মনের মাধুরীতে তুমি পর্ব -১৩+১৪

#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৩
,

,

বৃষ্টি বাগানে রাখা দোলনাই বসে পড়ে।চোখ দুইটা তখন ও রায়হানের হাস্যজ্বল মুখটার দিকেই আবদ্ধ।আলাদা এক প্রশান্তি রয়েছে ওই মুখটাই যে মুখের দিকে তাকালেই বৃষ্টি ভুলে যায় নিজের অক্ষমতা।

—মাঝেমধ্যে খুব খারাপ লাগে জানেন প্রিয়।এই যে আপনার জন্য মনের কোনে রয়েছে এক আকাশ সমান অনুভূতি কিন্তু আমি পারিনা সেই অনুভূতি আপনার সামনে আনতে।পারিনা নিজেকে আপনার সামনে তুলে ধরতে কতো ইচ্ছা করে আপনার সাথে বসে গল্পের আসর জমাই।না বলা সব কথা বলি। কিন্তু আল্লাহ আমাকে সেই ক্ষমতাই দেয় না। অবশ্য এতে আমার কোন আফসোস কোন দিন ছিলোনা আফসোস একটাই আপনাকে না পাওয়ার।

আপন মনেই কথা বলে চোখ দুইটা নিচে নামাই নেই বৃষ্টি। চোখে জমেছে ভংগ হৃদয় এর আর্তনাদ। প্রিয় মানুষ কে হারানোর জ্বালা। হঠাৎ চোখ বেয়ে পানি গরাতেই বলিষ্ঠ এক হাত এসে অশ্রুটা নিজের হাতের মুঠোয় বন্দি করে ন্যায়।চমকায় বৃষ্টি সে এমনটা আশা করেনি।কিন্তু ব্যাক্তিকে দেখার জন্য মাথা তুলতেই কেপে উঠে হৃদয়। তার সামনেই এক গাল হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রায়হান।

—এই কাজল কালো চোখে অশ্রু বড্ড বেমানান নিরবতার রানী

রায়হানের এহেন ডাকে কেপে উঠে বৃষ্টির হৃদয়। “নিরবতার রানী” শব্দটা মস্তিষ্কতে গেথে যায়।আচ্ছা সে যদি কথা বলতে পারতো তাহলে কি এতো সুন্দর একটা নাম তার কপালে জুটতো উহু একদম নয়। এই নামের অধিকারীনি করতেই বুঝি আল্লাহ তার বাক শক্তি হরণ করেছে।তাহলে আর কিসের আফসোস।।

—আপনার পাশে বসার অনুমতি চাইছে এই পুরুষ। তার আবদার কি গ্রহন করা হবে নাকি এহেন আবদারের জনক্স তার গর্দান যাবে।

রায়হানের বলা কথা আর ভংগি দেখে হেসে ফেলে বৃষ্টি। নিস্তব্ধ সে হাসিতে আরও একবার নিজেকে হারায় রায়হান।

—নিস্তব্ধতাও বুঝি এতোটা সুন্দর হয়

রায়হানের বাক্যতে রায়হান নিজেই হতদম্ভ।সে ভাবেনি সেও কোন দিন এইভাবে প্রেমিক পুরুষের ন্যায় কথা বলবে।

বৃষ্টি মাথা নাড়িয়ে আর হাতের ইশারায় বুঝায় সে তার পাশে বসতে পারে। কিন্তু রায়হান বৃষ্টির সাইনলেংগুয়েজ বুঝতে না পেরে বোকার মতো চেয়ে থাকে বৃষ্টির দিকে।বৃষ্টি মন খারাপ করে।হঠাৎ তার মাথায় বুদ্ধি আসতেই সে রায়হানের ফোন এর দিকে ইশারা করে

