মন ময়ূরী পর্ব -১০

#মন_ময়ূরী
#Tahmina_Akther

১০.

আমি আর মা গাড়িতে বসে আছি,উদ্দেশ্য ঢাকার এক অভিজাত শপিংমলে যাওয়ার।দাদি বেশিক্ষণ হাটাহাটি করতে পারবে না তাই আমাদের সাথে আসেনি। বাবা,উনার কাজে ব্যস্ত।

চোখ প্রচুর জ্বলছে গতকাল রাতে নায়ক সাহেবের সাথে কথা বলার পরে চোখে ঘুম নামেনি।বিভিন্ন রকমের কল্পনা-জল্পনা ছাপিয়ে ঘুম আসে ফজরের নামাজ আদায়ের পর। কিন্তু, মা আমার সকাল সাতটায় ঘুম থেকে টেনে উঠিয়েছে।

আমি তো আগে বেশ ছিলাম, নায়ক সাহেব আমার জীবনে আসার পর থেকে আজ দু’টো রাত আমার চোখে ঘুম নেই।

নানান রকম খেয়ালের অবসান ঘটিয়ে খেয়াদের গাড়ি এসে থামলো শপিংমলের সামনে।খেয়া গাড়ি থেকে নেমে ওর মায়ের হাত ধরে এগিয়ে গেলো, যেখানে ফায়েজের মা দাঁড়িয়ে আছে।

খেয়া ফায়েজের মা’কে দেখে সালাম দিলো, ফায়েজের মা হাসিমুখে সালামের উওর দিয়ে, খেয়ার মায়ের সাথে আলিঙ্গন করলেন।

এরপর,ফায়েজের মা খেয়ার হাত ধরে এগিয়ে গেলেন শপিংমলের ভেতরে, পাশাপাশি হাঁটছেন খেয়ার মা।

শাড়ির শো-রুমে বসে বসে খেয়া এবং ওর মাকে বিভিন্ন কালেকশন দেখাচ্ছে ফায়েজের মা। এতকিছুর পরও খেয়ার মন খোঁচখোঁচ করছে, কেন ফায়েজ আসেনি? গতকাল রাতেও তো সবাই বলেছে ফায়েজ আসবে।ওর সাথে যখন কথা হলো তখনো তো কিছু বললো না। আসবে বলেও , এলো না কেন?

-আসসালামু আলাইকুম,আন্টি।আসতে দেরি হয়ে গেলো। বোঝেনইতো, ঢাকার রাস্তায় কত জ্যাম!

খেয়া তাকিয়ে দেখে ফায়েজের এসিস্ট্যান্ট জব্বার উদ্দিন এসে ফায়েজের মা’কে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলে। খেয়া জব্বারের পিছনে উঁকি দিয়ে দেখতে দেখছে,ফায়েজ এসেছে কি-না?

-ফায়েজ আসেনি কেন,জব্বার?ফায়েজের মা জিজ্ঞেস করলেন।

-আসলে,আন্টি। স্যার যেহেতু বিয়ে উপলক্ষে কিছুদিন শুটিংয়ে যেতে পারবেন না তাই কিছু শট আগে থেকেই কমপ্লিট করে রাখছেন। স্যার, বলেছেন আপনাদের যা যা দরকার সব কিছু কিনে ফেলতে৷

সবকিছু শুনে ফায়েজের মা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শাড়ি দেখতে লাগলেন।

খেয়া বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো এরপর জব্বারের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে মৃদুস্বরে বলে,

-আপনার স্যার এতই ব্যস্ত থাকে,তবে কি আপনার স্যারের বিয়ের কবুল আপনি বলবেন, জব্বার ভাই?

-ছিহ্ ছি্হ, ভাবি। আপনি এগুলো কি বলেন! দেখবেন বিয়ের দিন সবার আগে স্যার এসে উপস্থিত হবেন।

খেয়া বিরক্তি নিয়ে ওর মায়ের পাশে গিয়ে বসলো।

ফায়েজের মা মোবাইল বের করে ভিডিও কল করলেন ফায়েজের কাছে।
প্রথম দুবার কল রিসিভ না করলেও তৃতীয় বারের সময় কল রিসিভ করলো ফায়েজ।

-হ্যালো,মা, আসলে শুটিংয়ে ছিলাম তাই কল রিসিভ করতে পারিনি৷ জব্বার গিয়েছে?

-তোর বিয়েতে তোর বৌ কিভাবে সাজবে,কেমন ড্রেস পড়বে,এটা তুই ঠিক করে দিবি, তাই না? জব্বার এসে কি করবে?

