রোদহীন বিকালে তুমি পর্ব -০৬+৭

#রোদহীন_বিকালে_তুমি✨
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_৬

১৪.
ওই দিনের পর আজ পনেরো দিন পার হলো।না আলভি আনিশাকে ফারিহার সাথে দেখা করতে দিয়েছে আর না ফারিহা আনিশার কাছে গিছে।ওর যে সেদিনের কথাটা এখনো মা*থায় ঘু’রতে আছে।ফারিহা ভবছে,,,
“আনিশাও হয়তো আলভিকে ভালোবাসে।ওর চো’খ মুখ দেখলেই বোঝা যায়।আচ্ছা আলভিই কি ওর সেই ভালোবাসার মানুষ।”

ফারিহার ভাবনার মা’ঝে ফারিহার মা মিসেস শিরিনা আহমেদ ফারিহার রুমের সামনে এসে বলল,,,,,,
“ফারু মা দরজাটা খোল”

ফারিহা রুমের ভেতর থেকে বলে,,,”মম তুমি যাও আমি আসছি একটু পর”

ফারিহা কিছুক্ষণ পরে নিচে নামে।খাবার টেবিলে ওর বাবা শিহাব আহমেদ আর ওর মা শিরিনা আহমেদও বসে আছে।ও গিয়ে বসে পরে ওর টেবিলে।শিহাব আহমেদ ফারিহাকে বলল,,,,
“তুমি এখন কি করতে চাইছো ফরিহা। আর নিজের কি অবস্থা করেছো।খাওয়া দাওয়া ঠিকমতো করোনা কেনো!কি শুরু করেছো তুমি?”

ফারিহা খেতে খেতে বলল,,,,”আমি কিছুই করছি না পাপা আমি ঠিক আছি।আর আমি চাইছি আমার আনি শুধু ভালো থাকুক”

শিহাব আহমেদ গম্ভীর কন্ঠে বলেন,,,,,”আমিও চাই মেয়েটা সুখে থাকুক। ছোটবেলা থেকেই তো ক*ষ্ট করে যাচ্ছে।কিন্তু তোমার এই কাজ গুলো মে’নে নিতে পারছি না”

ফারিহা হেসে বলল,,,,,”কালকে থেকে তুমি আর বলবে না এগুলো আমি আবার আগের মতো হবো”

কথাটা বলেই ফারিহা উঠে গেলো।শিরিনা ফারিহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দী’র্ঘ’শ্বা’স ফেলে বলল,,,,,
“মেয়েটা আমার কেমন হয়ে গেলো এই কয়েকদিনে।”

শিহাব শিরিনাকে শা’ন্ত’না দিয়ে বলল,,,,”চি’ন্তা করো না আমাদের মেয়ে নিজেকে সা’মলাতে জানে।”

ফারিহা রুমে এসে ভাবছে,,,,
“কালকে আমাকে আনির কাছে যেতে হবে এবং সব প্রশ্নের উত্তরও জানতে হবে”

১৫.
আনিশার এই কয়েকদিন ভালোই কে’টেছে।আহার সাথে গল্প করেছে।জানুয়ারি মাস এখন আহা অনেকটাই ফ্রি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে সে।এখনো কলেজে ভর্তি হয়নি।তাই ফ্রি আছে আর আনিশারও ভালো সময় কে’টেছে আহার সাথে।আলভির সাথে তার দেখা খুব কমই হতো।সকালে তার ওঠার আগেই অফিসে চলে যেত আর রাতে ঘুমানোর পর বাসায় আসতো।তাই এই কয়েকদিন আনিশা আলভির অ’ত্যা’চা’রের শি’কা’র হয়নি।সেদিন বাসায় এনে আনিশাকে বলে ওদের সাথে না মিশতে কিন্তু আনিশা তো আর তা পারে না!

