মেঘের বিপরীতে পর্ব ৩+৪

#মেঘের_বিপরীতে ( পর্ব ৩+৪ )

মৃদু রোদ চোখের পাতার ওপর পড়তেই রেহালের ঘুম ভাঙ্গলো। ভ্রুঁ দুটো কুঁচকে আস্তে আস্তে চোখ খুললো সে। নন্দিতা আয়নার সামনে বসে চুল আঁচড়াচ্ছে আর গুনগুন করে গান গাইছে। তার কন্ঠস্বর মিষ্টি। ভার্সিটিতে ভালো গায়িকা হিসেবে বেশ নাম ডাক ছিলো তার। বিয়ের পর প্রায় প্রতি রাতে ঘুমানোর সময় রেহাল নন্দিতার গান শুনতো। নন্দিতা এক হাত দিয়ে রেহালের চুলে হাত বুলিয়ে দিতো আর কানের কাছে মুখ নিয়ে নিচু স্বরে গান গাইতো। এখন অবশ্য ঘুমানোর জন্য নন্দিতার গানের প্রয়োজন হয় না। সারাদিনের ক্লান্তি চোখের পাতায় জেঁকে বসলে তাঁকিয়ে থাকা অসম্ভব হয়ে যায়। অন্যদিনের তুলোনায় নন্দিতাকে আজ বেশি প্রাণবন্ত দেখাচ্ছে। রেহাল গা থেকে কাথা সরিয়ে উঠে বসে।
“ঘুম হয়েছে?”
“হয়েছে। ক’টা বাজে?”
ড্রেসিং টেবিলের ওপর থেকে হাতঘড়িটা নিলো নন্দিতা।
“সাতটা বেজে দুই মিনিট।”
“তুমি রেডি?”
“অলমোস্ট রেডি।”
“ব্যাগ গুছিয়েছো?”
নন্দিতা অবাক হয়ে বললো,
“গতরাতে তোমার সামনেই তো ব্যাগ গুছালাম!”
রেহাল মনে করার চেষ্টা করলো। কিন্তু পারলো না। এই রোগটা আজকাল প্রকট রূপ ধারন করেছে। ভুলে যাওয়ার রোগ। মেডিকেল সাইন্সের ভাষায় এর নাম ডিমেনশিয়া। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মস্তিষ্কের নিউরন কমে যাচ্ছে তার। যার ফলাফল এই রোগ। হুটহাট সব ভুলে যায়। রেহাল একটু বিরক্ত হলো।
“আচ্ছা। আমি ফ্রেশ হয়ে আসি তাহলে। তুমি কি নাস্তা বানিয়ে ফেলেছো?”
“না। এখনো বানাই নি। সমস্যা নেই সময় লাগবে না। তুমি ফ্রেশ হয়ে আসতে আসতে হয়ে যাবে।”
“সেজন্য বলি নি। এত সকালে কিছু খেয়ে জার্নি করতে চাচ্ছি না। গাড়ি থামিয়ে রাস্তায় নেমে হোটেল থেকে কিছু খেয়ে নাওয়া যাবে। তোমার ক্ষুধা লাগলে হালকা কিছু খেয়ে নাও।”
“না ঠিকাছে। হোটেল থেকেই খেয়ে নিবো। তুমি যাও।”
রেহাল বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশরুমে গেলো। নন্দিতা নিজের কাজে মনোযোগ দিলো। এখনো তার কাজল পড়া বাকি। নন্দিতার সাজ দুটো পণ্যের মধ্যেই আবদ্ধ। কাজল আর লিপস্টিক। তার মতে নারীর সৌন্দর্য পূর্ণতা পায় চোখে কাজল আর ঠোঁটে রঙ ছোঁয়ালে। মাঝে মাঝে চোখে কাজল দিতে ভুলে গেলেও, ঠোঁটে লিপস্টিক লাগাতে কখনো ভুল হয় না তার।

