মেঘবিলাসী পর্ব ৯+১০

#মেঘবিলাসী
#israt_jahan_arina
#part_9

নাস্তার টেবিলে তিন্নির সাথে দেখা হলো জিসানের। তিন্নির মা চোখ গরম করে তাকালো মেয়ের দিকে।তিনি তার মেয়েকে আজ একটু শাড়ি পড়তে বলেছে আর তার মেয়ে কিনা প্লাজো আর টিশার্ট পরে ঘুরছে।মেয়েটা প্রচন্ড জেদী আর একরোখা।

জিসান তিন্নিকে দেখে মুচকি একটা হাসি দিলো।আবার সেই হাসি।তিন্নির জিসানের এই হাসিটা একদম অসহ্য লাগে।মনে হয় তার চোখ জ্বালা ধরে যায়।এমন করে হাসে কেনো এই লোকটা?
তিন্নি এক মনে খাচ্ছে।আশেপাশে একদম তাকাচ্ছে না।
হঠাৎ তামিম বলে উঠলো “আচ্ছা ভাইয়া আপনাদের ফিল্ডে নিশ্চয়ই হলিউড এর মত অনেক অ্যাকশন হয়? আমার না লাইভ অ্যাকশন দেখার খুব ইচ্ছা।আমাকে একদিন নিয়ে যাবেন?
জিসান হেসে বললো”তুমি আগে বড়ো হয়ে নাও,তখন অ্যাকশন শুধু দেখবেনা,ফিল্ডে দাড়িয়ে অ্যাকশন করতেও পারবে।

তিন্নি মনে মনে ভাবছে”আর অ্যাকশন!!এই লোকতো এক নম্বরের ফাঁকিবাজ। নিশ্চয়ই যখন অ্যাকশন চলে এই লোক সবার পেছনে লুকিয়ে থাকে।
খাওয়া দাওয়া শেষে তিন্নির মা জিসানকে বললো “জিসান বাবা শুনো,তুমি একটু ফ্রেশ হয়ে নাও।তিন্নির পাপা তোমার জন্য আগেই জামা কিনে রেখেছে।তুমি রুমে যেয়ে চেঞ্জ করে নাও। তিন্নি যা জিসানকে তোর রুমে নিয়ে যা।”
তিন্নি মায়ের কথা শুনে বাবার দিকে অসহায় ভাবে তাকালো।তার বাবা তাকে ইশারা করলো জিসানকে নিয়ে যেতে।এই মুহূ্তে তিন্নির তার পাপার উপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। আর কেউ তাকে না বুজলেও তার পাপা তো তাকে ভালো বুজে।সে বিরক্তি নিয়ে তার রুমের দিকে পা বাড়ালো।জিসানও তার সাথে গেলো।

তিন্নির মামনি জিসানকে ড্রেস দিয়ে চলে গেলো।জিসানও জতপট চেঞ্জ করে নিলো। তিন্নি এই মুহূর্তে অনেক বেশি চিন্তিত।এই ACP ওর সাথে কোনো অসভ্যতামী করবেনাতো? হঠাৎ তার চোখ গেলো টেবিলে দিকে। জিসানের রিভলভারটা সেখানে রাখা। এই লোকটা সব জায়গায় এটা নিয়ে নিয়ে ঘোরে নাকি? এত ভীতু এই লোক? নিশ্চয়ই এই রিভলবার দেখিয়ে সবাইকে ভয় দেখায়। আজ এখানে কেন নিয়ে এসেছে এটা? এক মিনিট, আমাকে ভয় দেখানোর জন্য আনেনি তো?
এই লোক এত অসভ্য?আমি রুমে আসতে দেইনা তাই আমাকে ভয় দেখতে চায়?কিন্তু আমি মোটেও ভয় পাইনা।আমাকে এইসব দেখিয়ে জব্দ করা এতো সোজা?মোটেও না।
জিসান ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো তিন্নি আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে।তিন্নির এই চুল গুলি জিসানের অনেক পছন্দ।হটাৎ তিন্নি বললো “আপনি কি সব সময় এইটা ক্যারি করেন?

