মেঘের আড়ালে বৃষ্টি পর্ব -০৭

#মেঘের_আড়ালে_বৃষ্টি
#সাত
#প্রজ্ঞা_জামান_দৃঢ়তা

বাংলাদেশে একমাত্র প্রবালদ্বীপ হচ্ছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ, যার আরেক নাম নারিকেল জিঞ্জিরা।
অনেক নারিকেল গাছ থাকার কারনে এর নাম নারিকেল জিঞ্জিরা হয়। চারপাশে ঘুরে দেখলেই এর নমুনা পাওয়া যায়।

সাবা, শশি, রোদ, সুচি,সনি সবাই ফ্রেশ হয়ে নেয়। এদিকে ছেলেরা ও ফ্রেশ হয়ে নেয়। প্রয়াস ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে। অনেকটা পথ জার্নি করায় অনেক ক্লান্ত লাগছে। ইচ্ছে করছে ঘুমিয়ে পড়তে। কিন্তু সব দায়িত্ব যেহেতু তাদের উপর তাই ঘুমালে চলবে না। সকাল প্রয়াসের পাশে শুয়ে বলল,

“প্রয়াস তুই মেয়েটাকে এখানে থাকতে থাকতে বলে দেয় যে তুই তাকে ভালোবাসিস। ফিরে গেলে যদি বলার সুযোগ না পাস?”

“আরে কী যে বলিস না সকাল যদি রোদেলা আমার কপালে থাকে তাকে আমিই পাব। সেটা এই পৃথিবীতে কেউ আটকাতে পারবে না। আসলে আমার একটু সময় চাই। জীবনে প্রথম দেখায় কাউকে ভালবাসা যায় কি-না আমি জানিনা। কিন্তু ভালোলাগা আর ভালোবাসার মাঝে যে বিস্তর ফারাক আছে। সেটা আমি জানি। তাই আমি আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন জায়গায় কোনো ভুল করতে চাই না। তুই তো জানিস আমি কেমন। সহজে মেয়েদের নিতে পারি না।
কিন্তু যেটায় আমি সিরিয়াস হই সেটা পৃথিবী উল্টে গেলেও কেউ আমার থেকে নিতে পারে না। তাই আমি সময় চাই। এমনো হতে পারে আমি কয়দিন রোদের কাছাকাছি থেকে তাকে আরও চিনতে পারব। নিজেকে বুঝতে পারব। একটা মানুষের সাথে সারাজীবন কাটানোর জন্য এই একটু সময় তো আমি নিতেই পারি কী বলিস? আমি এমন কোনো সম্পর্ক করতে চাই না যাতে দুদিন পর ভাঙতে হয়। এমন সম্পর্ক করতে চাই যা আমি সারাজীবন কাঁধে নয়, মননে বহন করতে পারব।”

“ঠিক আছে তুই যা ভালো বুঝিস। কিন্তু আবারও বলছি খুব বেশী দেরি করিস না। ভালবাসায় বেশী ধৈর্য দেখাতে নেই, ভালবাসায় অধৈর্য হলেই বরং ভালো।” সকাল হুঁসিয়ার করল তাকে।

” ওকে ডিয়ার! মনে থাকবে।”

প্রয়াসরা রুম থেকে বের হয়েছে, রোদদের দরজার সামনে এসে প্রয়াস নক করে।
সাবাকে ডাকে দরজা না খুলে সাবা বলল, “আমরা আসছি তোরা বেরিয়ে যা।”

“আচ্ছা দেরি করিস না। আমরা বাইরে আছি। “বলেই প্রয়াস চলে গেল।

রহিম, প্রয়াস,সকাল,রিসোর্টের বাইরে অপেক্ষা করছে রোদদের জন্য। তারা যে রিসোর্টে আছে এটার নাম,ড্রিম নাইট রিসোর্ট। এটা একটুখানি দূরে অন্যরা যেখানে আছে সেখান থেকে।
কাছাকাছি রিসোর্টে রুম পায়নি বলে এটায় এসেছে।

