মেঘ-বৃষ্টি ❤❤পর্ব=৯

0
3018

#মেঘ-বৃষ্টি
❤❤পর্ব=৯
রোদ-রোদেলা

#তানিয়া[আনিতা]

হঠাৎ আযানের ধ্বনিতে ধ্যান ফিরল বৃষ্টির। বৃষ্টি বুঝতে পারল, সারারত সে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল। অতীত নিয়ে এতোটাই মগ্ন ছিল যে কখন ভোর হয়ে গেছে টেরও পায়নি। অনেক কষ্টে রুমের দিকে পা বাড়ালো, সারারাত কান্না করায় শরীরে একটুও শক্তি নাই তবুও লাগেজ থেকে একটা থ্রী পিছ নিয়ে ওয়াশরুমে গেল শাওয়ার নিতে। প্রায় ২০ মিনিট পর বের হয়ে ফজরের নামাজ পড়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ঘুমিয়ে পড়ল। গতকালের এতো ধকল তার ওপর সারারাত কান্না করায় বড্ড ক্লান্ত ছিল যার জন্য ঘুম আসতে ও সময় লাগেনি।এদিকে মেঘ সারারাত রুমে আসেনি কারণ সে জানে যদি সে রুমে আসে তবে বৃষ্টি আবারও পাগলামি করবে তাই সে রাতটা ছাদে কাটিয়ে দিল।
,
,
,
,
,
,
সকাল ৮ টা।মেঘের চোখ খুলতে মেঘ দেখল সে দোলনায়। সে বুঝতে পারল বৃষ্টি সারারাত রুমে একা ছিল তাই সে দ্রুত উঠে রুমের দিকে পা বাড়ালো কিন্তু পরক্ষণে থেমে গেল সে ভাবতে লাগলো বৃষ্টি যদি তাকে দেখে তবে কেমন রিয়েক্ট করবে আবার না গেলেও খারাপ লাগছে কারণ নতুন পরিবেশ কিছু যদি দরকার হয় তাহলে কাকে বলবে এভাবে কিছুক্ষণ ভেবে ঠিক করল সে রুমে যাবে এরপর যা হওয়ার হবে।সাতপাঁচ ভেবে সে রুমে গেল কিন্তু রুমে ঢুকে সে থ হয়ে গেল কারণ বৃষ্টি ঘুমিয়ে আছে কিন্তু মেঘ ভেবেছিল হয়তো জেগে থাকবে একদিকে ভালোই হয়েছে মেঘকে দেখে কোনোরকম সমস্যা করবেনা মেঘ আস্তে আস্তে করে বৃষ্টির সামনে গিয়ে একটা টুল নিয়ে বসল তারপর বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বলল
,
,
,
,
——- আচ্ছা আমি কি সত্যি খুব খারাপ, আমাকে কি একটুও ভালোবাসা যায় না, আমি যে তোমার ভালোবাসার বড্ড কাঙ্গাল তাই তোমাকে নিজের করে পাওয়ার জন্য এতোবড় মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছি শুধু তাই নয় আমার মাকেও মিথ্যা বলেছি বলেছি তুমি আমাকে ভালোবাসো যদি মা কখন জানতে পারে সত্যিটা তাহলে যে বড্ড কষ্ট পাবে কেন এমন পাগলামি করো আমাকে কি মেনে নিতে পারো না, পারো না কি একটু ভালেবাসতে, আমি অপেক্ষা করব তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য।
,
,
,
,
,
হঠাৎ বৃষ্টির নড়ে ওঠার আবাস পেতেই মেঘ দ্রুত গতিতে ওয়াশরুমে চলে গেল কারণ সে চাই না বৃষ্টি চোখ খুলে তাকে দেখে কোনো রিয়েক্ট করুক। ওয়াশরুম থেকে এসে রেডি হয়ে রুম থেকে বের হতে যাবে পরক্ষণে আবার বৃষ্টির কাছে গিয়ে বৃষ্টির কপালে ঠোঁট ছুয়ে দিয়ে মায়ের রুমের দিকে হাটা দিল।

——মা আসব

——আরে আই এটা আবার জিজ্ঞেস করার কি আছে বউমা কি ঘুম থেকে উঠেছে

——না আসলে বুঝতেই তো পারছো কাল ওর ওপর অনেক ধকল গেছে তাই আর ওকে ডাকিনি কেন কিছু কি বলবে

——হুম আমি আরো তোর সাথে কথা বলার জন্য তোর কাছে যাচ্ছিলাম ভালোই হলো চলে এলি এখানে বলে ফেলতে পারব

