রোদহীন বিকালে তুমি পর্ব -০৪+৫

#রোদহীন_বিকালে_তুমি✨
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_৪

৮.
অস্টেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরা শহরের একটা বিশাল এপার্টমেন্টে দাঁড়িয়ে আছে একটা লোক।লোকটা একটা মেয়ের ছবি নিয়ে বিড়বিড় করে বলল,,,,
“আমি আসছি জান খুব তাড়াতাড়ি। আ’ম কা’মিং সু’ন মা’ই জান”

রাফসান নামের একটা ছেলে এসে লোকটাকে বলল,,,,
“স্যার একটা মেয়ে এসেছে আপনার সাথে দেখা করতে”

লোকটা গ’ম্ভী’র কন্ঠে বলল,,,,”কে এসেছে”

“স্যার মেয়েটা বলল আপনার কাছে এসে তার নাম আফিফা বলতে”

এবার লোকটার ভ্রু দুইটা বি*র*ক্তিতে কু’চকে গেলো।কপালে বু’ড়ো আ’ঙ্গুল দিয়ে স্লা’ই’ড করতে করতে বলল,,,,
“পাঠিয়ে দেও”

রাফসান ছেলেটা বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।কিছুসময় পর একটা মেয়ে রুমে আসলো।মেয়েটার পরনে একটা শর্ট ড্রেস।আর মুখে মেকাপ করে প্রচুর।মেয়েটা এসেই লোকটাকে জড়িয়ে ধরে বলল,,,
“বেবিববববববব আমি তোমাকে খুব মিস করেছি”

লোকটা আফিয়া নামের মেয়েটাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে রা*গি ক’ন্ঠে বললল,,,
“তোমার সা’হ’স কি করে হয় আমাকে জড়িয়ে ধরার।প্রচন্ড সা’হ’স বেড়েছে না।আর বেবি কি!আমি কি তোমার সাথে রিলেশনে আছি”

আফিফা নে’কা’মি করে বলল,,,”বেবিববববব মম ডেড তো চাই তোমার সাথে আমার বিয়ে দিতে তুমিই তো রা’জি হচ্ছো না প্লিজ এবার তো রা’জি হও”

লোকটা এবার রেগে আফিফাকে থা’প্প’ড় মে’রে বলল,,,,”ইউ স্টু’পি’ড গার্ল!তোমায় বলেছি না আমি একজনকে ভালোবাসি তারপরও ও কেনো বে’হা’য়া’র মতো পিছে পরে আছো”

আফিফা থা*প্প*ড় খেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে গেলো।লোকটা বিরক্তি নিয়ে বলল,,,,”এই মেয়েটা একটু বেশিই করে”

৯.
আলভি তার ফ্রেন্ডের সাথে একটা নি’র্জ’ন জায়গায় বসে আছে!আলভির ফ্রেন্ড নাহিন,তিশাম,নিশান একসাথে বসে আছে।সবাই কথা বলছে আর আলভি এক জায়গায় চুপচাপ বসে আছে।নাহিন বলল,,,,
“কি শুরু করলি তুই আলভি তুই এমন থাকলে আমাদের কারো ভালো লাগে না তুই জানিস না”

আলভি বলল,,,”আমার জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেখ কেমন লাগে তারপর কিছু বলিস”

তিশাম আলভির কাঁধে হাত রেখে বলে,,,,”আমরা বুঝতে পারছি তোর ক*ষ্ট কিন্তু দেখ আমরা সবাই জানি ফারিহা কেমন তুই হাজার চে’ষ্টা করলেও ফারিহা আর ফিরবে না”

“জানি নাহ আমি কি করবো কিন্তু আনিশাকেও মে’নে নোওয়া স’ম্ভ’ব নয় আমার আর।আনিশার জন্যই সব হয়েছে ক*ষ্ট তো ওকে পেতেই হবে”