” ড্রিম নাইট রিসোর্ট দেখতে খুবই সুন্দর।
এই রিসোর্ট থেকে সরাসরি সমুদ্র দেখা যায়।
রিসোর্টের ভেতর অনেকগুলো দোলনা আছে। চাইলেই শুয়ে শুয়ে ও সমুদ্রের উত্তাল দেখা যায়।
চারপাশ খুবই সুন্দর। কিছু কিছু জায়গা এত সুন্দর যে সেখানে গেলে অতি রসকষহিন মানুষ ও সজীব হয়ে উঠে। এমনি একটা পরিবেশ এখানে আছে।

প্রয়াসের চোখ হঠাৎ আটকে যায় এক নন্দীনির দিকে, সেলোয়ার কামিজ পড়া অতি সাধারণ একটা মেয়েকে তার এত ভালো লাগছে কেন সে বুঝে না!
সবুজ এক কালার কামিজের সাথে,গরজিয়াস ফুলকারি ওড়না। চুলগুলো ফিশি বেনি করে সামনের দিকে দেয়া।
চোখে কাজল, ঘন পল্লব, ঠোঁটে হালকা গোলাপি রঙের লিপিস্টিক। এমন সাধারণ সাজে কাউকে এত সুন্দর লাগে জানতো না সে! একদম স্বর্গের অপ্সরীর মতো।
দূর কী সব ভাবছি আমি কি স্বর্গের অপ্সরী দেখেছি নাকি! আমি কী করে এসব ভাবতে পারি!

সাবা খোঁচা দিয়ে বলল, “প্রয়াস কেমন হেংলার মত তাকিয়ে আছিস জীবনে মেয়ে দেখিসনি নাকি?”

প্রয়াস একটু লজ্জা পেয়ে গেল। সকাল
বলল, ” আরে দেখব না কেন! সারাক্ষণইতো এই শাকচুন্নি আমাদের সাথে লেগে থাকে। না দেখার কী আছে!”

সাবা ক্ষেপে যায় হারমি সবসময় এমন করিস আমার সাথে।

“” এই তোরা আবার শুরু করলি? চল স্যার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।”

” নিশি বলল, ” দেখছিস দোস্ত কী হ্যান্ডসাম লাগছে প্রয়াস ভাইয়াকে! ওহ মাই গড আমি তো ফিদা হয়ে গেলাম। ”

” এই আস্তে বল শুনতে পাবে। শুরু হয়ে গেল তোর লুচুগিরি। লুচু মহিলা একটা। এই যে বেচেরা রহিম কত স্মার্ট আর তোর পেছনে ঘুরে তখনতো তোর ভালো লাগে না। কেন ওর সাথে প্রেম করলে তোর কি হয়?”

” প্লিজ রোদ এসব আবার বলছিস,তোকে কতবার বলব আমরা শুধু বন্ধু ব্যাস আর কিছু না।”

” আচ্ছা হইছে রাগ করিস না।” কথাটা বলেই রোদ প্রয়াসের দিকে আড় চোখে তাকাল। ছাই রঙা চেক শার্ট পড়েছে,পরনে গাঢ় নীল প্যান্ট। দেখতে ভীষণ সুন্দর লাগছে। স্নিগ্ধ ভালোলাগা তার চারপাশটায় চেয়ে গেল। ভাবল এটা আবার কেমন অনুভূতি! কই এমন তো কখনো হয়নি। রোদ খেয়াল করল ফর্সা গালে দুইদিনের খোঁচাখোঁচা দাড়িতে সুন্দর পবিত্রতায় চেয়ে আছে পুরো মুখ। এই প্রথম কোনো ছেলের দিকে চোখ আটকে গেল তার। ছয় ফিটের এই সুন্দর ছেলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে রোদকে। অজানা ভালো লাগা ক্রমশ ঘিরে ধরেছে তাকে।

