যদি_দেখা_না_হতো পর্ব ১

বিয়ে বাড়িতে বর আমাকে টানতে টানতে সামনা সামনি বসালো,,এবং বললো বিয়ে পড়ানো শুরু করান।আমিসহ উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে উঠলো।কাজী বললো আমাকে কবুল বলতে আমি বলতে রাজিনা তিনি স্ব-শব্দে একটা থাপ্পড় মারলো,,

শুভ্রঃ কি হলো শোনা যায়না কথা।যা বলছে করো নাহলে তোমার সাথে যা হবে তা তুমি কল্পনাও করতে পারছোনা

আমি আমার বাবা-মা পরিবারের দিকে তাকালাম,,তারাও ভয়ে চুপসে আছে কারণ,, ছেলে বড়লোক বাড়ির একমাত্র ছেলে।রাগ শরীরে নাকি ১০০%।আব্বু মাথা নেড়ে বললো কবুল বলতে।আমি নিত্যান্ত অবাক হলাম,, কোথায় বিরোধীতা করবে তা না বিয়ে করতে বলছে

শুভ্রঃ কি হলো কথা কানে যায়না,,,এই কে আসিস শুরু কর,,অনেক নাটক দেখছি এদের আর সহ্য করতে পারছিনা

হঠাৎ,,
কয়েকজন গুন্ডা টাইপের লোকেরা আমার পরিবারের মাথায় বন্দুক ধরলো।।।

শুভ্রের বাবাঃ কি করছিস শুভ্র তোর মাথা ঠিক আছে তো

শুভ্রঃ হিসস,,অনেক সময় নষ্ট করেছি আর না,,এই মেয়ে বলো বিয়ে ঠিকমতো করবা নাকি ওরা ওদের কাজ করবে

আমি এবার বাধ্য হলাম বিয়েটা করার জন্য,,আমার যে কোন রাস্তায় আর খোলা রইলো না।কবুল আর রেজিষ্ট্রেশন করে শেষ করা হলো বিয়ে।

বিদায়ের সময় আমি কারোর কাছে যেতে পারিনি,,শুভ্র টানতে টানতে আমাকে নিয়ে গেলো গাড়ির মধ্যে অন্যদিকে আমার আব্বু আম্মু কান্না করতে লাগলো কতোবার রিকুয়েষ্ট করেছিলো একবার আমাদের কাছে আসতে দাও কিন্তু পাষাণ মানুষটি নিয়ে চলে আসলো।

আমাদের পরিবার ছিলো জয়েন্ট,,আমার আব্বুরা চার ভাই দুই বোন।আমার আব্বু ছিলো সেজো। আমাদের পরিবারে আমাকে দিয়ে তিনটা মেয়ে বাকি সবারই ছেলে সন্তান। আমি তানিশা,,,বড় চাচ্চুর মেয়ে মেহেন্তা আর ছোট ফুপ্পির মেয়ে তৃধা।আজ বিয়েটা ছিলো মেহেন্তা আপুর,,, তার আব্বুরা শুধু এই ছেলেটার সাথে বিয়ে দিয়েছে টাকার জন্য।সেটা জানতে পেরে আপু পালিয়েছে,,তৃধা আপুর আবার রিলেশন ও ছিলো

তৃধা কেবল ক্লাস নাইনে।আমি ভার্সিটিতে পড়ি তাই আমাকেই বলি করলো।নিয়তি আসলেই কেমন লেখা থাকে।আর এমন গুন্ডা মার্কা ছেলে জুটলো আমার কপালে আমি যে কান্না করছি তার এদিকে কোন গ্রাহ্যি নাই।ভ্রু কুচকে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে,,

অবশেষে তাদের বাড়িতে পৌছালাম।তিনির আম্মু আমাকে দেখে অসুস্থ হয়ে পরলেন।চারিদিকে একই কথা চলছে এই মেয়ে আবার কে আর আগের মেয়েটা কোথায়?? আমি লজ্জায় তাদের দিকে তাকাতে পারছিনা।একজন তো বলোই দিলো,,

“শুভ্র এ কাকে বিয়ে করে এনেছিস তুই,,আর মেহেন্তা কই??

শুভ্র কিছু না বলে আমাকে টানতে টানতে উপরে নিয়ে গেলো তার রুমে।আমার শশুড় মশাই সব বললো সবাইকে।সবাই ছিঃ ছিঃ করতে করতে চললো নিজেদের বাড়িতে

তিনি রুমের দরজা বন্ধ করে দিলেন,,

তানিশাঃ এই আপনি এগুলো কি করছেন

শুভ্রঃ কেন বাসর করবো

তার মুখে এমন কথা শুনে আমি আরও বড় শকড খাইলাম।তিনি সাইড দিয়ে কি যেন খুঁজতে লাগলো।তারপর আমাকে বসিয়ে আমার ঠোঁটের পাশে রক্তটা মুছতে লাগলো।আমি তার দিকে এতো বড় বড় করে তাকিয়ে আছি