——কি কথা গুরুত্বপূর্ণ কিছু

——হুম আসলে তোদের বিয়েটা এমনভাবে হয়ে গেল যে কাউকে জানাতেও পারলাম না তাই চিন্তা করলাম একেবারে বউভাতের অনুষ্ঠানে সবাইকে দাওয়াত দিব কারণ সোসাইটি বলেও একটা কথা আছে তাই আরকি

মেঘ কিছুক্ষন মায়ের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে বলল

——ঠিক আছে তাহলে আমি সবাইকে দাওয়াত দিতে বের হচ্ছি তোমার বউমা উঠলে তাকে একটু জানিয়ে দিও বলে বের হতে গিয়ে মায়ের কথা শুনে পেছনে ফিরে তাকালো

——মেঘ বাবা বৃষ্টির মাকেও বলিস হাজার হোক মায়ের মন বলে কথা হয়তো রেগে আছে কিন্তু সন্তানের ওপর আর কতোক্ষণব্যাপী রাগ করে থাকবে তাই তুই গিয়ে বললো ওনি কখনো না করবে না

——ঠিক আছে মা আমি ওনাকে আসতে বলব বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
,
,
,
,
এইদিকে বৃষ্টি এখনো ঘুমের মধ্যে হঠাৎ দরজার শব্দ কানে আসতেই ঘুম ভেঙে গেল বিছানা ছেড়ে ঘড়ির দিকে তাকাতে দেখতে পেল সকাল ১০ টা বাজে তাই দ্রুত উঠে দরজা খুলে দেখতে পেল তার শ্বাশুড়ি মা দাঁড়িয়ে আছে ওনাকে সালাম করে রুমে এসে বসালো তারপর ওনি বলে উঠল,

——কিরে মা ঘুম হলো, কোনো সমস্যা হয়নি তো?

——না না মা কোনো সমস্যা হয়নি আর ঘুম ও ভালো হয়েছে

——-ও ভালো আমি তোদের ব্যাপারে সব জানি কাল মেঘ আমায় সব বলেছে, আমি জানি আমার ছেলে অন্যায় করেছে কিন্তু ও তোকে খুব ভালোবাসে তাই ওর পাগলামি গুলো তে রাগ করিস না ও কিন্তু অনেক ভালো ছেলে দেখিস তোর কোনো কষ্ট হবে না

——————————–

——আচ্ছা যার জন্য তোর কাছে আাসা, আসলে তোদের বিয়েটা এমনভাবে হলো যে কাউকে জানাতেও পারলাম না কিন্তু তুই তো জানিস আমাদের অনেক বড় বিজনেস তাছাড়া আত্মীয় স্বজনও আছে তাই আমি ঠিক করেছি কাল একটা বউভাতের অনুষ্ঠান করে সবাইকে তোর সাথে পরিচয় করিয়ে দিব আর তোর মায়ের সাথে একেবারে দেখা আর কথাও হয়ে যাবে কি বলিস। ,
,
,

কথাটা শুনে বৃষ্টি পুরো স্তব্ধ হয়ে গেল কারণ এমন কিছু হবে সে আশাও করেনি তারওপর ওনি যদি সত্যিটা জানেন তবে এখনো ছেলের সাফাই গাইছেন কেন আদোও সত্যিটা জানে তো নাকি ওনি মিথ্যা বলেছেন কারন ওনি সব পারে এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ শ্বাশুরির ডাকে ছেদ পরল

——কিরে মা কি ভাবছিস তোর কোনো আপত্তি নেই তো

——মা ওনি কি জানেন এসব কথা

——হুম ও জানে শুধু তোর মত জানতে চেয়েছে এখন তুই বললে হবে, না করিস না মা

——ওনি যখন জানেন তাহলে না করলে মা কষ্ট পাবে তাই নাও বলা যাবে না (মনে মনে) আচ্ছা ঠিক আছে আপনি যা ভালো মনে করেন

——এতো আমার লক্ষী মেয়ে যায় তাহলে তো অনেক কাজ পরে আছে তুই একটা কাজ কর রোদেলার সাথে গিয়ে কালকের অনুষ্ঠানের জন্য কিছু শপিং করতে যা এতে মনও ভালো হবে, দাড়া আমি রোদেলাকে ডেকে দিচ্ছি এই বলে বের হতে যাবে বৃষ্টি ডাক দেয়

