#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৫
,
,
,
,
সকাল থেকে সম্পূর্ন্য চৌধুরী বাড়ি সাজানো হচ্ছে কিন্তু সেদিকে খেয়াল নেই সুখের সে তো আনমনেই খুজে চলেছে আহিয়ান কে।আজ দুই দিন হলো আহিয়ানের দেখা পায়না ঘুম থেকে উঠার আগেই নাকি সে খেয়ে দেয়ে হস্পিটালের উদ্দেশ্য রওনা দেয় আর গভীর রাতে ফিরে আসে।কান্না পাচ্ছে সুখের চারিদিকে শূন্যতা যেনো তাকে ঘিরে ধরেছে।শুধু চাইছে একটাবার আহিয়ান আসুক তার ঠোঁটের কোনায় লেগে থাকা মিষ্টি হাসি দেখে প্রান জুরায় যাক তার গভীর চাহুনীতে আটকে যাক সে। এতো ছটফট করছে কেন তার হৃদয় জানেনা ঘরির দিকে তাকায় দেখে রাত পনে এগোরাটা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বেরিয়ে আসে ঘড় থেকে। রান্না ঘরে যায়ে দেখে হাজারো রকমের পদ রান্না করা পুরো ডাইনিং রুম ডেকোর করা কিন্তু লাইট নিভিয়ে রাখানোর জন্য দেখা যাচ্ছেনা।কিচেনে যেয়ে ফ্রীজ খুলতেই চোখে পড়ে কেক।হ্যা আজ আহিয়ানের জন্মদিন কেক টা বন্যা নিজের হাতে বানিয়েছে।ইচ্ছাটা অবশ্য সুখের ছিলো কিন্তু মামনি দ্বায়িত্ব টা দিয়েছিলো বন্যার কাধে।হবু স্ত্রী বলে কথা।দীর্ঘ একটা শ্বাস ফেলে কি মনে করে নিজেও একটা কেক বানায়ে ডেকোরেট করে নেয়।সাথে এক বাটি পায়েস ও বানায় নেয় এই সব করতে ৫০ বেজে যায়। কেক আর পায়েস টা সেখানে না রেখে নিজের সাথেই উপরে নিয়ে যায়।সে জানে এই কেক পায়েস আহিয়ান খাবেনা এ তো যানবেই না কিন্তু অশান্ত মন কে শান্ত করতেই তৈরি করা কেক টা আর পায়েস টা।নিজেকে সুন্দর একটা শাড়িতে সজ্জিত করে কেক টা টেবিলে রেখে টেবিলটা সুন্দর করে সাজিয়ে তার পাশেই পায়েস এর বাটিটাও রেখে দেয়।
কিছুক্ষনের মাঝেই বাহিরে আওয়াজ হলো প্রচন্ড সুখ বুঝে গেলো আহিয়ান এসেছে।সে প্রথমে ভাবলো যাবেনা কি দরকার মানুষ টা হয়তো তাকে এড়িয়ে যাইতে চাচ্ছে।কারন নীহারিকার মুখে এই কইদিন শুনেছে বন্যা আর তার মাঝের ঘনিষ্ঠতা বারছে।হয়ত মায়ের আশা পূরন করতে চায়।আলতো হাসলো।কিন্তু মস্তিষ্ক বুঝলেও বুঝলোনা অবাধ্য মন। ছোট ছোট কদম ফেলে বেরিয়ে এলো বাহিরে। একটা পিলার পিছনে দাড়িয়ে পড়লো এখান থেকে দেখা যাচ্ছে নিচের টা স্পষ্ট কিন্তু নিচ থেকে সহজে বুঝা যাবেনা।
