❤মেঘ_বৃষ্টি❤স্পেশাল পর্ব

❤মেঘ_বৃষ্টি❤স্পেশাল পর্ব

#তানিয়া_আনিতা

মেঘ সবে মাত্র অফিস থেকে ফিরেছে।রুমে গিয়ে দেখে বৃষ্টি আলমারিতে কাপড় ঠিক করছে।মেঘ নিঃশব্দে পা টিপে টিপে গিয়েই বৃষ্টিকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে।কাঁধে ছোট একটা চুমু দিয়ে বৃষ্টির চুলে মুখ গুজিয়ে দেয়। এদিকে হঠাৎ করে কেউ বৃষ্টিকে জরিয়ে ধরায় বৃষ্টি কিছুটা চমকে যায়। পরক্ষনেই বুঝতে পেরে মুচকি হাসি দিয়ে নিজেও সে ছোয়াটা নিতে থাকে।মেঘ ভেবেছিলো হয়তো তার এহেন কান্ডে বৃষ্টি বিব্রত হবে কিন্তু না বৃষ্টির কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে মেঘ বৃষ্টির কাঁধে থুতনিটা রেখে জিজ্ঞেস করে,

———-কি হলো তুমি চুপ করে আছো কেন।আমি তো ভেবেছিলাম আচমকা আমার এমন কাজে তুমি ভয় পাবে কিন্তু এখন তো ঠিক তার উল্টোটা হলো।তুমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছো কোনো কথা বলছো না।

———–হুমম ভয় পেতাম যদি সেটা আপনি না হয়ে অন্য কেউ হতো। কিন্তু আমি তো জানতাম এটা আপনি ছিলেন।

———-মানে।কি করে বুঝলে যে এটা আমি হবো।হতেও তো পারতো অন্য কেউ। তাছাড়া আমি তো কোনো শব্দ ও করেনি।

———-হুমম আপনি শব্দ করেননি ঠিকই কিন্তু আপনি কি জানেন আপনার শরীরে মিশে থাকা ঘ্রানটা আমার কতো চেনা।তাই আমাকে যদি চোখ বন্ধ করেও আপনাকে খুঁজতে বলা হয় তবে আপনার শরীরের স্মেলে আমি আপনাকে চিনতে পারবো।

———–বাব্বাহ ভালোই তো আমাকে বুঝো।তাহলে তো তেমাকে একটা ধন্যবাদ দিতেই হয়।তবে ধন্যবাদটা না হয় ভিন্ন হোক।

বলেই বৃষ্টিকে ঘুরিয়ে বৃষ্টির ঠোঁটের দিকে এগোতে থাকে হঠাৎ পেছন থেকে কারো কথার আওয়াজ পেয়ে দুজনেই ছিটকে সরে যায়। মেঘ পেছনে ফিরতেই দেখে তার ৩ বছরের মেয়ে মৃত্তিকা কোমরে হাত দিয়ে মুখ ফুলে দাঁড়িয়ে আছে।

———-বাবাই তুমি মাম্মাকে আদর করছো আর আমাকে আদর দিচ্ছো না।তোমার সাথে কোনো কথা নেই। তুমি মাম্মাকে ভালোবাসো আমাকে না।

বলে মুখটা অন্য পাশে ঘুরিয়ে নেই। মেঘ মেয়ের এমন কান্ডে কি বলবে বুঝতে পারছে না তাই আস্তে করে গিয়ে মেয়েকে কোলে তুলে নিয়ে মুখে ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে বলে,

———এতো আমি আমার প্রিন্সেস কেও লাভ করি তাই তোমাকেও পাপ্পি দিলাম।এবার আমাকে একটা দাও তো।

মৃত্তিকা ও একটা চুমু দিয়ে মেঘকে জরিয়ে ধরে। হঠাৎ মৃত্তিকা মুখটা আবারও ভার করাতে মেঘ জিজ্ঞেস করে,

———–কি হয়েছে আমার মামুনির মুখটা অমন করে রাখলে যে, ও আচ্ছা বুঝেছি চকলেট দেয় নি বলে।দাড়াও দিচ্ছি চকলেট।

বলে পকেট থেকে কতোগুলো ক্যাটবেরি বের করে হাতে দেয় কিন্তু মৃত্তিকা সেগুলো না নিয়ে মাথা নিচু করে থাকে।মেঘ খানিকটা অবাক হয় কারণ মেঘ জানে মৃত্তিকা যতোই রাগ করুক চকলেট পেলেই সবকিছু ভুলে যায় কিন্তু এমন কি হলো চকলেট পেয়েও তা ফিরিয়ে দিচ্ছে। মেঘ আড়চোখে বৃষ্টির দিকে তাকাতেই বৃষ্টি ইশারা করে মৃত্তিকা রাগ করেছে। বুঝতে পেরে মেঘ জিজ্ঞেস করে,