গ্রামের রাস্তা দিয়ে রেহালের সাদা টয়োটা ত্বরিতগতিতে যাচ্ছে। দুপাশে সবুজ ক্ষেত, লম্বা লম্বা গাছ। থেকে থেকে মাথা উঁচু করে টং দাঁড়িয়ে আছে। নন্দিতা গাড়ির গ্লাস নামিয়ে আশেপাশে তাঁকিয়ে দেখছে। গ্রাম্য মাটির গন্ধ পাচ্ছে সে। ছোটবেলায় যখন বৃষ্টি হতো অন্যান্য বাচ্চারা বৃষ্টিতে ভিজে খেলতো। কাদায় গড়াগড়ি খেতো। কিন্তু নন্দিতার অল্পতেই ঠান্ডা লেগে যেতো। তাই তার বৃষ্টিতে ভেজা বারন ছিলো। মেয়েটা বারান্দায় পা ঝুলিয়ে বসে ভেজা মাটির তীব্র গন্ধ উপভোগ করতো। কখনো হয়তো মা-বাবার দৃষ্টি এড়িয়ে দু হাত সামনে এগিয়ে দিয়ে বৃষ্টির পানি ছুঁয়ে দেখতো। নন্দিতার বৃষ্টিবিলাস বলতে এইটুকুই ছিলো। রেহাল খুব মনোযোগ দিয়ে ফোন টিপছে। গাড়িতে মৃদুমন্দে রবীন্দ্রসংগীত বাজছে।
‘চক্ষে আমার তৃষ্ণা, ওগো তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে’
হোটেলে খিচুড়ি আর কালা ভুনা খেয়েছে তারা। নন্দিতার আবার চায়ের নেশা আছে। হোটেলে চা খাওয়া হয় নি। সে অনুনয়ের স্বরে বললো,
“রেহাল, চলো না টং এ বসে চা খাই?”
“বাইরে দাঁড়িয়ে চা খাওয়ার কি আছে! বাড়িতে গিয়ে একদম খেও।”
“আগে তো ক্লাস ফাঁকি দিয়ে টং এ বসেই চা খেতাম। বিষয়টা তুমিও অনেক উপভোগ করতে।”
রেহাল ফোন পকেটে ঢুকিয়ে রেখে নন্দিতার দিকে তাঁকিয়ে বললো,
“এখন কি আর সেই দিন আছে? বয়সের সাথে সাথে মানুষের স্বাদের পরিবর্তন হয়।”
“আমার স্বাদের কোনো পরিবর্তন হয় নি। তাই এখনো টং এ বসে চা খেতে ইচ্ছে করে। তাছাড়া এখানে চা খেতে যতটা ভালো লাগবে সেটা বাড়িতে লাগবে না।”
আশেপাশে ভালো করে তাঁকিয়ে রেহাল বললো,
“এখানে গাড়ি থামানো যাবে না নন্দিতা।”
“আচ্ছা।”
নন্দিতার মন খারাপ হয়ে গেলো। নিঃশব্দে সিটে হেলান দিয়ে আবার সে বাইরের দৃশ্য দেখতে লাগলো। গ্রামীন পরিবেশ খুব ভালো লাগে তার। এদের কর্মঠ জীবনে টাকার অভাব হয়তো আছে। তবে ভালোবাসার অভাব নেই। অথচ শহুরে জীবনে লাখ লাখ টাকা দিয়ে গড়ে তোলা বিল্ডিং এর ইট পাথরের নিচে ভালোবাসাটাই চাপা পড়ে যায়।
আচমকা গাড়ি থেমে যায়। খানিকটা চমকে উঠে নন্দিতা। রেহাল বললো,
“নামো গাড়ি থেকে।”
“কেনো? কি হয়েছে?”