শুভ্রঃ তোমার ভাগ্য অনেক খারাপ বুঝছো নাহলে,, আমার বউ হতে না।আর আমি যা যা বলবো তাই শুনে চলবা না হলে আমি যে কি করবা তা বুঝতেই পারছো।আর হ্যাঁ আমি যা ইচ্ছে তাই করবো কোন বাধা দিলে তোমাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দিব

এই বলে তিনি চলে গেলেন।আমার মাথায় আর কোন কাজ করছে না এই ছেলে বলে কি?? মাথায় নিশ্চয় তারকাটা আছে।শুনেছি কয়েকবার জেলেও গেছে খুন করার জন্য।না বাবা আমাকে পালাতে হবে না হলে আমাকেও মেরে দিবে।

খুব ক্লান্ত থাকায় আমি এই ভাবেই ঘুমিয়ে পরি।

সকালে ঘুম ভাঙ্গলো এ বাড়ির কাজের বুয়ার ডাকে,,

“আমি এ বাড়িতে কাজ করি, আমাকে মিলি আন্টি বলে ডাকে বুঝছো,,তোমার যে এতো পোড়া কপাল,,আর কোথাও বিয়ে করতে পারলে না??

তানিশাঃ আমি এই বিয়ে করিনাই আর তিনি আমাকে জোড় করে বিয়ে করেছেন

আন্টিঃ জানো এই পোলাটা

শুভ্রঃ হুম তারপর

আন্টি এবার ভয় পেয়ে গেলো,,

আন্টিঃ কিছুনা বাবা

শুভ্রঃ ব্যাগ গুছাও,,আম্মু আব্বুর সাথে তুমিও চলে যাবে আজ

আন্টিঃ আচ্ছা বাবা

শুভ্রঃ তানিশা ,,যাই হোক ফ্রেস হয়ে নিচে এসো

আমিও ফ্রেস হয়ে নিচে চলে আসলাম।গিয়ে দেখি এতো বড় বাড়িতে কেউ নাই,,শশুড় শাশুড়ী ও চলে যাবে আজ।আমাকে নামতে দেখে শাশুড়ি আমার কাছে আসলেন

শাশুড়ীঃ জানি,,আমার ছেলে তোর সাথে যা করেছে তা ঠিক নয় তবুও বলবো মা আমার ছেলেকে ঠিক করার চেষ্টা করিস

শুভ্রঃ কি হলো এখনো তোমরা যাওনি,,গাড়ি আর কতোক্ষণ দাড়াই থাকবে(রেগে)

শাশুড়ীঃ যাচ্ছি তো বাবা(চোখ মুছতে মুছতে)

শুভ্রঃ হুম যাও

এই বলে তিনিরা বিদায় নিলো।তিনি কতোটা নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিচ্ছেন আমার কাছে।

শুভ্রঃ শোন কাল আমি এক মাসের জন্য বিদেশ যাচ্ছি,,তোমার পেছনে গোয়েন্দা সেট করে সো ভুল ভাল কিছু করলে তোমাকে নয় তোমার মা বাবার ক্ষতি করবো।আর রান্না ঘরে যাও দুপুরের জন্য রান্না করতে।ঠিক ১ টায় আমি টেবিলে যেন খাবার পাই।ওই দেখ চার্ট লেখা আছে কবে কি রান্না করবা ,, সো দাড়াই থাকবানা।

আমি রান্না ঘরে চলে আসলাম লিষ্ট অনুযায়ী রান্না করলাম।রান্না আব্বু শিখাইছে আমাকে,,আজব তাইনা।আমার আব্বুর মতো রান্না আম্মু পারেনা।আব্বু আম্মু পালাই বিয়ে করেছিলো,,আম্মু রান্না যানতো না তাই আব্বুই রান্না করতো।এসব কথা মনে পরতেই আমার মন খারাপ হয়ে আসলো

কোথায় বিয়েটা যখন হয়েই গেছে তখন আমার বউভাত হবে,,নতুন ভাবে জীবন শুরু করবো তা আর হলো কই,,,আর তিনি বিদেশ চলে যাবেন ভালো লাগেনা।আমার ভাগ্যটা নিত্যান্তই খারাপ তা না হলে এমন হয়।আর আজিব লোক বিখ্যাত গুন্ডা,,পরিবারের সাথে থাকেনা।তাকে বিয়ে দিছিলো যাতে তার বউ আসার পর সে ভালো হয়ে যায়।কিন্তু যে ভালো হবার নয় তার বউ দিয়েও ভালো হয়না।ধর্ষণ পর্যন্ত করেছে,,,নাহহ আমাকে পালাতেই হবে যে করেই হোক না কেনো।।

রান্না গুলো টেবিলে সাজিয়ে ডাকবো কি ডাকব না ভাবছি এমন সময় তিনি নিজেই নিচে নেমে আসলো।

শুভ্রঃ সব রান্না হয়ছে

আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সুচক দিলাম।।

শুভ্র খাওয়া শুরু করলো,,সব যেন একাই সাবার করে দিবেন।আমি জাস্ট অবাক এতো খাবার কেমনে একা একটা মানুষ খাইতে পারেন রাক্ষস একটা








#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_০১ (#Season_2)
#Writer_Tanisha_Esu

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here