মনের মাধুরীতে তুমি পর্ব -২১+২২

#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৯
,
,
,
,
—কলটা ধর। বেচারাকে কতো জ্বালাবি(রাফি)
—তোকে তো আর জ্বালাছি না আর তোর এতো লাগলে তুই ই কথা বলে নে

রাফির দিকে ফোন টা ছুড়ে মেরে চলে যেতে নিলেই রাফি রিসিকার হাত ধরে নেই

—আরে ওই ধানিলংকা সারাদিন এই।যে মুখ দিয়ে আগুন ঝড়াস আমার জায়গায় অন্য কেউ সহ্য করবে নাকি রে।
(মুচকি হেসে)

—বলিনি কাউকে আমার রাগ আগুন সহ্য করতে (অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে)হাত ছাড় আমার(কড়া গলায়)

—ছাড়তেও বলছিস আবার ছাড়ানোর চেষ্টাও করছিস না কেন রে। (রিসিকাকে নিজের কাছে টেনে)

—তোর ওই গন্ডারের মতো হাত থেকে তোর ইচ্ছা ছাড়া তো রেহাই পাবোনা তাই অযথা চেষ্টা করে লাভ নাই সেজন্যই নিজের এনার্জি ওয়েস্ট করছিনা

—আচ্ছা তাইনাকি (কথাটা বলেই হাহা করে হেসে দেয় রাফি।কারন রাফি আলতো করেই রিসিকার হাত ধরেছে।রিসিকা চাইলেই সেকেন্ডে হাত ছাড়াতে সক্ষম)

—হাত ছাড়

—ছাড়ে দিবো

রাফির গলায় কিছু একটা ছিলো রিসিলা সহ্য করতে পারলোনা নিজেই ছাড়িয়ে নিলো হাত

—ছাড়িয়ে নিলি রে রিসু

কেপে উঠলো রিসিকা। রিসিকা রাফির মুখে প্রথম বার রিসু বলেছিলো যখন রাফি তাকে প্রথমবার সারা ভার্সিটির সামনে প্রোপজ করেছিলো।তারপর এই নাম সে শুনে নি রাফির মুখে।

রিসিকার ধ্যান ভাংগলো রাফির হাসির আওয়াজে

—কি রে কি ভাবছিস মজা করছিলাম চল

—হুম যেমন সেদিন ভার্সিটির সবার সামনে করেছিলি সেভাবেই তাই না

—হে হে সেভাবেই চল।সবাই খাবারের জন্য ডাকছে।

রিসিকা কিছু না বলে চলে গেলো সেখান থেকে।রাফি আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলো সে হাসিতে কি ছিলো জানা নাই কেপে উঠলো হয়তো আকাশটাও। বুঝলো এক আকাশ সমান কষ্ট নিয়েই ছেলেটা হাসছে। ঠোঁটের কোনে হাসিটা ফুটাতেও আজকাল দ্বিগুন কষ্ট পোহাতে হয় দ্বিগুন জালা ধরে বুকের বাম পাশটাই কিন্তু হাসতে যে হবেই। হাসিটা সবার জন্য অশ্রু টা নিজের জন্যই বরাদ্দ রেখেছে।রাফি।

———

আহিয়ান আর সুখ বাগান বাড়িতে এসেই নিজ নিজ রুমে যেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।প্রচুর ক্লান্ত দুইজনের ট্রাভেল করে।কেউ আর তাদের এখন ই কিছু জিজ্ঞেস করলোনা।

বারান্দায় দাঁড়িয়ে রিহাব আর বৃষ্টি কথা বলছিলো।সবার মধ্যে শুধু আহিয়ান আর রিহাব ই বুঝে সাইন ল্যাংগুয়েজ। সেজন্য বৃষ্টি সাচ্ছন্দ্য তাদের সাথে কথা বলতে পারে