—ফোন নিবা

বৃষ্টি মাথা ঝুকায় মানে হ্যা।রায়হান ও ফোনের লোক খুলে বৃষ্টির হাতে দেয়।বৃষ্টি নোট প্যাড এ যায়ে লিখে সে কি বলতে চায়। সম্পূর্ণ লিখার পরে সেটা পুনরায় রায়হানের হাতে দেয়।রায়হান সেটা নিজের হাতে নিয়ে পড়তে থাকে

—আপনার আবদার গ্রহন করা হলো আমি এতোটা নিষ্ঠুর না যে আপনার গর্দান নিবো।

—কোমল তুমি সেই পদ্মর মতো
সচ্ছ তোমার হাসি
আবেদনমী কন্যা তুমি
এক রাশ নিস্তব্ধতাই ঘেরা তোমার ছোয়া

বৃষ্টি হাসলো লজ্জাই পরিপূর্ণ ছিলো সে হাসি।আর সে হাসিটাই যেনো রায়হান এর কাল হয়ে দাড়ালো।
,
,
,
নিজের রুমের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে সুখ।তার পাশেই ধোয়া উঠা কফির মগ নিয়ে হেলান দিয়ে আছে আহিয়ান।অবশ্য কফিটা সুখের ছিলো।কিন্তু সুখ দুই সিপ নেওয়ার পরেই সেটা আহিয়ান নিজের দখলে করে নিয়েছে।সুখ চেয়েও কিছু বলতে পারেনি

—ডক্টর

—হুম

—আমি আম্মুকে নিয়ে এই বাসায় ফিরে আসতে চায়।

—কারণ(আহিয়ানের স্বাভাবিক প্রশ্ন)

আহিয়ান স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন করলেও সুখ স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারেনা। কেন আহিয়ান শুধু কারণ জিজ্ঞেস করলো কেন বললোনা কোথাও যাওয়া হবেনা তোমার ওই বাড়িতেই থাকবে তুমি

—কতোদিন আর অন্যের দয়া

সাথে সাথে বিকট আওয়াজ হলো। আপনমনেই সুখের চোখ বন্ধ হয়ে এলো।কেপে না উঠলেও অতিরিক্ত আওয়াজ তার মস্তিষ্ক মানতে না পেরে আখি জোড়া বন্ধ হয়ে এলো।কিন্তু এতে বিন্দু মাত্র প্রভাব ফেললোনা আহিয়ান এর উপর। সে এখনো স্বাভাবিক আর গম্ভির।কেউ বলতে পারবেনা এই ছেলেটা এই মহূর্তে কফির মগ নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে দেওয়ালে ছুড়ে মেরেছে যার প্রমান দেওয়ালে লেগে থাকা কফি আর ফ্লোরে কফির কয়েক শো টুকরা।মগের টুকরো দেখেই সুখের গলা শুকিয়ে এলো।মগের জায়গাই নিজেকে আবিষ্কার করতেই কেপে উঠলো

—কি যেনো বলছিলে।

সুখ আর কি বলবে তার ইচ্ছা করছে এই মহূর্তে ব্যালকনি থেকে লাফ দিয়ে এই কোন বাঘের খাচায় বন্ধ হলো যার সামনে বাঘিনী তো দূর বিড়াল ছানাও নয় সে।কই এর আগে তো কাউকে এতোটা ভয় পায়নি সে ভয় জিনিসটা তার মাঝে বাকী মেয়েদের তুলনায় অনেক কম। নিজের সুরক্ষা সে নিজেই করতে সক্ষম তাহলে এই মানুষ টার সামনে এলে কেন তার সকল সাহস হারায় যায়।কেন তার গর্জনের সামনে সে কিছু বলতে পারেনা পালটা ধমক দেওয়া তার জন্য ব্যাপার না তাহলে কেনো এই অভ্যাস।