জিসান তিন্নির দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো।তিন্নি টেবিলের দিকে ইশারা করলো।জিসান সেই দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। আর বললো
-আমাদের যেকোন সময় এমার্জেন্সি চলে আসতে পারে। আমাদের কাজটা টুয়েন্টি ফোর আওয়ারস। তাই সবসময় ক্যারি করতে হয়।
-তারমানে আপনি বলছেন এটা ছাড়া আপনি নিজের বা অন্য কারো নিরাপত্তা দিতে পারেন না। আপনাদের এই একটা সমস্যা। জীবনের মূল্য আপনাদের কাছে নেই। যখন তখন একটা মানুষকে আপনারা শুট করে দিতে পারেন। মানুষদের ভয় দেখান।
জিসান কিছুটা থতমত খেয়ে গেলো। তিন্নি তার প্রফেশনটা নিয়ে এত নেগেটিভ চিন্তা করে? জিসান বললো
-আমাদের এই প্রফেশন নিয়ে তোমার অনেক ভুল ধারণা আছে?
-আমার তা মনে হয় না। আপনারা আপনাদের পাওয়ারের মিস ইউজ করেন। আপনারা হচ্ছেন বড় বড় নেতাদের চাটুকার।
জিসান হঠাৎ তিন্নির খুব কাছে চলে আসলো। তিনি অনেকটা ভয় পেয়ে গেলো। তিন্নির হার্টবিট বেড়ে গেলো। তিনি মনে মনে ভাবছে”এই যা!! অসভ্য লোকটা কী খুব বেশি রেগে গেলো।”
জিসান বুঝতে পারলো তিন্নি খুব ভয় পেয়েছে। তাই সে একটু সরে এসে বললো
-আমি আমার প্রফেশনকে অনেক সম্মান করি। ভালো খারাপ সব জায়গাতেই আছে। সবাইতো একরকম হয় না তিন্নি।
জিসান বুঝতে পারলো তিন্নি রেগে যাচ্ছে। কথা ঘুরানোর জন্য বললো
-আচ্ছা সামনে তো তোমার মেডিকেল এক্সাম? কোন কোচিং এ ভর্তি হবে না?
– হ্যাঁ সামনের সপ্তাহে যাবো।
-ঠিক আছে ,আমি তোমাকে নিয়ে যাবো।
-না সমস্যা নেই, আমরা কয়েকজন ফ্রেন্ড একসাথে যাব।
-ও আচ্ছা। একটা রিকোয়েস্ট করতে চাই তোমাকে।
-হ্যাঁ বলুন।
-আমার বেস্ট ফ্রেন্ড সূচনা। কাল ওর বাসায় আমাদের দাওয়াত করেছে। আমার আরো কিছু ফ্রেন্ডরা আসবে। ও এতবার রিকোয়েস্ট করলো যে আমি না করতে পারিনি।
জিসান মনে মনে ভাবলো “তিন্নি আবার রেগে যাবে নাতো?
তিন্নি কিছুক্ষণ ভেবে “হ্যাঁ” বলে দিলো।
জিসান মুচকি হেসে ভাবলো”না বউ আমার এতটাও রুঢ় না।”
জিসান একটা ব্যাগ তিন্নির দিকে বাড়িয়ে দিলো। আর বললো”তোমার জন্য একটা ছোট গিফট। আমি আসলে কখনো মেয়েদের জন্য শপিং করিনি তো তাই কেমন হয়েছে ঠিক জানিনা।