নিশান বলল,,,
“দেখ এখানে আনিশার কোনো হাত নেই তাই বলছি মেয়েটাকে কিছু বলিস না বা কিছু করিস না।মেয়েটা সত্যিই খুব ভালো”

আলভি রে*গে বলল,,,,”ও ভালো তুই চিনিস ওকে হ্যা ও একটা বে’হা’য়া মেয়ে। আর ভালো কোন দিক দিয়ে”

“দেখ আলভি যত যাই বলিস না কেনো তুই নিজেও ভেবে দেখ মেয়েটা কারো সাথে তেমন কথাও বলে না আর ফারিহা ইয়ামিন ছাড়া কারো সাথে মিশেও না।আর না কখনো কারো সাথে খা’রা’প ব্যবহার করেছে।আমি ওকে রাস্তায় অসহায়দেরও সাহায্য করতে দেখেছি”

আলভি চি’ল্লি’য়ে বলল,,,,”নিশান চুপ কর আমি ওই মেয়ের কিছুই শুনতে চাই না”

নিশান হেসে বলল,,,,”দেখ একদিন এমন না হলো যে তুই ওই মেয়েকে ছা’ড়া এক মূহুর্তও থাকতে না পারিস।চো’খের আ’ড়াল হলে না তোর দ’ম ব’ন্ধ হয়ে যায়।কখন কাকে ভালো লাগে তা আমরা কেউই জানি না।”

আলভি উঠে দাঁড়িয়ে বলল,,,”চুপ কর তুই আমি আর ওকে ছাড়া কখনো থাকতে পারবো না এটা কখনোই হবে না”

আলভি কথাটা বলে হনহন করে চলে গেলো।গাড়ি নিয়ে চলে গেলো। তিশাম আলভির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নিশানকে বলল,,,,”কেনো বললি এগুলো আমিও জানি হয়তো আসবে এমন কোনো একদিন যেদিন ও আনিশাকে ছাড়া থাকতে পারবে না”

নিহান দী’র্ঘশ্বাস ফেলে বলল,,,,”আমি চাই সেই দিনটা খুব তাড়াতাড়ি চলে আসুক”

ওরা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকলো।নিহান ভাবছে কিভাবে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায়।না আনিশা ঠিক আছে না আলভি আর না ফারিহা।কেউই ঠিক নেই।

১০.
ফারিহা আর ইয়ামিন বসে আছে ফারিহাদের ছাদে।ফারিহা বসে আছে।ইয়ামিন বি*র*ক্ত হচ্ছে ফারিহার কাজে।কি চাইছে কি ও।ইয়ামিন বি’র’ক্তি নিয়ে বলল,,,,,
“কি চাইছিস কি তুই ফারু!সকালে কেনো আনিশাকে জিজ্ঞেস করতে দিলি না কিভাবে ওদের বিয়েটা হয়েছে”

ফারিহা আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল,,,”দেখ আজকে আকাশে চাঁদ উঠেনি ঠিক আমার আকাশের মতো আমার চাঁদটাও এখন আমার নেই।সে অন্যকারো তাও আমার বেস্টফ্রেন্ডের”

ইয়ামিন এবার চি’ল্লি’য়ে বলল,,,,”চাইছিসটা কি তুই একটু বলবি”

“আমি এখন চাইছি আনিশা আর আলভি ভালো থাকুক।আলভি আনিকে মে’নে নিক আর আমি সম্পূর্ণ চে’ষ্টা করবো তার”

ইয়ামিন করুন কন্ঠে বলল,,,,,”তাহলে তোর কি হবে ফরু”

ফারিহা মিল হেসে বলল,,,”আমি এখন যেমন আছি তেমনই থাকবো”

ইয়ামিন ফারিহার নিজের দিকে ফিরিয়ে কাঁ’ধ ঝা’কি’য়ে বলল,,,,
“এভাবে চললে না মামা মামি ভালো থাকবে না আমি আনি আর না তুই।তুই জানিস তুই যেমন আনির ক*ষ্ট স*য্য করতে পারিস না আনিও তেমন তোর ক*ষ্ট স*য্য করতে পারে না”