-মা,আমি ব্যস্ত বলে আসতে পারিনি। তোমার ছেলের বৌ কিন্তু খেয়া। তাহলে,তুমি ঠিক করো খেয়াকে কেমন সাজে মানাবে?

-কিন্তু, তোর কাছে যদি ভালো না লাগে?

-মা, আমি মিডিয়া জগতে আসার পর কম সৌন্দর্য দেখিনি। সারাদিন সৌন্দর্য মন্ডিত পরিবেশ, লোকজনদের সাথে আমার চলাফেরা।এখন কারো বাহ্যিক সৌন্দর্য আমার উপর প্রভাব ফেলে না। আমার খুব সুন্দর মনের একটি মানুষের প্রয়োজন ছিল,আমি তা পেয়েছি। সে যদি ছেড়া কাপড়েও আমার বৌ হয় আমার আফসোস নেই। আমার শুধু ওই মানুষটাকে দরকার, তার সৌন্দর্য না।

ফায়েজের মা ছেলের কথা শুনে খুশি হলেন সাথে খেয়ার মা। এতক্ষণ, খেয়া চুপ করে ফায়েজের কথা শুনেছে। এই প্রথম ফায়েজের কোনো কথায় মুগ্ধ হলো খেয়া৷

সব কেনাকেটা শেষ হলে শপিংমল থেকে বেরিয়ে পড়ে খেয়া, এবং খেয়ার মা।

ফায়েজের মা আর জব্বার অন্য গাড়িতে করে রওনা হয় চৌধুরী বাড়ির উদ্দেশ্য।

রাত আটটার পর বাড়িতে ফিরে আসে ফায়েজ। ক্লান্ত শরীর টেনে হিঁচড়ে কোনোরকমে সোফায় গিয়ে বসে।

-মা, একগ্লাস পানি দাও তো।

কেউ একগ্লাস পানি বাড়িয়ে দেয় ফায়েজের দিকে। ফায়েজ গ্লাসটি নিয়ে সবটুকু খেয়ে নিলো।গ্লাস ফেরত দেবার সময় ফায়েজ দেখে জব্বার ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তারমানে, জব্বার ওকে পানি খাইয়েছে!

-কিছু বলবে জব্বার?

-জি স্যার, বেয়াদবি না নিলে একটা কথা বলতে চাই।

-বলো।

-স্যার, ভাবি বলেছেন, আপনার স্যার এত ব্যস্ত থাকে, তাহলে কি আপনার স্যারের বিয়ের কবুল আপনি বলবেন?

-ওয়াট!

বেশ জোরে চিল্লিয়ে উঠলো ফায়েজ। ফায়েজের হুংকার শুনে ভয় পেয়ে জব্বার বলে,

-স্যার, ভাবি কিন্তু আপনার উপর অভিমান করে কথাটি বলেছে। তাছাড়া, স্যার আপনি কি বিয়ের দিন এতই ব্যস্ত থাকবেন যে, আমি আপনার কবুল বলতে যাবো।

কিছুটা লজ্জা মাখা সুরে কথাগুলো বললো জব্বার।

-ওফ্ফ, জব্বার। তুমি এখন আমার সামনে থেকে যাও। তুমি আর খেয়া এক ঘাটের মাঝি। কখন কোথায় কি বলতে হয় এটাই জানো না তোমরা!

কথাগুলো বলে বেশ হাঁপিয়ে ওঠে ফায়েজ।আর জব্বার তারাতাড়ি চৌধুরী বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে।

****************

দেখতে দেখতে হলুদের দিন চলে এলো।আগামীকাল সকল কল্পনা-জল্পনা কাটিয়ে ছাব্বিশ বছরের একাকীত্বের জীবন অতিক্রম করছে ফায়েজ চৌধুরী।

প্রত্যেকটি নিউজপেপারে এটাই এখন মূল আর্কষন।

সকাল থেকে ব্যস্ত সময় পাড় করছে ফায়েজ। যদিও ওর হলুদের অনুষ্ঠান খুব সীমিত আকারে আয়োজন করা হয়েছে শুধুমাত্র চৌধুরী পরিবারের খুব নিকট আত্মীয় স্বজনরা এসেছে।বাইরের কেউ ফায়েজের হলুদে উপস্থিত থাকবে না।

এটা ফায়েজের সিদ্ধান্ত, তার জীবনের এত বড় একটা দিনের অনুষ্ঠানে বাইরের কাউকে ইনভলভ করা মানে শখানেক ক্যামেরার সামনে নকল হাসি ঝুলিয়ে সুখি সুখি চেহারা নিয়ে পোজ দেয়া।ফায়েজ চায় না তার বিয়েতে কোনো শো-অফ হোক,সে খেয়াকে বিয়ে করছে এন্ড হি ইজ হ্যাপি। দিস ইজ মোস্ট ইমর্পোটেন্ট থিংকস।

