মরুর বুকে বৃষ্টি পর্ব ৫

#মরুর_বুকে_বৃষ্টি 💖
#লেখিকা-মেহরুমা নূর
#পর্ব-৫

★শফিক সাহেবের সামনে সোফায় বসে আছে আদিত্য। কাল সারারাত চিন্তায় ঘুমাতে পারেনি আদিত্য। সকাল হতেই বিহানকে নিয়ে চলে এসেছে নূরের বাসায়। বর্তমানে বসার ঘরে নূরের পরিবারের সামনে বসে আছে আদিত্য। শফিক সাহেবের সিদ্ধান্ত জানার জন্য।

শফিক সাহেব এবার গলা ঝেড়ে বললেন।
–আমি তোমার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়েছি। তোমার ফাইল অনুযায়ী সবই ঠিক আছে। তবে আমি এই বিয়ে দিতে পারবো না।

আদিত্যর বুকের ভেতর ধক করে উঠলো। আদিত্য চমকে উঠে বললো।
–কিন্তু কেন? সমস্যা টা কোথায়?

–সমস্যা টা হলো আমার মেয়ে তোমার ওপর রেগে আছে। কারণ তুমি তার সাথে কাল দেখা না করেই চলে গেছ। মেয়ের রাগ না ভাঙলে কিভাবে বিয়ে দেব বলো?

শফিক সাহেবের কথায় আদিত্য এবার থতমত খেয়ে গেল। হঠাৎ করে নূরের বাবা হেঁসে উঠলো। আদিত্যর বুঝতে একটু সময় লাগলো। যখন বুঝতে পারলো শফিক সাহেব মজা করছে, তখন বুক ভরে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল আদিত্য। তারমানে শফিক সাহেব বিয়েতে রাজি আছেন। আদিত্য নিজেকে একটু সামলে নিয়ে মুচকি হেসে বললো।
–চিন্তা করবেন না আমি ওর রাগ ভাঙিয়ে দিবো। কোথায় ও?

নিলা বলে উঠলো।
–আপু নিজের রুমেই আছে। আসুন আমি নিয়ে যাচ্ছি আপনাকে।

আদিত্য উঠে দাঁড়িয়ে নিলার সাথে গেল। নূরের রুমের দরজায় এসে নিলা বললো।
–আপু ভেতরেই আছে। আপনি যেয়ে কথা বলুন।
কথাটা বলেই নিলা আদিত্যকে রেখে চলে গেল।

আদিত্য দরজাটা আস্তে করে খুলে পা টিপে ভেতরে ঢুকলো। নূর বেডের ওপর বসে টেডিবিয়ার দিয়ে খেলা করছে। হঠাৎ আদিত্যকে আসতে দেখে নূর টেডিবিয়ার কোলে নিয়ে বেডের উল্টো দিকে মুখ ফুলিয়ে বসে রইলো। আদিত্য সেটা দেখে অন্য দিকে মাথা ঘুড়িয়ে হালকা হাসলো। তারপর আস্তে করে নূরের পাশে গিয়ে বসলো। নূর আরেকদিকে মুখ ফিরিয়ে নিল।
আদিত্য বলে উঠলো।
–কি করছ নূর?

–নূর চুপ করে আছে।

আদিত্য আবার বললো।
–শুনলাম তুমি নাকি রেগে আছ? সত্যি কি তাই?

নূর অন্য দিকে তাকিয়ে থেকে বাচ্চামো রাগ দেখিয়ে বললো।
–কেন বলব? আমি কি পাগল নাকি?তুমি জিজ্ঞেস করলেই আমি বলে দিব? আমি কখনোই বলবো না যে আমি রেগে আছি। আর এটাতো আরও বলবোনা যে, আমি এক বালতি রেগে আছি? না না এক বালতি না, দুই, না না তিন বালতি রেগে আছি। তাইতো আমি কথা বলছিনা। আর এটাও বলবো না যে,তুমি আমার সাথে কাল দেখা না করে চলে গেছ তাই রেগে আছি। আমি কিছুই বলবো না তোমাকে।