সুখ কে এক হাত দিয়ে প্যাচায় নিলো আহিয়ান।

—এতো ভেবে লাভ নেই তোমার।সবার সামনে বাঘিনী হলেও আমার সামনে তোমার সব তেজ হারায় যাবে। এই বুকেই তোমার ঠায় নিতে হবে সব ভয় থেকে নিস্তার পেতে।আমিতেই তোমার তেজ আবার আমিইতেই তেজহীন নরম তুলা।লাজুকলতা ঠিক সেই লজ্জাবতী গাছের ন্যায়। আমার ছোয়া সে মুছড়ে গেলেও অন্যকেউ ছোয়ার চেষ্টা করলেও তার হাতে শুল ফুটানোর ন্যায় ধারালো।

—————

সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত ঘনিয়ে এলো সুখের বাড়িতে আসার নাম নেই। এদিকে আহিয়ান সুখ অভিরুপ কেউ ফোন ও তুলছেনা রায়হান ও বিকালের দিকে তার গুরুত্বপূর্ণ কাজে বেরিয়েছে।এদিকে নীহারিকার চিন্তাই অস্থির অবস্থা।এমন সময় বাসায় প্রবেশ করে অভিরুপ তাকে দেখেই ছুটে যায় নীহারিকা তার কাছে

—রুপ দেখোনা সুখ সে দুপুরে বেরিয়েছে এখনো আসার নাম নেই একটু খুজে দেখোনা কই আছে মেয়েটা।আমার না চিন্তা হচ্ছে ভিষন

—বৃষ্টি আর বন্যা এসেছে তুমি ওদের খেয়াল রাখো সুখ মাকে এই বাসায় আমার দ্বায়িত্ব নিয়ে এনেছিলাম তার খোজ আমি রাখবো তার ব্যাপারে তোমার ভাবতে হবেনা

শান্ত স্বরে কথাটা বলে উঠে অভিরুপ নীহারিকার মুখটা ছোট হয়ে যায়

—এইভাবে কথা বলছো কেন সুখ কি আমার কেউ না

—তোমার কেউ হলে নিশ্চয় মেয়েটাকে তার রুম থেকে বের করা হতোনা ওই ঘড় টা আমার বোনের ছিলো যেটা আমি নিজ হাতে দাঁড়িয়ে বানিয়েছিলাম কিন্তু তুমি বন্যা আর বৃষ্টি কে থাকতে দিতে আমি কিছু বলতাম না কিন্তু সুখ আসার পরে তুমি কোন হিসেবে তাকে তার ঘড় থেকে বের হতে বললা এমনকি ওই নোংরা ঘড় আমার মামনি একা পরিষ্কার করলো একটা বার খোজ নিলানা সে রাতে খেয়েছে কি না।যদি আমি না যেতাম তাহলে ভাবতে পারছো তার অবস্থা আরও বেগতিক হতে পারতো।বাদ দেও সে যেখানে আছে ভালো আছে।

কথাটা বলেই অভিরুপ সেখান থেকে চলে যায়।বন্যা সব শুনে। কিন্তু তার মধ্যে কোন ভাবাবেগ দেখা যায়না সে তো আহিয়ান এর পথ চেয়ে আছে।কিন্তু তার খোজ এ নেয়

————

—আপনি বাসায় যাবেন না

আহিয়ান সোফায় পায়ের উপর পা তুলে টিভি দেখছিলো তখন ই রান্না ঘড় থেকে সুখ চিল্লিয়ে বলে উঠে।আহিয়ান হাসে টিভি চালু রেখেই কিচেন এর দিকে যায়।কোমড়ে ওর্না বেধে রান্না করতে দেখে আপন মনেই হাসে আহিয়ান।সুখ কে পিছন থেকে জড়ায় ধরে গলায় ঠোঁট ছোয়ায়।কেপে উঠে সুখ

—উহু ২ দিনের হস্পিটাল থেকে ছুটি পেয়েছি। এই দুইদিন জমপেশ সংসার করবো বুঝলে বউ

সুখের ঘাম ছুটার জোগার। নিজেকে নিজেই দোষ দিচ্ছে কেন আসতে গেছিলো সে এই বাসায়।আর কেনোই বা ডাক্তার হুট করে এমন পাগলামী করছে।