আহিয়ান কে ঘিরে রেখেছে বাড়ির সবাই। তার পাশেই সুন্দর গোলাপি রঙের শাড়িতে দাঁড়িয়ে আছে বন্যা ফর্সা শরীরে অনেক মানিয়েছে মেয়েটা একদম অপুর্ব। দুইজন কে সাথে মানিয়েছে বেশ। বুকের বাম পাশটা হাহাকার করে উঠলো অজান্তেই বুকের বামপাশটা ফাকা হয়ে গেলো মানুষ টা তার না। তার নিজেস্ব বলতে কেউ নাই।সবাই আসে ঠিকি কিন্তু কিছু মহূর্তের জন্য তাকে নিজের সময় কাটানোর সঙ্গি করতে হয়তো তাকে হয়তো ভালোবাসা যায়না। ভাবতেই চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।সুখ এবার তাকালো আহিয়ানের দিকে।আজ ৩দিন পরে যেহেতু ১২ টা বেজে গেছে সেহেতু পরেরদিন বলা যায় । নিশ্বাস টা ভারি হয়ে এলো।দিন দিন মানুষ টার সৌন্দর্য যেনো বৃদ্ধি হচ্ছে।সাথে বৃদ্ধি হচ্ছে তার মনের অবাধ্য অনুভূতি গুলো।
কেক কাটার পালা আসতেই আহিয়ান চারিদিকে একবার তাকিয়ে উপরে তাকাতে নিলেই সুখ একদম নিজেকে আড়াল করে নিলো।কিছুক্ষন পরে তাকাতেই দেখলো আহিয়ানের হাতের উপরে বন্যার হাত।অজান্তেই ফুপিয়ে উঠতেই মুখে হাত চেপে ঘরে চলে এলো।রুমে এসে দরজা লাগিয়ে উপর হয়ে শুয়ে ফুপাতে লাগে।কান্না গুলো গলায় দলা বেধে আসছে তার।
কেক কাটার পরে বন্যা কেক খাওয়াতে নিলে আহিয়ান হাত ধরে নেই।নীহারিকা আর অভিরূপ কে জড়ায় ধরে।নীহারিকার কপালে চুমু খেয়ে উপরে উঠে গেলো।একটা খাবার অব্দি মুখে নিলোনা হঠাৎ মাঝ সিড়িতে থেমে যেয়ে বললো
—খেয়ে নিও মা আমি বাহির থেকে খেয়ে এসেছি।তোমার রান্না খাবার আমি সকালে খেয়ে নিবো।
বলেই আহিয়ান না দাঁড়িয়ে চলে গেলো উপরে।সুখ মুখ ধুয়ে কেবল রুমে প্রবেশ করেছে উদ্দেশ্য শাড়ি খুলে রাতের পোশাক পড়ে ঘুমাবে।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শাড়ির পিন খুলতে যাবে এমন সময় কোমড়ে ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেতেই কেপে উঠে সুখ।আৎকে উঠে সামনে তাকায়েই আয়নায় স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে আহিয়ান এর।আহিয়ানের ঠোঁট জোড়া সুখের গলায় ঘাড়ে স্পর্শ করছে অনবরত। সুখের শরীরে শিহরণ বয়ে যায়।
—আমাকে পাগল করার ধান্দা এটেছো সুখ পাখি।এইভাবে আমার সামনে না আসলে কি চলতোনা
আহিয়ানের স্লো ভয়েজে বলা কথা গুলো ঝড় তুলে দিলো সুখের সারা শরীর জুড়ে।
—কি করছেন ডাক্তার ছাড়ুন আমাকে।
—আমাকে পাগল করার আগে ভাবা উচিৎ ছিলো সুখ পাখি
—আমি কিভাবে পাগল করলাম আপনাকে
—কালো শাড়িতে সাজিয়ে মুখে বিন্দু বিন্দু পানির ফোটা যখন নাক বেয়ে গড়িয়ে তোমার কোমল ঠোঁট বেয়ে এই থুতনি ছুয়ে গলা স্পর্শ করে
আর কিছু বলার আগেই সুখ আহিয়ানের ঠোঁটের উপর হাত দিয়ে দেয়।নিশ্বাস এর গতি বেরে দ্বিগুন হয়ে গেছে তার।
