মরুর বুকে বৃষ্টি পর্ব ৪

#মরুর_বুকে_বৃষ্টি 💖
#লেখিকা-মেহরুমা নূর
#পর্ব-৪

★নূরের বাসার সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে, বিহান আদিত্যের দিকে তাকিয়ে বললো।
–কিরে ছকাল ছকাল এইহানে আছলি ক্যালা?

আদিত্য গাড়ি থেকে নামতে নামতে বললো।
–নেমে আয় আগে। বাসার ভেতরে গেলে সব বুঝতে পারবি।

বিহান আর কিছু না বলে গাড়ি লক করে আদিত্যর পিছু পিছু গেল।

আদিত্য নূরের বাসার দরজায় এসে কলিং বেল বাজাল। একটু পরে নিলা এসে দরজা খুলে দিল। আদিত্যকে দেখে নিলা হাসিমুখে বলে উঠলো।
–আরে ভাইয়া আপনি? আসুন না ভেতরে আসুন।

আদিত্য মুচকি হেসে ভেতরে ঢুকলো। নিলা আদিত্যকে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসতে বললো।আদিত্য আর বিহান সোফায় বসলো। নিলা ওর বাবা মাকে ডেকে আদিত্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। নূরের বাবা মা আদিত্যকে দেখে অনেক খুশী হলেন। মেয়েকে বাচানোর জন্য তারা আদিত্যকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন।

একটু পরে নূর ওখানে দৌড়ে আসলো। আদিত্যকে দেখে উৎসাহ নিয়ে বললো।
–আরে হিরো? তুমি আবার আমার সাথে খেলতে এসেছ বুঝি? চল চল আমরা খেলতে যাই।
কথাটা বলে নূর আদিত্যের হাত ধরে নিয়ে যেতে উদ্যত হলো।

আদিত্য নূরকে থামিয়ে দিয়ে বললো।
–তোমার সাথে অবশ্যই খেলবো।তবে একটু পরে। এখন তোমার বাবা মার সাথে আমি একটু কথা বলবো। তুমি ততক্ষণ নিজের রুমে গিয়ে খেল ঠিক আছে?

নূর ঘাড় কাত করে বললো।
–আচ্ছা।
কথাটা বলেই নূর আবার নিজের রুমে চলে গেল।

একটু পরে আদিত্য গলা ঝেড়ে শফিক সাহেব এবং তার স্ত্রী নাজমা বেগমের উদ্দেশ্যে বললো। আপনাদের সাথে আমার কিছু জরুরি কথা ছিল।

শফিক সাহেব মাথা ঝাকিয়ে বললেন।
–হ্যাঁ বলো কি বলবে?

আদিত্য একটু নড়েচড়ে বসে বললো।
–দেখুন আমি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলতে পারিনা। তাই সরাসরি বলছি। আমি জানি এসব বিষয়ে মুরুব্বিরাই কথা বলে থাকেন। কিন্তু আমার তেমন কেউ নেই। এক চাচা আছেন, তবে উনি বর্তমানে তার ফ্যামিলির সাথে লন্ডনে ঘুরতে গেছেন। তাই আমার কথা আমি নিজেই বলছি।
তারপর কিছুক্ষণ থেমে আবার বললো।
— আসলে আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই।

আদিত্যের কথায় নূরের বাবা মা অবাক হয়ে একজন আরেকজনের মুখ চাওয়া চাই করতে লাগলো। শফিক সাহেব নিজেকে একটু সামলে নিয়ে বললো।
–কিন্তু বাবা নিলা তো এখনো ছোট। ১৭ বছর বয়স, মাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে। এই বয়সে কিভাবে ওর বিয়ে দিবো।

আদিত্য থতমত খেয়ে বললো।
–আপনি বোধহয় ভুল বুজছেন। আমি নিলার কথা বলিনি।আমি নূরকে বিয়ে করতে চাই।