চলবে!!!#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৪
,
,
,
,
সত্যি সত্যি আহিয়ান ২ দিন পরেই সুখ কে নিয়ে বাসায় ফিরলো।নীহারিকা বেগমের জানে পানি ফিরে এলো যেনো।এতোদিনে নিজের ভিতরে অস্থিরতা বিরাজ করছিলো।কিন্তু আহিয়ান কে সুখের পাশে দেখে অবাক হলো একবার ভাবলো জিজ্ঞেস করবে কিন্তু পরে নিজের ইচ্ছা কে দমিয়ে দিলো।এদিকে বন্যা নিজের মনেই রাগে ফুসছে কোন মতেই সহ্য করতে পারচ্ছেনা আহিয়ানের পাশে সুখ কে।

—আহি তুমি কই ছিলা দুই দিন

—সে কৈফিয়ত তোমাকে দেওয়ার কারণ

অপমানে থমথমে হয়ে গেলো বন্যার মুখ।সুখের কেন যেনো হাসি পেলো।আহিয়ানের এমন উত্তর এ।বন্যা রাগে গজগজ করতে করতে বলে উঠলো

—আমি তোমার বউ এই টুকু জানার অধিকার নিশ্চয় আমার আছে

—ভুল। ইউ আর নোট মাই ওয়াইফ খালামনি আর মা চায় আমাদের বিয়ে হোক। কিন্তু আমি হ্যা বলিনি তো এই বিষয় নিয়ে মাতামাতি করার কারণ নেই

—আহি তুই এইভাবে কথা বলছিস কেন বন্যার সাথে।সে ভুল তো কিছু বলেনি আজ না হোক কাল ওই ই তোর বউ হবে

—যে ছেলে কোন দিন নিজের পছন্দ ছাড়া এক ধাপ এগোয় নি সে অন্যকারো পছন্দে বিয়ে করবে ভাবলে কিভাবে তুমি

—তুই যেটা চায়চ্ছিস সেটা সম্ভব না

—সম্ভব জিনিস কে পেতে আহিয়ান এর মজা লাগেনা।আহিয়ানের তো অসম্ভব কাজ করতেই তৃপ্তি পাই।আর আহিয়ান একবার যেটা ভেবে নেই সেটা সম্ভব না করা অব্দি দম নেয় না। তোনার ছেলে আমি। বিষয় টা নিশ্চয় তুমি জানো

নীহারিকা বেগম আর কিছু বললেন না সেখান থেকে চলে গেলেন।

—আমার জন্য এক কাপ কফি নিয়ে আমার রুমে আসবা ১০ মিনিটের মধ্যে এক মিনিট এদিক ওদিক হলে কি করতে পারি আই হোপ তোমার জানা হয়ে গেছে

সুখের গলা শুকিয়ে এলো।এই দুইদিনের অত্যাচারে এটা তো বুঝে গেছে সুখ।লোকটা নিজেকে যতোটা নরমাল দেখাক আসলে সে নরমাল না।শান্ত মাথায় খুন করতেও তার মনে হয় ভাবা লাগবেনা।

আহিয়ান যেতেই সুখ কিচেনের দিকে পা বারাতে।নেই এমন সময় বন্যা পিছন থেকে বলে উঠলো

—আহির থেকে দূরে থাকো সে আমার। তার উপরে শুধু আমার অধিকার।সে আমার ভালোবাসা।সবাই চায় আহি আর আমি এক হয়। কিসের জন্য আমাদের মাঝে আসতে চায়ছো। সুদর্শন প্লাস বড়লোক ছেলে দেখে।তোমাদের মতো লো ক্লাস,,,,,

আর কিছু বলার আগেই বন্যা নিজের গালে তিব্র আঘাত পেয়ে চমকে উঠলো।সুখ যে এইভাবে তাকে থাপ্পড় মেরে বসবে সে ভাবেনি।