———-হুমম বুঝেছি নিশ্চয়ই কেউ আমার মেয়েকে বকা দিয়েছে তাই আমার মেয়ে চকলেট নিচ্ছে না। বলো মামুনি কে বকা দিয়েছে আমি তাকে আচ্ছা মতো বকে দিবো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
মেঘের কথাটা শুনতেই মৃত্তিকা এবার কান্না করে দিলো।হঠাৎ এমন করায় মেঘ ভ্যাবাচ্যাকা খায়। কোনোমতে শান্ত করতেই জানতে পারে বৃষ্টি ওকে বকা দিয়েছে শুধু বকা নয় সাথে মারও দিয়েছে। মারের কথা শুনেই মেঘ চোটে গেলো।সে রেগে বৃষ্টির সামনে যেতেই,

———তোমার এতো বড় সাহস তুমি আমার মেয়ের গায়ে হাত তুললে।কি করেছে ও যে ওকে তুমি মারলে।

———-দেখুন ও কি করছে তা আমি পরে বলবো আগে আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন,ডিনার সেরে তারপর বলবো।এরপর যা করার করবেন।মেঘ মৃত্তিকাকে চুমু দিয়ে ফ্রেশ হতে গেলো।

এর মাঝে ৩ বছরের কিছু টা তুলে ধরা হোক।

ফ্লাশব্যাকঃ৩ বছর আগে,






সময় বহমান।কারো জন্য এটি থেমে থাকে না। মেঘ বৃষ্টির সম্পর্কও সময়ের সাথে সাথে আরো গভীর হতে থাকে।একদিন অফিস থেকে ফিরে এসে মেঘ জানতে পারে বৃষ্টি কন্সিভ করেছে। মেঘের খুশি আর ঠেকায় কে।মেঘ যখন জানতে পারে সে বাবা হচ্ছে সেদিনের পর থেকে মেঘের ভালোবাসা যেনো আরো বেড়ে গেল। কেননা তার ভালোবাসার মানুষটা যে তার ভালোবাসাকে আজ পরিপূর্ণতা দিয়েছে এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে। এর মধ্যে রোদেলার ডেলিভারির সময় চলে আসে।রোদেলাকে হসপিটালে নেওয়া হওয়ার আধঘন্টার পর রোদেলার ফুটফুটে একটা ছেলে হয় যার নাম রাখা হয় আকাশ।

,
,
,
,
,
,
সবে মাত্র ন’মাসে পা দিয়েছে হঠাৎ করে বৃষ্টির পেইন ওঠে সবাই বৃষ্টিকে নিয়ে হসপিটালে এডমিট করানোর পর করিডোরে অপেক্ষা করছে। এদিকে মেঘ ঘেমে একাকার, রোদ রোদেলা সহ সবাই মেঘকে সান্ত্বনা দিচ্ছে তবুও মেঘের যেন ভয়টা কমছেই না বরং ঘড়ির কাটার দিকে তাকাতেই তা যেন আরো প্রখর হচ্ছে। একঘন্টা পর হঠাৎ করে কেবিন থেকে কান্নার আওয়াজ শোনা যায়, ডাক্তার বের হতেই মেঘ দৌড়ে যায়। ডাক্তার জানান যে তাদের মেয়ে হয়েছে এবং মা মেয়ে দুজনেই সুস্থ আছে। এর কিছু দিন পর বৃষ্টিকে ডিসচার্জ করা হয়।
.
.
.
.
.
.
.
.
শ্রাবন তৃনার সংসার জীবনও অনেক ভালো চলছে। তৃনার পরিবার তাদের মেনে নিয়েছে। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে ওদের টুইনস বেবি হয়েছে একটা ছেলে আরেকটা মেয়ে। সব মিলে যেন সবার খুশিটা আরো দ্বিগুণ হয়েছে।

বর্তমানে,

ডিনার শেষ করে রুমে এসে তিনজনি বসলো।মেঘ মাঝখানে একপাশে বৃষ্টি অন্য পাশে মৃত্তিকা। বৃষ্টিকে জিজ্ঞেস করা হলো কি কারণে সে তার মেয়েকে মেরেছে,

