মায়ায় জড়ানো সেই তুমি পর্ব -০৬

#মায়ায়_জড়ানো_সেই_তুমি
#পার্ট_৬
জাওয়াদ জামী

বিছানায় শুয়ে বেশ কিছুক্ষন ছটফট করে সাদিফ। প্রচন্ড মাথা ধরেছে। কফি হলে ভালো হত। কিন্তু বানাবে কে! সবাই ঘুমে মগ্ন। বাধ্য হয়ে নিজেই যায় রান্নাঘরে।

কফির মগ হাতে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। সুগন্ধ ভেসে আসছে বাতাসে। এদিক-ওদিক তাকাতেই লক্ষ্য করে বারান্দার শেষ প্রান্তে টবের বেলি গাছটা ফুলের ভারে নুঁইয়ে পরেছে। আশেপাশে কয়েকটা টব সাজিয়ে রাখা। সেগুলোতেও হলুদ গোলাপ, হাজার বেলি, জারবেরা, কণ্টক মুকুট, আর হলুদ একটা ফুল ফুটেছে। এগুলো নিশ্চয়ই তানিশার কাজ। ফুলের গন্ধে ম-ম করছে বারান্দা। কফি শেষ করে রুমে আসে। কিন্তু আবারো অনুভব করে কিছু একটা নেই।
তানিশা যাওয়ার পর থেকে কথা বলা হয়নি।
” কি মেয়েরে বাবা! এমনিতে বাসায় থাকলে সারাক্ষণ আশেপাশে ঘুরঘুর করবে। আর এখন বাবার বাড়ি যেয়ে উড়তে শিখে গেছে। একটা ফোন করার কথা নেই। ” গজগজ করে কিছুক্ষণ। এরপর ফোন হাতে নিয়ে তানিশার নম্বরে ফোন করে।

রাতে শোয়ার আগে তানিম বোনের ফোন নিয়ে গেমস খেলতে খেলতে ব্যাটারির চার্জ শেষ করে সেভাবেই চার্জে দিয়ে রেখেছে। তানিশাও আর ফোন অন করেনি। এত রাতে ফোন দেয়ার কেউ নেই।

সাদিফ এ নিয়ে চারবার ট্রাই করেছে কিন্তু ফোন সুইচড অফ বলছে। বিরক্ত হয়ে হাতের ফোন ছুঁড়ে দেয় বিছানার অপরপ্রান্তে। সটান হয়ে শুয়ে পরে।

আয়েশা খাতুনের যেন ঈদ লেগেছে বড় মেয়ে বেড়াতে আসায়। প্রতিদিন একটা না একটা পিঠা তৈরী করছেন। কখনো বাড়ির মুরগী, কখনো হাঁস জবাই করছেন। মেয়েকে পাশে বসিয়ে নিয়ে পরম যত্নে খাওয়াচ্ছেন। আজ তিনি পাটিসাপটা বানাচ্ছেন। দুধের ক্ষীরের পুর দিয়ে তৈরী পাটিসাপটা তানিশার ভিষণ পছন্দের। চুলার পাশে মাদুর পেতে ভাই-বোন মিলে দেখছে মায়ের পিঠা বানানো। তানিশার দাদি উঠানে বসে রোদ পোহাচ্ছে আর নাতি-নাতনীদের খুনসুটি দেখছে। তানিশা মনযোগ দিয়ে পিঠা বানানো দেখছে। এবার ঢাকায় যেয়ে ঐ বাড়ির সবাইকে বানিয়ে খাওয়াবে।
ভাবনার মাঝেই ফোন বেজে ওঠে।

সাদিফ এলোমেলো কাপড়চোপড়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কোথায় কোনটা আছে খুঁজে পাচ্ছেনা। এক পলক ফোনের দিকে তাকিয়ে হাতে নেয়।