আদিত্য দুই ঠোঁট চেপে ধরে নিজের হাসি আটকাচ্ছে। মেয়েটা সত্যিই অবুঝ। সবকিছু বলে দিয়ে বলছে কিছুই বলবো না। আদিত্য একটু ন্যাকামি করে বললো।
–হুমম, তাহলে কি করবো এখন? তুমিতো কিছুই বলছ না। তাহলে আমি যে একবাক্স চকলেট আনলাম সেটা নাহয় অন্যদেরই দিয়ে দেই। তুমিতো আর নিবে না তাইনা? কারণ তুমিতো আমার সাথে কথাই বলছ না।

চকলেটের কথা শুনে নূর একলাফে আদিত্যের দিকে ঘুরে উৎসাহী কন্ঠে বললো।
–এই না না হিরো সব চকলেট আমার অন্য কাওকে দিবে না তুমি।

–কিন্তু তুমিতো রেগে আছ।

–কে বললো রেগে আছি? আমি একদমই রেগে নেই। আমিতো কখনো রাগ করিই না। এই দেখ আমি এত্তো এত্তো হ্যাপি।
নূর বেড থেকে নেমে দাঁড়িয়ে দুই হাতে ফ্রকটা ধরে ঘুরে ঘুরে কথাটি বললো।

আদিত্য মায়া ভরা চোখে নূরকে দেখতে লাগলো। এই মেয়েটাকে দেখলেই ওর মনের ভেতর একরাশ প্রশান্তি ছুয়ে যায়। নূর আদিত্যের পাশে বসে বললো।
–কোথায় আমার চকলেট দাও।

আদিত্য নূরের গালে আলতো করে হাত রেখে বললো।
–দেব,তার আগে আমি কিছু বলবো সেটা শুনবে?

নূর বাদ্ধ মেয়ের মতো ঘাড় কাত করে বললো।
–হ্যাঁ শুনবো।

আদিত্য মায়া ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে নরম সুরে বললো।
–আমি তোমাকে আজ আমার সাথে নিয়ে যাবো। যাবে আমার সাথে? আমার রাজ্যে তোমাকে রানী বানিয়ে রাখবো। থাকবে আমার সাথে?

নূর চোখে মুখে চমক নিয়ে বললো।
–সত্যিই?? আমি রাণী হবো?

–হ্যাঁ রানী। আমার রাজ্যের মহারাণী। যেখানে তোমার হুকুমে সবাই চলবে। তুমি যা বলবে তাই হবে। যা চাইবে তাই পাবে। বলো হবে তুমি আমার রাণী।

নূর একটু ভেবে বললো।
–যত খুশী তত চকলেট পাবোতো?

আদিত্য এবার আর হাসি আটকাতে পারলো না। নিচের ঠোঁট কামড়ে হেঁসে দিল। কতটা নিষ্পাপ ও। সবকিছু ছেড়ে চকলেটের কথা ভাবছে। আদিত্য বলে উঠলো।
–হ্যাঁ পাবে। আমি তোমার জন্য একটা চকলেটের ঘরই বানিয়ে দেব। তাহলে হবে?

–ইয়েএএ কি মজা। ঠিক আছে আমি যাবো তোমার সাথে।

আদিত্য খুশী হয়ে বললো।
–ঠিক আছে। আমি তোমার জন্য লাল টুকটুকে একটা শাড়ি এনেছি। তুমি সেটা পড়ে মিষ্টি করে বউ সাজবে কেমন? তারপর তুমি আমার বউ হয়ে আমার সাথে যাবে।

নূর আবারও উঠে দাঁড়িয়ে হাতে তালি দিয়ে ঘুরে ঘুরে নেচে বললো।
–ওয়াও, আমি বউ সাজবো, বউ সাজবো।