ছোটবেলা থেকে যারা তাকে এতো সাহায্য করেছে তাদের সাথে না মিশে কিভাবে থাকবে সে।ফারিহাকে এই প্রতিদিনই ফোন দিয়েছে কিন্তু ফোন ব’ন্ধ বলেছে।অনলাইনেও আসেনি।চি’ন্তি’ত হয়ে ইয়ামিনকে ফোন করেছিলো।ইয়ামিন বলেছে ঠিক আছে।কিন্তু তাও ম’ন মানেনি আনিশার।তারপর শিরিনাকে ফোন দিয়ে তবেই ফারিহার সাথে কথা বলেছে।

ফারিহা বলেছে তাকে একটু সময় দিতে তাই আনিশা আর ফোন দেয়নি।আজকে তার মোটেও ঘুম আসছে না।তাই সোফায় বসে আলভির জন্য অপেক্ষা করছে।ও অবশ্য প্রতিদিনই সোফায় ঘুমায়।রাত ১২ টা পেরতেই আলভি রুমে ঢুকলো।রুম অন্ধকার থাকায় আলভি বুঝতে পারেনি আনিশা জেগে আছে।লাইট জ্বালাতেই আনিশাকে বসে থাকতে দেখে অবাক হলো আলভি।

সে নিজের মতো সব কাজ করে শুয়ে পরলো।আনিশা আলভিকে বলল,,,,”আপনি কি খেয়ে এসেছেন নাকি আমি খাবার নিয়ে আসবো”

আলভি শা’ন্ত গলায় বলল,,,,”আমি খেয়ে এসেছি”

আনিশা জো’ড়ে শ্বাস নেয়।তারপর কাঁ’পা কাঁ’পা গলায় বললো,,,,,”আমি কি কালকে ভার্সিটিতে যেতে পারি।”

আলভি কিছুসময় চুপ থেকে বলে,,,,”হ্যা যেতে পারো কিন্তু আমি দিয়ে আসবো আর আমিই নিয়ে আসবো”

আলভির কথায় আনিশা প্রচুর অবাক হয়।আলভি তাকে নিয়ে আসবে বলছে এটাও বি’শ্বাস করা যায়।আলভি আনিশার নিরব হয়ে থাকায় বললল,,,,,,
“এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই তুমি আমার দায়িত্ব তাই করছি”

কথাটা বলার পর কেউই আর কথা বলে না।আনিশা সোফায় শুয়ে পরে।সে ভাবছে কিছু একটা ভাবছে আলভি না হলে এতোদিন ভালো ব্যবহার করতো না আর না কালকে সে ভার্সিটি নিয়ে যেত।কালকে যাওয়ার পরই বুঝবে কেনো করছে আলভি এইসব।

আলভি ভাবছে,,,,”ফারু পাখি তুমি তো আমায় বুঝলে না আর না আমার কাছে ফিরলে।তাই কালকে থেকে তুমি এক নতুন আলভিকে দেখবে।আর যা দেখে তোমার বুকেও র’ক্ত ক্ষ’রণ হবে।অনেক ক*ষ্ট দিয়েছো পাখি আমায় এবার আমিও একটু দেই।আর আমি যা করছি সব ভালের জন্যই করছি”

১৬.
ফারিহা তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হয়েছে।আজকে গাড়ি নিয়ে বের হয়নি।ইয়ামিনকেও চলে যেতে বলেছে ভার্সিটিতে।ফারিহা দ্রুত হাঁটতে গিয়ে কারো সাথে ধা*ক্কা লেগে পরে যেতে নেয়।আর তখনই একটা লোক ফারিহার কোমড় জড়িয়ে ধরে পরে যাওয়া থেকে বাঁ’চায়।ফারিহা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলে,,,,
“আমাকে স্প’র্শ করলেন কোন সা’হসে”

লোকটা আর কেউ নয় রোদ।রোদ সকাল ৬টায় বাংলাদেশে এসেছে।রোদ হেসে বলল,,,”মিস আমি যদি আপনাকে না ধরতাম তাহলে তো আপনি পরে যেতেন”