সাবা বলল, “চল আমরা যাই?”
সবাই বেরিয়ে গেল।

★★★

সবাই এক সাথে খাবার খেয়ে নেয়। স্যার বললেন, “শোন আমি ভাবছি। আমরা দুই দলে ভাগ হব। এখানে তোমারা সবাই বড় হয়ে গেছ। তোমরা কেউই স্কুলে পড় না। সবাই নিজের ভাল মন্দ বুঝবে। প্রয়াস সকাল,তোমরা একদল নিয়ে বের হও, আর আমরা একদল নিয়ে বের হচ্ছি।

সবাই ঘুরবে তবে নিজেদের নিরাপত্তা মনে রাখবে। আর সন্ধ্যার মধ্যে সবাই রিসোর্টে ফিরবে।”

সবাই হ্যাঁ সুচক মাথা নাড়ায়। রোদেরা প্রয়াসদের সাথেই থাকে। এখন তারা চারদিক ঘুরে দেখবে। হাতে সময় বেশী নেই। তাই আজ রিসোর্টের চারপাশের জায়গা গুলোতে ঘুরবে।

হাঁটতে হাঁটতে তারা প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখছে। সমুদ্র এখন শান্ত, তার পাশে হাঁটছে তারা। কখন অশান্ত হয়ে যায় বলা যায় না। এটাই সমুদ্রের নিয়ম।
প্রয়াস খেয়াল করল রোদের মুখে কেমন খুশী খুশি ভাব দেখা যাচ্ছে।
একটুপর পর নিচু হয়ে হাতে পানি নিচ্ছে, তারপর ছুড়ে মারছে। কেমন একটা বাচ্চাদের মত খেলছে পানি নিয়ে।

সকাল সাবা পরিকল্পনা করে, প্রয়াস আর রোদকে একা ছেড়ে দিবে। যাতে তারা তাদের মত কিছুক্ষণ থাকতে পারে।

রোদের খেয়াল সমুদ্রে আর প্রয়াসের খেয়াল রোদে তাই তারা কেউ বুঝতে পারেনি। কখন সবাউ তাদের থেকে অনেকটা দূরে চলে গেছে।
সুচি রাহাতের সাথে ঘুরছে,সনি ও আছে তাদের সাথে রহিম ও আছে।

” রোদ পেছনে ফিরে বলল, “এই সনি দেখেছিস পানিগুলো কতটা স্বচ্ছ?”

পেছন ফিরতেই দেখে শুধু মাত্র প্রয়াস আছে বাকিরা অনেক দূরে চলে গেছে তাদের ছেড়ে।
রোদ বলল, ” আরে ওরা কোথায় গেল?”

প্রয়াস চারদিকে তাকিয়ে দেখলখ কেউ নেই।

বলল, “আসলেই ওরা আমাদের বলেও গেলো না!”

প্রয়াস যদিও বুঝতে পারে এটা সকালেরই কাজ। তবে সেটা মুখে প্রকাশ করল না। রোদ আর কিছু বলল না।

প্রয়াস বলল, ” চলো ওইদিকটায় ঘুরে দেখি ।সকালকে আমি কল দিয়ে বলছি আমাদের সাথে যেন যোগ দেয়। ”

“আচ্ছা।”

“আচ্ছা তোমার সমুদ্র ভালো লাগে নাকি পাহাড়?”

“দুটিই।”

“আচ্ছা আপনি জানেন এই জায়গার নাম কেন সেন্টমার্টিন রাখা হয়েছে?”

“সিওর জানিনা। আমি কেন কেউ সেভাবে জানেনা।তবে অনুমান করা হয় বৃটিশ ধর্মযাজক সেন্টের নাম অনুসারে এর নাম সেন্টমার্টিন রাখা হয়।
আবার আরেক দল লোক বলে,খৃিষ্টান সাধু মার্টিনের নাম অনুসারে এর নাম রাখা হয় সেন্টমার্টিন।
তাই কোনটা সত্যি তারাই জানে।
১৮৯০ সালে একদল মৎসজীবি আসে আর এখানে বসবাস শুরু করে। তারপর থেকে আস্তে আস্তে তারা হয়ে যায় এখানকার বাসিন্দা। এখানকার মানুষের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম মাছ ধরা।

“রোদ বলে,এটা পুরো জায়গাই কী সেন্টমার্টিন দ্বীপ?”