ইয়ামিনের থেকে নিজেকে ছা’ড়িয়ে ফারিহা বলল,,,”আমি জানি তাই তো ওর সামনে হাসি খুশি থাকার চে’ষ্টা করি আর কালকে থেকে আলভি আনিশাকে কাছাকাছি আনার মিশনে আমি আর তুই নেমে পরবো”[লেখিকা ইশা আহমেদ]

ইয়ামিনের আনিশার জন্যও খা’রা’প লাগছে তেমনি ফারিহার জন্যও। কি করবে ভেবে পায় না ও।তাই সিদ্ধান্ত নেয় ফারিহার কথা মতোই কাজ করবে।ইয়ামিন ফারিহাকে বলল,,,”চল ঘুমাবি!আমারও ঘুম পেয়েছে”

ফারিহা বলল,,,”আমার ঘুম আসছে না তুই যা ঘুমিয়ে পড়”

ইয়ামিন ফারিহাকে টানতে টানতে ওর রুমে নিয়ে গিয়ে বলল,,,,”এবার তুই ঘুমাইস না সারা রাত বইসা থাকোস আমি দেখমু না বাই”

কথাটা বলেই ইয়ামিন রুম থেকে বেরিয়ে ফারিহার রুমের দরজা বাইরে থেকে আটকে দিয়ে বলল,,,”নে এবার ভালো করে ঘুমা হি হি হি”

ইয়ামিন নিজের রুমে এসে ঘুমিয়ে পরলো।ফারিহা হাসলো।ছেলেটা সিরিয়াল মূহুর্তেও হাসাতে পারে।ফারিহা বসে বসে ভাবতে লাগলো কালকে কিভাবে কি করবে।

১১.
“আন্টি আমার জানা মতে তোমরা বাড়ির বউকে না পরিয়ে রাখবে না তাই বলছি আনিশা আজকে থেকেই ভার্সিটি যাক তবে”

নাফিয়া বলল,,,,”হ্যা হ্যা সমস্যা নেই ও যেতে পারে।”

ফারিহা হেসে বলল,,,”আচ্ছা ঠিক আছে আন্টি আমি আনিশার কাছে গেলাম”

ফারিহা আর ইয়ামিন সকাল সকাল আলভিদের বাসায় এসে হাজির।এতে অবশ্য নাফিয়া বেশ চ’মকেছেন।তার ফারিহার করা কাজগুলো খুব অ’দ্ভু’ত লাগছে। সে হলে কখনোই এইসব করতে পারতো না মোটেও।ফারিহা আর ইয়ামিন আলভির রুমের সামনে এসে দরজায় ধা’ক্কা মা’রলো।দরজা ধা’ক্কানোর শব্দে আনিশার ঘুম ভা’ঙলো। কালকে রাতে সে সোফাতেই ঘুমিয়ে পরেছিলো আলভির অপেক্ষা করতে করতে।বিছানায় তাকিয়ে দেখলো আলভি এ’লো’মে’লো ভাবে ঘুমিয়ে আছে।আনিশার আলভিকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে খুব নি’ষ্পাপ লাগছে।কিন্তু আনিশা এটা ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেলল যে এই মানুষটা ঘুম থেকো উঠলেই ডে’ঞ্জা’রা’স হয়ে যায়।

দরজায় আবার টোকা পরলো।আনিশা ঘো’র কাটলো।সে গিয়ে দরজা খুলল।দরজা খুলতেই ফারিহা আর ইয়ামিন হুরমুর করে রুমে ঢুকে পরলো।রুমে ঢুকে আনিশাকে বলল,,,
“আনি তাড়াতাড়ি রেডি হয়েনে ভার্সিটি যাবি”

আনিশা অবাক হয়ে বলল,,,”কিন্তু আমাকে কি মামনি বাবা যেতে দিবে?”