আদিত্য মুগ্ধ নয়নে নূরের হাসিমুখটা দেখছে।
_____________

দুপুরের খাবার শেষে সবাই বসার রুমে এসে বসলো। নূরের মা আর নিলা নূরকে বউ সাজাতে গেছে। আদিত্যর একটাই কথা,সে আজই বিয়ে করবে। শফিক সাহেব প্রথমে মানা করলেও আদিত্যের জেদের কাছে হেরে যায়। অগত্যা কাজি সাহেব কে ডেকে আনেন। দুই একজন ময় মুরুব্বিকে ডেকে এনে ঘরোয়া ভাবে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। আদিত্য আসার সময়ই নূরের জন্য সবকিছু কিনে এনেছিল।
আর বিহানের চাপাচাপিতে আদিত্য নিজেও একটা সাদা পাঞ্জাবি পরে নেই।

বিশ মিনিট পরে নাজমা বেগম আর নিলা নূরকে নিয়ে আসে। নূরের দিকে তাকিয়ে আদিত্যের হার্টবিট যেন বন্ধ হয়ে যায়। আদিত্য যতটা ভেবেছিল তার চেয়ে হাজার গুণ বেশি সুন্দর লাগছে নূরকে। শুধু সুন্দর বললেও কম হবে। কোন ভাষা দিয়ে এই সৌন্দর্যের প্রসংশা করাও দুর্বোধ্য। এযে অলৌকিক সৌন্দর্য। যেন স্বপ্ন রাজ্যের কোন রাজকুমারী। আদিত্যর নিজের চোখের ওপরই ভয় লাগছে। ওর নিজেরি নজর না লেগে যায়।

নূর ওর বাবার সামনে গিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখিয়ে আহ্লাদী কন্ঠে বললো।
–দেখ বাবা আমি বউ সেজেছি। কেমন লাগছে আমাকে?

শফিক সাহেব মেয়ের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে রইলো। তার মেয়েটা সত্যিই আজ অন্যের বাড়ি চলে যাবে। ভাবতেই বুক ফেটে যাচ্ছে। শফিক সাহেব নূরের মাথার একপাশে হাত রেখে বললো।
–আমার মামুনিটা তো দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর মেয়ে। আজ তোমাকে একদম পুতুলের মতো লাগছে।

নূর খিলখিল করে হেসে উঠলো।

কিছুক্ষণ পর কাজি সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করলেন। নূরকে কবুল বলতে বললে, নূর প্রথমে বুঝলো না। পরে ওর মা বুঝিয়ে বললে,তখন হাসিমুখে ফটাফট কবুল বলে ফেললো। তারপর আদিত্যও কবুল বললো। বিয়ে পড়ানো শেষে সবাই মোনাজাত করলো।

একটু পরে নূরের মা নূরকে আবার রুমে নিয়ে এলো।তারপর নূরের মাথায় হাত বুলিয়ে নরম সুরে বললো।
–দেখ নূরি মা, আজ তোমার বিয়ে হয়ে গেল। এখন থেকে তুমি তোমার হিরোর বউ বুজেছ?

নূর কিছু বুঝুক না বুঝুক, ঘাড় কাত করে বললো।
–আচ্ছা।

–তোমাকে এখন জামাইয়ের সাথে তাদের বাড়িতে গিয়ে থাকতে হবে। শোন ওখানে যেয়ে কোন দুষ্টুমি করবে না ঠিক আছে? তোমার হিরো যা বলবে তাই শুনবে ঠিক আছে? একদম লক্ষী মেয়ে হয়ে থাকবে কেমন?

–আচ্ছা। আম্মু আমি একা কেন যাবো? তোমরাও চলোনা আমার সাথে। আমরা সবাই একসাথে থাকবো অনেক মজা হবে।

–তা হয়না মা। বিয়ের পরে মেয়েকে একাই যেতে হয়। তুমি আমার লক্ষী মেয়ে না? তুমি আমার কথা মানবে তো? একদম পঁচা মেয়ের মতো করবে না ঠিক আছে?