————এবার বলো তুমি কেন আমার মেয়েকে বকা আর মার দিয়েছো।

———-তো কি করবো আপনি জানেন কিছু দিন ধরে ও অনেক বেশি জেদ করছে।প্রথম প্রথম আমি স্বাভাবিক ভাবলেও দেখছি এটা তা নয়।তাছাড়া আজকে দুপুরে যখন ওকে খাবার খাওয়াচ্ছি ও কোনেভাবেই খাচ্ছে না জোর করার পর হাত পা ছোটাছুটি করছে তাই না পেরে একটা চর দেয় ওমনি কাদতে কাদতে মায়ের রুমে যে গেলো আর এলো না।যখন শুনলো আপনি এসেছেন তখন আমার নামে বিচার দিতে এসেছে।

———–তাই বলে মারবে ওকে।বুঝালে তো হতো।আর মামুনি এমন করছিলে কেন, মাম্মা যা বলে তা শুনলে তো হয়।আচ্ছা বলো তো কেন এতো জেদ ধরেছো।

———-পাপ্পা তুমি জানো আমি যখনই আকাশ ভাইয়াদের বাসায় যায় তখনি আকাশ ভাইয়া আমার ওপর হুকুম করে। যদি কিছু বলি, বলে আমি তোর বড় যা বলবো শুনবি।শুধু তাই নয়,যখনি আমি তিতিকে আদর করি আমাকে চিমটি দিয়ে বলে তুই আমার বোনকে ধরবি না।জানো পাপা আমার স্কুলের তানিহার একটা ভাই হয়েছে কি কিউট কত্তো আদর করে সবাই শুধু আমারি কোনো ভাই নেই তাই মাম্মাকে বলেছি একটা ভাই এনে দিতে কিন্তু মাম্মা শুনছে না তাই বলেছি যতোক্ষণ ভাই আসবে না ততোক্ষণ আমি কথা ও বলবো না খাবো না।
,
,
,
,
,
,
,
এতোক্ষণ দুজনে মিলে মেয়ের কথা শুনছে।আসলে বিষয়টা হচ্ছে দুমাস আগে রোদেলার একটা মেয়ে হয়েছে। তাই মৃত্তিকা আকাশদের বাসায় বেড়াতে গেলে আকাশ ওকে ধরতে দেয় না।আর মৃত্তিকা আকাশের ছোট হওয়ায় ওকে অনেক শাসন করে যা মৃত্তিকা পছন্দ করে না।তাই ওর ইচ্ছে হয়েছে ওর একটা ভাই হবে আর ও বড় হলে ভাইকে শাসন করবে আর আকাশ ভাইকেও ধরতে দিবে না।তাই কিছু দিন ধরে বৃষ্টিকে বায়না করে ভাইয়ের জন্য। আর আজ মাএারিক্ত করায় বৃষ্টি মার দেয়।
,
,
,
,
,
,
,
এসব কথা শুনে বৃষ্টির চোখ বড় বড় হয়ে যায়। সে আড়চোখ তাকাতেই দেখে মেঘ তার দিকে তাকিয়ে মুখে মুচকি হাসি দিচ্ছে যার অর্থ তার জানা আছে। লজ্জায় বৃষ্টি মুখ তুলে তাকাতেই পারছে না এদিকে মৃত্তিকা বারবার তার বাবার হাত ধরে ঝাড়াচ্ছ যে তার জন্য ভাই আনবে কিনা।মেঘ ওকে কোলে নিয়ে বললো,

———–মামুনি তুমি যখন চাইছো তবে আমি রাজি কিন্তু তোমার মাম্মাকে জিজ্ঞেস করো সে চাই কিনা নাহলে তো আমার একার পক্ষে সম্ভব না।






বলে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে চোখ টিপুনি দিলো।বৃষ্টি কোনোভাবেই মেঘের দিকে তাকাতে পারছেনা।কারণ সে যতবারই চোখাচোখি হচ্ছে ততোবারই মেঘ তাকে চোখ দিয়ে বিভিন্ন দুষ্টমির ইঙ্গিত দিচ্ছে যা বুঝতে পেরে তার লজ্জা আরো বেড়ে যাচ্ছে। মেঘ কোনোমতে মৃত্তিকাকে বুঝিয়ে দাদূর রুমে পাঠিয়ে দিতেই বৃষ্টি উঠে চলে যেতে নেই। মেঘ সাথে সাথে বৃষ্টির হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে,

———–কোথায় যাচ্ছো শুনলে না আমার মেয়ে কি বলেছে ওর একটা ভাই চাই। আর আমার মেয়ের জন্য আমি সব করতে রাজি আছি।

———-তো করুন না কে মানা করেছে। আপনার ইচ্ছে হলে শুধু ভাই কেন পুরো একটা ফুটবল টিম নিয়ে আসুন মেয়ের জন্য আমার কি