এ সময় ফোনে সাদিফের নম্বর দেখে অবাকের চরম পর্যায়ে চলে যায় তানিশা। ” এ-ও সম্ভব! ঐ রাগের গ্যারাজ আমাকে ফোন দিচ্ছে! হাত-পা কাঁপতে থাকে তানিশার। ”
” আসসালামু আলাইকুম। ”
” ওয়ালাইকুমুসসালাম। আমার শার্ট-প্যান্ট, টাই কোথায়? কিছুই হাতের কাছে নেই। ”
” কেন! আমিতো আলমারির হ্যাঙ্গারে শার্ট রেখেছিলাম। আর বাঁদিকের তাকে প্যান্ট ছিল। টাই গুলোও শার্টের সাথে ম্যাচ করে রাখা ছিল। ”
” কিন্তু সেগুলো আর আগের অবস্থায় নেই। সব এলোমেলো হয়ে গেছে। ”
” ওদের কি হাত-পা আছে! এলোমেলো হয়ে যাবে! ”
” না ওদের হাত-পা নেই তো কি হয়েছে। আমার তো হাত-পা আছে। ”
তানিশার বুঝতে বাকি থাকেনা কি ঘটেছে।
হালকা হেসে বলে, ” আপনি নীল শার্ট আর ব্ল্যাক প্যান্ট আগে খুঁজুন। খুঁজে পেলে আমাকে জানান। ”
” ওকে, ফোন কেটোনা। ” বলেই খুঁজতে শুরু করে। বেশ কিছুক্ষণ পর সেগুলো খুঁজে পায়।
” পেয়েছি। ”
” এবার ব্ল্যাক টাই খুঁজুন। ”
খুঁজতে খুঁজতে টাইও পেয়ে যায়।
” আমি সব ধুয়ে ক্যালেন্ডার করে গুছিয়ে রেখে এসেছিলাম। যাতে আপনার বের করতে সমস্যা না হয়। আর আপনি দুইদিনেই এলোমেলো করেছেন! এক কাজ করুন রহিমা খালাকে বলুন তিনি কাজ সেরে যেন একটু গুছিয়ে রাখে। ”
” তুমি কবে আসবে? এভাবে কিছু চলে নাকি! রুমটা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেছে। গোছানোর মানুষ নেই। সকালে খাবার সময় হচ্ছেনা। এখানে এত অসুবিধা অথচ তুমি মনের সুখে ঘুরে বেড়াচ্ছ। ”
” আমি থাকলেও আপনাদের অসুবিধা, আবার না থাকলেও সমস্যা। কি করি বলুনতো! ”
সাদিফ কথা না বাড়িয়ে ফোন কেটে দেয়।
তানিশা দীর্ঘশ্বাস গোপন করে। সাদিফের ফোন দেখে ভেবেছিল খোঁজ-খবর নিতে ফোন দিয়েছে। কিন্তু সে ফোন দিয়েছে নিজের প্রয়োজনে। কিন্তু বেহায়া মন তো মানেনা।
” বইন, নাতজামাইয়ের লগে কথা কইলা? হেয় ভালো আছে? ”
” হুম দাদি সে ভালো আছে। ”
” আসবার কইছো তারে? ”
” অফিস থেকে ছুটি দিবেনা দাদি। তার কাজের চাপ থাকে। ”
তানিশা চুলার পাশে যেয়ে বসে।

সাদিফ থম মেরে কিছুক্ষন বসে থাকে। ” আজকাল মেয়েটা দেখছি চ্যাটাংচ্যাটাং কথা বলে! আগে সাত চরে একটা রা কাটত না। কতবড় সাহস বলে কি, সে থাকলেও অসুবিধা না থাকলে সমস্যা। একবারও জিজ্ঞেস করলনা আমি কেমন আছি! আমাকেও জিজ্ঞেস করার সুযোগ দিলনা! ” নিজে নিজেই কিছুক্ষণ বকবক করে রেডি হয়ে নেয়।

নাস্তা করতে এসে দেখে আজ রুটি, ডিম ভাজা, আলু ভাজি। কিন্তু রুটি বরাবরই অপছন্দ সাদিফের। কিন্তু তার পেটে প্রচুর ক্ষুধা থাকায় শুধু ডিম ভাজা খেয়ে অফিসে বেরোয়।