“তুমি না চা খাবে? চলো সামনের টং এ বসে চা খাবো আমরা।”
নন্দিতা মুচকি হাসলো। রেহালের এই স্বভাবের সাথে সে পূর্বপরিচিত। মুখ ফুটে নন্দিতা কিছু আবদার করলে সেটা পূরণ হয় ঠিকই কিন্তু প্রথমে তেড়ে আসে – না বোধক কিছু শব্দ।
গাড়ি থেকে নেমে সামনের ভাঙ্গা টং টার দিকে এগোতে থাকে দুজন। একজন বৃদ্ধবয়সী লোক চা বানাচ্ছেন সেখানে। সস্তা কিছু চিপস ঝুলানো আছে টং এর সামনে। বৈয়ামে রয়েছে বেলা বিস্কুট, ক্রীম রোল। পলিথিনে কিছু রুটিও আছে। লোকটি একা টং সামলাচ্ছে না, সাথে বারো কি তেরো বছরের একটি বাচ্চা ছেলেও আছে। চুলার পাশে রেডিও রাখা। সেখান থেকে পুরোনো দিনের গানের সুর ভেসে আসছে। রেহাল দোকানদারের কাছে গিয়ে বললো,
“চাচা, দু’কাপ দুধ চা দিবেন।”
বৃদ্ধ মাথা নাড়লো। উত্তর দিলো না।
দোকানের সামনের পাতা বেঞ্চে মধ্যবয়সী লোকেদের আড্ডা। তাদের মধ্যে একজন মুখভর্তি করে পান চিবোচ্ছে আর ফরফর করে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ছে। মাঝে মধ্যে উলটো ঘুরে পানের পিচকি ফেলছে। রেহালের গা গুলিয়ে উঠলো। দ্রুত এই স্থান পরিত্যাগ করাই শ্রেয়। একটু দূরে নন্দিতা দাঁড়িয়ে আছে। রেহাল শান্ত ভঙ্গিতে তার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।
“কি দেখছো?”
“দেখছি। সময়ের সাথে সাথে সবকিছু কেমন পালটে যায়! বছরখানিকের ব্যবধানে পাকা রাস্তা হয়ে গেছে। অবশ্য সময় আগের মানুষটাকেই পালটে দেয়, এতোটা অবাক হওয়ার কিছু নেই।”
নন্দিতার কন্ঠস্বরে অভিমানের আভাস পাওয়া যায়। রেহাল আলতো করে নন্দিতার হাত ধরে। বাতাসে নন্দিতার চুল উড়ছে। মিষ্টি ঘ্রাণ সেই চুলে। অনেকদিন নন্দিতার চুলে এমন ঘ্রাণ পায় নি রেহাল। গতকাল রিক্সাতেও নয়। আসলেই কি পায় নি নাকি ঘ্রাণ নাওয়ার সময়টুকু হয়ে উঠেনি তার? মস্তিষ্কে আরো একবার দ্বন্দ শুরু হয়। এমন সময় পেছোন থেকে ডাক শোনা যায়,
“মামা, আফনাগো চা।”
বাচ্চা ছেলেটার হাত থেকে চা নিয়ে রেহাল জিজ্ঞেস করে,
“নাম কি তোর?”
“কালাম।”
“দোকানদার চাচা তোর কি লাগে?”
“আমার দাদা।”
“আচ্ছা। এই নে কালাম, এইটা চায়ের বিল। আর এই বিশ টাকা তুই রাখ। একটু পর এসে কাপ দুটো নিয়ে যাবি।”
কালাম সবগুলি দাঁতকপাটি বের করে উচ্চস্বরে ” আইচ্ছা মামা ” বলে চলে গেলো।
রেহাল আবার নন্দিতার হাত ধরলো। বাতাসের তীব্রতা বেড়ে চলছে। চতুর্দিকে ঘাসফড়িং উড়ে বেড়াচ্ছে। গাছের পাতার আড়াল থেকে নাম না জানা পাখি অনবরত ডেকে চলেছে। রেহাল ডুবে আছে নন্দিতার চুলের ঘ্রাণে। বিষয়টা নন্দিতার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। মনে মনে হাসছে সে। সবসময় প্রকাশ্যে হাসতে ভালোলাগে না। কেনো লাগে না তার কোনো উত্তর নেই। সব ‘কেনো’র উত্তর থাকলে রহস্য বলে এই পৃথিবীতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকবে না। একটু অস্বস্তি নিয়ে চায়ের কাপে চুমুক দেয় নন্দিতা।

