ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2 পর্ব ১০+১১

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও🍁🍁
#পর্ব_১০
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
মাহি গিয়ে দেখলো ওর সখের ফুলগুলো নিচে পড়ে আছে আর তার উপর পা দিয়ে মীরা দাঁড়িয়ে আছে।

অ!সো সরি মাহি আমি দেখতে পাইনি,,, এখানে আমার ব্যাগটা রাখতে গিয়ে পড়ে গেছে(আসোলে মেহরাব মীরাকে রুম থেকে চলে যেতে বলার পর মীরা দরজার সামনে কান পেতে ওদের কথা শুনছিলো আর যখনি ফুলগুলোর কথা শুনলো তখনি রুমে এসে ফুলগুলো ইচ্ছে করে নষ্ট করে দিলো যাতে মাহির মন খারাপ হয়,,, পারলে তো তোর হাতের ওই চুড়ি গুলোও আমি মরমর করে ভেঙে দিই,, মনে মনে বলল মীরা)

তুই এই ঘরে কি করছিস??(মেহরাব)

তুমিই তো বললে আমায় এরুমে থাকতে তাই চলে আসলাম।

তুই বলছিস তুই ইচ্ছে করে ফুলগুলো ফেলিসনি ভুল বসত পরে গেছে তাহলে ফুলগুলো ওমন থেতলে গেলো কি করে মনে হচ্ছে কেউ পা দিয়ে ফুলগুলো মারিয়েছে (মেহরাব)

মেহরাব এর কথাশুনে মীরা থতমত খেয়ে গেলো কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না৷।।

আ,,,আসোলে কি বলো তো আমি এটা পরার আওয়াজে ভয় পেয়ে গিছিলাম তাই লাফাই উঠছিলাম তখনি মনে হয় ফুল গুলো পায়ের নিচে পরে ছিলো আমি দেখীনি(উফ বাঁচলাম মনে মনে)

মেহরাব কিছু বলতে যাবে তখনি দেখলো মাহি একমনে ফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে। মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে এখনি কত খুশি ছিলো মেয়েটা কত হাসতেছিলো আর এরি মাঝে কি হয়ে গেলো। কত সখের ফুলগুলো এই ফুলগুলোর জন্য কতকিছু করল আর শেষ মেষ কি হলো। মাহি রুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো। মেহরাব ও কিছুক্ষণ মীরার দিকে রেগে তাকিয়ে চলে গেলো।

ঠিক এভাবেই তোর সখের জিনিস গুলো আমি নষ্ট করে দেবো তোর প্রিয় জিনিস গুলোও তোর কাছ থেকে কেরে নেবো মিলিয়ে নিস (মনে মনে বলে ফুলগুলো পা দিয়ে আরো বেশি করে মারিয়ে দিলো)

বারান্দার এক কোনে চুপচাপ মন খারাপ করে বসে আছে মাহি তখনি পিছন থেকে কেউ ওর কাঁধে হাত রাখল,, পিছনে তাকিয়ে দেখল ওর মা।

কি হয়েছে আমার মায়ের এমন মন খারাপ করে বসে আছে কেনো??(মাহির পাশে বসে)

আম্মু (মাকে জরিয়ে ধরে) আমরা বাড়ি যাবো কবে??

সেকিরে তুই তো এখানে এসে কত খুশি ছিলি এই বিয়ে নিয়ে কত মজা করবি বললি আর এরি মাঝে কি হলো??(আম্মু)

কিছু না ভালো লাগছে না,,, তুমি তো এখানে এসে আমার কথা ভুলেই গেছো সারাদিন শুধু কাজ আর কাজ (মাহি)

সত্যি এখানে আসার পর থেকে মেয়েটার দিকে ভালো করে তাকানোর সময়ই পাইনি ছেলেটা তো ওর বাবার সাথে,,, (মনে মনে বলে মাহির মা বলল)

তাই,, আচ্ছা মুখটা এমন শুকনো শুকনো লাগছে কেনো?? সকাল থেকে কিচ্ছু খাসনি নাকি?? বস এখানে আমি খাবার নিয়ে আসছি,,,, এই বলে মাহির মা খাবার আনতে চলে গেলো৷ আর মাহি ওখানেই মন খারাপ করে বসে থাকলো৷ আর এই সব কিছু দূর থেকে মেহরাব দেখলো। কিছুক্ষণ পরই মাহির মা খাবার নিয়ে এসে নিজে হাতে মেয়েকে খাইয়ে দিলো,,,, তারপর বাকি সারাদিন মাহি মায়ের পিছন পিছনই থাকলো। মেহরাব ও আর ডাকিনি ওকে।