ফারিহা হেসে বলল,,,”আমি তোর মামনির কাছে শুনেই এসেছি আর এই নে ড্রেস এই শাড়ি পরে তো আর যেতে পারবি না।আর ড্রেসও তো নেই এইখানে তোর”

আনিশা হাসলো।ওদের বসতে বলে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে আর ড্রেস চেঞ্জ করতে।শপিং ব্যাগ খুলতেই একটা বে’গুনি রঙের থ্রিপিচ।আনিশা জানে ফারিহা মাত্রই এটা কিনে এনেছে কারণ ফারিহা থ্রিপিচ পরে না টপস ওয়ানপিস পরে।সে ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলো।বের হতেই দেখল ইয়ামিন আর ফারিহা গল্প করছে।ফারিহা আনিশাকে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে চোখে কাজল আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দিয়ে দেয়। তারপর নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে,,,
“এই তো এখন একেবারে ঠিকঠাক লাগছে”

আলভি ঘুম থেকে উঠে পরেছে কিছু সময় আগে ও বসে বসে ওদের কাজ দেখছিলো। ফারিহার এইসব কাজকর্মে প্রচুর রা*গ ও বি*র*ক্ত লাগছে।আলভির ভাবনার মা’ঝেই ফারিহা আনিশাকে বলল,,,,
“চল এবার খেয়ে ভার্সিটি যাবি”

আলভি ফারিহার কথায় ভ্রু কুচকালো।ফারিহা যখন আনিশাকে নিয়ে রুম থেকে বের হবে তখনই আলভি আনিশার হাত ধরে টেনে নিজের পাশে এনে দাঁড় করায়।যাতে আনিশাসহ ইয়ামিন ফারিহাও অবাক হয়।ফারিহা ভ্রু কুচকে বলে,,,,
“তুমি ওর হাত ধরে নিজের পাশে দাঁড় করালে কেনো হাত ছাড়ো ও ভার্সিটি যাবে”

আলভি ভা’বলেশহীন ভাবে বলল,,,
“আনিশা আমি কি তোমাকে ভার্সিটি যাওয়ার অ’নুমতি দিয়েছি”

আনিশা কিছু বলবে তার আগে ফারিহা বলে,,,”তুমি যখন ওকে বউ বলে মানোই না তাহলে অনু!মতি নেওয়ার কি আছে!হাত ছা’ড়ো ওর”

কথাটা বলেই আনিশার হাত ধরে নিজের পাশে আনে।আলভি আনিশার হাত শ*ক্ত করে ধরে নিজের কাছে এনে বলে,,,,
“ওকে আমি বউ হিসাবে না মা’নলেও ও আমার বউ আর আমার কাছ থেকে অ’নুমতি নিতেই হবে।আর আমি ওকে যাওয়ার অ!নুমতি দেইনি”

“ফারিহা ছা’ড় না উনি যেতে দেবে না আমায় তোরা চলে যা”

“আমি তো তোকে ছাড়া যাবো না!আর তুমি আলভি যেদিন ওকে নিজের বউ হিসাবে মে’নে নিতে পারবে সেদিনই ওকে আটকাতে এসো।”

কথাটা বলেই আনিশার হাত ধরে টেনে নিয়ে চলে গেলো।আলভি রা*গে ফুঁসতে লাগলো।সে এখন মোটেও চায় না ফারিহা তার বাসায় আসুক আনিশার কাছে আসুক।

১২.
“বাবা তুই কি বাসায় আসবি না।তিনটা বছর হয়ে গেলো তুই একবারো বাংলাদেশে আসিসনি।এবার তো আয়।বয়স তো কম হলো না এবার তুই বিয়েটা কর নাতিনাতনির মুখ দেখে তো ম*রি।”

“মম তোমার ছেলে নেক্সট মান্থেই আসছে তোমার কাছে।বিয়ে আমি করবো এসেই আর মেয়েওআমার ঠিক করা আছে ”