(চলবে…)

#মেঘের_বিপরীতে
(পর্ব-8)
রফিক সাহেব মাছের বাজারে দাঁড়িয়ে আছেন। একটা বড় রুই মাছ তার ভীষণ পচ্ছন্দ হয়েছে। লোভাতুর দৃষ্টি তার চোখে। অন্য একজন ক্রেতা মাছটার দাম নিয়ে বিক্রেতার সাথে তুমুল নটখট শুরু করে দিয়েছে। রফিক জানে লোকটি শেষ পর্যন্ত মাছ কিনবে না। এমন দৃশ্য মাছের বাজারে অহরহ দেখা যায়। দরদামে পটু ক্রেতারা শেষ পর্যন্ত খালি হাতেই ফিরে যায়। কানের কাছে মাছি ভনভন করছে। রফিক সাহেবের চোখে মুখে বিরক্তি। বিক্রেতা লোকটিকে বলেই চলেছে,
_” ভাই এই মাছ ৯০০ ট্যাহার নিচে বিক্রি করাই যাইবো না ”
_ ” আমি ৬০০ টাকা দিবো ”
_ ” তাইলে তো ভাই হইবোনা ভাই। এই মাছ ৯০০ ট্যাহার একটাহা কমেও দাওয়া সম্ভব না। আপনি অইলো আমার রেগুলার কাস্টুমার! আফনারে ঠকায়া তো আমার কোনো লাভ নাই ভাই। একদাম ভাই ৯০০ ট্যাহা ”
ক্রেতা হাল ছেড়ে দিলো। অন্য দিকে পা বাড়ালো। মাছ বিক্রেতা জিল্লুর চোখে বিজয়ের আঁক। রফিক সাহেবের দিকে চোখ পড়তেই জিল্লু চিরচেনা হাঁক ছাড়লো,
_ ” আরে রফিক ভাই দেখি! আহেন আহেন। এইদিকে আহেন ”
রফিক হাসিমুখে এগিয়ে গেলো।
_ ” ভাই কোন মাছ নিবেন? সব নদীর মাছ ভাই। টাটকা। একদম ফেরেশ! টাটকিনি নিবেন ভাই? আফায় তো পচ্ছন্দ করে। ”
_ ” না জিল্লু। তুমি আমাকে রুই মাছটা দাও। ”
এই বলে রফিক পকেট থেকে আধ ময়লা ১০০০ টাকার নোটটা বের করে জিল্লুর দিকে এগিয়ে দিলো। জিল্লুর চোখ চকচক করছে। টাকাটা বাক্সে রেখে জিল্লু বললো,
_ ” এই মাছের ভাই সেই স্বাদ! একটা তো বাসায় বউ এর হাতে দিয়া আইছি। কইছি ভালোমতো মশলা দিয়ে ঝোল রান্ধিবা। দুপুরে বউ বাচ্চা লইয়া খামু। তয় মাছটা কি কাইটা দিমু ভাই? ”
_ ” দাও। ”
জিল্লু মাছ ভালো মতো ধুয়ে কাটায় ব্যস্ত হয়ে গেলো। রফিক দাঁড়িয়ে আনন্দ নিয়ে মাছ কাটা দেখছে। আজ সে ভীষন খুশি। প্রায় এক বছর পর তার একমাত্র মেয়ে নন্দিতা আসছে বাড়িতে। রুই মাছ তার ভীষণ পচ্ছন্দ। জিল্লুর মতো আজও সে তার বউ আর মেয়েকে নিয়ে দুপুরে একসাথে খাবে। বড় ছেলেটা সাথে থাকলে তার বাসা পূর্ণতা পেতো বটে, তবে জীবন মানেই অপূর্ণতা। রফিক সাহেব দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।
জিল্লু মাছের টুকরো গুলো পলিথিনে ভরে রফিক সাহেবের হাতে দিলো। বাক্স খুলে ১৫০ টাকা নিয়ে রফিক সাহেবকে ফেরত দিতে দিতে বললো,
_ ৫০ ট্যাহা কম রাখলাম, ভাই।
রফিক মৃদু হেসে টাকাটা নিয়ে বাড়ির পথে পা বাড়ালো।
.