তিন্নি বললো”আমার কোন গিফট এর প্রয়োজন নেই। আপনি কেন শুধু শুধু এইসব এনেছেন।”
-একজন হাসবেন্ড তার ওয়াইফ কে গিফট দিতেই পারে। প্লীজ না করো না।
তিন্নি আর কিছু না বলে ব্যাগটা হাতে নিলো।
হঠাৎ তিন্নি বলে উঠলো”আমার প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে।
দুজনে বিছানায় শুয়ে পড়লো। তিন্নির প্রচন্ড অস্বস্তি লাগছে। অচেনা একটা লোক তার পাশে শুয়ে আছে। যদিও সে তার স্বামী, তবুও অনেকটা অচেনা।
জিসানের অনুভূতিটা অন্য রকম। অনেকগুলো বছর পর কোন এক আপনজন তার পাশে আছে। তিন্নি যে শুধু তার আপনজন না। তিন্নি হচ্ছে তার ভালোবাসার মানুষ। ভালোবাসার অনুভূতি গুলো বোধ হয় এমনই হয়। নিজেকে কেমন এলোমেলো লাগে। এখন জিসানের মনে হচ্ছে আরো আগে কেন তিন্নি তার জীবনে এলো না।
তিন্নি মনে মনে ডিসাইড করে রেখেছে, এই লোক যদি তার সাথে কোন অসভ্যতামি করে, তবে এক ঘুষিতে এই লোকের সোরু নাকটা ভেঙে ফেলবে।
সকালে ঘুম ভাঙতেই তিন্নি জিসানকে পাশে পেলোনা।সে একটু অবাক হলো।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ১০ টা বাজে।লোকটা কী চলে গেলো?
কিছু একটা মনে করে সে নিজের দিকে তাকালো।সব কিছু ঠিক আছে কিনা?যদিও সে খুব একটা এলোমেলো ভাবে ঘোমায় না।সকালে ঘুম থেকে উঠে লোকটা আমার দিকে বাজে ভাবে তাকায় নিতো?এই লোকের কোনো বিশ্বাস নেই ।
হঠাৎ তিন্নির মোবাইলের মেসেজ রিং বেজে উঠলো।তিন্নি মেসেজ চেক করলো।জিসানের নম্বর থেকে মেসেজ আসেছে।
“Good morning.sorry তোমাকে না বলে চলে আসার জন্য। আসলে হঠাৎ ইমারজেন্সি কাজ চলে এসেছে। তুমি গভীর ঘুমে ছিলে তাই আর ডাকতে মন চাইলো না। বিকেলে রেডি থেকো আমি আসবো তোমাকে নিতে।”
তিন্নি উঠে ওয়াশরুমে গেল। ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার পর তার চোখ গেল টেবিলে রাখা ব্যাগটার দিকে। তিন্নির হঠাৎ আগ্রহ জাগলো ব্যাগটাতে কী আছে দেখার জন্য।সে ব্যাগটা খুলে দেখলো একটা শাড়ী।হালকা আকাশী রঙ এর শাড়ী। শাড়ী দেখে তিন্নির কপাল কুঁচকে গেলো।
#মেঘবিলাসী
#israt_jahan_arina
#part_10

শাড়ী দেখে তিন্নির কপাল কুঁচকে গেলো।এই ACP না বললো কখনো মেয়েদের শপিং করেনি? এই শাড়ী দেখেতো মনে হয়না প্রথম মেয়েদের শপিং করলো। এতো বড়ো মিথ্যাবাদী এই লোক। প্রথম বাড়ে এই শাড়ী কিনা ইম্পসিবল।
এক মিনিট,আমি কি কোনো ভাবে এই লোকের চয়েজ এর প্রসংশা করলাম? না,এই শাড়ী মোটেও ভালো না।ফালতু শাড়ী।

হঠাৎ তার বিয়ের দিনের কথা মনে পড়লো।সেই দিন জিসান আর তিন্নি রুমে বসে ছিলো।তিন্নি কোনো কথা বলেনি সেই দিন।একেতো সে বিয়ে করতে ইচ্ছুক ছিলো না।তার উপর রাতুল ভাই তার সামনে বসে ১ কেজি মিষ্টি খেছিলো।মাঝে মাঝে তার বউ কেও খাইয়ে দিচ্ছিলো।তিন্নিকে দেখে রাতুল ভাই বলেছিলো

“তিন্নি তোর জামাইকে জিজ্ঞাসা করিস তো এই মিষ্টি কোথা থেকে এনেছে। মিষ্টিটা খেতে খুবই ভালো। দোকানের নামটা জিজ্ঞেস করে আমাকে জানাইস তো?

তিন্নির তখন মন চাইছিলো ওই মিষ্টি রাতুলের মুখে ছুড়ে মারতে।তিন্নির মন মেজাজ খুব খারাপ ছিলো।তাই সে জিসানের সাথে কোনো কথা বলেনি।
জিসান কিছুক্ষন কথা বলার পর চুপ হয়ে যায়।কারণ তিন্নি তেমন কিছুই বলেছিলো না।অনেক ক্ষন চুপ থাকার পর জিসান হঠাৎ একটা প্যাকেট আর একটা বক্স বের করলো। প্যাকেটটা তিন্নির সামনে রেখে বলেছিলো,এই প্যাকেট টাতে কাবিনের টাকা আছে।আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী দেনমোহর দিয়েছি।তিন্নি তখন শুধু বলেছিলো

