#রোদ_বৃষ্টির_প্রেম
#Nishi_khatun
#part_16
রোদের একমাত্র বোনের বিয়ে বলে কথা। তাই সে তার কাছের সব বন্ধুদের দাওয়াত দেয়। রোদের লিস্টে বৃষ্টির পরিবার যোগ হয়।
রোদ নিজে বিকালে শিকদার মির্জার বাড়িতে চলে যায়। রোদের ভাগ্য ভালো যে শিকদার মির্জা সে সময় বাড়িতেই ছিলো। আর একটু দেড়িতে গেলে হয়তো তার দেখা পেতো না।
রোদকে দেখে শিকদার মির্জা বলে,”আরে ডাক্তার রোদ বাবাজী যে!”
রোদ- জ্বি আঙ্কল! আপনাদের সবাই কে আমার ছোট বোনের বিয়েতে দাওয়াত দিতে আসছি।
শিকদার মির্জা – ওহ, অভিনন্দন তোমাকে! তা বোনের বিয়েরপর কি তোমার বিয়ের দাওয়াত পাবো?
রোদ- ইনশাআল্লাহ! আল্লাহ যদি চাই অবশ্যই পাবেন।
শিকদার মির্জা – তোমার ভাগ্য অনেক ভালো বুঝলে!
রোদ- কিভাবে?
শিকদার মির্জা – আর একটুপর আসলে হয়তো আমার সাথে তোমার দেখা হতো না। কিছুদিনের কনফারেন্সের জন্য বাহিরে যাচ্ছি।
রোদ- ওহ,বড় আশা করে এসেছি আপনাদের আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাবো আর আপনারা সবাই হুট করে এভাবে চলে যাচ্ছেন।এটা মোটেই উচিৎ নয়।
শিকদার মির্জা – কি করবো বাবা বলো! রাজনীতি করতে গেলে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। নিজের পরিবারের জন্য সময় হয় না ঠিকামতো।
রোদ- তাহলে আপনারা আমাদের বাড়িতে যাচ্ছেন না তাই তো।
শিকদার মির্জা – আহা, তা কখন বলছি আমরা বলোতো। তা তোমার বোনের বিয়ে কবে?
রোদ- এই তো সামনে শুক্রবার!
শিকদার মির্জা – ওহ, তাহলে তো সমস্যা নেই।ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করবো বিয়ের দিন এটেন্ড করতে।
তা তোমার বাবার নাম কি? তোমাদের বাড়িটা যেনো কোথায়?
রোদ- খান বাড়ি বললে সবাই চেনে। আপনিও চেনেন হয়তো।
শিকদার মির্জা বলে,”ওহ তুমি মিস্টার খান সাহেবর ছেলে। তার বাড়ির সবার সাথে তো অনেক ভালো ভাবে চেনা জানা আছে আমাদের। ”
রোদ- ওহ তাহলে তো ভালোই।
শিকদার মির্জা সে সময় বৃষ্টি কে ডাক তে থাকে। বৃষ্টি শিকদার মির্জার ডাক শুনে নিচে নেমে এসে দেখে রোদ শিকদার মির্জার পাশে বসে আছে।
শিকদার মির্জা – আরে বৃষ্টি তোমার একমাত্র বান্ধবীর বিয়ে সে কথা তো তুমি আমাদের জানালে না।
বৃষ্টি – আমার বান্ধবীর বিয়ে মানে ঠিক বুঝলাম না।
শিকদার মির্জা – বৃষ্টি তুমি আমাদের সাথে হেয়ালি করছো? আর রোদকে যে আগে থেকে তুমি চেনো সে কথা কেনো বলো নাই?
বৃষ্টি- বাবা আমি আপনারা কথার আগা মাথা কিছুই বুঝতে পারছি না।
শিকদার মির্জা – রোদ রিনির বড় ভাই! তুমি আগে থেকে জানতে এ কথা? আর রিনির শুক্রবার বিয়ে,তাও আমাদের জানানোর প্রয়োজন বোধ করো নাই?
বৃষ্টি- বাবা আমি জানতাম না রিনির বড় ভাই উনি। আজকে আপনার কাছে জানতো পারলাম। আর রিনির বিয়ে সে কথা আমি জানি না।
রোদ- এবার চরমরূপে অবাক। কই রিনি বা আমার পরিবারের কেউ তো কখনো বলে নাই তারা বৃষ্টিকে চেনে? কিসের জন্য তারা আমার কাছ থেকে এতো বড় কথা লুকিয়ে গেছে? কোন রহস্য আছে না কি এর ভেতরে?