দ্যা গ্রেট সাদমান শাহরিয়ার আদিত্যর মুখের এমন প্রস্তাবে, সব মেয়ের বাবাই নিজেকে ধন্য মনে করে খুশিতে ডগমগ হয়ে উঠবে। কিন্তু শফিক সাহেবের চেহারায় অবাক আর আশ্চর্য ছাড়া কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। শফিক সাহেবের পরিবারও চরম অবাক এমন প্রস্তাবে।
অন্যদিকে আদিত্যের পাশে বসে থাকা বিহান মাত্রই পানির গ্লাস মুখে নিয়ে ছিল। হঠাৎ আদিত্যর এমন কথা শুনে তার গলায় পানি আটকে গিয়ে বিষম খেতে লাগে।

শফিক সাহেবের সামনে সোফায় বসে থাকা আদিত্যের দিকে কিছুক্ষণ বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলো।
–তুমি কি আমার সাথে মজা করছো?

আদিত্য স্বাভাবিক ভাবেই বলে উঠলো।
–আমি কোন স্টান্ড আপ কমেডিয়ান না, যে এখানে আপনার সাথে মজা করতে আসবো। আমি মোটেও মজা করছি না। আ্যাম সিরিয়াস।

–কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? দেখ তুমি আমার মেয়ের জীবন বাঁচিয়েছ, তার জন্য আমরা সবাই তোমার কাছে সারাজীবন ঋণী। তাই বলে বিয়ে? এটা কি করে সম্ভব? তুমি কি নূরের অবস্থা টা জানো না?

–আমি সবই জানি। নূর যেমনই হোক, আমি সবটা জেনেই ওকে বিয়ে করতে চাই।

শফিক সাহেব এবার একটু নড়েচড়ে বসলেন।আদিত্য যে এই বিষয়ে সত্যিই সিরিয়াস সেটা সে বুঝতে পারছে। তিনি গম্ভীর কন্ঠে বললেন।
–কিন্তু কেন? দুনিয়াতে এত মেয়ে থাকতে আমার মেয়ে নূরই কেন? নূরের মতো এ্যাবনরমাল মেয়েকে তুমি কেন বিয়ে করতে চাও? এতে তোমার কি লাভ?

আদিত্য স্মিত হেসে বললো।
–দেখুন আমি নিজের ব্যাপারে কখনো কাওকে কোন এক্সপ্লেনেশন দেইনা। কিন্তু আপনাকে বলছি, কারণ আপনি একজন বাবা। তাই আপনার জানার অধিকার আছে। লাভের কথা বলছিলেন না? আসলে নূরকে আমার জীবনে পাওয়ার লাভটা আমি আপনাকে ভাষার কোন শব্দ দিয়ে বোঝাতে পারবো না। হ্যাঁ, আমি চাইলেই হাজারটা মেয়ে আমাকে বিয়ে করার একপায়ে রাজী হয়ে যাবে। তবে আমার জীবনে যে খুশিটা আমি খুজছিলাম সেটা আমি শুধু নূরের মাঝেই পেয়েছি। আর এই খুশিটা আমি হারাতে চাইনা।কিছুতেই না।
আদিত্য সামনের টি টেবিলের ওপর একটা ফাইল রেখে বললো।
— আমার ব্যাপারে সব ডিটেইলস এই ফাইলে আছে। তবুও আপনি চাইলে আমার অফিস, বাসা কিংম্বা যেকোনো জায়গায় আমার ব্যাপারে আপনাদের নিজেদের মতো সব খোঁজ খবর নিতে পারেন। আশা করি এরপর আপনাদের আর কোন ডাউট থাকবেনা। দেখুন আমি চাইলেই যে কোন সময় নূরকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে পারি। আর আপনারা হয়তো জানেন, আমাকে আটকানোর ক্ষমতা কারোর মাঝে নেই। কিন্তু আমি সেটা চাচ্ছি না। আমি চাই আপনি স্বইচ্ছায় নূরকে আমার হাতে তুলে দিন। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি নিজের সবটুকু দিয়ে নূরকে আগলে রাখবো। কখনো কোন কষ্ট ছুতে পারবে না ওঁকে।