– আমার কিছুই লাগবে না।
– এটা তোমার অধিকার।আমাদের ধর্মেও এটা দেওয়া বাধ্যতামূলক।তাই প্লিজ মন করবেন না।
তিন্নি আর কিছুই বলেনি। তারপর জিসান বক্সটা খুলে তিন্নির পাশে রাখলো।আর বললো,এটা আমার পক্ষ থেকে সামান্য একটা গিফট।তিন্নি বক্সটার দিকে একবার তাকালো।ডায়মন্ডের একটা লকেট।
জিসান তখন বললো “আপনাকে এটা এক্ষুনি পড়তে হবে এমন কোন কথা নেই। আপনার যেদিন মনে হবে আপনি এটা আসলেই পড়তে চান তখন পড়বেন।”
জিসান উঠে তিন্নির টেবিলের ড্রয়ারে প্যাকেট আর বক্সটা রেখে দিলো।

সকালের নাস্তায় তিন্নির মা বললো,
-কীরে তিন্নি তুই এতো ইরেস্পন্সাইবেল কেনো?
– কেনো মামনি আমি আবার কি করলাম?
– জিসান এতো সকালে অফিসে চলে গেলো আর তুই নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিলি?
– আমি কী করবো? তাদের তো ২৪ ঘণ্টাই ডিউটি থাকে।আমি কী ২৪ ঘণ্টা বসে থাকবো নাকি?সে দেশ উদ্ধার করতে গেছে, আমি সকালে উঠে কি করবো?
– হাসবেন্ড সকালে না খেয়েই অফিসে গেলো তুই সেদিকে খেয়াল রাখবি না?
– আমি এতো কিছু পারবোনা।
তিন্নির মা বিরক্ত হয়ে চলে গেলো।তখনই তামিম আসলো নাস্তা করতে।তামিমকে দেখে তিন্নি বললো
– কীরে আজ স্কুলে যাসনি?
– না আপু যায়নি।আজ স্কুলে ক্লাস হবেনা। কীসের মিলাদ হবে।আমার ঘুম নষ্ট করে ওই মিলাদে যাওয়ার ইচ্ছা নাই।
– তুই তো এক নম্বরের ফাঁকিবাজ।
দুইজনে হেসে হেসে নাস্তা করছে। হঠাৎ তামিম বললো

– বুজলি আপু,আমার মনেহয় জিসান ভাইয়া তোর প্রেমে সেই হাবুডুবু খাচ্ছে।
তিন্নি হঠাৎ ভিসম খেলো।তামিম তাড়াতাড়ি তার দিকে পানি এগিয়ে দিলো।পানি খেয়ে তিন্নি কিছুটা শান্ত হলো।
– তোর হঠাৎ এমন কেনো মনে হলো?আর তুই প্রেমের কি বুঝিস?
– ভাইয়াকে দেখলেই বুঝা যায়।ভাইয়া যে ভাবে তোর দিকে তাকায়,চোখ দেখলেই বোজা যায়। আর আমি প্রেম বুজবো না মানে কি? আমার গার্লফ্রেন্ড আছেনা?
তিন্নি অবাক হয়ে বললো
-তোর গার্লফ্রেন্ড আছে মনে কি? এই তোর বয়স কতো?
– আপু প্রেমের ক্ষেত্রে বয়স ডাজন্ট ম্যাটার।তাছাড়া পাপা জানে আমার গফ এর কথা।
– কি? পাপা জানে আর তোকে সাপোর্ট ও করছে?
– হম! পাপা তো বলেছে আমি একটু বড় হয়ে ভালো জব করতে পড়লে মাইসার সাথে আমার বিয়ে দিবে।
তিন্নি এবার অনেক অবাক হলো।তার এই পিচ্চি ভাই কিনা তাকে প্রেম শিখাচ্ছে।এই বয়সেই সে গফ নিয়ে ঘোরে। তাহলে আমি জীবনে কি করলাম? আর পাপা ওকে কিছু না বলে আরো বিয়ের রাস্তা দেখিয়ে দিচ্ছে।

সূচনা আজ সকাল থেকে ব্যস্ত।তিন্নি প্রথম তার বাসায় আসবে।এতো বছর পর তার ভাই জীবনে আপন বলতে কাউকে পেলো।একটা ফ্যামিলি হলো তার।তিন্নিকে বিয়ের সময় দেখে তার খুব ভালো লেগেছে।তার মনে হয়েছে তিন্নিই পারবে জিসানের জীবনে সর্বোচ্চ সুখ এনে দিতে। তিন্নিই পারবে জিসানকে গভীর ভাবে ভালোবাসতে।তাই সে তিন্নির অ্যাপায়নে কোনো প্রকার কমতি রাখতে চায়না।তাই সে সকাল থেকে বিভিন্ন খাবার আইটেম নিয়ে ব্যাস্ত।

