরে ডাকাত পড়েছে.. আমি দৌড়ে গিয়ে দেখি লাল চোখে হাসনাত ভাই..
আমি তার দিকে অবাক নয়নে তাকালাম.. তার চোখে কি ভোমরা কামড় দিল এতো লাল কেন..
আমি আনমনে প্রশ্ন করলাম— লিপিস্টিক কি ঠোটের জায়গায় চোখে দিলেন..
আমার দিকে সে কটমটিয়ে তাকালো.. আমি হড়হড়িয়ে বললাম— লাল চোখ ওয়ালা কোন সুন্দর ছেলে বাচ্চা বাচ্চা চেহারার এক রুপসী কন্যার দিকে বাঘের মতো তাকাই.. মেয়েটার বিনা সিড়িতে ওপরে টিকেট কেটে যাবে.. এই বলে মুখে হাত দিয়ে ফেললাম..
সে অন্যদিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল– তোদের সাথে ঘোমাব আমি..
তখন আমি অবাক হয়ে তাকালাম..সুনান ভাই বলে ওঠলো— ভাই এখানে তো তেমন জায়গা নেই.. আপনার রুমে কি হলো…
হাসনাত ভাই মুখ ঘোরিয়ে বলল– পিঁপড়া সব এইখানে.. পুরো শরীরে কামড়াছে..
আমি অবাক হয়ে বললাম— আমি তো পরিষ্কার করে এলাম..
সে গোমড়ামুখ করে বলল– তাহলে চল তুই সহ আমার রুমে গিয়ে থাকবি.. পিপড়া আছে কিনা তারপর বুঝবি…
আমি তাড়াতাড়ি বললাম— আপনি সোফায় ঘুমিয়ে পড়ুন ভাইয়াদের রুমে.. আমি এখানে ঘুমাব..
এইবলে আমি শুতে চলে এলাম.. আর দেখলাম সে সোফায় শোয়ে পড়ল.. আমি জানালাটা বন্ধ করে দিলাম কিন্তু দেখলাম হুক টা ভাঙ্গা.. তাই হুক না লাগিয়ে এমনিতেই ঘুৃমিয়ে পড়লাম
চলবে