—আমার বোনের মন খারাপ কেন

—উহু মন খারাপ না শুধু ক্লান্ত

—আমারে শিখাতে এসেছিস কোন টা তোর ক্লান্তি আর কোনটা তোর মন খারাপ

—আরবে ভাইয়া সত্যি কিছু হয়নি তুমি বেশি ভাবছো

—ভাইয়ুকে বলা যাবেনা

—তুমি তো জানো আমি তোমার কাছে কিছু লুকায়না তাহলে যে

—আমি তোর চোখ পড়তে পারি বোনু

বৃষ্টি কিছুনা বলে নিচের দিকে তাকায় থাকে।বুকের বামপাশটা ব্যাথা করছে।চোখ বেয়ে মনের আর্তনাদ বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে কিন্তু তা কি সম্ভব।উহু সম্ভব না

—আমার ভিষন আইস্ক্রিম খাইতে মন চাচ্ছে খাওয়াও না

—আচ্ছা চল দেখি কোন দোকান আছে কি না

বৃষ্টি হেসে মাথা দুলাই।রিহাব বোনের মাথার ঘোমটা ঠিক করে তার হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে হাটা ধরে।ভিষন ভালোবাসে সে তার এই বোন কে ছোট বেলাই খুব সখ ছিলো তার একটা বোনের বন্যা যখন হয়েছিলো সে আগেই বলেছিলো এটা আমার বউ।আর যখন বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিলো রিহাব পুরো বাড়ি মাথায় তুলেছিলো

“আমার বোনু আসবে আমার পুতুল। আমার পুতুলকে আমি পুতুল এর মতো সাজিয়ে রাখবো আমার বাসায়।”

—তোমরা কই যাচ্ছো(ঘুম জোড়ানো কন্ঠে বলে উঠে সুখ)

—আরে ডোল তুমি উঠে গেছো(রিহাব)

—হুম

—বোনু আইস্ক্রিম খাবে তাই তাকে সেখানেই নিয়ে যাচ্ছিলাম যাবে তুমি

—হ্যা হ্যা যাবো

রিহাব হাসে। দুইবোন কে নিয়ে রওনা দেয় আইস্ক্রিম নিতে।।।

রিহাব সুখ বৃষ্টি আইস্ক্রিম খেতে খেতে ফিরছিলো এমন সময় তাদের সামনে এসে উপস্থিত হয় আহিয়ান সবার সামনেই সুখের গালে।থাপ্পড় বসাই দেয় সুখ সহ সবাই অবাক হয়

—আরে ভাই কি করছিস মারছিস কেন ওকে

—তোরা বাসায় যা

—আরে কিন্তু

—তোদের বাসায় যেতে বলেছি আমি

আহিয়ানের চিৎকারে বৃষ্টি আর সুখ দুইজনেই ভয়ে রিহাব এর জ্যাকেট খামচে ধরে।

—ভাই শান্ত হো সুখ আর বোনু ভয় পাচ্ছে

—ওর সব ভয় আজ আমি বের করবো।যা তোরা

—তুই রেগে আছিস। আর তুই নিজেও জানিস রেগে গেলে তুই নিজের মাঝে থাকিস না।

—তার এই এবেলিটি আছে আমার রাগ সহ্য করার আর না থাকলে আজ হয়ে যাবে যা তুই

আহিয়ান নিজেকে শান্ত অরে বলে উঠে।রিহাব বৃষ্টি কে নিয়ে চলে যায়।কারন সে জানে আহিয়ান এর রাগ কতোটা ভয়ংকর। এখন যদি সে না যেয়ে ঠায় দাঁড়ায় থাকতো ফলটা আরও খারাপ হতো। সবাই জানে রিহাব রাগী কিন্তু শুধি ওরা তিন ভাই জানে আসলে রাগীটা কে।

—কই গেছিলি তুই

—আ আইস্ক্রিম

—তোর একটুও ধারণা আছে ঠিক কখন থেকে খুজছি আমি তোকে কার পার্মিশান নিয়ে তুই গেছিস এন্সার মি।ডেম ইট