ফায়েজ পাঞ্জাবি পড়ে তৈরি হয়ে নিলো। কোত্থেকে ফাহিম এসে ভুস ভুস করে সারা শরীরে পারফিউম ছড়িয়ে দিলো ফায়েজের। জব্বার এসে ফায়েজের পাশে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে সেলফি তুললো।

এমন সময় ফায়েজের মা হতদন্ত হয়ে ফায়েজের রুমে এসে ফায়েজকে বলে,

-ফায়েজ, হুট করে খেয়ার কাজিনরা আমাদের বাড়িতে চলে এসেছে। ওদের একটাই কথা, ওদের বোনের বিয়েতে ওদের দুলাভাইকে হলুদ দিতে পারবে না,এটা কেমন কথা! ফায়েজ, তুই কিন্তু রাগ করিস না, বাবা।ফাহিম?

-হ্যা, মা।

-তোর ভাইকে নিয়ে চলে আয়, আমি যাই।

ফায়েজের মা চলে গেলেন। ফাহিম এসে ফায়েজের কনুই ধরে ঘর ছেড়ে বের হয়ে এলো।

বড়ো করে হলুদের স্টেজ রেডি করা হয়েছে ফায়েজদের হল রুমে।

ফায়েজকে রাজকীয় চেয়ারে বসিয়ে দিলো ফাহিম।প্রথম ফায়েজের মা-বাবা এসে হলুদ ছুঁইয়ে দিলো এরপর ফাহিম আর জব্বার। এবার, ফায়েজকে হলুদ ছুঁইয়ে দিতে স্টেইজে চলে এলো খেয়ার কাজিন রুম্পা, কৌশিক,সুমি, রিয়াজ,সাথে একজন মুরব্বি।

সবাই খুব ভালোভাবে হলুদ ছুঁইয়ে দিলো সাথে হাসি-মশকরা তো আছেই।ফায়েজের বাবা-মা দুজনেই সেই মুরব্বিকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও উনি রাজি হয়নি ফায়েজকে হলুদ ছুঁইয়ে দিতে।

অবশেষে, ফায়েজের হলুদের অনুষ্ঠান সমাপ্ত হলো।খেয়ার কাজিনদের কাছে ফায়েজের মা একটি ডালা সাজিয়ে দিলো খেয়ার হলুদের জন্য যাবতীয় যা যা প্রয়োজন।ওরা সেগুলো নিয়ে চলে গেলো।

কি মনে করে ফায়েজের আম্মু, উনার রুমে যান গিয়ে দেখেন ফুলের অর্নামেন্টসগুলো রয়ে গেছে।উনি দিশেহারা বোধ করতে লাগলেন। কারণ, বাড়িতে ফাহিম বা ওর বাবা কেউই নেই। এখন কে এই বক্সটি দিয়ে আসবে?আর উনারাই বা কি ভাববে?

এমন সময় ফায়েজ এসে ওর মাকে জিজ্ঞেস করে,

-মা, আমার মোবাইল কোথায়? ঘরে নেই, ড্রইরুমে নেই। এইজন্য, ফাহিমকে বলেছিলাম আমার মোবাইল না ধরতে। না জানি কই রেখেছে?

চিন্তিত সুরে কথাটি বলে ফায়েজ ওর মায়ের মুখের দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো, ওর মা কি যেন ভাবছে?

-মা?

ফায়েজের ডাকে ভাবনার জগত থেকে বের হয়ে এলেন ফায়েজের মা রেহনুমা।উনি খাটের উপর থেকে অর্নামেন্টস এর বক্সটি নিয়ে বাড়িয়ে দিলো ফায়েজের সম্মুখে।

-খেয়ার জন্য যেই ডালাটি সাজিয়ে ছিলাম সেই ডালায় ভুলে এই বক্সটা দেয়া হয়নি।এখন বাড়িতে ফাহিম বা তোর বাবা নেই। তুই গিয়ে দিয়ে আয়। মেয়েটার পরিবার আমাদের ভুল দেখলে কি ভাববে,বল তো? উনারা তখন বলবে আমরা সামন্য জিনিস দিতে ভুল যাচ্ছি!উনাদের মেয়েকে সারাজীবন কিভাবে রাখবো?তুই গাড়ি নিয়ে চলে যা, আমি ভাবিকে কল করে বলে দিচ্ছি তুই যাচ্ছিস।

ফায়েজ বক্সটি নিয়ে চলে গেলো।ফায়েজের গাল তখনও হলুদ রঙে রাঙানো।

ফায়েজ যখন খেয়াদের বাড়িতে এসে পৌঁছাল তখন সারা বাড়িতে রটে গেলো, নায়ক তার হবু বৌকে সবার আগে হলুদ ছুঁইয়ে দিতে এসেছে।