মিসেস রুহানা চৌধুরী বলল,,,,”সত্যি তুই আসছিস বাবা”

লোকটা হেসে বলল,,,,”হ্যা মম পা’ক্কা প্রমিস আমি আসছি”

চলবে,,,,,,,?#রোদহীন_বিকালে_তুমি✨
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_৫

১২.
“বাবা তুই কি বাসায় আসবি না।তিনটা বছর হয়ে গেলো তুই একবারো বাংলাদেশে আসিসনি।এবার তো আয়।বয়স তো কম হলো না এবার তুই বিয়েটা কর নাতিনাতনির মুখ দেখে তো ম*রি।”

“মম তোমার ছেলে নেক্সট মান্থেই আসছে তোমার কাছে।বিয়ে আমি করবো এসেই আর মেয়েওআমার ঠিক করা আছে ”

মিসেস রুহানা চৌধুরী বলল,,,,”সত্যি তুই আসছিস বাবা”

লোকটা হেসে বলল,,,,”হ্যা মম পা’ক্কা প্রমিস আমি আসছি”

রুহানা চৌধুরী অবাক হয়ে বলল,,,”কি বললি বিয়ে করবি রোদ।কি বললি তুই এটা সত্যি রোদ আজকে আমি অনেক খুশি আমার ছেলে এতোদিন পর বিয়ে করার জন্য মেয়ে পছন্দ করেছে।তাও নিজে সে কে যে আমার ছেলের মনটা চু’রি করলো”

রোদ হেসে বলল,,,”মম আমি এসেই তোমাকে দেখাবো বাট তাকে বিয়ে করতে হলে আগে আমার প্রেমে ফেলতে হবে তারপর সবকিছু”

রুহানা চৌধুরী হেসে বলল,,,”ওকে বাবা ঠিক আছে তুই নিজের প্রেমে আগে ফেলিস আমার হবু বৌমাকে কিন্তু তুই এখানে এসেই ওর ছবি দেখাবি আমায়”

রোদ হেসে বললল,,,,”ওকে মম আমি তোমাকেই আগে দেখাবো”

রুহানা চৌধুরী রোদের সাথে কিছু সময় কথা বলে ফোন রেখে দিলো।ফোন রেখে বলল,,,
“যাক এতোবছর পর তাহলে আমার ছেলের মনে কেউ জায়গা করে নিতে পেরেছে।মেয়েটা যেমনই হোক না কেনো আমার রোদ ভালোবাসে আর আমি তাকে যেভাবেই হোক রোদের বউ করবোই”

রুহানা চৌধুরী তার স্বামী রুহান চৌধুরীকে ফোন করলো।ফোন করে বলল,,,,
“শোন একটা খুশির সংবাদ আছে।”

রুহান চৌধুরী বলল,,,”হ্যা বলো কি খুশির সংবাদ”

রুহানা চৌধুরী খুশি হয়ে বলল,,,”আমাদের রোদ আসছে আর ও নাকি বিয়েও করবে”

রুহান চৌধুরীও হেসে বলল,,,”সত্যি বলছো রোদ বিয়ে করবে যাক আমার ছেলের বিয়ে খাওয়ার শখটা এবার পূ’রন হবে।আমি তো ভেবেছিলাম ওর বিয়ে না খেয়েই মরে যাবো আমি”

রুহানা চৌধুরী হাসতে হাসতে বলল,,,”তুমি পারোও ব’টে এতো ফা’জলামি এই বু’ড়ো বয়সে করো কিভাবে”

রুহান চৌধুরীও হাসতে হাসতে বলল,,,,”আমি সবই পারি বুঝেছো”

রুহানা চৌধুরী রুহান চৌধুরীর কথায় হাসতে লাগলো।তারা কিছুক্ষণ কথা বলে ফোন রেখে দেয়।তারা ভী’ষণ খুশি তাদের একমাত্র ছেলে বিয়ে করবে।এতেই খুশি তারা।