,,,,রাতে,,,,

দূরে বাগানের চড়াটের উপর মেঘলা আর মেঘ বসে আছে,,, মেঘলার কোলের উপরে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে মেঘ৷

আরে কি করছেন?? কেউ দেখে ফেললে কি ভাববে??(মেঘলা)

কি ভাববে আবার?? ভাববে যে আমি তোমার সাথে প্রেম করছি এটাই(মেঘ)

তাই বলে এখানে?? বাড়ি ভর্তি লোকজন কেউ যদি দেখে ফেলে তাহলে লজ্জাই পড়ে যাবো।

ধূত চুপ করো তো কিছুই হবে না,, এখন চুপচাপ আমার দিকে মন দাও।

সবাই ওঠানে মাদুর বিছিয়ে বসে গল্প করছে পাশেই মুনির ওর বয়সী গ্রামের কিছু ছেলে মেয়েদের শহরের গল্প শুনাচ্ছে,,,,, আর সুহান এককোনে বসে চুপচাপ ফোন দেখছে,,,,
গ্রামের মহিলারা অনেকেই এসেছে বড় বাড়ির বিয়ে বলে কথা বিয়ে ১সপ্তাহ আগে থেকেই বিশাল আয়োজন,,, সবাই বসে পান খাচ্ছে আবার কেউ কেউ একসাথে হয়ে গীত গাইছে। আর ইশিতা এই ফাঁকে ওর রুমে গিয়ে ওর বয়ফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলছে। এখানে বাড়ির সবাই আছে সবাই সবার সাথে মজা করছে নেই কেবল একজন আর সে হলো মাহি।

মেহরাব পুরো বাড়ি খুঁজেছে সব রুম গুলোও দেখেছে কিন্তু কোথাও মাহিকে পাইনি,,, শেষে বাগানে খুঁজতে গিয়ে বেশ লজ্জাই পেয়েছে,, কেননা সেখানে মেঘ আর মেঘলা প্রেম করছে। এখন শুধু একটা জায়গাই বাকি আছে আর সেটা হলো ছাদ।। মেহরাব আস্তে আস্তে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলো দেখলো মাহি ছাদের মাঝে বসে চাঁদের দিকে একমনে তাকিয়ে আছে।

বাবা আমার ভিতু রানি দেখছি এতো রাতে একা একা ছাদে বসে আছে ভয় করছে না??(মাহির পাশে বসতে বসতে বলল মেহরাব)

মাহি কিছু বললো না শুধু মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে হয়ে বসল।

আরে আমার সাথে কথা বলছিস না কেনো আমি আবার কি করলাম (মেহরাব)

মীরা আপু ইচ্ছে করে আমার ফুলগুলো নষ্ট করেছে আমি জানি,, ওনি তো আমায় পছন্দই করে না,,,, আপনি ওখানে ছিলেন তবুও ওনাকে কিছু বলেন নি,,, (মুখ ফুলিয়ে বলল মাহি)

ওহ এই জন্যই তাহলে মেডাম আমার উপর অভিমান করে বসে আছে (মনে মনে বলল)

আচ্ছা শোন দেখি আমার দিকে ঘোর (মাহির মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে মুখের দুপাশে হাত রেখে বলল মেহরাব)

মীরা অনেক ন্যাকা টাইপ মেয়ে ওকে তখন কিছু বললে ও কাঁদতে কাঁদতে খালা মনির কাছে গিয়ে উল্টো পাল্টা বলত, আর খালামনি আবার সেটাকে ইস্যু করে অনেক বড় অশান্তি করত।একেতে বিয়ে বাড়ি তার উপর গ্রামের বাড়ি এখানে কিছু হলে দাদুর সম্মান টা থাকতো??? আর তাছাড়া মেঘলার কথাটা একবার ভাব ও কত খুশি এতো অপেক্ষা করার পর নিজের ভালোবাসার মানুষের সাথে থাকতে পারছে এখন যদি এখানে কোনো সম্যসা হয় তাহলে ওর মন খারাপ হবে না??? আর আমি জানি আমার মাহি তো তা হতেই দেবে না কেননা আমার মাহি অবুঝ হলেও সব বোঝে সে কখনো কাউকে কষ্ট দিবে না আর তার মেঘলা আপুকে তো নয়ই,,, কি তাই তো (মেহরাব)

হুম। (মাহি)

এই তো গুড গার্ল,,, তাহলে এখন এমন মন খারাপ করে না থেকে একটু হাস তো। তোকে সব সময় হাসিতেই বেশি মানায় আর তাছাড়া আমার মাহি তো এই বিয়ের ম্যানেজার তার কত কাজ তার কি এখন এখানে মন খারাপ করে বসে থাকলে হবে?? সারা বাড়ি ছুটোছুটি করতে হবে তো সবাইকে মাতিয়ে রাখতে হবে তো তাইনা???