——মা কিছু যদি মনে না করেন ওনি কোথায়

——মেঘ ওতো সেই সকালে বের হয়েছে সবাইকে দাওয়াত দিতে বুঝতেই তো পারছিস বাড়িতে ছেলে বলতে ও একজন তাই বাসার সব কাজ ওকেই করতে হয়। তোর শ্বশুর মারা যাওয়ার পর পুরো সংসারের হাল ওকে ধরতে হয়। আগে আমাদের বিজনেস ছোট ছিল কিন্তু ওর প্রচেষ্টায় এখন আমরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছি শুধু ওর জন্য। দেখ কোত্থেকে কোথায় চলে যাচ্ছি। আচ্ছা তুই বস আমি রোদেলাকে দিয়ে তোর খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি খেয়ে ওকে নিয়ে শপিং করতে বের হবি বলে বের হয়ে যায়।
,
,
,
,
এদিকে বৃষ্টি ভাবে একটা মানুষ কই রূপের হয় পরিবারের কাছে একরকম আবার বাইরের মানুষের কাছে একরকম। কিন্তু ওর মাথায় একটাই কথা ঘুরছে মেঘের মা কি সত্যিটা জানেন ওনাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে ওনি যথেষ্ট ভালো মনের মানুষ তাহলে ওনি মেঘকে কিছু বললেন না কেন আবার পরক্ষণে ভাবল হয়তো ছেলের সুখের জন্য ওনি এই অন্যায় কাজটা মেনে নিয়েছেন এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দরজার দিকে কারো আওয়াজ শুনে তাকালো

——আসব?

——আরে এসো এসো। তুমি কি রোদেলা

——হুম আমি রোদেলা তোমার একমাত্র ননদ এখন কেমন লাগছে তোমার আসলে কালকে দেখে তোমাকে খুব ক্লান্ত লাগছিলো তাই আর কথা বলিনি।

——হুম ভালো এখানে কি তোমরা তিনজন থাকো

——হুম আগে তো তিনজন ছিলাম কিন্তু এখন থেকে চারজন তুমিসহ বলে হেসে দিল

তারপর খেয়ে রওনা দিল শপিং এর জন্য। সারাদিন শপিং করে দুজন খুব ক্লান্ত থাকায় বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে নিল।এদিকে সারাদিনেও একবারও মেঘের সাথে দেখা হয় নি বৃষ্টির কারণ মেঘ সেই সকালে বের হয়েছে এখনো বাসায় আসেনি।বৃষ্টি দুপুরে খেয়ে ফোন হাতে নিল রোদকে কল দিতে কিন্তু তার মনে ভয় হচ্ছে যদি রোদ রিসিভ না করে অথবা ওলোট পালোট কথা বলে তবুও সে রোদকে কল দিল কারণ রোদের মনে যে ভুল জন্ম নিয়েছে তা ভাঙতেই হবে। তাই রোদকে কল দিয়ে দিল দুবার রিং পরার পরও যখন রোদ কল ধরছে না বৃষ্টি খুব টেনশনে পরে গেল কারণ বৃষ্টি জানে রোদ অনেক অভিমানি ছেলে। হঠাৎ তার ফোনের রিং বেজে উঠলে বৃষ্টি ফোন হাতে নিয়ে দেখে রোদ কল করেছে খুশি মনে রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে উঠল

—— কেন কল করেছেন আর কি চাই আপনার আমার বাবা মা কে অপমান করে ক্রান্ত হননি এখন কেন কল দিছেন

রোদের কথা শুনে বৃষ্টির চোখ থেকে আপনাআপনি জল গরিয়ে পরল কারণ যে বৃষ্টি একটু আঘাত পেলে রোদ কষ্ট পেত আজ সেই রোদের কথায় কেমন জানি আঘাত পাচ্ছে বৃষ্টি তবুও নিজেকে শক্ত করে বলে উঠল

——কেমন আছিস রোদ

——কেমন আছি সেটা তো আপনার ভালো জানা কথা তাহলে জিজ্ঞেস করছেন কেন

——আমি জানি তুই আমার ওপর রেগে আছিস শুধু তাই নয় আমি এখন তোকে যায় বলিনা কেন তুই আমাকে বিশ্বাস করবিনা তাও আমি তোকে কিছু বলতে চাই

—— আরকি বলার আছে আপনার যদি সত্যি কিছু বলতে চাইতেন তবে কখনো আমার কাছে এতোগুলা সত্যি কথা লুকাতে পারতেন না আর কি জানি বলছিলেন বিশ্বাস সেটা তো কখনো সম্ভব না কারণ নিজের থেকে ও বেশি বিশ্বাস করে ঠকেছি তাই এখনো বিশ্বাস শব্দের প্রতি বিশ্বাসটাই উঠে গেছে