আজকের সকালটা ছিলো জিসানের জন্য অন্যরকম।তার অনেক দিনের ইচ্ছাটা আজ পূরণ হলো।সকালে ঘুমথেকে উঠে তার মিষ্টি বউটার মুখ দেখার ইচ্ছা ছিলো।করো ঘুমের মধ্যেও আর্ট থাকতে পারে তা জিসানের জানা ছিলো না।মানুষ নাকি এলোমেলো ভাবে ঘুমায়।এই মেয়েতো ঘুমের মধ্যেও তার ফ্যাশন সেন্স নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। শুধু কিছু চুল এলোমেলো হয়ে তাই মুখে পড়ে আছে। জিসান না চাইতেও তার হাত তিন্নির চুলের দিকে।চুলটা মুখ থেকে সরাতে গিয়ে তার একটা ইচ্ছা জাগলো।সে নিজেকে কোনো ভাবে আটকাতে পারেনি সেই ইচ্ছা পূরণ করা থেকে।
জিসান ধান ভাঙ্গে সূচনার কলে। জিসান কলটা রিসিভ করলো।
-হ্যালো!!সূচনা বল?
– কীরে কখন থেকে কল দিচ্ছি ধরিস না কেন?
-আরে একটু ব্যস্ত ছিলাম।
-ওই রিয়াজের বাচ্চা তোকে এতো গুলা কাজ দিয়ে বসায় রাখছে তাই না?
-তেমন কিছু না। একটা কেস নিয়ে একটু ব্যাস্ত আছি।
-আচ্ছা যাই হোক। তিন্নি কি খেতে পছন্দ করে বলতো?
জিসান অবাক হয়ে গেলো। সে তো আসলেই জানেনা তিন্নি কি খেতে পছন্দ করে। তাই সে সূচনাকে বললো
-আমি ঠিক জানিনা রে।
-এই কেমন হাজব্যান্ড তুই? বউ কি খেতে পছন্দ করে সেটা জানিস না?
-কি করবো বল? আমি তো এখনো তিন্নির সাথে এতটা সময় কাটাইনি যে এসব জানবো।
-সকল বুদ্ধিমান লোকেরাই যে বউয়ের কাছে ধরা খেয়ে থাকে সেটা আজ স্বচক্ষে দেখলাম। আমাদের এই স্ট্রইক ACP যে বউয়ের সামনে বিড়াল হয়ে যায় তা যদি সবাই জানত।
-ফালতু বকিস নাতো।
-আচ্ছা শোন। ওই ব্যাটা রিয়াজকে বলিস বাসায় আসার সময় আইসক্রিম নিয়ে আসতে। আমার কাস্টারডের জন্য
লাগবে। কখন থেকে কল দিচ্ছি ব্যাটা ধরে না। তুই একটু বলে দিস তো।
-আচ্ছা সমস্যা নেই আমি নিয়ে আসবো।
-আচ্ছা শোন তাড়াতাড়ি চলে আসিস।
-আচ্ছা আমি এখন রাখছি।

বিকেলে অফিস থেকে বের হয়ে জিসান তিন্নিকে কল করলো রেডি হয়ে থাকতে। তার অলরেডি দেরি হয়ে গেছে। তাই সে আর তিন্নিদের বাসায় উঠবে না। তিন্নিকেই নিচে নামতে বললো।
তিন্নি রেডি হয়ে ড্রইং রুমে আসতেই বিথিকে দেখলো। বিথী অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। তিন্নি খুব বিরক্ত হলো বিথীর এই চাহুনিতে।সে বললো “এভাবে হা করে থাকিস না, মুখে মশা ঢুকবে।” বিথী তখনও অবাক হয়ে আছেন। সে এক দৌড় দিলো তিন্নির মায়ের রুমের দিকে। তিন্নি চলে আসলো নিচে কারন জিসান তার জন্য অপেক্ষা করছে।

10 মিনিট হলো জিসান অপেক্ষা করছে তিন্নির জন্য। হঠাৎ দেখল তিন্নি আসছে। তিন্নিকে দেখে জিসান কিছুটা থতমত খেয়ে গেলো।
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here