—ভাইয়া

সুখ আর কিছু বলতে পারলোনা তার আগেই সুখের হাত ধরে আহিয়ান তাকে টেনে নিয়ে আইস্ক্রিম পার্লারের সামনে আনে বসায় দিলো।সুখ এই প্রথম আহিয়ানের এমন ভয়ংকর চোখ দেখে কেপে উঠলো
আহিয়ান নিজে যায়ে পার্লারের সব আইস্ক্রিম নিয়ে এসে সুখের সামনে রাখলো।

—সব গুলো ফিনিশ করবি এখন এই মহূর্তে এক ফোটা যদি থাকে আই সোয়ার জ্যন্ত পুতে ফেলবো

সুখ বুঝে গেলো পাগল ক্ষেপেছে।এই মহূর্তে মুখ খুলা মানে নিজের যম নিজে ডেকে আনা।সুখ কাপা কাপা হাতে কোন রকম ১০ শেষ করে আর খেতে।পারছেনা একেতো ঠান্ডা তার উপর ১০বাটি খেয়েই তার গলা ধরে এসেছে নাক।লাল হয়ে চুলকানোও শুরু করেছে।

—ফিনিস ইট

—ডাক্তার

—ডোন্ট ইউ ডেয়ার টু কল মি

সুখ বুঝলো এই মহূর্তে কথায় কাজ হবেনা তাই মুখে হাত দিয়ে দৌড়ে আইস্ক্রিম পার্লারের পিছনে চলে গেলো।যেনো তার বমি আসছে।তার পিছন পিছন আহিয়ান ও আসলো।সুখ আশেপাশের দিকটা দেখে নিলো কাউকে না পেয়ে জড়ায় ধরলো সুখ আহিয়ান কে

—সরি ডাক্তার আমি বুঝিনি আপনি এতো তাড়াতাড়ি উঠে পড়বেন মাফ করে দিন আমাকে। আর কখনো এমন টা হবেনা।

আহিয়ান ও জড়ায় ধরলো সুখকে প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেছিলো আহিয়ান।

—আপনি এতো ভয় পেয়ে আছেন কেনো ডাক্তার

আহিয়ান চুপ করে।সুখ কে বুকের জড়ায় রাখলো

—কি করে বলি সুখ পাখি ভয়ংকর এক স্বপ্নে তোমার।ডাক্তার কে এই।প্রথম এতোটা ভয় পাওয়াই দিয়েছে।তোমাকে হারানো যে সম্ভব না তোমার জন্যই তোমার ডাক্তার স্বাভাবিক।তোমার কিছু হয়ে গেলে।
(মনে মনে)

আহিয়ান চোখ বন্ধ করতেই স্বপ্নের দৃশ্য টা পুনরায় তার চোখের পর্দায় ভেসে উঠলো

সুখ অনায়েসে একটা উচু পাহাড়ের কিনারায় হাটছে। আহিয়ান দূর থেকে বার বার মানা করছে বলছে তাকে নেমে আসতে কিন্তু সুখ নামছেনা আর আহিয়ান ও উপরে উঠতে পারছেনা হঠাৎ ই এক সাদা মেঘ এসে সুখ কে ঢেকে নিয়ে গায়েব হয়ে গেলো। তারপর কালো।মেঘ থেকে বেরিয়ে এলো সুখ সাদা শাড়ি পড়ে শুভ্র রংগে নিজেকে রাঙ্গিয়ে।আহিয়ান অবাক হয়ে এগিয়ে যেতে নিলেই সুখ পিছাতে পিছাতে পাহাড় থেকে পড়ে যায়

স্বপ্ন শেষ হতেই আহিয়ান দ্রুত উঠে পড়ে আর সুখের রুমে যেয়ে খুযে পুরা বাসা খুজে তাকে না।পেয়ে রাস্তাই বের হয়ে যায় এক।পর্যায়ে সুখ কে দেখেই থাপ্পড় বসায় দেয় বাকীটা তো আপনারা জানেন ই।।