———- তুমি রাজি তো??আমি কিন্তু রাজি।তাছাড়া আমি তো চাই পুরো ফুটবল টিম বানাতে কিন্তু তুমি লোড নিতে পারবে তো






বলেই চোখ মুখে দুষ্টির হাসি ফুটিয়ে তুললো। এদিকে বৃষ্টির মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে। কি করে পারে মানুষটা এমন কথা বলতে।মুখে কি একটু আটকায় না নাকি বৃষ্টিকে এমন অবস্থায় ফেলতে মজা লাগে যা বৃষ্টি ভেবে পায়না।

———–আপনি অনেক অসভ্য, মাএারিক্ত অসভ্য,একটু তো লজ্জা বোধ করুন।

বলে আর লজ্জার মুখোমুখি না হওয়ার জন্য মেঘকে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়। এদিকে মেঘ বিছানায় বসে বৃষ্টির লজ্জার কথা চিন্তা করে হাসতে থাকে।
,
,
,
,
,
,
,
রাত ১:৩০টা।বৃষ্টি বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরে চেয়ে আছে। আজ আকাশে বড় করে চাঁদ উঠেছে। যার জন্য আজকের পরিবেশটা অনেক মনোরম লাগছে।তার ওপর চারপাশে ঠান্ডা বাতাসে বৃষ্টির শরীরে এক রকম শিহরণ কাজ করছে। সে তার অতীতকে নিয়ে ভাবছে।কেন জানি অতীততের স্মৃতি গুলো তার মনে বারবার জেগে উঠে। না চাইতে অনেক স্মৃতি তাকে এমন অনেক কিছু মনে করিয়ে দেয় যা ভাবলেই বৃষ্টি অবাক না হয়ে পারেনা।কি থেকে কি হয়ে গেল ভেবে পায়না।একসময় যে মানুষটার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য হাজারো আকুতি মিনতি আজ সে মানুষকে ছাড়া বৃষ্টি অস্তিত্বহীন।কেন জানি এ মানুষটার মধ্যেই বৃষ্টির সব সুখ নিহিত।ওর মাঝেই বৃষ্টির মুক্তি।হঠাৎ পেটে হাতের স্পর্শ পেয়ে বৃষ্টি নিজের ভাবনা থেকে বের হয়।

———কি হলো ঘুমাননি

———না। একটু করে ঘুম এসেছিলো কিন্তু পাশে হাত দিতে দেখি তুমি নেই তাই তোমাকে খুঁজে দেখি তুমি এখানে।তুমি জানো না তুমি না থাকলে আমার ঘুম আসে না।তোমার শরীরের মাতাল ঘ্রান না পেলে আমার ঘুম উবে যায়। আর এতেরাতে এখানে কি করছো






বৃষ্টির কাঁধে থুতনি রেখে পেটে স্লাইড করতে করতে কথা গুলো বলে মেঘ। বৃষ্টি চোখ বন্ধ করে চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।আসলে মেঘের ছোয়া পেলে বৃষ্টির অন্য কোনোদিক হুস থাকে না। তখন সে মেঘের ছোয়ার অনুভূতিটা নিতে থাকে।মেঘ বৃষ্টি থেকে কোনো উওর না পেয়ে আবারও জিজ্ঞেস করলে,

———-আসলে ঘুম আসছিলো না তাই চাঁদ দেখছিলাম।আর আজকের পরিবেশটাও অনেক স্নিগ্ধ লাগছিল তাই উপভোগ করছি।আর দেখুন কতোবড় চাঁদ উঠেছে যা পরিবেশটার সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

————উহুম আমি চাঁদ দেখবো না যেখানে আমার ঘরে জলজ্যান্ত চাঁদ আছে সেখানে আকাশের চাঁদ দেখে সময় নষ্ট করার মানে হয়না।আচ্ছা বৃষ্টি একটা কথা বলো তো, তুমি আমায় আপনি বলে ডাকো কেন তুমি ডাকতে পারো না।

———— না কারণ কিছু সম্পর্কে কখনো তুমিটা বেমানান মনে হয়।আর চাইলেও আপনাকে আমি তুমি বলে সম্বন্ধন করতে পারবোনা কারণ আমার সাথে আপনার সম্পর্কাটা যে তুমিতে নয় আপনাতে আবদ্ধ।

————হুমম তোমার সাথে কথায় পারবো না। তো বলো কি সিদ্ধান্ত নিলে।

———–কিসের সিদ্ধান্ত??