আহিয়ান সুখের নরম হাতে ঠোঁট ছোয়ায়ে নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নেয় সুখের হাত আলতো করে পুনরায় ঠোঁট ছোয়ায় হালকা ছ্যাকা খাওয়া হাতটার উপরে পায়েস তৈরি করতে যেয়ে আচ লেগেছে
—কি দরকার ছিলো এতো কষ্ট করে আগুনের উত্তাপ সহ্য করার।পায়েস না বানালে কি হতোনা।
—আপনি কি করে জানলেন
—তা তোমার না জানলেও চলবে চলেন হাত পা পুরিয়ে তৈরি করা কেক টা কাটা যাক
—আপনি তো নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক এলার্ট।একবার নিচে খেয়েছেন পুনরায় খাবেন
—নিচের বানানো কেক কেটেছি গ্রহণ করিনি কারন সেটাতে আমার বউ এর হাতের ছোয়া ছিলোনা।
—মানে আপমি মামনির খাবার ও খান নাই
—হুস আর কোন কথা না চলো
আহিয়ান সুখকে নিয়ে যেতেই ডোয়ার থেকে একটা নাইফ বের করে কেটে নিলো কেক টা আহিয়ান নিজে সুখ কে প্রথমে খাওয়াই দিয়েই তার এটো কেক টা মুখ পুড়ে নিলো। তারপর পায়েস টাও তুলে আগে সুখ কে খাওয়াই দিয়ে সে পায়েস টা নিজে সম্পূর্ণ শেষ করে ফেললো
—প্রথমবার নাকি বউ এর হাতের রান্না খেলে উপহার দেওয়া লাগে তো আপনার কি উপহার চায় ম্যম ।
—আমার হবেন একান্তই আমার যাকে আমি চোখ বন্ধ করে বলতে পারবো সে আমার একান্তই আমার যার সকল মুগ্ধতা বিষাক্ততা সব কিছুই আমাকে ঘিরে হবে যে দিন শেষ এ আমাতেই তার প্রশান্তি খুজে নিবে।দিবেন নিজেকে উপহার হিসেবে আমাকে।
—দুইটা আহিয়ান দিলে কেমন হয়
—মানে
—প্যাকটিকালি করে দেখায় কি বলো বউ
আহিয়ানের বলার ধরণ দেখে সুখের বুঝতে বাকি রইলোনা আহিয়ান কি বলতে চাচ্ছে।আহিয়ানের বুকে আলতো করে আঘাত করে মিশে গেলো তার সাথে।আহিয়ান ও আকড়ে ধরলো শক্ত করে।দুইদিন পরে আজ শান্তির নিশ্বাস ফেললো সে।এই দুইদিন অপারেশন নতুন নতুন ক্লাস সাথে বন্যার ঝামেলায় সুখকে সময় দিতেই পারছিলোনা এদিকে সুখ কে দেখতে না পেয়ে আহিয়ানের ও কিছু ভালো লাগছিলোনা এদিকে ওর মা উঠে পড়ে লেগেছে বন্যাকে বিয়ে না করলে সে যা খুশি করতে পারে এক প্রকার এই দুইদিন ভিষন চাপে ছিলো কিন্তু সুখ সারাদিন কি করে না করে তার পাই টু পাই খবর দিতো কাজের মেয়েটা
সেই বলেছে আহিয়ানকে যে সুখ কেক বানাতে চাইলে নীহারিকা তাকে বানাতে না দিয়ে বন্যাকে দেয়।আর সেজন্যই আহিয়ান নীহারিকার বানানো খাবার গ্রহণ করে নাই।আবার সুখ যে আহিয়ানের জন্য কেক আর পায়েস বানিয়েছে সেটাও বলেছে যার কারণেই আহিয়ান দ্রুত এসেছে নয়তো আহিয়ানের আসতে আরও দেরি হতো।নিজের পেশেন্ট কে অন্য ডাক্তারের কাছে সিফট করে এসেছে।