চলবে

নেটওয়ার্ক মারা গেছে চালুই হয়না অসহ্য লিখে রেখেছি কাল কিন্তু বেট ওয়ার্কের জন্য পোস্ট ই করতে পারছিলাম না#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২০
,
,
,
,
সবাই তৈরি হয়ে নিচ্ছে।আজ সবাই বের হবে সিলেট ঘুরতে।চা বাগান, জাফলং, রাতারগুল জলাবন, হাকালুকি হাওর, লালাখাল, ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি, তামাবিল, পাহাড়, ঝর্ণা সব মিলিয়ে নানা বৈচিত্রের সম্ভার এই সিলেট দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই প্রাচীন জনপদ বনজ, খনিজ ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত।

আর সেই সৌন্দর্য তেই নিজেকে বিলীন করতে যাচ্ছে আহিয়ান সুখ রায়হান বৃষ্টি রিহাব বন্যা রিসিকা রাফি আরিফ আয়াত।৫টা জোড়া আদৌ কি তারা জোড়া কি না জানা না থাকলেও আজকের প্রকৃতি তাদের হয়তো কোন ভাবে মিলিয়ে দিবে।

ছেলেরা তৈরি হয়ে নিলেও এখনো বাহিরে বের হয়নি মেয়েরা আহিয়ান বিরক্ত হয়ে গেছে অপেক্ষা করতে করতে।এদিকে রিহাব ইতিমধ্যে রেগে সেখান থেকে চলে যেতেও নিয়েছে দুইবার রায়হান আর রাফি মিলে আটকায় রেখেছে তাকে

—ধুর বুঝিনা এরা সে ভোর ৬টা থেকে কি সাজা সাজছে যে এখনো এদের হয়নি বুঝে পেলাম না যতো,,,,

রিহাব আর কিছু বলতে পারলোনা তার আগেই তার চোখ আটকে গেলো সামনে দিয়ে আসা অপরুপা এক রমনীর দিকে।বাকীদের ও হাল নাজেহাল তা তাদের মুখ দেখেই স্পষ্ট।

—আরেকটু আটা ময়দা ছিলোনা ম্যাডাম।

রাফির ব্যাঙ্গাত্মক কথাই হেসে উঠলো সবাই।

—এগুলো কে আটা ময়দা বলে না এগুলোকে মেকআপ বলে

—তা ম্যডাম এই সব মে,,,,,,ক আপ করে আপনি কি বিয়েতে যাচ্ছেন

রিসিকা কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহিয়ান সুখ কে নিজের কাছে টেনে এনে পকেট থেকে রুমাল বের করে সুখের ঠোঁট জোড়ায় লেপ্টে থাকা হালকা গোলাপি লিপস্টিক টা মুছে দিলো।সবার মুখ হা হয়ে গেলো এদিকে সুখ লজ্জায় মাথা নুইয়ে নিলো।এই লোকের সান্নিধ্যেতে এসে কেমন লজ্জাবতী গাছের ন্যায় নুইয়ে পড়ে কেনো এমন হয় বুঝেনা সে।

—আহি তুমি

বন্যা কিছু বলতে যাবে তার আগেই তার চোখ পড়ে রিহাবের রক্তিম চোখে।বন্যা আর কিছু বলার সাহস পায়না।

—কেউ কোন কথা বলবেনা এমনিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

রিহাবের কথায় সবাই গাড়ির দিকে এগিয়ে গেলো।

—আমরা কই যাচ্ছি

সুখ এক্সাইটেড হয়ে প্রশ্ন করে উঠলো। আহিয়ান হাসলো সুখের এক্সাইটমেন্ট দেখে।বৃষ্টি ও উৎসুক নয়নে চাইলো।রিসিকা আর আয়াত এর আগেও একবার এসেছিলো সেজন্য তাদের জানা তারা যে এক্সাইটেড না তা না কিন্তু তাদের এমন বাচ্চামো মানায় না বলেই মনে করে তারা।এদিকে বন্যার এইসবে ধ্যান নাই সে তো একমনে চেয়ে আছে আহিয়ানের দিকে।আজকাল মনে হয় ভুল করেছিলো বড্ড ভুল করেছিলো এই লোকটাকে ভালোবেসে। কেন সে তাকে ভালোবাসলোনা কেনো মন পাজরে তারে ঠায় দিলোনা