এতক্ষণ ধরে আদিত্যের কথা শুনে শফিক সাহেব আর তার স্ত্রী মুখ চাওয়া চাই করছেন। তাদের এখন কি বলা উচিত বুঝতে পারছেন না। শফিক সাহেব একটু গলা ঝেড়ে বললেন।
–হুম সবটাতো বুঝলাম। কিন্তু তুমিতো নূরের অবস্থার কথা জানোই। আর ও কোনদিন ঠিক হবে কিনা তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। তুমি কি পারবে ওকে সামলাতে? সারাজীবন এমন একটা মানুষিক ভারসাম্য হারানো মেয়ের সাথে কাটাতে পারবে?দেখ তুমি ভালো করে ভেবে চিন্তে দেখ। এটা সারাজীবনের ব্যাপার। তুৃমি নূরকে নিয়ে কোন সাধারণ স্বামী স্ত্রীর মতো জীবনজাপন করতে পারবে না। এমনও হতে পারে তোমার এখন আবেগের বসে নূরকে ভালো লাগছে। কিন্তু সময়ের সাথে নূরের ওপর তুমি বিরক্ত হয়ে উঠবে। মানুষের ভেতর ওকে নিয়ে লজ্জায় পড়তে হবে। নূরের ওপর তিক্ত হয়ে ওকে আর তোমার জীবনে রাখতে চাইবে না। তখন আমার মেয়েটার কি হবে?

আদিত্য বলে উঠলো।
–আমি বুঝতে পারছি, বাবা হিসেবে আপনার চিন্তা করা জায়েজ। আমি এখন যতই বলিনা কেন যে,আমি কখনো এমন করবোনা। তবুও আমার মুখের কথায় আপনি হয়তো স্যাটিসফাইট হবেন না। আপনি চাইলে আমি এখুনি আমার সবকিছু নূরের নামে লিখে দিয়ে আপনার এই ভয়টা দূর করতে পারি। কিন্তু এতে করে নূরের জীবন হুমকিতে পরে যাবে। কারণ সম্পত্তি পাওয়ার লোভে তখন আমার শত্রুরা নূরের জানের দুশমন হয়ে যাবে। এখন আপনিই বলুন কি করবেন।

আদিত্যের কথাগুলো শুনে নূরের মা নাজমা বেগম মনে মনে অনেক খুশী হলেন। তার আর বুঝতে বাকি রইল না যে,এই ছেলেটা তার মেয়েকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে। নিলাও ভীষণ খুশী। শফিক সাহেব কিছুক্ষন ভেবে বললেন।
–আমার ভাবার জন্য কিছু সময় দরকার। আমি ভেবে চিন্তে কাল তোমাকে আমার সিদ্ধান্ত জানাবো।

আদিত্য বলে উঠলো।
–ঠিক আছে আমি কাল আবার আসবো। এখন আসি তাহলে?

শফিক সাহেব মাথা ঝাকিয়ে সায় জানালো। আদিত্যের যাওয়ার আগে নূরকে একটু দেখার ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু নূরের বাবার সামনে এই কথা বলতেও ইতস্তত বোধ করছে আদিত্য। অগত্যা আদিত্য চলে যাওয়ার জন্য উদ্যোত হলো। দু কদম যেয়ে আবার পেছনে ফিরে শফিক সাহেবের দিকে বললেন।
–যাবার আগে একটা কথা বলতে চাই। আমি চাই আপনি স্বইচ্ছায় নূরকে আমার হাতে তুলে দিন। তবে আপনি না চাইলে যে আমি নূরকে বিয়ে করবো না,এতটাও নীতিবান লোক না আমি। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
কথাটা বলে মনে চোখে সানগ্লাস পরে বেড়িয়ে গেল।

পেছন থেকে শফিক সাহেব হতভম্ব হয়ে গেল। ছেলেটা কি তাকে হুমকি দিয়ে গেল?