ফারিহা তাও তে’জি ক’ন্ঠে বলল,,,,,”পরলে পরতাম!আপনি ধরলেন কেনো সাহ’স তো কম না আপনার”

রোদ আবারও হেসে বলল,,,,”আমার প্রচ’ন্ড সাহস মিস। ওহ আপনার নামটা কি বলেন তো”

ফারিহা রে*গে ঝ*গ*ড়া করতে থাকে।আলভি আনিশাকে ভার্সিটির সামনে নামিয়ে দেয়।তখনই আনিশা দেখে রাস্তার ওপারে ফারিহা একটা লোকের সাথে ঝ*গ*ড়া করছে।আনিশা দৌড়ে চলে যায় ফারিহার কাছে।আলভি আনিশার হুট করে দৌড়ে ওপারে যেতে দেখে নিজেও গাড়ি থেকে নামে।

আলভিও আনিশার পেছনে পেছনে ফারিহার কাছে চলে আসে।এসে দেখে ফারিহা একটা ছেলের সাথে ঝ*গ*ড়া করছে আর আনিশা ওকে থামানোর চে’ষ্টা করছে।লোকটা অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলো।আলভি ওদের সামনে গিয়ে বলে,,,,
“হচ্ছেটা কি এখানে আর আনিশা তুমি হুট করে দৌড়ে এপাশে আসলে কেনো যদি কিছু হয়ে যেত তোমার”

আলভির কথায় আনিশা আর ফারিহা হা করে আলভির দিকে তাকিয়ে আছে।ফারিহার কথাটা শুনে অনেক ক*ষ্ট হয়।কিন্তু একদিক দিয়ে খুশি ও হয় আলভি মে’নে নেওয়ার চে’ষ্টা করছে।রোদ ওদের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।আনিশা অবাক হয়ে বলল,,,,,
‘আপনি প্লিজ এই অদ্ভুত আ’চর’ণ করা বাদ দেন আমি আর নিতে পারছি না”

আলভি হেসে বলে,,,,”মিসেস আনিশা শাহরিয়ার এখন থেকে এগুলোর সাথে সাথে রোজ পরিচিত হতে হবে”

আনিশা চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে বলে,,,,”আপনি পা*গ*ল হয়ে গিয়েছেন!আপনি মজা করছেন না বুঝতে পারছি আমি”

আলভি একবার ফারিহার দিকে তাকিয়ে আনিশার দিকে ঝুঁকে ওর নাকে নাক ঘ*ষে বলে,,,,”একদম না আনিশা আমি সিরিয়াস”

আলভির কথা শুনে ফারিহার প্রচুর ক*ষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ও নিজেকে সং’য’ত রেখেছে।[লেখিকা ইশা আহমেদ]

রোদ পিছন থেকে বলে,,,,”ভাই এটা আপনার বাসা না এটা পাবলিক প্লেস তাই নিজেকে সং’য’ত রাখুন।বাসায় গিয়ে নিজের ওয়াইফের সাথে যা ইচ্ছা তাই করবেন এখানে না”

আলভি ভ্রু কুচকালো।পিছনে ফিরে নিজের বহু দিনের বন্ধুকে দেখে বলল,,,,”রোদ তুই কবে এসেছিস আমাকে বলিসনি কেনো?”