রিহাব বন্যার চোখের ভাষা নিমিষেই পড়েনিলো সে নিজেও তো একই যন্ত্রণা ভোগ করছে।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলো

—আমরা এখন যাবো লালাখাল

—এই জায়গার বিশেষত্ব কি ভাইয়া।

সুখের প্রশ্নে রিহাব বলতে শুরু করলো

মেঘালয় পর্বত শ্রেনীর সবচেয়ে পুর্বের অংশ জৈন্তিয়া হিলসের ঠিক নীচে পাহাড়, প্রাকৃতিক বন, চা বাগান ও নদীঘেরা একটি গ্রাম লালাখাল, সিলেট জেলার জৈন্তিয়াপুর উপজেলায় অবস্থিত। লালাখাল থেকে সারীঘাট পর্যন্ত নদীর ১২ কি.মি পানির রঙ পান্না সবুজ হয়ে থাকে।

পুরো শীতকাল এবং অন্যান্য সময় বৃষ্টি না হলে এই রঙ থাকে। জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে আসা প্রবাহমান পানির সাথে মিশে থাকা খনিজ এবং কাদার পরিবর্তে নদীর বালুময় তলদেশের কারনেই এই নদীর পানির রঙ এরকম দেখায়। এডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকরা এখানে রাত্রিযাপন করে থাকে

—বাহ আমরাও সেখানে রাত্রিযাপন করবো

—আমাদের ন্যায় সাধারণ মানুষ সে পরিবেশ এর সাথে মানায় নিতে পারবোনা।।

অনেকসময় লেগেগেলো তাদের সে জায়গায় পৌছাতে।সুখ তো গাড়ি থেকে বেরিয়েই লেগে গেলো চারিদিক ঘুরে ঘুরে দেখতে।বৃষ্টি ঝটপট ক্যামেরা বের করে ছবি তুলতে শুরু করলো।সুখ অন্যদিকে যেতে নিলেই আহিয়ান ওর হাত ধরে ফেলে

—বেশি দূরে যাওয়া লাগবেনা আমার সাথে চলো

—বেপার কি ডাক্তার আজ আমাকে নিয়ে এতো চিন্তা

—আমি মজা করছিনা সুখ পাখি

—হুম হুম জানি জানি দেখেন না চারিদিক কতো সুন্দর। আমার তো মন চাচ্ছে প্রকৃতিতে মিলে মিশে এক হয়ে যায় সব এতো সুন্দর কেনো

—কারন তাকে যে চোখ দুইটা দেখছে সে চোখ দুইটা সুন্দর

আহিয়ানের কথা সুখের কান অব্দি গেলোনা। সে তো আজ আলাদাই দুনিয়াই চলে গেছে এতো এতো সৌন্দর্য তার চোখ ধাধিয়ে দিচ্ছে।

—–
—কিরে দুই দিন ধরে দেখছি কেমন চুপ চাপ হয়ে আছিস কেনো

আয়াত এর কন্ঠে আরিফ পিছনে ফিরে তাকায়।

—তেমন কিছুইনা যাস্ট এমনিই

—ফ্রেন্ড হিসেবে বলতেই পারিস

—প্রিয়ু ফোন পিক করছেনা আর আমি সে সদূর সিলেটে বুঝতে পারছিনা কি করবো।তুই তো জানিস মেয়েটা কেমন পাগলামো করতে ওস্তাদ।অভিমানী নিশ্চিত অভিমানের পাহাড় তৈরি করে ফেলেছে

—হুম।আমি কথা বলে দেখবো নাকি

আয়াত ধীরে বলে উঠে।আরিফ তাকায় আয়াত এর দিকে।মেয়েটার চোখ অন্যদিকে ঠিক করে তাকচ্ছেও না তার দিকে। আরিফ এর মনটা আরও বিষিয়ে গেলো