—কিহ প্রথম দিন রুম ছেড়ে দিয়েছি বলে কি মনে করেছেন আমি ওই সো ক্লোড চুপচাপ মাথা নিচু করে সব হজম করে ফেলে ফ্যাচফ্যাচ করে কাদার মেয়ে।যে বয়সে আপনি মায়ের আচলে বাবার আদরে বড় আবদারে ভালোবাসায় বড় হয়েছেন সে বয়স থেকে নিজেকে সামলাতে শিক্ষেছি একা হাতে।কিভাবে কখন কেমন ব্যাবহার কার সাথে করতে হয় তা আমার জানা।আর কি বললেন সুদর্শন প্লাস বড়লোক ছেলে দেখে আমার আমি উনাকে পেতে চায়।আপনার জানার জন্য বলে দি সুখ রহমানের কারো টাকার ধার ধারার প্রয়োজন নেই।

কথা গুলো বলেই সেখান থেকে চলে যায় সুখ।বন্যা রাগে গজগজ করতে করতে তার যাওয়ার দিকে তাকায় থাকে

—শেষ করে দিবো তোকে।আমার শরীরে হাত তোলার পরিমান হারে হারে টের পাবি তুই।আমার আহির দিকে যে চোখ দুইটা দিয়ে তাকিয়েছিস সে দুইটাই আগে নষ্ট করবো।

কথা গুলো বলে সেখান থেকে চলে যায় বন্যা।মাথায় তার ভয়ংকর পরিকল্পনা চলছে।

কফির কাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সুখ।কিন্তু সেদিকে আহিয়ানের কোন ধ্যান নাই

—আর কতোক্ষন এই ভাবে দাঁড়ায় থাকবো আমাকে বলতে পারেন এবার দিয়ে দুইবার কফি গরম করে আনলাম। আজব লোক

সুখের কোন কথার জবাব নাই। এবার সুখের ধৈর্যর বাধ ভাংগলো।কিছু বলতে যাবে তার আগেই মনে পড়লো কালকের ঘটনা।আহিয়ান গোসল করে বের হতেই সুখ কে হুকুম দেয় কফির জন্য।সুখ ও বিরক্ত হয়ে যায় কফি বানাতে।কিন্তু আহিয়ান সেটা না খেয়ে সুখ কে বলে দুইটা সিপ খেয়ে তারপর দিতে সুখ কারন জিজ্ঞেস করতেই বলে

“যদি বিষ টিষ মিশিয়ে দেও অকালে মরার শখ জাগেনি আমার এখনো নাতি নাতনির মুখ দেখা বাকি আছে”

আহিয়ানের এহেন বাক্যতে হেসে দিয়েছিলো সুখ।মানুষ ছেলে মেয়ের আশা করে কিন্তু এই লোক ডাইরেক্ট নাতি নাতনির চিন্তা করে।

সুখ হেসে কফির মগে চুমুক দিয়ে আহিয়ানের দিকে এগিয়ে দেয়। এবার আহিয়ান সেটা নিয়ে নিজে পান করতে থাকে।সুখের কেনো যেনো আহিয়ান এর এই রকম পাগলামো ভালো লাগে।

কিছুক্ষন আহিয়ান এর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে সুখ।হঠাৎ বন্যার কথা গুলো মনে পড়ে যায় তার।আসলেই কি সে আহিয়ানের সুদর্শন চেহারায় আকৃষ্ট।আহিয়ান যদি সুন্দর না হতো তাহলে কি এই ভালো লাগা কাজ করতোনা তার। আচ্ছা আহিয়ানের বিয়ে তো বন্যার সাথে ঠিক করা।তাদের কি বিয়ে হয়ে যাবে।কিন্তু সে তো আহিয়ানের স্ত্রী

—কি ভাবছিস এগুলা সুখ। তোর আর আহিয়ানের বিয়ে একটা এক্সিডেন্ট।কিন্তু তার আর আমার মাঝে যা ছিলো এই ২দিন তার কেয়ার তার বলা কথা গুলো সেগুলা কি একটা ছেলে আর মেয়ের একান্তে থাকার কারন নাকি বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনের মায়া।(মনে মনে)