–আচ্ছা। আমি একদম গুড গার্ল হয়ে থাকবো।

নাজমা বেগম টলমল চোখে মুচকি হেসে নূরের কপালে একটা চুমু খেয়ে মেয়েকে জড়িয়ে ধরলো। অনেক কষ্টে নিজের কান্না আটকিয়ে রেখেছেন তিনি। নাহলে যে নূরকে পাঠানো যাবে না।

বিদায়ের সময় হয়ে এলো। নূরকে আবার বাইরে নিয়ে আসা হলো। শফিক সাহেব নূরের হাত আদিত্যের হাতে তুলে কান্না জড়ানো কন্ঠে বললো।
–আমার এই অবুঝ মেয়েটাকে দেখে রেখ বাবা। আজ থেকে ও তোমার আমানত।

আদিত্য বলে উঠলো।
–আপনি চিন্তা করবেন না। আমি কথা দিচ্ছি, আমার জীবন থাকতে নূরকে কোন কষ্ট ছুতে পারবে না।

শফিক সাহেব নূরের মেডিকেল ফাইল আদিত্যের হাতে দিল। আদিত্য নিজেই চেয়েছিল। ও নূরকে আরও বড়ো ডাক্তারকে দেখাতে চায়। তাই শফিক সাহেব ফাইল টা দিয়ে বললো।
–এটা নূরের মেডিকেল ফাইল। এখানে ওর সব ডিটেইলস আছে।

–ধন্যবাদ। আমরা এখন আসি তাহলে।

–ঠিক আছে বাবা।

নিলা একটা বাস্কেট নিয়ে এসে বিহানের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো।
–ভাইয়া এটা আপুর বেবি। আপু ওকে ছাড়া থাকতে পারে না। তাই এটা নিয়ে যান।

বিহান মাথা ঝাকিয়ে বাস্কেট টা হাতে নিল।

আদিত্য নূরের হাত ধরে বের হবার জন্য পা বাড়ালো। নূরের পরিবারের কষ্টে বুকটা ফেটে গেলেও, নূরের কোন ভাবান্তর নেই। সে দিব্যি হাসি খুশী ভাবে হেলেদুলে আদিত্যের সাথে যাচ্ছে। আদিত্য নূরকে গাড়িতে বসিয়ে নিজেও পাশে বসলো। আর বিহান ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিল। গাড়ি চোখের আড়াল হতেই নূরের মা কান্নায় ভেঙে পড়লো। শফিক সাহেব আর নিলা মিলে ওর মাকে সামলাতে লাগলো।
____

আদিত্য তাকিয়ে আছে তার সদ্য বিয়ে করা মিষ্টি বউটার দিকে। বউটা তার গাড়ির জানালার কাচ নামিয়ে বাইরে মুখ বের করে বাতাস খাচ্ছে। তার নড়াচড়ার সাথে তার হাতের চুড়ি গুলো রিনিঝিনি শব্দে বেজে চলেছে। আদিত্য নূরের হাতটা ধরে বললো।
–নূর মাথা ভেতরে আনো। এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে।

আদিত্যের কথায় নূর মাথা ভেতরে আনলো।

বিহান আদিত্যর বাসার সামনে এসে গাড়ি থামালো। বিয়ের কার্যক্রম শেষ হয়ে আসতে আসতে রাত হয়ে গেছে। নূরের বাসা সাভারে, আর আদিত্যের বাসা ধানমন্ডি। তাই আসতে সময় লেগে গেছে। বিহান গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়াল। আদিত্যও নেমে এসে নূরের পাশে গিয়ে দরজা খুলে দুই হাতে নূরকে কোলে তুলে নিল। নূর বললো।
–এই হিরো তুমি আমাকে কোলে নিচ্ছো কেন? আমি কি ছোট্ট বাবু নাকি?

আদিত্য নূরকে কোলে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে যেতে মুচকি হেসে বললো।
–তুমি বাবু না,তুমি হলে রাণী সাহেবা। আমি তোমাকে বলেছিলাম না,এখন থেকে তুমি আমার রাজ্যের মহারাণী? আর রাণী সাহেবা কি আর নিজের পায়ে হেঁটে রাজ প্রাসাদে যায়? তাকে তো এইভাবে কোলে করেই নিয়ে যেতে হয় বুজেছ?