১৩.
আনিশার খাওয়া শেষ হতেই ফারিহা আনিশাকে নিয়ে সোজা ভার্সিটিতে চলে এসেছে।দুইটা ক্লাস করে ওরা তিনজন যেখানে আড্ডা দেয় সেখানে এসে বসে পরলো।ইয়ামিন আনিশাকে জিজ্ঞেস করলো,,,
“তোর আর আলভি ভাইয়ার বিয়েটা কি করে হলো আনি”

আনিশার সেদিনের সেই সবকিছু চো’খের সামনে ভাসতে লাগলো।ও হুট করে চিৎকার দিয়ে বললল,,,”না না আমি আলভিকে বিয়ে করবো না উনি ফারিহাকে ভালোবাসে”

ইয়ামিন আর ফারিহা বুঝতে পারলো।ওইদিন খা’রা’প কিছুই হয়েছিলো।তা নয়তো আনিশা কখনো এভাবে রি’য়াক্ট করে না!ফারিহা আনিশাকে জড়িয়ে ধরে ওর পিঠে হাত বোলাতে বুলাতে বলল,,,
“রিলাক্স আনি কিছু হয়নি দেখ এখানে আমি আর ইয়ামিন”

আনিশা কাঁদতে কাঁদতে বলল,,,,,”ওরা আরেকটু হলে আমার সাথে খারাপ কিছু করে ফেলতো ফারু”

ফারিহা বলল,,,,”শান্ত হ তুই।ওসব কথা বাদ দে আমি তোকে আলভির পছন্দের জিনিসগুলো বলছি আর কি কি করতে হবে তাও বলছি।তুই মনোযোগ দিয়ে শোন”

আনিশা চোখের পানি মুছলো।তারপর ফারিহা ওকে সব কিছু বলতে লাগলো।ইয়ামিন ওদের জন্য আইসক্রিম আনতে গিয়েছে।আনিশা শুনে বলল,,,,
“না না ফারু আমি উনার উপর অ’ধিকার খা’টাতে পারবো না।আর উনিও আমার কথা শুনবেন না কখনো উনি তোকে ভালোবাসে”

“দেখ আনি তুই কথা বলবি না তুই আলভির খেয়াল রাখবি আর ওর কাজে অ’ধিকার দেখাবি বুঝেছিস।”

ফারিহার বু’কে চিনচিন ব্যাথা করছে।কথাগুলো বলতে কিন্তু করতেই হবে হবে এগুলো। সে যে চায় তার আনি ভালো থাকুক আর আলভিও।আনিশা বলে,,,,
“দেখ ফারু তুই বুঝতেছিস না তুই যা বলছিস তা আমি করতে পারবো না উনার উপর অ’ধিকার খা”টানো অ’স’ম্ভব।”

“আনি আমি চিনি আলভিকে চিনি ও কিছুই করবে না শুধু যা বলেছি তাই করবি”

আনিশা ভ’য় পেয়ে বলল,,,,,”না না ফারু আমি পারবো না”

ফারিহা চো’খ রা’ঙি’য়ে আনিশাকে বলল,,,,”পারতে তো তোকে হবেই।”[লেখিকা ইশা আহমেদ]

ফারিহা আনিশাকে বোঝাতে লাগলো।আনিশাকে আলভির পছন্দ অপছন্দের কথাও বলতে লাগলো।আনিশা আলভির পছন্দের বিষয়গুলো ম’ন দিয়ে শুনলো।সেও এখন চায় আলভির ম’নে জায়গা করে নিতে।কিন্তু আদেও তা সম্ভ’ব কিনা কে জানে।

ইয়ামিন আইসক্রিম নিয়ে ওদের কাছে এসে বলে,,,
“ফ’কি’ন্নিগুলা নিজেরা আরামে এই গাছের ছায়ায় বসে গল্প করছে আর আমাকে রোদের ভেতরে আইসক্রিম আনতে পাঠাইছে।তাও টাকা দেইনি খ’ইরা’ইত্তা পা’না তোরা দু’জন কি সারাজীবন করবি।”