বারো তলার এসি রুমে অর্চিতা বসে আছে। তার বস আজকেও লেট। অফিসের অন্যান্য স্টাফদের কাছে শুনেছে তার বস নাকি খুব ডিসিপ্লিন মেনে চলে। সময় নিয়ন্ত্রণে বেশ দক্ষ। অর্চিতার এমনটা মনে হয় না। গতকাল তো উনি অজ্ঞাত কারনে আসেই নি, আজকেও ৯ টায় আসার কথা। এখন প্রায় ১২ টা বেজে চললো তার দেখা নেই। সোফা থেকে উঠে রেহালের টেবিলের দিকে গুটি পায়ে এগিয়ে যেতে থাকে অর্চিতা। কলমদানির পাশে সুন্দর একটা নেইম প্লেইট রাখা আছে। তাতে লিখা “রেহাল ইসলাম”।
বসের নাম অর্চিতার পচ্ছন্দ হয়েছে। যে কারো নাম শোনার পর তার চেহারা কেমন হতে পারে তার একটা স্ট্রাকচার অর্চিতা তার কল্পনায় এঁকে ফেলতে পারে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় সেই মানুষটার চেহারা সাথে তার কল্পনার মানুষটার চেহারা ৮০ ভাগ হলেও মিলে যায়। কিন্তু রেহালের ক্ষেত্রে এমনটা হচ্ছে না। বিষয়টা নিয়ে অর্চিতা কিছুটা চিন্তিত। চলন্ত গাড়ি হঠাৎ ব্রেক কষলে যাত্রীরা যেমন চিন্তায় পড়ে যায়, ওর কাছেও ব্যাপারটা তেমন। অর্চিতার রুমটা ছোট। টেবিলের ওপর একটা কম্পিউটার আর চেয়ার ছাড়া অন্য কোনো আসবাবপত্র নেই। সৌন্দর্যের জন্য চেয়ারের দুই পাশে দুটো টবে পাতাবাহার গাছ লাগানো আছে। রেহালের ঘরের একাংশই থাই গ্লাসের পার্টিশন দিয়ে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। এমন সময় দরজায় টোকা পড়লো।
_ ” কাম ইন, প্লিজ। ”
কালু রুমে ঢুকলো। কালু এই ডিউ লাইট কম্পানির একজন কেরানী। অল্প বয়সী। ভালো নাম কিসলু। গায়ের রঙ কালো বলে সবাই কালু বলে ডাকে। ওর কাজ শুধু চা-কফি বানানো আর দোকান থেকে অন্যান্য স্টাফদের বাজার সদাই ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস এনে দেওয়া।
_ ” ম্যাডাম, বস আজকেও আইসবে না। ”
_ ” কেনো? ”
_ ” উনি শহরে নাই। বউ লইয়া বাইত্তে গেসে। পরদিন আইসবে ”
অর্চিতার মেজাজ বিগড়ে গেলো। মেজাজ বিগড়ে গেলে তার প্রচন্ড মাথা ব্যাথা হয়। ওষুধেও কোনো কাজ হয় না।
_ ” কালু, আমাকে একটু চা খাওয়াতে পারবে? ”
_ “অবশ্যই ম্যাডাম। ”
কালু খুশিমনে চা বানাতে গেলো। এই অফিসের অনেককেই তার পচ্ছন্দ হয় না। যাদের পচ্ছন্দ হয় না তাদের চা বা কফিতে কালু নিজের থুথু মিশিয়ে দেয়। প্রতি চুমুকে যখন স্টাফগুলো কালুর চা বা কফির প্রশংসা করে, তখন ছেলেটা হাসে। রহস্যময় হাসি। কিন্তু অর্চিতাকে তার পচ্ছন্দ হয়েছে। তাই খুব সাবধানে চা বানাতে হবে। ফার্স্ট ক্লাস এককাপ চা করে খাওয়াবে সে তার ম্যাডামকে।
অর্চিতা আবার সোফায় গিয়ে গা এলিয়ে দিলো। মাথা ব্যাথায় চোখ বন্ধ হয়ে আসছে তার। কর্ণিয়া জ্বলছে। চা খেয়ে অফিস থেকে বাসায় গিয়ে ঘুমাবে বলে ঠিক করলো অর্চিতা। ফার্মেসি থেকে ঘুমের ওষুধ কিনতে হবে। কয়েক ঘন্টা টানা ঘুমোতে হবে। যাকে বলে সাউন্ড স্লিপ।

_____(চলবে)______________

©#Atia_Adiba

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here