জামিল চৌধুরীও না খেয়ে বেরিয়ে গেছেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্ত্রী-সন্তানদের সাথে যতটা কম পারা যায় কথা বলবেন। এদের মত বর্বরদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায়না।

পঁচিশ দিন কেটে গেছে তানিশার বাবার বাড়িতে। আজ যাবো কাল যাবো করছে ঠিকই কিন্তু বাবা-মা যেতেই দিচ্ছেনা। এদিকে ক্লাস শুরু হয়েছে। এবার যেতেই হবে। বাবা-মাকে বুঝিয়ে রাজি করে। আগামীকাল রওনা দিবে। ফোন দেয় জামিল চৌধুরীর কাছে। তিনি জানিয়ে দেন আগামীকাল সকালেই গাড়ি পাঠিয়ে দিবেন। তানিশা শ্বশুরের কথা মেনে নেয়।

আয়েশা খাতুন মেয়ের দেয়ার জন্য জিনিসপত্র গোছাতে শুরু করে। গাছের ডাব, নারকেল, পুকুরের মাছ , বাড়ির হাঁস-মুরগী জবাই করে কেটে বেছে রাখেন। পোলাওয়ের চাল, চালের গুঁড়া, খাঁটি খেজুরের গুঁড়। ক্ষেতের টাটকা সবজি। স্বামিকে পাঠালেন বাজারে সবার জন্য কাপড় কিনতে।

তানিশা মাথায় হাত দিয়ে মায়ের কাজকর্ম দেখছে। এখানে আসার পর থেকে একটা কাজেও হাত লাগাতে দেয়নি মা। মুখে তুলে খাইয়েছে। চলে যেতে হবে ভেবেই মনটা কেঁপে উঠছে। আবার কবে আসতে পারবে জানা নেই। কিছুক্ষণ দাদির কোলে মাথা রেখে শুয়ে থাকে। দাদি নানা উপদেশ দেন।

বিকেলে ছোট দুই বোনের সাথে গ্রাম ঘুরতে বের হয়। পুরো গ্রাম চক্কর দেয় দুই বোন। শেষবারের মত গ্রামের মাটি-ধুলোবালির পরশ নেয়। না জানি আবার কবে আসবে।

ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে বেলা একটা বেজে যায়।
দুপুরের খাওয়াদাওয়ার পর একটু রেষ্ট নিয়ে বিকেল পাঁচটার দিকে তানিশাকে নিয়ে রওনা দেয়।
তানিশার মা,দাদি, ভাই-বোন সবাই কাঁদছে। তানিশাও নিজেকে ধরে রাখতে পারেনা। সবাইকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।
তানিশার বাবা মেয়ের সাথে এসেছে কিছুদূর পথ এগিয়ে দিতে। গাড়ি মেইন রোডে উঠলেই নেমে যাবেন।

রাত এগারোটায় বাসায় পোঁছে তানিশা। কলিং বেল বাজাতেই রহিমা খালা দরজা খুলে দেয়। তানিশাকে দেখেই হাসিমুখে জড়িয়ে ধরে।
” কেমন আছো গো বউ? ”
” আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন খালা? ”
” আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। ”
শায়লা চৌধুরীকে দেখে এগিয়ে যেয়ে সালাম দেয় তানিশা।
শায়লা চৌধুরী সালামের উত্তর দেয়। কিন্তু তানিশা লক্ষ্য করে তার ঠোঁটে অদ্ভুদ হাসি!

” আমার মা এসেছো? এতদিন পর এই বাপকে মনে পরল? ” জামিল চৌধুরী জড়িয়ে ধরে তানিশাকে।
তানিশা শ্বশুরকে সালাম দিলে তিনি উত্তর দেন। তানিশা রহিমা খালাকে বলে গাড়ি থেকে জিনিসপত্রগুলো আনতে। রাহিমা খালা, ড্রাইভারের সাথে মিলে একে একে সব নিয়ে আসে।
” বউমা, একি করেছ তুমি? এত কিছু এনেছ! ”
” আমার মা পাঠিয়েছে আপনাদের জন্য। ”
তানিশা সব জিনিসপত্র শ্বাশুড়ির হাতে বুঝিয়ে দেয়। তাদের জন্য কেনা কাপড়ের ব্যাগও দেয়। শায়লা চৌধুরী মুখে কিছু না বললেও মনে মনে খুশিই হয়।
সবার সাথে কথা বলে তানিশা রুমে আসে।