খেয়া তখন হলুদ শাড়ি পড়ছে আর ওর কাজিনরা ফায়েজদের বাড়ি থেকে আসা ডালায় থাকা প্রত্যেকটি জিনিস খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে।

আচমকা, সুমি কোত্থেকে খেয়ার ঘরে এসে বলে,

-খেয়া, তোর নায়ক সাহেব তো চলে এলো। আমি নিশ্চিত তোকে সবার আগে হলুদ লাগানোর জন্য এসেছে।ইশ আমার জীবনে যদি এমন একটা নায়ক আসতো!

খেয়ার হাত থেকে গোছানো শাড়ির কুঁচি গুলো খুলে পড়ে গিয়ে এলোমেলো হয়ে পড়লো।রুম্পা খাট থেকে নেমে এসে খেয়ার কুঁচি ঠিক করে দিলো।

এমনসময়, খেয়ার মা খেয়ার ঘরে এলেন ফায়েজকে নিয়ে। খেয়ার মা চোখের ইশারা করতেই সবাই বের হয়ে গেলো। ঘরে এখন খেয়া,খেয়ার মা আর ফায়েজ।

-খেয়া, ফায়েজের সাথে কথা বল আমি আসছি।

কথাটি বলে চলে গেলো খেয়ার মা। খেয়া কিছু বলবে তার আগেই ওর ঘরের দরজা কে যেন বাইরে থেকে আঁটকে দিলো।খেয়া দরজার কাছে গিয়ে বলে,

-কে বাইরে, আরে দরজা লাগিয়েছে কে?

-আমরা লাগিয়েছি খেয়া। দুলাভাই কত কষ্ট করে এসেছে। তুই কি-না দরজা খোলা রেখে কথা বলবি!আমরা তো জানি তোর লজ্জা বেশি তাই আমরা ভাবলাম আমরা নাহয় দরজা লাগিয়ে দেই।

রুম্পা, সুমি, কৌশিকের একসাথে কথাগুলো বললো,।তারমানে, এই শয়তানগুলোর কাজ!

খেয়া রেগেমেগে ফায়েজের সামনে গিয়ে বলে,

-আপনি এসেছেন কেন?

-মা, এটা দিতে ভুলে গিয়েছিল.

ফায়েজ বক্সটি এগিয়ে দিলো খেয়ার সামনে।খেয়া বক্সটি হাতে নিয়ে মাথা নিচু করে ফেললো।

খেয়া যখন মাথা নিচু করে রেখেছে তখন ফায়েজ খেয়াকে দেখতে ব্যস্ত। গলায় সূর্যমূখী ফুলের হার, কান খালি,হলুদ শাড়িতে বেশ ভালো লাগছে খেয়াকে।

ফায়েজ এক পা এগিয়ে খেয়ার খুব কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই খেয়া এক পা পিছিয়ে বলে,

-কি শুরু করলেন, আপনি?যদি এক পা এগুনোর চেষ্টা করেন, তবে আমি চিৎকার করবো।

ফায়েজ আরও এক কদম এগিয়ে খেয়ার কানের সামনে মুখ বাড়িয়ে বলে ওঠে,

-নেক্সট টাইম আমার সামনে গেলে আরো কোয়ারফুল ভাবে যেও। বোরকা আর নেকাব পরে আমার সামনে গেলেই যে আমি তোমাকে চিনবো না এটা ভেবো না, খেয়া। তোমার চোখ দেখলে আমি তোমাকে চিনতে পারি।

ফায়েজ তার গাল খেয়ার গালের সাথে মিশিয়ে কথাটি বলে দরজার কাছে গিয়ে দুবার সুমির নাম ধরে ডাকতে দরজা খুলে দিলে ফায়েজ চলে যায়।

ফায়েজ চলে যাবার সুমি আর রুম্পা এসে দেখে খেয়া স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।সুমি গিয়ে খেয়ার কাঁধ রেখে বলে,

-কিরে, নায়ক সাহেবের সৌন্দর্য দেখে একেবারে পুতুল হয়ে গেলি না-কি?

– সুমি, আমি যে বোরকা পরে তোদের সাথে হলুদের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম, এটা নায়ক সাহেব বুঝে ফেলেছে। এখন, এই মুখ আমি দেখাবো কি করে?

খেয়া যখন এই সব চিন্তা করতে ব্যস্ত তখন রুম্পা এগিয়ে এসে খেয়ার গালে হাত দিয়ে বলে,

-নে তোর নায়ক সাহেব তোকে সবার আগে হলুদ লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো?

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here