———-ভুলে গেলে।আমার মেয়ের জন্য একটা ভাই আনার কথা। আচ্ছা আমরা কি চাইলে আমাদের মেয়ের এই ইচ্ছেটা পূরণ করতে পারিনা।

———-না কারণ চাইলেও আমরা অনেক কিছু নিজেদের মতো করে পূরণ করতে পারিনা কারণ আল্লাহ যা চান তা ছাড়া অন্য কিছু কখনো সম্ভব নয়।তাই হয়তো আমরা চাওয়ার আগেই আল্লাহ আমাদের মেয়ের ইচ্ছেটা পূরণ করে দিয়েছেন।খুব শীঘ্রই আমার মেয়ের সঙ্গী আসতে চলেছে তবে এর জন্য আমাদের ন’মাস অপেক্ষা করতে হবে।
,
,
,
,
,
,
,
,
কথাটা বলেই বৃষ্টি মুচকি মুচকি হাসতে থাকে। আর বৃষ্টির এমন কথায় বেচারা মেঘের মুডটায় খারাপ হয়ে গেল। তাই মনের কষ্টে ‘ওহ’ শব্দটা উচ্চারণ করে আর কোনো কথা না বলে চুপ হয়ে গেলো।পরক্ষনেই তার মাথায় বৃষ্টির শেষের কথাটা আসলো। অপেক্ষা করতে হবে ন’মাস। কথাটা ভাবতেই মেঘ চোখ খুলে বড় করে ফেললো তারপর বৃষ্টিকে ছেড়ে দিয়ে নিজের দিকে ঘুরালো।বৃষ্টির দুবাহু ধরে জিজ্ঞেস করল,

———–কি বললে তুমি অপেক্ষা করতে হবে মানে,তার মানে আমি যা ভাবছি তাই কি?তুমি??????

———-হুমম আপনি যা ভাবছেন তাই খুব শীঘ্রই আরো একজন সদস্য আসছে আমার মেয়ের সঙ্গী হিসেবে।

———-তুমি…তুমি আগে বলোনি কেন আমায় এতো বড় একটা সংবাদ…. আমি যে কীভাবে তোমায় বুঝাবো আমার ভেতরের খুশিটা।উফফ ভাবতে পারছি না আমার পরিবার এখন ৩ জন থেকে ৪ জন হবে।

———-আসলে আমিও জানতাম না কিছু দিন ধরে কেমন জানি অসুস্থ লাগছিলো তাই কালকে ডাক্তারের কাছে চেকআপ করার পর আজকে রিপোর্ট হাতে আসতেই জানতে পারি প্রেগনেন্সির কথা মাকেও জানিয়েছি, আপনাকে জানাতে নিষেধ করেছিলাম।সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম।

———-আমি তোমার সারপ্রাইজে খুব খুশি।সত্যি বলে বুঝাতে পারবোনা কি পরিমাণ খুশি।তুমি আমায় আজ এতো আনন্দ দিয়েছো তাই তুমি যা চাও আমি তাই দিবো বলো কি চাও আজকে।

———-শুধু আপনার সঙ্গ চাই সারাজীবন আপনার সাথে থাকতে চাই, শেষ নিঃশ্বাস টুকু পর্যন্ত আপনাকে পাশে চাই। বেচে থাকার জন্য এতোটুকুই যথেষ্ট।

বৃষ্টির কথায় মেঘের চোখ গুলো পানিতে চিকচিক করছে। মেঘ আস্তে করে বৃষ্টির ঠোঁটে ঠোঁট ছুয়ায়।বৃষ্টি ও মেঘের ঠোঁটের উঞ্চতা পেয়ে মেঘের আরো কাছে চলে আসে।৫ মিনিট পর মেঘ বৃষ্টিকে ছেড়ে দিয়ে নিজের বুকে জরিয়ে ধরে। বৃষ্টি ও পরম আবেশে মেঘের বুকে মুখ লুকিয়ে মেঘকে আরো শক্ত করে আঁকড়ে ধরে। একটু পর মেঘ বলে উঠে,

———বৃষ্টি

——–হুমম

———ভালোবাসি

———আমিও

বলে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে। যদি পারতো হয়তো মেঘের বুকের ভেতরে ঢুকে যেতো। কিন্তু বাস্তবিক না হলে কল্পনার পৃথিবীতে মেঘের বুকের গহীনে বৃষ্টিরই বসবাস।

সমাপ্ত

(আসসালামু আলাইকুম। আপনাদের বলেছিলাম স্পেশাল পর্ব দিবো।তাই দিয়ে দিলাম।পর্বটা শুধুমাএ মেঘ বৃষ্টি নিয়ে করেছি তাই অন্য কাউকে আনিনি।কেমন হয়েছে জানাবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here