আদিত্য যাওয়ার পর নূরের মা নাজমা বেগম শফিক সাহেবের উদ্দেশ্যে বললেন।
–শোন আমার মনে হয় ছেলেটা সত্যিই আমাদের মেয়েটাকে ভালোবাসে। ছেলেটার চোখে সেটা দেখা যায়। আমিতো নূরের বিয়া শাদির আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। আমার এমন অসুস্থ মেয়েটাকে কেইবা তার ঘরের বউ করবে? কিন্তু দেখ আল্লাহ আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছেন। আমার মেয়েটার জন্য এত সুন্দর ছেলে এনে দিয়েছেন।

নিলাও তার মায়ের সাথে সায় দিয়ে বললো।
–হ্যাঁ মা একদম ঠিক বলেছ।আপুর প্রতি ভাইয়ার টান আমি দেখেছি। আপুকে ভাইয়া অনেক ভালো রাখবেন।

এদের কথা শুনে শফিক সাহেব একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন।
–হুম, আমারও তাই মনে হচ্ছে। তবুও আমি আরেকটু ভাবতে চাই। এত তাড়াতাড়ি কোন ফয়সালা নেওয়া ঠিক হবে না।

ওদের কথাবার্তার মাঝে নূর ওখানে আসলো।আশেপাশে তাকিয়ে আদিত্যকে না দেখে বললো।
–হিরো কোথায়?

নিলা বললো,
–আপু ভাইয়া তো একটু আগেই চলে গেছে।

নূর মুখ ফুলিয়ে অভিমানী সুরে বলে উঠলো।
–চলে গেছে? কেন চলে গেল? হিরোতো আমার সাথে খেলবে বলেছিল।তাহলে আমাকে না বলে কেন চলে গেল?

শফিক সাহেব নূরকে নিজের পাশে বসিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে নরম সুরে বললো।
–আদিত্য, মানে তোমার হিরোকে কি তোমার ভালো লাগে?

নূর ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে আহ্লাদী কন্ঠে বললো
–হ্যাঁ… এত্তগুলা ভাল্লো লাগে। জানো বাবা হিরো আমার বন্ধু হয়ে গেছে। আমাকে চকলেটও দেয়। কিন্তু আজকে পঁচা হয়ে গেছে। আমার সাথে খেলা না করেই চলে গেল। তোমরা হিরোকে যেহে দিলে কেন?

শফিক সাহেব মুচকি হেসে বললেন।
–হিরো যদি তোমার সাথে সবসময় থাকে, তাহলে কেমন হবে?

নূর উৎসাহী কন্ঠে বললো।
–সত্যিই??ইয়েএএ তাহলে তো অনেক মজা হবে। কিন্তু হিরো সবসময় কিভাবে থাকবে?

—হিরো তোমাকে তার সাথে নিয়ে যেতে চায়। তোমার পুতুল খেলায় যেমন বর বউ থাকে। তেমনি হিরো তোমার বর হবে আর তুমি হবে বউ। হিরো তোমাকে বিয়ে করে তার বাড়িতে নিয়ে যাবে। তখন তুমি সবসময় হিরোর সাথে থাকবে। যাবে তুমি হিরোর সাথে?

–সত্যিই আমি বউ হবো? আর হিরো বর? আমরা বর বউ খেলবো। কত্তো মজা হবে,কত্তো মজা হবে।
হাতে তালি দিতে দিতে বলতে লাগলো নূর।

শফিক সাহেব স্মিত হাসলেন। মেয়েটা কি কখনো স্বাভাবিক হতে পারবে? ওর বিয়েটাও ও খেলা ভাবছে।
_________

গাড়িতে বসে বাইরে তাকিয়ে আছে আদিত্য। মনে মনে একটু চিন্তা হচ্ছে নূরের বাবা যদি বিয়েতে রাজি না হন? নূরকে যে তার চায়ই চাই। নূর ছাড়া যে আর চলবে না। যদিও নূরের বাবা রাজি না হলেও আদিত্য নূরকে তার জীবনে এনেই ছাড়বে। কিন্তু আগেই সে এটা করতে চাচ্ছে না।আদিত্যর তো বাবা মা নেই। তাই সে নূরকে তার বাবা মার আর্শীবাদ থেকে বঞ্চিত করতে চায় না।
আদিত্য একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পাশে তাকিয়ে দেখলো বিহান মুখ গোমড়া করে গাড়ি চালাচ্ছে।আদিত্য বাঁকা হেসে বললো।
–কিরে, আমার বিয়ের কথা শুনে তুই নতুন বউয়ের মতো মুখে লাড্ডু জমিয়ে বসে আসিছ কেন?