দরজা ধাক্কা দিয়ে রুমে প্রবেশ করতেই দেখল একটা মেয়ে বিছানায় আধা শোয়া অবস্থায় রয়েছে। মনযোগ দিয়ে ফোনে কিছু দেখছে।
তানিশা ভালো করে লক্ষ্য করতেই বুঝতে পারে এটা সোহা। সাদিফের খালাতো বোন! যদিও ওর বিয়ের পর এ বাড়িতে আসেনি সোহা। সে হিসেবে সরাসরি দেখা হয়নি। কিন্তু ছবি দেখেছে, আর তাতেই চিনেছে।

সোহা রুমে করো উপস্থিতি বুঝে সামনে তাকায়।
” তুমি তানিশা, রাইট? সাদিফের গাঁইয়া ওয়াইফ। এতদিন অজপাড়াগাঁয়ে পরে ছিলে। ” তাচ্ছিল্যের সাথে বলে সোহা।
” হুম আমি আপনার সাদিফের গাঁইয়া স্ত্রী। কিন্তু আপনার পরিচয় কি? সাদিফের গার্লফ্রেন্ড না কাজিন? ” তানিশার ঝাঁঝালো উত্তর।
সোহা এতে অপ্রস্তুত হয়ে যায়।
তানিশা সোহাকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে ব্যাগ থেকে কাপড় বের করে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে যায়। বেশ খানিকটা সময় নিয়ে ফ্রেশ হয়। আসলে ও ইচ্ছে করেই সময় নিচ্ছে। ঐ মেয়ের সাথে বিতন্ডায় জড়ানোর কোন ইচ্ছে নেই তানিশার।
আধাঘন্টা পর বের হলে তানিশা দেখে সাদিফ এসেছে। সাদিফ ডিভানে বসে আছে আর সোহা তারপাশে বসে বকবক করছে। তানিশাকে দেখ উঠে দাঁড়ায় সাদিফ। কিন্তু তানিশা সাদিফকে পাত্তা না দিয়ে বারান্দায় যায় কাপড় মেলতে।
সাদিফ অবাক হয়ে যায় তানিশার এরুপ আচরণে।

বারান্দা থেকে সোজা চলে আসে রান্নাঘরে। রহিমা খালা জেগে আছে ওদের জন্যই।
” বউমা তুমি খাইয়া লও। সাদিফ বাজানের নাকি অফিসে অনুষ্ঠান আছিল, সেখান থাইকা খাইয়া আইছে। ”
তানিশা কিছু না বলে খেয়ে নেয়।

” আমার কি রুমে জায়গা হবে? নাকি গেষ্টরুমে যাবো? ” কাটকাট স্বরে জিজ্ঞেস করে তানিশা।
সোহা তখন ওদের বিছানায় শুয়ে শুয়ে সাদিফের সাথে গল্প করছে।
তানিশা রুমে এসে প্রশ্ন ছুঁড়ে সাদিফের দিকে।
সাদিফ আসার পর থেকেই ঝটকা খাচ্ছে। তাই উত্তর দিতে দেরি করে। কিন্তু সোহা মুখ খুলেছে।
” গেষ্টরুমে তোমাকে মোষ্ট ওয়েলকাম। তুমি যেতে পারো এতে আমাদের আপত্তি নেই। ইনফ্যাক্ট এই রুমে তোমার কোন কাজ দেখছিনা।”
” নিজের রুমে নিজেরই কাজ নেই! সেখানে বড় কাজের কন্ডাকটর হাসবেন্ড এর গার্লফ্রেন্ড! তোমার কি আপত্তি থাকবে! আমি আপাতত তোমার আপত্তিকে প্রাধান্য দিচ্ছিনা। আর তোমার সাথেও কথা বলছিনা। কথা বলছি তোমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে। ”
” সোহা তুমি একটু থামবে। আমি আছি কথা বলার জন্য। আর এই মেয়ে, তুমি গেষ্টরুমে যাবে কেন? ”
” কেন সাদিফ? ও এখানে থাকবে কেন? জোর করে তোমাকে এর সাথে বেঁধে দেয়া হয়েছে। ওর কোন অধিকার নেই! ”
” মিস্টার সো কল্ড হাসবেন্ড, আপনার গার্লফ্রেন্ড একদম ঠিক বলেছে। যে সম্পর্ক শুধু কাগজ আর শরীরেই সীমাবদ্ধ, আর যাই হোক সেখানে কোন অধিকার খাটেনা। সম্পর্কটা মনের হলে বেঁধে রাখা যায়। কিন্তু কাগজের আর শরীরের সম্পর্কে বেঁধে রাখা মানে বোকামি। ” তানিশা কোন দিকে না তাকিয়ে ফোন হাতে নিয়ে বেরিয়ে যায়। বাইরে এসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। ও কিভাবে পারল ঐ হিটলারের সামনে এভাবে কথা বলতে!