আহিয়ান আলতো করে সুখ কে জরায় ধরে বিছানায় শুয়ে সুখের কপালে চুমু খেয়ে চোখ দুইটা বন্ধ করে নেয়।সুখ ও আহিয়ানের বুকেই ঘুমিয়ে পড়ে
চলবে!!#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৬
,
,
,
,
সকাল এর কিরণ চোখে পড়তেই চোখ মেলে তাকায় সুখ।মুচকি হাসি দিয়ে পাশে তাকাতেই আহিয়ান কে পাশে না পেয়ে উঠে পড়ে সুখ দ্রুত।ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখে ভোর পাচটা। সুখ ভাবে কালকের রাতের ঘটণা কি সবটাই তার কল্পনা বা স্বপ্ন ছিলো আহিয়ান তার মানে আসে নাই তার ঘড়ে।সুখ উঠে টেবিলের কাছে যেতেই দেখে টেবিল একদম পরিষ্কার সেখানে কেক বা পায়েস নেই এমনকি সেখানে ফুলের পাপড়ি মোমবাতি দিয়ে সাজানো হয়েছিলো সেটাও এখানে নেই। সুখ চমকায় এমন টা তো হওয়ার কথা ছিলো আয়নার সামনে দাড়ায়ে গলার দিকে তাকাতেও সস্তির নিশ্বাস নিলো এখনো কামড়ের দাগ আছে তাহলে এতো সকাল সকাল আহিয়ান গেলো কই।অনেক ভাবার পরে সুখ ভেবে নিলো আহিয়ান এর রুমে যাবে। একবার মনের শান্তির জন্য হলেও তাকে যেতে হবে।যে ভাবা সে কাজ। বাহিরে এসে আশেপাশটা ভালো করে দেখে নিলো কেউ আছে নাকি। কাউকে না পেয়ে আহিয়ানের রুমে এসে দেখে আহিয়ান নেই।মন টা খারাপ হয়ে যায়।ভাবে হয়ত ইমার্জেন্সি আসায় দ্রুত হস্পিটালের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছে।কি মনে করে রুমের ভিতরে ঢুকে পড়ে।
—বাহ ডাক্তার সাহেবের রুচি আছে বলতে হবে কি সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা।আমি মেয়ে হয়েও এতোটা গোছালো।না
আনমনেই কথাটা বলে হেসে উঠে সুখ
—কি ব্যাপার সুখ পাখি মিস করছিলে বুঝি।
হঠাৎ আহিয়ানের গলায় চমকে উঠে সুখ।
—আ আপনি
সুখ আর কিছু বলতে যেয়ে তার কথা আটকে যায়। তার চোখ যায় আহিয়ানের ভেজা বুকের দিকে মাত্র শাওয়ার নেওয়ায় বুকের কালো লোমে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে।কেপে উঠলো সুখ।অদ্ভুদ শিহরণ বেয়ে গেলো তার মাঝে।
আহিয়ান কে এগিয়ে আসতে নিলেই সুখ পিছনে পিছাতে শুরু করে। আহিয়ান এসে সুখের হাত ধরে কাবার্ডের সাথে লাগায় নেই।সুখ চোখ বন্ধ করে ফেলে।ঘন চোখের পাপড়ি অনবরত কেপেই চলছে।আহিয়ান মৃদু হাসে।সুখের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকেই বাম হাত বাড়িয়ে কাবার্ডের পাল্লা খুলে একটা প্যাকেট এসে তার হাতে ধরায় দেয়।
সুখ এবার চোখ খুলে। আহিয়ান সুখকে তাকায় থাকতে দেখে সুখের কপালে চুমু খাই