——প্লিজ রোদ এমন আঘাত করে কথা বলিস না আমি নিতে পারছি না তুই আমাকে একটা সুযোগ দে আমি তোকে সব বুঝিয়ে বলতে চাই এরপরও যদি তোর আমার ওপর কোনো অভিযোগ থাকে তবে আমি তোকে আর কিছু বলবনা। কাল আমার বউভাতের অনুষ্ঠান করা হবে আমি চাই তুই আসবি প্লিজ না করিসনা কারণ ফোনে সব কথা বলা সম্ভব না আমি তোকে সরাসরি বলতে চাই কি আসবি তো

————-

——কি হলো তুই চুপ করে আছিস যে উত্তর দে কাল আসবি তো প্লিজ

——আচ্ছা চেষ্টা করব এখন রাখি

——-না কোনো চেষ্টা না তোকে আসতেই হবে

——-ওকে আসব বলে ফোনটা কেটে দিল তারপর জানলার কাছে গিয়ে দাড়িয়ে বাইরে চেয়ে রইল হঠাৎ কারো স্পর্শ পেয়ে চোখের জল মুছে পেছনে ফিরে দেখল তার মা

——মা তুমি কিছু কি বলবে

——আমাদের মাফ করে দিস বাবা আমরা না জেনে তোকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি আমরা বুঝতে পারি নি মেয়েটা আমাদের কে এভাবে অপমান করবে আমরা তোকে আরো ভালো ঘরে বিয়ে দিব তুই ওকে ভুলে যা

—— মা বাদ দাও এসব কথা শুনতে ভালো লাগছে না যা হওয়ার হয়েছে আমাকে একটু একা থাকতে দাও

কথা টি শুনে তিনি শাড়ির আঁচলে মুখ গুজে কান্না করতে করতে চলে গেলেন আর রোদ দাঁড়িয়ে পুরোনো কথাগুলো ভাবতে লাগলো।

সন্ধ্যার দিকে রোদ আর তার বাবা অফিসের কাজ নিয়ে ড্রয়িংরুমে কথা বলছিল এমন সময় কলিং বেলের আওয়াজে রোদ গিয়ে দরজা খুলতেই দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটাকে দেখে

——আপনি? এখানে কেন এসেছেন

——বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলব ভেতরে আসতে বলবেন না

——আসুন

কথাটা বলেই ভেতরে ঢুকে গেল

——তো বলুন মি.মেঘ এখানে কেন

—— আসলে দাওয়াত দিতে এসেছি কাল বৃষ্টির বউভাত তোমাকে তো জানাতেই হবে আফটার দ্যাট বৃষ্টির খুব ক্লোজ বন্ধু বলে কথা তুমি না গেলে তো বৃষ্টি রাগ করবে তাই তোমাকে মানে তোমার পরিবারকে জানাতে আসলাম কাল সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান তাই তোমার বাবা মাসহ কাল চলে যাবে বলে বেরিয়ে যেতে নিলে আবার কি মনে করে পেছনে ফিরে বলে

——সরি গতকালকের ব্যবহারের জন্য আসলে বৃষ্টিকে কেউ কিছু বললে মাথা ঠিক থাকে না কারণ বড্ড বেশি ভালোবাসি মেয়েটাকে তাই রোদের মায়ের সামনে গিয়ে আন্টি মাফ করে দিবেন প্লিজ রাগ করে থাকবেন না বলে চলে গেল

এদিকে রোদের মা রেগে বোম তিনি বলে উঠলেন

——কতো বড় সাহস ছেলেটার আমাদের বাসায় এসে আবার দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে কাল অপমান করে আজ ক্ষমা চইছে নিকুচি পরেছে ওদের দাওয়াতের কিরে রোদ তুই কিছু বললি না কেন

—— কি বলব মা

—— মুখের ওপর বলে দিতি যে তুই যাবি না

—— না মা আমি যাব বৃষ্টি কেন করল এমনটা আমি সেটা বৃষ্টির মুখ থেকে জানতে চায় তাই আমাকে যেতে হবে

কথা টা শুনে রোদের মা বলল

——কি বললি তুই পাগল হয়ে গিয়েছিস যে মেয়ের জন্য আমরা অপমানিত হয়েছি তুই তার সাথে দেখা করবি তাও ও বাড়িতে

——প্লিজ মা তুমি না করনা আমাকে যে হিসাবটা মিলাতেই হবে

——তুই যা ভালো মনে করিস কর আমি কিছু বলবনা

কথা টা বলে তিনি হনহন করে রুমে চলে গেলেন। রোদ দাঁড়িয়ে মনে মনে বল্ল যেতে তো হবেই আমাকে শুধু অপেক্ষার পালা কালকের দিনটার জন্য………
,
,
,
,
,,
চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here