রোদ হেসে বলল,,,,”আমি তো আজ সকালেই এসেছি।এখান থেকে বাড়ি যাচ্ছিলাম আর তখনই এই কাঁ’চামরিচের সাথে ধা*ক্কা লাগে আমার।আর উনি তো ঝ*গ*ড়া করেই যাচ্ছে।তার থেকে বড় কথা হচ্ছে তুই বিয়ে করেছিস আর আমাকে বলিসনি”

আলভির ফারিহাকে কাঁ*চামরিচ বলা মোটেও পছন্দ হয়নি কিন্তু বন্ধু বলে কিছু বলতেও পারছে না।রোদ আবারও বলল,,,,
“এটাই তাহলে আমাদের ভাবি”

আলভি জো’রপূর্বক হেসে বলে,,,,”হ্যা ও আমার ওয়াইফ।”

রোদ আনিশার সাথে পরিচিত হলো।আনিশাও হাসি মুখে পরিচিত হলো।তারপর ফারিহাকে বলল,,,,
“তা কাঁ’চামরিচ আপনার নামটা কি”

ফারিহা রেগে বলে,,,”আপনি কাঁ’চামরিচ কাঁ’চামরিচ বলছেন কেনো হ্যা আমার নাম ফারিহা ইয়ানাত”

রোদ হেসে বলে,,,,”ওকে মিস ফারিহা ইয়ানাত”

কথাটা বলেই আলভিকে নিয়ে রোদ চলে যায়।ফারিহা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বকতে থাকে রোদকে।আনিশাকে ওকে নিয়ে ক্লাসে চলে যায়।একটা ক্লাস এই ঝ*গ*ড়ার জন্য মিস হয়ে গেলো ওদের।ক্লাস শে’ষে আনিশা আর ফারিহা ক্যান্টিনে আসে।ফারিহা আনিশাকে বলে,,,,
“একটা সত্যি কথা বলবি আনি”

আনিশা মৃদু হেসে বলে,,,,”তুই জানিস আমি মি*থ্যা বলি না ফারু”

ফারিহা বলল,,,”তুই আলভিকে ভালোবাসিস তাই না সত্যি করে বলবি ভ*য় নেই কারণ আলভি এখন তোর শুধুই তোর”

আনিশা পানি খাচ্ছিল ফারিহার কথায় বি’ষ’ম খায়।ফারিহা তাড়াতাড়ি পিঠে হাত বুলিয়ে ওকে ঠিক করে।আনিশা হুট করে দাঁড়িয়ে যায় তারপর বলে,,,,
“ফারু আমি যাই বুঝেছিস আলভি হয়তো নিতে এসেছে কালকে দেখা হচ্ছে”

আনিশা তা’ড়া’হু’ড়ো করে বেড়িয়ে পরলো।ফারিহা আনিশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।সে বুঝলো আনিশা তাকে তাড়া দেখিয়ে চলে গেলো।হয়তো তার ভাবনায় ঠিক আনিশাও আলভিকে ভালোবাসে তাও তার আগে থেকে।

১৭.
আনিশা তখন ফারিহাকে মি*থ্যা বলেই চলে এসেছিলো।কারণ আলভির তাকে আনার কথা আরো পরে।সে একা একাই চলে এসেছিলো।না জানি কি করবে বাসায় আসলে।তাই ভেবে পাচ্ছে না আনিশা।এখন বিকাল!আনিশা আর আহা মিলে তাদের বাগানের দোলনায় বসে দোল খাচ্ছে আর গল্প করছে।আহা আলভির ফুলের বাগান দেখিয়ে বলল,,,
“ওইটুকু হলো ভাইয়ার ওখানে ভাইয়া নিজের সব প্রিয় ফুলের গাছ লাগিয়ে রেখেছে।এই ক’দিন ভাইয়ার জায়গায় আমিই গাছগুলোর যত্ন নিয়েছি”

আনিশা কথাগুলো শুনলো।কিন্তু উত্তর দিলো না।আহা আর কথা না বাড়িয়ে অন্যকথা বলতে থাকে।তার ভেতরেই বাড়িতে গাড়ি ঢোকে আলভির।আলভি নেমে বাড়ির ভেতরেই ঢুকছিলো আনিশাকে দেখে মুচকি হাসে।তারপর আনিশাকে বলে,,,,,
“আনিশা রুমে আসো তো”