হুম তাই তো,, দেখেছেন আমি তো ভুলেই গেছি আমার কত কাজ,, আপুকে মেহেন্দি পরানো তারপর সাজানো তারপর (মেঘলা আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলো তখনি মেহরাব বলল)

আরে এগুলো এখনো দেরি আছে,, এখন একটু হাসতো,,, যদি না হাসিস তাহলে কিন্তু কাতুকুতু দিবো।

এই না আমার কিন্তু অনেক কাতুকুতু আর আমিও জানি আপনার ও কাতুকুতু আছে (হেসে বলল মাহি)

কি নিষ্পাপ আমার মাহি কতটা সরল,,, এত সখের ফুলগুলো নষ্ট হয়ে গেলো তাও কেমন একটু ভালো কথা বলায় সেটাও ভুলে গেলো। এত ভালো কেনো তুই মন চাই সব সময় বুকের সাথে একেবারে চেপে ধরে রাখি,,, আমি তো আমার মাহির এই হাসি মুখটাই এতক্ষণ মিস করছিলাম,,,, অনেক ভালোবাসি তোকে অনেক বেশি ভালোবাসি,, কবে যে তুই বুঝবি (মনে মনে বলল মেহরাব)

ও ভাইয়া কই হারিয়ে গেলেন??

মাহির কথায় হুস ফেরে।। না না কোথাও না, এই তো আমাদের মাহি হাসছে,, ওমমম এই হাসির জন্য তো তোকে কিছু একটা দিতে হয় কি দিই বলতো ওমমম (একটু ভেবে) দাড়া (তারপর মেহরাব কাউকে ফোন করল,, তার কিছুক্ষণ পরই মেঘ পিছনে কিছু নিয়ে ছাদে আসলো)

এই তো মাহির গিফট চলে এসেছে (মেঘ)

গিফট?? কি গিফট??(মাহি)

ওমম সেটা আমি বলছি,,, তারপর মেহরাব গিয়ে মেঘের পিছন থেকে তিনটা শাপলা ফুল বের করে মাহির সামনে ধরলো।

সেদিন সব তুলে আনছিলাম তো তাই আজকে আর বেশি ফোটেনি এই গুলোই ছিলো,, দয়া করে আপনি এগুলো গ্রহন করে আমায় ধন্য করুন রানী সাহেবা (মেহরাব)

মাহি তো ফুল গুলো দেখে সেই খুশি এতোক্ষণের সব মন খারাপ যেনো উধাও এক লাফে ফুলগুলো নিজের হাতে নিয়ে।

ইয়ে আমার ফুল,, কত্ত সুন্দর থ্যাংকু ভাইয়া ওহ কত খুশি লাগেরে ইয়ে (বলে লাফাতে লাগলো।)

বারে আমিও তো ফুলগুলো আনলাম তাহলে খালি মেহরাব কেই থ্যাংকু বললে আমাকে কেনো বললে না (মেঘ)

ওহ আপনাকেও থ্যাংকু মেঘ ভাইয়া গাড়ি গাড়ি থ্যাংকু (এই বলে মাহি লাফাতে লাফাতে চলে গেলো,, আর মেহরাব মাহির যাওয়ার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো,, তখনি মেঘ ওর মাথায় গাট্টা মেরে বলল)

এই সালা তাহলে এই জন্যই তুই ওই দুপুরে আমায় ঘুম থেকে টেনে তুলে ওই রোদের মধ্যে মাঠে নিয়ে গেলি তাও আবার সাপের বাড়িতে। এখন বুঝলাম আপনি কেনো ওখানে সাপ আছে যেনেও ফুলগুলো তুললেন (মেঘ)

হুম (একটা কথা বলি মেঘ আর মেহরাব দুজন বন্ধু একিসাথে পড়ত,,,)

কে যেনো আমায় বলেছিলো প্রেম করা ভালো নয় আর বয়সে ছোট্ট মেয়ের সাথে তো একেবারেই নয়(মেহরাবকে উদ্দেশ্য করে বলল মেঘ)