আনিশাকে ইয়ামিন বলে,,,”ওই ছে’মরি ওই তোর বর না সেই বড়লোক বাপ মার একমাত্র ছেলে তার উপর নিজের একটা কোম্পানি আছে তারপর ও তুই সেই খ’ইরা’ই’ত্তা পা’না করোস ল’জ্জা লাগে না”

আনিশা হেসে বলে,,,,”আমার বরের কথা বা’দ আগে আমার বেস্টফ্রেন্ড আর তুই ও কিন্তু বাপ মার ছোট ছেলে সো তোর ও কিন্তু কম টাকা না”

ফারিহা হাসতে হাসতে বলে,,,,,”আমি আমার মামি মামুর টাকা খাই তাতে তোর কি। তুই যে টাকাগুলো পাস তাও আমার মামুর কাছ থেকে।আর মামুর একমাত্র ভাগ্নি হিসাবে আমার অ’ধিকার আছে হুহ”

কথাটা বলেই আনিশা আর ফারিহা হাসতে লাগলো।বেচারিদের হাসি থামছেই না।ইয়ামিন রে*গে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে।ওরা ইয়ামিনের হাত থেকে আইসক্রিম নিয়ে খেতে লাগলো।ইয়ামিনের একদিক দিয়ে খুশিও লাগছে এই কয়েকদিন এমন ঝ*গ*ড়া করেছে না দুষ্টমি।অন্যদিকে আনিশা ভাবছে সে ভা*গ্য করে দু’জন বন্ধু পেয়েছিলো।যে নিজের ভালোবাসাকেও সে’ক্রি’ফাইস করল। হয়তো করতো না শুধু মাত্র বিয়ে হয়েছে বলেই।তাও ফারিহা চাইলেই বলতে পারতো তাকে চলে যেতে কিন্তু ফারিহা তা করেনি।তাদের ফ্রেন্ডশীপের প্রায় ১৫ বছর হতে চলল।ছোট থেকেই একসাথে।আর ফারিহা তাকে প্রচন্ড ভালোবাসে।

আনিশার ভাবনার মা’ঝেই ফারিহা ইয়ামিনকে বলল,,,,”চল আজকে তুই আমাদের ফুসকার ও ট্রি’ট দিবি”

ইয়ামিন চো’খ বড়বড় করে বলে,,,,”কি এখন আবার ফুসকা!তোরা আজকে আমাকে ফ’কি’র বানানোর ধান্দায় আছিস না”

ফারিহা আর আনিশা দাঁত কেলিয়ে একসাথে বলল,,,”একদম ঠিক ধরেছিস”

ইয়ামিন ওদের কথা শুনে ভৌ দৌড় দিলো।ফারিহা আর আনিশা একে অপরের দিকে তাকিয়ে দৌড় দিলো ইয়ামিনের দিকে।অন্যদিকে এইসব দেখে আলভি রা*গে ফুঁ’সছে। আলভির মোটেও এদের স্বাভাবিক ভাবে থাকতে দেখে তা স-য্য হচ্ছে না।সে বাড়ি থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পরেছে।এতোসময় ধরে দেখছিলো ওদের কাজ।

ফারিহা আনিশার সাথে এমন বি’ভেব স*য্য হচ্ছে না।সে জানে ফারিহা আনিশাকে অনেক ভালোবাসে কিন্তু নিজের ভালোবাসার মানুষকেও দিয়ে দিবে ভাবতে পারেনি।আগে ওদের দেখে নিজেই ম’নে ম’নে চাইতো ওদের ফ্রেন্ডশীপ যেনো সারাজীবন থাকে।কিন্তু এইসব নে’কা’মি আর না’টক ছাড়া কিছুই ম’নে হচ্ছে না।