কথাটা বলেই মুচকি হেসে চলে যায়।আহা তার ভাইয়ের এই প’রি’বর্তন দেখে ভীষন অবাক হলো।আনিশাকে বলল,,,,”ভাবি তোমাদের মা’ঝে কি সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।”

“আহা কিভাবে সব ঠিক হবে বলো তো উনি আমায় ভালোবাসেন না।কিন্তু উনি কালকে রাত থেকে কেমন অ’স্বা’ভা’বিক আ’চ’র’ণ করছেন”

আনিশা কথাটা বলেই চলে যায়।আনিশার কথায় আহা চি’ন্তায় পরে যায়।আনিশা আলভির কাছে আসে।আলভি আনিশার কাছে এসে ওর গালে হাত দিয়ে বলে,,,,”তুমি ভার্সিটি থেকে একা চলে এসেছো কেনো আনিশা?”

আনিশা প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলে,,,,
“আপনি প্লিজ স্বাভাবিক আচরণ করুন আমি মে’নে নিতে পারছি না আপনার এই অ’স্বা!ভাবিক আচরণ”

আলভি হেসে বলে,,,,”তোমাকে আমি সকালেই সব বলেছি আনিশা!এগুলে বাদ দাও খিদে পেয়েছে দুপুরে খাইনি খাবার নিয়ে আসো”

আনিশা যেতেই আলভি বাঁ’কা হাসলো আর বলল,,,,”এখন থেকে সবাই দেখবে আলভি শুধু আনিশার জন্য পা*গ*ল”

১৮.
itna bata de tujhko
chahat pe apni mujhko
yooo to nahin ikhtiaar
phir bhi ye socha dil ne

ab jo laga hu milne
pucchun tujhe ak baar
Oooooo……
tuhi yeh mujhko bata de.
chahun main ya na……

রোদ তার বেলকনিতে বসে গান গাইছিলো।তার ভেতরেই রোদের মা রুহানা তার কাছে এসে বলে,,,,
“রোদ তুমি যে আমাকে বলেছিলে আমার হবু বউ মার ছবি আমায় দেখাবে তো কই দেখাও”

চলবে,,,,,?#রোদহীন_বিকালে_তুমি✨
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_৭

১৮.
itna bata de tujhko
chahat pe apni mujhko
yooo to nahin ikhtiaar
phir bhi ye socha dil ne

ab jo laga hu milne
pucchun tujhe ak baar
Oooooo……
tuhi yeh mujhko bata de.
chahun main ya na……

রোদ তার বেলকনিতে বসে গান গাইছিলো।তার ভেতরেই রোদের মা রুহানা তার কাছে এসে বলে,,,,
“রোদ তুমি যে আমাকে বলেছিলে আমার হবু বউ মার ছবি আমায় দেখাবে তো কই দেখাও”

রোদ হেসে বলল,,,,”মম দাঁড়াও দেখাচ্ছি”

রোদ গিটারটা পাশে রেখে ফোনটা বের করে ফারিহার ছবি দেখিয়ে বলল,,,,”মম এই যে ফারিহা ইয়ানাত।”

রুহারা ছবি দেখে অবাক হয়ে বলে,,,,”ওকে তো চিনি আমি ও আর ওর ফ্রেন্ড একদিন আমায় সাহায্য করেছিলো।”

রোদ কৌ’তু’হল নিয়ে বলে,,,,”কি সাহায্য করেছিলো ফারিহা”

“সেদিন গাড়ি নিয়ে বের হয়নি আমি।রাস্তায় অ’সু’স্থ হয়ে পরেছিলাম।এই মেয়েটা আর ওর বান্ধবী মিলে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।ডাক্তারও দেখায় মেয়ে দুইটা খুবই ভালো।ফরিহা নামের মেয়েটা মনে হয় একটু রা*গী আর ওর বান্ধবী ও খুব শান্ত স্বভাবের”