বৃষ্টি বলে,”বাবা আমার সাথে আগে যখন রিনির যোগাযোগ ছিলো। তখন কখনো আমি রিনির বড় ভাইকে দেখি নাই। আসলে ওর বড় ভাই বিদেশে থাকতো এতোটুকু জানতাম। উনি যে ডাক্তারি পরতে গেছিলেন সে কথা জানাতাম না। আর তাছাড়া দুই বছর আমার কারো সাথে সে ভাবে কোনো যোগাযোগ নেই! তা আপনার থেকে ভালো আর কেউ জানে না। রিনির বিয়ে সে তো ভালো কথা। বিয়ে করে সুখে সংসার করুক।
রোদ নিজের গম্ভীরতা বজায় রেখে বলে,”আঙ্কেল তাহলে তো কথায় রইলো না। বৃষ্টি যেহেতু রিনি বান্ধবী সেহেতু বিয়ের আগেই রিনির জন্য সারপ্রাইজ হিসাবে বৃষ্টিকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাই।”
রোদের মুখে এমন কথা শুনে বৃষ্টি একটু চমকে ওঠে।
শিকদার মির্জা বলে,”হ্যাঁ! অবশ্যই যাবে!বান্ধবীর বিয়েতে আরেকজন না গেলে সেই বিয়েতে মজাই হবে না।”
বৃষ্টি- তা রিনির হবু বর কে?
রোদ- আমার ছোট চাচ্চুর ছেলে সাদিক। তাকে হয়তো চেনো তুমি!
বৃষ্টি রহস্যে হাসি দিয়ে বলে,”চিনবো না কেনো? খুব ভালো করেই চিনি তাকে। সে আমাদের সিনিয়র বড় ভাই বলে কথা। এখন তো আবার বান্ধবীর হবু জামায় বলে কথা।”
রোদ- তাহলে আঙ্কল সেই কথা রইলো! আপনারা সবাই আসবেন। তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রোদ বেড়িয়ে যায়।
বৃষ্টি শিকদার মির্জা কে বলে,”তাহলে আমি কি বিয়েতে এটেন্ড করার অনুমিত পাচ্ছি?”
শিকদার মির্জা -হ্যাঁ অবশ্যই! সেখানে তুমি নিজের পরিচিতি বাড়াতে পারবে।
বৃষ্টি -জ্বি অবশ্যই!
এদিকে রোদ নানারকম চিন্তায় মগ্ন। বৃষ্টির পরিচয় কেনো সবাই আমার কাছে লুকিয়ে গেছে কেনো? জানতে হবে কিসের এতো লুকোচুরি। হয়তো এসবের পেছনের গল্পটাও জানতে পারবো।
এদিকে রিয়ানা যখন থেকে জানতে পারছে রিনির সাথে সাদিকের বিয়ে তখুনি সে বিয়ে বাড়িতে যাবে না বলে দেয়।
রিয়ানর মা – হঠাৎ করে তোকে ভুতে ধরছে না কি? যে বাড়িতে সারাবেলা পড়ে থাকতিস এখন হুট করে যাবি না বলছিস কেনো?
রিয়ানা – এই সব বিয়ের অনুষ্ঠান আমার মোটেই পছন্দ না। এতো মানুষের আনাগোনা একটু সহ্য হয় না। তাছাড়া রং মেখে সঙ সেজে ঘুরাঘুরি তো মোটেই পছন্দের না।
রিয়ানার মা- ভ্রু উঁচু করে বলে,”তোর না দেশে বিয়ের এসব ফাংশন খুব পছন্দের!”
রিয়ানা – আহহহ মা,আগের কথা বাঘে খাইছে। তাই ওসব কথা বাদ দাও। বিদেশে বসে বসে ফোনে ওসব রং ডং দেখতে ভালোই লাগে। বাস্তবে যখন সব কিছুর সামনাসামনি হবে তখন বুঝা যায় কতো খাটাখাটি করতে হয়। তাছাড়া দেশে এসে আমার পছন্দ বদলে গেছে।
রিয়ানার মা- তাই বলে মামাতো ভাই বোনের বিয়েতে তুই যাবি না?
রিয়ানা – বিয়েতে তোমরা তো যাচ্ছ তাতেই হবে।
আর বিয়ের দিন ভেবে দেখবো যাবো কি না।
রিয়ানার মা বলে,”দাঁড়া তোর বাবার কাছে বিচার দিবো। তার আদরের মেয়ে দিন দিন মাত্র ছাড়া বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে। ”
রিয়ানা – আমি যে বেয়াদব তা আগে থেকেই জানো। তাহলে অযথা আমার পেছনে কেনো পড়ে আছো? চাইছো কি তুমি? বিয়ে বাড়িতে গিয়ে সবার সাথে একটু বেয়াদবি করি? নিজের বেহায়াপনার নমুনা সবাই কে দেখায় তাই তো?
রিয়ানার মা- রিয়ানা এসব কোন ধরনের কথা? বিদেশে তোকে জন্ম দিয়ে লালনপালন করাটাই আমার জীবনের সব থেকে বড় ভুল।
রিয়ানা – মা তুমি জীবনে এর থেকেও বেশি আরো অনেক ভুল করেছো। একদিন সেসব ভুলের খেসারত তোমাকে দিতে হবে। বলে চলে যায়।
রিয়ানার মা স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
(Nothing to say)
‘
‘
‘
চলবে…