” সোহা, অনেক রাত হয়েছে এবার তুমি যাও। সকালে আমার অফিস যেতে হবে। এখন রাত জাগলে উঠতে পারবনা। ”
” কিন্তু সাদিফ তোমার সাথে অনেক গল্প আছে। ”
” সোহা প্লিজ। আমি ঘুমাবো এখন। ” সাদিফের কন্ঠে রাগের ছটা আঁচ করে সোহা আর কিছু বলার সাহস করেনা। সোজা বেরিয়ে যায়।

” ঐ বেয়াদব মেয়ের সাহস হয় কি করে আমাকে অ্যাভোয়েড করার! এতগুলো কথা বলে গেল, একবারো আমার দিকে তাকালোনা! একবার ওকে হাতের কাছে পাই। আজকের হিসেব তোলা রইল। ” সাদিফ খানিকক্ষণ গজগজ করে।

সকাল সকাল উঠে নামাজ আদায় করে রান্নাঘরে আসে তানিশা। শুরু হয়ে যায় প্রাত্যহিক কাজকর্ম। সবার পছন্দের খাবার তৈরী করে সাথে আয়েশা খাতুনের পাঠানো কয়েকরকম পিঠা, পায়েস টেবিলে সাজিয়ে রাখে। খাবারের গন্ধে চৌধুরী বাড়ি ম-ম করছে।

সাদিফের ঘুম ভাঙ্গলে রান্নার ঘ্রাণে অজান্তেই মুখে হাসি ফুটে। ফ্রেশ হয়ে এসে হাতের কাছে প্রয়োজনীয় সকল কিছু দেখে আবারো ঠোঁট প্রসারিত হয়। ঝটপট রেডি হয়ে নিচে নামে। কয়েকদিন ঠিকঠাক খাওয়া হয়নি। সকাল সকাল খাবারের ঘ্রাণে পেটে মোচর দেয়।
একে একে সবাই খাবার টেবিলে আসে। জামিল চৌধুরী মহাখুশি এত আয়োজন দেখে। এমনকি সাইরা,সাইফ ও কোন কথা না বলে খেতে বসে।
পঁচিশ দিন পর সবাই পেট পুরে খায়।
সাদিফ একটু একটু করে কয়েকরকম পিঠা, পায়েস ও খায়। যা দেখে সোহা জ্বলতে থাকে। কেননা সে ইতোমধ্যে জেনেছে এগুলো তানিশা বাবার বাড়ি থেকে এনেছে। সে এসব খাবার মুখে দেয়না। জামিল চৌধুরী আবদার করেন সবরকম পিঠা, পায়েস থেকে কিছুটা করে প্যাক করতে। তিনি অফিসে নিয়ে যাবেন। তানিশা শ্বশুরের কথা অনুযায়ী কাজ করে। খাবারগুলো নিয়ে জামিল চৌধুরী আনন্দে বেরিয়ে যায়।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here