বিহান অভিমানী সুরে বললো।
–লাড্ডু হান্দাই (ঢুকাই) আর ফুটবল হান্দাই, হ্যাতে তোর কি বে? আমি কি তোর কিছু লাগি নি? আমি তো খালি তোর কামের লোক। আর তুই আমার মালিক।

–আরে শুধু শুধু সেন্টি খাচ্ছিস কেন?

–হ এহন তো এইডাই কবি। ছালা হারামি তলে তলে বিয়া কইরা বাছরের (বাসরের) প্লান কইরা ফালাইছচ।অথচ এই আমারে,তোর এই ল্যাংটা কালের দোস্তোরে একবার জানাইনার প্রয়োজনও মনে করলি না। লোকে হাচাই (সত্যিই) কয়,মাইয়া মানুষ পাইলে আর কোন হুছ থাকে না।

আদিত্য একটু হেঁসে বললো।
–হয়েছে আর ড্রামা করতে হবে না। আসলে সত্যি বলতে আমি নিজেও ভাবিনি যে এভাবে হুট করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবো। জানিস ওকে প্রথম দিন দেখার পর আমার কেমন অস্থির লাগছিল। সারারাত অস্থিরতায় ঘুমাতে পারিনি। কিন্তু কাল যখন ওকে দেখলাম, আমার সব অস্থিরতা দূর হয়ে গেল। ওর নিষ্পাপ হাসিটা দেখে মনের ভেতর এক অদ্ভুত খুশীর উদ্ভাবন হলো। জানিস কালকের দিনটার মতো খুশী আমি এর আগে কখনো পায়নি। শুধু কিছু সময়ের জন্য নূরকে পেয়ে যদি আমি এতটা খুশী হতে পারি, তাহলে ভাব যখন সারাজীবন নূর আমার কাছে আমার সাথে থাকবে তখন আমি কতটা খুশীতে থাকবো।
তাইতো আর দেরি না করে নূরকে আমার জীবনে আনার ব্যবস্থা করলাম। তোকে বলিনি কারণ তোকে সারপ্রাইজ দিতে চাচ্ছিলাম। তুই ছাড়া আর কেইবা আছে বল?

–ওইচে ওইচে আর ইমোছনাল ছুরি চালাইতে হইবো না।
বিহান এবার একটু সিরিয়াস ভঙ্গিতে বললো।
–তয় আদি তুই কি ছিওর এই ব্যাপারে? না মানে কইতাচিলাম যে নূরের মতো মাইয়ারে বিয়া কইরা,,,

বিহানের কথা শেষ হওয়ার আগেই আদিত্য বলে উঠলো।
–আমি জানি তুই কি বলতে চাচ্ছিস। নূর আর সবার মতো না,সবার থেকে আলাদা, স্পেশাল একটা মেয়ে। আর এইজন্যই ওকে আমার ভালোলাগে। ও অন্য সব মেয়ের মতো কৃত্রিম না। নূর হলো নিষ্পাপ এক প্রাকৃতির রুপ। আমি জানি তুই আমার জন্য চিন্তা করে এসব বলছিস। তবে তুই চিন্তা করিস না। এই মেয়েটাই তোর বন্ধুর সুখের ঠিকানা বিহান।

বিহান মুচকি হেসে বললো।
–তাইলে তো ওইয়াই গেল মামা। তুই খুছি তো আমিও খুছি। ছ্যাচম্যাচ (শেষমেশ) আমিও গাইবার পারুম।
♬ আজ মেরে ইয়ার কি শাদি হে,
♬ আজ মেরে ইয়ার কি শাদি হে।

আদিত্য হালকা হাসলো।

চলবে…..
(আমি আগেই বলেছি যেটার ভোট বেশি আসবে সেটাই দিবো। আর দুই চারজন পাঠক ছাড়া বাকি সবাই বিহানের আগের ভাষাই রাখতে বলেছে। তাই বহুমত যেদিকে, আমিও সেটাই করতে চাই । তাই বিহানের আগের ভাষাই কন্টিনিউ হবে। বোঝার জন্য আমি যথাসম্ভব সাবটাইটেল দিয়ে দেব। এরপর বিহানের ভাষা নিয়ে আর কোন কথা হবে না।

ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here