ভাই কেনো পুরানো কথা বলে লজ্জা দিচ্ছিস,, তখন তো আর জানতাম না যে আমিও কোনো এক বাচ্চা মেয়ের প্রেমে পড়ে যাবো। আর আমি তো তোর মতো না,, তুই তো আমাকে দিয়ে আমার বোনকে লাভ লেটার পাঠাতে চাইছিলি (মেহরাব)

আরে আমি কি তখন জানতাম যে মেঘলা তোর বোন।।। আচ্ছা বাদ দে তা তুই কি মাহিকে বলেছিস??? যে তুই ওকে ভালোবাসিস??(মেঘ)

না বলিনী তবে বোঝার চেষ্টা করছি ও আদেও আমায় পছন্দ করে কি না(মেহরাব)

তাহলে এক কাজ কর তুই মাহিকে দেখিয়ে অন্য মেয়ের সাথে প্রেমের অভিনয় কর যদি ও জেলাস হয় তখন বুঝবি যে ও তোকে ভালোবাসে (মেঘ)

না আমি এটা কখনোই করবো না,,, আমি আমাদের মধ্যে কখনোই কোনো থার্ড পার্সন কে আনবো না,, এতে সম্পর্কে একটা খারাপ প্রভাব পড়ে হোক সেটা অভিনয় তবুওও।।আমি চাই মাহি আমাকে বুঝুক আমার থেকেও অনেক বেশি করে আমাকে চিনুক,, ওর নিজের মতো করে আমাকে ঝুকে নিক আমি কখনোই বলবো না আমি তোমাকে ভালোবাসি,, ওকে বুঝে নিতে হবে, মানছি ও অবুঝ তবুও ওকে আমার ভালোবাসা বুঝে নিতেই হবে হবেই #বুঝে_নাও_ভালোবাসি। অনেক বেশিই ভালোবাসি।

চলবে,,,,,,,?

(,,কালকে গল্প দিবো না কেউ অপেক্ষা করবেন না প্লিজ,,,,)#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#১১_পর্ব
.
সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না, কখন যে সময় সময়ের গতিতে চলে যাই আমরা বুঝতেই পারি না,, দেখতে দেখতে সাতদিন কেটে গেলো, এই সাত দিন মেঘলার খুবি খারাপ গেছে কেননা ও মেঘকে ভীষণ মিস করেছে, শুধু দিনগুনেছে যে কবে এই সাত দিন পাড় হবে,, কেননা মেঘলা এই সাত দিনে খুব ভালো ভাবেই বুঝে গেছে যে ও মেঘকে আস্তে আস্তে ভালোবেসে ফেলেছে।
আসোলে মেঘ যখন প্রথম মেহরাব এর সাথে ওদের বাড়িতে আসলো সেদিনই মেঘকে ভালোলেগেছিলো কিন্তু ভালোবেসেছিলো না।

মেঘকে ভীষণ ভয় পেতো কেননা মেঘ পুলিশ এই জন্য, আবার ভাইয়ের বন্ধুও তাই এই ভালো লাগাটা আর প্রকাশ করেনি নিজের মধ্যেই চেপে রেখেছিলো,, কিন্তু সেদিন যখন মেঘ নিজে থেকে ওর দিকে পা বাড়ালো তখন ও কেনো থেমে থাকবে ও এককদম বাড়ালো।

ভার্সিটীর রাস্তার সামনে দাড়িয়ে আছে মেঘলা শুধু মেঘকে এক পলক দেখার আশায় কেননা গতকালই মেঘ বাড়ি ফিরেছে,, মেহরাব এর থেকে শুনেছে,, মেহরাব ফোনে মেঘের সাথে কথা বলার সময়ই শুনেছে,, তাই আজকে এখানে দাঁড়িয়ে আছে,,,
অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকল তবুও মেঘের দেখা পেলো না ওদিকে আবার ক্লাসের সময় হয়ে যাচ্ছে কি যে করি,,
আরো কিছুসময় অপেক্ষা করার পর হতাশ হয়ে এক বুক কষ্ট নিয়ে যখনি ভার্সিটীর গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতে যাবে তখনি দেখলো দূরে মেঘের গাড়ি দেখা যাচ্ছে,, বুকের ভিতর ধুকপুক শুরু হয়ে গেলো,, কতদিন পরে দেখবো ওনাকে,, ইস কত লজ্জা লাগছে। মেঘলা যখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এসব ভাবছিলো তখনি মেঘের গাড়ি মেঘলাকে ক্রস করে চলে গেলো,, মেঘলার ভীষণ খারাপ লাগল যার জন্য এতো কষ্ট করে এতোক্ষণ ধরে এখানে দাঁড়িয়ে থাকলাম সেই এমন করল।
মেঘলা হতাশ হয়ে মেঘের চলে যাওয়া গাড়ির দিকে তাকিয়ে রইল তখনি পিছন থেকে কেউ বলল।