—ঝটপট তৈরি হয়ে আসো। বের হবো
—কই যাবো
ভ্রু কুচকে আহিয়ান কে প্রশ্ন করে।
—প্রি ম্যারেড হানিমুনে
দুষ্টু হেসে বলে আহিয়ান
সুখ এর চোখ কপালে উঠে যায়
—মানে
—৪ দিনের একটা টুর আছে সাজেক এর সব ফ্রেন্ড রা মিলে যাবো।অনেক দিন ধরে প্ল্যান করছিলো সময় না হওয়াই রাজি হয়নি বাট কাল রায়হান বলাই না করতে পারিনি
—রায়হান ভাইয়ারাও যাবে(এক্সাইটেড হয়ে)
—এতো খুশি হওয়ার কারণ
—ভাইয়ু যাবে।ভাইয়ুর সাথে ইঞ্জয় করতে।পারবো আপনি তো খাড়ুশ হয়ে গেছেন
—আচ্ছা তাইনাকি
আহিয়ান সুখের দিকে মুখ এগিয়ে আনতে নিলেই সুখ আহিয়ান কে আলতো ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে চলে যেতে নিলেও পিছনে ফিরে তাকায়।আহিয়ান কাবার্ডের সাথে হেলান দিয়ে সুখের মুখের দিকে তাকায় আছে।সুখের কি হয় সুখ নিজেও জানেনা সুখ দৌড়ে যেয়ে আহিয়ানের গলা জড়ায় ধরে।আহিয়ান যেনো সুখের এই কাজের জন্য প্রস্তুত ছিলো তাইতো সুখ জড়ায় ধরতেই সে সুখকে আরেকটু শক্ত করে জরায় ধরে উচু করে নিজের সমান করে নেয়
—Thank you Doctor thank you so much
আপনি নিজেও জানেন না।আপনি আমাকে ঠিক কি দিলেন আমার কতোদিনের ইচ্ছা ছিলো সাজেক যাওয়ার ট্রেনে উঠার কিন্তু ইয়াংম্যান কোন দিন পার্মিশান দিতোই না। যতোই ছাড় দিক না কেনো ঢাকা ছাড়ার পার্মিশান কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পার্মিশান দিতেন না।
—আমার বউ এর সকল আবদার পূরণ করার দ্বায়িত্ব আমার বুঝলেন ম্যাম এবার জান তৈরি হয়ে নেন।হাতে সময় খুব কম
—কিন্তু প্যাকিং করা তো হয়নি
—সব হয়ে গেছে ম্যাম আপনি শুধু তৈরি হয়ে আসেন আর ভুলেও আটা ময়দা ইউজ করবা না
—আমি করিও না
বলে ভেংগচি।কেটে সেখান থেকে চলে যায় আহিয়ান আনমনেই হাসে
—মেয়ে তুমি যতোই স্ট্রোং হও না কেন ভেংগচি না দিলে তোমাদের হয়না।
______
সুখ তৈরি বাহিরে আসতেই অবাক হয়ে যায়।চোখের পলক ফেলতেও যেনো ভুলে যায় সে। তার সামনেই আহিয়ান গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চোখ তার মোবাইলের দিকে।সাদা জিন্স সাদা টি শার্ট এর উপরে এশ কালার জ্যাকেট চোখ চশমা।পায়ে সাদা ব্লাক জুতা৷ কেউ বলতে এই যুবক এর বয়স ২৮ বছর এখনো সে ২৪ বছরের যুবোক ই মনে হয়।এই লুকে যে কেউ মেয়ে ফিদা হবে
সুখ এগিয়ে যেতে নিলেই বন্যা এসে আহিয়ানের সামনে দাঁড়ায় পড়ে।রাগে সুখের নাক মুখ লাল হয়ে যায়।
—ইহ যতোসব ন্যাকামো কেন রে ছেলের অভাব নাকি দুনিয়ায় যারে আমার ভালো লাগে তাদের ই অন্য কেউ নজর দেয়