রোদ ক’রু’ন কন্ঠে বলে,,,”হ্যা মম ফারিহা প্রচন্ড রা*গি!কিভাবে ওকে প’টাবো মম তাই ভাবছি”

রুহানা হেসে বলে,,,,”চিন্তা করিস না আমার এতো সুদর্শন ছেলেকে কি কেউ পা’ত্তা না দিয়ে পারে”

রোদন ম’ন খা’রাপ করে বলে,,,”মম ও সবার থেকে আ’লা’দা।ওকে প’টানো অনেক ক’ঠিন”

রুহানা রোদকে শান্তনা দিয়ে চলে গেলো।রোদ বিড়বিড় করে বলল,,,,
“এমন মেয়ে যাকে বাঁচানোর জন্য স্প’র্শ করেছিলাম তাই কতো ঝগড়া করলো বাপরে বাপ।রোদরাজ চৌধুরীর বউ যদি এমন তে*জি না হয় তাহলে কি হয় নাকি।আমার বউ আমার মতোই হয়েছে”

১৯.
সকাল সকাল আলভি আনিশাকে তা*ড়া দিয়ে রেডি করিয়ে ভার্সিটির সামনে চলে আসলো।আনিশার সাথে সাথে আলভিও গাড়ি থেকে নামলো।আনিশা চলে যেতে নিলেই আনিশার হাত ধরে আ’টকে বলে,,,,
“আজকে কিন্তু মোটেও একা যাবে না আমি তোমাকে নিয়ে যাবো এসে।”

আনিশা মা*থা নাড়ায়।আলভি মুচকি হেসে চলে যায়।দূর থেকে ইয়ামিন আর ফারিহা দেখছিলো ওদের।ফারিহা একদৃ’ষ্টিতে তাকিয়ে আছে।হয়তো মানতে ক*ষ্ট হচ্ছে আলভির এমন পরিবর্তন।ইয়ামিন ফারিহাকে বলল,,,,,
“আলভি ভাইয়া এমন আ’চরণ করছে কেনো ফারু উনি কি সত্যিই আনিকে ভালোবাসতে শুরু করেছে”

ফারিহা নিজেকে সামলে বলল,,,,”হয়তো ভালোই হবে।আমি তো এটাই চাইছিলাম ওরা দু’জন ভালো থাকুক।”

আনিশা এসে ওদের পাশে বসে।আজকে ওদের ক্লাস দে’রিতে হবে।তাই সবাই ভার্সিটির ক্যাম্পাসে বসে যার যার মতো গল্প করছে।ফারিহা ওদের কিছু বলবে তার আগে ওদের ক্লাসের কিছু মেয়ে আসে ওদের কাছে।মেয়েগুলোর মধ্যে রুনা নামের একটা মেয়ে স’য়’তা’নি হাসি দিয়ে বলে,,,,
“কিরে ফারিহা আলভি না তোর বয়ফ্রন্ড ছিলো তা এখন আনিশার সাথে কি করে।নাকি তোরা একজনকেই দু’জন
মিলে বিয়ে করার ধা’ন্দা’য় আছিস”

ফারিহার প্রচুর রা*গ হলো।কিন্তু নিজেকে সামলে বলল,,,”আমাদের ব্যাপার আমাদের বুঝতে দে তোরা যা এখান থেকে!”

রুনা মুখ বাঁ’কিয়ে বলে,,,,”সত্যি কথা বললে জ্ব*লে না জ্ব*লবেই তো”[লেখিকা ইশা আহমেদ]

কথাটা বলেই রুনা হাসে লাগলো।রুনার সাথে থাকা মেয়েগুলোও হাসতে লাগলো।ফারিহা রে*গে রুনার গা’লে থা-প্প*ড় মা-রতে লাগলো।থা*প্প*ড় মা’র’তে মা’র’তে বলল,,,,,
“বে’হা’য়া র্নি’ল’জ্জ মেয়ে এই তোকে না বলেছি আমাদের বিষয়ে কথা বলবি না তাও কথা বলতে এসেছিস!মানুষকে না জ্বা*লালে হয় না তাই না।”