–ওওও,,তাই বুঝি? তাহলে ঠিক আছে। আমাকে কোলে নিয়েই চলো। আমারও কোলে চড়ে অনেক মজা লাগছে।
কথাটা বলে নূর দুই হাতে আদিত্যের গলা জড়িয়ে পা দোলাতে লাগলো। সামনে তাকিয়ে আদিত্যের সুবিশাল সাদা ডুপ্লেক্স বাড়িটা দেখে বিস্ময় নিয়ে বললো।
–এত সুন্দর প্রাসাদ? এটাতো টিভির ওই প্রাসাদ গুলোর চেয়েও সুন্দর।

আদিত্য শুধু মুচকি হাসলো। নূরকে কোলে নিয়ে বাসার ভেতর ঢুকলো। ভেতরে ঢুকে নূর আরও হা হয়ে গেল। চোখ দুটো বড়সড় করে বললো।
–এত্তো বড়ো বাসা? এখানে তো ক্রিকেটও খেলা যাবে । মিন্টুদের বললে ওরা এখানে চলে আসবে ক্রিকেট খেলতে।

আদিত্য নূরকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে বললো।
–এটা তোমার বাসা। তুমি যা চাও তাই করতে পারো।

নরম সোফায় বসাতেই নূর খানিকটা ডেবে গেল। এত নরম সোফা পেয়ে নূর সোফায় উঠে দাঁড়িয়ে লাফাতে শুরু করলো। লাফাতে লাফাতে বলতে লাগলো।
–ওয়াও, কত্ত নরম সোফা। লাফাতে কি মজা।

আদিত্য নূরের এক হাত ধরে বললো।
–আরে আরে কি করছো। পরে যাবেতো বাবা। নিচে বসো।

বাসার সার্ভেন্ট রা সবাই অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে। এই পাগল মেয়েটা কে এটাই ওরা বুঝতে পারছে না। আর আদিত্য স্যার এর এতো কেয়ার করছে কেন?
আদিত্য নূরকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে সার্ভেন্ট দের দিকে তাকিয়ে বললো।
–তোমরা সবাই মন দিয়ে শোন। ও হলো নূর, আমার ওয়াইফ। আজ থেকে ও তোমাদের ম্যাডাম বুঝতে পেরেছ। তাই সবসময় ওর খেয়াল রাখবে।

সবার চোখ যেন এবার খুলে ফ্লোরে গড়াগড়ি খাওয়ার উপক্রম। এই পাগল মেয়েটা কিনা সারের বউ? সবাই নিজেদের একটু সামলে নিয়ে মাথা ঝাকিয়ে বললো।
–জি জ্বি স্যার।
তারপর আবার নূরের দিকে তাকিয়ে বললো।
–হ্যালো ম্যাম।

নূর নিজের আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজতে লাগলো, এই মামাটা কে তাকে দেখার জন্য। আদিত্য সেটা দেখে বললো।
–ওরা তোমাকে বলছে।

নূর কপাল কুঁচকে বললো।
–আমাকে? কিন্তু আমিতো মামা না। তুমি না বললে আমি এখানকার রানী। তাহলে ওরা আমাকে মামা বলছে কেন?

আদিত্য খানিক হেসে বললো।
–মামা না ম্যাম। আর হ্যাঁ তুমি ঠিকই বলেছ, তুমি যেহেতু রাণী সাহেবা তাই তোমাকে ম্যাম বলা ঠিক হবে না।
আদিত্য সার্ভেন্টদের দিকে তাকিয়ে বললো।
–আজ থেকে তোমরা সবাই নূরকে রাণী সাহেবা বলে ডাকবে বুঝেছ?

সবাই মাথা ঝাকিয়ে সায় জানালো।

বিহান আদিত্যের দিকে এগিয়ে বললো।
–আদি আমি অহন যাইগা। অনেক রাইত হইয়া গ্যাচেগা। আমার ঘুম পাইতাচে।

–ঠিক আছে তুই যা এখন।

বিহান নিলার দেওয়া বাস্কেটটা নিচে রেখে চলে গেল।

আদিত্য আবার নূরকে কোলে তুলে নিল। তারপর সিড়ি বেয়ে উপরে নিজের রুমে যেতে লাগলো।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here