“হুম,এটি ১৭বর্গকিলোমিটার, ১৯০০ সালে বৃটিশের একদল এসে এটিকে বৃটিশ ভারতের স্থান হিসেবে গ্রহন করে। পরে যা বাংলাদেশের হয়।
বলা হয়ে থাকে,এখানকার মৎসজীবিরা তেত্রিশহাজার বছর ধরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে।”

রোদ প্রবাল পাথরে পা দিতে গেলে প্রয়াস তাকে বাধা দিয়ে বলল, “এই আস্তে এই পাথরগুলো খুবই পিচ্ছিল তাই সাবধানে। কখন কী অঘটন ঘটে যায় বলা যায় না।”

এই কথা বলার একটুপরই রোদ পিছলে পড়ে যেতে লাগে প্রয়াস ধরে নেয়।

প্রয়াস বলল, “এই মেয়ে তোমার কী পড়ে যাওয়ার বাতিক আছে নাকি? ”

“না শুধু আপনাকে দেখলে পড়ে যাই।”
মুখ ফসকে এটা বলার পর রোদ জিব্বাহায় কামড়ে ভাবে ধ্যাৎ কী বলে ফেললাম।

প্রয়াস মুচকি হাসছে রোদের কাণ্ড দেখে। বলল,
“বলেছিলাম সাবধানে হাটতে শুনলেনা।”

“আমার খুব ইচ্ছে করছে এক পাথর থেকে অন্য পাথরে যেতে। কিন্তু এত পিচ্ছিল যে পড়ে যাব ধ্যাৎ ভাল্লাগেনা।”

” প্রয়াস কী ভেবে যেন হাতটা রোদের দিকে বাড়িয়ে দেয়। হাত ধরো আমার। হাত ধরে হাঁটলে পড়ে যাবার সম্ভাবনা নেই। একটা সাপোর্ট থাকলে পড়বে না। তোমার ইচ্ছেটা ও পূরণ হবে।”

রোদ প্রথমে একটু ইতস্ততবোধ করলেও পরে হাত বাড়িয়ে দেয়।

দুজন অজানা অচেনা মানুষ হঠাৎ চেনা হয়ে গেল। দুজনের হাতের স্পর্শে দুজন। মনে হচ্ছে যেন এই কতদিনের চেনা তারা। কতজনমের টান।
প্রয়াস কেমন একটা তৃপ্তি অনুভব করছে। কিন্তু বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে। এক অজানা শিহরনে শিহরিত হচ্ছে মন প্রাণ। রোদের স্পর্শে যেন সেটা আরও বেড়ে গেছে। রোদ বকবক করছে কিন্তু তার কানে কিছুই ডুকছেনা। সে নিজেই জানে না তার কী হয়েছে!
এই অচেনা অনুভূতির সাথে এই প্রথম দেখা তার। তাই ভালো করে বুঝতে চাইছে এই অনুভূতির নাম কী?
এটাই কি ভালবাসা!
বুকের ভেতর কেমন শব্দ করছে। একেবারে অন্যরকম আবেশে মন ছুঁয়ে যাচ্ছে। ভালো লাগছে। খুব ভালো লাগছে। একেবারে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত ভালো লাগছে। কাছাকাছি আসায়,খুব কাছ থেকে রোদের ডান গালের পাশে তিলটার দিকে বারবার চোখ যাচ্ছে। গাঢ় কালো তিলটা যেন মুখের আদলের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

রোদের গায়ের মিষ্টি গন্ধ লাগছে প্রয়াসের নাকে।এটায় যেন কোনো মাদকতায় চেয়ে আছে চারপাশে।
একে তো সমুদ্রের গর্জন, হিমেল বাতাস,সময়টাই কেমন রোমান্টিক। তার উপর রোদ তার হাতে হাত রেখে হাটছে, এতো সুখ সুখ লাগছে কেন কে জানে!