—কারন তোমার চয়েজ বেস্ট হয় বনু
হঠাৎ পাশ থেকে রায়হানের আওয়াজ পেতেই চমকে উঠে সাথে সাথে লজ্জাও পায়
—বাহ বাহ আমার বনু দেখি লজ্জাও পাই।তো আমার ভাইকে ভালোবেসেই ফেললা
—ভালোবাসি কি না।জানিনা ভাইয়ু বাট হি ইজ যাস্ট বেস্ট।তার সকল ব্যাক্তিত্বর উপরেই বরাবর আমি মুগ্ধ।এই যে বন্যা তার কাছে ঘেষার চেষ্টা করলেও তিনি ঠিক দুরুত্ব মেন্টেন করছে।জিনিস টা মন ছুয়ে যায়।
—বাহ বাহ এতো পর্যবেক্ষন
_ভাইয়ু তুমিও না।
সুখকে লজ্জা পেতে দেখে রায়হান হেসে উঠে।সে হাসিটা বৃষ্টির চোখে যায়ে লাগে।মনটা খারাপ হয়ে যায় তার।
—কেনো আপনাকে অন্যকারো পাশে সহ্য করতে কষ্ট হয় রায়হান কেনো পারিনা নিজেকে বুঝাতে আপনি আমার নন। আর আপনাকে পাওয়া যেনো বামুন হয়ে চাঁদ কে পাওয়া।যা কোন দিন সম্ভব না
আপন মনেই কথা গুলো বলে চুপচাপ তাদের পাশ কেটে চলে যায় বৃষ্টি। বসে পড়ে পিছনের সিটে।রায়হান বৃষ্টির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে সেও সুখ কে নিয়ে এগিয়ে যায়।সুখ কে আসতে দেখে বন্যা যেয়ে ফ্রন্ট সিটে বসে পড়ে।
—পিছে যেয়ে বৃষ্টির সাথে বস ওই কি চায় না চায় আমরা।বুঝতে পারবোনা সামনে রায়হান বসবে।
—আরে আহি তুই আর সুখ সামনে বস আমি পিছনে বৃষ্টির সাথে বসছি।
আহিয়ান কিছু বলেনা চুপচাপ ড্রাইভিং সিটে বসে পড়ে।বন্যাও রাগ দেখায়ে বসে পড়ে। বৃষ্টি কে।মাঝখানে রেখে এক পাশে রায়হান অন্য পাশে বন্যা বসে পড়ে। সামনে বসে পড়ে আহিয়ান আর সুখ।
সারারাস্তা তেমন একটা কেউ কথা বলেনা কিছু মহূর্তে মাঝেই তারা স্টেশন এ পৌঁছে যায়
স্টেশনে পৌছাতেই আহিয়ান দের দিকে এগিয়ে আসে ৫ জন ছেলেমেয়ে তার মাঝে ২জন মেয়ে আর ৩ জন ছেলে ছিলো তারমধ্য একজন ছেলেকে দেখে সুখ অবাক হলো কারণ এই ছেলেটা দেখতে হুবাহু রায়হান আর আহিয়ান এর মতো।ওকে দেখেই বৃষ্টি যেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো।আহিয়ান আর রায়হান ও এগিয়ে যেয়ে তাকে জড়ায় ধরলো।শুধু মুখ বাকালো বৃষ্টি। সেটা সবার চোখে এড়ালেও রিহাব এর চোখে এড়ালোনা। বাকা হাসি ফুটে উঠলো তার ঠোঁটের কোনে
সুখ কে অবাক হতে দেখে আহিয়ান এগিয়ে এসে ওদের মাঝে নিয়ে এলো
—এটা হলো আমার ছোট ভাই অবশ্য বেশি না মাত্র ১ বছরের ছোট রিহাব চৌধুরী। আর রিহাব এ হলো ফুপির মেয়ে।
—ওয়াও একদম হুবাহু ফুপির মতোই পুতুল।আজ থেকে আমি তোমাকে পুতুল বলে ডাকবো।
সুখ অবাক হয়ে তাকালো এর মাঝেই বাকিরাও এগুয়ে এলো,,,,,,,
চলবে!!!