আলভি রে*গে আনিশা ফারিহা আর ইয়ামিনের কাছে গেলো।ওরা দু’ষ্টমি করছিলো আর ফুসকা খাচ্ছিল।ও এসেই আনিশার সামনে দাঁড়িয়ে ওর হাত থেকে টেনে প্লেটটা নিয়ে নেয়।প্লেটটা টেবিলে রেখে আনিশাকে টা’ন মেরে দাঁড় করায়।

হুট করে আনিশার হাত থেকে কেউ প্লেট নেওয়াতে ও অবাক হয়।তারপর আবার টান মেরে দাঁড় করায় ভ*য় পেয়ে আলভির শার্ট শ’ক্ত করে ধরে।ইয়ামিন আর ফারিহাও দাঁড়িয়ে যায়।আলভি রে*গে আনিশার হাত শ’ক্ত করে চে’পে ধরে বলে,,,,
“তোমাকে না মা’না করেছিলাম আসতে এখানে তবুও আসলে তুমি!অনেক সাহস না তোমার আজকে বাসায় গিয়ে তোমার সাহস বের করছি”

আনিশা ব্যা’থা’য় কা’তরা’চ্ছে। ফারিহা বুঝতে পারে।ফারিহা রা*গি ক’ন্ঠেই আলভিকে বলল,,,,
“ওর হাতটা ছে’ড়ে দাও”

আলভিও রে*গে বলে,,,,,”সকালে অনেক বলেছ এখন আমি বলছি শোনো ও আমার বউ ওর সাথে আমি যা খুশি তাই করতে পারি আমার অ’ধি’কার আছে”

ফারিহা বলল,,,,”তুমি ওর সাথে যা খুশি তাই করতে পারো না কারণ ও একটা মানুষ আর ওর স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার আছে। আর তুমি তো ওকে বউ বলে মানো ও না”

আনিশা আশেপাশে তাকিয়ে দেখে সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।ও তা দেখে বলে,,,,”আপনারা চুপ করুন প্লিজ সবাই কীভাবে তাকিয়ে আছে।”

ওরা আনিশার কথায় পা’ত্তা না দিলো না।আলভি বলল,,, “আমি আজকে থেকে মেনে নিলাম ও আমার বউ সো ওর উপর এখন অবশ্যই আমি অ’ধি’কার খা’টাতে পারবো আর তুমি কেউ না আমাদের মা’ঝে কথা বলার”

কথাটা বলেই আলভি আনিশাকে টেনে ওখান থেকে নিয়ে যায়।ফারিহা অ’সহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ওদের যাওয়ার দিকে।বুকে যে র*ক্ত ক্ষ’রণ হচ্ছে।ইয়ামিন বুঝলো হয়তো তাই বিল দিয়ে ফারিহাকে নিয়ে ওখান থেকে বাসায় চলে গেলো।

১৪.
ওই দিনের পর আজ পনেরো দিন পার হলো।না আলভি আনিশাকে ফারিহার সাথে দেখা করতে দিয়েছে আর না ফারিহা আনিশার কাছে গিছে।ওর যে সেদিনের কথাটা এখনো মা*থায় ঘু’রতে আছে।ফারিহা ভবছে,,,
“আনিশাও হয়তো আলভিকে ভালোবাসে।ওর চো’খ মুখ দেখলেই বোঝা যায়।আচ্ছা আলভিই কি ওর সেই ভালোবাসার মানুষ।”

ফারিহার ভাবনার মা’ঝে ফারিহার মা মিসেস শিরিনা আহমেদ ফারিহার রুমের সামনে এসে বলল,,,,,,
“ফারু মা দরজাটা খোল”

ফারিহা রুমের ভেতর থেকে বলে,,,”মম তুমি যাও আমি আসছি একটু পর”

চলবে,,,,,,,,,?

[আসসালামু আলাইকুম!দুঃখি’ত কালকে গল্প না দেওয়ার জন্য।ব্যা’স্ত থাকার কারণে দিতে পারিনি।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here