রুনাকে ফারিহা মে*রেই যাচ্ছে। কেউ কথা বলছে না। আনিশা আর ইয়ামিন হা করে দেখছে।কারো সাহস নেই ফারিহার কাছে এখন যাওয়ার।ভার্সিটির প্রায় সবাই জানে আর কে কিই বা বলবে ভার্সিটির থার্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট এরা কারো কিছু বলার সা’হস নেই।

রোদ ফারিহাকে দেখতেই ভার্সিটি এসেছিলো।আরো একটা কাজেও এসেছে।ফারিহার এই অবস্থা দেখে।রুনার থেকে টে’নে ছাড়ায় ওকে।রোদও কিছু মা*র খায় ফারিহার হাতে।তবুও কিছু বলে না ও।জানে ভীষণ রেগে আছে ফরিহা।ফারিহাকে ছাড়তেই ফারিহা রে*গে বলল,,,
“আপনি আজকেও আমাকে স্প’র্শ করলেন কি শুরু করেছেনটা কি হ্যা বে’য়াদপ অ’স’ভ্য বেডা আপনারে আমি পুলিশে দেবো”

রোদ ফারিহাকে ধ’ম’ক দিয়ে বলে,,,”just shut up miss fariha.তুমি আমাকে পুলিশে দেবে হা হা হা আমি বরং তোমাকে ভার্সিটি থেকে সাসপেন্ড করতে পারি।তুমি জানো আমি কে!”

ফারিহা রে*গে আ’ঙ্গু’ল তু’লে বলল,,,,”এই কে আপনি হ্যা যে আমাকে সাসপেন্ড করার কথা বলছেন”

রোদ রা*গি দৃ’ষ্টিতে ফারিহার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,”আমি নিউ প্রফেসর এখানের”

আনিশা আ’টকে উঠে ও টেনে ফরিহাকে ইয়ামিনের কাছে দিয়ে রোদকে বলে,,,,”ভাইয়া সরি স্যার আমাদের ক্ষ’মা করে দিবেন। ওর একটু রা*গ বেশি আর রুনাও ফা’ল’তু কথা বলছিলো।”

রোদ হেসে বলল,,,,”ঠিক আছে ভাবি ওপস সরি আমি তো এখানে আপনাদের টিচার সো নাম ধরে ডাকি ঠিক আছে”

আনিশা জোড় পূর্বক হেসে বলে,,,”জী জী স্যার কোনো সমস্যা নেই”

রোদ চলে যায়।ফারিহা এখনো রা*গে ফু’সছে।ফারিহা আনিশাকে বলে,,,,”তোর আজকে সত্যি বলতেই হবে তোট সেই প্রিয় মানুষটা আলভি না”

আনিশা কাঁ’পা কাঁ’পা কন্ঠে বলে,,,,”হ্যা কিন্তু বিশ্বাস কর তোদের রিলেশনের কথা জানার পর আমি আর উনাকে নিয়ে ভাবতে চাইনি কিন্তু ভালোবাসি তো তাই ভু*লতেও পারিনি কি করবো বল কিন্তু আমি কখনো চাইনি উনি আমার হোক”

ফারিহা হেসে বলে,,,,”আমি তোকে চিনি আর কিছু বলতে হবে না আনি”

আনিশাও হাসে।ফারিহার হাসিতে যে এক বুক ক*ষ্ট জমে আছে তা আনিশা খুব ভালো করেই জানে।আলভির এই অ’স্বা’ভাবিক ব্যবহারে যে ফারিহার হৃ’দয়ে আ’গু’ন জ্ব*ল*ছে তাও বুঝতে পারছে। তার তো খুশি হওয়ার কথা আলভির ব্যবহারে তাহলে কেনো সে খুশি হতে পারছে না।