চলে গেলো?? অনেক খারাপ তাই না?? (লোকটি)

হুম অনেক নিষ্ঠুর একটুও তাকালো না পযন্ত আমার দিকে (আনমনে বলল মেঘলা)

সত্যি খুবি খারাপ এমন টা কেউ করে??

হুম সত্যি ওনি,,,,মেঘলা আর কিছু না বলে ভাবল যে ও এতোক্ষণ কার সাথে কথা বলছে এই ভেবে পিছনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো মেঘলা।পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটাকে দেখে,,,

আপনি???। (অবাক হয়ে বলল মেঘলা).

,,,, মেহরাব অফিসে এসে একটা প্রজেক্ট নিয়ে অনেকক্ষণ লেকচার দেওয়ার পর সবাইকে বুঝিয়ে কেবলি নিজের কেবিনে এসে চেয়ারে বসল,, তখনি ওর ফোনটা বিকট শব্দ করে বেজে উঠল। মেহরাব বিরক্ত হয়ে ফোনের দিকে তাকালো কাজের সময় আবার ফোন দিলো কে, এই ভেবে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো মা ফোন দিয়েছে,,

এই সময় মা কেনো ফোন দিলো , কোনো সম্যসা হয়নি তো আবার,,এই ভেবে মেহরাব ফোনটা রিসিভ করে বলল।

হ্যাঁ মা বলো, এখন ফোন দিলে যে কিছু হয়েছে?? বাবা ঠিক আছে তো??

না কিচ্ছু ঠিক নেই তুই যলদি সিটি হাসপাতালে চলে আয় মাহি এ্যাকসিডেন্ট করেছে আমরা ওকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি তুই যলদি আয়৷

কথাটা শুনে মেহরাব এর মনে হলো এক মুহূর্তের জন্য ও অন্য দুনিয়ায় চলে গেছে, বুকের ভিতর কেমন মুচড় দিয়ে উঠল,, কিছু সময়ের জন্য শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল,,, মায়ের কথায় হুস ফিরল।

কিরে আসছিস তো নাকি??

হ,,হা, হুম আ,,আসছি এখনি আসছি (কাঁপা গলায় বলল মেহরাব)

ফোন রেখে তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে গেলো মেহরাব, ম্যানেজার কে কোনো রকম বুঝিয়ে এসেছে,,, এতো জোরে গাড়ি চালাচ্ছে তবুও যেনো রাস্তা শেষ হচ্ছে না,, এই জন্যই বুঝি বলে বিপদে রাস্তা বাড়ে।
অবশেষে হসপিটাল এ পৌঁছালো গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে গিয়ে রিসিপশনে কিছু বলতে যাবে তখনি দেখলো মনির হাতে চিপস নিয়ে খাচ্ছে আর হাটাহাটি করছে,, মেহরাব দৌড়ে ওর কাছে গিয়ে জিগাস করল।

এই মাহি কোথায়??(হাঁফাচ্ছে আর জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে মেহরাব)

কে আপু?? আসো আমার সাথে আমি নিয়ে যাচ্ছি,,

মেহরাব মনির এর পিছন পিছন গেলো তারপর মনির দেখিয়ে দিলো মাহির কেবিন, মেহরাব কাঁপা কাঁপা পায়ে আস্তে আস্তে কেবিনের দরজা খুললো,, খুলে ভিতরের অবস্থা দেখে মেহরাব এর চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।হাত অটোমেটিক বুকের বা পাশে চলে গেলো।

কেননা ভিতরে মাহি বেডের উপর বসে আছে বা হাতটা প্লাস্টার করে গলায় ঝুলানো, মাথায় একটা ওয়ান টাইম বান্ডেজ হয়ত মুখ থুবরে পরেছিলো এই জন্য ঠোঁট টা ফুলে তিনটা হয়ে গেছে, এমন টাইপ,, ডান গালেও ছোট খাটো একটা বান্ডেজ,,, বসে বসে ডান হাত দিয়ে চিপস খাচ্ছে,, ঠোঁটে বেথ্যা তাই ভালো মতো হা করতে পারছে না, মুখটা বাকিয়ে হা করে খাচ্ছে।
আর মাহির চারপাশে ওর মা আর মাহির মা বসে আছে,,,, ফুপি মাহির জন্য জুস বানাচ্ছে আর আম্মু ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।