—এখনো ভালোবাসিস আমাকে

—আমি আবার তোকে কখন ভালোবাসলাম আমার রুচি ওতো খারাপ হয়নি বুঝলি তোর জন্য তোর প্রিয়ুই ঠিক আছে দুইজনেই পাগল

—কথাটা আমাকে বলছিস নাকি নিজেকে বুঝাচ্ছিস কোনটা

—আরিফা,,,,,,,,

—আয়াত আমি আরিফ আরিফা না

—এ আইসে আরিফাই মেয়েদের মতো চোখ। তোর বাবা মা তে তোর নাম আরিফ রাখেছে কেন বুঝিনা

—আয়াত কি বাচ্চি

আরিফ আয়াত কে ধরতে যেতে নিলেই আয়াত দৌড় দেয়। আরিফ ও আয়াত কে ধরতে ওর পিছনে দৌড় দেয়।একপর্যায়ে আরিফ আয়াত কে ধরে টান দিতেই দুইজনে একে।অপরকে সামলাতে না পেরে নিচে পড়ে যায়। আয়াত কে নিজের উপরে নিয়ে পড়ে যায় যাতে আয়াত ব্যাথা না পাই।আয়াতের সমস্ত চুল এসে পড়ে আরিফের মুখে।আরিফ আলতো হাতে চুল গুলা সরিয়ে ফেলে
দুইজনার চোখ ই আটকে যায় দুইজনার চোখে মহূর্তে ঘটে যায় এক অঘটন কখন দুইজনের ঘোড় লেগে যায় আর একে অন্যের ঠোঁট স্পর্শ করে ফেলে।সাথে সাথে আয়াত উঠে যায়।

আরিফ কিছু বলতে যাবে তার আগেই আয়াত দৌড়ে সেখাব থেকে চলে যায় । কিছুটা দূরে এসেই চিৎকার দিয়ে উঠে।

—আমি কোন দিন ভাবিনি তার স্পর্শ পাবো তার ছোয়া আমাকে এতো কাপিয়ে তুলবে।কিন্তু পেয়েছি তার স্পর্শ ভুল করে হলেও পেয়েছি আর কিছু চাওয়ার নেই আমার জানি আজকের এই ঘটনার পরে সে নিজেকে দোষী মনে করবে কিন্তু এই দোষ আমি বেশি দিন তাকে পোহাতে দিবোনা আমি চলে যাবো তার এই সামান্য স্পর্শ দিয়ে আমি পার করে দিবো আমার সমস্ত জীবন।

———-

—এইযে ম্যম খালি আশেপাশের ছবি তুললে হবে আমার ও তুলে দিন তো কইটা

অচেনা কারো গলা শুনে ভরকে যায় বৃষ্টি পিছনে তাকিয়ে দেখে কিছু বখাটে টাইপের ছেলে তার দিকে এগিয়ে আসছে।বৃষ্টি ভয়ে পিছাতে নিলেই দেখে তারা চলে যাচ্ছে।বৃষ্টি অবাক হয় পিছনে ফিরে রায়হান কে দেখেই তাকে জড়িয়ে ধরে

—বাহ সুযোগ এ সদ ব্যবহার করছো নিস্তব্ধতার রানী

বৃষ্টি সরে আসতে চাইলেই রায়হান নিজের সাথে ধরে রাখে

—নিজের ইচ্ছাই ধরেছো কিন্তু ছাড়াতে পারবে শুধু আমার অনুমতিতে।আড়ালে দেখতে পারো ভালোবাসতে পারো কিন্তু বলতে৷ এতো সমস্যা কেনো।মুখে নাহয় বলতে পারোনা কাজেই বুঝায় দিতা তাও না পারলে লিখে দিতে এতো এতো অপশেন

রায়হানকে অবাক করে দিয়েই বৃষ্টি রায়হানের কপালে চুমু দিয়ে সেখান থেকে দৌড় দেয় রায়হান স্তব্ধ হয়ে সেখানেই দাঁড়ায় থাকে

চলবে!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here