২০.
রোদ কখনোই চাইনি ফারিহার সাথে এমন ব্যবহার করতে কিন্তু শে’ষে বা’ধ্য হয়েই এমন করলো।রোদ জানে ও এমন না করলে কখনোই ফারিহা শান্ত হতো না।রোদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভিসির কাছে যায়।ভিসির সাথে কথা বলে অনেক সময় ধরে।মূলত ফারিহার জন্যই এই ভার্সিটির প্রফেসর হওয়া।রোদ চাই ফারিহা ওকে ভালোবাসুক জো’ড় করে কখনোই ভালোবাসা হয় না তা রোদ জানে।আর ফারিহার মতো মেয়ের সাথে কখনোই না।

আলভি আজকে ওকে দেখা করতে বলেছে।কালকে কথা বলতে পারেনি তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছিলো অফিস থেকে জরুরি কল আসায়।রোদ ভার্সিটি থেকে বের হওয়ার আগে ফারিহাকে দেখে যায়।ক্যান্টিনে বসে আছে।রোদ বের হয়ে ছোটবেলায় আলভি রোদ যেই পার্কে খেলা করতো সেখানে।রোদ পার্কে ঢুকতেই একটা বেঞ্চ আলভিকে বসা দেখলো।

আলভিকে দেখে হাসলো রোদ।রোদের ছোটবেলায় কাটানো মূহুর্তের কথা মনে পরে যাচ্ছে।কতো দু’ষ্ট’মিই না করেছে দু’জন আর আজ একজন বিয়েও করে ফেলল।রোদ গিয়ে ঠা’স করে আলভির পাশে বসে পরলো।আলভি গভীর ভাবনায় ম’গ্ন ছিলো।রোদের শব্দ করে বসাতে ঘো’র কাটলো।

আলভি হাসলো।রোদ ওকে বলল,,,”তাহলে আনিশা ভাবিই সেই মেয়ে যাকে তুই ভালোবাসিস!যার কথা সেদিন বলেছিলিস আমায়”

আলভি বলে,,,”ও সে না ওর সাথে আমার হুট করে বিয়ে হয়েছে”

রোদ অবাক হয়ে বলে,,,,”কি সত্যি তাহলে তুই কি এখন আনিশা ভাবিকে ভালোবাসিস”

আলভি রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে,,,,”বাসি তো খুব বাসি!বাদ তোর খবর কি কবে বিয়ে করছিস”

রোদ হতাশ হয়ে বলে,,,,”ভাই বউ রাজি হচ্ছে না কি করবো বল।তাকে পটা’নোর মিশনে নেমেছি”

আলভি বলে,,,”কে রে সেই মেয়ে যে আমার বেস্টফ্রেন্ডকে পা’ত্তা দিচ্ছে না”

রোদ হেসে বলে,,,,”দেখাবো হুট করে একদম বিয়ে করে সারপ্রাইজ দিয়ে দেবো তোকে”

আলভি আর রোদ কথা বলতে থাকে।আলভির মনে এখন কি চলছে কে জানে।বেচারি আনিশার ক’পালে কি আছে।

২১.
রাতে খাবার টেবিলে আলভিসহ সবাই উপস্থিত।সবাই বসে হাসি মুখে খাচ্ছে হঠাৎ আলভির বাবা বলে,,,,”আলভি তোমাদের বিয়ে তো বেশ কিছুূদিন হলো তাই ভাবছি তোমদের রিসিপশনটা করে ফেলি।তুমিও তো মনে হয় আনিশা মাকে মেনে নেওয়ার চে*ষ্টা করছো”

আলভির খাওয়া থামিয়ে দিলো।চো’খ মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই তারমনে কি চলছে।আনিশাসহ সবাই তাকিয়ে আছে ওর দিকে উ’ৎসুক দৃ’ষ্টিতে।

চলবে,,,,,?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here