মায়ের উপর রাগ হচ্ছে এভাবে কেউ বলে?? ফোনে এমন ভাবে বলল আমি ভাবলাম কি না কি,, প্রাণ পাখিটা খাঁচা ছেড়ে পালিয়ে যাবো যাবো অবস্থা হয়ে গিছিলো। সব শেষে মাহি ঠিক আছে এটা দেখে ভালো লাগছে। মেহরাব দরজা ঠেলে ভিতরে গেলো।

এসেছিস দ্যাখ কি অবস্থা হয়েছে মেয়েটার আহারে কার যে নজর লাগলো আমার মেয়েটার উপর আল্লাহ জানে (মেহরাব এর আম্মু)

মেহরাব এর মায়ের কথা শুনে মাহি ফুলে যাওয়া ঠোঁটটা আরো একটু ফুলিয়ে বলল।

ঠিল বলেচো মামি আমাল উপর কালো নজল লাগছে (ঠোঁট ফোলা তাই ভালো করে কথা বলতে পারছে না)

মাহির কথাশুনে মেহরাব হু হা করে হেসে উঠল। মেহরাব এর হাসি দেখে মেহরাব এর মা ওর হাতে মেরে বলল।

এই পাজি ছেলে এমন হাসসিস কেনো??

দেখেছো মা একেই বলে কাউকে কিছু নিয়ে বেশি ক্ষেপালে তারও সেই অবস্থা হয়,, খুব তো আমাকে তোতলা বলছিলি এখন দ্যাখ কে তোতলা (মেহরাব)

মাহি রেগে মেহরাব এর মা কে বলল।

দেখেলে মামি তোমাল ছেলে আমাল নিয়ে মজা কলছে (কান্নার অভিনয় করে)

এই মেহরাব আমার মেয়েকে নিয়ে একদম মজা করবি না বলছি..

মেহরাব তো ঠিকি বলছে ভাবি, খুবতো ওকে নিয়ে মজা করছিলি এখন দ্যাখ (মাহির মা)

মায়ের কথা শুনে মাহি কান্নার অভিনয় করতে লাগল।

এ কখনো শুধরাবে না (মনে মনে বলল মেহরাব)

মেহরাব আমরা এখন বাড়ি বাড়ি যাবো তুই মাহিকে কোলে নিয়ে গাড়ি অবধি দিয়ে আায়(রুপালি)

কি বলো আম্মু ওর তো হাত ভেঙ্গেছে পা নয় ও তো হাঁটতে পারছে তাহলে কোলে নেওয়ার দরকার কি,,(মেহরাব)

বেশি কথা না বলে যা বলছি কর।

ওকে কি আর করার আম্মাজান এর অর্ডার বলে কথা,, মেহরাব গিয়ে মাহিকে কোলে তুলে নিলো।

মাহি ফোলা ঠোঁটেই মেহরাব দিকে তাকিয়ে হাসলো যেনো হাসি দিয়ে বলছে,, দেখ কেমন লাগে।

মেহরাব ও বিরবির করে বলল,, তোতলা একটা।

আপনি এখানে তাহলে গাড়ি কে চালাচ্ছে?? (অবাক হয়ে বলল মেঘলা)

কেনো গাড়ি ড্রাইভার চালাচ্ছে,, প্রেমে পড়ে কি সব বুদ্ধি গরু চড়াতে গেছে??(মজা করে বলল মেঘ)

মেঘলার নিজের উপর রাগ হচ্ছে ওনার সামনে আসলেই সব ভুলভাল কথা বলি শুধু,, তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে বলল।

কে প্রেমে পড়েছে।

কেনো তুমি।

মোটেও না।

তাই নাকি,, যাক ভাবলাম ফিরে এসে তোমাকে বিয়ে করবো, কিন্তু তা আর হলো না তুমি তো আর আমাকে ভালো বাসো না?? (মেঘ)

মেঘের কথা শুনে মেঘলা ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলো।

চলবে,,,,,?

(কেমল হয়েছে বলবেল কিন্ত😃😃)
(কেমন হয়েছে বলবেন কিন্তু,,একটু মাহির মতো বললাম আর কি 😊😊)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here