—দাঁড়ায় দাঁড়ায় ভাবতে যায়ে নিজের পা দুইটাকে কষ্ট দেওয়ার কোন মানে হয়না মিসেস চৌধুরী। বসে বসে ভাবুন

—ভালোবাসেন আমাকে

হঠাৎ করা প্রশ্নের সুখ নিজেই চমকে উঠে।এটা তো সে বলতে চায়নি।তাহলে কেনো।বললো সে। সুখ সেখান থেকে যেতে নিলেই আহিয়ান সুখের হাত ধরে নিজের উপরে ফেলে।এক হাত দিয়ে ফাইল গুলো দূরে ছুড়ে ফেলে।সুখ কে নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে

—ভালোবাসি শব্দটার ওজন অনেক ভারি আর সেই ভার সহ্য করার ক্ষমতা তোমার হয়নি যেদিন হবে সেদিন পুনরায় এই প্রশ্ন করো আমি উত্তর দিতে প্রস্তুত।

—ছাড়ুন আমাকে।কেউ এসে দেখে ফেললে

—দেখুক
—আরে কি হচ্ছে ছাড়ুন
—আমার বউ আমার ঘড় তাকে ধরেছি আমি।কার কি এসে যায়
—আমাদের বিয়ে হয়েছে সেটা কেউ জানেনা
—জানায় দি তাহলে
—মানে(অবাক হয়ে)
—বেশি কিছু না ছোট একটা সুখ নিয়ে এলেই সবাই জেনে যাবে
—আগে শুধু শুনতাম ডাক্তার রা নির্লজ্জ হয় আজ দেখেও নিলাম
—কিছু না করেই নির্লজ্জর ট্যাগ তাহলে কিছু করেই দেখাই কি বলো(চোখ টিপ দিয়ে)

সুখ কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহিয়ানের ঠোঁট আকড়ে ধোরে সুখের ঠোঁট জোড়া।কেপে উঠে সুখ প্রথমে ছাড়াতে চাইলেও পরে নিজেও আহিয়ানের চুল আকড়ে ধরে।আহিয়ান যেনো এটাই চাচ্ছিলো শক্ত করে সুখ কে জড়ায় ধরে ঘুরে যায় সুখ কে নিচে ফেলে সুখের উপরে উঠে সুখ এর ঠোঁট দুইটাই অনবরত কিস করতে থাকে এক হাত দিয়ে চাদর টাকে নিজেদের উপর দিয়ে ঢেকে দেয়।সুখ যেনো কিছুই টের পাচ্ছেনা সে চোখ বন্ধ করে আহিয়ানের ঠোঁটের ছোয়া উপভোগ করছে।
আহিয়ান এক পর্যায়ে এসে সুখের ঠোঁট ছেড়ে গলায় চুমু দিতে দিতে শুরু করে।সুখ খামচে ধরে আহিয়ানের শার্ট।আহিয়ান সুখের গলাতে কামড় দিতেই সুখ ব্যাথায় আর্তনাদ করে উঠে তবুও ছাড়ে না আহিয়ান কে আহিয়ান সুখের গলাতে মুখ ডুবিয়ে শুয়ে পড়ে

—বসায় দিলাম আমার নামের সীলমোহর। এখন ছেড়ে দিলাম কিন্তু একবার নিজের বউ হিসেবে সবার সামনে তুলে নিয়ে আসবো সেদিন তুমি চাইলেও থামবোনা আজ শুধু গলায় সিল বসিয়েছি সেদিন তোমার পুরোটাই জুরে শুধু থাকবে আমার চিহ্ন আমিতেই সেদিন শেষ হবে।

আহিয়ানের নেশাক্ত আওয়াজে সুখ আপন মনেই কেদে দেয়।এই অশ্রুতে কষ্ট ছিলোনা বরং কারো মনের মাধুরিতে মিশে যাওয়ার সূচনা ছিলো

চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here