হাঁটতে হাঁটতে দেখল এমন কয়েক জোড়া কপত _ কপতিকে যারা একে অপরের হাত ধরে হাঁটছে আবার ছবি তুলছে। একটা ১২-১৩ বছরের ছেলে ছবি তুলে দিচ্ছে সবাইকে।

ছেলেটা প্রয়াসকে বলল, “ভাই আসেন আপনার আর ভাবির ছবি তুলে দেই।”

প্রয়াস আর রোদ থমকে গেল। দুজনেই চমকে গেল।

রোদের মুখে লজ্জার আবির দেখা গেল। প্রয়াস নিজেকে সামলে বলল, ” আমরা ছবি তুলব না। তুমি যাও।”

“দেন না ভাই তুলে দেই। ছবি বিনিময়ে আপনি আমাকে কয়টা টাকা দিবেন এটাই আমার দরকার ভাই। মায়ের জন্যে ওষুধ কিনতে হবে।”

ছেলেটা এতো অনুনয় করে বললো যে। রোদ বলল, “আচ্ছা তুলে দাও।”

প্রয়াস অবাক হলো। রোদ বলছে ছবি তুলে দিতে।
এবার বড় একটা পাথরে দুজন পাশাপাশি বসে ছবি তুলে। রোদের হাত পাথরের উপর প্রয়াস হাত রাখতে গেলে রোদের হাতের উপর পড়ে যায়। দুজন চমকে দুজনের দিকে তাকায়। এমন সময় ছবি ক্লিক হয়ে যায়।

রোদ একা ও কয়েকটা ছবি তুলে।
দুজনে বেশকিছু ছবি তুলে।

রোদ নিজের পার্স থেকে ২০০টাকা বের করে দেয় ছেলেটাকে। ছেলেটা বলল, ” আপা সবাইতো দশ বিশ টাকা দেয়,আপনি এতো টাকা কেন দিচ্ছেন?”

“আরে এটা তোমার মায়ের জন্য ওষুধ নিয়ে যেও।”

ছেলেটা খুশী হয়ে বলল, “আপনারা দুজন খুব ভালো থাকবেন একসাথে। খুব মানাইছে দুজনরে। দোয়া করি আপনাদের জন্য।”

প্রয়াস মুগ্ধ হলো। এখনকার মেয়েরা তো অন্যের কথা ভাবে না। শুধু নিজেকে ছাড়া। এমন মেয়ে খুব কম দেখা যায়, যারা অন্যের জন্য ভাবে।
এটা দেখে প্রয়াসের মনে শান্তি লাগলো।

প্রয়াস রোদকে সামনে আগাতে বলল। রোদ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রয়াস ছেলেটার পেছনে গিয়ে তাকে ৫০০ টাকার নোট দেয়। বলল, ” তোমার মায়ের জন্য ফল নিয়ে যেও।”

এবার ছেলেটা কেঁদে ফেলল। প্রয়াস ছেলেটাকে বুকে জড়িয়ে বিদায় দিল।

রোদ পেছনে ফিরে দেখতেই দেখতে পেল প্রয়াস টাকা দিচ্ছে। আবার না দেখার ভান করে হাঁটছে সামনে।
রোদের এই ব্যাপারটা খুব ভালো লাগল। কিন্তু বুঝতে দিলো না।

আবার দুজন হাঁটছে। এক পাথর থেকে অন্য পাথরে। মাঝে মঝে ঢেউ এসে ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে তাদের পা।
এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে দুজনের মাঝে।
ভাবল ইশ! সময়টা যদি এখানে থেমে যেত!
যদি আজ সন্ধ্যা না নামতো। এভাবেই হেঁটে যেত বহুদূর!

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here